তোমাতে বিলীন – পর্ব (Last)

0
1173

#তোমাতে বিলীন🍁
#লেখিকা—আমায়া নাফশিয়াত ☘
#শেষ পর্ব
এভাবেই প্রায় একসপ্তাহ কেটে গেল।আজ দিয়ানের আকিকা অনুষ্ঠান।ঊদিতা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নিচতলায় একটা রুমে বসে আছে।ড্রয়িং রুম জুড়ে আত্মীয় স্বজনরা গিজগিজ করছে।আশিয়ান আজ সারাদিন ধরে অনেক ব্যস্ত।ছেলের আকিকা অনুষ্ঠানে যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে সে দিকে তীক্ষ্ণ মনযোগ রাখছে সে।কয়েকজন মহিলা আত্মীয় ঊদিতাকে ঘিরে বসে গল্প করছেন।ঊদিতা অবশ্য এসব গল্পে নেই।সে তার বাচ্চার ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে নিষ্পলকভাবে।
বাইরে এতিমখানার শিশুদেরকে খাওয়ানোর জন্য স্টেজ বানানো হয়েছে।আশিয়ান নিজহাতে তাদের পাতে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।সবাই তৃপ্তির সহিত খাওয়া দাওয়া করলো।খাওয়া শেষে আশিয়ান তাদেরকে নতুন কাপড় ও জনপ্রতি পাঁচশ টাকা করে দিলো।বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ মানুষেরা এতদূর আসতে পারবেনা তাই আশিয়ান ওখানেও খাওয়া দাওয়ার ও কাপড় চোপড়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে তার পিএ এবং সেক্রেটারির মাধ্যমে।
আজকে পিচ্চিটার মাথার চুল কামানো হয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী সেই চুলের সমপরিমাণ স্বর্নের সমান টাকা ভাগ করে দিয়েছে গরীব দুঃখীদেরকে।আশিয়ান বরাবরই দাতা হিসেবে পরিচিত।যদিও সে কখনো শো অফ করে না এটা নিয়ে।আশিয়ানের কাছে কেউ এলে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে পারে না।এজন্যই হয়তো আল্লাহ তার টাকা পয়সায় ও ধন সম্পদের মাঝে এত বরকত দিয়ে দিয়েছেন।দিনকে দিন তার ধন সম্পদের পরিমাণ বাড়তেই আছে।
আশিয়ান আজ অনেক বেশি খুশি।এই নিয়ে কাজের ফাঁকে কয়বার বাসার ভেতর গিয়ে নিজের ছেলেকে কোলে নিয়ে আদর করে এসেছে সে।সবাই খাওয়া দাওয়া সেড়ে বাচ্চাকে দোয়া দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে গেল।তবে আশিয়ানদের আত্মীয় স্বজনরা বাসায় রয়ে গেছেন।
নাম রাখা নিয়ে ড্রয়িং রুমে ছোটখাটো একটা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।কিন্তু পিচ্চিটার নামধাম তো আগেই ঠিক করা ছিলো।সবার কোলাহল ছাপিয়ে আশিয়ান নিজের ছেলেকে কোলে নিয়ে মুচকি হেসে বললো;
আশিয়ান:-আমার ছেলের নাম আমি আগেই ঠিক করে রেখেছি।তার নাম হলো দিয়ান তায়েব চৌধুরী।
আশিয়ানের কথা শুনে সবাই বিনা প্রতিবাদে উল্লাস প্রকাশ করলো।কারণ সবারই নামটা অনেক পছন্দ হয়েছে।তর্ক বাদ দিয়ে সবাই আড্ডায় মজে গেল।দিয়ান আর ঊদিতার জন্য সবাই এত্তো এত্তো গিফট নিয়ে এসেছে।এনা আর কেয়া গিফটগুলো আশিয়ানের বেডরুমে নিয়ে গিয়ে রেখে এলো।
আশিয়ান এত ব্যস্ততার মধ্যেও ঊদিতার খেয়াল রাখতে ভুলে নি।সে ঠিকই ঊদিতাকে নিজের হাতে খাবার খায়িয়ে কাজে লেগেছে।এমনকি দুপুরের খাবারও সে খাইয়ে দিয়েছে তাকে।সবার সাথে অনেক অনেক আড্ডা দেয়া হলো আজ।রাতের খাবার খেয়ে বেশ কয়েকজন আত্মীয় চলে গেলেও বাকি নিকটাত্মীয়রা রয়ে গেছেন।ওনারা দুয়েকদিন হয়তো থাকবে এখানে।রাতের খাবার খাওয়া শেষে আরও কিছুক্ষণ সবাই বসে আড্ডা দিলেও আশিয়ান রুমে চলে এলো ঊদিতাকে নিয়ে।ঊদিতার চোখ ঢুলুঢুলু করছে ঘুমের কারণে।কিন্তু পিচ্চিটা সজাগ।বড় বড় চোখ মেলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে সে।
আশিয়ান ঊদিতাকে সাবধানে বিছানায় শুয়িয়ে দিলো।ঊদিতা বিছানায় শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে গেছে।আর আশিয়ান দিয়ানকে কোলে নিয়ে আদুরে কন্ঠে কথা বলতে লাগলো।ছেলেটাও বাবার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।আশিয়ান ছেলের দিকে তাকিয়ে হাসলো।কপালে গালে চুমু খেয়ে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বললো;
আশিয়ান:-আমার কলিজার টুকরো বাচ্চাটা!আমার সোনা ছেলে!উম্মাহহহ,,,,(গালে শব্দ করে চুমু খেয়ে)
পিচ্চিটা রাত ১ টা পর্যন্ত সজাগ ছিলো।তার সাথে আশিয়ানও সজাগ আছে।আশিয়ান এতটাসময় ছেলের সাথে কথা বলে কাটিয়েছে।তৃপ্তিতে মনটা ভরে গেছে তার।ঊদিতা বাচ্চাকে খাওয়ানোর টানে সজাগ হয়ে গেছে।তারপর বাচ্চাকে কোলে নিয়ে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে বিছানার কোণে শুয়িয়ে দিলো।পিচ্চি ঘুমিয়ে যেতেই আশিয়ান ঊদিতাকে ধরে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে নিয়ে শুয়ে পড়লো।ঊদিতাও আশিয়ানের বুকে বিড়ালছানার মতো গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে গেলো।
🍁🍁🍁
“পরিশিষ্ট”
_________❤️
দিয়ানের বয়স এখন ১ বছর।কদিন আগেই আশিয়ান ছেলের জন্মদিন এত ধুমধাম ভাবে পালন না করলেও ছেলেকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিল,গরীব দুঃখীদের মাসকাবারি বাজার ও টাকা দিয়েছে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে।এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রমে গরু জবাই দিয়ে আখনি পোলাও পেটপুরে খাইয়েছে সবাইকে।ঊদিতা ছেলের খাওয়ার উপযোগী কেক বানিয়েছে জন্মদিন উপলক্ষে।বাসার সবাই গিফট দিয়ে সারা রুম ভর্তি করে ফেলেছে তাকে।
দিয়ান এই বয়সেই ঊদিতার মতো শান্তশিষ্ট ও আশিয়ানের মতো গম্ভীর টাইপের।খিদে পেলেও কান্না করে না আর প্রচুর মিশুক পুরো আশিয়ানের মতো।ডিএনএ লাগবে না সবাই দেখলে এমনিতেই বুঝে যায় যে ও আশিয়ানের ছেলে।ভীষণ কিউট লাগে তাকে দেখতে।পুরোই আশিয়ানের ফটোকপি।পরিবারের সবার প্রচন্ড আদরের সে।আর আশিয়ানের চোখের মণি।ছেলে ছাড়া কিচ্ছু বুঝে না সে,,এতটাই ছেলে পাগল।আর দিয়ানও বাপ বলতে অজ্ঞান।আশিয়ানের কোলে থাকতে তার খুব ভালো লাগে।এখন সে বসা থেকে দাঁড়াতেও পারে,সাথে কয়েক কদম হাঁটতেও পারে,,আশিয়ান যত্নসহকারে ছেলেকে হাঁটা শেখায় প্রতিদিন।
আদো আদো কন্ঠে শুধু পাপা,মাম্মা,বুবু আর দাদা বলতে পারে সে।দিয়ানের মুখ থেকে আশিয়ান যেদিন পাপা ডাক শুনেছে সেদিন তার খুশি দেখে কে!সারা এলাকায় আরেক দফা মিষ্টি বিতরণ করেছে আশিয়ান সেদিন।আশিয়ানের এমন পাগলামি দেখে ঊদিতা হাসে শুধু কিছু বলে না।আশিয়ানের সহায়তায় বাচ্চা থাকা সত্ত্বেও এইচএসসি পরীক্ষা খুব ভালোভাবেই দিয়েছে ঊদিতা।বাচ্চা সামলানো থেকে শুরু করে তাকে পড়া দেখিয়ে দেয়া সব একা হাতে করেছে সে।ঊদিতার কোনো টেনশনই করতে হয় নি।
পরিবারের সবাই তাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে পড়ালেখার ব্যাপারে।আশিয়ান বলেছে রেজাল্ট বেরোনোর পর ঊদিতাকে ভালো একটা ভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দেবে অনার্সে।মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে ঊদিতা এরকম পূর্নাঙ্গ একটা সংসার তাকে দান করার জন্য।পরিবারের সবাই অনেক ভালো মানুষ।তাদের মধ্যে কোনো হিংসা জিদ নেই যার জন্য আজও সবাই একসাথে মিলেমিশে আছে।এবং আশা করা যায় ভবিষ্যতে এরকমই থাকবে সবাই।
🌾🌾🌾
আজ শুক্রবার।আশিয়ান দিয়ানকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে।ঊদিতা তাদের দুজনের কপালে চুমু খেয়ে বিছানা ছেড়ে ওঠে চলে গেল ওয়াশরুমে।একদম গোসল করে তারপর বের হলো।আশিয়ান আর দিয়ান তখনও বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।ঊদিতা মৃদু হেসে চুল মুছে নিচে রান্নাঘরে চলে আসে সবার জন্য নাশতা ও দুপুরের খাবার তৈরি করতে।রান্নাঘরে কেয়া আর আলেয়াও ছিলো।আলেয়া এখন কিছু হলেও রান্না করতে পারে।আলেয়ার মেয়ে আতিয়ার বয়স মাত্র ১৪ মাস হয়েছে।মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আলেয়া পাল্টে গেছে।আগে কেমন উড়নচণ্ডী টাইপের ছিলো অথচ এখন সে পাক্কা সংসারি মেয়ে।শুধু তারিনই খালি চেঞ্জ হয় নি।সে আগের মতোই রগচটা রয়ে গেছে।
আলেয়া মেয়ের জন্য সেরেলাক তৈরি করছে।কেয়া বড় বড় তাজা মাছ ও মাংসগুলো একজন সার্ভেন্টকে দিয়ে কাটিয়ে নিচ্ছে।ঊদিতা তাদের সাথে হেসেখেলে কথা বলে সবার জন্য নাশতা তৈরি করতে লাগে।নাশতা বানানো শেষ হতেই রুমে চলে গেল।তার ছেলে ঘুম থেকে ওঠে দুধ খাওয়ার জন্য মাকে খুঁজবে।
রুমে এসে দেখে আশিয়ান একহাত দিয়ে ছেলেকে ধরে ঘুমাচ্ছে আর পিচ্চিটা বড় বড় চোখ মেলে আশেপাশে তাকিয়ে মাকে খুঁজছে।ঊদিতা দ্রুত গিয়ে আশিয়ানের হাত সরিয়ে পিচ্চিকে নিজের কোলে তুলে নিলো।মাকে দেখে মুখে হাসি ফুটলো তার।আদুরে কন্ঠে মাম্মা ডেকে উঠলো সে।ঊদিতা তো ছেলেকে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।পিচ্চি ছোট ছোট ৪ টা ইদুরে দাঁত বের করে কিউট ভাবে একটা হাসি দিলো।
ঊদিতা:-ওলে আমার সোনা বাচ্চা!আম্মুকে দেখে হাসছো তুমি তাই না?উম্মাহহ,,,আমার বাচ্চাটা!
ঊদিতা দিয়ানের মুখ পরিষ্কার করে ন্যাপি চেঞ্জ করে দিয়ে তারপর বুকের দুধ খাওয়াতে লাগে।আশিয়ান তখনও ঘুমাচ্ছে।সারারাত ছেলের সাথে সজাগ থাকে সে।তাই দিনের বেলা এত সহজে ঘুম ভাঙে না।
কিছুক্ষণ পর আশিয়ান ঘুম থেকে ওঠে।আরও ঘুমাতো কিন্তু ঊদিতা দুষ্টুমি করে ছেলেকে বাপের কাছে ছেড়ে দিয়েছে।পিচ্চিটা তো সোজা বাপের গালে কপালে থাবড়া দিয়ে পাপা পাপা ডাক শুরু করেছে।তারপর নাকে ধরে দিছে এক টান।ঘুম থেকে ওঠবা না মানে,,,তোমার বাপও ঘুম থেকে ওঠতে বাধ্য এমন করলে!ঊদিতা হাসতে হাসতে শেষ ছেলের কান্ড দেখে।আশিয়ান ছেলেকে বিছানায় শুয়িয়ে পেটে কাতুকুতু দিতেই পিচ্চিটা খিলখিল করে হেসে উঠে।আশিয়ান ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে;
আশিয়ান:-আমার দুষ্টু ছেলে!পাপাকে কী কেউ এভাবে ঘুম থেকে তোলে?হুম?পঁচা ছেলে!মায়ের মতো দুষ্টামি শিখছো তাই না?
ঊদিতা মুখ ঝামটা মেরে বললো;
ঊদিতা:-কোন এঙ্গেল থেকে আমাকে দুষ্টু মনে হয় আপনার?আপনি নিজে যেমন আপনার ছেলেও হয়েছে তেমন।এখন উঠুন,,এবং যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শাওয়ার সেড়ে আসুন।মনে নেই আজকে শুক্রবার?নামাজে যেতে হবে না?(কপট রাগ দেখিয়ে)
আশিয়ান:-হয়েছে,,যাচ্ছি!একটু মিষ্টি করে বললে কী এমন হয়?দিনদিন আনরোমান্টিক হয়ে যাচ্ছো তুমি!(অভিযোগ করে)
ঊদিতা:-বাচ্চার বাপ হয়ে গেছেন,,,এখন আবার রোমান্টিকতা কীসের?অসভ্য লোক!জলদি যান।আর ছেলেকেও সাথে নিয়ে যান।আপনার সাথে ওকেও গোসল করিয়ে দিবেন।
আশিয়ান কিছু না বলে ঊদিতাকে ঝাপটে ধরে ঠোঁটে চুমু খেয়ে শয়তানী হাসি দিয়ে চলে গেল।ঊদিতা মুখ মুছছে বারবার।ওয়াক,,,,কী খবিস,,মুখ না ধুয়েই চুমু দিয়ে দিলো!মুখ বাঁকিয়ে ঊদিতা বললো;
ঊদিতা:-ছি,,,খবিশ লোক!মুখ না ধুয়েই চুমু,,,ওয়াক!!
আশিয়ান কাভার্ড খুলে কাপড় নিতে নিতে বলে;
আশিয়ান:-খবিশ হলেও তোমার জামাই!নিজে মর্নিং কিস দেয়ার বেলা কিছু না,আর আমি দিলেই দোষ না?
ঊদিতা কীসব বিরবির করে বললো যা আশিয়ান শুনলো না।সে তার কাপড় চোপড় নিয়ে ও ছেলেকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।ঊদিতা আনমনে হেসে ফেললো তাদেরকে দেখে।
প্রায় আধাঘন্টা পর বাপ ছেলে একসাথে গোসল করে বের হলো।ঊদিতা একটা টাওয়েল নিয়ে এগিয়ে এসে ন্যাংটা দিয়ানকে কোলে নিয়ে নিলো।পিচ্চি মুখ দিয়ে হাপুস হুপুস করছে।আশিয়ানও শুধু টাওয়েল পড়ে এসেছে।বিছানার ওপর বসে সে ধীরে সুস্থে পাঞ্জাবি পাজামা পড়ছে আর ঊদিতা ছেলের শরীর মুছিয়ে দিয়ে লোশন তেল পাউডার সব মাখিয়ে দিচ্ছে।সব মাখানো শেষে পিচ্চিকে ন্যাপি পরিয়ে তারপর আশিয়ানের পাঞ্জাবি পাজামার মতো দেখতে হুবহু এক রকম ছোট সাইজের পাঞ্জাবি পাজামা দিয়ানকে পরিয়ে দিলো সে।অতঃপর আশিয়ান দিয়ানকে কোলে নিয়ে নিচে চললো নাশতা খেতে।ঊদিতাও তাদের পিছন পিছন আসছে।
বাসার সকলে ডাইনিং রুমে সমবেত হয়েছে।দিয়ান দাদাকে দেখে মুখে হাসি ফুটিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল দাদার কোলে যাওয়ার জন্য।মি.মোরশেদ দ্রুত এগিয়ে এসে নাতিকে কোলে নিলেন।দিয়ান মুখের ভেতর আঙ্গুল পুরে দাদাকে হাবিজাবি কীসব বলছে।সবাই হাসছে দিয়ানের পাকনামি কথা শুনে।ঊদিতা ও কেয়া মিলে সবাইকে নাশতা বেড়ে দিয়ে নিজেরাও খেতে বসে গেল।তাশজিদ দিয়ানকে কোলে নিয়ে বললো;
তাশজিদ:-এই যে চ্যাম্প!যাবে আজকে আমাদের সাথে মসজিদে নামাজ পড়তে?
দিয়ান কী বুঝলো কে জানে সে মুখের ভেতর আঙ্গুল পুরে বললো ‘হুম’।তাশজিদ আশিয়ানকে বললো;
তাশজিদ:-ভাইয়া দেখাে,,,তোমার ছেলে বুঝি আমাদের সাথে মসজিদে নামাজ পড়তে যাবে!কী পাকনা বাচ্চা তোমার!কী সুন্দর বিজ্ঞের মতো প্রশ্নের জবাব দেয়!
আশিয়ান:-বুঝতে হবে কার ছেলে!ফিউচার আশিয়ান গ্রুপ অব কোম্পানির অনার বলে কথা!এখন থেকেই সব শিখছে আমার ছেলে।
এদিকে তসকিনকে আতিয়া নাচিয়ে ছাড়ছে।এত পরিমাণ দুষ্টু সে বলার মতো না।খালি এটা ধরবে, ওটা ধরবে,কথা না শুনলে গলা ফাটিয়ে কান্না করবে,,তাসকিন বেচারা তো শেষ এমন মেয়ের বাপ হয়ে।এখনও নাশতার টেবিলে ঠিকমতো খেতে পারছে না সে।অতঃপর মিসেস তারানা নাতনিকে কোলে নিয়ে এটা ওটা দিয়ে শান্ত করলেন।
নাশতা শেষে ঊদিতা রুমে ফিরে এলো।বেলা বারোটা বেজে গেছে এখনি আযান দিবে।আশিয়ান দিয়ানকে কোলে নিয়ে রুমে ফিরে এলো।ঊদিতার কোলে দিয়ানকে দিলো বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য।কিছুক্ষণ আগে অবশ্য সেরেলাক খাইয়েছে তাকে ঊদিতা।আজ আশিয়ান ছেলেকে নিয়ে মসজিদে যাবে নামাজ পড়তে।ঊদিতা খাইয়ে মুখ মুছে দিলো ভালো করে।আশিয়ান ঊদিতার কপালে চুমু খেয়ে আঁজলা ভরে দুই গালে হাত রেখে বললো;
আশিয়ান:-বউ,,,আজকে একটা শাড়ি পড়বে?খুব ইচ্ছে করছে তোমাকে শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখতে!যদি পড়ো তাহলে আলমারি খুলে মাঝের তাকে একটা প্যাকেট রাখা আছে দেখাে।ওখানে তোমার জন্য আমার পছন্দের একটা শাড়ি আছে।প্লিজ পড়িও।কেমন?
ঊদিতা আশিয়ানের কথা শুনে মুচকি হেসে মাথা ঝাকালো।আশিয়ান তৃপ্তির হাসি দিয়ে ঊদিতার দুই গালে চুমু খেয়ে আসি বলে ছেলেকে কোলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেল মসজিদের উদ্দেশ্যে।ঊদিতা তাদের দুজনের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে একদৃষ্টিতে।
ওরা যাওয়ার পর ঊদিতা আশিয়ানের কথা মতো আলমারি খুলে নির্দিষ্ট স্থান থেকে একটা বড় শপিং ব্যাগ বের করলো।বিছানার ওপর ব্যাগটা উপুড় করে ঢেলে দিতেই ব্যাগের ভেতর থেকে একে একে বেশ কিছু জিনিস পড়লো।ঊদিতা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো সব।একটা লাল পাড়ের কালো শাড়ি সাথে ম্যাচিং পেটিকোট আর ব্লাউজও আছে।লাল কালোর কম্বিনেশনে দুই ডজন চুড়িও আছে।সাথে লাল গোলাপের গাজরা।লাল পাথরের কারুকাজ করা সিম্পল একটা আংটি।একজোড়া কালো স্টোনের নুপুর।একজোড়া নরমাল লাল ডিজাইনার জুতা,,,ব্যস!আর একটা চিরকুট,,,তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা,,,
“আমার আদরের বউটা।মার্কেটে পুতুলের গায়ে শাড়িটা দেখে আমার তোমার কথা মনে পড়ে গেল।পুতুলের গায়ে যতটা না মানাচ্ছে তার থেকে হাজারগুন বেশি মানাবে শাড়িটা তুমি পড়লে।তাই তো ঝটপট এটা কিনে ফেললাম।সাথে ম্যাচিং সবকিছুও আছে।আমার প্রেয়সীকে কতটা আকর্ষণীয় লাগবে শাড়িটা পড়লে সেটা ভাবতে ভাবতেই আমি শহীদ।তাই সোনা বউ আমার,,জলদি শাড়ি পড়ে আমার মনের মতো করে সেজেগুজে আমার সামনে এসো প্লিজ!তোমাকে এই রূপে দেখার জন্য মনটা আনচান করছে আমার।আর হ্যা শুনো,,,তোমার চোখ জোড়ায় গাঢ় করে কাজল এঁকো।আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লাগিয়ো কিন্তু।আজ ফিদা হতে চাই তোমার রূপ সাগরের ঢেউ দেখে।
ইতি
তোমার প্রিয়তম
স্বামী….❤️
চিরকুট পড়ে ঊদিতা হেসে ফেললো।মনে মনে অনেক বেশিই খুশি হয়েছে সে।আশিয়ানের পছন্দ কিন্তু সবসময়ই সেই হয়।আর আশিয়ানের করা এসব পাগলামি ঊদিতার অনেক ভালো লাগে।ওয়াশরুমে গিয়ে ওযু করে আগে নামাজটা আদায় করে নিলো ঊদিতা।নামাজ শেষে মুচকি হেসে দরজা লক করে ব্লাউজ পেটিকোট পড়ে শাড়িটা পড়া শুরু করলো ঊদিতা।এখন শাড়ি পড়তে পারে সে।আর কোনো অসুবিধা হয় না।শিখে নিয়েছে শাড়ি পড়া,,,তাও আবার আশিয়ানের কাছ থেকে।আশিয়ান যে তাকে কতোবার শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে তার হিসাব নেই।
শাড়ি পড়া শেষে চুলগুলো সিথি করে দুই সাইড থেকে একটু ফুলিয়ে নিয়ে ক্লিপ মেরে খোঁপা বেঁধে তাতে আর্টিফিশিয়াল গোলাপ ফুলের গাজরাটা খোঁপায় প্যাঁচিয়ে লাগিয়ে নিলো সে।কানে স্বর্নের কানপাশা লাগালো।গলায় আশিয়ানের দেয়া চিকন চেনের ডায়মন্ডের প্যাটেন্ড।দুহাত ভর্তি চুড়ি।আঙ্গুলে আংটি,পায়ে নুপুর,জুতা সব পড়ে নিলো।তারপর চোখে গাঢ় করে কাজল এঁকে ঠোঁটে টকটকে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে নিয়ে আয়নায় নিজেকে পর্যবেক্ষণ করছে সে।আশিয়ানের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য শাড়ির আঁচল এমনভাবে তুলে পিন মারলো যাতে কোমড়,পেট ও পিঠ স্পষ্ট দেখা যায়।এরকম সাজে ঊদিতাকে সত্যিই ভীষণ মোহনীয় লাগছে দেখতে।ঊদিতাকে দেখে আশিয়ান আজ নির্ঘাত হার্ট অ্যাটাক করবে।এটা ভাবতেই ঊদিতা লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
🍁🍁🍁
আশিয়ান নামাজ আদায় করে ছেলেকে নিয়ে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরলো।নিচে সবাইকে সাথে কিছুক্ষণ কথা বার্তা বলে ছেলেকে নিয়ে আশিয়ান নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো।ঊদিতাকে নিচে দেখে নি তার মানে ঊদিতা আজ শাড়ি পড়েছে।আশিয়ানের বুক ধুকপুক করছে অনবরত।না জানি কত আকর্ষণীয় রূপে তার রমণীকে দেখতে পাবে সে।
রুমে ঢুকে চারপাশে চোখ বোলালো আশিয়ান।কিন্তু ঊদিতার ছায়াও দেখতে পেল না রুমে।দিয়ানের চোখ জোড়া ঢুলুঢুলু করছে ঘুমের জন্য।এখন তার ঘুমানোর সময়।দুধ না খেলে সে মোটেও এসময় ঘুমাতে পারে না।তাই তো ঘুম পেলেও তাকিয়ে আছে।
আশিয়ান দুরুদুরু বুকে বারান্দার দিকে পা বাড়ালো ছেলেকে কোলে নিয়ে।বারান্দার ডোর খোলাই ছিলো।শুধু পর্দা দিয়ে ঢাকা।আশিয়ান পর্দা সরিয়ে প্রবেশ করলো সেখানে।শাড়ি পরিহিতা এক রমণীর পিছন দিক দেখে আশিয়ানের হার্টবিট বেড়ে গেল।কোনো অসুবিধা হলো না তার ঊদিতাকে চিনতে।আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে লাগে সে সামনের দিকে।আশিয়ান ঊদিতার একদম পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো।
আশিয়ানের শরীরের পারফিউমের ঘ্রাণেই ঊদিতা আশিয়ানের অস্তিত্ব তার খুব নিকটে অনুভব করতে পারছে।ঊদিতার বুকের হৃৎস্পন্দনও বেড়ে গেল অস্বাভাবিকভাবে।ঊদিতা ধীরে ধীরে পুরোপুরি ভাবে আশিয়ানের দিকে ঘুরলো।আশিয়ান ঊদিতাকে এত আকর্ষণীয় রূপে দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেছে।ঊদিতার সমুদ্রের মতো গভীর নয়নজোড়ার দিকে তাকিয়ে আশিয়ান হারিয়ে গেল যেন পুরোপুরি।কী সুন্দর টানা টানা হরিণী চোখে গাঢ় কাজল এঁকেছে সে।আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দেয়ায় সৌন্দর্য্য যেন তার হাজারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে তাকিয়ে লাজুক হাসলো।হাসিটা আশিয়ানের বুকে তীরের মতো গিয়ে বিঁধলো।
ঊদিতাকে দেখে দিয়ান আশিয়ানের কোল থেকে মায়ের কোলে যাওয়ার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে মাম্মা মাম্মা বলে ডাকতে লাগলো।ঊদিতা ছেলেকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।মায়ের কোলে গিয়ে একদম শান্ত হয়ে গেছে দিয়ান।আশিয়ান ঊদিতার কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো;
আশিয়ান:-পাগল হয়ে যাবো আজ!মেরে ফেলার ধান্দা লাগিয়েছো তাই না?উফফ,,,এত কিউট লাগছে তোমায় দেখতে,,ইচ্ছে করছে…..
ঊদিতা আশিয়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলো;
ঊদিতা:-কী ইচ্ছে করছে….?
আশিয়ান ঊদিতার নাকের সাথে নাক ঘষে বললো;
আশিয়ান:-রাতে বলবো,,,,বাসর করার সময়!
আশিয়ানের কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেল ঊদিতা।একহাত দিয়ে মুখ ঢেকে বললো;
ঊদিতা:-যাহ্,,,,আপনার মুখে কোনো লাগাম নেই।অসভ্য লোক।
আশিয়ান:-হুম,,,শুধু তোমারই জন্যে।
এই বলে আশিয়ান পকেট থেকে একটা প্যাকেট বের করলো।ঊদিতা চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে আছে আশিয়ানের দিকে।আশিয়ান প্যাকেট খুলে সেখান থেকে চিকন স্বর্নের লম্বা একটা চেইন বের করলো।ঊদিতা প্রথমে মনে করেছে এটা গলার চেইন হবে,,,কিন্তু আশিয়ান ঊদিতার ধারণা ভুল প্রমাণিত করে চেইনটি ঊদিতার উন্মুক্ত কোমড়ে পরিয়ে দিলো।এটা কোমড় বন্ধনী ছিলো।কোমড় বন্ধনীটি পরিয়ে দিয়ে তারপর ঊদিতার কপালে চুমু খেয়ে সে বললো;
আশিয়ান:-এটা আমার সোনা বউটার জন্য।খালি কোমড় কেমন জানি দেখা যায় তাই এটা অর্ডার দিয়ে বানিয়েছি।
ঊদিতা আশিয়ানের গালে শব্দ করে চুমু খেয়ে আদুরে কন্ঠে বললো;
ঊদিতা:-ধন্যবাদ প্রিয়!
আশিয়ান মুচকি হেসে ঊদিতাকে নিয়ে সুইমিংপুলের পাশে পা ডুবিয়ে বসলো।ঊদিতা পিচ্চিকে খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে গেল ততক্ষণে।আশিয়ান ঊদিতার কোমড় জড়িয়ে ধরে কাঁধে নিজের মাথা রেখে পানিতে পা দাপাচ্ছে।দুজনের চোখে এক আকাশ ভালোবাসা বিরাজ করছে।চারিদিকে পরিবেশটাও কী সুন্দর প্রেমময়।ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে,রোদেও আজ তেমন একটা তেজ নেই।খুবই মনোরম পরিবেশ।
আশিয়ান:-ও বউ,,,
ঊদিতা:-হুম,,
আশিয়ান:-এত্তগুলা ভালোবাসি তোমায়!কখনো ছেড়ে যেও না বউ,,,বাঁচবো না তোমাদের ছাড়া!আমি আমার বউ বাচ্চা ছাড়া অসহায়।
ঊদিতা আশিয়ানের বুকে মাথা রেখে মুখ একটু উঁচু করে আশিয়ানের থুতনিতে চুমু খেয়ে বললো;
ঊদিতা:-কথা দিলাম,,,মৃত্যু ছাড়া আমাকে আপনার থেকে কেউ কখনো আলাদা করতে পারবে না।কারণ আমি আমার বাচ্চার বাবাকে অনেক ভালোবাসি।যা কখনো পরিমাপযোগ্য নয়।আই লাভ ইউ প্রিয়!
আশিয়ান মুচকি হেসে ঊদিতার ঠোঁটে আলতো ভাবে নিজের ঠোঁট জোড়া ছোঁয়।দুহাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে;
আশিয়ান:-পুরোপুরি ভাবে তোমাতে বিলীন হয়ে গেছি সোনা।তোমার নেশায় পুরোপুরি ঘায়েল আমি।এই নেশা কখনোই কাটবে না।প্রতিনিয়ত তোমার প্রেমে নতুন করে পড়ি আমি বউ।আজীবন তোমাকে একইভাবে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন রূপে ভালোবেসে যাবো।কথা দিলাম।ভালোবাসি বউ,,খুব ভালোবাসি।
ঊদিতার ঠোঁটের কোণে একটুকরো তৃপ্তির হাসি ফুটে ওঠলো।আশিয়ানের ঠোঁটেও হাসি।
আশিয়ান ও ঊদিতা দুজন লাভবার্ডসের মতো।একজন ছাড়া আরেকজন নিষ্প্রাণ।দুজন দুজনের মধ্যে পুরোপুরি রূপে বিলীন হয়ে গেছে।এই ভালোবাসার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই।
দুজন দুজনের দিকে আবেগঘন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।দুজনেরই চোখের তারায় ফুটে ওঠেছে এক অদ্ভুত তৃষ্ণা।এই তৃষ্ণা জল দ্বারা নিবারণীয় নয়,,,এটা ভালোবাসার তৃষ্ণা।আশিয়ান গলা ছেড়ে তার অপরূপ খোলা কন্ঠে গান গেয়ে উঠলো;
সেদিনের সেই বিকেল বেলায়
রৌদ্রছায়ার দারুন খেলায়
ভালোবাসার রঙিন ভেলায়
ভেসেছিলাম দুজনায়।
তারই পর থেকে
ভালোবেসে তোমাকে
দিনকে বলি রাত
রাতকে বলি দিন
এভাবে আমি আজ
#তোমাতে বিলীন।🍁
তাদের দুজনের পবিত্র ভালোবাসা একইরকম ভাবে অটুট থাকবে,,,এ ভালোবাসা কখনো ফিকে হবার নয় বরং যত দিন যাবে এই ভালোবাসার রং ততই আরও উজ্জ্বল হবে।এবং দিনশেষে দুজন দুজনাতেই বিলীন হয়ে যাবে।
…সমাপ্ত…
(যাক অবশেষে গল্পটা শেষ হলো।এই গল্প লিখতে গিয়ে বেশ কয়েকজনের অনেক কটুকথা শুনেছি।তবে সবার সাপোর্ট পেয়ে আজ গল্পটা শেষ করতে পারলাম।অনেক ধন্যবাদ জানাই সবাইকে আমায় এত সাপোর্ট এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য।গল্পটা আমি একটু ইউনিক ভাবে লিখতে চেয়েছি।আমি মানছি গল্পে নায়ক নায়িকাকে অনেক দেরীতে দেখা করিয়েছি এজন্য অনেকে আমার উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন।একজন বলেছেন নামের সাথে নাকি গল্পের কোনো সার্থকতা নেই, জানি না উনার এমনটা কেন মনে হলো।যাকগে সেসব,আজকের লাস্ট পার্টটা পড়ে কার কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।কেউ আবার নেক্সট বইলেন না যেন।সবাইকে অনেক ভালোবাসা দিলাম।দেখা হবে পরবর্তী কোনো গল্পে।আর হ্যা এই গল্পের সিজন টু চেয়ে লজ্জা দিবেন না প্লিজ।আমার মাথায় এরকম কোনো থিম আসে নি।আসলে অবশ্যই দিবো।ভালো থাকুন সবাই আল্লাহ হাফিজ!❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here