অপরাজিতা – পর্ব 23

0
433

#অপরাজিতা
#২৩তম_পর্ব
#স্নিগ্ধতা_প্রিয়তা
আনান গাড়িতে রাজিতার জন্য অপেক্ষা করছিলো। রাজিতার যেতে একটু দেরি হলো।
রাজিতা গাড়িতে উঠতেই গাড়ি স্টার্ট দিলো। আর আনান বলতে লাগলো,
–“দেখেছো, সাজুগুজু করতে কত সময় নষ্ট হয়! ”
রাজিতা ঠিকঠাক হয়ে বসতে-বসতে বলল,
–“যত দোষ এখন আমার সাজার, তাইনা! আর এমনি মনে হয় দেরি হয়না। তোমার মনে হয় দেরি হয়না কখনো? তুমিও কি আমার মতো সাজতে গিয়ে দেরি করো নাকি?”
কথাগুলো বলেই রাজিতা একটা হাসি দেয়। আনান মুগ্ধ হয়ে সেই হাসি দেখতে থাকে। তারপর বলে,
–“সত্যিই, হাসি মানুষের সৌন্দর্যটাকে হাজারগুণ বৃদ্ধি করে দেয়। আর তোমার হাসিটা শুধু তোমার সৌন্দর্য বাড়ায় তা নয়, আমার হৃদয়কেও ছুয়ে যায়! মনে হয় যে, সারাদিন এই হাসিমুখটা দেখি!”
–“হুম, সারাদিন-ইতো দেখো প্রায়!…. আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?”
–“হুম,বলো।
–“তার আগে বলো যে, সত্যি বলবে?”
–“আরে বাবা, আমি বলেছিতো যে, নেক্সট টাইম আমি তোমাকে কোনো মিথ্যে কথা বলব না, কোনোকিছু লুকোবো না! সো, বলে ফেলো।”
–“আচ্ছা, সুবহার মতো আমিও যদি কোনোদিন হারিয়ে যাই তাহলে তুমি কি আবার কাউকে খুঁজে নেবে? ”
–“হঠাৎ এমন আজগুবি প্রশ্ন কেন করছো?”
–“আজগুবি নয়। বলো না, প্লিজ।”
–“এইসব কথা একদম মুখে আনবে না বলে দিলাম। আমি তোমার কিছু হতেই দেবো না, নিজের জীবন দিয়ে হলেও তোমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করবো। ”
–“তারপরেও যদি কিছু হয়ে যায়?”
–“আল্লাহ তোমাকে আমার জন্যই বানিয়েছেন! সো, তিনি অবশ্যই তোমাকে আমার থেকে কেড়ে নেবেন না। আর কখনো এমন কথা মুখে আনবে না।”
রাজিতা এবার আনানের হাত ধরে ঝাঁকাতে থাকে৷
–“প্লিজ! প্লিজ! বলো! না হলে আমার আজ সারাদিন আর কাটবে না। বলো না, বললে কি এমন হবে…ও বুঝেছি, তারমানে আমি মারা যাওয়ার সাথে-সাথেই তুমি আরেকটা বিয়ে করে নিবে। তাইনা? তাই বলতে ভয় পাচ্ছো!”
–“তোমাকে ছাড়াও থাকতে হবে! সেই দিনটা যেন কোনোদিন না আসে। তাহলে আমি হয় পাগল হয়ে যাবো! আর নয়তো মরেই যাবো! ”
–“এটা কিন্তু বেশি-বেশি হয়ে যাচ্ছে! সত্যিটা বলো।”
–“বেশি-বেশি আমি করছি নাকি তুমি! এইটা জানার মতো কোনো কথা হলো!…. ওকে, কথা দিচ্ছি, তুমি না থাকলেও আমি তোমার স্মৃতি নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চাই। খুশি? তবে তোমাকেও তাই করতে হবে! রাজি?”
–“হুম! ১০০% রাজি।”
বলেই আনানের কাঁধে মাথা রাখে রাজিতা৷ আনান যা বললো তা সত্যি হোক বা না হোক, রাজিতা খুব খুশি! ও মারা যাওয়ার পর আনান যা খুশি করবে, কিন্তু ওকে খুশি করার জন্য হলেওতো এই কথাটা বলেছে যে, ওর স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকবে! এতেই ও ভীষণ খুশি!
রাজিতা ক্লাসরুমে ঢুকতেই অনেকেই ওর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
নেহাতো বলেই ফেললো,
–“কি ব্যাপার! আমাদের স্যারের মিসেস আজ এত সুন্দর করে কার জন্য সেজে এসেছে শুনি! স্যার কি আজ সেজে আসতে বলেছিলো নাকি?”
রাজিতা কিছু বলার আগেই নেহার পাশ থেকে ওর আরেক বান্ধবী বলে উঠল,
–“আজ মনে হচ্ছে দুজনের কোনো প্রোগ্রাম আছে। তাই না রাজিতা?”
রাজিতা ব্যাগটা রেখে বসতে-বসতেই বলল,
–“হুম, তুই ঠিক ধরেছিস। আমরা আজ আমার ছোট খালা শাশুড়ীর বাসায় যাবো। তাই একটু সাজলাম আর কি! কেন আমাকে ভালো লাগছে না?”
ঠিক তখন কোথা থেকে মালিহা উদয় হয়ে বলল,
–“এখানে কিসের ভালো লাগার কথা চলছে শুনি? ”
কথাটা বলে রাজিতার দিকে তাকাতেই ও যেন অবাক হয়ে গেলো।
রাজিতা ক্লাসে একদম সেজে যায়না তা নয়! তবে আজ যেন একটু বেশিই সেজেছে। আর নীল রঙের ড্রেসে ওকে পুরো আকাশ-আকাশ লাগছে! ও যাই পড়ে না কেন ওর চেহারার সাথে তা এত সুন্দর মানিয়ে যায় যে, ড্রেস সুন্দর নাকি রাজিতা, তা আলাদা করা মুশকিল হয়ে যায়! ওর সাথে-সাথে ড্রেসের সৌন্দর্যও যেন বহুগুণে বেড়ে যায়।
মালিহা ওর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
–“ওহ আচ্ছা! এখন ক্লাসেও এত সেজেগুজে আসা শুরু করে দিয়েছো না! কালতো দেখলাম, আসতেই চাইছিলে না প্রিয়তমকে ছেড়ে! খুব ভালবাসা চলছে তাই না!”
মালিহার কথায় রাজিতা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বললো,
–“আসলে কালকে তুই যা ভাবছিস তা নয়! একটু প্রবলেম ছিলো, তাই…”
–“হুম, আমরা জানিতো কি প্রবলেম ছিলো! ওসব বোঝার বয়স আমাদের হয়েছে ভাই! নিজের হাজব্যান্ডকে ছেড়ে ক্লাস কর‍তে মন চায় না, তাই না!”
মালিহার কথাগুলো শেষ হতে না হতেই ক্লাসে স্যার চলে আসলো।
আনান একটা ক্লাস শেষ করে অফিসরুমের দিকে যেতেই শুনতে পেলো যে, কেউ একজন ওর খোঁজ করছে। এই সময়ে ওকে কে খুঁজতে পারে! আর ক্যাম্পাসেই বা কেন এসেছে!
কাছাকাছি এগিয়ে যেতেই নিয়নকে দেখে চমকে গেলো আনান! নিয়ন এখানে কেন এসেছে! রাজিতার সাথে দেখা করতে আসেনিতো! এটা ভাবতেই আনানের মনে হলো যে, রাজিতার সাথে দেখা করতে আসলেতো রাজিতাকে খুঁজতো, ওকে যেহেতু খুঁজছে তার মানে ওর কাছেই এসেছে! কিন্তু কেন!
–“এই যে, আনান! ইনি তোমার খোঁজ-ই করছিলেন।…. আচ্ছা কথা বলো তাইলে তোমরা, আমি ক্লাসে যাচ্ছি।”
কথাগুলো বলেই আনানের সিনিয়র স্যার চলে গেলেন। আনান নিয়নকে কিছু না বলে নিজের অফিসরুমের দিকে গেলো।
নিয়নও চুপচাপ আনানের পেছনে যেতে লাগলো।আনান রুমের তালা খুলতে-খুলতে বলতে লাগলো,
–“আপনি এখানে? কি মনে করে?”
নিয়ন কিছুটা আমতা-আমতা করে বলল,
–“আসলে কথাগুলো তোমাকে কীভাবে বলব বুঝতে পারছি না। না বললেওতো তোমরা আমাকেই ভুল বুঝবে।”
আনান রুমে ঢুকে নিয়নকে বসার ইশারা করে নিজেও বসতে-বসতে বলল,
–“কি এমন কথা বলবেন যে, একেবারে ক্যাম্পাসেই চলে আসলেন?”
নিয়ন চেয়ার টেনে বসতে-বসতে বলল,
–“বাসায় যাওয়া ঠিক হবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। তাই এখানেই চলে আসলাম। কাল আমি জানতাম না যে, রিমির বোকামীর জন্য তোমরা সবাই আমাকে ভুল বুঝে বসে আছো!”
–“আপনার যা বলার একটু তাড়াতাড়ি বলুন, আমার আবার আরেকটা ক্লাস আছে।”
–“আমি বেশি সময় নেবো না। রিমি আমাকে সব বলেছে। কিন্তু ও এ কাজটা কেন করেছে তা বলেনি। ওকেতো অনেক বকাবকি করে এসেছি! এখন আর বকাবকি করে কি হবে বলো! যা করার তাতো করেই ফেলেছে!”
–“আপনি কি বলতে চাইছেন আমি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না। একটু সোজাসুজি বললে ভালো হতো।”
–“রিমি তোমাদের সবাইকে বলে বেড়িয়েছে যে, আমি নাকি রাজিতাকে পছন্দ করতাম। কিন্তু বিশ্বাস করো, ছোটবেলা থেকে আমি ওকে ছোট-বোন ছাড়া আর কিছু ভাবতাম না। ”
–“আমি কীভাবে আপনাকে বিশ্বাস করবো? আর রিমিই বা কেন মিথ্যে বলবে? যদি আপনি ওকে কিছু বলে নাই থাকেন?”
–“রাজিতাকে আমি এতো কেয়ার করতাম জন্য ও ভেবেছিলো যে, আমি রাজিতাকে পছন্দ করি। এটা ওর বোঝার ভুল!”
–“তাহলে ছবিগুলো? আপনি রিমিকে বলেননি আমাকে আপনার আর রাজিতার ছবি পাঠাতে? নাকি সেটাও এখন অস্বীকার করবেন?”
–“আমি জানিনা তোমাকে কীভাবে বিশ্বাস করাবো! জাস্ট বিলিভ মি! আমি সত্যি কথা বলছি! আমি নাতো কাউকে কিছু বলতে বলেছি রিমিকে! আর নাতো তোমাকে ছবি পাঠাতে বলেছি! ও এসব নাকি আমার জন্যই করেছে! কিন্তু আমি এসব করতে বলিনি ওকে, ইভেন এসব সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না।”
–“দেখুন আমি জানিনা আপনি সত্যি বলছেন নাকি রিমি! তবে এসব শুনে আমার কোনো লাভ নেই৷ আপনি চা-কফি কিছু খাবেন? আমি ক্লাসে যাবো। কিছু খেলে বসতে পারেন। আর না হলে আমি….”
–“না, আমি কিছুই খাবো না। আমি তোমাকে সত্যিটা জানাতে এসেছি। যাকে আমি নিজের বোন হিসেবে দেখি সে যদি আমাকে ভুল বোঝে সেটা আমি কি করে মেনে নিবো বলো? রিমি আমার নিজের বোন হয়ে এমন কাজ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। ও শুধু তোমাকে ছবি পাঠিয়েছে তা নয়, মাকেও ভুলভাল বুঝিয়ে বিগড়ে দিয়েছে। মায়ের ওই কথাগুলোর জন্য আমি দুঃখিত। ”
–“আমি আপনাদের কার কথা বিশ্বাস করব? বলুন? একেকজন একেক কথা বলছেন!”
–“মা নিজেও আমার মুখে সবটা শুনে অনুতপ্ত হয়েছেন। তোমাকে আর রাজিতাকে আজ একটু যেতে বলেছে। কাল রাজিতার সাথে ওমন ব্যবহার করে দুঃখ পাচ্ছেন৷ প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিওনা।”
–“আজতো যেতে পারব না। তবে রাজিতাকে বলে দেখবনে, ও যদি যেতে রাজি হয় তো…”
–“বিশ্বাস না হলে রিমির নিজের মুখেই শুনো সব। মাও ওকে অনেক বকাবকি করেছে। রিমিও অনেক লজ্জিত! ”
–“বাহ! বারবার খারাপ ব্যবহার করে আবার লজ্জাও পায়! একবার হলে মেনে নেওয়া যায়! বারবার রাজিতাকে কষ্ট দিলে সেটা আমি মেনে নিতে পারব না। দেখুন রাজিতা এখন আমার আমানত! ওর খেয়াল রাখার দায়িত্ব আমার। আমি চাইনা কেউ ওকে কোনোভাবে কষ্ট দিক। আর ওখানে গেলে আবার যে কোনো উল্টাপাল্টা কথা শুনতে হবে না তার কি গ্যারান্টি আছে! ওর মনের অবস্থা এমনিতেই বেশি ভালো নেই। আসলে পুরো ব্যাপারটা আমি আপনাকে বলে বোঝাতে পারব না।…. আমার কথায় কিছু মনে করবেন না। কথাগুলো না বলেও পারছি না। আমি কৃতজ্ঞ যে এতদিন আপনারা ওর দেখাশোনা করেছেন৷ আপনারা ওকে মানুষের মতো মানুষ করে তুলেছেন। তারমানে এই নয় যে, এখন ওকে যখন যা খুশি তাই শুনিয়ে দেবেন। ও নিজেওতো একটা মানুষ নাকি! ওরতো একটা মন আছে, অনুভূতি আছে! কষ্ট পায়! দুঃখ পায়! ”
–“আমি কথা দিচ্ছি, সব ভুলের অবসান হবে৷ আর কেউ ওকে ভুল বুঝবেনা। আর কেউ ওকে কটু কথাও বলতে পারবে না। তুমি একবার ওকে নিয়ে যেও! তুমি বুঝালেই ও বুঝবে। আমি জাস্ট ওর বড় ভাই হিসেবেই এতদিন সব করেছি৷ আর তুমি ওর খেয়াল রাখছো দেখে সত্যি আমার খুব ভালো লাগছে। আমি এখন নিশ্চিত যে, রাজিতাকে নিয়ে আমার আর টেনশন করতে হবেনা। শুনেছিলাম যে, তুমি অনেক ভালো একটা ছেলে, কিন্তু তারপরেও টেনশন হচ্ছিলো, এখন তোমাকে দেখে, তোমার সাথে কথা বলে পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম যে, আমার রাজি! মানে আমার বোনটা ভালো আছে! ভালো থাকবে ও তোমার সাথে। কখনো ওকে কষ্ট দিওনা। মেয়েটা যে সারাজীবন অনেক লড়াই করেছে!”
এক নিঃশ্বাসে এতগুলো কথা বলে উঠলো নিয়ন।নিয়নের শেষ কথাগুলো শুনে আনানের ওকে বিশ্বাস করতে মন চাইলো। নিয়ন হয়ত সত্যিই বলছে! রিমিই হয়ত এর মূলে রয়েছে! কিন্তু ও এমনটা কেন করবে!
আনান এইবার নিয়নের সাথে অনেকটা ফ্রিলি আর স্বাভাবিকভাবে কথা বলল। দুজন গল্প করতে করতে ভুলেই গেলো যে, আনানের ক্লাসে যেতে হবে।
রাজিতাদের এখন আনানের ক্লাস। অথচ পনেরো মিনিট পার হয়ে গেছে আনানের কোনো খবর নেই! সবাই অবাক হয়ে গেছে! কারণ ভার্সিটিতে জয়েন করার পর থেকে আনান কখনো ক্লাস মিস করেনি, আর পাঁচ মিনিটের বেশি দেরিও করেনি। সবসময় ঠিক সময়েই ক্লাসে উপস্তিত হয়৷ আজ দেরি করছে কেন কেউ বুঝতে পারছে না।
রাজিতার এক ফ্রেন্ড এসে ওকে বলতে লাগলো,
–“কিরে, স্যার আজ এতো দেরি করছে কেন? একটু আগেইতো দেখলাম ওই ক্লাস থেকে বের হলো, তারপরেই উধাও! স্যারের আবার কিছু হয়ে গেলো নাতো! দেখে আসবি নাকি একবার!”
ওর কথাশুনে ওর আশেপাশে থাকা সবাই হেসে উঠলো। রাজিতা ওদের একটা ধমক দিয়ে বলল,
–“স্যারকে নিয়ে এভাবে মজা করতে হয় না, জানিস না! তোদের কি ভদ্রতা জ্ঞানটুকুও নেই নাকি!”
ওর কথাশুনে আরেকজন বলে উঠলো,
–“মনে কর যে, কথাগুলো আমরা স্যারকে নয়, আমাদের দুলাভাইকে বলছি! এইবার ঠিক আছেতো ম্যাডাম!”
ওদের কথা শুনে পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠলো,
–“আরে রাজিতা, তুই গিয়ে দেখে আসলেইতো পারিস। আসলেইতো, স্যারতো এতো দেরি করে না! আমার মনে হয় স্যার ভুলে গেছে যে, এখন আমাদের ক্লাস আছে।”
পাশ থেকে আরেকজন বলল,
–“যে ক্লাসে স্যারের বউ আছে, সে ক্লাসের কথা কি করে ভুলে যায় বল!”
রাজিতা ওদের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে আনানকে কল দিলো। কিন্তু আনান কল রিসিভ করলো না।
একটু পরেই আনান হন্তদন্ত হয়ে ক্লাসে প্রবেশ করল।তারপর দেরি হওয়ার জন্য সবাইকে সরি বলে ক্লাস শুরু করলো।
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here