কহিনুর_দ্বিতীয়_খণ্ড কলমে: লাবন্য ইয়াসমিন পর্ব:৬৩ (শেষ ভাগের প্রথম অংশ )

0
678

#কহিনুর_দ্বিতীয়_খণ্ড
কলমে: লাবন্য ইয়াসমিন
পর্ব:৬৩ (শেষ ভাগের প্রথম অংশ )

সারারাত দাদুর সঙ্গে থেকে ভোররাতে বেরিয়ে পড়লো কহিনুর। সাঈদের আম্মির সাহায্য নিয়ে প্রথমে হাকিম সাহেবের সঙ্গে দেখা করবে তারপর একটা বিশেষ স্থানে যেতে হবে ওকে। যেখানে পাহাড় আর আকাশের মিতালী ঘটেছে সেই প্রান্তে ওকে পৌঁছাতে হবে। কথাটা ভাবতে ভাবতে ও হাকিম সাহেবের সামনের গিয়ে দাঁড়ালো। ওকে দেখে হেকিম সাহেব কিছুটা ভড়কে গেলেন তবে নিজেকে সামলে নিলেন। মুখটা গম্ভীর করে বললেন,
> আবারও আমার দ্বারে কি প্রয়োজনে?
কহিনুর হাসলো। তারপর ঠোঁট চেপে ধরে নিজেকে শান্ত করে ভ্রু কুচকে উত্তর দিলো,

> কেনো আসতে নেই বুঝি? নাকি ডাবল রোল প্লে করছেন এটা আমি জেনে গিয়েছি ভেবে ভয় পাচ্ছেন? ভয়ের কিছু নেই। আমি এসেছি নিতান্তই অন্য একটা সাধারণ কাজে। অর্ধমানবদের সঙ্গে আপনার কি সম্পর্ক বা আপনি কেনো ওদেরকে সাহায্য করছেন এসব আমার কিছু যায় আসেনা। আপনি শুধু বলুন মানুষের সঙ্গে দুজন জ্বীনের বসবাস থাকে একজন ভালো আরেকজন খারাপ। জমিদার সাহেবের সঙ্গে থাকা ভালো জ্বীনের সঙ্গে দেখা করার মাধ্যম বলে দিন। মায়া আম্মির সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটেছে উনি আমাকে বলেছেন আপনি সব জানেন।

কহিনুরের কথা শুনে হাকিম সাহেবের চক্ষু জ্বলজ্বল করে উঠলো। উনি খুশী হয়েছেন বোঝা যাচ্ছে। কহিনুর উৎসুক হয়ে তাঁকিয়ে আছে দেখে উনি দ্রুত একটা মোমবাতি নিয়ে আসলেন। সঙ্গে একটা সুগন্ধির বোতল আর মিরর। সেগুলো কহিনুরের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
> নির্জন স্থানে গিয়ে মোমবাতি জ্বলিয়ে নিবেন। সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়ে মিররের সামনে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে উনাকে ডাকবেন। উনি সাড়া দিবেন। তবে সাবধান ভালোর জায়গায় খারাপটা চলে আসতে পারে। একটু খেয়াল রাখবেন।

> কিভাবে বুঝবো ওটা ভালো নাকি খারাপ? তাছাড়া আমি জমিদার সাহেবকে নিজ চোখে দেখিনি পযর্ন্ত। একটা ক্লু তো দিন।

> চোখের দৃষ্টি দেখলেই বুঝতে পারবেন। আশাকরি এইটুকু কহিনুর ফারুকীর জন্য কোনো ব্যাপার না।
হেকিম সাহেবের কথা শুনে কহিনুর হাসলো। ওখান থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলো সেই জায়গায়।তারপর সুউচ্চ পাহাড়ের উপরে বসে পড়লো। হেকিম সাহেবের কথামতো সব ঠিকঠাক করে ডাকতে শুরু করলো। একবার দুবার তিনবার করে চতুর্থবারের সময় হঠাৎ দূরে একটা কাক ডেকে উঠলো। কহিনুর ভ্রু কুচকে ফেলল। এই শহরে কাক কিভাবে আসবে ওর জানা নেই। মন স্থির করে আয়নার চোখ রাখতে গিয়ে ভড়কে গেলো। মিররে এক সুদর্শন পুরুষের প্রতিচ্ছায়া ভেসে উঠেছে। কহিনুর কিছু বলার আগেই পুরুষালী কন্ঠ ভেসে আসলো,
> কেনো ডেকেছো আমাকে? এর মূল্য যোগাতে হবে তোমাই। প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ কাজকর্ম করছো কি লাভ হচ্ছে? ফিরে যাও মেয়ে। আমাকে একা থাকতে দাও। কতটা যন্ত্রণা নিয়ে এখানে পড়ে আছি তুমি কি বুঝবে।

ভদ্রলোকের কথা শুনে কহিনুর বিরক্ত হলো। ঝাঝালো কণ্ঠে বলল,
> আপনার কর্মফল আমরা ভোগ করছি আর আপনি এখানে বসে তামাশা দেখছেন? চন্দ্রকে ফিরিয়ে আনুন আর সুলতান পরিবারকে মুক্তি দিন। এভাবে আর কতদিন? একটা অন্ততপক্ষে ভালো কাজ করুন। ওকে ফিরিয়ে আনুন প্লিজ।

> কিভাবে ফিরিয়ে আনবো ওকে? ওর মুখ দর্শন করাও পাপ। ওর পাপে আমি জ্বলছি। কতবার নিষেধ করেছিলাম কেউ কথা শোনেনি।

> ওকে না ফেরালে আমরা জ্বলতে থাকবো। দয়াকরে আমার সঙ্গে চলুন। আপনার হাত ধরেই চন্দ্র এখানে ফিরবে।
> ওকে ওরা ব্যবহার করছে। চন্দ্রকে ওরা ফিরতে দিবে না। তুমি জানোনা কালো শক্তির শয়তান কতটা ভয়ঙ্কর? ও যতদিন না নিজের স্বার্থ পূরণ করতে পারছে ততদিন চন্দ্র ওখানেই থাকবে।

ভদ্রলোকের কথাশুনে কহিনুর কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর বলল,
> আমি দেখে নিবো। আপনি শুধু আমার সঙ্গে চলুন। যেভাবেই হোক চন্দ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলুন” চন্দ্র চলো ফিরে যায়।”
> আচ্ছা চলো।
কহিনুর ভালো জ্বিনটাকে সঙ্গে নিয়ে গভীর জঙ্গলের মধ্যে থাকা সেই প্রসাদে ফিরে গেলো। নিজে লুকিয়ে থেকে ওকে পাঠিয়ে দিলো ভেতরে।তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে চন্দ্র। কফিনে থাকা ওর শরীরে পচন ধরতে শুরু করেছে। কিভাবে শান্ত থাকবে বুঝতেই পারছে না। গতকাল রাতেই ওর শেষ র/ক্ত স্নান ছিল সেটা হয়নি। নতুন কিছু করতে হবে ভেবে যখন ও কফিনের পাশ থেকে উঠে আসতে চাইলো ঠিক সেই সময় জমিদার সাহেবের কন্ঠ শুনে ও থমকে গেলো। চন্দ্র দৌড়ে গিয়ে ওকে ঝাপটে ধরে কেঁদে ফেলল। হাতের মুঠোয় জমিদার সাহেবের মুখটা তুলে নিয়ে ঠোঁট উল্টে বলল,
> আপনি গতকাল আসোননি কেনো? কতটা কষ্ট পাচ্ছে আপনার চন্দ্র দেখতে পাচ্ছেন? অন্য উপাই খুজতে হবে। দেখুন লা*শ পচতে বাকি নেই।

চন্দ্রের কথা শুনে উনি গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
> আমার সঙ্গে ফিরে চলো চন্দ্র তোমার শরীরের দরকার হবে না। ওখানে আমার সঙ্গে থাকবে। যাবে তুমি?
চন্দ্র জমিদার সাহেবের চোখের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাঁকালো। চোখে চোখে কথা হলো। কতদিনের সুধা নিবারণ হলো জানা নেই। চন্দ্র দিশেহারা হয়ে উঠলো। জমিদার মশাইয়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে যাবে কোথায় চন্দ্র? আনমনে হাতটা বাড়িয়ে দিলো সামনের দিকে। তারপর দুজনের চললো দিগন্তের দিকে। কহিনুর দ্রুত গিয়ে চন্দ্রের লা/শে আগুন জ্বালিয়ে দিলো। শরীর না থাকলে চন্দ্র কিসের মায়ায় ফিরবে? কখনও পারবে না ফিরতে। পৃথিবী থেকে চন্দ্রের নাম নিশানা চিরতরে মুছে যাবে আজকের পর থেকে ।
************
সুলতান ভিলাতে বৃদ্ধ দাদু হাউমাউ করে কেঁদে চলেছে। কতকাল যাবত নিজের শরীরটা নিজের বশে ছিল না। আজ নিজেকে কেমন হালকা অনুভব হচ্ছে। সেই থেকে কাঁদছে। চন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গে জমিদার মশাইয়ের আত্মাও ফিরে গেছে নিজেদের স্থানে। সুলতান পরিবারের উপরে আর কোনো অভিশাপ নেই। কিন্তু অর্ধমানবদের কিভাবে বিনাশ করবে বুঝতে পারছে না। সাঈদের আম্মী ওকে বলে দিয়েছে সেই উপাই কহিনুর যেনো নিজেই করে নেয়। কারণ অর্ধমানবদের হত্যা করতে হলে ওদের বংশ ধ্বংস হবে। সেই সঙ্গে পাথর আর ওর বাবাকেও। কহিনুর কিছুতেই নিজের জ্ঞানে পাথরের ক্ষতি করতে পারবে না। পাথরকে ও চাই নিজের জন্য। লোকটাকে ও ভীষণ ভালোবাসে। তাছাড়া স্ত্রী হয়ে কিভাবে স্বামীর প্রাণ নিবে? মাথা ঘুরে উঠলো ওর। চুপচাপ বৃদ্ধ দাদুর সামনে গিয়ে বসলো। ভদ্রলোক কান্না থামিয়ে বলল,
> কৃতজ্ঞ আমি তোমার উপরে। এতোদিন নিজের বশে ছিলাম না কতকত অপরাধ করেছি তার হিসেবে নিই। আমি নিজের সম্পত্তির অংশ মানুষের কল্যাণে দান করে তাবলীগে যেতে চাই। বাকীটা জীবন আমি আল্লাহ রাস্তায় পার করতে চাই। আমাকে সেই সুযোগটুকু করে দাও তুমি। আল্লাহ তোমার মঙ্গল করবেন। দেশে ফিরে যেতে চাই।
কহিনুর বিরক্ত হচ্ছে। পাথর এখানে নেই। সে গেছে কি এক কাজে বলে যায়নি। শেষ মূহুর্তে এসে এতোটা দুরত্ব ওর সহ্য হচ্ছে না। লোকটা বুঝে না কেনো। কথাটা ভেবে ও বুদ্ধ দাদুর দিকে চেয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
> আপনার শরীর দুর্বল। এই অবস্থায় তাবলীগে যেতে পারবেন না। দেশে ফিরে গিয়ে এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসা করতে পারেন। আমি চাচ্চুকে বলবো। এটাই আপাতত আপনার জন্য ভালো হবে। এতকাল আপনি না চাইতেও শয়তানের উপাসনা করেছেন আপনার উচিত ভালো কোনো ঈমামের সঙ্গে যোগাযোগ করা। উনি যে বিধান দিবেন সেভাবেই চলুন। আমি আসছি এখন।

কথাটা বলে কহিনুর অপেক্ষা করলো না। বেরিয়ে আসলো। দ্রুত গিয়ে মীরার কক্ষে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়লো। মীরা কফি প্রেমি। চোখ বন্ধ করে কফির স্বাদ গ্রহণে সে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ কহিনুরকে দেখে থমকে গেলো। কহিনুর এই বাড়িতে ওর বিশ্বাস হচ্ছে না। দ্রুত দাঁড়িয়ে পড়লো। কহিনুর সোজা গিয়ে মীরাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
> ছোট আম্মু কেমন ছিলে? আমি কিন্তু তোমাকে রোজ দেখেছি। যাইহোক একটা সাহায্য করতে পারবে?
মীরা ওর পিঠে হাত রেখে কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলল,
> তুমি ভীষণ দুষ্ট হয়ে গেছো নূর। তোমার চাচ্চুর সঙ্গে দেখা করো অথচ আম্মুকে ভুলে যাও। আর সাহায্য চাইতে হবে কেনো? শুধু বলো কি করতে হবে? তুমি বললে আমি এই বাড়ির সবাইকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিক্স করে ঘুম পাড়িয়ে দিবো।

মীরার কথা শেষ হলো না ওয়াশরুমের দরজা খুলে গেলো। জামসেদ চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বলল,
> তোমার ছোট আম্মু এটা খুব ভালো পারে নূর। তোমার বাবার মতো এটারও মাথার তার কাটা। ভুলভাল কাজে উস্তাদ।
জামসেদের কথা শুনে মীরা ঠোঁট ফুলিয়ে কোমরে হাত বাঁধলো। কহিনুর বুঝলো এখানে ঝগড়া চলবে। তাই আগেই বলে উঠলো,
> চাচ্চু এখন ঝগড়ার মুডে নেই। তুমি তো জানতে সিসি ক্যামেরা কেনো বন্ধ আছে? বলে ফেলো সবটা। আর সেদিনের সেই খুনির পরিচয় বলো। লুকোচুরি খেলা সামনে আসা জরুরী। আর ছোট আম্মু তুমি আমার আম্মুকে নিয়ে অনবরত কোরআন তেলোওয়াত করতে পারবে? আমি ঈমাম সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি ওই শয়তানকে সামনে আনতে এটা জরুরী। একমাত্র এটাই এখন হাতিয়ার। অর্ধমানবের বিষয়টা পরে ভাববো।

কহিনুরের কথা শুনে জামসেদ হাসলো। বলল,
> আমি কিছুই বলবো না নূর। আমি চাই ও সকলের সামনে নিজের পরিচয় দিক। শুধু মীরা আর তোমার আম্মু না আমরাও তোমাকে সাহায্য করবো। এই বাড়ি থেকে খারাপ শক্তি তাড়িয়ে শুভ শক্তির আগমন ঘটিয়ে তবে আমাদের দম। কতটা দিন কষ্ট পেয়েছি একা একা তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না। ছোট থেকে মাটির নিচে বড় হয়েছি। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে খারাপ কাজ করছি। আজ প্রমাণ করবো তোমার মায়ের সঙ্গে বা আমার বাবা মাকে আমি হত্যা করিনি। যা করেছে ওই শয়তান নিজের জন্য করছে। সবাইকে হাতের পুতুল বানিয়ে ইচ্ছে মতো খেলেছে। আজ ওর পাপের ঘড়া পূর্ণ হবে।
জামসেদ চটে আছে বোঝা যাচ্ছে। কহিনুর দ্রুত গিয়ে জামসেদকে জড়ানো ধরে বলল,
> চাচ্চু রাগ নিয়ন্ত্রণ করো। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। তুমি জানো পৃথিবী যতদিন আছে খারাপ শক্তি ততদিন পযর্ন্ত থাকবে। ওদের কাজ হচ্ছে মানুষকে খারাপ পথে পরিচালিত করা। আমাদের পরিবারের উপর থেকে খারাপ শক্তির নজর চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে কহিনুরকে চিরতরে সমাধীত করতে হবে। না থাকবে বাঁশ না বাজবে বাঁশি। যদি কহিনুর না থাকে তবে আর কোনো খারাপ শক্তি আর আসবে না।
কহিনুরের কথা শুনে জামসেদ চমকে উঠলো। কহিনুরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিলো। কিছুক্ষণ আগে যা যা বলেছে এখন আফসোস হচ্ছে। কহিনুরকে সামধীত করতে হবে বিষয়টা ওর মাথায় ছিল না। এখন কি হবে ওদের? সুলতান পরিবারের একমাত্র উত্তরসূরি এই মেয়েটা। এই পরিবারে আর কোনো সন্তান নেই। কিভাবে থাকবে ওকে ছাড়া? তাছাড়া অধরা জুবায়ের মেয়ের জন্য পাগল হয়ে যাবে। না না আর কোনো ঝামেলা করবে না। জামসেদ গম্ভীর কন্ঠে বলল,
> নূর তুমি পাথরের সঙ্গে বহুদূরে চলে যাও। এদিকটা আমি সামলে নিবো। তোমাকে হারিয়ে আমরা ভালো থাকতে পারবো না বেটা। তুমি আমাদের প্রাণ।
কহিনুর চোখের পানি আড়াল করে নিলো। স্বার্থপর হলে পরিবারের সঙ্গে নিরিহ মানুষের প্রাণ যাবে। একটা প্রাণের বিনিময়ে যদি বাকীরা ভালো থাকে তবে কহিনুর তাই করবে। তবে চেষ্টা করবে পাথরকে রক্ষা করতে। কথাটা ভেবে ও জামসেদকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
> তেমন কিছু হবে না চাচ্চু। তুমি অকারণে ভয় পাচ্ছো। তুমি বাইরে আসো আমি নিচে যাচ্ছি। মায়ের সঙ্গে দেখা করা হয়নি।
কহিনুর আর অপেক্ষা করলো না। দ্রুত বেরিয়ে পড়লো। জামসেদ অস্থির হয়ে উঠছে। মীরা ওকে শান্ত করতে চাইলো কিন্তু হলো না। কি হতে চলেছে বোধগম্য হচ্ছে না।
**********
কহিনুরের দিকে আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পাথর। বুকের বাম দিকে চিনচিন করে যন্ত্রণা হচ্ছে। কিন্তু মেয়েটার কোনো হেলদোল নেই। সাঈদকে নিয়ে পরিকল্পনা করছে। দুজনের কথা শেষ হতেই ও পাথরের দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হলো। ভ্রু কুটি করে বলল,
> এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? অস্বস্তি হচ্ছে ওদিকে তাকান।
পাথর মলিন হেসে উত্তর দিলো,
> দেখতে দাও কাছে তো টানছি না তবুও এতো আপত্তি কেনো? আচ্ছা স্বামীর হক আদায় করেছো নূর? পরকালের চিন্তা ভুলে গেছো তুমি? আমার অধিকার দিবে না? হাতে হাত রেখে পথ চলার অঙ্গীকার সব তুমি এলোমেলো করে দিতে চাও নূর? আমার হৃদয়ের হাহাকার তুমি শুনতে পাচ্ছো? আমি তীব্র দহণে মারা যাচ্ছি নূর। তোমার হৃদয় সত্যি পাষাণ। দয়ামায়াহীন তুমি। একটু স্বার্থপর হতে পারতে আমার জন্য নিজের পরিবারের জন্য । কিন্তু হতে পারবে না জানি।তবে মনে রেখো তুমি তোমার কাজ করছো আমি আমার কাজ করবো। দোষারোপ করতে পারবেনা।

পাথরের অস্থির লাগছে। কিছুতেই নিজের উপরে বিশ্বাস রাখতে পারছে না। বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল সেখান থেকে ফিরেই কহিনুরের কক্ষে এসেছে। পাথরের কথা শুনে কহিনুরের কপালে ভাজ পড়লো। প্রশ্ন জাগলো কি করতে চলেছে পাথর?

চলবে

ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন। আজকের পর্বে শেষ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম না। আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ শেষ হবে। বাড়ির পরিস্থিতি খারাপ হতে চলেছে। তাই আগে আগেই শেষ করতে চাইছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here