যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ১৩

0
712

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৩

সোফার কাছে মেঝেতে বসে একাধারে কেঁদে চলেছেন মিসেস সুফিয়া। মোহ সোফার উপরে বসে রয়েছে মাথা নুইয়ে। না চাইতেও একজন অপ/রাধী মনে হচ্ছে নিজেকে। তার জন্য আজকে তার বাবা যে কিনা কোনো অ/ন্যায় আদতেও করেন নি তাকে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ। মোহের বাবা সাইফুল এবার নিজেকে দোষারোপ করে বসলেন।
“সব দোষই আসলে আমার। না আমি ফ্যাক্টরি নিয়ে এসব ঝামেলায় জড়াতাম। আর না আজহার ভাইকে এভাবে পুলিশ ধরে নিয়ে যেত।”

মিসেস সুফিয়া কান্নারত সুরে চিল্লিয়ে বললেন,
“তোরা তো আমাকে কিছু জানাসও নি। এতকিছু ঘটল আমাকে বলার প্রয়োজনবোধও করিস নি। এখন পুলিশ তাকে নিয়ে গিয়ে কী করছে কিছুই বুঝতে পারছি না।”

মোহ মিসেস সুফিয়ার কাঁধে হাত রেখে শান্ত করার প্রচেষ্টায় বলল,
“মা, বাবার কিছু হবে না। বাবা তো কিছু করে নি।”

মিসেস সুফিয়া যেন এবার দাবানলের মতো জ্বলে উঠলেন। চিল্লিয়ে বলে ওঠেন,
“তুই তো কথাই বলিস না। কিছু করেনি তোর বাবা আমিও জানি। তবে কিছু না করেও কেন তাকে এমন শাস্তি ভোগ করতে হবে বলতে পারিস? তোর জন্য এতসব সইতে হচ্ছে তোর বাবাকে। আমি তো এটাই দোয়া করছি যেন তোর বাবার গায়ে ওরা হাত না তো/লে।”

মোহ আর কিছু বলার মতো সাহস জুগিয়ে উঠতে পারল না। নিজের মাঝে ভাঙতে থাকল সে। ছোটো হয়ে পড়ল নিজের কাছে। চোখ ভরে অশ্রু টলমল করল। কণ্ঠস্বর দুর্বল হয়ে পড়ল। সাইফুল তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
“আমার চেনাজানা একটা উকিলকে কল করেছিলাম। তিনি পুলিশ স্টেশনে যাচ্ছেন। আমাকেও যেতে হবে। সুফিয়া আপা তুমি চিন্তা করো না। আমি দ্রুতই দুলাভাইকে নিয়ে ফিরব।”

সাইফুল যেতে নিলে মোহ নিজেকে ধাতস্থ করে ঢক গিলে স্পষ্ট বলে ফেলল,
“মামা প্লিজ আমিও যাই?”

তৎক্ষনাৎ তার হাতটি চেপে ধরলেন মিসেস সুফিয়া। ধ/মকে উঠে বললেন,
“খবরদার না। এমনিতে অনেককিছু করে ফেলেছিস তুই। আর তোকে কিছু করতে হবে না। এবার থেকে আমার কথা অনুযায়ী চলবি মোহ। তোকে নিজের মতো অনেক চলতে দিয়েছি।”

“দয়া করে যেতে দাও মা। আমার জন্য বাবা আজকে পুলিশ কাস্টারিতে। একজন সন্তান হিসেবে এটা যে কত লজ্জাজনক সেটা আমি বুঝতে পারছি। নিজেকেই ধিক্কার জানাচ্ছি। আমিও বাবাকে ফিরিয়ে আনতে চাই।”

ঠাণ্ডা মাথায় সাইফুল বুঝলেন মোহের ব্যাপারটা। তিনি শান্ত গলায় বোনকে বোঝালেন,
“আপা ছেড়ে দাও ওকে। মেয়েটা তো খারাপ কিছু করে নি। যারা করছে তাদের কিছু বলা হচ্ছে না। মোহ শুধু কয়েকটা কথা বলেছিল যা ওদের সামনে বলা খুব দরকার ছিল। ওকে যেতে দাও।”

বারণ করতে আর পারলেন না মিসেস সুফিয়া। মাকে ইথানের খেয়াল রাখতে বলে মাথায় ওড়না জড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো মোহ হাতে ফোন নিয়ে।

“বললেই তো আর হয় না উকিল সাহেব। ওই লোকটাকে ততক্ষণ আমি ছাড়তে পারব না যতক্ষণ না আমি মন্ত্রী সাহেবের একটা কল পাচ্ছি।”

পুলিশ ইন্সপেক্টরের কথায় ভ্রু কুঁচকে এলো উকিল সাহেবের। মোহ আরো বেশি বিচলিত হয়ে পড়লেও সামলাতে হলো নিজেকে। উকিল সাহেব বরাবরের মতো ঠাণ্ডা গলায় জবাব দিলেন,
“কিন্তু কেন? আমি আজহার সাহেবকে ছাড়ানোর জন্য সব কাগজপত্র নিয়ে এসেছি। চাইলে চেক করে দেখতে পারেন।”

“তার কোনো দরকার নেই। এসব কাগজপত্র দিয়ে আদেও কোনো লাভ হবে না। এই মেয়েটা অযথায় মন্ত্রী সাহেবের মতো লোকের সাথে মুখ লাগাতে গিয়েই সব ঝামেলার সৃষ্টি করল। এমনিতে সরোয়ার সাহেবের মতো লোক আমি দুটো দেখিনি আর পৃথিবীতে। উপরে দেখাবে সরল আর আড়ালে থাকবে নি/কৃষ্ট রূপ! উকিল সাহেবের তো উনাকে চেনার কথা। কারোর সামনে মাথা নোয়াতে পছন্দ করেন না। উনার ইগোকে হার্ট করেছে এই মেয়ে।”

মোহ আর নিজেকে দমাতে পারল না। উঠে দাঁড়াল চেয়ার থেকে। তীব্র আক্রোশ ঝেড়ে বলল,
“আমি উনার সামান্য ইগো হার্ট করেছি বলে উনি আমার বাবাকে এই অবধি টেনে এনেছেন। আর ওই লোকটা যখন আমার মামাকে ধোঁকা দিয়ে এত গরীব লোকজনের কর্ম কেঁড়ে নিলো তার শা/স্তি ঠিক কী হওয়া উচিত আপনারাই বলে দিন? আর আমার তো মনে হচ্ছে না শুধু উনার ইগো হার্ট হয়েছে বলে উনি আমার বাবার সাথে এমন করলেন। এর পেছনে কারণ আরেকটা আছে। সেটা হচ্ছে ভয়। উনি আমাকে ভয় পাচ্ছেন। ভাবছেন আমি উপরমহলে পৌঁছালে ঠিক কী কী হতে পারে। একারণেই তিনি এমন একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।”

পুলিশ ইন্সপেক্টরও ক্ষেপলেন এবার। চটে গিয়ে ধমকালেন মোহকে।
“এই মেয়ে তুমি জানো কার সম্পর্কে কী কথা বলছ? আর একটা শব্দ বলেছ তো তোমার অবস্থাও তোমার বাবার মতো করে দেব।”

“করতে পারেন। আমার আপত্তি নেই। তবে ওই নির্দোষ মানুষটি অর্থাৎ আমার বাবাকে ছেড়ে দিতে হবে। আর আমি যা বলেছি তার একটা অক্ষরও ভুল বলিনি। উনার যদি এতই ইগো হার্ট হয় তাহলে বলবেন আমার সামনাসামনি হতে। কাপুরুষের মতো যেন পেছন থেকে কলকাঠি নেড়ে আমায় দুর্বল না করার চেষ্টা করে। আমার বাবাকে ছেড়ে দিন।”

মোহের ক্রোধ যখন লাগামহীন ভাবে বাড়তে দেখলেন সাইফুল তৎক্ষনাৎ তার হাত ধরে শান্ত করে বসালেন তিনি। মাথায় হাত বুলিয়ে ফিসফিসিয়ে বললেন,
“এভাবে বলিস না মোহ। আমার এই মুহূর্তে দুলাভাইকে ছাড়ানো প্রয়োজন।”

“ওরা আমার বাবাকে ছেড়ে দেবে না মামা। যতক্ষণ না ওই লোকটির ক্রোধ মিটবে ততক্ষণ আমার বাবাকে ছাড়বে না ওরা। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে খুব ভালো করে জানে।”

মোহের কথা সত্যি হলো। কোনোমতেই আজহার সাহেবকে ছাড়তে রাজি হলো না পুলিশ। ব্যর্থ মোহ ভীষণ ছোটো হয়ে গেল নিজের কাছে আবারও। নিজের মাকে বড়ো মুখ করে বলেছিল বাবাকে নিয়ে ফিরবে। কিন্তু তা যে পারল না! এই মুখ নিয়ে মায়ের সামনে কীভাবে দাঁড়াবে এই ভাবতেই নিজের প্রতি চরম রাগ হচ্ছে তার। বিষাক্ত লাগছে সবটা। সারা রাস্তা নির্বিঘ্নে অবিরাম ক্রন্দনে র/ক্তবর্ণ হয়ে এলো ডাগরডাগর আঁখি। বক্ষস্থলের যাতনা দেখাতে পারল না কাউকেই।

সারারাত ঘুম হলো না মোহের। লোচনে জ্বালা ধরতে শুরু করল। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই স্বচ্ছের কথা স্মরণে এলো তার। বিলম্ব না করে ফোন হাতিয়ে দ্রুত ফোন লাগায় স্বচ্ছের নম্বরে।

সারারাত পেরিয়ে যখন নিশাবসান হলো তখন দুচোখের পাতা এক হয়েছিল স্বচ্ছের। নিন্দ্রা পুরো রজনি পালিয়ে বেরিয়েছিল তার থেকে। যখনি ঘুমটা গভীরতর হয়েছে তখনি ফোনের রিংটোনের শব্দটা সবথেকে বিরক্তিকর হয়ে উঠল তার কাছে। ইচ্ছে করল ফোন দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বোধ হলো হঠাৎ করেই। ফোনটা হাতাতে লাগল সে। কাছে পেয়ে চোখ বুঁজেই রিসিভ করে ঘুম জড়ানো দুর্বল কণ্ঠে কোনোরকমে বলতে সক্ষম হলো,
“হ্যালো!”

মোহ স্বচ্ছের কণ্ঠস্বর পাওয়া মাত্র উদগ্রীব হয়ে বলে ওঠে,
“হ্যালো! আপনার বাবার সঙ্গে আমি কথা বলতে চাই। যদি ফোনটা উনাকে দেওয়া যেত তবে উপকৃত হতাম।”

মেয়েলি চেনা কণ্ঠ। যার কণ্ঠস্বর সারারাত তার কানে বেজেছে। সেটা ভুলে যায় কী করে স্বচ্ছ? ভড়কে গিয়ে মাথা উঠিয়ে ফোন নম্বরের দিকে তাকাল সে। না ভুল নয়। মোহ মেয়েটিই কল করেছে তাও এ সময়! তাও কিনা তার বাবাকে চাইছে? কেন? বহু প্রশ্ন মনে নিয়ে সে বলল,
“মানে? এসময় কল দিয়েছ হঠাৎ? আবার আমার বাবাকে চাইছ। কী হয়েছে বলো তো? এখন কী চাইছ তুমি?”

“আপনার বাবাকে জিজ্ঞেসা করুন উনি কী চাইছেন? উনাকে প্রশ্ন করুন কেন আমার বাবাকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন? আমার বাবা কী করেছে?”

স্বচ্ছের মাথা এবার ঘুরে উঠল মোহের কথায়। দ্রুত উঠে বসল সে। বিশ্বাস করতে যেয়েও বাঁধা পড়ল মনে। কারণ তার বাবার দিকে আঙ্গুল উঠছে।
“কী বলছ তুমি? যা বলছ ভেবেচিন্তে বলছ? তুমি জানো তুমি কী বলছ? আমার বাবা এমন না। আমি জানি আমার বাবার সাথে তোমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু এর জন্য তিনি তোমার দুর্বলতার সুযোগ নেবেন না। এমন অপবাদ দিও না মোহ। ভালো হবে না।”

মোহ তাচ্ছিল্যের সহিত বলল,
“ভালো আর কী হবে? যখন থেকে আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছে ঠিক তখন থেকে আমার জীবনে যা খারাপ হওয়ার ছিল সব হয়ে গিয়েছে। এখন আমার বাবার মতো একটা মানুষ জেলে অপ/রাধীর মতো রেখে দেওয়া হয়েছে। এবার মুক্তি দিন আমাদের।”

মোহের কথা এবার মোটেও হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে পারল না স্বচ্ছ। সে সন্দিহান হয়ে শুধাল,
“প্লিজ মোহ! উনি আমার বাবা। তুমি না ভাবনাচিন্তা করে এসব বলো না। তুমি নিশ্চিত উনি তোমার বাবার সাথে এমনটা করেছে? করলেও কেন করবে বলো?”

“এটা আপনার জানা উচিত। শুনেছি আপনার বাবার বিশাল অহম। এই অহমের চোটে উনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন। পুলিশ নিজে বলেছেন আপনার বাবার কথা। মুক্তি দিন আমার বাবাকে। দরকার হলে আমি উনার কাছে ক্ষমা চাইব। তাও আমি চাইনা আমার জন্য আমার বাবা এভাবে কষ্ট পাক।”

কল কেটে দিলো স্বচ্ছ বিনা উত্তর করেই। তার মস্তিষ্ক এই মুহূর্তে কেমন যেন ফাঁকা লাগছে। নিজের বাবার এই কর্ম বিশ্বাস হচ্ছে না তার। কেমন যেন সারাদেহ প্রদাহে ধ্বংস হচ্ছে। হনহনিয়ে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে সরোয়ার সাহেবের ঘরের সামনে দাঁড়ায় স্বচ্ছ। আগপাছ না ভেবে জোরে আঘাত করে বসে দরজায়। ঘুমন্ত সরোয়ার সাহেব এবং মিসেস জেবা চমকেই ঘুম থেকে উঠে পড়েন। ধীর পায়ে গিয়ে মিসেস জেবা দরজাটি খুলতেই স্বচ্ছ শুধু বলে,
“সরি, মা। ডিস্টার্ব করতে চাইনি।”

এই বলেই গটগট করে ঘরে প্রবেশ সরোয়ার সাহেবের মুখোমুখি দাঁড়ায় সে। ছেলের এমন কর্মকাণ্ডে সরোয়ার সাহেব বেশ হতবাকই হয়েছেন বটে। পাশ থেকে চশমা নিয়ে চোখে দিতে দিতে বললেন,
“কী হয়েছে স্বচ্ছ? কোনো সমস্যা?”

“তুমি কবে থেকে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করা শুরু করেছ বাবা?”

স্বচ্ছের সরাসরি এমন প্রশ্নে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন সরোয়ার সাহেব। মিসেস জেবাও খানিকটা ভ্রু কুঁচকে তাকালেন। মনে মনে ভাবলেন, ছেলেটা আবার বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে উল্টাপাল্টা কিছু খেয়ে এলো না তো?
“এইসময় আমাদের ঘুম ভাঙিয়ে এসব কী প্রশ্ন করছ তুমি স্বচ্ছ? তুমি কি সজ্ঞানে আছো?”

সরোয়ার সাহেবের কথায় স্বচ্ছও পাল্টা প্রশ্ন করল,
“আমিও জানতে চাই তুমিও কি সজ্ঞানে মোহ নামক মেয়েটির বাবাকে পুলিশে এ/রেস্ট করিয়েছ?”

সরোয়ার সাহেব এবার খানিকটা চকিতে তাকালেন। তারপর নিজের বিস্ময় সামলে নিলেন দ্রুতই। গম্ভীর হওয়ার প্রচেষ্টায় বললেন,
“তুমি তো নিজ চোখে দেখেছ ওই মেয়েটার আচরণ। ওর তো একটা শিক্ষা হওয়া উচিত। নয়ত ভবিষ্যতে আবার পেছনে লাগতে ছাড়বে না।”

স্বচ্ছ নিশ্চুপ রইল খানিকটা সময়। বুঝে উঠতে পারল না তার বাবার মতো বিচক্ষণ মানুষের চিন্তাভাবনা এতটা ছোটো হলো কী করে? নাকি আগের থেকেই ছোটো ছিল সেটা তখন বোঝেনি?
“বাবা! সবকিছুতে মেয়েটার বাবার দোষ কোথায় আমায় বলতে পারবে?”

“তুমি বুঝবে না স্বচ্ছ। ওই মেয়েটা আমাকে ভাঙার চেষ্টা করছে। রাজনীতির কারবার এসব…”

“আমি এত রাজনীতি বুঝিনা বুঝতেও চাই না। আমি শুধু বুঝি যার কোনো দোষ নেই তার শাস্তি হওয়া উচিত নয়। তুমি এখনি ইন্সপেক্টরকে কল করবে আর ওর বাবাকে ছেড়ে দিতে বলবে। নয়ত…”

ছেলের এমন কথায় কিছুটা ক্রোধ চেপে গেল সরোয়ার সাহেবের মনে। মিসেস জেবা ছেলেকে শান্ত করতে বললেন,
“স্বচ্ছ তোর বাবার সাথে কীভাবে কথা বলছিস?”

সরোয়ার সাহেব তাচ্ছিল্য করে বললেন,
“আজ নিজের ছেলেকে এত যত্ন করে বড়ো করে তাকে অন্যের তরফদারি করতে দেখতে হচ্ছে। তুমি কিন্তু ওই মেয়েটার জন্য আমার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছো স্বচ্ছ।”

“তোমার যা মনে হয় সেটা তুমি ভাবতেই পারো। তোমাকে আমি সবসময় একজন আদর্শ মানুষ ভেবে এসেছি। আমার ধারণাটাকে একটু একটু করে ভেঙে দিও না প্লিজ। আমি এক ঘণ্টার মধ্যে মোহের বাবার মুক্তির খবর জানতে চাই। নয়ত ভালো হবে না।”

স্বচ্ছ ঘর থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে পেছন ঘুরল। সরোয়ার সাহেব তীব্র ক্ষোভ নিয়ে বললেন,
“নয়ত কী করবে তুমি?”

এতক্ষণ কষ্টে চেপে রাখা রাগগুলো দাবানলের ন্যায় বেরিয়ে এলো এবার। সামনে ফিরে টেবিলের সমস্ত জিনিস একটানে ফেলে দিয়ে চিল্লিয়ে বলল,
“তুমি যা বলছ সেটাই করব বাবা। তোমার বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াব। আমার রাগ আর জেদ তোমার সূত্রেই পাওয়া। আশা করি সেইসবের ভয়া/নক ব্যবহার তুমি দেখতে চাও না। আমাকে ছোটো করে দিয়েছ তুমি। অস্বস্তি হচ্ছে নিজের প্রতি।”

নিজের চোখমুখ দুহাতে পাগলের মতো ঘষে দ্রুত বেগে প্রস্থান করল সে। সরোয়ার সাহেব যেন স্পষ্ট দেখতে পেলেন তার ছেলে তার থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। যার কারণ মোহ নামক রমনী।

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here