অদ্ভুত বর – পর্ব 18

0
449

#অদ্ভুদ_বর
#দিয়া_মনি [ DîYã MôÑî ]
#পর্ব_১৮
পরদিন বিকালে ডাক্তারের কাছ থেকে বাড়ি ফিরলো রওশন দিয়া। কাঁদতে কাঁদতে দিয়ার চোখমুখ ফুলে গেছে তবুও নির্দয়ের মতো রওশন দিয়াকে ফেলে অফিসে চলে গেলো। দিয়া পেটে হাত বোলাচ্ছে আর অনবরত কাঁদছে ঠিক তখনই তিথি আসলো। ও দিয়াকে নিয়ে যাবে। সবুজ টিয়ার বিয়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত দিয়াকে তিথি নিজের কাছেই রাখবে।
— দিয়া বেবি!! কই তুই??
— তুই।?
— হুম চল। কাল সবুজদের বিয়ে আর তুই এখানে.? চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রথমবার হয়নি তো কি হয়েছে পরেরবার হবে।
— যাবো না আমি। প্লিজ জোর করিস না।
— তুই না গেলে ওরা বিয়ে করবে ? সব জেনেশুনে ওদের বিয়ে ভাঙতে চাচ্ছিস.?নে তাড়াতাড়ি রেডি হ। আমি তোর প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে নিচ্ছি।
রিমিকার পার্মিশন নিয়ে টিয়াদের বাড়ি চলে আসলো তিথি দিয়া। দিয়া এসেই ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে যখন ঘুম ভাঙে তখন দেখে ও রওশনের বুকের ওপর ঘুমাচ্ছে,, রাগে অভিমানে দিয়া উঠে ঘরের মধ্যে হাটাহাটি শুরু করে দিলো। সারারাত ওভাবেই হেটেছে। রওশন টের পেলেও কিছু বললো না।
পরদিন বিকালে নির্বিঘ্নে বিয়েটা শেষ হতেই দিয়াকে নিয়ে ফিরে আসে রওশন। দিয়াকে খাইয়ে দিয়ে দাদাজানের রুমে চলে যায় রওশন। দিয়া গালে হাত দিয়ে রওশনের বলা প্রতিটা কথা বোঝার চেষ্টা করছে,, সেদিন হসপিটালে,,
— দেখো দিয়াপাখি আমি চাইনা তোমার কোনো ক্ষতি হোক। আর তুমি চাও না বেবিদের কিছু হোক। আমি তোমাকে এবর্শন না চেক আপ করানোর জন্য এনেছি। তবে তোমাকে যেকোনো একটা অপশন বেছে নিতে হবে। ১.আমি ২. বেবিরা। এবার তুমি ঠিক করো কাকে চাও। আমাদের তিনজনকে তুমি কখনোই একসাথে পাবে না।
— দেখুন আমি আগেই বলে দিয়েছি আমি বেবিদের চাই। আপনারা তিনজন একসাথে থাকবেন, ভালো থাকবেন। সব ঝামেলা মিটে যাবে ব্যাসস। আমি থাকি বা নাকি তারা থাকবে।
— তাহলে জেনে রাখো তুমি আমাকে ১৪দিন পর আর পাবে না। তুমি তোমার বেবি নিয়েই থাকো।




এদিকে রওশন নামায পড়ে কুরআন তিলাওয়াত করছে আর সেই জ্বীনটার জন্য অপেক্ষা করছে যে দাদাজানের সাথে কথা বলেছিলেন। ডায়েরির অবশিষ্ট
♠♠ তবে বাচ্চাদের মাকে বাঁচানোর একটা উপায় আছে। কি উপায় সেটা আমিও জানি না। রায়হানের বড় ছেলেকে সেদিন দুই রাকাত নফল নামায পড়ে কুরআন খতমের উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করা শুরু করতে হবে,, ততক্ষনে হুজুর নাজিমুদ্দিন কতৃক সেই জ্বীন এসেই উপায় বলে দিবে।
৫বছর পর আজ আমার ছেলে রায়হানের জময সন্তান হলো রওশন ও রোশান। রওশন বড় তাই ওই হবে আগামী দিনে জ্বীনের পিতা। আর রোশানকে নিয়ে যাবে ইফরীত্বরা। আমি দাদা হয়ে কিছুই করতে পারবো না। তবে চুপ করেও থাকবো না। আমি রাদিন আজ আমার সমস্ত জ্ঞান অর্জিত সমস্ত শক্তি এই লকেটে জমা করে দিবো। তারপর যাবো ইফরীত্ব রাজ্যে। তোমরা কেউ হয়তো জানবে না এগুলো কারন আমি আমার ঘর বন্দক করে রাখছি। তবে যেদিন সময় হবে এবং ওরা আসবে সেদিন জোড়ে আমার ঘরে ঢোকার অনুমতি পাবে।
আল্লাহ হাফেজ। আল্লাহ তোমাদের সহায় হন।♠♠
রওশনের সুরেলা কন্ঠের তিলাওয়াত নিচ অবধি পৌছে গেছে। দিয়া গুটি গুটি পায়ে সিড়ি বেয়ে উপরে আসতে থাকে ঠিক তখনই ওর মনে হলো ওর পেটে কেউ কিছু দিয়ে আঘাত করছে। দিয়া সিড়ির ওপর বসে পড়লো,, তারপর পেটে হাত রেখে কাঁদতে কাঁদতে গোঙাতে লাগলো,,
— বাবু তোমরা কেন তোমাদের আম্মুকে কষ্ট দিচ্ছো.? তোমরা কি তোমাদের আম্মুকে ভালোবাসো না.? তোমাদের কি আমাকে পছন্দ হয়নি.? জানো ছোট বেলায় আমারও আম্মু ছিলো না। অনেক কেঁদেছি আম্মুর জন্য তবুও ফিরে পাইনি। তোমাদের জন্মের পর তো আমি থাকবো না তখন নাহয় তোমরা ভালো থেকো। তোমাদের জন্ম হওয়া পর্যন্ত স্থীর থাকো। নাহলে তোমাদের আব্বু যে তোমাদেরকে ভুল বুঝে কষ্ট পাবে। আমি জানি তোমরা নিষ্পাপ তোমরা ইফরীত্বের জন্য এমন করছো কিন্তু দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে। পৃথিবীর বেস্ট বেবি হবে তোমরা। আমাকে তোমাদের আব্বুর কাছে যেতে দাও। প্লিজ
দিয়া অনুভব করতে লাগলো ওর পেটটা নরমাল হয়ে গেছে। মায়ের কথা হয়তো ভ্রূনে থাকা সন্তানও বুঝতে পারে। ও চোখের পানি মুছে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো। রওশন দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিয়েছে আর পর্দা টেনে দিয়েছে যার কারনে দিয়া ঢুকতে গিয়েই ধাক্কা খায়। দিয়া দরজায় গা ঘেসে বসে পড়ে।
ভেতরে,, রওশন যখন ১৪পারায় পড়ছে তখন ওর রুমটা পুরো অন্ধকার হয়ে যায়। রওশন বুঝে যায় যে সে আসছে। তাই তিলাওয়াতটা আরো গভীরভাবে এবং জোর গলায় করতে লাগলো। রওশনের ঠিক সামনে বসে আছেন সে। তবে উজ্জ্বল আলো থাকায় কোনোকিছুই দেখা যাচ্ছে না।
— আসসালামুয়ালাইকুম রওশন?
— ওয়ালাইকুম আসসালাম।
— নিজের স্ত্রীকে বাঁচাতে গেলে আমাকে আপনার মধ্যে সমাহিত হতে হবে। আপনার শরীরকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে সেটাও আপনার অনুমতি নিয়ে।
— আমার কি করনীয়.?
— আপনাকে কিছুই করতে হবে না যা করার আমি করবো। তবে আপনার স্ত্রীকে অনেককিছু করতে হবে। বাচ্চাদের সামলে রাখতে হবে। তাদের ভ্রুন থেকেই পর্যাপ্ত শুভ চিন্তা নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে। অনুভুতি তৈরি করতে হবে।
— রোশান ?
— বাঁচবে।
— ইফরীত্ব ?
— ওদের বাদশাহকে ধ্বংস করতে হবে। তার জন্য আমার আপনার শরীর প্রয়োজন।
— আপনি আমার মধ্যে সমাহিত হন,, অনুমতি দিচ্ছি আমি।
রওশন কথাটা বলে চোখ বুজে ফেলে,, কিছুক্ষন পর ও অনুভব করলো একটা দমকা গরম বাতাস ওর শরীর ছুঁয়ে গেছে। ও আবার কুরআন তিলাওয়াত শুরু করে। রাত ৮টায় কুরআন খতম হয়। কুরআন শরীফ এবং জায়নামায গুছিয়ে ও দরজা খুলে বাইরে আসে,, কিন্তু দরজা খুলতেই ওর চোখ আটকে যায় মেঝেতে পরে থাকা দিয়ার ওপর। দিয়া শুয়ে শুয়েই চোখ মেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
— তুমি এখানে কি করছো দিয়াপাখি?
— কিছু না।
বলেই উঠে চলে গেলো দিয়া। রওশনের দিয়ার ব্যবহার মোটেই ভালো লাগছে না। কোথাও একটা ঝামেলা আছেই।
এরপর থেকে দিয়া অনেক চুপচাপ হয়ে যায়। সারাদিন একা একা বিরবির করে। কারোর সাথে কথা বলেনা। রওশনকে দেখলে একভাবে তাকিয়ে থাকে। আর পেটে হাত বোলায়।
আজ পূর্নিমা,, রোশান ক্ষিপ্ত হয়ে ইয়ারাভ ম্যানশনে আসে। রওশন তখন দিয়ার বিছানার পাশেই নামাযে দাড়িয়ে কাঁদছিলো আর দিয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইছিলো।
— বাহ ভাই বাহ। কি খেললি তোরা…
রোশানের রাগমিশ্রিত কন্ঠ শুনেও বিন্দুমাত্র নড়লো না রওশন। দুদিকে সালাম ফিরিয়ে মোনাজাতের জন্য অগ্রসর হলো। রোশান রেগে দিয়ার দিকে এগোতে লাগলো,, দিয়ার উপর উবু হয়ে শূণ্যে ভাসতে লাগলো রোশান। দুই হাতে দিয়ার গলা চেপে ধরতেই রওশন এসে রোশানের হাত ছাড়িয়ে দেয়।
— তোমার সমস্যা আমার সাথে রোশান। দিয়াপাখির সাথে না। যদি প্রকৃত ইফরীত্ব হও তাহলে আমার সাথে লড়াই করো। দিয়াপাখির কাছ থেকে সরে আসো।
মুচকি হাসলো রোশান।
— তোর সাথে? ( প্রতিশোধ তো নিতেই হবে কেননা আজই নিয়ে নেই। সুযোগটা তো তুই নিজেই করে দিলি। ) তবে তৈরি হয়ে যা।
— এখানে না ছাদে। এখানে দিয়াপাখি আছে।
— ওহ হ্যা এখানে তো ভাবি আছে। চল তাহলে ছাদে গিয়ে খেলি।
ছাদের মাঝামাঝি দাড়িয়ে আছে দুই ভাই। দুজনের হাতে দুইটা করে ছুরি। রওশনের চোখের সামনে আবছা হয়ে ভাসতে লাগলো “রোশানের বুকের জন্মদাগে ছুরি বসিয়ে দিলে রোশান আগুন থেকে মানুষে পরিণত হচ্ছে। ” ঠিক সে মূহুর্তে রোশান, রওশনের ডান হাতে ছুরি দিয়ে আঁচড় দিলো। অপ্রস্তুত হয়ে গেলো রওশন। ব্যাথায় চোখ মুছে দিলো। রওশন শুনতে পেলো কেউ ওকে বলছে,
— চিন্তা করবেন না রওশন। আমি আছি আপনি চোখ বুজেই থাকুন আমি বাকিটা দেখছি।
রওশনের হাত আপনাআপনি উপরে উঠে যায়। রওশন অনুভব করতে লাগলো ও ঘুরছে,, ওর পাও এক পা দু পা করে এগোচ্ছে। বেশকিছুক্ষন পর রোশানের চিৎকারে চোখ মেলে তাকালো রওশন। চোখের সামনে রোশান পড়ে আছে আর ওর বুকে ছুরি গেথে রেখেছে রওশনের হাত। রওশনের চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো,, রোশানের চোখ স্থীর,, রওশন ছুরি ছেড়ে রোশানের মাথা নিজের কোলে রাখলো,,
— ভাই! ভাই দেখ আমার দিকে। ঠিক হয়ে যাবি তুই। কিচ্ছু হবে না তোর। রোশান দেখ আমি তোর ভাই।
ছুরিটা হাওয়ায় মিলে গেলো। চোখ বুজে নিলো রোশান। রওশন রোশানকে নিজের কাঁধের সাথে হেলান দিয়ে টেনে দাদাজানের ঘরে নিয়ে গেলো। চৌকিতে রোশানকে শুইয়ে দিয়ে ওর হাত ধরে বসে কাঁদতে লাগলো,,,
— বিশ্বাস কর ভাই আমি কখনো তোকে কষ্ট দিতে চাইনি। এমনকি আমরা ইচ্ছা করে তোকে ইফরিত্বের হাতে তুলেও দেইনি। সবটা পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো। তুই শুধু শুধু ভুল বুঝেছিলি আমাদের। আর ইফরীত্বরা সে সুযোগে তোর মন বিষিয়ে দিয়েছিলো।
সকালে,, রওশনের ঘুম ভাঙতেই ও দেখলো রোশান চৌকাটার ওপর বসে অদ্ভুদ ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। পরনে একটা গেঞ্জি আর লুঙ্গি।
— দেখ ভাই আমার পড়নে এসব কি.? লুঙ্গি ফুঙ্গি।
রওশনের স্বাভাবিকতা ভাবাচ্ছে রওশনকে। কাল রাত অবধি রোশান এক রকম ছিলো আর এখন..? রওশন উঠতে গেলে রোশান ওর হাত টেনে ধরে,,
— আমার ভুলের জন্য সরি ভাই। দেখ আমি আর আগের মতো নেই। ভালো হয়ে যাবো আমি। কখনো কাউকে কষ্ট দিবো না। কারোর খারাপ চাইবো না। মাফ করে দে আমাকে।
রওশন এবার আর থাকতে পারলো না,, জরিয়ে ধরলো রোশানকে দীর্ঘ ২৫বছর পর রওশন নিজের ভাইকে ফিরে পেলো। হ্যা ওর ভাই যে এখন ইফরীত্ব না,, একজন সাধারন মানুষ। রোশানকে রিমিকাদের কাছে রেখে রওশন দিয়ার কাছে গেলো। দিয়া তখন আপেল খাচ্ছিলো এই একটা ফলই সারাদিন খায় ও।
— দিয়াপাখি! গুড মর্রিং। ( দিয়া কোনো উত্তর দিলো না। )
— জানো দিয়াপাখি রোশান ঠিক হয়ে গেছে। এবার আমাদের বেবিরাও ঠিক হয়ে যাবে। সেদিন রাগের মাথায় ভুলভাল বলে ফেলেছি মাফ করে দাও আমায়। দেখো এবার সব ঠিক করে দিবো আমি।
দিয়া রওশনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রওশন দিয়ার চোখের দিকে তাকাতেই ওর সমস্ত শরীর শিরশির করে উঠলো,, দিয়ার চোখের স্থীর শীতল চাহুনি ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিচ্ছে রওশন কে।
— দিয়াপাখি কোনো সমস্যা.?
দিয়া রওশনের কথার পাত্তা না দিয়ে আবার নিজের পেটে হাত রেখে বিরবির করতে লাগলো। রওশন অবাক হয়ে চেয়ে রইলো দিয়ার দিকে। এটা কি সেই দিয়া যে সারাদিন দুষ্টুমিতে মেতে থাকতো.? বকবক করে সবার কানের ১২টা বাজায় দিতো।
— এতোদিন রোশানের কথা ভেবে তোমাকে একা থাকতে দিয়েছি। আর না তোমাকে আগের মতো নরমাল হতেই হবে। তোমার এ অবস্থার জন্য হয়তো কোনো না কোনো ভাবে আমি দায়ী। আমাকে আমার ভুল শুধরে নিতে হবে।
রওশন গিয়ে দিয়ার পাশে বসলো,, দিয়া আড়চোখে একবার রওশনের দিকে তাকিয়ে আবার আয়নার দিকে তাকালো,, পেটটা একটুও মোটা হয়নি দেখে কেঁদে ফেললো ও।
— বেবি তোমরা বড় হচ্ছো না কেন..? কবে আসবে তোমরা..?? তোমরা না আসলে তো তোমাদের আব্বু তোমাদের ভুল বুঝবে। তাড়াতাড়ি আসো তোমরা। শোনো আমি যখন থাকবো না তখন একটুও দুষ্টুমি করবে না ঠিক আছে.? তোমাদের আব্বুকে একটুও বিরক্ত করবে না।
— দিয়াপাখি কি বলছো এসব.? এসব বলতে হয়না। তুমি থাকবে না এটা কে বলেছে.? তুমি থাকবা আমি থাকবো আমাদের বেবিরা থাকবে।
দিয়াকে একটু জরিয়ে ধরতেই দিয়া সরে গেলো। রওশন অসহায় চোখে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
— দিয়াপাখি
— বেবি দেখো এই লোকটা তোমাদের আম্মুকে বিরক্ত করছে। এটা পচা লোক। তোমরা বড় হলে কখনো পচা লোকদের সামনে যাবে না।
দিয়ার কথা শুনে রওশন অবাকের চরম সীমায় পৌছে গেলো। দিয়া এসব কি বলছে.? রওশন দিয়ার হাত ধরতেই দিয়া রেগে রওশনের হাতে জোরে কামড় দেয়
— ডোন্ট টাচ মি। হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মি..? আমার বেবিদের আব্বু যদি জানে তাহলে আপনাকে শেষ করে দিবে। যাস্ট শেষ করে দিবে।
— দিয়াপাখি,, আমাকে চিনতে পারছো না আমি রওশন। তোমার রওশন। তোমার বেবিদের আব্বু।
— বেহায়া লোক এসব বলতে লজ্জা করে না? আপনাকে দেখলেই মনে হয় আপনি সুবিধার না হুটহাট করে বিছানায় শুয়ে পড়েন,, এঘরে ঘুরঘুর করেন। আমার বাবুদের আব্বু কোথায়..? সে বলেছিলো বেবি থাকলে উনি থাকবেন না। তিনি কোথায় ওনাকে এনে দিন.
রওশন চুপ করে দিয়ার কথা আর অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছে। ভুলে যাওয়ার সমস্যা তো ওর আগে থেকেই আছে কিন্তু এমন অদ্ভুদ ব্যবহার তো ও আগে কখনো করেনি। দিয়া চিল্লাচিল্লি করায় রওশন রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
ঘন্টা দুয়েক পর ডক্টর আংকেলকে নিয়ে আসে রওশন। দিয়া আংকেলের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ডক্টর আংকেল ওকে শান্ত করার জন্য একটা ইঙ্জেক্শন বের কররতেই দিয়া চিল্লিয়ে ওঠে,,
— প্লিজ আমার বাবুদের মারবেন না। ওরা তো কোনো অন্যায় করেনি। ওদের আব্বু ওদের মারার জন্য আপনাদের পাঠিয়েছে তাইনা? দয়া করে ওদের কিছু করবে না। ওরা খারাপ বেবি না ওরা অনেক ভালো বেবি হবে।চলে যান প্লিজ
রওশন কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু আংকেল ওকে চুপ থাকতে বলেন।
— মামনি বেবিদের কিচ্ছু হবেনা। আমরা তো এটা বেবিদের ভালোর জন্য দিচ্ছি। এই মেডিসিনে বেবিরা তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাবে। তারপর তোমার সাথে খেলবে।
— আমি জানি বেবি হলে আমি মরে যাবো।
রওশনকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো আংকেল।
— দেখলেন তো আংকেল আমাকে অবধি চিনতে পারছে না। সেই ১১দিন আগের কথা এখনো জপছে। আর এমন করছে
— ডিপ্রেশনে চলে গেছে মেয়েটা। বেবিদের জন্য অতিরিক্ত চিন্তা আর তোমার প্রতি ভয়,, এই দুইটার জন্য ওর কথা মনে থাকলেও কাউকে ঠিকভাবে চিনতে পারছে না। বিশ্বাস করতে পারছে না।মেয়েটাকে নিয়ে সত্যিই এবার টেনশন হচ্ছে,, যদি একা থাকতো তাহলে সমস্যা ছিলো না কিন্তু ওর সাথে এখন বেবিরা আছে।
— সবসময় আমার ভুলের জন্য সবাই সাফার করে।
— তোমার জন্যই কিন্তু সব সমস্যার সমাধান হয়। এবারের টাও হবে। তোমাদের ফ্যামিলির জ্বীনদের কি অবস্থা..?
—…….
— দিয়াকে নিয়ে ভেবো না। প্রপার সাপোর্ট পেলে ও আবার আগের মতো হয়ে যাবে। এবিষয়ে রিমিকা আর রশনি ভালো বুঝবে।
— জি আংকেল।
চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here