#গল্পঃ_অন্যরকম_প্রেমানুভূতী
#Maisha_jannat_nura (লেখিকা)
#সমাপ্ত_পর্ব
তীব্রের রুম থেকে আসার পর আমজাদ চৌধুরী নিজের রুমে পায়চারী করছিলেন, একবার এ পাশে যাচ্ছেন তো আরেকবার অন্যপাশে, নিজের এক হাতের তালুর সাথে অন্যহাতের তালু ঘষাঘষি করছিলেন, তার মাথায় এখন একটাই চিন্তা ঘুরছে কিভাবে সবার মাঝে তীব্র আর তৃপ্তির বিষয়টা তুলে ধরবেন, সবাই কি বিষয়টা ভালোভাবে নিবেন!
ণতাতে কি তীব্র দাদু ভাই যখন তৃপ্তি দিদিভাইকে ভালোবাসে তখন দুনিয়ায় এমন কেও নাই যে দাদুভাইয়ের থেকে তৃপ্তিকে আলাদা করতে সক্ষম হবে। আমজাদ চৌধুরীর এমন পায়চারী করার কেনো মানে খুজে পাচ্ছেন না তীব্রের দাদীমা চোখ বড়বড় করে দেখছেন আমজাদ চৌধুরী কি কি করেন, বেশ কিছু সময় পেড়িয়ে যাওয়ার পরেও যখন আমজাদ চৌধুরীর কোনো পরিবর্তন দেখলেন না তখন বেশ রাগ ও বিরক্তি মিশ্রিত কন্ঠে আমজাদ চৌধুরীকে উদ্যেশ্য করে বলেন..
-এই বুড়ো, কী হয়েছে টা কি শুনি, কতক্ষণ থেকে দেখছি পায়চারী করছো আবার কিসব উল্টাপাল্টা বকা শুরু করছো।
সুবর্ণা চৌধুরীর মুখে বুড়ো ডাক শুনে আমজাদ চৌধুরীর মুখ ভার হয়ে যায়, পায়চারী বন্ধ করে সুবর্না চৌধুরীর পাশে বিছানায় বসে পরে অভিমানী সুরে বলে..
-তুমি আমাকে বুড়ো বলতে পারলা বউ?
-এহহহ ঢং, বুড়ো কে বুড়োই বলেছি (সুবর্ণা চৌধুরী)
-দুঃখে কষ্টে এখনি আমার ম.. (আরমান চৌধুরী)
আরমান চৌধুরী পুরো কথা শেষ করতে পারলেন না, বাকি কথা বলার আগে সুবর্ণা চৌধুরীর দিকে চোখ পড়লে দেখেন তিনি রাগী লালবর্ণ চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছেন, আমজাদ চৌধুরী সুবর্ণা চৌধুরীর এই রাগীচোখের ভাষা খুব ভালো করেই বুঝতে সক্ষম হয়েছেন, তিনি বুঝতে পেরেছেন ভুল জায়গায় ভুল কথা বলতে ধরছিলেন তিনি, ওনাদের ২জনের বয়স হলেও ভালোবাসায় কোনো মরিচা ধরে নি তাদের মাঝে ভালোবাসার গভীরতা অনেক বেশি। আমজাদ চৌধুরী কিছুটা ভয়মিশ্রিত শান্ত কন্ঠে সুবর্ণা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেন..
-আমার লক্ষী সুনা বউ রাগ করে না, ইয়ে মানে আমি তো মজা করছিলাম, তুমি সিরিয়াসলি নিচ্ছো কেন?
-চুপ করো, কোনো কথা বলবা না সবসময় শুধু বাজে চিন্তাভাবনা (সুবর্ণা চৌধুরী)
-আচ্ছা আর হবে না (আমজাদ চৌধুরী ছোট ছোট চোখ করে সুবর্ণা চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বললো)
-আবার এমন হওয়ার সুযোগ ও দিবো না নিজের হাতেই তোমাকে মেরে ফেলবো (রাগী চোখে আমজাদ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বললো)
-আচ্ছা ঠিক আছে (আমজাদ চৌধুরী হেসে দিয়ে বললো)
-তীব্র দাদুভাই কি বললো, ও কি রাজি হইছে সিনহার সাথে বিয়ের বিষয়ে? (সুবর্ণা চৌধুরী জানার উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমজাদ চৌধুরীর দিকে)
আমজাদ চৌধুরী ছোট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন..
-সিনহা ভালো মেয়ে নয়, আর তীব্র ওকে সহ্যই করতে পারে না। বিয়ের জন্য রাজি হবে কি করে, সবথেকে বড় কথা দাদুভাই অন্য একজনকে ভালোবাসে, বিয়ে করলে ওকেই করবে সবাই এতে রাজি হলে ভালো না হলেও ওর কোনো যায় আসে না, তুমি আর বাকিরাও খুব ভালো করে জানো তীব্র কেমন ধরনের ছেলে।
আমজাদ চৌধুরীর কথায় সুবর্ণা চৌধুরীর কপাল চিন্তার কিছু ভাজ পরে, নিজেকে ঠিক করে আবার প্রশ্নসিক্ত কন্ঠে আমজাদ চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলে..
-দাদু ভাই কাকে পছন্দ করে? নাম কি মেয়েটার, আর পরিচয়..
আমজাদ চৌধুরী আর দ্বিধা না করে বলে..
-দাদুভাই তৃপ্তিকে ভালোবাসে।
-কিহহহ, ঐ মেয়েটা! ওর তো নিজের কোনো পরিচয়ের ঠিক নেই, আর দাদু ভাই ওর মতো মেয়েকে ভালোবাসে এটা কোনো কথা… (সুবর্ণা চৌধুরী)
সুবর্না চৌধুরীর থেকে এমন ধরনের কথা আমজাদ চৌধুরী মোটেও আশা করেন নি, তার মেন্টালিটি ও অন্য কিছু মহিলাদের মতো হয়ে গেছে ভেবেই আমজাদ চৌধুরীর ভিষণ রাগ হচ্ছে, তবুও নিজের রাগে সংযত করে বলে..
-সুবর্ণা তোমার থেকে এমন ধরনের কথা আমি এক্সপেক্ট করি নি, এসব কি বললে তুমি, ওর সম্পর্কে কিছু জানো না তাই এমন ফালতু চিন্তাভাবনা নিয়ে কথাগুলো বলেছো, ভেবেছিলাম কিছু জানাবো না তৃপ্তির অতীত সম্পর্কে, কিন্তু এবার আমাকে জানাতে হবে।
-কিসের অতীত? (সুবর্না চৌধুরী)
আমজাদ চৌধুরী ছোট করে দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে সুবর্ণা চৌধুরী কে সবটাই বললেন সবটা শুনে সুবর্ণা চৌধুরী চোখ দিয়ে বাঁধাহীন ভাবে পানি পড়ছে, তিনি আগে ভাবেন নি বা বুঝতে পারেন নি এই পিচ্চি মেয়েটার মাঝে এতো কষ্ট লুকিয়ে আছে। সুবর্ণা চৌধুরীর চোখে পানি দেখে আমজাদ চৌধুরী তার হাত দিয়ে সুবর্ণা চৌধুরীর চোখের পানি মুছে দিলেন খুবই যত্ন সহকারে। সুবর্ণা চৌধুরী নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন তাই তার মাঝে যথেষ্ট অনুশোচনা কাজ করছে, তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন..
-আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-আরে ক্ষমা চাইতে হবে না, তোমার জায়গায় বাকিরা থাকলেও না জেনে এমনটাই বলবে (আমজাদ চৌধুরী)
-হুম, আমি রাজি আছি তৃপ্তি দিদিভাইয়ের সাথে দাদু ভাইয়ের বিয়ে দিতে (সুবর্না চৌধুরী)
-আচ্ছা এখন নিচে চলো বাকি সবার সাথে কথা বলতে হবে (আমজাদ চৌধুরী)
-আচ্ছা (সুবর্না চৌধুরী)
২জনেই রুম থেকে বেরিয়ে নিচে আসলো আর সবাইকে ড্রয়িং রুমে আসার জন্য বললো। একটুপর সবাই ড্রয়িংরুমে আসলো, তৃপ্তি আর তীব্র ও ছিলো সেখানে। তীব্র বেশ স্বাভাবিক ভাবে সোফায় বসে ফোন চাপছে, আর তৃপ্তি কি হবে জানার জন্য উৎসুক দৃষ্টিতে একবার আমজাদ চৌধুরীর দিকে দেখছেন, আবার বাকি সকলের দিকে, তো একবার তীব্রের দিকে।
তীব্রকে আপনমনে ফোন চাপতে দেখে তৃপ্তির বেশ রাগ হচ্ছে, তীব্রের পাশে গিয়ে পিঠে একটা চিমটি কাটে সবার আড়ালে, তীব্র কিন্ঞ্চিত ব্যথায় আউচ করে উঠে তৃপ্তির দিকে তাকায়, তৃপ্তি নিজের দৃষ্টি অন্যত্র রেখে মিটিমিটি হাসছে। তীব্র বুঝতে পারে তৃপ্তি তার মনোযোগ সবার মাঝে না থাকার জন্যই এমন কাজ করেছে, তাই সে ফোন নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। তীব্রকে ফোন পকেটে ঢুকাতে দেখে তৃপ্তি বেশ খুশি হয়।
একটুপর আমজাদ চৌধুরী সবাইকে উদ্দেশ্য করে তীব্র আর তৃপ্তির বিষয় সম্পর্কে জানান, সবাই সবটা শুনে প্রথমে দ্বিমত করলেও পরে তৃপ্তির অতীত জেনে আর কোনো বাধা জানায় না কেও। হঠাৎ বিয়ের বিষয়ে কথা উঠলে তৃপ্তি কিছুটা ভায় পায় সবাই কিভাবে নেবে ভেবে কিন্তু পরে যখন সবাই রাজি হয় তখন ওর ভয় সম্পূর্ণ কেটে যায়।
.
.
সবাই তৃপ্তিকর নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পরে, বিয়ে বলে কথা কতো কাজ বাকি। বিয়েরকেনাকাটা সম্পূর্ণ শেষ করে নেয় খুব অল্প সময়েই, দেখতে দেখতে বিয়ের দিন ও চলে আসে। পুরো বাড়ি আলোতে ঝলমল করছে, সবার মুখে খুশির ছোয়া বয়ে যাচ্ছে, তীব্রের মুখে তৃপ্তিকে আজ একান্ত নিজের করে পাওয়ার প্রাপ্তি ভেসে উঠেছে। এদিকে তৃপ্তি বেশ নার্ভাস ফিল করছে, এতো এতো মানুষ কি হবে এসব ভেবেই।
তীব্র তৃপ্তির গায়ে হলুদের ব্যবস্থা করতে সবাই নিচে ব্যস্ত, তৃপ্তি উপরে রুমে গায়ে হলুদের জন্য নিজেকে তৈরি করে বসে আছে সেইসময় তীব্র তৃপ্তির রুমে প্রবেশ করে। হঠাৎ তীব্রকে নিজের রুমে প্রবেশ করতে দেখে তৃপ্তি কিছুটা অবাক হয়, তীব্র রুমে প্রবেশ করে দরজা আটকে দেয় পিছন ঘুরে তৃপ্তিকর হলুদ সাজে দেখে সে হা হয়ে যায়, একটা মানুষকে এতোটা সুন্দর কিভাবে লাগতে পারে! তীব্র মুগ্ধ করা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তৃপ্তির দিকে, চোখ সড়ানোর কোনো নামই নেই, তীব্রকে এভাবে ওর তাকিয়ে থাকতে দিকে তৃপ্তি বেশ লজ্জা লাগছে মাথা নিচু করে বলে..
-এ এভাবে দেখার কি আছে, আমার কেমন যেন লাগছে আপনি নিজের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নিন।
তীব্র তৃপ্তির কথায় মুচকি হাসি দিয়ে তৃপ্তির দিকে এগিয়ে আসে, তৃপ্তির ড্রেসিং টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে ছিলো। তীব্র তৃপ্তি সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে, তীব্রের এমন কাজে তৃপ্তি বলে উঠে..
-এই কি করছেন উঠু..
তীব্র ওর ১টা আঙুল তৃপ্তির ঠোটে বসিয়ে বলে..
-চুপ, কোনো কথা নয় আমি যা করছি করতে দাও চুপচাপ দেখো, বাধা দিলে ফল ভালো হবে না।
তীব্রের এমন কথায় তৃপ্তি চুপ হয়ে যায়, তীব্র তৃপ্তির পা নিজের হাটুর উপর নিয়ে পকেট থেকে একটা পায়েল বের করে পড়িয়ে দেয়। হাতে ছোটো ডায়মন্ড পাথরের রিং পড়িয়ে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়, আর বলে..
-আজ কিছু সময় পর আমার পিচ্চিটা একান্তই আমার হয়ে যাবে, ভালোবাসি পিচ্চি।
তৃপ্তি ও আজ ভিষণ খুশি, মনে হচ্ছে সব সুখ যেন ওর দরজার সামনে এসে ভিতর করেছে। তীব্র বসা অবস্থা থেকে উঠে দাড়ায়, তৃপ্তি চেয়ার থেকে উঠে তীব্রকে জড়িয়ে ধরে বলে..
-আমিও মি. বজ্জাতকে অনেক ভালোবাসি।
তৃপ্তি তীব্র কে ছেড়ে দিয়ে আবারও চেয়ারে বসে পরে,
-আমি কেমন বজ্জাত বিয়েটা হতে দাও, খুব ভালো করে বুঝিয়ে দিবো (তীব্র)
বলেই একটা চোখ টিপ দেয় তৃপ্তিকে। তীব্রের এমন কাজে তৃপ্তির আর লজ্জার সীমা থাকে না, তৃপ্তিকে এভাবে লজ্জা পেতে দেখে তীব্র নিজের বুকের বা পাশে হাত রেখে বলে..
-হায় হায় আমি তো পাগল হয়ে যাবো, বউ এভাবে লজ্জা পেও না, এমনি তেই তোমার প্রতি অনেক বাজে ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছি, উল্টোপাল্টা কিছু এখনি করে দিলে আমার কিন্তু দোষ থাকবে না বলে দিচ্ছি।
তীব্রের এমন লাগাম ছাড়া কথা শুনে তৃপ্তি কিছুটা রাগান্বিত দৃষ্টি তীব্রের উপর স্থির করে বলে..
-এই আপনি যান তো, লুচু কোথাকার এখনি সবাই চলে আসবে আপনাকে আমাকে একসাথে দেখলে উল্টোপাল্টা চিন্তা করবে।
তৃপ্তির কথায় তীব্র সায় না থাকলেও রাজি হয়ে যায়, যেতে যেতে বলে..
-বিয়ে করে নাও, তারপর আর ছাড় নেই তোমার আমার থেকে।
এই বলে তীব্র রুম থেকে চলে যায়..
-ইসসসসস, এই মানুষটাকে নিয়ে যে কি করি আমি (তৃপ্তি)
.
.
একটু পর সবাই এসে তৃপ্তিকে নিয়ে যায়, গায়ে হলুদের কাজ শেষ করে, সন্ধ্যায় বিয়ের অনুষ্ঠান তাই তৃপ্তিকে সাজানোর কাজ শুরু করা হয়। খুবই সুন্দর করে সাজানো হয় তৃপ্তিকে দেখতে পুরো পিচ্চি পরীর মতোই লাগছিলো, সুবর্ণা চৌধুরী তৃপ্তির কাছে এসে নিজের চোখের কাজল তৃপ্তির কানের পিছন লাগিয়ে দিয়ে বলে..
-মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে, আমার নাতবউয়ের উপর যেন কারোর নজর না লাগে।
কিছুসময় পর তৃপ্তির সাজ শেষ হলে ওকে বিয়ের মন্ঞ্চে নিয়ে৷ আসে রুবাইয়াত আর মোহনা, তীব্রকেও খুব সুন্দর করে বরের সাজে সাজিয়ে মন্ঞ্চে নিয়ে আসে তূর্য। ২জনকে পাশাপাশি বসানো হয়, তৃপ্তি মাথানিচু করে বসে আছে আড়চোখে ২জনেই ২জনকে দেখছে, মাঝেমাঝে দৃষ্টি একত্র হলে সাথে সাথে অন্যত্র ফিরিয়ে নেয়।
তীব্র আর তৃপ্তির বিয়ে সম্পন্ন হয়, তৃপ্তিকে তীব্রের রুমে আনা হয়, খুবই সুন্দর করে রুমটি সাজানো হয়েছে, লাল, সাদা গোলাপ আর রঙিন মোমবাতি দিয়ে মনোমুগ্ধকর হয়ে আছে রুমটি। রুবাইয়া, মোহনা সাথে ওদের আরো কয়েকজন কাজিন একত্রে তৃপ্তিকে তীব্রের রুমে বসিয়ে দেয়, রুবাইয়া তৃপ্তিকে উদ্দেশ্য করে বলে..
-ভয় পেও না, ভালোবাসার মানুষকেই আজ একান্ত নিজের করে পেয়েছে তাকে আগলে রাখা নিজের কাছে ধরে রাখার সম্পূর্ণ দায়িত্বই তোমার, তাই খুব বুঝশুনে কাজ করিও, দাভাই তোমাকে অনেক ভালোবাসে তা ওর চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায়।
তৃপ্তি হাসি দিয়ে বলে..
-আচ্ছা ঠিক আছে আপু।
একটুপর তূর্য তীব্র কে নিয়ে আসে, আর তীব্রকে রুমে দিয়ে সবাই চলে যায়। তীব্র রুমের দরজা আটকে দেয়, ধীরপায়ে তৃপ্তির দিকে এগিয়ে আসছে, তৃপ্তির নিজের ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে বসে আছে, তীব্র তৃপ্তির পাশে বসে পরে আস্তে করে তৃপ্তির ঘোমটা উঠিয়ে বলে..
-মাশাআল্লাহ, আমার বউকে অনেক মিষ্টি লাগছে দেখতে।
তৃপ্তি লজ্জা মাখা কন্ঠে তীব্র কে উদ্দেশ্য করে বলে..
-আপনি উঠে দাঁড়ান, আমি আপনাকে সালাম করবো।
তীব্র তৃপ্তিকে উদ্দেশ্য করে বলে..
-এসবের কোনো প্রয়োজন নেই পিচ্চি, তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় আমার বুকে। তাই কখনও এসব করবে না।
তৃপ্তি ও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। তীব্র তৃপ্তি কে ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে, তৃপ্তি উঠে ফ্রেশ হয়ে কিন্তু বিপত্তি তো হলো এই জায়গায় কারণ তৃপ্তি শাড়ি পড়তে পারে না এখন কি হবে, বারবার চেষ্টা করেও পড়তে সক্ষম হচ্ছে না। এদিকে অনেক সময় হলো তৃপ্তি ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে না, তীব্র বলে..
-আজ কি আমার বাসর করার চিন্তাভাবনা বাদ দিতে হবে?
-কেন? (ওয়াশরুমের ভিতর থেকেই তৃপ্তি বলে)
-তুমি তো আজ ওয়াসরুমেই ঘুমানোর চিন্তা করেছো বলে মনে হচ্ছে (তীব্র)
-ঠিক সেটা নয়, আসলে.. (তৃপ্তি)
-কি আসলে? (তীব্র)
-আমি শাড়ি টা পরতে পারছি না, তাই সময় লাগছে (তৃপ্তি)
-ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসো (তীব্র)
-কিহ এমন অবস্থায় আমি বের হবো না (তৃপ্তি)
-বেশি কথা বলে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে আসো বলছি নয়তো আমি রেগে গেলে আজ সারারাত শাড়ি কেন কোনো কাপড় ছাড়াই তোমাকে আমার সামনে বসিয়ে রাখবো (তীব্র)
তীব্রের এমন কথায় তৃপ্তির চোখ যেন রসোগোল্লার মতো বড় আকার ধারণ করেছে, ইচ্ছে না থাকলেও এভাবেই কোনোরূপ নিজের শরীরে শাড়ি টা পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসে তৃপ্তি। দরজা খোলার শব্দ তীব্রের কানে আসতেই তীব্র ওয়াসরুমের দিকে তাকায়, তৃপ্তির এমন এলোমেলো ভাবে শাড়ি পড়ার অবস্থা দেখে তীব্র শব্দ করে হেসে দেয়।
তীব্র কে হাসতে দেখে তৃপ্তির বেশ রাগ হয়। তীব্র তৃপ্তির কাছে এগিয়ে আসতে ধরে, তীব্রকে নিজের দিকে এগোতে দেখে তৃপ্তি ও পিছনে পিছতে থাকে। পিছতে পিছতে তৃপ্তির পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়, তীব্র তৃপ্তির খুব কাছে চলে এসেছে, তৃপ্তি ভয়ে চোখ বুঝে নেয়। তৃপ্তি কে চোখ বন্ধ করতে দেখে তীব্র মিটিমিটি হাসছে, পকেট থেকে রুমাল বের করে নিজের চোখ বেধে নেয়।
তারপর তৃপ্তির শাড়ি একটানে খুলে নেয় নিজে পড়িয়ে দিবে জন্য, তৃপ্তি চোখ বোঝা অবস্থাতেই নিজেকে ২হাতে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে, একটু পর চোখ খুলে দেখে তীব্র চোখ বেধে নিয়েছে, তীব্রের চোখ বাধা দেখে তৃপ্তির ভয় সম্পূর্ণ কেটে যায়, মনে মনে ভাবে..
-এই মানুষটাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়, নিজের বউকে দেখবেন তাতেও তিনি আমার অস্বস্তিবোধ হচ্ছে ভেবে চোখ বেধে নিয়েছেন।
তীব্র খুব যত্ন সহকারে তৃপ্তিকে শাড়ি পড়িয়ে দেয়, তৃপ্তি মুগ্ধ করা দৃষ্টিতে তীব্রতর দিকে তাকিয়ে আছে, মাঝেমধ্যে তীব্রের হাতের ছোঁয়াতে ওপর সম্পূর্ন শরীর যেন কেপে কেপে উঠছে। শাড়ি পড়ানো শেষ হলে তীব্র নিজের চোখের বাঁধন খুলে নেয়, তৃপ্তি তীব্রকে জড়িয়ে ধরে খুব শক্ত করে, তীব্রও তৃপ্তি কে পরম যত্নে নিজের বুকের মাঝে মিশিয়ে নেয়। তীব্র তৃপ্তি কে উদ্দেশ্য করে বলে..
-সারাজীবন আমার হয়ে থেকো পিচ্চি, অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
-আমিও সারাজীবন আপনার হয়েই থাকবো কথা দিলাম (তৃপ্তি)
-ভালোবাসি (তীব্র তৃপ্তির নিজের সাথে আরো গভীরভাবে মিশিয়ে নিয়ে বলে)
-আমিও অনেক ভালোবাসি আপনাকে (তীব্র)
একটু পর তীব্র তৃপ্তি কোলে উঠিয়ে নেয়, ২জনের দৃষ্টি ২জনের দিকে স্থির করা। তীব্র তৃপ্তি কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলে..
-এবার বজ্জাতের বজ্জাতি রোমান্টিক অত্যাচার সহ্য করতে প্রস্তুত করে নাও নিজেকে মিসেস তৃপ্তি চৌধুরী।
তীব্রের এমন কথায় তৃপ্তি লজ্জায় ২হাতে নিজের মুখ ঢেকে নেয়।
.
.
তারপর তারপর, সেটা তো পাঠক\ পাঠিকারা জানে🥱 আমি এতো রোমান্টিক নই বাবা তাই আর বলতে পারলাম না।
#সমাপ্ত…
প্লিজ সবাই পড়বেন…
[বিঃদ্রঃ আমার এতোটুকুও ইচ্ছে ছিলো না গল্পটা এভাবে শেষ করার, আমি খুবই দুঃখিত। আমার মানসিক অবস্থা ভিষণ খারাপ, যার দরুন আমার এখন গল্প লেখা কোনোভাবে সম্ভব না, তাই গল্পটা শেষ না হলেও আমাকে তার ইতি এখানে টানতে হলো। আপনানারা কেও আমার উপর রাগ বা মন খারাপ করবেন না দয়া করে, আমি আমার এক্সাম শেষ করে আবার আসবো। আর এই গল্পতে আমি যা দিতে অক্ষম হলাম এর সিজন -২ এনে আমি সবটা পুষিয়ে দিবো, জানি না তখন ও আপনারা আমাকে মনে রাখবেন কি না, তবুও আশা রাখছি আপনাদের ভালোবাসা ও সাপোর্ট সবসময় পাবো৷ সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আপনাদের জন্য ভালোবাসা অবিরাম, ভালো থাকবেন সবাই, আল্লাহ হাফেজ আসসালামু আলাইকুম ]
গল্পটা যেভাবেই শেষ করেন না কেন,,,,,, প্রথম থেকেই গল্পটা খুব বেশি ভালো ছিলো না ,,,,,,