#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|৫|
–“ভাইয়া কি হয়েছে তোমাদের মাঝে?”
নাস্তার টেবিলে আচমকা অর্নির এমন প্রশ্নে টায়রা আর অর্নব দুজনেই থতমত খেয়ে যায়৷ অর্নব জানে এখন ওর আম্মুর কানে কিছু গেলেই ওর আর রক্ষে নেই। কেননা উনি টায়রা বলতে পাগল। ছেলের থেকে ছেলের হবু বউয়ের জন্য তার দরদ বেশি। অর্নব অর্নির মাথায় চাটি মেরে বললো,
–“বেশি কথা না বলে চুপচাপ খাবার খেয়ে ভার্সিটি যা।”
অর্নি মুখ বাঁকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। মিসেস অদিতি কিছুটা আঁচ করতে পেরে বললেন,
–“টায়রা? অর্নবের সাথে কিছু হয়েছে কি?”
–“নাহ ফুপ্পি। সব তো ঠিকঠাকই আছে।”
মিসেস অদিতি আর কথা বাড়ালেন না। সকলেই চুপচাপ খাওয়ায় মনোনিবেশ করলেন। অর্নি খাবার শেষ করে বাই বলে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে। কয়েকদিন যাবত একটা ছেলে ফোন করে ভীষণ জালাচ্ছে অর্নিকে। ছেলেটা নাকি ওদের ভার্সিটিরই। তাই ও ঠিক করেছে আজ ভার্সিটি গিয়ে সবার আগে ছেলেটার সাথে কথা বলবে৷
ভার্সিটির মাঠে অর্নি নূর আর রুশান তিনজনে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তখনই অর্নির ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে সেই ছেলেটার নাম্বার দেখে বিরক্তিতে মুখ দিয়ে ‘চ’ শব্দ করে উঠে। রুশান বললো,
–“রিসিভ কর ফোন, আর বল এখনি দেখা করতে।”
রুশানের কথামতো অর্নি তাই করলো। ছেলেটা প্রথমে রাজি হতে না চাইলেও শেষমেশ রাজি হয়ে যায়। অর্নি ওরা ফুচকার দোকানে চলে গেলো৷ ছেলেটাকে ওখানেই আসতে বলেছে ওরা। বেশ অনেকটা সময় যাবত ওরা ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করছে। আরো মিনিট দুই গড়াতেই মাহির এসে বসলো ওদের সামনে। অর্নি, নূর ও রুশান তিনজনেই ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে। মাহির মুচকি হেসে বললো,
–“তোমরা যার জন্য অপেক্ষা করছিলে আমিই সেই ছেলে।”
মাহিরের এমন কথায় ওরা তিনজনেই বেশ অবাক হলো। নূর একপ্রকার চেঁচিয়ে উঠে বললো,
–“আপনিইই? আপনি সেই না যে নবীন বরণের দিন অর্নির ছবি তুলেছিলেন?”
–“হ্যাঁ মিস, আমিই সেই। কিন্তু কথা হলো, আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না। আপনি খুবই ঝগড়ুটে মহিলা মানুষ।”
মাহিরের এমন কথায় নূর রেগে গিয়ে বললো,
–“কি? কি বললেন আপনি আমায়? আমি ঝগড়ুটে মহিলা? তাহলে আপনি কি? আপনি কেন অন্যের পারমিশন ছাড়া ছবি তুলেন? আবার ফোন দিয়ে বিরক্ত করেন।”
অর্নি আর রুশান দুজনেই নির্বাক হয়ে দেখছে সবটা৷ মাহির বললো,
–“আপনি যে ঝগড়ুটে তার প্রুভ তো আপনি বরাবর দিয়েই যাচ্ছেন। এই যে সেদিন ছবি তুললাম অর্নির, ও কিছু বললো না মাঝ খান থেকে আপনি এসে সিনক্রিয়েট করলেন। আবার এখনো অর্নিকে ফোন দিচ্ছি আমি ও বিরক্ত হচ্ছে না ও কিছু বলছেও না। আপনিই অযথা সিনক্রিয়েট করছেন।”
–“তোরে আমি পুলিশে দিমু, ওয়েট। অর্নি চল এখান থেকে সোজা থানায় যাবো ওর নামে মামলা করমু আমি ও আমাকে ঝগড়ুটে বলে, আবার তোকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করে।”
–“গো এহেইড ম্যাম।”
মাহিরের এহেন কথায় নূর রেগেমেগে উঠে যায়৷ অর্নি ওর হাত ধরে ওকে বসিয়ে দিয়ে মাহিরের দিকে কঠোর দৃষ্টিতে তাকায়৷ কাটকাট গলায় বললো,
–“সেদিন আমার ফ্রেন্ড বলেছিলো বলে আমি চুপ ছিলাম। তাই আজ আপনি আমায় ফোন দিয়ে বিরক্ত করার সাহস পাচ্ছেন। কিন্তু আজও সেদিনের মতো চুপ থাকবো এটা ভাববেন না।”
–“আমি চাই না তুমি চুপ থাকো। তোমার কথা শুনতে ইচ্ছে করে আমার৷ বলো কি বলবে।”
অর্নি কোনো ভণিতা ছাড়াই বললো,
–“দেখেন ভাই, নেক্সট টাইম আপনার নাম্বার থেকে আর একটা ফোনও যাতে না আসে আমার ফোনে৷ নয়তো এর ফল খুব খারাপ হবে।”
–“ওকে এরপর থেকে আমার নাম্বার থেকে নয় অন্যের নাম্বার থেকে ফোন দিবো কেমন?”
মাহিরের কথায় নূরের রাগ তড়তড় করে বাড়ছে। কিন্তু অর্নি ওকে কিছু বলতে দিচ্ছে না৷ রুশান বললো,
–“ভাই আপনি আমাদের সিনিয়র হয়ে যদি এরমম বিহেভিয়ার করেন তাহলে আমরা কি শিখবো আপনাদের থেকে?”
–“ওকেহ ফাইন, আমি সরাসরি বলছি___অর্নি আই লাভ ইউ৷ ডু ইউ লাভ___”
–“নো৷”
কাটকাট কন্ঠে জবাব দিয়ে নূরের হাত ধরে অর্নি উঠে যায় ওখান থেকে। মাহিরও ওদের পিছু নেয়। পেছন থেকে অর্নিকে বলে,
–“আই লাইক ইউর এটিটিউড অর্নি।”
–“বাট আই ডোন্ট লাইক ইউ।”
*
ভার্সিটির পাশের একটা ক্যাফেতে নূরের সামনে হাটু গেড়ে বসে আছে শান্ত৷ অর্নি আর শুভ চোখ বড় বড় করে দেখছে শুধু৷ নূরও প্রথমে অবাক হয় ঠিকই বাট পরে নিজেকে সামলে নেয়৷ শান্ত নূরের দিকে একটা গোলাপ এগিয়ে দিয়ে বললো,
–“ভালোবাসি নূর, অনেক বেশি ভালোবাসি তোমাকে। তোমার হাতে হাত রেখে আমার যৌবন বৃদ্ধ প্রতিটা সময় পাড় করতে চাই। তোমাকে নিজের কাছে আগলে রাখতে চাই। তোমার ভালোবাসা চাই। হবে আমার?”
নূরের ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি৷ ক্ষানিকটা সময় দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে রাখলো৷ তারপর মৃদু হেসে বললো,
–“ক্যাফে তে কেন? ভার্সিটিতে প্রপোজ করবেন না?”
–“তোমার যা রণচণ্ডী রুপ দেখেছি এই কয়েকদিনে তারপর আর ভার্সিটিতে সবার সামনে প্রপোজ করে নিজের ইজ্জতের ফালুদা বানানোর রিস্কটা আর নিলাম না।”
শান্তর কথায় অর্নি রুশান দুজনেই ফিক করে হেসে দেয়। নূর কোমড়ে দু হাত গুজে রাগী কন্ঠে বললো,
–“কি? কি বললেন আপনি? আমি রণচণ্ডী?”
শান্ত শীতল হেসে বললো,
–“এগেইন রণচণ্ডী রুপে ফিরে এসেছো৷ নিজেই নিজেকে দেখে নাও একবার।”
নূর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কোমড় থেকে হাত নামিয়ে নিলো। তারপর শান্ত হয়ে দাঁড়ালো। অর্নি নূরের কাছে গিয়ে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
–“তুই ও না শান্ত ভাইর জন্য কিছু একটা ফিল করিস? শান্ত ভাই না তোর ক্রাশ? তোর ক্রাশ নিজে এসে তোকে ভালোবাসি বলেছে৷ এখন এক্সেপ্ট করছিস না কেন?”
নূর শান্ত চোখে তাকালো অর্নির দিকে৷ অর্নি বললো,
–“দোস্ত এটা সম্পূর্ণ তোর পারসোনাল ম্যাটার। আমার কথায় কিছু করিস না। আমি এমনিতেই মজা___”
অর্নি পুরো কথা বলার আগেই নূর অর্নির কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“এই দোস্ত আমার না হাত পা কাঁপছে৷ আমি ভাবতে পারছি না শান্ত এসে আমায় ভালোবাসি বলছে৷ আম্ আমি, আমি কি করবো বুঝতে পারছি না৷ ভীষন নার্ভাস ফিল করছি।”
–“চিল ইয়ার, তোকে লেডি গুন্ডিতেই মানায়৷ এরকম ভয়ার্ত চোখমুখে তোকে একদমই মানায় না।”
রুশানের কথায় অর্নি ক্ষানিকটা হাসলেও নূরের চাহনিতে হাসিটা চেপে গেলো একপ্রকার৷ শান্ত অধৈর্য হয়ে বললো,
–“নূর আর কতক্ষণ এভাবে বসে থাকবো? কিছু তো বলো।”
–“আপনার এবং আমার দুজনেরই ফ্যামিলির সাথে কথা বলুন, তারা যদি এই সম্পর্কে রাজি থাকে তাহলে আমার আপত্তি থাকবে না।”
–“শুরুতেই ফ্যামিলি? সম্পর্ক হোক তারপর জানালে হয় না?”
–“নাহ। আমরা এখন সম্পর্কে জড়ালাম, তারপর আপনি বা আমি যদি লয়াল না থাকি এই সম্পর্কে? যদি একে অপরকে ঠকাই? ছেড়ে যাই? বা দুই পরিবার যদি না মানলো? আমি সম্পর্কের গভীরে গিয়ে এসব বাজে সিচুয়েশন ফেস করতে পারবো না৷ একবার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না৷ পরিবার সম্পর্ক না মানলে বা কোনো কারনে আপনাকে না পেলে কাঁদতে কাঁদতে জীবন যাবে আমার। এমন কি জানও দিয়ে দিতে পারি। সো পরে ওসব চাপ আমি নিতে পারবো না৷ আগেই সবাইকে জানান এবং না মানলে মানান তাহলে আপনাকে হারানোর রিস্ক থাকবে না৷ আর আমাকে পরবর্তীতে কাঁদতেও হবে না।”
নূর একদমে কথাগুলো বলে থামলো। অর্নি রুশান শান্ত তিনজনেই অবাক হয়ে ওর কথা শুনলো। একটা সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগেই নূরের এত চিন্তা ভাবনা দেখে অবাক না হয়ে পারলো না ওরা। আবার নূরের কথাগুলোতেও যথেষ্ট যুক্তি আছে। এখন কার সম্পর্কতে একজন অপরজনকে ঠকায়৷ কষ্ট দেয়, ছেড়ে যায়, পরিবার মানে না৷ তাই নূরের কথাগুলো একদমই ঠিক৷ শান্ত বললো,
–“আচ্ছা ফ্যামিলিকে রাজি করিয়েই তোমাকে নিজের করবো আমি। মিসেস আরিফিন শান্ত করেই না হয় প্রেম ভালোবাসা হবে তোমার সাথে৷ বি রেডি।”
কথাগুলো বলে মৃদু হেসে চলে গেলো শান্ত৷ অর্নি নূরের কাঁধে হাত রেখে বললো,
–“কি করলি এটা? এখন ফ্যামিলি যদি না মানে তাহলে?”
–“না মানলে নাই। এখন কষ্ট হলেও সামান্য হবে, যা একসময় ভুলে যেতে পারবো। কিন্তু সম্পর্কে জড়ানোর পর মেনে না নিলে তখনকার কষ্টটা জাস্ট সহ্য করতে পারবো না।”
–“ভালোবাসিস শান্ত ভাইকে?”
রুশানের প্রশ্নে শান্ত চোখে তাকালো নূর। ওর চোখের সেই ছটফটানি নেই। একদম শান্ত হয়ে আছে চোখদুটো। নূর হাল্কা হেসে বললো,
–“ভালোবাসি কিনা জানিনা। তবে ওকে ভালো লাগে আমার, ভীষণ রকমের ভালো লাগে। অজানা কিছু একটা ফিল করি আমি ওর জন্য।”
*
বিছানায় শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছিলো অর্নি। হাত পা ছুড়াছুড়ি করে বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করছে৷ মিসেস অদিতির কাছে বায়না ধরেছে ট্যুরে যাবে। আজ ভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল জানিয়ে দিয়েছিলো, সামনের মাসের তিন তারিখে তিনদিনের জন্য সিলেট ট্যুরে যাবে ভার্সিটি থেকে। হাতে আর মাত্র চারদিন সময় আছে। অর্থাৎ যারা যারা ইচ্ছুক তারা যেন নাম দিয়ে দেয়৷ বাসায় ফেরার পর থেকেই অর্নি মিসেস অদিতিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু উনি কিছুতেই রাজি হচ্ছে না৷ তাই এরকম বাচ্চাদের মতো বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদার ভাণ করছে যাতে ট্যুরে যাওয়ার পারমিশন পায়। অর্নি ফোন হাতে নিয়ে অর্নবের নাম্বারে ডায়াল করলো। অর্নব ফোন রিসিভ করতেই কান্নার ভাণ ধরে বললো,
–“ভাইয়া, কোথায় তুমি? বাসায় আসবে কখন?”
–“এইতো দশ মিনিটের মাঝেই বাসায় ঢুকবো৷ কেন কিছু লাগবে? কাঁদছিস কেন?”
–“তুমি বাসায় আসো তাড়াতাড়ি, কথা আছে৷ ভার্সিটি থেকে ট্যুরে নিবে আম্মু আমাকে যেতে দিতে চাচ্ছে না।”
–“আচ্ছা কান্নাকাটি অফ কর, আমি বাসায় এসে কথা বলছি।”
অর্নব ফোন রাখতেই অর্নি সেইম ভাবে টায়রাকেও ডাকলো বাসায়। দশ মিনিটের মাথায় অর্নব বাসায় ফিরে সোজা রুমে চলে যায়। একেবারে ফ্রেশ হয়ে তারপর কথা বলবে৷ অর্নবের আসার মিনিট পাঁচেক বাদে টায়রাও এসে হাজির৷ টায়রা এসে সরাসরি অর্নির রুমে যায়। টায়রাকে দেখে অর্নি আবারো ন্যাকা কান্না জুড়ে দেয়৷ টায়রা অর্নির মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে,
–“কাঁদে না সোনা, ফুপ্পিকে আমি ম্যানেজ করে দিবো৷ তুই যাবি ট্যুরে সিওর থাক।”
অর্নি খুশিতে আটখানা হয়ে টায়রাকে জড়িয়ে ধরে। অর্নিকে নিয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে বসে টায়রা। অর্নব ফ্রেশ হয়ে আসতেই অর্নি অর্নবের কাছে বায়না ধরে ট্যুরে যাওয়ার৷ অর্নব একমাত্র বোনের বায়না ফেলতে না পেরে মিসেস অদিতিকে কনভেন্স করার চেষ্টা করে৷ ফাইনালি মিসেস অদিতি রাজি হয়েছে। তবে উনাকে রাজি করাতে অর্নব আর টায়রাকে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে৷ অর্নি অর্নবের হাত জড়িয়ে ধরে বলে,
–“ভাইয়া তুমি আর টায়রা আপুও চলো না প্লিজ।”
অর্নব অর্নির গালের হাত রেখে মৃদু হেসে বললো,
–“আমার তো অফিস আছে পাগলী। এসময়ে ছুটি হবে না। তোর টায়রা আপু চাইলে যেতে পারে তোর সাথে। আমার আপত্তি নেই।”
অর্নবের কথায় টায়রা মুখে মৃদু হাসির রেখা দেখা গেলো। অর্নবের কথার ধরনে টায়রা বুঝতে পেরেছে, অর্নবের রাগ কমে এসেছে৷ এখন যেটুকু অভিমান আছে সেটুকু মূহুর্তেই ভাঙিয়ে ফেলা যাবে। এসব ভাবছিলো টায়রা। অর্নির ডাকে ওর ঘোর ভাঙে৷ অর্নি টায়রার হাত ঝাকিয়ে বললো,
–“ভাইয়ার তো অফিস আছে তাই যেতে পারবে না। তুমি চলো আমার সাথে।”
টায়রা অর্নির গালে হাত রেখে বললো,
–“এখন তুই ঘুরে আয়। নেক্সট টাইম যখন তোর ভাইয়া অফিস থেকে ছুটি পাবে তখন না হয় আমরা ফ্যামিলি ট্যুর দিবো।”
অর্নির সামান্য মন খারাপ হলেও সেটা আমলে নিলো না। সবাই মিলে সন্ধ্যার নাস্তা করে নিলো একসাথে৷ অর্নব টায়রাকে নিয়ে বেরোলো ওকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য৷ অর্নি রুমে গিয়ে নূরকে ফোন লাগালো। কিছুক্ষণ বাদে রিসিভ হতেই অর্নি বললো,
–“দোস্ত আম্মু রাজি হইছে, আমিও ট্যুরে যাচ্ছি এবার। বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে কান্নার অভিনয় করে ভাইয়া আর টায়রা আপুকে দিয়ে বহুত কষ্টে আম্মুকে রাজি করিয়েছি।”
অর্নি এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে দম নিলো। ওপাশ থেকে নূরের কোনো রেসপন্স না পেয়ে অর্নি আবারো বললো,
–“কিরে শাকচুন্নী, কথা বলছিস না কেন?”
উৎসব কান থেকে ফোন নামিয়ে নিলো৷ নূরের ফোনে একটা প্রবলেম হয়েছিলো, তাই নূর সেটা ঠিক করার জন্য উৎসবের কাছে ফোন দিয়ে যায়৷ আর তখনই অর্নির ফোন আসে। স্ক্রিনে অর্নির নাম দেখে ফোন রিসিভ করে ও। অর্নির ট্যুরে যাওয়ার জন্য ওর আম্মুকে রাজি করানোর পদ্ধতি শুনে উৎসব ঠোঁট কামড়ে ধরে নিঃশব্দে হাসে৷ নূর রুমে আসায় উৎসব ওর দিকে ফোন এগিয়ে দিয়ে বললো,
–“অর্নির ফোন।”
নূরের হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলো উৎসব। নূর কানে নিয়ে শুনে অর্নি ওপাশ থেকে হ্যালো হ্যালো করছে৷ তাই নূর দ্রুত জবাব দিলো,
–“হ্যাঁ বল, কি বলছিলি?”
–“এতক্ষণ কই ছিলি তুই? কখন থেকে ডাকছি জবাব দিচ্ছিস না।”
–“আচ্ছা এখন শুনছি বল।”
–“ট্যুরে গিয়ে রুশান আর তরীর প্রেমটা করিয়ে দিবো আমরা। তুই আর আমিই যেহেতু বাঁদরামি করে ওদের সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগেই ভেঙে দিয়েছিলাম তেমনি তুই আর আমিই ওদের সম্পর্ক জোড়া লাগাবো৷ এটা রুশানের জন্য সারপ্রাইজ হিসেবে থাকুক৷ ও যাতে না জানে।”
–“ওক্কেহ দোস্ত। নো চিন্তা, রুশান জানবে না কিছু।”
এভাবে আরো বেশ কিছু সময় দুজনে কথা বলে ফোন রেখে দেয়।
চলবে~
[নাইছ নেক্সট না লিখে গঠনমূলক মন্তব্য করুন, এতে লিখার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। সবার শুধু একই কথা নাইছ নেক্সট, গল্পটা যেহেতু শুরু করেছি অবশ্যই পুরোটাই লিখবো। তাই অযথাই নাইছ নেক্সট না লিখে গঠনমূলক মন্তব্য করুন। ভুল হলে ভুল ধরিয়ে দিন, যাতে আমি শুধরে নিতে পারি। নাইছ নেক্সট লিখার হলে কেউ কমেন্টস কইরেন না। ধন্যবাদ, হ্যাপি রিডিং]