অপরাজিতা – পর্ব 14

0
444

#অপরাজিতা
#১৪তম_পর্ব
#স্নিগ্ধতা_প্রিয়তা
রাজিতা “মানে?” বলার সাথে সাথে আনান ল্যাপটপের থেকে মুখ তুলে বলল,
–“একদম ন্যাকা সাজবে না এখন। এইসব ন্যাকামি আমার একদম ভালো লাগে না। তোমার বয়ফ্রেন্ড ছিলো তুমি একবার আমাকে জানাতে! আমি তোমাকে কখনো জোর করতাম না। ”
রাজিতা এবার রেগে গেলো৷ কারণ যে দোষ ওর নেই, তার অপবাদ ও কখনো মেনে নিবে না।
–“আপনি কিসের বয়ফ্রেন্ডের কথা বলছেন আর কিসের জোর করার কথা বলছেন? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না।”
–“তোমার কোনো রিলেশন ছিলো না বিয়ের আগে? কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিলো না?”
–“নিশ্চয়ই আপনার সাথে কেউ মজা করেছে। আপনি এটা বিশ্বাস করলেন কি করে? আমার রিলেশন থাকলে আপনাকে এতসহজে আপন করে নিতে পারতাম? আপনার বোঝা উচিৎ ছিলো।”
–“এটা কোনো মজা করার বিষয় হলো? আর এমনওতো হতে পারে যে, তুমি এতসব কিছু, এত ভালবাসা দেখে আগের সব ভুলে গেছো! আর এখন সবটা অস্বীকার করছো?”
রাজিতার রাগে-দুঃখে কান্না চলে আসলো। ও কান্না করতে করতে বললো,
–“আপনার থেকে আমি এমন কোনো কথা আশা করিনি৷ এই কয়দিনে আপনি আমাকে এই চিনলেন? আমি আমার সবটা উজার করে দিয়ে আপনাকে ভালবাসতে চাইছি, এটাই কি আমার অপরাধ? নাকি এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ নেই, এটাই আমার অপরাধ!”
আনান রেগে গেলে মাথা ঠিক থাকে না। এর আগে রাগটাকে কন্ট্রোল করতে পারলেও আজ রাজিতার সাথে অন্য একটা ছেলের ছবি দেখে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছে না। ও বুঝতে পারছে যে, ওর এই কথাগুলোর জন্য পরে ও নিজেই অনুতপ্ত হবে, কিন্তু রাজিতার পাশে অন্যকেউ জাস্ট ও সহ্য করতে পারছে না। রাজিতার চোখের পানিগুলোও ওর সহ্য হচ্ছেনা। ও নিজেকে কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করে রাজিতার কাঁধে হাত রেখে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললো,
–“তোমার বয়ফ্রেন্ড থেকে থাকলেও আমার কোনো সমস্যা নেই, কারণ সেটা তোমার অতীত ছিলো, আর আমি তোমার বর্তমান৷ কিন্তু তুমি আমাকে সেটা একবার জানাতে পারতে। আমি জানিনা ওই ছেলেটাকে তুমি কি বলে বুঝিয়েছো।তাকে সরি বলেছো কিনা। আর আমাকেও মন থেকে…”
এটুকু বলেই থেমে গেলো আনান। রাজিতা এক ঝটকায় নিজের কাঁধ থেকে আনানের হাত সরিয়ে নিয়ে বললো,
–“আপনার বলা শেষ হয়ে থাকলে আমি কি কিছু বলতে পারি?”
আনান এখন কিছুটা শান্ত হয়েছে। তাই শান্তস্বরে বলল,
–“হুম। বলো।”
–“আপনি কিসের ভিত্তিতে এতটা সিওর হলেন যে, আমার বয়ফ্রেন্ড ছিলো?”
রাজিতার কথা শেষ হতে না হতেই আনান নিজের ফোনের গ্যালারি বের করতে করতে বলল,
–“আনান রেদোয়ান প্রমাণ ছাড়া কখনো কাউকে দোষী করেনা। ”
তারপর নিজের ফোনে রাজিতা আর অন্য একটা ছেলের সাথে একের পর এক ছবি দেখিয়ে যেতে লাগলো আর বলতে লাগলো,
–“এগুলো কি মিথ্যা? এগুলোকে কীভাবে অস্বীকার করবে? এই ছেলেটার সাথে এত ছবি! দুজনের এই হাসিমুখ! এই আনন্দ! খুশি! এগুলো কি লুকানোর? আর এটাকে ইডিট কোনোভাবেই বলা যায়না। এইবার বলো! তোমার যদি এই ছেলেটার সাথে কোনো রিলেশন নাই থেকে থাকে, তাহলে এসব কি?”
রাজিতা এবার তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,
–“ওহ আচ্ছা, এই ব্যাপার! এতদিন তাহলে আপনিও আমার সাথে নাটক করেছেন। তাইনা?”
–“নাটক! কিসের নাটক? কি বলছো তুমি এসব?”
–“নাটক এটাই যে, আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন। এতটাই ঠুনকো ছিলো আপনার বিশ্বাস যে কয়েকটা ছবিই যথেষ্ট ছিলো তা গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য?”
–“তুমি কি বলতে চাইছো? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এই ছেলেটার সাথে যদি তোমার কোনো রিলেশন নাই থেকে থাকে, তাহলে এই ছবিগুলো এক্সপ্লেইন করো!”
–“এই ছবি! এই ছবি এক্সপ্লেইন করার মতো ক্ষমতা আমার নেই। যাকে আমি নিজের ভাই মনে করি, যে আমাকে ছোটবেলা থেকে নিজের ছোট-বোনের মতো ভালবাসা দিয়ে আসছে, তারনামে এইসব নোংরা কথা বলতে আপনার বিবেকে একটুও বাধলো না? আর তখনতো ঠিক-ই বড় মুখ করে বলছিলেন যে, এসব ছোট-খাটো বিষয়ে নাক না গলাতে! যা করিনি তা নিয়ে মাথা না ঘামাতে! আর এখন কয়েকটা ছবি দেখেই আপনার মাথা ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেলো? বাহ! আনান সাহেব! বাহ! এই আপনার বিশ্বাস! তারিফ করতে হয় আপনার বিশ্বাসের।”
বলেই আনানকে আরকিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চোখ মুছতে-মুছতে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো রাজিতা। আনান হাঁ করে ওর চলে যাওয়া পথের দিকে চেয়ে রইলো।
রাজিতার কথাগুলোর মানে বুঝতে আনানের বেশ খানিকটা সময় লাগলো৷ যখনি বুঝতে পারলো যে, ছবির ছেলেটা আর কেউ নয়, রাজিতার চাচাতো ভাই নিয়ন, তখন লজ্জায় নিজেকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো আনানের।
না জেনে, না শুনে ও রাজিতার উপরে এতোবড় একটা মিথ্যে অপবাদ দিয়ে দিলো! শুধু তাই নয়, ওর ভালবাসা আর বিশ্বাসকে আঘাত করতেও ছাড় দেয়নি! এতটা কেয়ারলেস কি করে হয়ে গেলো আনান! জাস্ট অন্য একটা ছেলের সাথে রাজিতার কিছু ছবি দেখেই আজ ও নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি! যদি অন্যকিছু হতো তাহলে!
রাজিতার প্রতি ওর বিশ্বাস এতটা ঠুনকো কি করে হতে পারে! ও যে ওর জীবনের চাইতেও রাজিতাকে বেশি ভালবাসে! এমন একটা ভুল ও কি করে করতে পারলো!
রাজিতাকে ভুল বোঝার আগে ওকে ভালভাবে খবর নেওয়া উচিৎ ছিলো যে, ছেলেটা কে? ছেলেটার সাথে রাজিতার কি সম্পর্ক? ছবিটা কে পাঠিয়েছে?
এটুকু ভাবতেই আনান এইবার গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলো এটা ভেবে যে, আসলেইতো ছবিগুলো কে পাঠালো আনানকে? সে নিশ্চয়ই রাজিতার ভালো চায়না। কে হতে পারে এটা! আসল আইডি থেকে অবশ্যই পাঠায়নি! রাজিতার সাথে এত শত্রুতা কার থাকতে পারে?
নিলা! নাহ! ওরতো এখন নতুন জীবন শুরু হতে যাচ্ছে, ও নিশ্চয়ই হবে না। তাহলে কি নিয়ন নিজে পাঠিয়েছে? কিন্তু ওতো রাজিতার ভালো চায়! নাকি রাজিতার চাচির কথাই ঠিক! নিয়ন রাজিতার অগোচরেই ওকে পছন্দ করে! আনান আরকিছু ভাবতে পারেনা।
এখন ওর প্রথম কাজ হবে রাজিতার রাগ ভাঙানো। আর দ্বিতীয় কাজ হবে ছবিগুলো কে পাঠিয়েছে তা খুঁজে বের করা৷ ছবিগুলো অন্যকারো হাতে পড়লে কি হতে পারে তা ভাবতেই আনানের শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো। ও নিজেই যেখানে ছবিগুলো দেখে ধোঁকা খেয়ে গেছে, সেখানে অন্যকেউ দেখলে কি ভাববে!
রাজিতা গোমড়া মুখে ওর শাশুড়ীর রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো যে, উনি একাই আছেন রুমে, কোরান পড়ছেন। রাজিতা ফিরে আসতে লাগলো, তখন ওর শাশুড়ী কোরানের দিক থেকে মুখ না ঘুরিয়েই রাজিতাকে বলল,
–“চলে যাচ্ছিস কেন? ভেতরে আয়।”
রাজিতা চুপিসারে এসে ওর শাশুড়ীর পাশে বসল। ওর শাশুড়ীর মধুর কণ্ঠে কোরান তেলওয়াত শুনতে ভালই লাগছিলো।
কিছুক্ষণ পর ওর শাশুড়ী কোরান পড়া শেষ করলেন। রাজিতার বিবর্ণমুখ দেখে বুঝে গেলেন যে, নিশ্চয়ই কান্নাকাটি করেছে৷ উনি রাজিতাকে আরো কাছে ডেকে নিয়ে ওর থুতনিতে হাত রেখে বললেন,
–“দেখি মুখটা! কান্না করেছিস?”
–“না, আসলে..”
–“আনান কিছু বলেছে?”
–“না, আসলে বাবা-মায়ের কথা খুব বেশি মনে পড়ছিলো।”
–“আমরা পাশে থাকতেও যদি বাবা-মায়ের কথা মনে পড়ে, তাহলেতো বুঝব যে, আমাদের এখানো আপন ভাবতে পারিস নি!”
রাজিতার চোখের পানিগুলো যেন একটু ভালবাসার অপেক্ষায় ছিলো, তার ছোঁয়া পেতে না পেতেই আবার বর্ষণ শুরু হলো।তারপর কেঁদে-কেঁদে বলতে লাগলো,
–“এক বাবা-মাকে হারিয়েছি, আরেক বাবা-মাকে হারালে হয়ত আমার বেঁচে থাকাটাই বৃথা হয়ে যাবে!”
–“তাহলে কান্না করছিস কেন? নিশ্চয়ই আনান কিছু বলেছে? ”
রাজিতা মাথা নাড়িয়ে, “হুম” বলতেই ওর শাশুড়ী বলল,
–“দাড়া, আমি এক্ষুণি আনানকে ডাকছি। কি এমন হয়েছে যে, মেয়েটাকে এভাবে বকাবকি করতে হবে। ও কি ভেবেছে! তোর কেউ নেই বলে যা খুশি তাই বলবে! আমাদের কি চোখে পড়ে না ওর!”
রাজিতা কান্না থামিয়ে অবাক চোখে ওর শাশুড়ীর কথাগুলো শুনছে।তারপর বলল,
–“তেমন কিছু হয়নি মা। আপনি শুধু-শুধু উনাকে ডাকছেন।”
–“সত্যিতো? আবার কিছু বললে সোজা আমাকে নালিশ জানাবি। আমি ওকে শিক্ষা দিবো।”
–“হুম।”
তারপর তিনি একটু নরমসুরে বললেন,
–“তোদের জীবনটা আমরা অনেক বছর আগেই পার করে এসেছি মা। এসব আমরা বুঝি। আর সন্তানেরা কখনও মায়ের চোখকে ফাঁকি দিতে পারে না। আজ তোকে আমার একটা গোপন কথা বলি। শুনবি?”
রাজিতা অনেক আগ্রহের সাথে ওর শাশুড়ীর দিকে তাকিয়ে বলল,
–“অবশ্যই। বলেন।”
–“নিলাকে দেখতে গিয়ে তোকে দেখে যখন জানতে পারলাম যে, তুই এতিম! মা-বাবা কেউ নেই, তখন কেন জানিনা তোর প্রতি আমার একটা আলাদা মায়া জন্মে গিয়েছিল। কিছুদিন হলো আমার মা মারা গিয়েছেন, তাতেই আমার নিজেকে বড্ড অসহায় লাগে। আর তুইতো ছোট থেকেই মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত! ”
তারপর কিছুক্ষণ থেমে থেকে তিনি আবার বললেন,
–“আমি কেন জানি মন থেকে শুধু তোকেই বৌমা হিসেবে চাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিলো যে, এই এতিম মেয়েটাকে পেলে মায়ের মতো আদর দিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতাম। একটা এতিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেও যে অনেক অনেক পূণ্যরে মা! আল্লাহ হয়ত আমার মনে-মনে করা দোয়াটা কবুল করে নিয়েছিলেন। তাইতো যেভাবেই হোক, তোকেই আমার ঘরের লক্ষী করে পাঠালো। এইজন্যইতো বলে যে, আল্লাহর কাছে সব-সময় চাইতে থাকো, চাইতেতো আর ক্ষতি নেই। আল্লাহ দিলেওতো দিতে পারেন, কারণ সবকিছুতো তার-ই হাতে।”
রাজিতা কথাগুলো শুনে চোখের পানিগুলোকে আবার মুক্ত করে দিলো। তারপর ওর শাশুড়ীকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে কান্না করলো।
রাতে খাওয়া শেষে বইপত্র নিয়ে রাজিতা ওর শাশুড়ীর রুমে চলে গেলো। আনানকে কিছু বলার সুযোগ-ই দিলো না।
“বিয়ের পর থেকে পড়াশোনা করতে দেখিনি! আর আজ মায়ের রুমে বই নিয়ে যাচ্ছে পড়তে!” মনে মনে বলতে লাগলো আনান।
রাজিতার রাগ ভাঙানোর জন্য আনান ওর জন্য সুন্দর একটা নেকলেস কিনে এনেছে৷ ফেরার পথে একটা ফুলের মালাও এনেছে৷ মেয়েদের নাকি উপহার অনেক পছন্দ! তাও যদি রাজিতার রাগ ভাঙে! কিন্তু আনানের সাথে কথাই যদি না বলে ও রাগ ভাঙাবে কি করে! ওর মায়ের রুমে ঢুকে বসে আছে!
আনান রুম থেকে বের হতেই দেখলো যে, ওর বাবা নিজের বালিশ নিয়ে গেস্ট রুমের দিকে যাচ্ছে। আনান ওর বাবাকে থামিয়ে বলল,
–“কি ব্যাপার বাবা! তুমি বালিশ নিয়ে কোথায় ছুটছ?”
ওর বাবা বিষন্ন গলায় বললেন,
–“দুই শাশুড়ী বউমা বায়না ধরেছে আজ একসাথে থাকবে! আমার আর কি করার আছে! তল্পিতল্পা নিয়ে ছুটছি! তুইও যা, ঘুমিয়ে পড়।”
আনানের খুব রাগ হচ্ছে রাজিতার ব্যবহারে। স্বামীর সাথে একটু রাগারাগি হয়েছে, সেটা পুরো পরিবারকে জানিয়ে বেড়াতে হবে! আজব মেয়ে একটা! কোনো কমনসেন্স নেই!
রাগে গজরাতে গজরাতে ওর মায়ের রুমে গিয়ে দেখলো যে, রাজিতা ওর মায়ের পাশে শুয়ে আছে। আনানকে দেখে ওর মা বলল,
–“রাজিতার নাকি ওর মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে। তাই ও আজ আমার কাছে থাকবে।”
তারপর আনানকে ইশারায় বুঝালেন চলে যেতে, উনি একটু পর রাজিতাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে পাঠিয়ে দিবেন।
রাজিতা ওর শাশুড়ীর পাশে শুয়ে ভাবতে থাকে যে, মায়েরা বুঝি এমনি হয়!
আনান শুয়ে-শুয়ে রাজিতার জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ আস্তে করে দরজা খোলার শব্দে লাফ দিয়ে উঠে আনান। তারপর দেখে যে, রাজিতা আস্তে আস্তে চোরের মতো দরজা লাগাচ্ছে।
রাজিতা আনানকে পাশ কাটিয়ে গিয়ে শুয়ে পড়লো।আনান আস্তে করে বলল,
–“আমার বউটার রাগ কি কমেছে!”
রাজিতা তবুও চুপ করে আছে। রাজিতার এই ব্যবহার আনানের আর সহ্য হচ্ছেনা। ও একটু রাগান্বিত স্বরে বলল,
–“তুমি এসব কি শুরু করেছো? সবাইকে বলে বেড়াতে হবে যে, আমার সাথে রাগ করে আছো?”
রাজিতা এবার আস্তে করে বলল,
–“আপনাকে কে বললো যে, আমি সবাইকে এসব বলে বেড়াচ্ছি?”
–“তাহলে আমার থেকে দূরে-দূরে ছিলে কেন এতক্ষণ? আমি আসলেই জানতাম না যে, ওইটা নিয়ন ভাইয়ার ছবি। আমিতো ভেবেছিলাম যে, ওইটা অন্যকোনো ছেলের ছবি!”
–“আর আপনি ওমনি আমাকে সন্দেহ করা শুরু করে দিলেন? একবার আমার কাছে সত্যিটা জানারও প্রয়োজন মনে করলেন না?”
–“আচ্ছা, আমি মানছি আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। আমার জায়গায় তুমি থাকলে কি করতে? তুমি কি আমায় ভুল বুঝতে না?”
রাজিতা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
–“জানিনা!”
–“কেন? এখন জানোনা কেন? আমার বেলায়তো ঠিক-ই বললে যে, ভুল বুঝেছি। তুমি হলে ভুল বুঝতে না?”
রাজিতা আরো একটু চুপ থেকে বললো,
–“হয়তো আমি আগে সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আপনিতো কোনোকিছু না জেনেই, কোনোকিছু না ভেবেই আমাকে উল্টাপাল্টা বলতে শুরু করলেন।”
–“আমি বলছিতো, অন্যকোনো ছেলের সাথে তোমার ছবি দেখে আমার মাথা ঠিক ছিলো না। নেক্সট এমন হবেনা।প্লিজ!”
বলেই পকেটে রাখা নেকলেসটা বের করে রাজিতার গলায় পড়াতে গেলো আনান।
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here