#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_08
নীলা বললো কি আবদার বলেন আমি আপনার জন্য সবকিছু করতে পারি।কারণ আপনি আমার স্বামী।
আকাশ বললো তুমি মানো আমি তোমার স্বামী, তাহলে আমাকে এইভাবে আপনি আঙ্গে করো ক্যানো? আমাকে আজ থেকে তুমি করে বলবা শুধু এইটুকু আবদার।
নীলা বললো সেই অধিকার দিলে অবশ্যই করবো। বাট আমার লজ্জা করে। 🙈
আকাশ নীলাকে জড়িয়ে ধরে গাল দুইটা ধরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিসের লজ্জা।তুমিতো মানো আমায়, আমি তোমার হাসবেন্ড। আর আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি নীলা। তুমি কি এখন আমাকে ভালোবাসতে পারো না এখন তো আমাদের মধ্যে থেকে হামজা বিপদ নেই।
নীলা বললো আমাকে কিছু সময় দিন আকাশ। এর আগে আমাকে পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে ইরা ক্যান ফাঁসাতে চাইলো আপনাকে। আমাকে জানতেই হবে।
আকাশ বলে আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।
অন্যদিকে উষশী ইশানকে বললো ওদের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক হলো নাকি। জানতে হবে চলো নিচে যেয়ে সবার সাথে খাই। ইশান বললো হ্যা আমি নিচে যাচ্ছি। তুমি ওদেরকে ডেকে নিয়ে আসো।
উষশী আকাশের রুমে যেয়ে নক করে দরজা লাগা দেখে অবাক হয়।
আকাশ নীলাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে কে ওখানে?
উষশী বলে আমি তোমাদের ভাবি নিচে আসো খাবার খেতে। আকাশ যাচ্ছি ভাবী আমাদের বেড়েতো হবে। উষশী বললো কোথায় যাবা তোমরা। নীলা দরজা খুলে দিয়ে বলে একবার পুলিশ স্টেশনে যেতে। উষশী বলে কেনো? তখন নীলা সবটা বুঝিয়ে বলে। উষশী তখন নীলার কানে কানে বলে ভাইকে রাগ করা অবস্থায় দেখলাম ও কেনো তোমার উপর রাগ করছে। তখন নীলা বলে ও কিছুনা একটু অভিমান করছিলো রুমে এসে বুঝিয়ে ঠিক করে নিছি। উষশী বললো যাক বাবা মিটে গেলোই শান্তি।
আকাশ রুম থেকে বেড়িয়ে বলো চলো নীলা। এরপরে তিনজনেই নিচে যায়। ডাইনিং এ আজগর চৌধুরী আকাশকে খেতে ডাকলে আকাশ বলে বাবা আমরা একটু বাইরে যাচ্ছি ওখানে যেয়ে খেয়ে নিবো তোমরা খেয়ে নেও।
আর্জিনা চৌধুরী রাগ করে বলে অল্প কিছু মুখে দিয়ে যাও। নীলা বলে উষশীকে ভাবী মাকে ম্যানেজ করো আজ আমরা বাইরে খেয়ে আসবো। উষশী বলে মা ওরা যাকনা আমরা খেয়ে নিচ্ছি।
আর্জিনা চৌধুরী বলে তাড়াতাড়ি ফিরো। নীলা আর আকাশ বলে হুম তাড়াতাড়ি ফিরবো আমরা। এই বলে আকাশ গাড়ি বের করে।
নীলা যাওয়ার সময় উষশী আর ইমরানকে ডাক দেয়। উষশী আর ইমরান কাছে গেলে নীলা বলে ভাবী ইমরান তোমাদের দুজনকে একটা কাজ দিবো করতে পারবা । ইমরান বলে বলেই দেখোনা একবার সব করতে পারি তোমার জন্য ভাবী। নীলা লজ্জা মুখে বলে ভাবী আমাদের রুমটা একটু ফুল দিয়ে সাজাইয়েন বেডটা রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে সাজাবা। তখন উষশী বলে ভাইকে সারপ্রাইজ দিতে চাও। নীলা বলে হুম অনি যাতে এগুলা জানতে না পারে। ইমরান বলে ঠিক আছে কিন্তু রুম সাজাতে সময় লাগবে তাই ভাইয়াকে নিয়ে দেরিতে ফিরো। নীলা বলে ডান। উষশী বলে বেষ্ট অফ লাক কাজ হয়ে যাবে যাও।
আকাশ বারবার গাড়ির হর্ণ দিচ্ছিলো। ইমরান বললো ভাবী তাড়াতাড়ি যাও ভাইয়া রাগ করবে হর্ন দিচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। নীলা বললো আসি তাহলে। এইবলে আকাশের গাড়ির কাছে গেলো।
আকাশ গাড়ি থেকে নেমে নীলাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে গাড়িতে উঠলো। এরপরে নীলা সিল্টবেল্ট লাগাতে যাবে অমনি বলে আমি লাগিয়ে দিচ্ছি বলে নীলার হাত ধরে। নীলা অসত্বিতে পড়ে। আকাশ সিল্টবেল্ট লাগিয়ে দেয় আর নীলার হার্টবিট খুব বেড়ে যায়। নীলা বলে এগুলা কাজ আমি পারি এরপরে থেকে এরকম করবেন না। আকাশ নিজের সিল্টবেল্ট লাগিয়ে বলে বউকে ভালোবাসবো এতে কারা মানা শুনতে চাইনা। নীলা মনে মনে বলে হামজাকে হারিয়ে আমার অনেক ভালো হয়েছে আল্লাহ তালা আমাকে আকাশের মতো হাসবেন্ড দিয়েছে। যে বউয়ের প্রতি লয়্যাল। আকাশ গাড়ি ড্রাইভ করা শুরু করলো।
উষশী ইমরানকে বলে কাজ টা গোপনে করতে হবে বাড়িট কেউ যাতে না জানে তাহলে নীলা লজ্জায় মরে যাবে। ইমরান বলে ওসব কিছু ভাবতে হবেনা চলে আগে খেয়ে নিই। এরপরে চৌধুরী পরিবার খাওয়া দাওয়া শেষ করে।
ইশান উষশীকে বলে কি বললো নীলা তোমাকে ওদের মধ্যে সব ঠিক আছে তো। উষশী বললো হুম সব ঠিক আছে আর ওটা আমার আর নীলার পার্সোনাল ব্যাপার তোমাকে জানতে হবেনা তুমি রুমে যাও আমি আর ইমরান একটু বেড়াবো তাড়াতাড়ি আসবো বাড়ির কেউ কিছু বললে বলবা ইমরান সহ একটু মার্কেটে গেছে ঠিক আছে। ইশান বলে কোনো তো প্লান আছে আমাকে বলছো না। উষশী বলে তুমি বড় ভাই এসব ব্যাপারে তোমার না থাকাই ভালো যাও। ইশান বলে আচ্ছা ব্যাস। ইমরান উপর থেকে ব্যাগ নিয়ে বলে চলো ভাবী। উষশী ইশানকে বলে আমরা আসতেছি। এই বলে উষশী আর ইমরান ফুল কিনতে বের হয়।
আকাশ বলে নীলা তোমাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় নাই তোমার কারণে আজ আমি এইভাবে বেড়াতে পারছি কলঙ্কমুক্ত।
নীলা বলে আমি থাকতে আমার জামাইয়ের কেউ কিছু করবে আর আমি তা দেখবো ভাগ্যিস বোতামের সাথে ক্যামেরা রেখেছিলাম এটাও আল্লাহর ইচ্ছে। তা নাহলে ক্যান আমি ওইখানে ক্যামেরা রেখেছিলাম।
আকাশ বলে আল্লাহ যা করে মঙ্গলের জন্য করে। চলো পুলিশ স্টেশন চলে এসেছে এই বলে আকাশ গাড়ি থেকে নেমে নীলাকে নামিয়ে দেয়।
পুলিশ স্টেশনে যেয়ে সবুজ স্যারকে বলে নীলা স্যার ইরাবতী ক্যান আমার জামাইয়ের সাথে এরকম করেছে স্বীকার করেছে।
সবুজ বললো আরে ম্যাম আপনারা কেনো এসেছেন ফোন করতেই যাচ্ছিলাম আপনাদেরকে। হ্যা ইরাবতী স্বীকার করেছে এই কাজ ওনার প্রেমিকের জন্য করেছেন। ওনার প্রেমিক নাকি আকাশ স্যারকে ফাঁসাতে চেয়েছিলো।
আকাশ বললো অনার প্রেমিক কে বলেছে আপনারদেরকে। সবুজ বললো হামজা নাকি নাম। আচ্ছা হামজা নামের আপনার কোনো শত্রু আছে।
নীলা অবাক হয়ে পুলিশকে বলে আমি কি ইরাবতীর সাথে দেখা করতে পারি? পুলিশ তখন সাব ইন্সপেক্টর মরিয়ম কে বলে ম্যাডামকে ইরাবতীর কাছে নিয়ে যান। নীলা বলে আকাশ আপনি এইখানে ওয়েট করেন 05 মিনিটে আসছি। আকাশ বলে ঠিক আছে।
নীলা ইরাবতীর জেলের কাছে গিয়ে ইরাকে ডাক দেয়। ইরা কাছে এসে বলে ম্যাম আমি দুঃখিত আর কোনোদিন আমি এসব কাজ করবো না পিল্জ ক্যাসটা তুলে নেন। নীলা বলে আচ্ছা হামজা তোমার বয়ফ্রেন্ড। ইরা বলে হ্যা ম্যাম ওর জন্যই আমি আজ এখানে আমায় ফাঁসিয়ে দিয়ে এখন ও আর আমার ফোন তুলছে না। তখন নীলা তার ফোন থেকে এক্সের পিক বের করে বলে এই হামজা নাকি।ইরাবতী বলে হ্যা ম্যাম এই ছেলেটা। নীলা অবাক হয়ে যায় আমার সাথে প্রেম চলাকালীন এই ছেলে আরো মেয়ের সাথে প্রেম করতো। নীলা বলে তোমাদের কত দিনের রিলেশন। ইরা বলে ০৬ মাসের। নীলা বলে ও এখন কোথায় জানো তুমি। ইরা বলে আমি ধরা পড়েছি জেনে এতক্ষণে গা ঢাকা দিয়ে সম্ভবত পালিয়ে গেছে কোথাও।নীলা মনে মনে বলে এই ছেলেকে আর কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে খেলতে দিবো না একে ধরার ব্যবস্থা করতেই হবে।
নীলা চলে যেতে লাগলো তখন ইরা নীলার পা ধরে মাফ চায়। ম্যাম পিলিজ আমাকে ছেড়ে দিন। তখন নীলা বলে তুমি যে তোমার প্রেমিকের কথায় আরেক জনের সংসারে আগুন লাগাতে পারো আর তোমার মতো মেয়েকে দিবো ছেড়ে। ইরা বলে ম্যাম ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে এসব করেছি আমাকে মাফ করেন আর কোনোদিন এসব করবো না। তখন নীলা বলে আমার কাছে মাফ চেয়ে লাভ নেই তোমার স্যার ওই রুমে বসে আছে তার কাছে যেয়ে মাফ চাও অনি মাফ করলে তুমি মুক্ত।
ইরা তাড়াতাড়ি যেয়ে আকাশের পা ধরে। আকাশ বলে কি করছেন আপনি উঠেন। সাব ইন্সপেক্টর মরিয়ম এসে ইরাকে ধরে। ইরা তখন আকাশের কাছে মাফ চায় আর ক্যাসটা তুলে নিতে বলে। সবুজ স্যার বলে মামা বাড়ির আবদার কাল আপনাকে কোর্টে চালান করা হবে মানহানিকর মামলা এটা এসব কাজ করার আগে ভাবতে পারেন না। নীলা আকাশকে চোখে চোখে বলে ছেড়ে দাও।
আকাশ বলে এরআগে এসব কাজ করার আগে ভাববেন। সবুজ স্যারকে বলে স্যার আমি ক্যাসটা তুলে নিচ্ছি ওনাকে ছেড়ে দিন। তখন সবুজ বলে আচ্ছা আপনার ইচ্ছে এইখানে একটা সাইন দেন। আকাশ সাইন দেয়। ইরাবরতী বলে ধন্যবাদ স্যার। মরিয়ম বলে এই মেয়ে এসব কাজ করার আগে ভাববেন এবার। স্যার ভালো লোক বলে মুক্তি পেলেন।
আকাশ নীলাকে নিয়ে পুলিশ স্টেশন থেকে বেরুলো। পিছে ইরাও বেরুলো। ইরাকে দেখে আকাশ জিজ্ঞেস করে আপনি আমাদের পিছনে পিছনে আসছেন কেনো?
ইরা যেয়ে আবার আকাশের পা ধরে। নীলা ইরাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে আমরা কোনোদিন তোমাকে মাফ করতে পারবো না কারন তুমি আমার স্বামীর গায়ে কাঁদা ছিটানোর চেষ্টা করছো। তোমাকে কোনোভাবে আমাদের কোম্পানিতে রাখতে পারবো না। আকাশ বলে মুক্তি দিলাম তাই বেশি আবার আপনার মতো আপদকে কোম্পানিতে রাখার সাহস নেই। ইরা হাত জোর করে তখন আকাশ বললো আপনি বাড়িতে যান পরে দেখবো এই বলে নীলাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে গাড়িতে উঠে স্টার্ট দেয়।
নীলা আকাশের কাছে ক্ষমা চায় আমার জন্য আপনাকে এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে কারন হিসাবে বলে বাবার দেওয়া সম্পত্তি তাকে দেই নাই দেখে ও আপনার পিছনে লেগেছে।
আকাশ বলে যা হয় ভালোর জন্য হয় এরপরে তো আর তুমি বলবা না ওকে কোনোদিন ভালোবাসো।
নীলা বলে ঘৃনা লাগে এইরকম ছেলের সাথে তিন বছরের সম্পর্কে ছিলাম।
গাড়িতে দুজনে অনেক কথা বলতে বলতে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি পার্ক করে খেতে নামে।
অন্যদিকে ইমরান আর উষশী বাজার থেকে ফুল এনে নীলার ঘড় সাজাতে শুরু করে।
চলবে,,,
[ভূল ত্রুটি মার্জনীয়।কালকের টুইস্ট নীলা আকাশকে কি বলতে পারবে সে আকাশকে ভালোবাসে তা জানতে হলে বেশি বেশি করে রিয়াক্ট ও কমেন্ট করেন]