#প্রেম_প্রেম_পায়
#স্বর্ণালী_সন্ধ্যা
পর্ব চব্বিশ
২৪.
‘বাহ আপনি তো খুব সুন্দর নাটক করেন!’
রাফিয়া পাশে তাকিয়ে দেখলো সামির তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে আছে তার দিকে। রাফিয়া সামিরের দৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে ভাব নিয়ে বলল,
‘তা একটু পারি।’
সামির একই দৃষ্টি নিয়ে বলল,
‘তা তো দেখলাম। আমার বোন কে কতো সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে মিথ্যা বলে দিলেন’
রাফিয়া এবার সামিরের দিকে তাকিয়ে তেজ নিয়ে কণ্ঠ নিচু রেখে বলল,
‘আপনার বোন হচ্ছে নি’ব্বি টাইপ।আমার ভাইকে দেখে লাড্ডু ফুটছে তার মনে।আপনি আপনার বোনকে তার থেকে ১৮/১৯ বছরের বড় ছেলের সাথে প্রেম করতে দিবেন? আজব পাবলিক!’
বলে সে অন্যদিকে চলে গেল। সামির হা হয়ে গেল। মেয়েটা তাকে এভাবে ভাব দেখালো। দেখে নিবে সে!
আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে ফারদিন আহমেদ বললেন,
‘এবার আংটি পড়ানো যাক মেয়েকে?’
আসিফ ইসলাম বিনয়ী ভাবে বললেন,
‘জি জি।’
ফারদিন আহমেদ তার স্ত্রী কে বললেন,
‘তুমি পড়িয়ে দাও আংটি।’
আখি বেগম এগিয়ে এলেন অপরাজিতার দিকে। অপরাজিতা মাথা নিচু করে বসে আছে। তার কেন যেন খুব লজ্জা লাগছে। বিয়ের বষয়ে সব মেয়েরাই এভাবে লজ্জা পায় নাকি!
আখি বেগম অপরাজিতার বাম হাতের শাহাদাত আঙ্গুলে আংটি টা পড়িয়ে দিলেন। অপরাজিতা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলো হাতের দিকে। আখি বেগম অপরাজিতার মনোভাব বুঝে তার কাছে গিয়ে আস্তে করে বলল,
‘অনামিকা আঙ্গুল আমার ছেলের জন্য ছেড়ে দিলাম’
ফায়াদ পাশ থেকে মায়ের কথা শুনে নিশব্দে হেসে দিল। অপরাজিতা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল।আখি বেগম মুচকি হেসে অপরাজিতা কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
‘আমার মেয়ে হওয়ার জন্য প্রস্তুত তো?’
অপরাজিতা আবেগে আপ্লুত হয়ে মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বলল।
রামিসা বেগমের চোখে পানি চলে এলো এই মুহূর্ত দেখে।তার মেয়েটা ভালো ঘরে যাচ্ছে তাহলে। মায়ের মতো শাশুড়ী পাবে। চলে যাবে তাকে ছেড়ে। চোখ টলমল করে উঠলো তার। বোনের অবস্থা বুঝতে পেরে আমিনা কাধে হাত রেখে তাকে শান্তনা দিলেন।
আংটি পড়ানো শেষ হতে ফারদিন আহমেদ বললেন,
‘বাকি কথা আমরা বড়রা সারছি। ছোটদের এখানে কাজ নেই। তোমরা নাহয় ছাদে বা কোথাও গিয়ে আড্ডা দাও! কি বলেন আসিফ ভাই?’
আসিফ ইসলাম সম্মতি দিয়ে বললেন,
‘হ্যা এখানে থেকে ভালো লাগবে না তোমাদের। তোমরা ছাদে যাও। ছাদে বসার জায়গা আছে।আলোও আছে’
বড়দের কথা শুনে অপরাজিতা, ফায়াদ, ফারাজ, নীতি, সামির, রাফিয়া, সামিয়া,আবির,রিজু সবাই ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে রাফিয়া সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,
‘ছোটদের ছাদে যেতে বলছে। আমরা না হয় যাচ্ছি কিন্তু ফায়াদ ভাই আর ফারাজ ভাই কোনদিক দিয়ে ছোট?’
তার কথা শুনে জোরে হেসে দিল নীতি আর অপরাজিতা। অপরাজিতা বলল,
‘তারা বড় বাচ্চা বুঝেছো রাফিয়া?’
নীতি হাসতে হাসতে বলল,
‘সিরিয়াসলি?’
রিজু বলল,
‘কুছ ভি?’
সামির বলল,
‘এই মেয়েগুলোর একটা টপিক পেলেই হইসে!’
অপরাজিতা সামিরকে দৌড়ানি দিতে গেলে ফায়াদ অপরাজিতার হাত ধরে ফেলল।শাসনের সুরে বলল,
‘শাড়ি পড়ে দৌড়াদৌড়ি করো কেন? ব্যথা পাবে তো।’
ফায়াদ এর কথা শুনে সবাই সমস্বরে বলে উঠলো,
‘ওওওওও ব্যথা পাবে তো!’
অপরাজিতা সবার রিয়েকশনে খানিক লজ্জা পেল। এত লজ্জা পাচ্ছে কেন সে?ফায়াদ ভ্রু কুচকে তাকালো তাদের দিকে।অপরাজিতা মিনমিন করে বলল,
‘আমার অভ্যাস আছে।’
ফায়াদ বাকিদের পাত্তা না দিয়ে ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
‘থাকুক। দৌড়াবে না।’
বাকিটা সিড়ি সে হাত ধরেই উঠলো। হাত ছাড়লো না অপরাজিতার। অপরাজিতা হাতের দিকে তাকিয়েই সিড়ি বেয়ে উঠছে। ভালো লাগছে তার। ভীষণ ভালো লাগছে।
বাকিরা মিটমিট করে হাসছে তাদের দেখে।
‘ভাই একটা কথা ছিল।’
ফারদিন আহমেদ এর কথা শুনে আসিফ ইসলাম বললেন,
‘জি বলেন ভাই।’
রামিসা বেগম উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। কি বলবে তা শুনার জন্য।
ফারদিন আহমেদ গলা ঝেড়ে বললেন,
‘আমি আর আমার স্ত্রী চাইছিলাম তাদের কবুল পড়িয়ে রাখতে।আপনি কি বলেন?’
আসিফ ইসলাম তা শুনে একটু ভেবে বললেন,
‘আমি আমার মেয়েকে এতো তাড়াতাড়ি বিদায় দিতে চাই না। আপনাকে তো বলেছিলাম ভার্সিটিতে চান্স পেলে তারপর ধুমধামে বিয়ে দিব আমার মেয়েকে আমি।’
আখি বেগম তা শুনে বলল,
‘ না না ভাই। অপরাজিতাকে আমরা এখনি নিয়ে যাবো না। শুধু আকদ টা করিয়ে রাখতে চাইছি।’
আসিফ ইসলাম ভাবনায় পড়ে গেলেন।রামিসা বেগম স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে সে কি বলবে তা শুনার জন্য।হঠাৎ এতো তাড়াতাড়ি করার কি আছে বুঝলেন না তিনি।
ফারদিন আহমেদ গলা খাকারি দিয়ে বললেন,
‘আসলে হয়েছে কি! ছেলে মেয়ে দুজনেই বড় হয়েছে।যেহেতু আংটি বদল হয়েছে তার মানে তারা একে অপরের সাথে কথা বলবে দেখা করবে। আমার স্ত্রী চাচ্ছিল সম্পর্ক টা হালাল হোক। তারা একে অপরের সাথে কথা বললে তা যেন হালাল থাকে। তাই এই চিন্তা করলো সে।’
আখি বেগম এবার বললেন,
‘আপনারা যখন মেয়ে উঠিয়ে দেবেন তখন ধুমধামেই নিয়ে যাবো। সে বিষয়ে চিন্তা করবেন না।’
অনেক কথাবার্তা হলো তাদের এ বিষয়ে।
ছাদে পৌছিয়ে ফায়াদ আর অপরাজিতাকে প্রাইভেসি দেওয়ার জন্য ফারাজ বাকিদের নিয়ে ছাদের অন্য সাইডে চলে গিয়েছে।
অন্য সাইডে গিয়ে দাড়াতেই সামিয়া ফারাজকে জিজ্ঞেস করলো,
‘আপনি আপু আর দুলাভাইকে ওখানে রেখে আসলেন কেন?’
ফারাজ বলল,
‘তাদের কথা আছে তাই’
সামিয়া এবার ন্যাকামি করে বলল,
‘কি কথা? আমিও শুনবো।’
সামিয়ার কথা শুনে রাফিয়া বিরবির করে বলল,
‘বল’দ’
সামির এসে সামিয়ার মাথায় গাট্টা মেরে বলল,
‘বেশি কথা বললে নিচে পাঠায় দিব।চুপচাপ থাক!’
ফারাজ বাধা দিয়ে বলল,
‘আহা বাদ দাও ব্রো! বাচ্চা মানুষ। ‘
ফারাজের প্রতিবাদ দেখে সামিয়া যেন আবেগে আপ্লূত হয়ে গেল। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো। ফারাজ অবশ্য খেয়াল করলো না। সে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো নীতি রেলিং এর কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাজ গিয়ে তার কাছে দাড়ালো। তা দেখে সামিয়ার ছোট মনে যেন কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এই বয়সের মেয়েগুলো এমনি। সবকিছুতে বেশি বেশি একদম!
ফারাজ গিয়ে নীতির পিছনে পকেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে
গলা খাকারি দিয়ে তার উপস্থিতি জানান দিল।নীতি পিছে তাকিয়ে ফারাজকে দেখে মুচকি হাসলো।ফারাজও পালটা হেসে নীতির পাশে দাড়ালো। দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
‘কেমন লাগছে?’
নীতি রেলিং এ ভর দিয়ে দাড়িয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘অনেক ভালো।বাতাসটা অনেক ভালো লাগছে।’
‘বাংলাদেশ কেমন লাগছে?’
নীতি এবার মাথা বাকিয়ে ফারাজের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে বলল,
‘ বাংলাদেশ কেমন লাগছে তা বলতে পারছি না তবে আপনার পরিবারটা অনেক সুন্দর। এতো ভালোবাসা পেলে যেকোনো জায়গাই ভালো লাগবে।’
তারপর একটু থেমে বলল,
‘থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ আমাকে সেখানে একা ফেলে না আসার জন্য।থ্যাংক ইউ আমাকে এতো সুন্দর মুহুর্ত গুলো দেওয়ার জন্য।’
নীতির ঠোঁটে হাসি কিন্তু চোখ গুলো টলমল করছে।মেয়েটা অল্পতেই গলে যায়। ফারাজ সে মুখখানার দিকে তাকিয়ে বলল,
‘My pleasure dear’
সামিয়া তাদের দুজনকে কথা বলতে দেখে এতোক্ষন জললেও এখন সে দুঃখ পাচ্ছে৷ ছোট বয়সের আবেগ তারই বা কি দোষ।রাফিয়া তা দেখে ভেঙচি কেটে বলল,
‘এতোটুকু বয়সে এতো আবেগ আসে কিভাবে?তাও এতো বড় লোকের প্রতি!ঢং!’
রিজু রাফিয়া হাল্কা ধমকের সুরে বলল,
‘এরকম করছিস কেন? বাচ্চা মানুষ। বুঝাতে হবে ওদের। বয়সটাই এমন।যা সম্ভব না তা ওদের টানে বেশি।’
বলে সে গেলো সামিয়ার কাছে৷ মেয়েটা একা একা দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ। রিজু গিয়ে বলল,
‘হেই আমি রিজু’
সামিয়া একবার তাকিয়ে আবার অন্যদিকে তাকিয়ে বলল,
‘হ্যালো ভাইয়া’
রিজু দেখলো সামিয়া ফারাজ এবং নীতির দিকে তাকিয়ে আছে। সে তাই এবার সোজা জিজ্ঞেস করলো,
‘তুমি ফারাজ ভাইকে পছন্দ করো?’
সামিয়া চমকে তাকালো।রিজু হেসে বলল,
‘ভয় পাবে না। আমি কিছু বলবো না কাউকে।’
সামিয়া লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গি করে বলল,
‘হুম’
রিজু ফাজলামো করে বলল,
‘এতো বড় কাউকে? ফারাজ ভাই তোমার থেকে ১৮/১৯ বছরের বড়।ভাবতে পারছো!তোমার বিয়ের বয়স হতে হতে তার চুল দাড়ি পাকা শুরু করে দিবে।’
সামিয়া অবাক হয়ে বলল,
‘কেনো, উনি তো অনেক সুন্দর। ‘
‘এখন সুন্দর। পরে আর থাকবে না। তখন তো সবাই বলবে সামিয়ার জামাই বুড়ো।’
সামিয়া ভাবনায় পরে গেল। রিজু বুঝলো কাজ হয়েছে তার কথায়। ফারাজের সৌন্দর্য দেখে সামিয়া আকর্ষিত হয়েছিল।সবই বয়সের দোষ।রিজু চোখের ইশারায় রাফিয়া কে বুঝালো,
‘দেখেছিয়া বুঝে গিয়েছে।’
রাফিয়া মিটমিট হাসছে।
————
ফায়াদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অপরাজিতার দিকে। যার কারনে অপরাজিতা তাকাতেও পারছে না। অন্যদিকে তাকাচ্ছে বারবার। এক পর্যায়ে অপরাজিতা বিরক্ত নিয়ে ফায়াদের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?’
চোখে চোখ পড়তে আবারো চোখ সরিয়ে ফেলল সে।লজ্জা লাগছে অপরাজিতার খুব অথচ সে ভাবতো তার লজ্জা নেই। তা দেখে ফায়াদ বাকা হাসলো।বলল,
‘মেয়ে দেখতে এসেছি তো।’
অপরাজিতা মাথা নিচু করেই শাড়ির আচল প্যাচাতে প্যাচাতে মিন মিন বলল,
‘তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকবেন। আমি তো আপনাকে দেখতে পারছি না। আমার লজ্জা করে!’
ফায়াদ অধর কোণে হাসি রেখেই অপরাজিতা হাত থেকে আচল ছুটিয়ে তা ছেড়ে দিয়ে বলল,
‘তাকাও দেখি পারলে।’
ফায়াদের কথায় কি যেন একটা ছিল। অপরাজিতা ভাবলো তাকে কি চ্যালেঞ্জ করলো! এখন তো সে তাকাবেই!
মাথা তুলে তাকালো ফায়াদের দিকে। চোখে চোখ পড়ে গেল৷ ভিতরটা কেপে উঠলো। লজ্জাকে এবার আর চোখ সরাতে দিল না সে। ফায়াদ তা দেখে দুষ্ট হাসলো। অপরাজিতার চোখের দিকে তাকিয়ে এক কদম বাড়ালো সে। অপরাজিতা খানিকটা নড়ে উঠলো। আরো এক কদম বাড়াতেই অপরাজিতা এক কদম পিছাতে চাইলো। কিন্তু পারলো না। ফায়াদ তার কোমরে হাত দিয়ে তাকে এক কদম পিছানোর পরিবর্তে এক কদম নিজের দিকে নিয়ে এসে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলল।
অপরাজিতা খিচে চোখ বন্ধ করে ফেলল।ফায়াদের বুকে হাত দিয়ে নিজেকে ব্যালেন্স করলো।ফায়াদ এক হাতে অপরাজিতার কোমর ধরে আরেক হাত দিয়ে অপরাজিতা চুল গুলো গুছিয়ে দিয়ে গালে হাত বুলিয়ে বলল,
‘চোখ খুলো।’
অপরাজিতা চোখ বন্ধ করে না বোধক মাথা নাড়ালো।ফায়াদ রসিকতা করে বলল,
‘আমাকে দেখবে না?’
অপরাজিতা এবার ফায়াদের বুকে মাথা গুজে দিল। মুখ লুকিয়ে বলল,
‘এমন করেন কেন? লজ্জা পাচ্ছি তো’
ফায়াদ এবার শব্দ করে হেসে দিল।শব্দ করে হেসে অপরাজিতাকে জড়িয়ে ধরলো। অপরাজিতা সে হাসির শব্দ শুনে ফায়াদের বুকে চিমটি কাটলো। ফায়াদ অপরাজিতার হাত ধরে বলল,
‘চিমটি কাটো কেন?’
অপরাজিতা বলল,
‘আমার ইচ্ছা।’
ফায়াদ অপরাজিতাকে বুক থেকে সরিয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো৷ অপরাজিতা এই দৃষ্টি দেখে বলল,
‘কি?’
ফায়াদ অপরাজিতার গালে হাত বুলিয়ে সম্মোহনী কণ্ঠে বলল,
‘ইচ্ছে তো আমারো অনেক কিছু করছে।’
অপরাজিতা ঢোক গিলে বলল,
‘কি ইচ্ছে?’
ফায়াদ টান দিয়ে অপরাজিতাকে আবারো নিজের কাছে নিয়ে এলো। অপরাজিতা কেপে উঠলো। ফায়াদ অপরাজিতার মুখের দিকে ঝুকে গেল।তার দৃষ্টি অপরাজিতার সেই রাঙানো ঠোঁটের দিকে। ফায়াদ আরেকটু কাছে ঝুকতেই অপরাজিতা চোখ বন্ধ করে ফেলল। কিছুক্ষন পর অপরাজিতা অনুভব করলো তার ডান গালে এক উষ্ণ ঠোঁটের ছোয়া। শিহরিত হলো সে। ফায়াদ অপরাজিতার কানের কাছে কাধে মাথা রেখে বলল,
‘কিছু ইচ্ছে আপাতত বাকি থাকুক।সময় মতো পূরণ করে নিব।’
বলে সে অপরাজিতাকে ছেড়ে দূরে গিয়ে দাড়ালো। অপরাজিতা আস্তে করে চোখ খুলে দেখলো ফায়াদ রেলিং এ ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার দিকে তাকিয়ে আছে হাসি হাসি মুখ করে। তা দেখে অপরাজিতার মুখেও হাসি ফুটলো। ফায়াদ অপরাজিতাকে পাশে এসে দাড়াতে বলল।অপরাজিতা গিয়ে ফায়াদের পাশে দাড়ালো। ফায়াদের কাধে মাথা রাখলো।কিছু মুহুর্ত কেটে গেল।নিরবতা ভেঙে অপরাজিতা বলল,
‘আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন না আমার প্রতি আপনার চাহনি কেমন?’
ফায়াদ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো।অপরাজিতা ফায়াদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘মারা ত্নক চাহনী। ডুবে যাই সে চাহনী তে আমি। সেই দৃষ্টি দেখলে হৃদয় স্পন্দন বেড়ে যায়। আমি–‘
ফায়াদ অপরাজিতার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিল।শান্ত কণ্ঠে সুধালো,
‘বেসামাল হচ্ছি আমি। তোমার অনুভূতি প্রকাশ বেসামাল করে দেয় আমাকে। তুমি সফল। পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি তোমার জন্য।তোমাকে নিয়ে কল্পনা করতে ভালো লাগে ৷ না দেখলে অস্থির অস্থির লাগে।যখন তখন দেখতে মন চায়।আমারো তখন তোমার মতো করে প্রেম প্রেম পায়।’
একটু থেমে সেই চোখে চেয়ে বলল,
‘তোমার ভালোবাসা জিতে গিয়েছে। ভালোবাসি অপরাজিতা। ভালোবাসি তোমাকে।’
(চলবে)
(কারেন্ট ছিল না। ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাই কাল দিতে পারি নি। দুঃখিত!)