স্যার I Love You – Part 12

0
436

#স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা)
#পর্ব_১২
________
“ আমি যখন ছোটো ছিলাম এই ক্লাস 5/6 এ পড়ি তখন একবার স্কুল পালিয়ে বন্ধুদের সাথে গিয়েছিলাম।
তারপর এই আজকে ” ইতি উল্লাসী কন্ঠে বলল।
“ক্লাস 6 এ পড়তে তখন তুমি ছোটো ছিলে? ” ভ্রু কুঞ্চিত করে প্রশ্ন ছুঁড়ে শাওন।
ইতি- হুম কেন?
স্যার– কিছু না এখন চলো!
ইতি– স্যার আপনি এতক্ষণ কিভাবে দোঁড়াচ্ছিলেন খেয়াল করেন নি না-কি? (মেকি হাসি দিয়ে)
স্যার ইতির দিকে তাকিয়ে– কিভাবে?
ইতি– আমার হাত ধরে! (নিচের দিকে তাকিয়ে)
স্যার– ইতি।
ইতি– সরি স্যার!
স্যার একটা শপের সামনে গিয়ে সালাম দিলেন,
স্যার– আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া একটা সাহায্য লাগবে!
দোকানদার– ওয়ালাইকুম আসসালামু, জি ভাই বলেন?
স্যার– এখানে কি কোথাও পানি পাওয়া যাবে?
দোকানদার– হ্যা ভাই ওই সামনে গিয়ে বামে যাবেন ওখানেই চাপকল আছে!
স্যার– ওকে থ্যাংঙ্কিউ!
দু’জনেই পেট ভরে পানি খেলো! দু’জনের এক জনেরও জানা নেই তারা কোথায় আছে? আর বাকি তিন জোড়া শালিক পাখি কোই আছে? দু’জনেই হাঁটছে মেলার ভেতর ঘুরে দেখছে!
ইতি– স্যার আমি ওটা কিনবো! (বাচ্চাদের মতো বায়না করে)
স্যার– ইশশ তুমি কি বাচ্চা না-কি? (ইতির দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙিয়ে বলল)
ইতি– স্যার প্লিজ! (বেবি ফেস করে)
স্যারের ইতির মুখ দেখে আর না করার সাধ্য নেই!
ইতি– আমার পার্স গাড়িতেই রেখে আসছি প্লিজ স্যার।
স্যার– ওকে দিচ্ছি!
একটা লোকের সামনে গিয়ে স্যার বলল– ভাইয়া এই এই খেলনা টা কত?
লোক– ভাই ৩০টাকা।
স্যার– কিহহহ ৩০টাকা এর মধ্যে তো পানি ছাড়া কিছুই নাই তাহলে ৩০টাকা কেন?
লোক– আপনে নিলে নেন না নিলে নাই!
ইতি– ৩০টাকা তাই কেমন করছে জন্মের কিপ্টা! (মুখ ভেংচি দিয়ে)
স্যার– আচ্ছা দেন একটা!
লোক– আপনি কার জন্য নিবেন আপনার বাচ্চার লাইগা নাকি আপনার সাথে তো বাচ্চা দেখতাছি না।
স্যার– আরে মিয়া ধুর বিয়াই করলাম না আর বাচ্চা!
আমি নিবো ওই বুড়ি মেয়েটার জন্য! ( আঙ্গুল দিয়ে ইতিকে দেখিয়ে বলল)
ইতি– কিহহ আমি বুড়ি?
লোক– এই যে লন খেলনা!
স্যার– হো লন আননের টিয়া!
লোক–
স্যার– এই নাও তোমার খেলনা! (ইতির হাতের মধ্যে দিয়ে)
ইতি– মোটেও এটা খেলনা না!
ইতি তো এটা পেয়ে খুব খুশি! চটপট করে জিনিস টা খুললো আর দুই হাতে দুইটা নিয়ে স্যাম্পুর পানির মধ্যে চুবাচ্ছে আর মুখের সামনে এনে ফু দিচ্ছে!
আর প্ল্যাস্টিকের গোল ফাঁকা জায়গা দিয়ে পানির বেলুন বের হচ্ছে! ( আচ্ছা এইযে পানির মধ্যে চুবিয়ে জিনিস টা ফু দিলে পানির বেলুন বের হয় এইটা আমার ছোটো বেলায় অনেক পছন্দ ছিল এখনো অনেক পছন্দ করি কিন্তু এটার নাম আমার মনে নেই তাই লিখতে পারলাম না দুঃখিত)
ইতি বেলুন গুলো দেখছে আর মিষ্টি মিষ্টি হাসছে বেলুন গুলো ফুটে যেতেই আবার ফু দিচ্ছে আবার বেলুন বের হচ্ছে ইতি আরও হাসছে। ইতির এই কান্ড দেখে স্যার ও হাসছেন।
স্যার– এই মেয়েটা সত্যিই বাচ্চা!
ইতি নিজের মতো করেই ফু দিয়ে বেলুন উড়াচ্ছে!
স্যার– ইতি চলো ওই রাস্তার পাশে গিয়ে ঘাসের উপর বসি!
ইতি ফু দিতে দিতে বলল, ‘চলেন স্যার!’
দু’জনেই রাস্তার পাশে বসে আছে ইতি নিজের মতো ফু দিয়ে বেলুন বানাচ্ছে।
মাঝে মাঝে স্যারের মুখের দিকেও ফু দিচ্ছে আর পানির বেলুন গুলো স্যারের মুখের সাথে লেগে ঠাসঠুস ফুটে যাচ্ছে। দু’জনেই খিলখিল করে হাসছে এ জেনো এক অন্য রকম অনুভূতি।
কিছুক্ষণ পর তিন জোড়া শালিক পাখি মেলার মধ্যে থেকেই বেরিয়ে এলো! হ্যাঁ ওরা মেলার মধ্যেই ছিল!
আব্রু– রাস্তার ওপাশে কারা বসে আছে রে?
রুবেল– আরে এরা কারা?
মুন্নী– আমি যা ভাবছি তোরাও কি তাই ভাবছিস?
মিম– আরে রাখ তোর ভাবা ভাবি আমি যা দেখছি তোরা ও তাই দেখছিস?
নাঈম– কিভাবে সম্ভব?
শ্রাবন– সবই সম্ভব!
মুন্নী– ইতি আর স্যার! ভাবা যায় স্বপ্ন দেখছি না তো.
আব্রু– অনেক লেইট হইছে সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, চল ওদের কাছে বাড়ি ফিরতে হবে তো নাকি।
আব্রু– ইতি. (পেছন থেকে ডাক দিলো)
ইতি আর স্যার কারো ডাক শুনে পেছনে তাকালো!
ওদের দেখে ইতির তো বেশ মেজাজ খারাপ হলো উঠে দাঁড়িয়ে ওদের সামনে গিয়ে পাঁচ ও টারে দিলো ইচ্ছা মতোন বচ্চন।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি হল সব বললো সবগুলা হাসতে হাসতে মাটিতে গোড়াগুড়ি খাওয়া অবস্থা!
তারপর সবাই আবার হাঁটা শুরু করলো!
হাঁটতে হাঁটতে গাড়ির কাছে এসে পরলো যে যার মতো ড্রাইব করছে ইতি স্যারকে যেখান থেকে পিক করেছিলো সেখানে আবার ড্রপ করে দিলো। সবাই চলে গেলো সবার গন্তব্যে আজকের দিনটা সবার কাছে শরণীয় হয়ে থাকবে! বেশি তো ইতির কাছে স্যারের সাথে এতটা সময় পার করতে পেরেছে! তা-ও আবার একেলা।
ইতি রাতে বেলকনিতে গিয়ে ওর লাভ বার্ড পাখি গুলোর খাঁচার সামনে দাঁড়ালো পাখির খাবার শেষ সাথে পানি ও ইতি খাবার দিয়ে পানি আনতে গেলো!
ইতি আজকে সারাদিন কি কি হলো সব পাখিগুলোকে বললো!
তার পর রুমে গিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পরলো!
সকালে মেড সার্ভেন্টের দরজা নক করাতে ইতির ঘুম ভাঙে উঠে দরজা খুলে দিতেই সার্ভেন্ট কফি দিয়ে চলে যায়!
ইতি কফির মগ হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে আসে!
কিছুক্ষণ বেলকনির রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ছিল পরে পাশে পাখিগুলোর কাছে গিয়ে দেখলো কোনো কিছু লাগবে না!
ইতি– না সব আছে! (মানে খাবার আর পানি)
ইতি চলে এলো রুমে আবার চলে গেলো ওয়াশরুম একদম কলেজেট জন্য রেডি হয়ে বের হবে!
প্রতিদিনের মতো ব্রেকফাস্ট করে ইতি বেরিয়ে পরে কলেজের উদ্দেশ্য।
কলেজে সবগুলা এখনো আসে নাই!
সারারাত প্রেম আলাপ পারছে ফোনে যার যারডার লগে।
ইতি কলেজ ক্যাম্পাসে বসে আছে একা ওদের তো আসার খবরই নাই! (বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে)
ওইদিকে আর মাত্র ৩০মিনিট পর ক্লাস শুরু হবে!
এতসকাল হয়েগেছে দেখে নাঈম, রুবেল, মিম,মুন্নী,আব্রুর আম্মুরা অনেকবার রুমে এসে ডেকেগেছে, আবার এসে দেখে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বংশধররা এখনো ঘুম থেকে উঠছে না!
সব মায়েরা চলে গেলো বাথরুমে। সাথে আসার সময় নিয়ে আসলেন এক মগ ঠান্ডা পানি।
ঠুস করে ঠেলে দিলেন শয়তান গুলার উপর!
ঠান্ডা পানির স্পর্শে সব গুলা লাফ দিয়ে উঠে বসলো সাথে কাঁপছে।
নাঈম, রুবেল, মিম, মুন্নী, আব্রু- উফফ আম্মু কি করলা?
আম্মুরা– কয়টা বাজে দেখছিস কলেজ যাবি না নাকি?
‘ ওরে বাবা রে’ বলে সব গুলা লাফ দিয়া উইঠা দৌঁড় দিলো ওয়াশরুমে ফ্রেশ হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য বের হলো না খেয়েই, খেতে গেলেই দেরি হবে আর স্যার বলে দিয়েছিল।
আজকে সবাইকে থাকতে হবে দেরি হলে পানিশমেন্ট দেওয়া হবে৷ তাই।
ওরাও কলেজে ক্লাস স্টার্ট হওয়ার ২মিনিট আগেই এসে পরে! সবাই অলরেডি ক্লাসে বসে আছে। ৫জন এক প্রকার দৌঁড়ে ক্লাসে ডুকলো এক সাথে।
কয়েকটা ঘন্টা পর কলেজের ক্লাস শেষ হলো আর ছুটি হলো!
সবাই এক সাথে!
আব্রু– কাল না তোকে আর তোর স্যারকে অনেক কিউট লাগতেছিল এক সাথে।
মিম– পুরাই ফিদা!
মুন্নী–তোরা মেড ফর ইচ আদার!
রুবেল– আমি তো চোখই সরাতে পারছিলাম না!
নাঈম– ঠিক বলছিস! কাল তো ইতির খুশির শেষ ছিল না!
ইতি– ও হো হো হো, (মুখ সাত রকমের ভেংচি দিয়ে)
শুধু কি আমার নাকি তোদের ও তোরা মনে হয় ওখানে ছিলিই না শুধু আমাকে বলছিস!
সবগুলা হাসতাছে
আব্রু– আচ্ছা বাদ দে! এটা বল তুই স্যার কে I love you কবে বলবি?
সবাই ইচ্ছুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইতির দিকে।
মুন্নী– এক তরফা ভালোবাসতে তো ১মাস পার করলি এবার বলেই দে!
মিম,নাঈম,রুবেল– হুম হুম বলা উচিত!
ইতি কিছু একটা ভেবে বলল, ‘দেখ আর কিছুদিন পর আমার বার্থডে সেদিন এনাউন্সমেন্ট করবো। ’
রুবেল, মিম, মুন্নী, আব্রু, নাঈম– কিহহহহহহহ?
(সবগুলা আকাশ থেকা পরলো এই মাইয়া বলে কি)
ভালোবাসি বলতে পারলো না এখনো আর বিয়ের এনাউন্সমেন্ট করবে!
আব্রু– তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
মুন্নী– তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
মিম– তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
নাঈম– তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
রুবেল– তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
ইতি– আরে আজব পাগল হবো কেনো? আমার বার্থডে তে আমি স্যারকে প্রপোজ করবো!
আকাশ, নাঈম– ও তাই বল!
মিম, আব্রু, মুন্নী- আমরা তো ভাবছিলাম বিয়ের জন্য প্রপোজ করবি!
ইতি– এত বেশি ভাবিস কেন!?
মুন্নী, আব্রু, মিম– কারণ আমরা এমনই।
আচ্ছা এখন চল বাড়ি ফিরতে হবে তো নাকি!?
ওকে আল্লাহ হাফেজ!
আল্লাহ হাফেজ!
আল্লাহ হাফেজ!
সবাই চলে গেলো যার যার গাড়ি করে!
চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here