#গল্পগুচ্ছ_সমগ্র
#অচেনা_কেউ
#পর্ব_৯_ও_শেষ_পর্ব
লেখক_আয়াত_মুস্তারিহ_আয়ান
আয়ানের হাতে দুইটা অপশন..হয় তাকে আরিশা কে চুস করতে হবে নাহলে আয়েশাকে৷
।
একদিকে কাজ করছে তার ভালোবাসা আরেকদিকে এতোদিন ধরে একটা মেয়েকে ভুল বুঝে তাকে কষ্ট দেওয়ার সহানুভূতি..
.
কোন দিকে যাবে সে কিছুই বুঝতেছে নাহ.
.
.
এমন সময় তার মনে হলো..আয়াত কেনো তাকে ক্লু দিবে..সে তো সারাজীবনই চেয়েছিলো আমায় যারা ভালোবাসে তাকে শেষ করে দিতে..
.
এমনকি মা বাবাকেও আয়াত ই হত্যা করে..কারণ তারা আমাকে বেশি ভালোবাসতো..
এর মানে সে আমাকে যেখানেই,নিবে কোন না কোন ট্র্যাপ এ ফেলবে.
আমার যে করেই হোক ওকে আটকাতেই হবে৷
।
কিন্তু কি করে??
.
.
আয়ান হাসপাতাল থেকে থেকে হয়ে সোজা পুলিশ স্টেশন আসে..
আয়েশার বাবার এসপির সাথে সম্পর্ক ভালো থাকায় এসপি আয়ানকে সাহায্য করতে রাজি হয়ে যায়..
.
আয়ান আয়াত কে ফোন দিবে আর পুলিশ তারে ট্রেস করবে…
.
আয়ান ফোন দেয় আয়াত কে..
.
>কিরে আয়ান??কাকে বাচাবি ভাই??গার্লফ্রেন্ড না জাস্ট ফ্রেন্ড??
.
ভাই দেখ ভাই প্লিজ ওদের ছেড়ে দে তুই?.প্লিজ..
>হাহা আয়ান..এই তো চেয়েছিলাম আমি..যে তুই কষ্ট পা..কষ্ট ই তো,দিতে চাই তোকে আমি..
।
.
আয়াত আমি আসলে কিন্তু খারাপ হয়ে যাবে..
>তো আয় না??আমি অপেক্ষায় আছি.।
.
আয়ান ফোন রেখে দেয়..পুলিশ আয়াতের লোকেশন,পেয়ে যায়..
.
ওইদিকে আয়াত বসে আছে তাদের নিজের বাসায়??সেখানেই আয়েশা সেখানেই আরিশা.।
.
আসলে আয়ান কে সে সম্পুর্ন ভুল লোকেশন দিছিলো..
দুই জায়গা তেই লোক ফিট করা..আয়ান গেলে আর বেচে ফিরতে পারবে নাহ..
.
.
এখন আয়ানের মাথায় প্রশ্নই ঘুরছে মাথায় যে কিভাবে আয়াত বেচে গেলো..
সে তো এক্সিডেন্ট এ মারা গেছিলো..
নিজের হাতে তাকে কবর দিছে আয়ান..
কিন্তু কিভাবে বেচে আছে সে??
..
.
নানা প্রশ্ন নিয়ে নিজের বাসার দিকে যাচ্ছে আয়ান..
সাথে পুলিশ..
আয়ান ধীর পায়ে তার ঘরের দিকে এগুচ্ছে..
.এদিকে আয়াত বার বার নিজের লোকদের ফোন দিয়ে কনফার্ম করতেছে যে আয়ান সেখানে গেছে কি না..
.
কিন্তু খবর না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সে..
.
অপর দিকে আয়েশা ভাবতেছে অন্য কথা..
.
আয়ান তাহলে আরিশার বয়ফ্রেন্ড তাহলে কি করে সব মনে রেখেও এটা ভুলতে পারে সে??তার মানে কি আরো কোন কিছু সে ভুলে গেছে??এমন কি কিছু আছে যা আয়েশা স্লিপ করতেছে??.
.
আয়েশার মাথায় কিছুই আসছে নাহ.
.
আয়েশা নিজের মাথায় চাপ দিতেছে..এমন সময় সে তার কানের দুলে হাত দিলো..
সামনে নিয়ে এসে ভালোভাবে দেখতেছে..
না এখানে তো কোন মাইক্রোফোন নেই..
তাহলে কি আয়াত মিথ্যা বলতেছে??
.
.
এসব ভাবছে আয়েশা..হঠাৎ সামনে গুলির আওয়াজ..
.
সামনে তাকাতে দেখে আয়াত মাটিতে পরে আছে.
.
আয়াত কে গুলি খেতে দেখে আর পুলিশ দেখে আয়াত এর বাকি লোকেরাও দৌড় দেওয়া শুরু করে..
.
গুলির আওয়াজে আয়েশার মাথায় একটা আঘাত.
মানে একটা শকের মতো..
.
সে কি,যেনো মনে করতে পারতেছে..
.
সবাই এসে আরিশা আর আয়েশাকে নিয়ে যাচ্ছে
.
আরিশার শরীরে সেলাইন আর অক্সিজেন মাস্ক দেওয়া..
আয়ান তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে..
.
আয়েশার মা বাবাও আয়েশার সামনে এসে তাকে ধরে কাদতে থাকে..
.
এমন সময় আয়েশা তাদের প্রশ্ন করে উঠে..
.
আচ্ছা মা..আমার হাতে যেই মোবাইলটা আছে এইটাই কি আমার মোবাইল??
>মানে??
>এক্সিডেন্ট এর আগেও কি এই মোবাইল আমার হাতে ছিলো.??
>না মানে.না এটা নতুন কিনে দেওয়া হয়।।
>আমার আগের মোবাইলটা কোথায় মা??
>তোর ড্রয়ের এ আছে..
.
.
আয়েশা কোন কথা না বলে বাসার দিকে দৌড় দিতে নেয়..
হঠাৎ তার সামনে একটা ডায়রি পরে..
.
মানে সাইডে ছিলো??সে দেখে ফেলে..
.
সে ডায়রিটা নেয়..
.
সেটা পরে চরম শক খায় আয়েশা..
না অচেনা মানুষটি আয়াত না..
সে ডায়রিতে সব প্ল্যান বলে দিছে আয়াত কে..যাতে সে নিজেকে আমার সামনে অচেনা কেউ দাবি করতে পারে..
.
আমাকে কিডন্যাপ করার বুদ্ধি ও তার ই ছিলো..
.
এর মানে হলো যে. অচেনা মানুষটি অন্য কেউ..
.
আয়েশা জলদি বাসায় গিয়ে ফোন ঠিক করতে দেয়?.
২/৩ ঘন্টার মধ্যে ফোন ঠিক হবে..
.
.
আচ্ছা মা..আমার এক্সিডেন্ট এর পর আরিশার এমন অবস্থা হলো আমি বেচে গেলাম কি করে??মানে আমার কিছুই হলো নাহ??
.
আসলে মা তোর ও শরীরের কিছু অংশে সমস্যা হইছিলো,যা কোথাও পাওয়া যাচ্ছিলো.. তোর রক্ত ও O- তাই তা পাওয়া ও যাচ্ছিলো নাহ??অনেক রক্ত লাগতো.হঠাৎ কোথা থেকে যেনো এক ছেলে এসে তোর যা যা লাগবে সে দিয়ে দিলো.।
ডাক্তার তাকে বলেছিলো যে তার মৃত্যু ও হতে পারে তাও সে নাকি ডাক্তার এর পায়ে ধরে সব দিয়ে যায়.
.
.
কিছু দিন পর তার মৃত্যুর সংবাদ চলে আসে..
.
.
.
হে আয়েশা যা ভাবছিলো তাই..
নীল..
.
অনেক কিছু মনে পরে যায় আয়েশার..কারণ তার হাতে এখন তার নিজের ফোন..
.
সেখানে সে নীল নামের ছেলেটির মেসেজ গুলো দেখে..
.
ছেলেটি রোজ আয়েশাকে মেসেজ দিতো..
কিন্তু আয়েশা পাত্তা দিতো না..
ফারহানের সাথে ব্রেক আপের পরে তো আরো পাত্তা দিতো নাহ..
.
সে লাস্ট এ এটাও লিখে ছিলো সে আয়েশা..
তোমার জন্য জীবন ও হাজির আমার..চিন্তা করো না তুমি..
.
আয়েশা তাও রিপ্লাই দেয় নি..
.
।
।
ছেলেটির শেষ মেসেজ ছিলো..
.
আয়েশা..অনেক ভালোবাসি তোমায়. হয়তো আজকের পর তোমায় আর দেখবো ও নাহ..কিন্তু তোমায় প্রতিদিন বাড়ির সামনে যখন দেখতাম নাহ..কেনো যেনো মনে হতো আমি নিশ্বাস নিতে পারতেছি.
আর তুমি ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারি নাহ..কিন্তু আজকের পর আর তোমায় দেখতে পারবো না আয়েশা৷ পারবো না…
কিন্তু একটা জিনিস ভালোই হইছে৷
অন্য কোন ছেলের সাথে আর তোমাকে দেখতে হবে না আমার..কারণ আমি আর থাকবো না দেখার জন্য??অন্য কারো সাথে তোমায় দেখা যেনো মৃত্যুর থেকেও বেশি ছিলো..
আজ থেকে আর সেই যন্ত্রণাটা হবে নাহ আমার।।যানো আয়েশা??তুমি আমি তোমার কেউ না ঠিক কিন্তু রক্তে মিশে থাকবো আজ থেকে আমি তোমার..
.
ভালোবাসি তোমায় আয়েশা..ভালোবাসি..
.
আর জীবনে কোন বিপদ তোমায় ছুতে দিবো না আমি আয়েশা..ছায়ার মতো তোমার কাছেই থাকবো..কখনও আমাকে উপলব্ধি করতে চাইলে চোখ বন্ধ করে থেকো..বাতাস হয়ে তোমায় ছুয়ে দিবো..
.
.
.
মেসেজটা পরে আয়েশা কান্নায় ভেংগে পরে..যেই ছেলেটাকে সে জীবনে দেখেও নি সে এতো ভালোবাসতো আয়েশাকে??
আর আমি তাকেই একটু পাত্তা দিলাম নাহ??
আসলে আমরা এমনি.. দাত থাকতে দাতের মর্যাদা দিতে পারি নাহ.
.
.
.
.
.১৫ দিন পর..
.
এখন আরিশা সুস্থ..আয়ান আর আরিশা এক সাথে আছে..তাদের ভালোবাসাও রয়েছে..আগের থেকে বেড়েছে আরো..
।
আয়েশাও নিজের স্বাভাবিক লাইফে ব্যাক করছে..
সে এখন বাহিরে যায়.
.
আয়েশা গোসল করতেছে..
.
হঠাৎ তার ফোনে একটা মেসেজ আসে..
আয়েশা আজ বাহিরে যেয়ো না সমস্যা হবে.
.
আয়েশাও ভালো মেয়ের মতো কথা শুনে বাহিরে যাওয়া বাদ দেয়৷
।
কারণ এখন নিজের জীবন সে অচেনা মানুষটির হাতে ছেড়ে দেয়.
.
অচেনা হোক সে
আমার জীবন ই তার এখন যে৷
।
.
আয়েশা এখন রোজ সন্ধ্যায় ছাদে যায়..
আর উপলব্ধি করে চোখ বন্ধ করে তার অচেনা তুমিকে..
অদ্ভুত একটা ফিলিংস আসে তার.
এই বাতেসের ছোয়া সে সারাজীবন পেতে চায়
.
তার অচেনা কেউ এর ছোয়া..
.
.
#সমাপ্ত..
.
নতুন গল্প পেতে পেজে ফলো করে রাখলে পোস্ট করলেই নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন প্লিজ ফলো 👍👍👍গল্পগুচ্ছ সমগ্র