#স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০৪
_____________
আব্দুল আঙ্কেল- মামনী তোমার কলেজে যেতে বা আসতে রাস্তায় কোনো সমস্যা হয় নাই তো? আবুল আঙ্কেল হচ্ছে আমাদের ড্রাইবার উনার নাম আবুল কালাম।
– না আঙ্কেল আমার কোনো অসুবিধা হয়নি!
আবুল আঙ্কেল- যাও বাড়ির ভেতরে যাও!
বাড়ির ভেতরে ডুকে দেখি আম্মু কিচেনে কি জেনো করছে আমিও পিছন থেকে আম্মুকে ভয় দেখানোর জন্য জরে চিৎকার দিলাম!
আমি- ভাউউউউউ (আম্মুর পেছন থেকে)
আম্মু– আআআআআ।
(চিৎকার দিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে আমি। আমি তো হাসতেছি)
আমি- হাহাহা।
আম্মু- তুই আমাকে ভয় দেখাচ্ছিস?
আমি: হুহহ আর তুমি ভয় পেয়েছো ও।
আম্মু- ওরে পাঁজি মেয়ে দাঁড়া দেখাচ্ছি তোকে মজা! (আম্মু রুটি বানানোর বেলুন নিয়ে দিলো আমাকে দৌঁড়ানি আমিও এক মিনিটও দাঁড়াইনি এক দৌঁড়ে রুমে এসে দরজা ভেতর থেকে লক করে দিছি!
হিহিহি কি মজা আম্মু কে ভয় দেখাইছি কত্তো দিন পর। ডিংকা চিকা ডিংকা চিকা এ এ এ ওওও, গানে নাচতে নাচতে ওয়াশরুমে গেলাম ফ্রেশ হতে!
ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গেলাম, দাঁড়িয়ে আছি আর ভাবছি আর নিজেই নিজেকে বলছি- ওই ছেলেটার সাথে একটুও ঠিক করি নাই কি করবো ছেলেটারই দোষ আল্লাহ জানে ইন্টারভিউ দিতে পারছে কি না আর না দিতে পারলে তো আমার জন্য ছেলেটা চাকরি ছাড়া হবে ইসসসস।
রাগ উঠলে যে মাথা ঠিক থাকে না। যতসব উল্টা পাল্টা কাজ করি এখন নিজেরই গিল্টি ফিল হচ্ছে
যা হওয়ার তো হয়েই গেছে আরেকদিন পেলে ছেলেটার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে সরি বলে দিবো।
এরমধ্যেই আমার ভাবনায় পানি দিতে কে জেনো দরজা নক করছে।
‘ কে রে? দাঁড়াও আসতাছি একটু শান্তি মতো ভাবতেও দিবে না! ’
দরজা খুলতেই সায়েমা আন্টিকে দেখে অবাক হলাম অস্ফুটস্বরে বলে উঠলাম, ‘ তুমি কখন আসছো? ’ আমাদের কাজের ভুয়া উনি উনার গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল।
আন্টি- মামনি, এই তো একটু আগেই গ্রাম থেকে আসছি! তুমি আসো বড় আফা তোমাকে খেতে ডাকতে আমাকে পাঠাইছে!
– হুম চলো!
খাওয়া দাওয়া শেষে বসে বসে টিভি দেখছিলাম টম এন্ড জেরি আর হাসছিলাম (হাহাহা)
আম্মু- টম এন্ড জেরি দেখিছ আর ওদের মতোই হচ্ছিস! টিভি অফ করে যা রুমে গিয়ে পড়তে বস।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শাওন চলে আসবো যা তাড়াতাড়ি যা।
“ আম্মু, শাওন কে? ”
আম্মু- কিসের শাওন? বড়দের নাম ধরে ডাকছো কেন?
– যাহ বাবা আমি কি করলাম? নামটা না বললে কি বলে ডাকবো আমি তো চিনিই না তাকে সেজন্যই তো বললান কে শাওন?
আম্মু- আবার শাওন? যাইহোক শাওন হচ্ছে তোর নতুন স্যার। তো স্যার বলবি আবার যদি নাম ধরে ডাকিস?
-“ ওকে ওকে আর নাম ধরে বলবো না স্যারই বলবো! ”
হিহিহি স্যার না কি বলবো সেটা তো সময়ই বলে দিবে আম্মিজান দেখো খালি তোমার স্যারের সাথে কি করি? Wait and Watch মনে মনে।
আম্মু- যা রুমে গিয়ে পড়তে বস! আর হ্যা দুষ্টামি একদম করবি না সুন্দর আর ভদ্র মেয়ে হয়ে থাকবি!
– ওকে আম্মু! (বলে উঠতে যাবো তখনি)
আম্মু- কি ব্যাপার আজকে আমি যা বলছি কোনো তর্ক না করেই রাজি হয়ে যাচ্ছিস! ডাল মে কুছ কালা হে?
নিশ্চয়ই কারো সাথে আবার কিছু করছিস?
“ কোই না তো আম্মু আমি রুমে গেলাম। ”
আমি যখনই উল্টা পাল্টা কিছু করি আম্মু ঠিক বুঝে যায়। কোনো মতে পালিয়ে রুমে চলে আসলাম!
আব্বু থাকলে তো আম্মু আব্বুর সামনে কিচ্ছু বলে না কিন্তু আব্বু না থাকলে আম্মুর থেকে একটু দূরেই থাকি
আমি অনেক চঞ্চল, দুষ্টু ও পাজি মজা করতে খুব পছন্দ করি সারাদিন শুধু তাই করি।
আব্বু কিছু বলে না কিন্তু আম্মু ছাড় দেয় না।
আব্বু বলে- ‘ এই বয়সে করবে না তো কবে করবে আমার মেয়ের যা ইচ্ছা তাই করবে! ’
আম্মু- এই বলে বলে মেয়ের মাথা নষ্ট করেছো। তোমার আশকারা পেয়ে পেয়ে মেয়ে আজ এত পাঁজি হয়েছে। সারাদিন কারো না কারোর কমপ্লেন আসেই শুধু তোমার মেয়ে বলে কেউ কিছু বলে না।
এইগুলা ভাবতে ভাবতেই কারো গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম একটা ছেলের। সে আমার রুমে ডুকে সালাম দিলো।
“ আসসালামু আলাইকুম ”
আমি- ওয়ালাই।
ছেলেটাকে দেখে তো আমি পুরাই টাসকি খাইয়া গেছি
ছেলেটার সাথে আম্মু দাঁড়াই আছে! আমি ছেলেটার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। ছেলেটা ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে!
আম্মু- ইতি সালামের উত্তর দেও!
আমি তো ভয়ে শেষ বাড়িতে আব্বু ও নেই এই ছেলে যদি আম্মুর কাছে আমার নামে বিচার দেয় আম্মু তো আমাকে মাথার উপরে উঠাইয়া একটা আছারই মারবে!
এই ছেলে কি আমি নামে বিচার দিতে আসছে?
আল্লাহ গো এইবারে মতো আমাকে বাঁচাই দেও এই ছেলেকে আর জীবনেও কিছু বলতাম না আর সাথে একটা শুকনো ঢোক গিল্লাম (এত সব কিছু মনে মনে বললাম)
আবারও আম্মু বলল- ইতি শাওনের সালামের উত্তর দেও!
আমি আরও একটা জাটকা খেলাম। শাওন মানে আমার নতুন স্যার! এইবার আমি শেষ আমাকে এইবার আম্মুর হাত থেকা কেউ বাঁচাতে পারবে না! আল্লাহ গো।
ছেলেটা সেই একই ভাবে তাকাই আছে মরন আর কোনো ছাত্রী পাননি পড়ানোর জন্য? এক মিনিট এক মিনিট ছেলেটা যদি আম্মু কে সব বলে দিতো তাহলে আম্মু আমার এখনও এত শান্ত হত না তার মানে কিছুই বলে নাই ইয়াহু।
আমি খুশি হয়ে সালামের উত্তর দিলাম,
আমি- ওয়াআলাইকুমুস সালাম।
যাক বাবা বাঁচলাম কিছুই বলে নাই শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলাম!
আম্মু- শাওন বাবা এই হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে ইতি আর তোমার ছাত্রী। তুমি ওকে পড়াও ততক্ষণে আমি তোমার জন্য নাস্তা পাঠাচ্ছি!
স্যার- না আন্টি আপনার ওই সব কিছুই করতে হবে না!
আম্মু- তোমার অতশত ভাবতে হবে না, তুমি বসো আর ওকে পড়াও আমি কিছু নিয়ে আসছি আর ইতি যদি খুব দুষ্ট ও যদি কিছু বলে তোমাকে তুমি সোজা আমাকে বলবে ওকে বাবা বসো আমি আসি!
আমিও বসলাম স্যারও বসলো! আসছে পর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল আর এখন বইয়ের এর দিকে।
আমি- এই বই ছাড়া আর কিছু চিনে না নাকি? যাক বাবা উনাকে যখন পাইছি তাহলে সরি বলেই দেই আর সাথে থ্যাংকস ও আম্মুকে কিছু না বলার জন্য হুম এখনই বলবো। ( মনে মনে)
আমি- স্যার!
শাওন- জি বলুন! (বইয়ের দিকে তাকিয়ে)
আমি- বলুন? আমাকে আপনি আপনি করছে বাহ বেশ ভদ্র তো উনি সাথে হ্যান্ডসামও দূর কি ভাবছি আমি! (মনে মনে)
আমি– Sir. I’m Sorry! & Thank you!
স্যার- সরি কেনো আর ধন্যবাদই বা কেনো?
আমি- আমার মুখের দিকে না তাকালে বুঝবি কি ভাবে গাধা? (একটু রেগে)
আমি- ওই যে আপনি আম্মুর কাছে আমার নামে কোনো কমপ্লেন করেননি তাই!
স্যার- আপনার নামে শুধু শুধু কমপ্লেন কেনো করবো?
(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি- মানে কি শুধু শুধু বলতে উনি কি সকালের কথা ভুলে গেছেন নাকি?
স্যার- আপনাকে আমি কোথায় জেনো দেখেছি।
আমি- সকালেই তো দেখলি আর কি ঝগড়া টাই না করলি! আর এখন ভাব ধরা হচ্ছে যে কিছুই মনে নাই! (মনে মনে)
চলবে?