#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৬|
শায়লা বেগম অর্নি আর নূরকে দেখে দ্রুত এগিয়ে গেলেন ওদের কাছে। অর্নিকে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখে প্রশ্ন করলেন,
–“কি হয়েছে? এভাবে হাঁটছিস কেন?”
অর্নি মেকি হেসে বললো,
–“কিছু না মা, নূর একটু পায়ে চোট পেয়েছে মেডিসিন লাগিয়ে দাও ওকে।”
কথাটা বলে অর্নি কেটে পড়তে চাইলেই শায়লা বেগম ওর হাত ধরে বললো,
–“তোর পায়ে কি হইছে?”
অর্নি কিছু বলার আগেই নূর বললো,
–“পা কেটেছে, ওকে নিয়ে সোফায় বসাও আমি মেডিসিন বক্স নিয়ে আসছি ড্রেসিং করিয়ে দিবা।”
শায়লা বেগম তপ্ত শ্বাস ফেলে বললেন,
–“তোরা দুজনে চাইছিসটা কি বল তো? দুজনেই পায়ে ব্যাথা পেয়ে এসেছিস এসব যদি উৎসব এসে দেখে দুজনের একজনকেও আস্তো রাখবে না।”
নূর কিছু না বলে মেডিসিন বক্স আনতে গেলো। অর্নি সোফায় বসে পা টি-টেবিলের উপর তুলে বললো,
–“বলবে না তোমার ছেলেকে, তাহলেই হবে।”
–“আমার কষ্ট করে বলতে হবে না, সে এমনিতেই দেখবে। আপনি তো তার কাছেই থাকবেন।”
শায়লা বেগমের কথায় অর্নি বললো,
–“উঁহু, নূর আর আমি একসাথে থাকবো আজ।”
–“সে আমার ছেলে তোকে থাকতে দিলে তুই নূরের ঘরে থাকবি, সমস্যা কি?”
অর্নি এবার অসহায় চোখে তাকালো। ও জানে উৎসব ওকে কিছুতেই থাকতে দিবে না নূরের ঘরে৷ কিন্তু যে করেই হোক আজ থাকতে হবে। মনে মনে ঠিক করে নিলো অর্নি। নূর শায়লা বেগমের হাতে মেডিসিন বক্স দিয়ে ও নিজেও সোফায় বসলো। তারপর বা পায়ের উপর ডান পা তুলে গোড়ালিতে বরফ লাগাচ্ছে। শায়লা বেগম আলগোছে অর্নির পা ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ করে দিলেন। বেশ ক্ষানিকটা পা কেটেছে অর্নির। শায়লা বেগম এবার উঠে গিয়ে নূরের ব্যাথা স্থানে ঔষধ লাগিয়ে দিলেন। জিজ্ঞেস করলেন দুজনে একই সাথে পায়ে চোট পেলো কি করে? নূর সংক্ষেপে সবটা বললো শায়লা বেগমকে। সব শুনে শায়লা বেগম বেশ বকাবকি করলেন দুজনকেই। নূর আর অর্নি চুপ চাপ বকাগুলো হজম করছে।
ঘড়ির কাটায় রাত আট-টা বাজতেই অর্নি আর নূর একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো। উৎসবের আসার সময় হয়ে গেছে। এখন কি হবে? নূর দ্রুত নিজের রুমে চলে গেলো। অর্নি শায়লা বেগমকে ডেকে বললো,
–“মা, আমি নূরের সাথে থাকবো। তোমার ছেলে জিজ্ঞেস করলে বলবে ঘুমিয়ে পড়েছি আমরা, ডাকাডাকির কোনো দরকার নেই।”
–“পারবো না আমি। তোদেরটা তোরা সামলা, যাওয়ার আগে বারবার বারন করেছিলাম আমি।”
–“প্লিজ মা, তুমি না আমার লক্ষি শাশুমা? এইটুকু কথা রেখো প্লিজ।”
অর্নি শায়লা বেগমকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো। শায়লা বেগম দরজা খুলে দিলো। অর্নি পেছন ফিরে একপলক উৎসবকে দেখে কাটা পা নিয়েই দৌড়ে নূরের ঘরে চলে গেলো। কাটা পা নিয়ে দৌড়ানোর ফলে পায়ে বেশ ব্যাথাও লেগেছে তবে সেটা এই মূহুর্তে গাঁয়ে মাখলো না অর্নি। উৎসব হাতে রাখা কোর্ট এবং অফিস ব্যাগটা টি-টেবিলে রেখে সোফায় বসে শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে ফেললো। টাই ঢিলে করতে করতে জিজ্ঞেস করলো,
–“ওরা ফিরেছে বাসায়?”
শায়লা বেগম উৎসবের দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বললো,
–“হ্যাঁ।”
উৎসব দোতলায় তাকালো। আধা গ্লাস পানি পান করে বললো,
–“দেখছি না যে একজনকেও।”
শায়লা বেগম কি বলবেন ভেবে পেলো না। ক্ষানিক সময় নিরব থেকে বললেন,
–“নূরের ঘরে দুজনেই বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।”
উৎসব ভ্রু কুঁচকে ফেললো। দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে বললো,
–“এ সময়ে ঘুমোচ্ছে__”
–“ক্লান্ত ছিলো তো তাই ঘুমিয়ে পড়েছে, আমি ডেকেছিলাম বললো খাবে না কেউ, আর যাতে ডাকাডাকি করে বিরক্ত না করি।”
ভ্রু কুঁচকালো উৎসব৷ ক্ষানিক সময় শায়লা বেগমের দিকে সন্দিহান দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে পানির গ্লাসটা টি-টেবিলে রেখে উঠে দাঁড়ালো। কোর্ট আর অফিস ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললো,
–“আচ্ছা, রুমে যাচ্ছি আমি।”
ছেলেকে যেতে দেখে শায়লা বেগম হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন৷ আর একটু হলেই বোধহয় ধরা পড়ে যেতো। ছেলের যা জহুরি চোখ। উৎসব কয়েক সিড়ি উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো। সিড়িতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেখে কপাল কুঁচকালো। দোতলার করিডোরে উঠেও দেখতে পেলো রক্তের ছোপ ছোপ দাগ-গুলি নূরের ঘর অব্দি গিয়েছে৷ এবার রেলিঙে হাত রেখে নিচ দিকে ঝুঁকে গলা ছেড়ে বললো,
–“আম্মু___”
হদতন্ত হয়ে ছুটে এলেন শায়লা বেগম। ছেলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
–“কি হয়েছে? এভাবে ডাকছিস কেন?”
–“সিড়ি আর উপরের করিডোর জুড়ে ছোপ ছোপ রক্ত লেগে আছে কেন?”
ছেলের প্রশ্নে ঘাবড়ে গেলেন শায়লা বেগম। আমতা আমতা করে বললো,
–“ক্ কই? আমি তো এক্ একটু আগেই___”
–“কিছু লুকোচ্ছো আমার থেকে?”
শুকনো ঢোক গিললেন শায়লা বেগম। ছেলের রাগ সম্পর্কে তিনি অবগত। একবার যদি জানতে পারে দুজনে আজ কি কান্ড ঘটিয়ে এসেছে তাহলে আর রক্ষা থাকবে না। শায়লা বেগম বললেন,
–“আসলে__”
–“থাক, আর বলতে হবে না। আমিই দেখে নিচ্ছি।”
কথাটা বলে নিজের রুমে অফিস ব্যাগ আর কোর্ট রেখে নূরের রুমের দিকে পা বাড়ালো। শায়লা বেগমও ছুটলো ছেলের পেছনে। উৎসবের আঁচ পেয়ে ঘাপটি মেরে শুয়ে আছে দুজনেই। দুজনেই বুক অব্দি কাঁথা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছে। নূর পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমানোর ভাণ ধরছে। আর অর্নি উপুর হয়ে শুয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। এই গরমে দুজনকে কাঁথা গায়ে দিতে দেখে অবাক হলো উৎসব। প্রথমেই নূর শুয়েছে। উৎসব নূরের পায়ের কাছ থেকে কাঁথা সরিয়ে বা পা ভালোভাবে দেখে ডান পা হাতে নিতেই মৃদু চিৎকার করে উঠলো নূর৷ উৎসব পা ছেড়ে দিয়ে নিজের হাতটা ভালোভাবে লক্ষ্য করলো। তারপর নূরের পায়ের দিকে তাকালো। ঔষধ লাগানো আছে নূরের পায়ে। উৎসব তপ্ত শ্বাস ফেলে বললো,
–“উঠে বস।”
নূর চুপচাপ উঠে বসলো। অর্নি তখনো চোখমুখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে৷ উৎসব সেদিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–“পায়ে ব্যথা পেলি কিভাবে?”
–“প্ পড়ে গেছিলাম।”
থমথমে গলায় জিজ্ঞেস করলো,
–“কিভাবে?”
–“সি্ সিড়ি দিয়ে উঠতে___”
–“মিথ্যে বলছিস, ব্যাপার না। সত্যিটা ঠিক বের করে নিবো৷ ফ্লোরে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ কেন?”
এবার আমতা আমতা করছে নূর। কি জবাব দিবে? নূরকে চুপ থাকতে দেখে উৎসব অর্নির উপর থেকে কাঁথা সরিয়ে দিলো। দেখলো বা পা-টা ব্যান্ডেজ করা। একটানে শোয়া থেকে তুলে বসালো অর্নিকে। বাঁজখাই গলায় প্রশ্ন করলো,
–“দুজনেরই পায়ের এ অবস্থা কেন? একই সাথে দুজনে পায়ে চোট পাওয়া, এটা নিশ্চয়ই কোনো কাকতালীয় ব্যাপার না। কি আছে এর পিছনে দ্রুত বলো।”
–“কি্ কিছু নেই তো এর পেছনে, কি থা্ থাকবে? একসাথে কি দুজনের___”
–“জাস্ট শাট-আপ অর্নি। একদম মিথ্যে বলবে না। তুমি খুব ভালো করেই জানো মিথ্যে বলা পছন্দ করি না আমি।”
উৎসবের ধমকে চুপসে গেলো অর্নি৷ শায়লা বেগম এগিয়ে এলো৷ উৎসবের হাত ধরে বললো,
–“বাবা শোন না__”
উৎসব এবার মায়ের দিকে ঘুরে তাকালো। বললো,
–“তুমিও মিথ্যে বলছিলে এতক্ষণ?”
–“পুরো কথাটা শোন আগে___”
–“তুমি কিচ্ছু বলবে না আম্মু, যা বলার অর্নি আর নূর বলবে।”
বলে ওদের দুজনের দিকে আবারো তাকালো। দুজনকে চুপ থাকতে দেখে জোরে ধমক দিলো উৎসব। অমনিই দুজনে গড়গড় করে সব বলে দিলো। উৎসব ধমকে উঠলো নূরকে। নূরকে থাপ্পড় দিতে হাত উঠিয়েও আবার নামিয়ে নিলো। শক্ত করে নূরের হাত চেপে ধরে বললো,
–“বড্ড সাহস বেড়েছে দুজনের তাই না? যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছিস। পাখা গজিয়েছে না? একদম গোড়া থেকে পাখা ছেটে দিবো। তারপর দেখবো উড়িস কিভাবে।”
উৎসবের এমন কথা আর ধমকে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো নূর। অর্নির চোখ জলে ভরে উঠলো। আমতা আমতা করে বললো,
–“ওকে ব্ বকছেন কেন? প্ল্যা্ প্ল্যান আ্ আমার ছিলো।”
উৎসব অর্নির দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে বললো,
–“তুমি তো কোনো কথাই বলবে না। নূরকে একা বকছি বলে ভেবে নিও না তুমি ছাড়া পেয়ে যাবে।”
কথাগুলো বলে অর্নির হাত ধরে টানতে টানতে নিজেদের ঘরের দিকে নিয়ে গেলো।
–
বিছানার এক কোনে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বসে আছে অর্নি। উৎসব চেঞ্জ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে অর্নির দিকে তাকালো এক পলক। তারপর ভেজা টাওয়ালটা ব্যালকোনিতে রেখে রুমে এলো। দুহাতে চুলগুলো ঠিক করে নিয়ে বিছানার দিকে এগোতেই অর্নি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলো। উৎসবের রাগ এখনো বিন্দু পরিমান কমেনি। চোখদুটো লাল টকটকে হয়ে আছে। চোয়াল শক্ত করে রেখেছে। অর্নির সামনে বসে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“এত সাহস পেলে কোত্থেকে? কাউকে কিচ্ছু না জানিয়ে নিজেরা নিজেরা পাকনামি করতে চলে গেছিলে। জানানোর প্রয়োজন মনে করেছিলে একবারো?”
–“ওরা দুজন দুজনকে ভা্ ভালোবাসে__”
–“হ্যাঁ তো? সেজন্য তোমরা ওখানে চলে যাবে বিয়ের কনে ভাগানোর জন্য? আমাকে জানাতে পারতে বিষয়টা আমি দেখে নিতাম। কিন্তু না সবকিছুতে তো তোমাদের থাকা লাগবে। একটা না একটা গোলমাল তো দুজনকে পাকাতেই হবে তাই না?”
চুপ করে রইলো অর্নি। উৎসব শক্ত হাতে অর্নির গাল চেপে ধরে বললো,
–“ভালোবাসি বলে ভেবো না যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবে আর আমি কিচ্ছু বলবো না। তুমি__”
চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো অর্নির। অস্ফুটস্বরে বললো,
–“লা্ লাগছে আমার___”
অর্নির গাল ছেড়ে দিয়ে চিৎকার করে বললো,
–“লাগুক, লাগার জন্যই ধরেছি। নেক্সট টাইম ভার্সিটি ছাড়া বাসা থেকে এক পা ও বের করবে না তুমি। এমন কি নূর আর তুমি একা একা কোথাও যেতেও পারবে না। প্রয়োজন হলে আমি নিয়ে যাবো। তাছাড়া দুজনে বাসা থেকে বের হওয়া টোটালি অফ।”
–“আপ্ আপনি এবার কি বে্ বেশি বা্ বাড়াবাড়ি করছেন না?”
রাগ হলো উৎসবের। একেই তো কাউকে কিচ্ছু না জানিয়ে এরকম একটা কাজ করেছে তার উপর আবার কথা বলছে৷ উৎসব একটানে অর্নিকে বিছানা থেকে উঠিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো। কঠোর গলায় বললো,
–“বাড়াবাড়ি আমি করছি? আমার এইটুকু রিয়্যাক্ট তোমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে___”
পুরো কথা বলার আগেই দরজায় টোকা পড়লো৷ উৎসব অর্নিকে ছেড়ে দিয়ে লম্বা দুটো শ্বাস নিলো। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। থমথমে গলায় অর্নিকে বললো,
–“দরজা খুলো গিয়ে।”
অর্নি গুটিগুটি পায়ে দরজা খুলে দিলো। নূর দাঁড়িয়ে আছে। নূর এক পলক ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে অর্নিকে বললো,
–“রুমে আয়, কথা আছে।”
অর্নিও নূরের সাথে পা বাড়াতেই উৎসব বললো,
–“যা কথা বলার এখানে আমার সামনে হবে।”
নূর ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো। অর্নি ইশারা করলো বলার জন্য। নূর ধীর গলায় বলতে শুরু করলেই উৎসব বললো,
–“শুনতে পাচ্ছি না আমি।”
এবার নূর ক্ষানিকটা জোরে আমতা আমতা করে বললো,
–“রুশান ফোন করেছিলো। ওদের বিয়ে নিয়ে বাসায় ঝামেলা হচ্ছে। তরীর মামা-মামী পুল্ পুলিশ নিয়ে রুশানদের বাসায় গিয়েছে৷ রুশান বি্ বিয়ের কাবিননামা দেখালে উনারা সেটিকে নাকোচ করে দেয়। জানায় ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ওদের বিয়ে সম্পন্ন হয়নি। তাই এই বিয়ে বাতিল করা হবে।”
উৎসব চুপচাপ শুনছে সবটা। অর্নি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
–“কেন? হবে না কেন? আমর না কাজীকে এতগুলা টাকা দিলাম বিয়েটার জন্য, তারপরও হবে না কেন?”
–“কাবিননামায় সাক্ষী হিসেবে শুধু তোর আর আমার সাইন আছে অর্নি। এতে হবে না। শরিয়ত অনুযায়ী ম্যাচিউর দুজন ছেলে সাক্ষী লাগবে। ওরা কেউ বিয়েটা মানছে না, তরীকে নিয়ে যেতে চাইছে।”
অর্নি কাঁদোকাঁদো চেহারায় বললো,
–“এখন কি হবে তাহলে? আমাদের এত কষ্ট বিফলে যাবে?”
এতক্ষণে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো উৎসব। ওদের দুজনের সামনে এসে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“বেশি বুঝলে এমনই হয়। কে বলছিলো একা একা পাকনামি করতে? তোরা দুজনেই তো বাচ্চা, ইম-ম্যাচিউর দের মতো আচরণ করিস। তাহলে বিয়ের মতো একটা সিরিয়াস ব্যাপারে সাক্ষী হিসেবে তোদের সাইন গণ্য করা হবে কেন?”
নূর আর অর্নি দুজনেই অসহায় চোখে তাকালো উৎসবের দিকে৷ অর্নি বললো,
–“তাহলে কাজী সাহেব যে টাকাগুলো নিয়ে বিয়ে দিতে রাজি হলো___”
–“দুইটাই বলদ। গিয়েছিলে না বিয়ে দেওয়ার জন্য? দিছো বিয়ে? উল্টো আরো গোলমাল পাকিয়ে আসছো।”
অর্নি আর নূর দুজনে করুন চোখে তাকালো। নূর গিয়ে উৎসবের একটা হাত ধরে বললো,
–“ভাইয়া কিছু করো না, ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে।”
নূরের কথায় তাল মিলিয়ে অর্নিও বললো,
–“প্লিজ তরী আর রুশানকে আলাদা হতে দিবেন না। আমাদের জন্য হলেও এইটুকু করে দিন প্লিজ।”
উৎস কিছুটা রাগান্বিত স্বরে বলে,
–“শুরুতে বলছিলা? শুরুতে জানালে এরকম কোনো ঝামেলাই হতো না।”
নূর আর অর্নি মাথা নামিয়ে নিলো। উৎসব ওদের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“আচ্ছা দেখছি আমি___”
কথাটা শুনে ওদের দুজনের মুখেই হাসি ফুটে উঠলো। উৎসব ফোনে কাউকে কল করতে করতে ব্যালকোনিতে চলে গেলো।
চলবে~
[ সাক্ষী হিসেবে দুজন ম্যাচিউর ছেলে লাগে বিষয়টা তেমন ভাবে জানতাম না আমি। গতকাল একজন আপু ম্যাসেজ করে বিষয়টি ক্লিয়ার করে দিয়েছে আমাকে। ধন্যবাদ আপু আপনাকে আমার ভুল শুধরে দেওয়ার জন্য।
নাইছ নেক্সট লিখবেন না, পারলে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। ]