দাম্পত্য_জীবন #মেহু_আপু #পর্ব_07

0
360

#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_07

আকাশ বলে কি করছো নীলা তুমি ২০ মিনিটে কিভাবে প্রমান করবা। নীলা বললো চুপ করে দাড়ান আপনি এই বলে নীলা ব্লেজারের বোতামে হাত দিলো। আকাশ বললো এই সিচুয়েশনে তুমি রোমান্টিকতা কিভাবে করো। নীলা কিছু না বলে বোতাম খুলে ক্যামেরা বের করে। আকাশ এটা দেখে অবাক হয়।নীলা বলে কাল রাতে আপনার ব্লেজারে ক্যামেরা অন করে রেখেছি এই ক্যামেরা অংশটুকু ব্লেজারের ভিতর পকেটে রেখে এইটাকে বোতাম হিসাবে সেট করেছি। আকাশ বললো তুমি এটা ক্যান করেছো নীলা? আকাশ অবাক হয়ে যায়। নীলা তখন বলে দেখেন কি কারণে করেছি তার কৈফিয়ত পরে দিবো? আগে দেখতে হবে ইরার সাথে আপনার ওই সময়ের অংশটুকু রেকর্ডিং হয়েছে কিনা?

আকাশ চুপ করে যায়। মনে মনে বলে কি হচ্ছে আমার সাথে এসব?

নীলা বললো চুপ করে থাকলে হবে না কারণ ওই ইরা না টিরা প্লানমতোই ফাসাতে এসেছে আপনাকে। তাই ভূলেও ভাবিয়েন না আপনার রুমের সিসিটিভি ফুটেজ তার কুকীর্তি পাবেন। কারণ এরা এসব কাজ করার আগে শান্ত মাথায় কাজ করে। আর প্রশ্ন রইলো আমি ক্যান ক্যামেরা সেট করেছি তার জন্য প্রশ্ন পরে কইরেন? এখন দ্রুত ল্যাপটপ টা দিন তো। আকাশ ল্যাপটপ দিলো লক খুলে নীলা ক্যামেরা থেকে মেমোরি কার্ড বের করে ল্যাপটপে সেট করে।

এরপরে আকাশের সকালের খাওয়া দাওয়া গাড়িতে আসা অফিসে ঢোকা এগুলা ঘটনা ক্যামেরা থেকে স্কিপ করে ইডিট করে ডিরেক্ট মূল ঘটনায় নিয়ে আসে। নীলা দেখতে পেলো, ইরা রুমে ঢুকে দরজা অফ করে,নিজের পোশাক ছিড়ে আকাশকে হাগ করছে। আর আকাশ ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইরা বারবার আস্টেপিস্টে ধরে বাঁচাও বাচাও বলে চিৎকার করছে। আকাশ অবাক হয়ে যায়। নীলা বলে এই তো পেয়েছি।

পুলিশ আসে আকাশে অফিসে আকাশকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এরেস্ট করতে আসে। বারবার দরজা ধাক্কাছিলো।

বজোহরি রায় ইশানকে বলে কি হলো তোমার ভাই দরজা খুলছে না কেনো? নাকি ভয়ে মুখ লুকিয়ে বউয়ের আঁচলে বসে আসে।

ইরা মনে মনে বললো কিভাবে প্রমান করবে এমন প্লান করেছি জীবনেও প্রমান করতে পারবে ন? কারণ সিসিটিভির লাইন তখন অফ করে রেখেই এই ঘটনা ঘটাইছি।

নীলা ঠাস করে দরজা খুলে পুলিশ অফিসারকে বলে এখানে কি করছেন আপনারা?

পুলিশ বলে ম্যাডাম আপনার স্বামীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এরেস্ট করতে এসেছি।

নীলা বলে আমার স্বামী যে এই জঘন্য অপরাধ করেছে আপনাদের কাছে প্রমান আছে?

পুলিশ বলে দেখুন ম্যাডাম আমাদের কাজ ভিক্টিমের অপরাধী ধরা প্রমান খোঁজা কোর্টের কাজ।

নীলা বলে ভিক্টিম কি আপনাকে ফোন করেছে।

পুলিশ বলে এত জেড়া করতে পারবো না এই সেন্ট্রি ওনাকে এরেস্ট করো।

নীলা বললো অনেক ড্রামা হয়েছে আর না। এই আকাশ আপনার ল্যাপটপ টা আনেন।

ইরা মনে মনে বললো এই মেয়ে ল্যাপটপ দিয়ে কি করবে আবার বলে মেকি হাসি দেয়?

বজোহরি রায় বললো মিসেস চৌধুরী আপনিতো ২০ মিনিটের জায়গায় ২৫ মিনিট খেয়ে ফেললেন। এখন কিন্তু আমরাও স্টেপ নিবো!!

নীলা বললো সত্যির জন্য অপেক্ষা করতে দাড়ান আরেকটু।

উষশী ইশানকে বললো নীলা কি করতে চাইছে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ইশান।

অন্যদিকে নিউজে আর্জিনা বেগম এই ঘটনা দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে ইমরান আর তার মা আর্জিনা বেগমের মাথায় পানি ঢালছে। আর্জিনা বেগমের সেন্স ফিরে আসে। আজগর বলে আর্জিনা চিন্তা কইরো না আমার পুরো ভরসা আকাশ নিজেকে নির্দোষ প্রমান করবে।

আকাশ ল্যাপটপ নিয়ে আসে বিম্সিত মুখে। ইরা আকাশের মুখ দেখেই মনে মনে বলছে এবার তোমার নিশ্চিত জেইল স্যার।

নীলা ল্যাপটপ টা টেবিলে রেখে ভিডিও অন করে চালিয়ে দেয়। ভিডিও দেখে সবাই সাইলেন্ট হয়ে যায়। নীলা বললো এই হলো ব্যাপার বুঝতে পারলেন আমার স্বামীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে এই মেয়েটা আঙুল দেখিয়ে দিয়ে (রাগী স্বরে) বলে।

ইরা বললো কি হলো ক্যাচটা আমিতো সিসিটিভি ক্যামরা অফ রেখেছি তাহলে এই মিরাকেল ঘটলো কিভাবে। অফিসের সব লোক তখন বলে উঠলো আমরা জানতাম স্যার নিদোর্ষ। এই ইরার শাস্তি চাই আমরা। তখন পুলিশ বলে অপরাধীর তো শাস্তি হবেই মানহানির মামলায় পচবে এখন।

নীলা তখন বলে ইরাকে এই মেয়ে এই কাজ ক্যান করলা তুমি। তোমার লজ্জা করেনা নিজের সম্মান নিয়ে রটানো গুজব। ছি! এইসব মেয়ের জন্য আমাদের পুরো মেয়ে জাতির দোষ হয়। পুলিশ স্যার এনাকে এরেস্ট করেন। আর কেনো এইসব করলো আমরা দ্রুত জানতে চাই।

ইরাবতী বলে আমার ভূল হয়েছে ম্যাম আমাকে ক্ষমা করুন। নীলা বলে ভূল কারা করে অবুঝরা আর তুমিতো অবুঝ না। আমার সম্মানীয় স্বামীর নামে মিথ্যা রচনা তৈরি করবা আর তোমাকে ক্ষমা করবো। পুলিশ স্যার এনাকে এরেস্ট করুন এক্ষুনি । অফিসের সব লোক হ্যা হ্যা শাস্তি চাই ইরার এরেস্ট করুন স্যার।

ইরা আবার ক্ষমা চায়। কিন্তু কোনো লাভ হয়না পুলিশ ইরাকে এরেস্ট করে। নীলা বলে স্যার অনাকে ইচ্ছে তালে লাগান কেনো ও এই কাজ করলো তা আমরা যেনো দ্রুত জানতে পারি। পুলিশ বললো হ্যা মিসেস চৌধুরী এই বলে ইরাকে নিয়ে যায় পুলিশস্টেশনে।

উষশী বললো ওয়াও জিনিয়াস নীলা তোমার নেই কোনো তুলনা। ইশান বললো ধন্যবাদ নীলা অসময়ে আমার ভাইকে অবিশ্বাস না করে পাশে দাঁড়ানোর জন্য। বজোহরি রায় বললো মিসেস চৌধুরী মাফ করবেন আসলে প্রত্যেক্ষ ঘটনা এমন সাজানো হবে বুঝতে পারি নাই। তবে একটা কথা যার ঘরে আপনার মতো বউ আছে তার স্বামীর কখনো কিছু হতে পারেনা।

বজোহরি রায় বললো মিস্টার চৌধুরী চলেন প্রেজেন্ট টেশন দেখি । আকাশ বললো হ্যা চলেন। ইশান তখন উষশীকে বললো নীলাকে আমাদের অফিস টা ঘুরিয়ে দেখাও ততক্ষণে ক্লাইন্ট মিটিং শেষ করে একসঙ্গে বাসায় যাবো। উষশী বলে চলো নীলা তোমাকে আমাদের অফিস দেখাই?

আকাশ বললো মিঃ রায় আজকের ব্যাপারে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমার জন্য আপনার অনেক সময় লস হলো। আসলে আমি জানিনা ইরাবতী কিসের জন্য এমন করলো, তবে খুব শ্রীঘই জানার চেষ্টা করবো।

মিঃ রায় বললো মিঃ চৌধুরী আমাদের ভূল বুঝিয়েন না সাময়িক সময়ের জন্য আমাদেরো এমন মনে হইছিলো। তবে যা কিছু হয় তা সংগ্রামের আরেক দিক হয়ে ধরা দেয়। যেমন আপনি খুব সহজে কাউকে বিশ্বাস করতেন এখন আর তা পারবেন না।

আকাশ মনে মনে বললো বিশ্বাসতো একজনকে করেছি এইবার মনে হয় তার চেয়েও বড় ধোকা পেতে যাচ্ছি।

ইশান আকাশকে ইশারা করলো প্রেজেন্টটেশন শুরু কর সময় চলে যাচ্ছে।

আকাশ বললো শুরু করা আজকের আলোচনা। আকাশ মাল্টিমিডিয়ার সাহায্য পুরো প্রেজেন্ট টেশন দেখা শুরু করলো বললো মিঃ রায় এইটা একটা ঐতিহ্যবাহি অনুষ্ঠান এর জন্য সবার কস্টিম আর ডিজাইন থাকবে এক তাহলে অনুষ্ঠান টি ট্রাটিশনে পরিনিত হবে। এইগুলা আমাদের ডিজাইন বলেই ডিজাইন গুলো দেখানো শুরু করলো। প্রেজেন্টটেশন দেখে খুব খুশি হয় মিঃ রায়। রায় বলেন আমি জানতাম আপনাদের কাছেই নিখুঁত কাজ পাবো এর জন্য এই ডিল ফাইনাল। ইশান সাহেব বলে ধন্যবাদ মিঃ রায়। মিঃ রায় বলে ইট’স ওকে পরে আবারো দেখা হচ্ছে এই বলে উঠে যায়। নতুন ডিল পেয়ে ইশান খুশিতে আকাশকে জাপটে ধরে। আকাশ বলে ভাইয়া আমাকে ছাড়ো আমায় বাড়ি যেতে হবে।

উষশী ফোন করে ইমরানকে সব টাই বলে দেয়। ইমরান ফোন রেখে আর্জিনা বেগম কে সবটাই বলে আর্জিনা বেগম একটু শক্ত হয়ে উঠে দাড়ায় আর বলে আমি জানতাম এই মেয়ে আকাশের শক্তি হয়ে উঠবে একদিন আজ তা প্রমানিত হলো। আজগর বললো হ্যা এখন ওদের জন্য খাবার তৈরি করো প্রেষাণ হয়ে আসছে ওরা।

উষশী আর নীলা অফিস ঘুরিয়ে দেখার সময় সবার সাথে পরিচয় হয়ে নেয়।

আকাশ বের হয়ে যায় বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য তখন ইশান বলে নীলা আছে ওখে নিয়ে যা।

আকাশ মনে মনে বলে নীলার সাথে আমার ডিভোর্সের ব্যবস্থা করতে হবে। যে মেয়ে আমার সাথে ক্যামেরা ব্যবহার করে তার কোনো অবশ্যই বদ মতলব আছে।

ইশান বললো নীলা তুমি আকাশের গাড়ি করে যাও। আমি তোমার ভাবীকে নিয়ে আমাদের গাড়িতে আসছি।

নীলা বলে ঠিক আছে। আকাশ গাড়িতে উঠে বসে। নীলাও উঠে বসে। আকাশ কিছু না বলেই গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলো। এই অবস্থা দেখে নীলা বুঝতে পারলো আমাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে কঠোর ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছে।

আকাশ মনে মনে ভাবলো যদি নীলার বদ মতলব থাকতো তাহলে আজকে ক্যান ও এভাবে আমার বিপদে ছুটে আসলো নাকি সবটাই ফর্মালিটি। আর বদ মতলব বা কি?

নীলা কিছু না বলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলো হে আল্লাহ আমাকে শক্তি দিন আমি যেনো আকাশকে সবটাই বোঝাতে পারি।

ইশান আর উষশী ওদের পিছন পিছন আসছে। উষশী বললো নীলা মেয়েটা বুদ্ধিমতী কিভাবে আজকে মিরাকেল ঘটালো। আকাশকেও বাচালো ডিল ও ফাইনাল হলো। আমি হলে কখনো নিজেকে এতোটা শক্ত করে পারতাম না। ইশান বলে নীলার কাছে কিছু শিখো।

গাড়ি চৌধুরী মঞ্জিলে ঢুকলো। গাড়ি থেকে নেমেই ড্রাইভারকে বললো গাড়িটা পার্ক করতে এই বলেই হনহন করে উপরে উঠলো আকাশ। নীলাও আকাশের পিছু পিছু যাচ্ছে।

উষশী গাড়ি থেকে নেমে বললো ইশান ওদের কি হলো আবার.? ইশান বললো চলো দেখতে হচ্ছে।

আকাশ আর নীলা দ্রুত উপরে চলে যায়। আর্জিনা বেগম কাউকে প্রশ্ন না করে বলে ওদের কি হয়েছে এইভাবে গেলো কেনো। আমাদের সাথে কথা না বলেই। তখন ইশান বললো মা ওদের উপর স্ট্রেজ গেছে তাই রেস্ট করতে গেছে কিছু হয় নাই।

উষশী বললো যাক বাবা তোমার মাথায় বুদ্ধি আছে। ইশান বললো যেকোনো ভাবে তো ম্যানেজ দিতে হবে।

আর্জিনা বললো তোরাও উপরে যেয়ে রেস্ট নে খাবার উপরে পাঠিয়ে দিবো।

ইশান আর উষশী আচ্ছা বলে উপরে চলে আসে।

নীলা আকাশকে সাহস করে বলে কিছু বলছেন না কেনো?

আকাশ রাগ দেখিয়ে বলে বলোতো কি মতলবে আমার ব্লেজারে ক্যামেরা রেখেছিলা।

নীলা বলে আমাকে বলার সুযোগ দিতে হবে আপনার এরপরে যদি ভূল করে থাকি আমাকে যা শাস্তি দিবেন মাথা পেতে নেবো। শুধু কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।

আকাশ রুমের সিটকানি আটকে দিয়ে রাগী স্বরে বলো দেখি কি অযুহাত তুমি দিবে?

নীলা বললো দেখেন আকাশ আমি যাকে ভালোবাসতাম সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। তিন বছর যার সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো কখনো বুঝতেই পারলাম না সে লোভী। সে আমাকে না আমার সম্পত্তিকে ভালোবেসেছে। এরপরে পুরুষ মানুষের প্রতি সাময়িক সময়ের জন্য বিশ্বাস উঠে যায়। তার জন্য কালকে রাতে অনেক চিন্তার পর আপনি যে ব্লেজার পড়বেন তার বাটনে ক্যামেরা সেড করেছি। কিসের জন্য জানেন আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন নাকি বা! অফিসের কোনো মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কে আছেন নাকি তা দেখার জন্য। মূলত এইটা জেলাসি ফিল থেকে করেছি কারণ, স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের পর জামাই তার স্ত্রীর উপর জোড় খাটায়। বাট আপনি তা করেন নাই এরজন্য মনে হলো অন্য জায়গায় আফেয়ার চলছে নাকি তা দেখার জন্য। এখন আপনার যা মনে হইবে তাই করুন আমার তবুও সবার সামনে আর মুখ গোমড়া করে রাখবেন না।

আকাশ এসব কথা শুনতে শুনতে একটা অট্রহাসি দিলো। ও এই ব্যাপার তাহলে বলেই নীলাকে জড়িয়ে ধরলো। আকাশ বললো আমি খুব খুশি হয়েছি হামজার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নাই। খুব ভালোবাসি তোমায়। তোমার ছবি দেখার পর আমি এক পর্যায়ে বিমোহিত ছিলাম। হামজা তোমার সাথে প্রতরণা করছে বলে আমিয়ো করবো এটা ভাবলা ক্যামনে। যদি একটু ফ্রি হয়ে সবটা বলতা তাহলে একা একা নিজের মনকে এতো কষ্ট দিতে হতো না। নীলা আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি ও হামজা ছিলো কাবাব মে হাড্ডি আমাদের মাঝে।

নীলা আকাশকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোড়ে নিঃশ্বাস ফেলে যাক বাবা আমাকে আকাশ ভূল বুঝে নাই।

আকাশ বললো যা হয় ভালোর জন্যই হয় নাহলে আজকে আমি অপরাধ মুক্ত হতে পারতাম না। তবে নীলা তোমার কাছে আমার একটি আবদার। বলো রাখবা তুমি?

চলবে,,,

[ভূল ত্রুটি মার্জনীয়। গঠনমূলক মন্তব্য করবেন, আল্লাহ হাফেজ! ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here