#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_১২
____এক সপ্তাহ পর____
আকাশ বলে দেখো নীলা অনেক হয়েছে তুমি বই পড়ছো না কেনো সামনে তোমার এমএসসি টেষ্ট পরীক্ষা ইউনিভার্সিটিতে খবর নিচ্ছো কি?
নীলা বলে হে মশায় নিচ্ছি তোমাকে এসব চিন্তা করতে হবেনা। আকাশ কয় আমি চিন্তা না করলে করবো কে। আমি যে তোমার গুরুজি।
নীলা বলে ঠিক আছে মাস্টারজি অনেক রেষ্ট নিয়েছেন এখন থেকে অফিসের কাজে মনোযোগ দেন।
আকাশ বলে এক কাফ কপি নিয়ে আসোতো নীলা। মাথাটা ধরছে। নীলা কফি বানাতে গেলো।
আকাশ ল্যাপটপ নিয়ে কাজে বসে গেলো। নীলা কফি এনে দিলো। আকাশ ধন্যবাদ দিয়ে বললো যাও বই পড়ে নাও কালকে তোমাকে ইউনিভার্সিটিতে ড্রপ করে অফিসে যাবো। নীলা হুম বলেই বই নিয়ে টেবিলে পড়তে বসলো।
____________
হামজা কয়দিন থেকে ভালোই আপ্যয়ন পাচ্ছে এ বাড়িতে। কিন্তু মেঘ তাকে স্বাভাবিক ভাবে নেয় নাই। মেঘ হামজাকে দেখলে শুধুই চিটার বলে সম্বোধন করে। যেটা হামজার একটুয়ো সহ্য হতোনা। কিন্তু মেঘকে দেখানোর জন্য স্বাভাবিক হয়ে থাকে। হামজার মাথায় দুষ্টবুদ্ধি গুজগুজ করছে।
মেঘ এসে বলে তুমি এ বাড়ি থেকে কবে যাবা। হামজা বলে কেনো কি হয়েছে। মেঘ বলে তোমার মা না অসুস্থ কই কয়দিন থেকেতো দেখছি না তার একটুয়ো খোজ নিচ্ছো।
হামজা বলে আমি খোঁজ নিচ্ছি কি নেই নাই তোমাকে কে বললো? মা ভালো আছে। মেঘ কয় তা তোমার কি প্লান তুমি কি এইখানেই ঘরজামাই থাকবা?
হামজা বলে কি করবো আমি তোমায় নিয়ে রাখবো কোথায় আমার ঘর আছে নাকি? মেঘ কয় বিয়ে করার আগে মনে ছিলো না এসব? একটা মেয়েকে এইভাবে চিট করে ক্যামনে বিয়ে করলা? আমি আমার বাপের বাড়িতে এইভাবে থাকতে পারবো না?
হামজা কয় আর কয়েকদিন অপেক্ষা করো? মা সুস্থ হোক তারপরে নিবো তোমায়। মেঘ কয় এক্ষুনি বললা তোমার মা সুস্থ তাহলে। হামজা কয় আরেহ বোঝার চেষ্টা করো তুমি ওইখানে থাকতে পারবানা। মেঘ বলে থাকতে পারবো না কখন বল্লাম আগেতো তুমি নিয়ে যাও তারপরে ভাববো।
হামজা বলে কেনো এই বাড়ির কেউ তোমায় কিছু বলেছে। মেঘ বলে মেরুদণ্ড হীন পুরুষ কোথাকার। আমি এই বাড়িতে সারাজীবন থাকলে কেউ কিছু বলবে না আমি জাষ্ট তোর মনের কথা শুনতে চাইলাম। তুই এতোটা কাপুরুষ ছি! এই বলে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
হামজা একা মনে মনে কয় আমি কি আর তোকে এমনি বিয়ে করছি রে? তোদের সর্বনাশ করে আমি তোদের সবকিছু আমার নামে করে নিবো? তারআগে আমার এক্সকে উচিত জবাব দিবো।
__________
ইমরান রিয়ার সাথে ফোনে কথা বলছে। রিয়াকে আই লাভ ইউ বেবি বললো। রিয়াও বললো আই লাভ ইউ জান। ইমরান কয় রিয়া আগামীকাল তুমি আমার সাথে দেখা করতে পারবা। সেই তোমার বাড়ি থেকে আসলাম এরপরে থেকে দেখা হয়না।
রিয়া কয় আগামীকাল আমার ভার্সিটিতে আসো ক্যাম্পাসে দেখা করবো।
ইমরান বলে কাল কিসের জন্য ভার্সিটি যাবা।
রিয়া বললো ফাইনাল ইয়ারের রুটিন দিছে পরিসংখ্যান ডিপার্টমেন্ট এসাইনমেন্ট আছে জমা দিতে হবে তো।
ইমরান ভার্সিটিতে দেখা করলে তোমার ফ্রেন্ডরা কিছু মনে করবে নাতো।
রিয়া কয় কি বলবে!! এরপরে বলে আচ্ছা ইমরান আমরা যে সম্পর্ক করি তা আমাদের পরিবার মানবে। ইমরান কয় তুমি ফাইনাল ইয়ার শেষ করো আমার এমএসসি টা শেষ হোক এরপরে একাই রাজি করাবো। আকাশ ভাইয়া আছেনা। রিয়া বলে ওই আশায় থাকো। বলি কোম্পানিতে হেল্প করলে কি হয়?
ইমরান বলে আকাশ ভাইয়া এখুনি বসতে দিবেনা কারণ এমএসসিতে রেজাল্ট খারাপ করা যাবেনা।
রিয়া বলে নীলা আপুর তো এমএসসি টেষ্ট শুরু হয়ে যাচ্ছে কাল তোমার কবে থেকে।
ইমরান বলে এইতো কাছাকাছি কোনো ডেটে হতে পারে।
রিয়া বলে কাল সকাল ১০.০০ টায় আমার ক্যাম্পাসে থাকবা বাই।
ইমরান বলে হুম বাই।
_________
নীলা একমনে বই পড়ছে। আকাশ কাজ শেষ করে নীলার দিকে মনোনিবেশ করলো। এরপরে বললো হয় নাই তোমার বই পড়া। নীলা বলে তোমার কাজ শেষ আচ্ছা শুয়ে পড়ো আমি পড়া শেষ করে শুবো। আকাশ ভাবলো না থাক বেচারি বিয়ের পর একদিনেও বই খুলে নাই পড়ুক ও। আচ্ছা আমি ঘুমালাম নীলা এই বলে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলো। নীলা লজ্জা করে বললো ডেভিল যাও ঘুমাও। আকাশ বলে আমারটা না পেলে ঘুমাবো না। নীলা বলে কি তোমারটা। আকাশ ঠোঁট দেখিয়ে বলে এইখানে একটা দাও। নীলা আকাশকে ধরে লিপ কিস দিলো । আকাশ আর ছাড়তে চাইলো না। নীলা আকাশের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে এইভাবে দুষ্টুমি করলে আর কোনোদিন আমার থেকে কিছু পাবেনা। আকাশ বলে ব্ল্যাকমেইল করছো। নীলা কয় হুম।আকাশ বলে পরীক্ষা শেষ হোক দেখে নিবো।
আকাশ ঘুমিয়ে পড়লো। নীলা একমনে পড়তেই থাকলো। পড়তে পড়তে রাত তিনটা বেজে গেলো তবুও ঘুমাতে গেলো না। পড়তে পড়তে টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়লো
আকাশ ঘুমের তালে বিছানার ওপাশে হাত দিয়ে দেখে তার বউ নাই। এরপরে চোখ খুলে দেখলো নীলা পড়তে পড়তে টেবিলে ঘুমিয়ে গেছে। এই দৃশ্য দেখে বলে আহা বেচারি ক্যান যে এত তাড়াতাড়ি টেষ্ট দিলো!
আকাশ নীলার কাছে যেয়ে নীলাকে কোলে তুলে নিলো। ঘুমন্ত অবস্থায় নীলাকে দেখে আকাশের কাছে পরী মনে হলো। মনে মনে বলে ঘুমন্ত অবস্থায় কত শান্ত আর জেগে থাকলে আমার কথার তালে তালে কথা লাগায়। এরপরে বিছানায় শৌয়ে দিলো। টেবিলে এসে বই বন্ধ করে বাল্ব নিভিয়ে দিয়ে নীলাকে জড়িয়ে ধরলো। এরপরে আলতো করে কপালে চুমু দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
________
আজ নীলার পরীক্ষা। তাই বাড়ির সকলের কাছে দোয়া নিলো সবাইকে সালাম দিয়ে আকাশের সাথে বেড়িয়ে পড়লো।
হামজা নীলাকে দেখে বলে যাও চমক বাকি আছে নীলা তোমার জন্য। পরীক্ষা তো দিতে গেলা কিন্তু এ বাড়ির মান সম্মান ডুবিয়ে ফিরতে হবে তোমাকে। এই বলে হামজা মেকি হাসি দিলো।
গাড়ি চালানো অবস্থায় নীলাকে জিজ্ঞেস করলো আকাশ আচ্ছা তোমার প্রিপারেশন কি ঠিক মতো আছে। নীলা বললো আছে তুমি চিন্তা করিয়ো না আকাশ। আচ্ছা আমি কিন্তু ০৪ ঘন্টায় ক্যাম্পাসে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো তোমাকে সাথে নিয়েও ফিরবো। নীলা কয় ক্যান তুমি যে অফিস যেতে চাইলা। আকাশ কয় আমি সব কাজ করে ইশান ভাইকে বুঝিয়ে দিছি। কোনো সমস্যা হবেনা আমি ক্যাম্পাসে থাকবো পানি তৃষ্ণা, অথবা কিছু খেতে চাইলে অবশ্যই ক্যাম্পাসে আসবা। নীলা বলে ঠিক আছে তোমাকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না আমার জামাই। আকাশ বলে জামাই ভাববে নাতো কে ভাববে?
আচ্ছা ঠিক আছে নীলা ক্যাম্পাসে চলে আসছি যাও তুমি আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।
নীলা গাড়ি থেকে নামা অবস্থায় দীপালি জড়িয়ে ধরে।কেমন আছিস নীলা? নীলা বলে আলহামদুলিল্লাহ তুই। দীপালি বলে আলহামদুলিল্লাহ তা তুই একাই কেনো আকাশ ভাইয়া কই? বিয়েটা তো একাই করলি কাউকে কিছু বললি না তুই এতো সার্থপর। তোর কাছে এইটা আশা করি নাই। নীলা বলে তুইতো সব জানিস সবকিছু হুটহাট করে হইছে। তাই কাউকে বলা হয় নাই।
মিমি, সাথী নীলাকে দেখে বলে ঢং প্রেম করলো একজনের সাথে বিয়ে করলো বিজন্যাসম্যানকে। মিমি বলে আরে বাদ দেতো বড়লোকের মেয়েরা এমনই হয়। দীপালি এই জাস্ট সেটাপ যা জানিস না তা আগ বাড়িয়ে বলতে আসিস ক্যান। নীলা বলে চুপ কর দীপালি আমি এই সিনক্রিয়েট চাইনা ওই যে তোর দুলাভাই।
আকাশ এসে সবাইকে হাই বলে নীলাকে নিয়ে যায় কক্ষে রুমে। মিমি বলে দেখলি বড়লোকের মেয়ের চরিত্র বিজন্যাসম্যান পেয়ে শরম লজ্জা গেছে। দীপালি বলে তোদের এতো জ্বলে কেনো ও তো ওর জামাইকে নিয়ে আসছে 🙄
মিমি আর সাথী বলে চুপ থাক নীলার চামচা। দীপালি বলে তোদের এক্সামের পর দেখে নিবো।
এক্সাম টাইম শুরু হলো 9.00 টা বেজে গেলো।আকাশ নীলাকে অভিনন্দন জানিয়ে বেড়িয়ে এলো। প্রশ্নপত্র হাতে পেলো নীলার সব কিছু কমন পড়ছে।
________
1 ঘন্টার বেল বাজলো নীলা ভাবলো আকাশ হয়তো টেনশন করছে তাকে জানিয়ে আসি আমার সব কমন পড়েছে। প্রসাবের কথা বলে বলে বাইরে আসলো। আকাশ নীলাকে দেখে বললো কি অবস্থা বউ। তোমার সব কমন পড়েছে। খুব টেনশন হচ্ছে বলো না। নীলা বলে এতো চিন্তা করবা দেখে বের হয়ে আসছি। হ্যা আমার সব কমন পড়েছে একটু পানি দাও তো। আকাশ নীলাকে পানি খাইয়ে দেয়। নীলা বলে আচ্ছা আমি আসছি খুব লেখতে হবে। আকাশ বলে হ্যা যাও। আকাশ মনে মনে বললো আমার টেনশন শেষ।
নীলা যেয়ে খুব লেখা শুরু করলো মিমি বললো কিরে সাথী খুব যে লেখছে। সাথী বললো দ্বারা শুরু করছি অপারেশন। সাথী নীলার নোটস নিচে ফেলে দেয়। এরপরে মিমি কলম ফেলে দেয় নিজের। নীলাকে বলে এই আমার কলম টা উঠিয়ে দেতো। নীলা কলম উঠাতে গেলে সাথী বলে উঠে ম্যাম ম্যাম নীলা নকল করছে। ম্যাম নোটস গুলো হাতে নিয়ে নীলাকে বললো এইগুলাতো তোমার নোটস। বের হও তুমি হল থেকে। নীলা বলে ম্যাম এগুলা আমি হোলে আনি নাই। কিন্তু ম্যাম বললো এগুলা তো তোমার লেখা তাহলে নিয়ে আসছে কে? নীলাকে হল থেকে বের করে নিয়ে আসে! হেডের কাছে নিয়ে যায় ম্যাম। আর হলের সবাই বলছে এইভাবে টুকলি করে এতদিন ফার্স্ট হতো 🫤
চলবে,,,,
[ রেসপন্স পাচ্ছি না তাই আর দুই তিন পর্বে শেষ করে দিবো ]