স্যার I Love You – Part 21

0
525

#স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_২১
__________
পরেরদিন সকালে-
শাওন ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করছে।
ইতি- আব্বু।
শাওন- বলো আম্মু?
ইতি- আব্বু আমার আম্মু চাই!
ইতির কথা শুনে শাওনের কাশি উঠে গেলো!
শাওনের মা- নে নে বাবা পানি খা।
শাওন গ্লাস টা নিয়ে পানি খেয়ে শাওন গলা কেশে নেয়।
শাওন- কি বললে তুমি?
ইতি- আমি আম্মু চাই আমার মিতাকে এনে দাও।
শাওন ভ্রু কুঁচকে তাকালো ইতির দিকে।
শাওন- মা ও কি বলছে?
– বাচ্চা মেয়ে যা বুঝেছে তাই বলছে আর ইতি তো দিদি ভাইকে অনেক ভালোও বাসে।
শাওন- মা তুমি বুঝছো না।
– কি ভাববো? তুই ও তো ওকেই ভালোবাসিস তাহলে বিয়ে করতে পারবি না কেন? কেনো দূরে সরিয়ে রেখেছিস মেয়েটাকে? মেয়েটা তো তোকে আজও ভালোবাসে তাহলে কেনো কষ্ট পাচ্ছিস দু’জনে?
শাওন- মা চুপ করো আর তুমি কিভাবে জানলে ওই সেই ইতি!
– আমি তোর মানিব্যাগে ইতির ছবি দেখেছি এই ছয় বছরে তুই ও অনেক কষ্ট পাচ্ছিস বাবা আমি মা হয়ে তোর কষ্ট সহ্য করতে পারি না বাবা।
শাওন- মা তা আর হবে না মা আমার সাথে যে ছোট্ট ইতি আছে বড় ইতি নাই বা হলো।
আন্টি- শাওন শোন বাবা।
শাওন টেবিল থেকে উঠে চলে গেলো।
ইতি- দিদা।
– চিন্তা করিস না দিদিভাই আমি তোর মিতাকে তোর আম্মু বানাবোই। তোর মিতার নাম্বার টা দে তো।
এদিকে আমি বাড়ির সাদে বসে দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম আর গল্প পড়ছিলাম লেখিকা শারমিন আক্তার বর্ষা গল্পের নাম “পাগল প্রেমিকা” খুব শুরুটা অনেক সুন্দর কিন্তু শেষের দিকে কষ্ট কান্না চলে আসলো।
এদিকে হঠাৎ ফোন বেজে উঠে। ফোন হাতে নিয়ে দেখি আননোন নাম্বার রিসিভ করতে চাইনি তবুও করলম।
ফোন রিসিভ করে কানে লাগাতেই অপর পাশ থেকে বললো।
আন্টি- হ্যালো ইতি?
আমি- আসসালামু আলাইকুম কে আপনি?
আন্টি- ওয়াআলাকুমুস সালাম। আমি তোমার ছোট্ট ইতির দিদা বলছি।
আমি- ও আন্টি আ’ম সরি আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।
আন্টি- চিনবেই বা কিভাবে আজ আমরা প্রথম ফোনে কথা বলছি। যাক বাদ দাও কেমন আছো মা?
আমি- আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি আন্টি আপনি কেমন আছেন?
আন্টি- আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তোমাকে যার জন্য কল দিয়েছিলাম আজ লাঞ্চে আমার সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে পারবে তোমাকে অনেক কথা বলার আছে যদি তুমি ফ্রি থাকো তাহলে এসো আমি অপেক্ষা করবো।
আমি- আচ্ছা আন্টি আমি আসবো আর আমি আজ বাড়িতেই আমার আজ ছুটি আমি আসবো। কোন রেস্টুরেন্টে যেতে হবে আপনি এড্রেস মেসেজ করে দিবেন ওকে আন্টি।
আন্টি- আচ্ছা মা তাহলে এখন রাখি।
আমি- জি আল্লাহ হাফেজ।
কল কেটে দিলাম।
সাড়ে ১২টা বাজে রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলাম।
রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামতেই গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা দিলাম। রেস্টুরেন্টের ভেতরে আসতেই দেখি আন্টি আগে থেকেই ওখান একটা টেবিল বুক করে বসে আছে। আমিও হাঁটতে হাঁটতে গেলাম ওনার কাছে। আর একটা চেয়ার টেনে বসলাম।
আন্টিকে সালাম দেই উনি উত্তর নেন। কেমন আছে জিজ্ঞেস করি উনি বলেন ভালো আছি।
তারপর টুকটাক কথা হলো আমাদের।
এরই মধ্যে ওয়েটার অর্ডার নিতে আসছে।
আন্টি- মা কি খাবে বলো!
আমি- আপনি যা অর্ডার দিবেন তাই।
তারপর আন্টি অর্ডার দিলো।
ক্ষণিকের মধ্যে খাবার সার্ভ করা হলো। দুজনেই খেতে শুরু করি।
একটু আসতে আর কম কম খাচ্ছি বেশি তারাহুড়া করে খাওয়া ঠিক না। তবে বেশি বেশি খেলে আমাকে খাদক ভাববে তাই কমকম খাচ্ছি তাছাড়া আমি এমনিতেও কম-ই খাই।
আমি- আন্টি আপনি আমাকে কিছু বলার জন্য এখানে ডেকে ছিলেন কিন্তু কিছুই তো বললেন না। (খেতে খেতে প্রশ্ন করলাম)
আন্টি- এখানে নয় মা। অন্য কোথাও বলবো এখন খাও।
আমাদের খাবারের পর্ব শেষ হলে রেস্টুরেন্টের বিল দিয়ে আমরা বেরিয়ে যাই।
বিল দিতে সময় একখান কান্ড ঘটে ছিলো।
আমি আর আন্টি বিল আমি দেবো এইটা নিয়া একটু কথা কাটাকাটি হচ্ছিল শেষে আমিই হেরে গেলাম বিল আন্টিই দিলো।
এখন জানি না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।
চলুন আমার সাথে আপনারাও দেখি কোথায় নিয়ে যান।
শহর থেকে কিছুটা দূরে গ্রাম্য পরিবেশ। একটা চায়ের দোকানে আন্টি ঢুকলেন দুইটা চা দিতে বললেন। আমরা বাহিরের বেঞ্চে বসেছি।
আশে পাশে তেমন বাড়ি-ঘর নেই অনেকটা দূরে দূরে।
দোকানের সামনে পেছনে ধান ক্ষেত অনেক বড়…!
প্রত্যেকটি ধান ক্ষেত দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগছে।
ধানগুলো পেকে গেছে। অনেক কৃষকেরা তো অনেক ক্ষেতের ধান কাটা শুরুও করে দিয়েছে।
দোকানদার আঙ্কেল এসে চা দিয়ে গেলেন।
চায়ে চুমুক দিচ্ছি আর ভাবছি এখানে সকালটা না জানি কত সুন্দর হয়।
একদিন আসবো এই শীতে কুয়াশা মাখা সকাল দেখতে।
খালি পায়ে হাঁটবো ভেজা ঘাসে।
ভেজা ঘাসের উপর থাকা
বিন্দু বিন্দু কুয়াশার ফোঁটা ফোঁটা পানি
যখন আমার পায়ের নিচে পা স্পর্শ করবে
উষ্ণতা ছুঁয়ে যাবে পুরো দেহে
শীতল হয়ে যাবো ওই ঠান্ডা সকালে।
(মনে মনে কবিতা বানিয়ে ফেললাম)
আমার ভাবনার সাদ ভেদ করতে বাধ্য হলাম পাশ থেকে আন্টির ডাক শুনে।
আন্টি- একটা কথা জিজ্ঞেস করবো তোমাকে?
আমি- হ্যা হ্যা আন্টি প্লিজ।
আন্টি- ইতি তুমি তো মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দরী তাহলে এখনও বিয়ে করোনি কেনো?
আমি আন্টির কথা শুনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলাম। সাথে বললাম- কি বলবো আন্টি?
আন্টি- মা আপন আন্টি ভেবে যা সত্যি তাই বলো।
আমি শুনতে চাই।
আমি- হুম যাকে ভালোবেসে ছিলাম তাকে পাইনি তাই করিনি।
আন্টি- সব বলো।
কি করি এখন এই সব কথা জিজ্ঞেস করার জন্যই কি এখানে নিয়ে আসছে নাকি? (মনে মনে)
তারপর আন্টিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানে স্যারের সাথে ফাস্ট দেখা হওয়ার দিন থেকে এই পর্যন্ত সব বলি।
আন্টি গম্ভীর মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো কিছু বলতে চায় কিন্তু বলছে না।
কিছুক্ষণ পর-
আন্টি- তোমার ওই স্যারের নাম কি?
আমি আন্টির এই প্রশ্নটা এড়িয়ে যাওয়ার বিথা চেষ্টা করলাম। আমি তো আর জানি না যে উনি সব জানেন। কিন্তু স্যার চলে যাওয়ার পর থেকে আমার সাথে কি কি হয়েছে তা জানতেন না এখন জানলেন।
আন্টি- আমার ছেলে শাওন খুবই চাপা স্বভাবের নিজে কষ্ট পাবে কিন্তু নিজের কষ্ট মুখ ফুটে অন্য কাউকে বলে না। আমার ছেলেটাও একটা মেয়ে কে খুব বেশি ভালোবাসে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে শুধু তাকেই ভালোবাসে আর তার একটা ছবি নিজের মানিব্যাগে লুকিয়ে রেখেছে।
আমি জানি তুমি এতক্ষণ শাওনের কথাই বলেছো আমার ছেলে কখনোই আমার থেকে কোনো কিছু লুকাতো না শুরু থেকে সব কিছুই আমি জানতাম তোমার নামটাও আমাকে বলেছিলো কিন্তু তোমাকে বা তোমার ছবি দেখার ভাগ্য হয়নি।
ওইদিন শাওন তোমার থেকে দূরে চলে এসেছিলো ঠিকই মা কিন্তু বাড়িতে এসে দরজা বন্ধ করে চিৎকার করে কেঁদে ছিলো নিজের ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা যে অনেক বেশি মা।
শাওন জানতো তুমি ওকে খুঁজতে বাড়ি আসতে পারো তাই সেই রাতেই আমরা বাড়ি ছেড়ে দেই। পরেরদিন সকালের ফ্লাইটে মাদ্রাস চলে আসি। আমার দুইটা কিডনি ডেমেজ হয়ে যায়। সারাদিন অসুস্থই থাকতাম কোনো হাসপাতাল বাদ রাখেনি আমার ছেলে আমার চিকিৎসা করার জন্য শেষে মাদ্রাস নিয়ে যায় অনেক কষ্ট একটা কিডনি ম্যানেজ হয় আর ডাক্তাররা আমার অপারেশন করেন।
আমার অপারেশন সাকসেসফুল হলে শাওন তোমার কাছে ফিরে আসবে ভাবে আর আমাদের দেখা হয়ে যায় শিলার সাথে।
আমি- শিলা?
আন্টি- ইতির মা।
আমি- ওও (আমার মুখটা জেনো শুকিয়ে গেলো)
আমার ছেলে আজও শুধু তোমাকেই ভালোবাসে মা। ইতি আমার দিদিভাই পুরো পৃথিবীর জন্য ইতির বাবা হলেও ইতি শাওনের মেয়ে না।
শাওন তোমার জায়গা কাউকে দেয়নি আর কখনো দেবেও না ঠিক করে আর কখনো বিয়েও করবে না বলে দেয়।
আমি- মানে তাহলে বিয়ে না করা মেয়ে ইতি?
আন্টি- বলছি! শিলা হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে যে আজ থেকে ১০ বছর আগে বিয়ের আসর থেকে আমাদের মান সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে অন্য একটা ছেলের হাত ধরে আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
আর সে আঘার সহ্য করতে না পেরে আমার স্বামী শাওনের বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তারপর থেকে আমাদের বাড়িতে শিলার নাম উচ্চারণ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেদিনের পর শিলা অনেকবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু শাওন তা হতে দেয়নি শাওন ক্ষমা করেনি ওর আদরের ছোট বোনটাকে।
আমার অপারেশন হওয়ার চার দিনের দিন একই হসপিটালে কার এক্সিডেন্ট করে দু’জন দম্পতি এডমিট হয় স্বামী রাস্তা তেই মারা যায়। আর স্ত্রী পেগন্যান্ট তবে দু’জনকে বাঁচানো অনেক রিস্ক যে কোনো একজন বাঁচবে আমরা চলে আসছিলাম হাসপাতাল থেকে আর সবার কাছে এক্সিডেন্ট শুনে আমি শাওনকে বলি ওদেরকে একটু দেখবে।
ছেলেটাকে চিনি না যেই মেয়েটার কাছে যাই।
শিলা বলে চিৎকার দিয়ে মেয়েকে জরিয়ে ধরি।
শাওন শিলাকে দেখে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
আমার চোখের জল সেদিন আর বাধা মানে না। ডাক্তার এসে বলেন আমরা কারা।
আমি বলি আমি ওর মা। ডাক্তার বলেন বাচ্চা বা মা’কে বাঁচানো যাবে ৫০% চান্স। আমি ডাক্তার কে বললাম মা’কে বাঁচাতে কিন্তু আমার মেয়ে বলেছিলো।
শিলা- মা হয়ে তুমি চাও তোমার মেয়ে জেনো বাঁচে মা তাহলে আমি মা হয়ে কিভাবে চাইবো আমার মেয়ে মরুক। আমি চাই মা আমার মেয়ে এই পৃথিবীর আলো দেখুক।
শিলা শাওনকে অনেকবার ডাকে। শাওন শিলার কাছে এসে দাড়ায়।
শিলা শাওনের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে।
শিলা- ভাই অনেক পাপ করেছি তার শাস্তি ও পেয়েছি প্লিজ ভাই আমাকে মাফ করে দিস আর আমার মেয়েটাকে দেখিস ভাই ওকে কখনো মা বাবার অভাব বুঝতে দিস না ভাই আমাকে তো অনেক আদর করতি। আমার মেয়েটাকে আদর নাই করলি কিন্তু কখনো অনাত আশ্রমে পাঠিয়ে দিস না ভাই তাহলে যে আমি মরেও শান্তি পাবো না আমার কলিজার টুকরা টাকে না দেখেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবো ভাই প্লিজ একটু ঠাই দিস আমার কলিজার টুকরা টাকে তোর বাড়ির এক কোনায় আমার মেয়ে টাকে দেখিস ভাই।
মা আমাকে ক্ষমা করে দিও।
আর কিছু বলার আগেই ডাক্তার রা ওকে ও.টি তে নিয়ে যায়।
শাওন তখনো কোনো কথা বলে না পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
কিন্তু ও ভেতর থেকে যে ভেঙে চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে একমাত্র আদরের ছোট বোন সে কি না আজ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে আর তার মেয়েকে নাকি বাড়ির এক কোনায় ঠাই দিতে বললো।
আমি শাড়ির আঁচল মুখে ঘুচে কাঁদতে থাকি।
এক ঘন্টা পর একটা ফুটফুটে মেয়েকে এনে নার্স শাওনের কোলে দেয়। বাচ্চা টা এতক্ষণ অনেক চিৎকার করছিলো কিন্তু যেই শাওনের কোলে দেয় একদম চুপ হয়ে যায়।
বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে শাওনের চোখের কার্নিশ ভেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে।
শাওন- ডাক্তার কে জিজ্ঞেস করে ওর বোন?
ডাক্তার বলে সরি আমরা আগেও বলেছিলাম আমরা যে কোনো একজনকে বাঁচাতে পারবো। আর আপনার বোন এক্সিডেন্টে কুব গুরুতর ভাবে আঘাত পায় উনি এমনিও বাঁচতেন না। আল্লাহর অসীম রহমত এত বড় এক্সিডেন্টের পরেও বাচ্চা টার কিচ্ছু হয়নি সব আল্লাহর রহমত আপনারা পেসেন্টের বডি দেখতে পারেন।
শাওন ডাক্তারের কথা শেষ না হতেই ধপ করে ফ্লোরে বসে পরে।
আমি ওর কাছে বসে ওকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকি।
শাওন উঠে গিয়ে শিলার বডির পাশে দাঁড়ায় আর ওর গালে হাত দিয়ে বলে।
শাওন- আমার প্রিন্সেস আমাকে এভাবে ছেড়ে চলে গেলি। আমি তো রাগ অভিমান করে ছিলাম রাগ অভিমান না ভাঙিয়ে চলে গেলি না ফেরার দেশে। তোর কলিজার টুকরা কে আমি আমার বুকের মধ্যে খানে রেখে বড় করবো কখনো তোদের অভাব বুঝতে দেবো না। আমার বাড়ির এক কোনায় না রে প্রিন্সেস আমার পুরো বাড়ি জুড়ে ওকে রাখবো ও আমার লিটল প্রিন্সেস আজ থেকে আমিই ওর বাবা।
আমি শাওনের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। শাওন আরও বলে।
শাওন- আজ থেকে ওর নাম হবে ইতি!
আমি ওকে বললাম ইতি কেনো?
তুই তো বাংলাদেশ যাচ্ছিস ইতির কাছেই তাহলে ওর নাম ইতি কেনো?
শাওন- আমি ওকে নিয়ে ইতির কাছে যেতে পারবো না মা। একটা বাচ্চা নিয়ে আমি ওর কাছে গিয়ে কি করে বলবো আমাকে বিয়ে করো। তা হয় না মা আমি ইতিকে ভালোবাসি আর ইতিকেই ভালোবাসবো ইতির পরে দ্বিতীয় কোনো মেয়ে আমার জীবনে আসবে না আজ থেকে এই ছোট ইতিই আমার জীবনের বড় ইতির শুন্যস্থান পূরণ করবে। আমি আমার সব টুকু দিয়ে ওকে মানুষ করবো।
আমি ওকে বলি- আর তোর জীবনের কি হবে ভুলতে পারবি ইতিকে আমাকে বল কোন মেয়ে আমি ওকে বুঝিয়ে বলবো।
শাওন- না মা। আমরা আর বাংলাদেশে যাবো না এখানেই থাকবো আর চলো ওদের দাফনের ব্যবস্থা করতে গবে।
তারপর থেকেই শাওনের জীবনে তুমি না থেকেও তুমি আছো। আমরা বাংলাদেশে আসছি কারণ শাওন তোমাকে একটাবার দেখতে চেয়েছিলো। তোমাকে দূর থেকে দেখার জন্য তোমার বাড়িতে গিয়েছিল হাসপাতালেও গিয়েছিল কিন্তু তোমাকে পায়নি কারণ তুমি গিয়ে ছিলে তোমার ফুপির বাড়ি। আর দেখো ভাগ্যের কি পরিহাস আল্লাহ তোমাকে রাস্তায় ইতির সাথে দেখা করিয়ে দেয়।
আমার ছেলে টা নিজে নিজে কষ্ট পাচ্ছে শুধু ইতির কথা ভেবে আমি মা হয়ে সেটা দেখতে পাচ্ছি না।
আমি আর ইতি দু’জনেই চাই তুমি শাওনকে বিয়ে করো।
ইতি তোমাকে ওর মা হিসাবে চায়। আমিও চাই তোমাদের ভালোবাসা পুর্নতা পাক। কিন্তু ইতিকে কোনো কিচ্ছু বলা যাবে না।
আমি তোমার কাছে হাত জোর করে রিকুয়েষ্ট করছি প্লিজ আমার ছেলেকে বিয়ে করো।
আমি- আন্টি প্লিজ এভাবে বলবেন না হাত জোর করতে হবে না।
আন্টির বলা কথা গুলো শুনতে শুনতে কেঁদে দিলাম।
আন্টি- কাঁদছো কেনো মা?
আমি- আমাকে স্যার এত ভালোবাসে কিন্তু বলে না ফাজিল একটা যা করার আমাদেরই করতে হবে আন্টিকে বললাম।
আন্টি- কি করতে চাও।
আমি- কাল দেখবেন এখন চলুন বাড়ি যাই অনেকটা লেইট হয়ে গেছে।
আন্টি- হ্যাঁ চলো।
তারপর চায়ের দোকান থেকে উঠে দু’জনই গাড়িতে উঠে বসলাম।
To Be Continued?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here