#সাতরঙা_প্রজাপতি
লেখনীতে:#মাশফিত্রা_মিমুই
||পর্ব:০৭||
“আপনি তো বলেছিলেন সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে আসবেন তাহলে আসতে এত দেরি হলো কেন?”
দরজা খুলেই প্রশ্নটি শোভনের উদ্দেশ্যে ছুড়ে মারলো জ্যোতি। শোভন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো স্ত্রীর দিকে। মনে মনে বললো,”অভিযোগ করল নাকি কৈফিয়ত চাইলো?”
কোনো উত্তর না পেয়ে জ্যোতি আবারো বললো,”কী হলো উত্তর দিচ্ছেন না কেন? এটাই কী আপনার সন্ধ্যে?”
“আমি তো বলেছিলাম চেষ্টা করবো।”
“তাহলে চেষ্টা করেননি কেন?”
“করেছিলাম কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। এক সপ্তাহের ছুটি নেওয়ার কারণে অফিসে আমার ভাগের অনেক গুলো কাজ জমে ছিলো সেই কাজ করতে করতেই তো এতটা সময় হয়ে গেলো।”
“ওহ।”
“এবার ভেতরে আসি?”
এতক্ষণ জ্যোতির খেয়ালই ছিলো না যে শোভন সদর দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের এমন একটি বোকা কাজে নিজেই লজ্জা পেলো। দ্রুত সরে গেলো দরজার সামনে থেকে। শোভন ভেতরে প্রবেশ করল। জ্যোতি দরজা আটকে দিয়ে নিজেও ভেতরে চলে এলো। কিছুটা সময় নিয়ে পোশাক বদলে হাতমুখ ধুয়ে বিছানায় এসে বসলো শোভন।
গলা উঁচু করে ডাকলো,”শুনো একবার এদিকে এসো তো।”
শোভনের কণ্ঠ পেয়েই একপ্রকার দৌড়ে এলো জ্যোতি। বললো,”খাবার বাড়ছিলাম।”
“পরে বাড়া যাবে। এদিকে এসো।”
এগিয়ে এলো জ্যোতি। অফিস ব্যাগ থেকে শোভন একটি মোবাইলের বক্স বের করে জ্যোতির সামনে ধরলো। জ্যোতি ডান ভ্রু উঁচিয়ে বললো,”নতুন মোবাইল?”
“হুম ধরো। এটা তোমার জন্য।”
চমকে গেলো জ্যোতি। মোবাইলটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে বললো,”এটার কী দরকার ছিলো?”
“দরকার ছিলো বলেই এনেছি। তোমার মোবাইল তো মনে হয় না সঙ্গে করে এনেছো। বাড়ির লোক জনের সঙ্গে কথা বলার জন্যও তো এটার প্রয়োজন ছিলো। নতুন সিম ভরা আছে। বাদ বাকি সব পরে দেখে নিও।”
“আচ্ছা। এবার খেতে আসুন।”
বিছানার একপাশে মোবাইলটি রেখে খাবার টেবিলে গেলো জ্যোতি। শোভনও আর দেরি করল না জ্যোতির পেছন পেছন চলে এলো। খেতে বসেই ফ্রিজের কথা মনে পড়ল শোভনের। অপরাধী কণ্ঠে বললো,”দেরিতে অফিস ছুটি হওয়ার কারণে ফ্রিজের দোকানে আর যাওয়া হয়নি।”
“সমস্যা নেই। পাশের ফ্ল্যাটের ভাবী এসেছিলেন উনার ফ্রিজেই বাকি মাছগুলো রেখে দিয়েছি।”
“ওহ।”
খাওয়া শেষ করে জ্যোতি টেবিল গোছাতে লাগলো। শোভন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখলো। তারপর ঘরে চলে গেলো। বারান্দায় কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালো। কাজ শেষ করে ঘরে এলো জ্যোতি। আবারো সেই বাজে গন্ধ নাকে এলো। চট করে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। বারান্দায় গিয়ে শোভনের পেছনে দাঁড়ালো।
মলিন কণ্ঠে বললো,”এটা খাওয়া কী খুব জরুরী? সিগারেট খেয়ে কী আদৌ আপনার পেট ভরে?কোনো উপকার হয়? অযথা কেন এত অপচয় করছেন? ইসলামে কিন্তু অপচয় হারাম। স্বাস্থ্যের পক্ষে যা ক্ষতিকারক তাও হারাম। আপনি তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন তারপরেও জেনে বুঝে কেন এসব খেয়ে পাপ বাড়াচ্ছেন? কেন নিজের ক্ষতি করছেন?”
একদমে কথাগুলো বলে থামলো জ্যোতি। সঙ্গে সঙ্গে সিগারেটটা ফেলে দিলো শোভন। আজ আর জ্যোতিকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারলো না। দরজার মুখেই দাঁড়িয়ে আছে সে। দৃষ্টি শোভনের দিকে।শোভন দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলো।
ধীর কণ্ঠে বললো,”বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে মিশতে অভ্যাস হয়ে গেছে।”
“ছেড়ে দিন অভ্যাস। যেই অভ্যাসের মাধ্যমে নিজের ক্ষতি হয় সেই অভ্যাসের কী আদৌ কোনো দরকার আছে?”
উত্তর দিলো না শোভন। জ্যোতি বললো,”জানেন এসব খাওয়ার ফলে আপনার ঠোঁটটা একদম কালো হয়ে গেছে। দেখতে কেমন যেনো বিশ্রি লাগে।”
ভ্রু কুঁচকে নিলো শোভন। কেমন এক দৃষ্টিতে তাকালো জ্যোতির দিকে। হয়তো লজ্জা পেয়েছে। বললো,”সরো ঘরে যাব।”
জ্যোতি সরে দাঁড়ালো। যেতে যেতে শোভন বললো,
“বললেই হলো? দিনে খাই মোটে দুটো তার উপর দুবার ব্রাশ করি। দেখতে নাকি বিশ্রি লাগে। আসলে তোমার চোখেই সমস্যা।”
মুচকি হাসলো জ্যোতি। শোভন বাথরুমে ঢুকলো। দুদিন আগেও যার সামনে দাঁড়িয়ে হ্যাঁ না বলতেও ভয় আর লজ্জা গ্ৰাস করতো সেই তার সামনে দাঁড়িয়ে তাকে উদ্দেশ্য করেই এতগুলো কথা বলে ফেললো জ্যোতি! ভাবতেই লজ্জা লাগছে খুব।
বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে শোভন। মনোযোগ সহকারে নিজের মুখশ্রীতে চোখ বুলাচ্ছে। ঠোঁটে আঙুল ঘষতে ঘষতে বললো,”ঠোঁট তো সুন্দরই আছে তাহলে ও কালো দেখলো কোথায়?”
ব্রাশ করে ঠোঁট বেশ কিছুক্ষণ ঘষে মুখ মুছে বের হলো শোভন। উল্টো পাশ হয়ে শুয়ে আছে জ্যোতি। এতে বিরক্ত হলো শোভন। নিজেও লাইট অফ করে পাশেই শুয়ে পড়ল।
___________
রোজকার মতো আজও ঘুম থেকে উঠে শোভনকে দেখতে পেলো না জ্যোতি। হাতমুখ ধুয়ে মুখ ভার করে বিছানায় বসে রইলো। কিছুক্ষণ বাদে বাড়ি ফিরলো শোভন। দরজা বাইরে থেকে লক করে গিয়েছিল। স্ত্রীকে বসে থাকতে দেখে আড়চোখে তাকে দেখে নিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলো।
জ্যোতি অভিমানী কণ্ঠে বললো,”আপনি এমন কেন?”
“কেমন?”
“নিজে তো ঠিকই সঠিক সময়ে উঠে ফজরের নামাজ পড়তে চলে যান। একবারও আমায় ডাকেন না কেন? আমি জাগনা পাই না বলে পড়তেই পারি না।”
কী উত্তর দিবে ভেবে পেলো না শোভন তাই চুপ করে রইলো। জ্যোতি আবারো বললো,”শুনুন এই যে আপনি আমায় ডাকেন না এর ফলে আমার নামাজ কাযা হচ্ছে। যেহেতু আমি আপনার স্ত্রী সেহেতু এতে আপনারও কিন্তু পাপ হচ্ছে বুঝেছেন।”
“হুহ ভুল হয়েছে আমার। কাল থেকে ডেকে দিবো।”
মুহুর্তেই হাসি ফুটে উঠল জ্যোতির ঠোঁটে, উদাস হলো শোভন। সামান্য কিছুতেই এই মেয়ে এত খুশি হয়ে যায় কেন? জ্যোতি উঠে দাঁড়ালো। যেতে যেতে বললো,”অফিস যাবেন না?”
“হুম যাবো তো।”
“রেডি হয়ে আসুন আমি খাবার বাড়ছি।”
শোভন অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে লাগলো। জ্যোতি টেবিলে খাবার বেড়ে বসে রইলো শোভনের অপেক্ষায়। চুল ঠিক করতে করতে টেবিলে এসে বসলো শোভন। কোনো কথা না বলে খেতে লাগলো। জ্যোতি প্রশ্ন করল,”আজও কী আসতে দেরি হবে?”
মুখের খাবার শেষ করে শোভন উত্তর দিলো,”আমার অফিস ছুটি হয় আটটা বাজে কিন্তু নতুন বস আসার কয়েক দিন পর থেকেই ছুটির সময় বদলে গেছে। কখনো দেরি করে ছুটি দেয় কখনো বা একটু তাড়াতাড়ি। তাই সঠিক বলতে পারছি না।”
“বসটা নিশ্চয়ই পেট মোটা বুড়ো লোক তাই না?”
মুচকি হাসলো শোভন। পূর্ণ দৃষ্টিতে জ্যোতির দিকে তাকিয়ে বললো,”উহু যুবতী রমনী।”
“মেয়ে বস!”
“হুম।”
“বিবাহিত?”
“না।”
“ওহ।”
“তুমি রাতে খেয়ে শুয়ে পড়ো। আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আমার কাছে চাবি আছে সমস্যা নেই।”
জ্যোতি প্রতিক্রিয়া করল না। খাওয়া শেষ করে উঠে গেলো শোভন। জ্যোতি ডেকে বললো,”একটা কথা তো বলতেই ভুলে গেছিলাম।”
“বলো।”
“মায়ের নাম্বারটা দিন।”
শোভনের কপালে কয়েকটা ভাঁজ পড়ল। বললো,
“তোমার মায়ের নাম্বার আমি জানবো কী করে?”
অপ্রস্তুত হয়ে গেলো জ্যোতি। বললো,”আমার মায়ের নাম্বার তো আমার মুখস্থই আছে। আমি আপনার মা অর্থাৎ আমার শাশুড়ি মায়ের নাম্বার চেয়েছি।”
নিজের প্রশ্নে নিজেই কিছুটা লজ্জা পেলো শোভন। বললো,”ওহ। বুঝতে পারিনি। মোবাইল নিয়ে এসো সেভ করে দেই।”
জ্যোতি দৌড়ে গিয়ে মোবাইল নিয়ে এসে শোভনের হাতে দিলো। শোভন নাম্বারটি সেভ করে জ্যোতির হাতে দিলো তারপর বিদায় নিয়ে চলে গেলো অফিসের উদ্দেশ্যে। হাতে কোনো কাজ নেই। এখন অলসের মতো চুপচাপ বসে থাকতে হবে ভেবেই বিরক্ত লাগছে জ্যোতির। বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো, তাও ভালো লাগছে না। শাশুড়ির নাম্বারে কল দিলো।
আনোয়ারা বেগম হল ঘরে বসে বিলকিস খাতুনের সঙ্গে গল্প করছেন। রেশমী মোবাইল হাতে দৌড়ে এলো। বললো,”তোমার ফোন বাজছে মা।”
আনোয়ারা বেগম ভ্রু কুঁচকে শুধালেন,”কে ফোন করেছে?”
“আননোন নাম্বার মা।”
“দে দেখি।”
রেশমী কল রিসিভ করে মোবাইলটি মায়ের হাতে দিলো।আনোয়ারা বেগম মোবাইলটি কানে ধরে কিছু বলার আগেই অপরপাশ থেকে জ্যোতি উৎসাহিত কণ্ঠে বললো,”আসসালামু আলাইকুম মা। কেমন আছেন?”
পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল আনোয়ারা বেগমের। বসা থেকে উঠে স্থানটি থেকে সরে গেলেন। একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,”ওয়া আলাইকুমুসসালাম।আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তা তুমি কেমন আছো?”
“আলহামদুলিল্লাহ মা। বাড়ির সবাই কেমন আছে?”
“সবাই ভালো। শোভন কোথায়?”
“অফিসে গেছে।”
“তা নতুন সংসার কেমন লাগছে? কতদূর সাজানো হয়েছে?”
“ভালো মা তবে আপনাদের কথা খুব মনে পড়ছে।”
“মনে পড়ার কী আছে? মন দিয়ে সংসার করো। শোভন যখন ছুটি পাবে তখন না হয় চলে আসবে।”
“হুম।”
“তা সবকিছু ঠিকঠাক আছে তো? শোভন ঠিক মতো তোমার খেয়াল রাখে? কথা বলে তো?”
“হ্যাঁ মা। সব ঠিকঠাক।”
“ঠিক থাকলেই ভালো। নিজেও স্বামীর খেয়াল রেখো।মনে রেখো স্বামী সংসার দুটোই কিন্তু তোমার। শুধুই তোমার।”
“হুম মা। মনে থাকবে।”
খানিকক্ষণ কথা বলে কল কেটে দিলেন আনোয়ারা বেগম। আবারো একা জ্যোতি। লম্বা হয়ে শুয়ে রইলো বিছানায়। কলিং বেল বেজে উঠল। দৌড়ে চলে গেলো দরজার সামনে। দরজা খুলতেই ইভাকে দেখতে পেলো। হাস্যজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে আছে সে। মেয়েটি বেশ মিশুক। জ্যোতির থেকে সম্ভবত বছর দুয়েকের বড়ো হবে। ইভা ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,”একা একা ভালো লাগে না তাই আবারো চলে এলাম আপনাকে বিরক্ত করতে।”
জ্যোতি স্মিত হেসে বললো,”আমিও একাই ছিলাম। এসে ভালোই করেছেন।”
ইভাকে বসতে বলে জ্যোতি চলে গেলো রান্নাঘরে চা বানাতে। দুই কাপ চা বানিয়ে নিয়ে এলো। এক কাপ ইভাকে দিয়ে আরেক কাপ নিজের হাতে নিয়ে সোফায় বসলো। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ইভা প্রশ্ন করল,”আপনাদের বিয়ে হয়েছে কতদিন হলো?”
“এক বছর।”
“ওহ আমাদের আবার পাঁচ মাসে পড়েছে।”
জ্যোতি প্রশ্ন করল,”কিসের?”
“বিয়ের।”
“ওহ।”
“তা বাচ্চাকাচ্চার কথা কী ভাবলেন?”
অপ্রস্তুত হয়ে গেলো জ্যোতি। এই প্রশ্নটি সবসময় বিরক্ত লাগে তার কাছে। ইভা হেসে বললো,”এমনি জিজ্ঞেস করলাম রাগ করবেন না আবার।”
জ্যোতি কিছু বললো না। ইভা প্রসঙ্গ বদলে অন্য গল্প করতে লাগলো।
অফিসে ল্যাপটপের সামনে মনোযোগ সহকারে বসে আছে শোভন।তনিমা আজ একবারও বিরক্ত করেনি তাকে। এতে অবশ্য খেয়াল নেই শোভনের। বিকেল হয়ে গেছে সব কাজ শেষ করে তনিমার কেবিনে গেলো সে। বললো,”সব কাজ কমপ্লিট হয়েছে ম্যাম। এবার কী ছুটি দেওয়া যাবে?”
তনিমা কোনো প্রশ্ন না করেই ছুটি দিয়ে দিলো শোভনকে। যাওয়ার জন্য শোভন বের হতে যাচ্ছিল তখনি পেছন থেকে ডাক পড়ল,”মি.শোভন!”
শোভন পেছন ঘুরলো। উত্তর দিলো,”ইয়েস।”
একটি খাম এগিয়ে দিয়ে তনিমা বললো,”এই নিন।”
ভ্রু কুঁচকে ফেললো শোভন। খামটি হাতে নিয়ে প্রশ্ন করল,”কী এটা?”
তনিমা মৃদু হেসে বললো,”আপনি সম্ভবত আমি এখানে জয়েন করার আগেই ফ্ল্যাট সম্পর্কিত একটি এপ্লিকেশন দিয়েছিলেন। আপনার এপ্লিকেশনটি সাবমিট হয়েছে।”
শোভনের ভেতরে এক সতেজতা খেলে গেলো। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললো,”থ্যাঙ্কিউ ম্যাম।”
“থ্যাঙ্কিউ এর দরকার নেই।আপনার ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে কংগ্ৰাচুলেশন।”
শোভন তনিমার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলো অফিস থেকে। ফ্রিজ কিনে নিয়েই বাড়িতে ফিরলো। দরজা খুলে শোভনের সঙ্গে নতুন ফ্রিজ দেখে জ্যোতি বললো,”এখনি ফ্রিজের কী দরকার ছিলো? পাশের ফ্ল্যাটের ভাবীর ফ্রিজেই তো মাছগুলো রাখছিলাম।”
“একসময় না একসময় তো কিনতেই হতো। অন্যের ফ্রিজে যাওয়ার আর দরকার নেই।”
জ্যোতি কথা বাড়ালো না। শোভন গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ঘরে চলে গেলো। যাওয়ার আগে বললো,”খুব ক্লান্ত লাগছে আমার। মাগরিবের আগে ডাক দিবে না।”
“আচ্ছা।”
ফ্রেশ হয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়ল শোভন।বালিশে মাথা রাখতেই ঘুমিয়ে গেলো। জ্যোতিও কোনো বিরক্ত করল না তাকে।
_________
মাগরিবের আজান পড়েছে অনেকক্ষণ হলো।নামাজ পড়ে এসে বিছানায় বসলো শোভন। জায়নামাজ ভাঁজ করে শোভনের সামনে এসে দাঁড়ালো জ্যোতি। গোমড়া মুখে বললো,”সেই কবে আপনাকে বলেছিলাম আমায় কিছু ফুল গাছ এনে দিতে অথচ এখনো আপনি আমায় একটা গাছও এনে দিলেন না।”
শোভন উদাস হয়ে বললো,”মনে ছিলো না।”
“আমি বাদে সবকিছুই আপনার মনে থাকে।”
জ্যোতির কথায় বিরক্ত হলো সে। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো তারপর আলমারির সামনে চলে গেলো। একটি শার্ট বের করে গায়ে জড়িয়ে বোতাম লাগাতে লাগাতে জ্যোতির উদ্দেশ্যে বললো,”তোমার হাতে পাঁচ মিনিট সময় আছে এর মধ্যে দ্রুত রেডি হয়ে এসো।”
অবাক হলো জ্যোতি। প্রশ্ন করল,”এ সময় কোথায় যাবো?”
“কেন? তোমার জন্য ফুল গাছ আনতে।”
চলবে_____
(কার্টেসি ছাড়া কপি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।)