#গোধূলি_লগ্নের_সেই_তুমি
#লেখনীতে_জেনিফা_চৌধুরী
#পর্ব_নয়
কেউ একজন ফাইজা’র হাত’ ধরে জোরে টা’ন মা/রতেই কারোর বক্ষস্থলে গিয়ে ধা’ক্কা খেলো ফাইজা। চোখের সামনে ফারদিন কে দেখে ফাইজা হা হয়ে আছে। এই রাতের বেলা নিজের বাড়িতে ফারদিন’কে একদমি আশা করেনি ফাইজা। ফারদিন ফাই’জাকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতেই ফাইজা ফিসফিসিয়ে বললো…..
–আপনি এত রাতে এখানে কি করছেন?
ফাইজার কথায় ফারদিন সোজাসাপ্টা উওর দিলো….
–বাহঃ রে বউ’য়ের কাছে আসতে বুঝি কারোর দিন-রাত হিসেব করে আসতে হবে। আমার বউ’কে দেখতে আমি যখন খুশি তখন আসব…
বলেই ভ্রু কুচকালো। ফারদিনের মুখে আমার বউ শব্দটা শুনতেই ফাইজা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। তা দেখে ফারদিন বাঁকা হেসে বললো….
–তোমাকে কি বলেছিলাম সুইটহার্ট এভাবে লাল-নীল হবে না। টুপ করে কিস করে দিব…..
ফারদিনের কথায় ফাইজা ফারদিন’কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে যেতে যেতে বললো….
–প্রচন্ড অ’ভদ্র, অস’ভ্য লোক একটা…..
ফাইজা অন্য দিকে ফিরে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। এই ফারদিন’টা ও’কে লজ্জায় ফেলে কবে যেনো মে/রে ফেলবে। ফারদিন ফাইজা’র খোঁপা করা চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ গুঁজলো। তাতে ফাইজা কেঁপে উঠলো। ফারদিন ফাইজা’র ঘাড়ে ডিপ’লি একটা চু’মু খেয়ে নেশালো কন্ঠে বলে উঠলো……
–আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষায় তারপর তুমি পরিপূর্ণ আমার হবে সুইটহার্ট। তোমাকে কাছে পাওয়ার নেশায় আমি প্রতিনিয়ত মাতাল হয়ে আছি…..
ফাইজা চোখ বুঝে কোমরে থাকা ফারদিনের হাত দুটো শক্ত করে খা’মচে ধরে আছে। ওর মাথা থেকে পা অব্দি কাঁপছে। ফাইজা’কে এক টানে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো। ফাইজা এখনো চোখ বন্ধ করে ফারদিনের শার্ট খা’মচে ধরে আছে। ওর ঠোঁট গুলো তিরতির করে কাঁপছে। চোখের পাপড়ি গুলো নড়ছে। ফারদিন ফাইজার থুতনি এক হাতে উঁচু করে মুখের সামনে এনে বলে উঠলো…..
—আই কা’ন্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ হোয়েন আই সিইই ইউ জান। তোমাকে দেখলেই আমার বার বার চু’মু খেতে ইচ্ছে করে…..
বলেই ফাইজা’র ঠোঁটে ঠোঁট রাখার জন্য মুখ’টা সামনে নিতেই হঠাৎ দরজায় কেউ নক করে উঠতেই ফাইজা ছিটকে ফারদিনের থেকে দূরে সরে গেলো। এমন সময় ফারদিনের বিরক্তি’তে কপাল কুচকে এলো। দরজায় কে নক করছে ভাবতেই ফাইজার মুখ কাঁপছে। ফাইজা ফারদিনের সামনে এসে ফিসফিস করে বললো…..
–এখন কি হবে? যদি বাবা এসে থাকে তাহলে তো সব শেষ।
ফাইজার কথা শুনে ফারদিন একটা শুকনো ঢোঁক গিলে বললো….
–এই রে শুশুড় মশাই যদি জানে আমি লুকিয়ে আমার বউয়ের ঘরে এসেছি। তাহলে, নির্ঘাত আমাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবে। এখন কি হবে?
ফারদিনের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে ও সত্যিই আতঙ্কিত। তা দেখে ফাইজা মুখ চেপে হাসচ্ছে। ফাইজা’কে হাসতে দেখে ফারদিন রাগী স্বরে বললো…..
–এই শুশুড় মশাই কি আসার আর টাইম পেলো না। আমার বউ’কে একটা কিস ও করতে পারলাম না।
ফারদিনের কথা শুনে ফাইজা কোমরে হাত দিয়ে রাগী লুক নিয়ে ফারদিনের দিকে তাঁকাতেই ফারদিন বলে উঠলো….
–জান এইবারের মতোই বাঁচিয়ে দাও না। প্লিজ জান প্লিজ…..
ফাইজার কেনো যেনো ভীষন হাসি পাচ্ছে। কিন্তু দরজার ওপাশ থেকে ফাইজার বাবা একনাগাড়ে ডেকেই যাচ্ছে ফাইজা’কে। ফাইজা ফারদিন কে বেলকনি’তে ঢুঁকিয়ে দরজা হালকা টানতে টানতে বলে উঠলো…..
—এখানে চুপচাপ এক কোনায় বসে থাকুন। আমি না আসা অব্দি খবরদার নড়বেন না।
ফারদিন ও বাধ্য ছেলের মতো মাথা নাড়ালো। ফাইজা নিজেকে ঠিক করে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে গিয়ে হাসি মুখে দরজা খুলতেই হাসনাত সাহেব ওর দিকে সন্দিহান দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে বলে উঠলো…..
—এতক্ষন ভেতরে কি করছিলে? দরজা খুলতে এত সময় লাগে….
বাবার গম্ভীর স্বর শুনে ফাইজা আস্তে করে বললো….
–ওয়াশরুমে ছিলাম বাবা। কি দরকার ছিলো বলো….
হাসনাত সাহেব দরজা’টা এক হাতে আরেক’টু খুলে ভেতরে উঁকি দিয়ে চারদিকে নজর বুলিয়ে বললো….
—কিছু না দেখতে এসেছিলাম তুমি ঘুমিয়েছো নাকি। অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো। দরজা নক করে দিও ভেতর থেকে….
ফাইজা মাথা নাড়াতেই হাসনাত সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো। ফাইজা মুচকি হেসে দরজা আটকে পেছনে ফিরতেই ভরকে গেলো। ফারদিন ওর সামনে বুকে হাত গুঁজে দাড়িয়ে আছে। ফাইজা ফারদিনের দিকে ভ্রু কুচকে তাঁকাতেই ফারদিন ও ভ্রু নাঁচিয়ে বলে উঠলো….
—জান এখন তুমি কোথায় যাবে??
বলেই ফাইজা’কে দরজার সাথেই মিশিয়ে নিয়ে ফাইজার কোমর শক্ত করে দুই হাতে চে’পে ধরলো। ফাইজা কাঁপতে কাঁপতে বললো….
–দেখুন একদম ঠিক হচ্ছে না। সরুন আমার দম বন্ধ হয়ে আসচ্ছে।
ফাইজার কথা শুনে ফারদিন ওর কোমরে জোরে চাপ দিতেই ফাইজা নড়ে উঠলো। ফারদিন ফাইজার মুখের সামনে মুখ নিয়ে বলতে লাগলো…..
—এতদিন তোমাকে ছুঁতে আমার অস্বস্তি হতো। কারন, আমি জানতাম তুমি আমাকে ভালোবাসো না। কিন্তু এখন তোমাকে ছোঁয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আমার। বিকজ, ইউ আর মাই ওয়াই’ফ। মাই লাভ। মাই হার্টবিট……
ফারদিনের কথায় ফাইজা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে মুচকি হেসে হঠাৎ করে’ই ফারদিন’কে জড়িয়ে ধরলো। ফারদিন ও পরম আবেশে ফাইজার চুলে হাত ডুবিয়ে শক্ত করে চেপে ধরলো ফাইজা’কে। ফাইজা মুখ গুঁজে শান্ত হয়ে আছে। হঠাৎ করেই ফারদিন নরম কন্ঠে বললো…..
–জানো, আমি সাত বছর বয়স থেকে একা বাঁচতে শিখেছিলাম। কারোর হিংস্র থাবা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেও আমার মা’কে রক্ষা করতে পারিনি। সেই সাত বছরের একটা ভয়ংকর ঘটনা আমাকে অনেক বছর শান্তি’তে ঘুমোতে দেয়নি। সাত বছরের বাচ্চা ছেলে’টার মনে মেয়েদের নিয়ে হাজার ঘৃনা জমতে শুরু করছিলো। কিন্তু গোধূলির এক সন্ধ্যায় হঠাৎ করে তুমি এসেই আমার ঘৃনা ভরা মনে ভালোবাসা সৃষ্টি করেছিলে। #গোধূলি_লগ্নের_সেই_তুমি টাকে আমি ভীষন ভালোবাসি। তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি নিজেই জলন্ত আগুনে নিজেকে পুড়িয়েছি কতশত বার। তোমা একটা আঘাতের পরিবর্তে নিজেকে দ্বিগুন আঘাত করেছি। আই লাভ ইউ সুইটহার্ট….
ফারদিনের কথাগুলো শুনে ফাইজা ফারদিনের বুকের থেকে মাথা তুলে বললো….
–একটু নিঁচু হন তো….
ফাইজার কথায় ফারদিন ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে। ফাইজা একটু হেসে পা দুটো খানিক’টা উঁচু করে ফারদিনের কপালে আচমকা ঠোঁট ছোঁয়ালো। ফারদিন যেনো ফাইজার কান্ডে বিস্ময়ের চরম পর্যায়। ফাইজা ফারদিন’কে চু’মু দিয়ে আবার জড়িয়ে ধরতে ধরতে বললো…..
—আমি আপনাকে সেই এক বছর আগের থেকে ভীষন ভালোবাসি জনাব।
ফারদিন এখনো হা হয়ে আছে। ফারদিনের কোনো রেসপন্স না পেয়ে ফাইজা হঠাৎ ফারদিনের হাতে জোরে চিম’টি কে’টে বললো……
—কি ভাবছেন ভাবুক মশাই??
ফারদিন হা করে বললো….
–তুমি আমাকে চু’মু খেলে আই কা’ন্ট বিলিভ দিস। আর যখন চু’মুই খাবে তখন ঠোঁটে একটা চু’মু খে’লে কি হতো জান……
বলেই চোখ মা-রলো ফাইজা’কে। ফাইজা আবারো হেসে ফারদিনের বুকে কয়েকবার কি’ল ঘু’ষি মে/রে বললো…..
–আমি এই অভ’দ্র’টাকে ভালোবাসি। আপনি আমার মিস্টার অ’ভ’দ্র। বুঝলেন জনাব….
বলেই ফারদিনের নাক’টা হালকা করে টেনে দূরে সরে যেতে নিলে ফারদিন আবারো ওর হাত ধরে টেনে সোফায় বসিয়ে দিলো। তারপর হুট করে ফাইজার কোলে মাথা রেখে ফাইজার পেটে মুখ গুঁজলো। হঠাৎ স্পর্শে ফাইজা কেঁপে উঠলো। ফারদিন ফাইজার পেটে মুখ গুঁজেই বললো…..
–একটু মাথা’টা টিপে দাও তো বউ……
ফাইজা মনে মনে ফারদিন’কে পা’গল সম্মোধন করে নরম হাতে ফারদিনের মাথা টি’পে দিতে লাগলো। ফারদিন শান্ত হয়ে চোখ বুজে আছে। ফাইজা সুযোগ বুঝে প্রশ্ন করে বসলো…..
–আপনি আমাকে না জানিয়ে বিয়ে কেনো করেছিলেন? এখনো কিন্তু তার উওর দেন’নি আমাকে। আমাদের বিয়ে কবে হয়েছিলো আমি কেনো জানিনা…….
#চলবে