#মন_পাথরে_হঠাৎ_ঝড়
#পর্ব_১৫
Tahrim Muntahana
ভার্সিটি এসেছে তারিম। আদর, সুবাহ কেউ আসেনি আজ। তারিম জানতো আদর আসবেনা কিন্তু সুবাহ’র আসার কথা ছিলো। হঠাৎ ফোন করে বলল আসবেনা। তারিম ভাবছে সুবাহ তো কথার খেলাপ করার মেয়ে না। তাহলে এমন করবে কেন? এর পেছনে কিছু কারণ নেই তো? ভাবতে ভাবতেই গেটে আতইয়াব কে দেখে তারিমের আর বুঝতে বাকি থাকলো না এই সব আতইয়াবের ই কাজ। মনে মনে নিজেও প্ল্যান করে নিলো উল্টো চাল দেওয়ার। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে নিজেকে আড়াল করে নিলো। আতইয়াব সরাসরি তারিমের ক্লাসের দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই ভিড়ের মধ্যে একটা মেয়ের কথা শুনেই তারিম রেগে ফুসে উঠলো। মেয়েটি আতইয়াব কে দেখেই ক্রাশ খেয়েছে। তারিম আর সেখানে থাকতে পারলো না। রেগে গেলেই তার সব প্ল্যান ফ্লপ। চুপি চুপি ভার্সিটির পেছন দিয়ে রাস্তায় এসে দাড়ালো। বাড়ি ফিরার কথা ভাবছে না সে। সুবাহ কেও একটা শিক্ষা দিতে ইচ্ছে করছে তার। বেস্টুর সাথে এমন করলো? রিকশা নিয়ে সুবাহ’র বাড়ির দিকে রওনা হলো।
নিজের শশুড় বাড়িতে হঠাৎ করে তারিম কে দেখে চমকে উঠলো সুবাহ। তারিম স্বাভাবিক ভাবেই সোফায় বসে শরবত গিলে যাচ্ছে। ফালাহ’র মা যত্ন করে খাওয়াচ্ছে তাকে। সুবাহ মাথা নিচু করে বসে আছে। তারিম খাওয়ার মাঝেই বলে উঠলো,
তুই আবার বেইমানি করলি আমার সাথে? একে তো পিরিত করে বলিস নাই তার উপর আজকে এমন করলি। অল্পের জন্য ফেঁসে যাচ্ছিলাম আমি। কি হতো? সবটা প্ল্যান গন্ডগোল হয়ে যেতো। এতকিছুর পরেও যে আমার না হওয়া শশুড় বাড়িতে এসেছি ; কই একটু যত্ন করবি। তা না করে মাথা নিচু করে অপরাধির মতো বসে আছিস! বলি লজ্জা করে না?
তারিমের এমন কথায় ফালাহ’র মা হিহিহি করে হেসে দেয়। সুবাহ কটমট চোখে তাকিয়ে থাকে তারিমের দিকে। তারিম ভ্রু নাচিয়ে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিবে সুবাহ ঝটপট তারিমের হাত ধরে নিজের ঘরে ঢুকে পড়ে। তারিম ঘরে ঢুকেই হো হো করে হেসে বিছানায় শুয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর বিছানা থেকে উঠেই বিচলিত কন্ঠে বলে,
এই না এই বিছানায় শুয়া যাবে না। আল্লাহ কি করতে যাচ্ছিলাম। আমার না হওয়া বিছানাটা! এইখানেই দুজনে রোমান্স করো তাইনা। অথচ তোদের কিছু সময় পর বিয়ে করে জামাইকে ভালোবাসিই বলতে পারলাম না। হাই কপাল!
ডং করে সোফায় বসে পড়লো তারিম। সুবাহ দাড়িয়ে শুধু তারিমের কান্ড দেখছে। তাকে যে আজ তারিম জ্বালাতে এসেছে সে প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলো। তারিম আবার সোফা থেকে দাড়িয়ে গেলো। মুখে হাত দিয়ে অবাক কন্ঠে বলল,
এই আবার ভুল করতে যাচ্ছিলাম। ছি ছি। আমার না হওয়া সোফাটাই ; ভাইয়ার কোলের উপর বসে থাকো তাইনা? নট নট এখানেও বসা যাবে না। আমি বরং দাড়িয়েই থাকি।
সুবাহ এবার বিরক্ত হলো। চোখ ছোট হয়ে এলো তার। সুবাহ কে বিরক্ত করতে তারিমের তো অসম্ভব ভালো লাগছে। দেখ এবার কেমন লাগে। তাকে ভার্সিটিতে একা ফেলে এখানে সংসার করা হচ্ছে। আজকের দিনটাই মাটি করে দিবে সে। ভেবেই একগাল হেসে সুবাহ কে জড়িয়ে ধরলো। বলে হঠাৎ করেই ছেড়ে দিয়ে বলল,
এই আমি কোথায়? এইখানে থাকা যাবে না। এ তো আমার না হওয়া সেই ঘর টা। কি অলক্ষুণে ব্যাপার। আর তুই তো আমার না হওয়া জামাই টার বউ। ছি ছি তোকে জড়িয়ে ধরে কি পাপ টাই না করলাম। এ তো ঘোর পাপ। আল্লাহ আপনি মহান প্লিততত হেলেপস মি। আমাকে পরিশুদ্ধ করে দিন। আমি এ মুখ কাকে দেখাবো। আমি…
আর বলতে পারলো না তারিম। তার আগেই তার পিঠে ঝাটার বারি পড়লো। লাফিয়ে উঠলো সে। পেছনে সুবাহ কে শাশুড়ি রিনা খানের মতো দাড়িয়ে থাকতে দেখে আত্মা কেঁপে উঠে তারিমের। বেশীই বিরক্ত করে ফেলেছে সে। আরো কয়টা ঝাটার বারি যে তার পিঠে পড়বে এখান থেকে এই মুহূর্তে না গেলে সে ভালোয় বুঝতে পারছে। দৌড় দিতে যাবে সামনে এসে দাড়ালো ফালাহ। তারিম হাহা হেসে ফালাহ’র পেছনে দাড়িয়ে পড়লো। ফালাহ তো এতক্ষণ দরজায় দাড়িয়ে সবকিছুই শুনেছে। তার বেশ হাসিও পাচ্ছে কিন্তু বউয়ের যে রূপ দেখছে হাসা মানেই ফাঁসা!
তারিম যা ভেবেছিলো তার কিছুই হলো না। সুবাহ ঝাটা টা রেখে বিছানায় বসলো। মুখ ভার করে বলে উঠলো,
তুই কেন এসব বলছিস আমি জানি। আমার কোনো দোষ নাই। সব দোষ তোর না হওয়া জামাইটার!
তারিম কিছুটা ইতস্তত করলো। ফালাহ’র সামনে নিজের স্বরূপ বের হয়ে গেলে সেরেছে। ফালাহ সুবাহ’র কথা শুনে হো হো করে হেসে দিলো। দুই জনের চোখ ই এখন তার উপর। হয়তো ভাবছে হাসির কি হলো। হাসি থামিয়ে ফালাহ বলল,
আমার কোনো দোষ নাই। সব দোষ তোমার জামাই য়ের। আমার না হওয়া বউটার সাথে তার জামাই একান্তে কিছু সময় কাটাতে চেয়েছিলো তাই আমাকে শাসিয়ে বলেছে সুবাহ কে যেন আজকে সময় দিই! না হলে বউ ইগনোরের মামলা ঠুকে দিবে!
ফালাহ’র কথায় তারিম ভ্রু কুচকালো। ও তাহলে এই ব্যাপার। তারিম ঝাঝালো কন্ঠে বলে উঠলো,
বুঝলাম! দোষ তো আপনারাও আছে। আপনি সবটা জেনেও রাজী হয়ে গেলেন। ওওও বউয়ের সাথে সারাক্ষণ লেপ্টে থাকতে ইচ্ছে হয় তাইনা? আপনারও শাস্তি পাওয়া উচিত। তার জন্য কি করতে হবে এই হৃদযা চৌধুরী জানে!
ফালাহ এবার থতমত খেয়ে গেলো। এই যাহ দোষ না করেও শাস্তি। একটু তো বউকে কাছে পেতে চেয়েছিলো কি এমন পাপ করেছে সে! সুবাহ মিটমিটিয়ে হাসছে ফালাহ’কে জব্দ হতে দেখে। তারিম ধপ করে সোফায় বসে পড়লো। ফালাহ করুণ চোখে সুবাহ’র দিকে তাকালো। ফালাহ ভাবছে তারিম আজ ঘর থেকে যাবে না! অন্যদিকে তারিম ভাবছে অন্যকিছু। কিছুক্ষণ ভেবে আবেগি কন্ঠে বলে উঠলো,
সুবু চল আদুকে দেখে আসি। বাড়িতে একা একা কি করছে কে জানে। ওই ইবলিশ টা তো এখনো ভার্সিটি আমাকে খুঁজে চলছে। হিহিহি উচিত শিক্ষা হয়েছে। এবার বুঝবে এই হৃদযা চৌধুরী কি? এখন আমি সম্পূর্ণ হৃদযা চৌধুরী যে তার ভাইয়ের ভালোবাসার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এই সংগ্রাম চলতেই থাকবে। দরকার পড়লে হরতাল ধর্মঘট অবরোধ অনশন সব করবো তবুও পিছিয়ে যাবো না! আমার দাবী মানতেই হবে।
তারিম যেন হৃদানের বোন হৃদযার ক্যারেক্টারে ঢুকে গেছে। এ যেন বিপ্লবি কন্ঠস্বর। হৃদান চৌধুরী ছুরি চালায় এ চালাচ্ছে কথার বুলি! ফালাহ সুবাহ হা করে তারিমের কথা শুনে যাচ্ছে। তারিম একপলক ওদের কে দেখে নিয়ে স্বাভাবিক হয়ে আবার নরম কন্ঠে বলল,
চল না সুবু। আদুর খুব ভালো লাগবে আমাদের দেখে। কত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেছে ওর সাথে আমরা গেলে কিছুটা সময় ভালো কাটবে ওর। ফোন ও তো নিয়ে নিয়েছে ইবলিশে!
তারিমের সম্মোহনী কথায় সম্মোহিত হয়ে সুবাহ’র মুখটাতেও দুঃখী দুঃখী ভাব এসে গেলো। আহারে! তারিম তো ঠিকই বলেছে। মেয়েটা সারাদিন একা একা কি করবে! তারা বেস্ট ফ্রেন্ড; এই সময়ে পাশে থাকা তাদের বন্ধুত্বজনিত কর্তব্য! ভেবেই থ্রিপিস নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলো। সুবাহ যেতেই ফালাহ’র গলা টিপে ধরলো তারিম! ফালাহ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। তারিম কিটকিটিয়ে হেসে বললো,
ভালো হয়েছে না। বউয়ের সাথে রোমান্স করবেন? করাচ্ছি না? এখন ঘরে একা একা বসে কোলবালিশের সাথে রোমান্স করেন। আমার ভাইকে কষ্ট দেওয়ার ফন্দি এটেছে ওই আতইয়াব তাযিন ইততেয়াজ। নিজেও টের পাবে হুহ! ইটস তারিম এও নট ইটস হৃদযা চৌধুরী!
ভাব নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এলো তারিম। ফালাহ এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এ যেন অন্য তারিম কে দেখছে সে। আগে তারিম কখনোই এমন ছিলো না। এখন তো কিলার কিলার লুক নিয়ে থাকে। হৃদান চৌধুরীর বাতাস পেয়েছে বলে কথা! বড় করে শ্বাস নিলো ফালাহ! আহা কষ্ট বন্ধুকে সাহায্য করে নিজে ফায়দা লুটাতে চেয়েছিলো আর এখন বন্ধু তো ছ্যাকা খেলো খেলোই; সাথে তাকেও ছ্যাকা খেয়ে আহম্মক হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। সুবাহ রেডি হচ্ছে খুশী মনে। ফালাহ’র দিকে তাকাচ্ছে না একটুও। ফালাহ অসহায় চোখে সবটা দেখে যাচ্ছে। সুবাহ রেডি হয়ে ঘর থেকে বের হতেই দেখতে পেলো তারিম তার শাশুড়ির সাথে জমিয়ে আলাপ করছে। সুবাহ যেতেই তার শাশুড়ি বলে উঠলো,
সাবধানে যাস। সন্ধ্যার দিক দিয়ে ফালাহ গিয়ে নিয়ে আসবে চিন্তা করিস না। আদরের সাথে একবার কথা বলিয়ে দিস আমাকে। আহারে মেয়েটা!
সুবাহ মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো। ওরে শাশুড়ি। ধন্য জীবন! তারিম বিদায় নিয়ে সুবাহ কে নিয়ে বের হয়ে গেলো। ফালাহ নিজের ঘরের জানালা দিয়ে সুবাহ’র যাওয়া টা দেখে বিছানায় শুয়ে পড়লো চিত হয়ে। আহা বিবাহিত জীবন! পুরাই প্যারাময়!
______________________
ফোনে কথা বলা শেষ করে বেলকনিতে বসেছিলো আদর। কিছুক্ষণ পর পর মুচকি হাসছিলো। হটাৎ নিজের ঘরে তার দুই বেস্টুকে দেখে অবাক হই সে। তার চেয়ে বেশী খুশী হয়। আনস্পেক্টেড ছিলো। তারিম সুবাহ আদরকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে ঠোঁটে দুষ্টু হাসি এনে ভ্রু নাচাতেই আদর লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়। ভাবতে থাকে সকালের কথা,
সকালে ঘুম থেকে উঠেই হঠাৎ করে রাতের কথা মনে হয় আদরের। আবছা ছায়াটা সে এখনো টের পাচ্ছে মনে হয়। কে এসেছিলো? এত ঘুম ই বা আসলো কি করে তার চোখে? ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো ফ্রেশ হতে। বাম হাত নাড়াতে কষ্ট হচ্ছে। ব্যাথাটা একটু কমলেও পুরোটা যায়নি। ওয়াশরুমের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়লো একটি শপিং ব্যাগ। কৌতুহলী হয়ে এগিয়ে গেলো সে। ব্যাগ টা নিয়ে আবার ঘরে চলে আসলো। কি হতে পারে ব্যাগটায়? ভেতরের জিনিসটা বের করতেই আদরের মুখ হা হয়ে গেলো। আই ফোন! নিউ! তার তো আছে। সাদা চিরকুট দেখে ঝটপট হাতে তুলে নিলো,
অবাক হয়েছো আন্ডাবাচ্চা? তোমার থেকে দূরে থাকা সম্ভব না। লুকিয়ে রেখো। কথা হবে! আই নিড ইউ পাখি!
আদরের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো। রাতে আবছা ছায়াটা যে তার ক্যাবলাব্রিটিশ ছিলো বুঝতে পেরেই আনন্দিত হলো সে। বক্সটা লুকিয়ে রেখে ফ্রেশ হয়ে এলো। এখনি আবার ভাইয়া এসে যাবে। ঠিক তাই হলো ; আদর ফ্রেশ হয়ে আসতেই আতইয়াব খাবার আর ঔষধ নিয়ে ঘরে ঢুকলো। আদর কিছুই বললো না। চুপচাপ আতইয়াব যা ফলে শুনে নিলো। খাবার, ঔষধ খাইয়ে আতইয়াব নিচে চলে গেলো। আদর অপেক্ষা করতে থাকে আতইয়াবের যাওয়ার। ঠিক আধাঘন্টা পর আতইয়াব বাড়ি থেকে বের হয়। তখনি ফোন টা অন করে ফোন লাগাই হৃদের নম্বরে। সেই থেকে যে কথা বলে যাচ্ছে কলিং বেলের শব্দে ফোন রেখে বেলকনিতে বসে আদর।
আদর কে ভাবনার জগতে হাসতে দেখে তারিম, সুবাহ জোরে হেসে উঠে। আদরের কাছে সবটা শুনে ওরা এটা ওটা বলে আদর কে লজ্জা দেওয়ার চেষ্টা করলেও; তেমন লাভ হয়। আদরের লজ্জাটা আবার একটু কম!
সারাটা দিন অনেক ভালো কেটেছে আদরের। প্রিয় মানুষটা হঠাৎ করে চমক দেওয়া; কথা বলা; দুই বেস্টুর আগমনে আদর যেন ভুলেই গেছে কালকের হামলার কথা। অন্যদিকে হৃদান এতকিছুর মাঝেও আদরের সাথে কথা বলতে পেরে মহাখুশী। গুনগুনিয়ে গান করছে; হাটার তালে তালে নাচছে; এ যেন অন্য হৃদান! আগের হৃদান চৌধুরী ড্রেনে ডুবে গেছে! পান্চু তো বসের আচরণে বারবার টাকলা মাথায় হাত বুলাচ্ছে। তার মনে এখন অন্য চিন্তা ঘুরছে। চিন্তাটাও বিশাল। মনের মধ্যে প্রেম প্রেম পাচ্ছে তার! প্রেম করলে সে বসের মতো উুরুউুরু মন নিয়ে থাকতে পারবে। গুনগুনিয়ে গান গাইবে, ডিউটি করতে করতে হালকা নাচবে; এও জাস্ট ইয়ো ইয়ো ব্যাপার! প্রেমের কথা মনে পড়তেই পান্চুর চোখে একটা মেয়ের ছবি ভেসে উঠে। চিক চিক করে উঠে চোখ! আহা কি সুন্দর মেয়েটা। শালীন ভাবে চলাফেরা করে। তাকে দেখেও কেমন মুচকি হাসছিলো। তাহলে কি সে ধরে নিবে মেয়েটির তাকে পছন্দ হয়েছে। ভাবতেই খুশিতে ভরে উঠলো ভেতরটা। সে ও প্রেম করবে!
সেদিন একটি কাজে বাইরে গিয়েছিলো পান্চু। হেটে হেটে আসছিলো বিকেল দিকে। হটাৎ করেই একটা মেয়েকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অবাক হয় পান্চু। প্রথমে মনে হয়েছে মেয়েটি তার টাক মাথা থেকে বিদ্রুপ করে হাসছে পরে যখন মেয়েটি লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে হাসছিলো তখন পান্চু তাড়াতাড়ি চলে আসে সেখান থেকে। আল্লাহ’ই জানে শত্রুপক্ষের ফাঁদ কিনা। সে এসবে জড়াবে না। পরক্ষণেই পেছনে একপলক তাকিয়ে দেখে মেয়েটি তখনো মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে। গর্বে পান্চুর বুকের ছাতি ফুলে দ্বিগুন হয়ে যায়। ভাব নিয়ে গেট দিয়ে ঢুকতেই আরেকজন গার্ডের সাথে ধাক্কা খেয়ে টাকলা মাথায় ঠুস করে বারি খেয়ে আবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে পান্চু। ইতিহাস গড়েছিলো সেদিন। এরপর আর মনেই ছিলো না মেয়েটির কথা। হঠাৎ মনে আসায় ভালোই লাগছে। এবার প্রেম না বিয়েই করে ফেলবে সে। যদি টাকু দেখে পরে ছেড়ে দেয়। সে ছ্যাকা খেতে একদম অপটু! পান্চুর মতে ছ্যাকা খাওয়া মানেই বিয়ের জন্য একবছর দেরী করা। সে এটা কোনো ভাবেই চায়না!
বিষণ্ন মনে বাড়ি ফিরছে আতইয়াব। রাত ৮ টা বাজে। মুখে মলিনতা ছড়িয়ে আছে। পুরো একঘন্টা খুঁজেছে তারিম কে। না পেয়ে হসপিটাল চলে গিয়েছিলো সে। এরপর থেকেই মনটা বেশ খারাপ। একটুখানি কথা বলার জন্য ছটফট করছে সে। মনের মধ্যে নানান চিন্তা আঁকাবুঁকি করছে। মনে হচ্ছে তারিম কে হারিয়ে ফেলবে। ভাইয়ের এমন মলিন মুখ দেখে আদরের খারাপ লাগলো। বাট বেস্টুকে কথা দিয়েছে সে একদম চুপ থাকবে। তাই কিছু বলতে পারছে না। ভালো কিছুর জন্য কিছু কষ্ট ফেস করতে হয়! দেখা যাক সামনে কি হয়!
চলবে..?
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের মতামত আশা করছি। নেক্সট নেক্সট না করে গল্প সম্পর্কে কিছুটা বলুন! শুকরিয়া!)