#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_09
আকাশ আর নীলা একটা ফাইভ স্টার হোটেলে যায়। আকাশ নীলাকে জিজ্ঞেস করে কি খাবা মেনু দেখে অর্ডার করো। নীলা বলে আপনি কিছু খাবেন না। আকাশ বললো তুমি যেটাই অর্ডার করবা ওইটাই খাবো। তখন নীলা মেনু কার্ড থেকে তার প্রিয় কাচ্চি অর্ডার করে।
ওয়েটার কাচ্চি নিয়ে আসে টেবিলে সার্ভ করে। আকাশ বললো শুরু করো। এরপরে নীলা আর আকাশ কাচ্চি খাওয়া শুরু করলো।
উষশী আর ইমরান সমস্ত রুমটা ফুল দিয়ে আর বেলুন দিয়ে সাজিয়ে দেয়। বেডটায় গোলাপ ফুল আর রজনীগন্ধা ফুল বিছিয়ে দেয়। উষশী বলে ইমরান চলো আমরা এখন নিজের রুমে চলে যাই। শুনো এই কথা যেনো কেউ না জানে মুরব্বিরা। ইমরান বলে ঠিক আছে ভাবী কিন্তু ওরা কি বাসর করে নাই এখন এসব করছে। উষশী বলে আরে তুমি ছোট এসব বুঝবে না বউরা স্বামীদের সারপ্রাইজ দিতে ভালোবাসে বুঝলা। ইমরান বলে ও আচ্ছা আমিতো আবার বিয়ে করি নাই এসব বুঝবো না, এই বলে ইমরান ও উষশী নিজের রুমে চলে যায়।
নীলার কাচ্চি খাওয়া দেখে আকাশ জিজ্ঞেস করলো এগুলা তোমার খুব প্রিয়ো নীলা। নীলা বললো খুব পছন্দ করি আকাশ আপনি খাচ্ছেন না কেনো। আকাশ বলে খাচ্ছি তো তোমার জন্য আরেক প্লেট অর্ডার করবো। নীলা বলে না তাহলে আর গাড়িতে হেটে হেটে যেতে পারবো না। আকাশ বললো অনুমতি দিলে আমি কোলে করে নিয়ে যাবো। নীলা বললো আমার অনেক লজ্জা আছে। এই বলে গদগদ করে কাচ্চি শেষ করলো। আকাশ তখনো নাড়াচাড়া করছে নীলা রেগে যেয়ে বললো তাড়াতাড়ি খান।
এমন সময় বাড়ি থেকে ফোন দেয় আজগর চৌধুরী। নীলা ফোনটা হাতে নিয়ে বলে বাবা ফোন দিছে ধরবো। আকাশ বলে হ্যা ধরো। নীলা ফোন ধরে সালাম দেয়। আজগর সালাম নিয়ে বলে তোমরা কই গেলা বলেও যাও নাই এতক্ষণে ফিরছো না রাত 10.00 টা বেজে গেলো। নীলা বলে বাবা এইতো আমার খেয়ে বেরুচ্ছি। আপনারা সবাই খেয়ে নেন।আজগর বলে ও তোমরা বাইরে খেয়ে নিছো। নীলা বলে হুম। আজগর ফোন কেটে দেয়। আর সবাই রাতের খাবার খেয়ে নেয়।
আকাশ বললো নীলা বাবা কি বললো? নীলা বললো কিছু না আপনি বিলটা পেমেন্ট করেন। আকাশ ওয়েটারকে ডেকে কার্ডে বিল পেমেন্ট করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়। এরপরে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট করে দেয়। গাড়িতে দুজনে গল্প করে সময় কাটাতে থাকে। নীলা উষশীকে টেক্স করে উষশী রিপ্লাইয়ে বলে সব ডান। নীলা খুব খুশি হয়।
কিছুক্ষণ পর আকাশ আর নীলা, চৌধুরী মঞ্জিলে ঢুকে গাড়ি পার্ক করে ভিতরে যায়। ড্রয়িংরুমে সবাই বসে টিভি দেখছে আকাশের পরিবারের বাকি সদস্যরা। ওদের দুজনকে দেখে আর্জিনা চৌধুরী বলে অফিসে যা ব্লেন্ডার হলো এরপরেও তোমরা বাইরে এতক্ষণ সময় কাটালা।
নীলা আর আকাশ চুপ করে থাকে। আজগর বলে আর্জিনা ওদের আর কিছু বলিয়ো না ওরা ভিতরে যাক। আর্জিনা বলে আচ্ছা ভিতরে যাও। নীলা আকাশকে ইশারা করে যান বাবা – মায়ের রাগ ভাঙান আমি উপরে যাই। নীলা উপরে চলে আসে।
আকাশ তারপরে সবটা বুঝিয়ে বলে ক্যানো তাদের দেরি হলো।পরিবারের লোক বললো সেইটা বলে যাওয়া যেতো না তাহলে তো এতো টেনশন করতাম না। যাও উপরে যাও।
নীলা রুমে ঢুকে রুম দেখে খুশি হয় এরপরে সে ফ্রেশ হয়ে নাইটি ড্রেশ পড়ে।
আকাশ রুমে ঢুকে রুমকে ফুলশোভিত দেখে অবাক হয়। আর নীলাকে নাইটি ড্রেসে দেখে পাগল হয়ে বলে তোমাকে খুব হট লাগছে। আর রুম কারা সাজাইছে কার প্লান এসব।
নীলা বলে আপনাকে সারপ্রাইজ দিবো বলে ভাবী আর ইমরানকে দিয়ে এসব করাইছি। আপনার ভালো লেগেছে।
আকাশ বলে দারুণ লেগেছে কিন্তু সারপ্রাইজ কি এতটুকুই (লোভনীয় দৃষ্টিতে নীলাকে দেখে আকাশ)
নীলা বলে আর কি সারপ্রাইজ দিবো আপনাকে।
আকাশ বলে তুমি ভালো করেই জানো আমি কি চাই নীলা।
নীলা ইনোসেন্ট লুকস নিয়ে বলে কি চান?
আকাশ বলে আমাকেই বলতে হবে তাহলে বলছি শুনো। তোমাকে আমি ভালোবাসি নীলা তুমি কি আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে পারবে।
নীলা বলে সবটাই আপনার জন্য করা। আমিয়ো আপনাকে ভালোবাসি আকাশ।
আকাশ নীলাকে বুকের কাছে নিয়ে বলে, বলছো ভালোবাসো তাহলে অপরিচিত লোকের মতো আপনি আপনি করে সম্বোধন করছো ক্যান? আমি এসব আপনি আপনি শুনতে চাই না শুধু তুমি করে শুনতে চাই।
নীলা আপনি কথাটা বলার সাথেই সাথেই আকাশ ঠোঁটে আঙুল বসিয়ে দিয়ে বলে নো আপনি আপনি তুমি করে বলো।
নীলা তখন কম্পিত গলায় বলে,আমি তো তো তোমাকে ভালোবাসি আকাশ। তো তোমাকে স্বামীর অধিকার দিতে চাই।
আকাশ বলে কাপছো ক্যান? আমি রোমান্টিক মানুষ রোবট না রোমান্স করতে ভালোবাসি। সো আমাকে ভয় পেয়ে কথা বলবা না।
নীলা তখন দৌড়ে ওয়ালে গিয়ে দাড়ায় আমার শরম করে বলে আকাশকে।
আকাশ ওয়ালের কাছে গিয়ে দুহাত পাজোর করে নীলাকে বুকের সাথে নিয়ে বলে আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি নীলা। নীলা বলে আমিয়ো ভালোবাসি। আকাশ বলে তাহলে লজ্জা কেনো? চলো শুরু করি। নীলা বলে কি শুরু করবা। আকাশ বলে তুমি শুধু দেখো এই বলে নীলাকে দুহাত দিয়ে কোলে তুলে নেয়। নীলা বলে কি করছেন দরজা লকড করা নাই। আকাশ বলে কেউ আসবে না আর যারা আসবে তাদের শরম করা উচিত। স্বামী স্ত্রীর প্রাইভেট রুমে হুট করে আহম্মকি ছাড়া কিছু না। নীলা বলে আমাকে নামাও ডোর লক করতে হবে।আকাশ নীলাকে বিছানায় শৌয়ে দিয়ে দরজা লক করে দেয়।
এরপরে নীলার কাছে আসে নীলার কপালে আলতো করে চুমু দেয়। নীলা চোখ বুঝে ফেলে আর ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাড়তে থাকে। এরপরে নীলাকে বলে খুব ভালোবাসবো আজকে তোমায়।
আকাশ নিজের শার্ট খুলে শার্টলেন্স অবস্থায় নীলার কাছে যায়।নীলা আকাশ কে শার্টলেন্স অবস্থায় দেখে অবাক হয়। দেখতে পুরা বলিউডের হিরোদের মতো লাগছে ।জিম করা বডি হাতের পেশি খুব শক্ত হয়ে আছে। আকাশ বলে কি দেখছো। নীলা বলে তোমাকে। আকাশ মুচকি হাসি দিয়ে নীলাকে জড়িয়ে ধরে কপালে গালে চুমু দেয়। নীলা আকাশের স্পর্শ পেয়ে গোঙিয়ে উঠে। এরপর আকাশ আস্তে আস্তে শীতল জায়গায় ঠোঁটের স্পর্শ করে চুমু দেয়। নীলার আকাশের চুমুতে মনে হচ্ছে তার শরীরে কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে। নীলা পাগল হয়ে যায় আকাশকে জাপটে ধরে। এরপরে দুজন দুজনের শরীরে লেপ্টে যায় তাদের ভালোবাসায়। সারারাত এভাবে দুজন দুজনকে ভালোবাসা দিয়ে শেষ করে। নতুন সূর্যের অপেক্ষায় থাকে তাদের ভালোবাসা।
ভোরবেলায় দুজন এক সঙ্গে সাওয়ার নেয়। সাওয়ার নেওয়ার সময় আকাশ নীলাকে বলে আমি আজ খুশি নীলা। তুমি আমাকে সেই ভালোবাসা দিয়োছো যেই ভালোবাসার জন্য ২৬ টা বছর পযন্ত অপেক্ষা করেছি। নীলা বলে তুমিয়ো আমাকে স্বর্গসুখ দিয়োছো। এরপরে সাওয়ার নেওয়ার সময় কিছুক্ষণ দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ভিজে!! ।সাওয়ার শেষ করার সময় কিছুক্ষণ রোমান্স করে।
সাওয়ার শেষ হলো। নীলা নীল শাড়ি পড়ে আর আকাশ নীল পাঞ্জাবি পড়ে ভোরের সালাত আদায় করে একসঙ্গে।
সালাত শেষ হয়ে—–
নীলা আকাশকে বলে তুমি শুয়ে পড়ো আজ আর তোমাকে অফিসে যেতে হবে না। আকাশ বলে কিসের অফিস এত সুন্দর বউ থাকতে অফিস যাই কি করে। নীলা বলে অনেক ঢঙ হয়েছে এবার ঘুমান।আকাশ নীলাকে জড়িয়ে ধরে বলে আমি ভাবতেও পারি নাই নীলা তুমি আমার হবে। যেদিন তুমি বাসররাতে হামজার কথা বলেছিলা সেদিন আমি ভেঙে পড়ি। মনে মনে আল্লাহ কে বলি আমার সাথে ক্যান এরকম করলো। কিন্তু অপেক্ষার ভালোবাসা অনেক সুন্দর হয় নীলা। নীলা বলে আমিয়ো সৌভাগ্যবতী তোমার মতো জামাই পেয়ে। নীলা বলে এখন ছাড়ো আমি সবার জন্য নাস্তা করি সকাল হচ্ছে। আকাশ বলে এসব কিছু করতে হবেনা সারারাত ঘুম হয় নাই চলো ঘুমাবে।
নীলা বলে আকাশ পাগলামি কইরো না দেখো তোমাদের বাড়িতে আসার পর থেকে এখনো কোনো কাজ করি নাই। আর এভাবে কাজ না করলে আমাকে বের করে দিবে তোমার পরিবারের লোক। তুমি কি চাও তোমার বউকে কেউ কথা শোনাক। আকাশ এরপরে ইনোসেন্টের মতো করে। কথায় আসেনা পুরুষ মানুষের ভালোবাসা ভয়ংকর আকাশ ঠিক সেরকম করছিলো। নীলা এরপরে আকাশ বুঝিয়ে বেডে শুইয়ে দেয়।
আকাশ বলে তোমাকে যেতে দিবো না। নীলা তখন আকাশের ঠোঁটে চুমু দিয়ে বলে এখন লক্ষী ছেলের মতো ঘুমাও এই বলে নীলা বের হয়ে যায়।
আকাশ চুমু পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়। এরপরে রাতের ঘটনা ভাবতে ভাবতে ডেভিলের মতো হাসি দিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
নীলা কিচেনে গিয়ে সবার জন্য পরোটা আর সবজি রান্না করে। এরপরে চা বানায়। সাথে টেবিলে ফলমূল সাজায়। টেবিলে নাস্তার আয়োজন শেষ করে ভাত বসায়। আর গরুর মাংস বসিয়ে দেয়।
সকাল ৬.৩০ টা নাগাধ আর্জিনা চৌধুরী কিচেনে ঢুকলো নীলাকে কিচেনে দেখে অবাক হয়।
নীলা সালাম দেয় তার শাশুড়ী কে। আর্জিনা সালাম নিয়ে বলে বউমা এসব কি করছো তুমি।
নীলা তখন বলে মা আপনাদের জন্য নাস্তা তৈরি করা হয়েছে টেবিলে আর আমি এখন রান্না করছি। আর্জিনা বলে এসব কেনো করছো বাড়ির লোক আছে না। তখন নীলা বলে আমিতো বাড়ির বউ এসব আমার কাজ। তাই সবাইকে রান্না করে খাওয়াতে চাই মা এর জন্য এসব করছি।
আর্জিনা চৌধুরী বলে পাগল মেয়ে আচ্ছা তুমি ডাইনিংগে থাকো আমি সবাইকে একটুপর নিয়ে আসছি।
চলবে…
[ ভূল ত্রুটি মার্জনীয় Happy reading ]