দাম্পত্য_জীবন #পর্ব_01 #মেহু_আপু

0
1299

–“আজ নীলার বিয়ে তাই কনে সাজতে বিউটি পার্লারে আসে কনে সাজা শেষে নীলা বলে রিয়া, কেয়া তোরা গাড়িতে যেয়ে চড় আমি পেমেন্ট করে আসতেছি,,

-“রিয়া আর কেয়া গাড়িতে উঠে পড়ে নীলার জন্য ওয়েট করে কিন্তু 12 মিনিট গত হওয়ার পরেও নীলা আসে না এই দেখে রিয়া সমানতালে নীলাকে ফোন দেয় কিন্তু ফোনটা সুইচ অফ বলে। -”

“- রিয়া কেয়াকে বলে চলতো দেখি নীলা আপু এখনো আসছে না কেনো?,,

-” কেয়া রিয়া রিসিপশন ডেস্কে যেয়ে বলে নীলা নামের মেয়ের কোনো পেমেন্ট করছে কি?,,

-“হ্যা ম্যাম অনিতো 05 মিনিট আগে পেমেন্ট করে বের হয়ে গেছেন। এই কথা শুনামাত্রই কেয়া চিপসে যেয়ে রিয়াকে বলে যা সন্দেহ করেছি তাই হলো রিয়া। রিয়া বললো দ্বারা আঙ্কেল কে ফোন করি ব্যাপারটা জানাই? “-

-” রিয়া ফোন করে নীলার বাসায়। নীলার বাবা ফোন ধরা মাত্রই রিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে, আঙ্কেল আপু পালিয়ে গেছে। ”

“লিটন সাহেব বলে উঠে তোমরা থাকতে ও পালালো কি করে?

” রিয়া তখন ফ্লাসব্যাকের কাহিনি বলে লিটন সাহেব কে?

“লিটন সাহেব বলে তোমরা ওইখানে ওয়েট করো আমি আসতেছি এই বলে ফোন কেটে দিয়ে হম্বিতম্বি করে গাড়ি বের করে!!

-” লিটনের স্ত্রী তানিয়া বলে কি গো কার ফোন ছিলো আর এত কাজ ফেলে হম্বিতম্বি করে গাড়ি নিয়ে কোথায় যাচ্ছো? লিটন বলে তানিয়া তোমাকে এক্সপ্লেশন করার সময় নাই আমার কাছে এই বলে গাড়ি নিয়ে নিজেই রওনা দেয়। “-

-“নীলা রেলস্টেশনে হামজার জন্য অপেক্ষা করছে। নীলা খুব টেনশন করছে কারণ নীলা এতক্ষণে ভালো করেই বুঝে গেছে ব্যাপারটা বাড়িতে সবাই জেনে গেছে এতক্ষণে এই ভেবে। ”

” নীলা শুধু পথ চেয়ে রয় কখন হামজা আসবে এই নিয়ে 25 মিনিট পার হয়ে যায় কিন্তু হামজা আসেনা । নীলা টেনশনে পড়ে যায় হামজা আসবে তো এই ভেবে? ”

“লিটন বিউটিপার্লারের সামনে এসে রিয়া আর কেয়া কে তুলে নেয় তার গাড়িতে। কেয়া আর রিয়া লিটন সাহেব কে দেখে খুব ভয় পায় তখন লিটন সাহেব বলে উঠে তোমাদের কাছ থেকে এই বোকামিটা এক্সপেক্ট করি নাই রিয়া কেয়া। রিয়া বলে আঙ্কেল কিভাবে বুঝবো ওর মনে এসব ঘুরছিলো। ”

“লিটন তাদের ড্রাইভারকে ওই গাড়িটা নিয়ে বাড়িতে যেতে বললো। ”

“লিটন সাহেব গাড়ি টেনে ডিরেক্ট রেলস্টেশনের দিকে যায়। ”

” নীলা দেখে এখনো হামজা আসছে কিনা? এইদিকে তার ফোন বন্ধ করে রাখছে। তাই স্টেশনের আরেক ব্যাডার ফোন নিয়ে হামজার ফোনে ডায়াল করে কিন্তু নম্বর সুইচ অফ বলছে। ”

“নীলা খুব রেগে যায় আর ততক্ষণে ট্রেন চলে আসে। চারদিকে চাতক পাখির মতো নীলা হামজাকে খুঁজে।
অবশেষে নীলা হামজাকে না পেয়ে রেলস্টেশনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বসে পড়ে, ততক্ষণে ট্রেন ছেড়ে দেয়? ”

“লিটন সাহেব স্টেশনের ওপারে গাড়ি পার্ক করে, নীলার কাছে আসে। লিটন সাহেব নীলার হাত ধরে।”

“নীলা হতভম্ব হয়ে চোখ উপড়ে উঠাতেই ভয় পেয়ে যায় তার বাবাকে দেখে। ”

“বাবা তুমি এখানে কি করে? লিটন বলে তুমি আমার মেয়ে আমি জানবো না তুমি একটা অপদার্থের জন্য কোথায় ওয়েট করতে পারো? ”

————————-

” নীলা বলে উঠে বাবা আমাকে মাফ করো। আমি বুঝতে পারি নাই হামজা আমার সাথে এরকম প্রতারণা করবে। লিটন সাহেব বলে উঠে তোমাকে এক শর্তেই মাফ করতে পারি মা। তোমাকে আমার পছন্দ করা ছেলে আকাশকে বিয়ে করতে হবে! নীলা বলে আমি রাজি বাবা, কোনো চিটারের জন্য আমি আমার জীবনটা নষ্ট করতে চাইনা। লিটন বলে তাহলে চোখের পানি মুছো আর গাড়িতে উঠো মা।

” নীলা গাড়িতে উঠে। এরপরে কেয়া ও রিয়া বলে উঠে আমরা আগেই তোকে বলছি হামজা ভালো ছেলে না তবুও তুই শুনলি না আজ দেখলি তো। লিটন সাহেব কেয়া আর রিয়াকে বলে তোমরা থামো কিছুক্ষণের জন্য ওকে নিজেকেই ভাবতে দাও।

“লিটন সাহেব গাড়ি ছাড়ে আর মুসকি হাসি দেয়। “-

-” নীলা মনে মনে ভাবে আমি হামজাকে এত বড় ভূল চিনলাম। তিন বছরের রিলেশন আমাদের তবুও আমি হামজাকে ভালো করে চিনতে পারলাম না। ”

– “এদিকে ড্রাইভার নীলার বাড়িতে খালি গাড়ি আনতেই তানিয়া বেগম ড্রাইভারকে প্রশ্ন করলো কেয়া, রিয়া, নীলা কই? -”

-“ড্রাইভার সাহেব বলে উঠলো আফারা স্যারের গাড়ি করে আসবে ম্যাম -”

-“তানিয়া বেগম বলে এ আবার কেমন কথা? তোমার স্যার ওদেরকে ড্রাইভ করতে গেলো। বাড়িতে বড়যাত্রী এলো বলে তা বাদ দিয়া ওনি গেলো মেয়েকে ড্রাইভ করতে -”

-” তানিয়া বেগম লিটন সাহেব কে ফোন দিলো। লিটন ফোন ধরে বললো তানিয়া আমরা যাচ্ছি এই বলে ফোন কেটে দিলো -”

-” তানিয়া বেগম রাগে ফায়ার হয়ে গেলেন মনে মনে আজকে একবার মেয়ের বিয়েটা হোক তারপর দেখাবো তোমার এসব এটিটিয়ট -”

-” নীলা অবিরাম ভাবে কান্না করেই চলেছে ঘোমটার আড়ালে আর বলতেছে মনে মনে হামজা তুমি আমার সাথে এটা ঠিক করলা না তোমার ভালো হবেনা কখনো। আমি তোমাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছিলাম আর তুমি আমার সাথে চিট করলা -”

-” নীলা বাড়িতে ঢোকা মাত্রই বরযাত্রীর গাড়ি আসে নীলার বাড়িতে -”

-“কেয়া, রিয়া বাকিসব আত্নীয় স্বজনরা গেটে বরযাত্রী দের জামাই আপ্যায়ন করে মন্ডপে বসায় -”

-” রিয়া বলে উঠে জামাই সাহেব তো ছবির থেকেও বাস্তবে অনেক হ্যান্ডস্যাম। কেয়া বলে দেখিয়ো আপু নীলা আপু আকাশ ভাইয়াকে বিয়ে করলে হামজা ভাইয়াকে ভূলে যাবে!! রিয়া বলে উঠে চুপ চুপ দেয়ালেরো কান আছে ও বাড়ির লোক যেনো এসব কথা না শুনে? -”

-” বরের দুই ভাই বলে উঠে এই ভাইয়া তোমার শালী গুলা তো সেই? তখন আকাশ বলে উঠে চুপ ওদিকে নজর দিবি না ওরাও আমার -”

-” নীলার ছবি দেখে বলে উঠে হামজা মাফ করো নীলা আজকে তোমার সাথে প্রতারণা না করলে আমার মা ও বোনকে হারিয়ে ফেলতাম। আমার মা ও বোনের জন্য তিন বছরের ভালোবাসা বলিদান হলো

-” কেয়া রিয়া কনে সাজে নীলাকে মন্ডপে আনে। আকাশ নীলার মুখ দেখার জন্য পাগল হয়ে যায়। কিন্তু নীলা এক হাত ঘোমটা টেনে নীরবে হামজার জন্য রোদন করিতেছে। আকাশের বাবা আজগর সাহেব লিটন সাহেব কে বলে বিয়াই সাহেব কাজী নিয়ে আসেন। কাজী এসে আকাশ ও নীলার বিয়ে পড়ায়। কিছুতেই কবুল বলতে চায়না নীলা। তখন তানিয়া বেগম এসে বলে মা কবুল বলে ফেলো। নীলা তার বাপের সম্মান রক্ষার্থে কবুল বলে ফেলে। -”

-” সামাজিক অনুষ্ঠান শেষে আকাশের হাতে তুলে দেয় নীলাকে লিটন সাহেব বলে বাবা আমাদের একমাত্র কন্যা আজ থেকে তোমার হাতে উঠে দিলাম। তুমি তার যত্ন নিয়ো। বিদায়ের শেষবেলায় খুব কাঁদে নীলা সবাই তাকে বুঝিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়!”-

#দাম্পত্য_জীবন
#পর্ব_01
#মেহু_আপু
#চলবে—

[ভূল ত্রুটি মার্জনীয় নতুন হিসাবে লেখা শুরু করলাম সাপোর্ট পেলে অবশ্যই সাধ্যমতো দেওয়ার চেষ্টা করবো ]
হামজা কেনো নীলার সাথে এরকম প্রতারণা করলো লিটন সাহেব কেনো অন্য জায়গায় নীলার বিয়ে দিলো এসব প্রশ্ন পরের পার্টে ক্লিয়ার করবো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here