#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৪২
” কাছে এসো দুয়া। আমি যে তোমায় ছুঁতে অপারগ। ”
আকুলতা মিশ্রিত বাক্য নিঃসৃত হলো মানুষটির কণ্ঠনালী হতে। তা কর্ণপাত হতেই আবেগী হয়ে পড়লো দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা রমণী। ডান হাতে খামচে ধরলো দ্বার। অক্ষিকোল গড়িয়ে পড়লো তপ্ত কণা। তূর্ণ তৃষ্ণার্ত চাহনিতে তাকিয়ে। চোখের ইশারায় জানাচ্ছে কাছের আসার আকুল আহ্বান! একটুখানি সান্নিধ্য, ছুঁয়ে দেয়ার লো.ভে ম রি য়া চিত্ত। আস্তে আস্তে বাঁ হাতের তর্জনী দিয়ে কাছে আসার আহ্বান করলো মানুষটি। আবেগপ্রবণ দুয়া সে আহ্বান ফেলতে পারলো না। মন্থর গতিতে কদম ফেলে এগোতে লাগলো তূর্ণ’র পানে। প্রতিটি কদমে প্রসারিত হতে লাগলো মানুষটির অধর। চোখেমুখে ফুটে উঠলো তৃপ্তিকর আভা। দুয়া এসে দাঁড়ালো শিয়রে। তূর্ণ শিশুসুলভ উচ্ছাস প্রকাশ করে তার বাঁ পার্শ্বে বসতে বললো। সম্মোহিত হয়ে সেথায় বসলো দুয়া। তাকিয়ে রইল একান্ত জনের পানে। তার আহত অবস্থা, ক্ষত, চোখেমুখে খুশির ঝিলিক। সবটাই অবলোকন করতে লাগলো। হঠাৎ ধ্যান ভঙ্গ হলো। মানুষটির বাঁ হাতে বন্দী তার কোমল হাতটি। তূর্ণ ওর নয়নে নয়ন রেখে ক্ষীণ স্বরে থেমে থেমে বললো,
” খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছিলাম? ”
মাথা নাড়িয়ে ইতিবাচক সম্মতি জানালো মেয়েটি। কপোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রু বিন্দু। তূর্ণ ওর মুঠোবন্দী হাতে আলতো চাপ প্রয়োগ করে বললো,
” আলহামদুলিল্লাহ্ এখন সব ঠিক আছে। ভয়ের কোনো কা কারণ নেই। ”
ভাঙা স্বরে মেয়েটি বলে উঠলো,
” খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে। এমনটা কেউ করে? একটু সাবধানে গাড়ি চালাবে তো। তুমি জানো না তোমার কিছু হলে আমরা.. ”
আর বলা হলো না। কণ্ঠনালী বুঝি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। শব্দমালা সেথায় রুদ্ধ। শুকনো ঢোক গিলতে লাগলো দুয়া। জিভে সিক্ত করলো ওষ্ঠাধর। তূর্ণ ওর হাতের উল্টো পিঠে বৃদ্ধাঙ্গুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে বললো,
” কাঁদে না দুয়া। ”
ছোট্ট এই বাক্যে ধৈর্য্যের সমস্ত বাঁধ ভেঙে চু.রমার হলো। আহত মানুষটির বক্ষস্থলে ঝাঁপিয়ে পড়লো দুঃখ ভারাক্রান্ত রমণী। দু হাতে আঁকড়ে ধরলো একান্ত জনকে। তার বুকে মুখ লুকিয়ে হুঁ হুঁ করে কাঁদতে লাগলো। একদিকে বুকের ওপর অর্ধাঙ্গিনীর ভার, অন্যদিকে ক্ষতস্থানে চিনচিন ব্যথা। দুই মিলিয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করলো তূর্ণ। দুয়া’র ক্রন্দন ধ্বনিতে নি.ষ্ঠুর রূপে কর্তন হতে লাগলো তার প্রেমী চিত্ত। তর্জন- গর্জন করে উঠলো অশান্ত হৃদয়। তূর্ণ আস্তে আস্তে দুর্বল ডান হাতটি বিছানা হতে উঁচু করলো। রাখলো মাইরা’র পৃষ্ঠে। সেথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। প্রয়াস চালিয়ে গেল শান্ত করার। দৃষ্টি নিবদ্ধ তার সফেদ সিলিংয়ে। কিছু প্রহর সেভাবেই অতিবাহিত হলো। ক্ষণিকের যাতনা ভুলে মুখ তুলে তাকালো মেয়েটি। ক্রন্দনে লালিমায় মাখা চেহারা। ফুলো নেত্র। কম্পনরত ওষ্ঠাধর। নে শা ধরে যাচ্ছে তনুমনে। দুয়াও অপলক চাহনিতে তাকিয়ে। চোখে চোখ রেখে কিছু মুহূর্ত কাটলো। দুঃখিনী মেয়েটি স্বল্প একটু ঝুঁকে গেল স্বামীর পানে। ডান হাতটি রাখলো খরশান কপোলে। আলতো করে ওষ্ঠ স্পর্শ করলো ললাটে। শুভ্র ব্যান্ডেজের উপরিভাগে। চক্ষু বন্ধ করে প্রিয়তমার ছোঁয়া উপভোগ করতে লাগলো তূর্ণ। ললাট পেরিয়ে ওষ্ঠ নেমে এলো নিম্ন দিকে। দু চোখের পাতা, নাকের ডগা কোমল ওষ্ঠের ছোঁয়ায় আবেশিত হলো। অতঃপর এলো সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত। একান্ত মানুষটির ওষ্ঠে কোমল ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো দুয়া। আলতো সে স্পর্শ। তেমনিভাবে ক্রন্দনে ভেঙে পড়লো মেয়েটির কোমল হৃদয়। দিশেহারা তূর্ণ দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে কোমলতম ওষ্ঠ প্রগাঢ় রূপে আয়ত্ত্ব করে নিলো। শুষে নিতে লাগলো সবটুকু দুঃখ, যাতনা, ক্লেশ! দু’জনের চোখেই নোনাজলের অস্তিত্ব বিদ্যমান। সে এক হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্ত!
•
তূর্ণ বিছানায় শুয়ে। বদ্ধ আঁখি পল্লব। কেবিনে উপস্থিত ওর বন্ধুমহল। টগর বন্ধুর নীরবতায় বিরক্ত হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্রুপের স্বরে বলে উঠলো,
” কি মিয়া? এতবছর ধরে গাড়ি চালাও। এরপরও ব্রেক কষতে শিখলা না? ধুরুম ধারুম আরেক গাড়ির লগে চু*ম্মা খাইলা? ”
চোখ মেলে তাকালো তূর্ণ। মৃদু স্বরে বললো,
” উল্টোপাল্টা কি বলছিস? যা বলেছিস নিজে শুনছিস তো?”
” অফকোর্স শুনছি। আমি কি কানে কালা? ”
তূর্ণ চোখ বন্ধ করতে করতে বললো,
” আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণর এতটাও খারাপ দিন আসেনি যে বউকে বাদ দিয়ে গাড়িকে চু মু খেতে হবে। ”
সশব্দে হেসে উঠলো বন্ধুরা। দিবা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে বললো,
” ফাটিয়ে দিয়েছিস গুরু। ”
রাজীব চোখ কুঁচকে তাকালো মেয়েটার দিকে। তার প্রেয়সী নামে পরিচিত মেয়েটি নিজের লোককে ছেড়ে বি.য়াইত্তা বন্ধুকে কিসি দিচ্ছে? হুয়াই? নিশাদ প্রশ্ন করলো,
” তূর্ণ? এবার বল তো ভাই। আসলে হয়েছিল টা কি? ”
” আমরাও জানতে চাই কি হয়েছিল মিস্টার আদ্রিয়ান?”
অপরিচিত কণ্ঠ শুনে সকলে তাকালো কেবিনের দরজায়। সেথায় দাঁড়িয়ে পুলিশ অফিসার। দানিশ তাদের স্বাগতম জানালো। ভেতরে প্রবেশ করলো অফিসার। মনিকা টুল ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। বসার জায়গা করে দিলো পুলিশকে। অফিসার সেখানেই বসলো। তূর্ণ’র অবস্থা একবার অবলোকন করে বললো,
” কেমন আছেন এখন? ”
” আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো। ” ক্ষীণ স্বরে জবাব দিলো তূর্ণ।
” গুড। আপনার জবানবন্দি নিতে চলে এলাম। আফটার অল অ্যাক্সিডেন্ট কেস। ”
মনিকা বন্ধুকে প্রশ্ন করলো,
” তূর্ণ! সব বলতে পারবি তো? প্রবলেম হচ্ছে? ”
” আ’ম ফাইন মনি। ”
স্বস্তি পেল বন্ধুরা। অফিসার এবার জিজ্ঞেস করলো,
” তো মিস্টার আদ্রিয়ান। এবার বলুন গতকাল রাতে ঠিক কি হয়েছিল? ”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে তূর্ণ থেমে থেমে ক্ষীণ স্বরে বলতে লাগলো,
” গতকাল কিছু পারিবারিক কারণে গাজীপুর গিয়েছিলাম। মামা বাড়িতে। কাজ শেষ করে রাতের বেলা ফিরছিলাম। আমি নিজেই ড্রাইভ করছিলাম। ঢাকায় চলে এসেছি। মহাসড়ক। বড় বড় যানবাহন চলাচল করছে। আমি যথেষ্ট সাবধান ছিলাম। হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। উল্টো দিক থেকে ধেয়ে এলো একটা মালবাহী ট্রাক। কেমন দৈ-ত্যকায় ভঙ্গিতে ছুটে এলো। ড্রাইভার ম.দ্যপ ছিল বোধহয়। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই অতর্কিত ভাবে আঘাত করে বসলো। মুহুর্তের মধ্যেই… ”
থামলো তূর্ণ। গণ্ডস্থল শুকিয়ে কাঠ। দিবা পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। আস্তে ধীরে পানি পান করলো তূর্ণ। অফিসার বললো,
” কোথায় কোথায় আঘাত পেয়েছেন? শুধু মাথা আর পায়েই? ”
” হাঁ। স্টিয়ারিংয়ে মাথায় আঘাত লেগেছিল। আর গাড়িতে আঘাত লাগায় আমি ভারসাম্য রাখতে পারিনি। পা এবং কোমরে প্রচুর চাপ পড়েছিল। তাই এই অবস্থা। ”
” হুম বুঝলাম। তো মিস্টার আদ্রিয়ান আপনার কি মনে হয়? এটা সাধারণ কোনো অ্যা.ক্সিডেন্ট নাকি প্রি প্লানড্? আপনার কোনো শ ত্রু আছে যে আপনাকে মা`রতে চায়? কিংবা ক্ষতি চায়? ”
তূর্ণ বন্ধুদের দিকে একপলক তাকিয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো অফিসারের পানে।
” না। এমন কেউ নেই। ”
নিশাদ বললো,
” অফিসার আমাদের জানামতে তূর্ণ’র কোনো এমন শত্রু নেই যে ওর প্রা*ণনাশের কারণ হতে পারে। আই থিংক ওই ড্রাইভার ড্রাঙ্ক ছিল। তাই আমাদের বন্ধুর এই দুরবস্থা। ”
দাঁতে দাঁত চেপে শেষোক্ত কথাটা বললো নিশাদ। অফিসার বললো,
” তাই হবে হয়তো। আমরা ইনভেস্টিগেশন চালিয়ে যাচ্ছি। তবে গাড়ির নম্বর প্লেট ব্যতিত খুঁজে পাওয়া কিছুটা মুশকিল হয়ে যাবে বটে। রাতের বেলা। ব্যস্ত সড়ক। কেউই নম্বর প্লেট দেখেনি। দেখার আগেই ট্রাক পালিয়ে গেছে। ”
দানিশ তূর্ণর দিকে তাকিয়ে বললো,
” ভাগ্যিস ওখানকার লোকেরা সময়মতো ওকে উদ্ধার করে হসপিটালে এনেছিল। নাহলে কি যে হতো! ”
অতঃপর অফিসারের দিকে তাকিয়ে বললো,
” অফিসার যে করেই হোক ওই ম*দখোরকে অ্যারেস্ট করুন। ওকে ছেড়ে দেবেন না। ”
” উই আর গিভিং আওয়ার বেস্ট। নিশ্চয়ই অপরাধী ধরা পড়বে। ”
” থ্যাংকস অফিসার। ” কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো নিশাদ।
অফিসার উঠে দাঁড়ালো। তূর্ণ’কে বললো,
” তো মিস্টার আদ্রিয়ান। আজ তাহলে আসছি। সাবধানে থাকবেন। টেক কেয়ার। ”
তূর্ণ মাথা নাড়িয়ে সালাম দিলো। সালামের জবাব দিয়ে বেরিয়ে গেল অফিসার এবং তার সঙ্গী। মনিকা তূর্ণ’কে জিজ্ঞেস করলো,
” আর ইয়্যু ওকে? ”
তূর্ণ মাথা নাড়লো। স্বস্তি পেল বন্ধুমহল।
•
আধিঁয়ার রজনী। হসপিটাল লবিতে দাঁড়িয়ে দুয়া, নাজমুল সাহেব, নিজাম সাহেব, তানজিনা, তৃষা এবং নিশাদ। দুয়া সকলের উদ্দেশ্যে বললো,
” অনেক রাত হয়েছে। তোমরা তাহলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হও। ”
নিজাম সাহেব বললেন,
” হাঁ। তোরা বাড়ি যা। আমি থেকে যাচ্ছি। ”
দুয়া আপত্তি জানালো।
” না বাবা। তুমিও বাড়ি যাও। খুব ক্লান্ত। রেস্টের প্রয়োজন। আজ আমি থাকবো। ”
নাজমুল সাহেব বললেন,
” না মা। তুইও বাড়ি যা। সারাদিন তোর ওপর কম ধকল যায়নি। বিশ্রাম দরকার। ”
নিজাম সাহেবের দিকে তাকিয়ে,
” ভাইয়া তোমরা সবাই যাও। আমি থাকছি আজ। ”
দুয়া অনুরোধের স্বরে বললো,
” চাচু প্লিজ। আজ আমি থাকতে চাই। আমায় দয়া করে যেতে বলো না। বাড়িতে মন টিকবে না। ছটফটানি হবে।”
নাজমুল সাহেব বড় শ্বাস ফেললেন। উনি বুঝতে পারলেন মেয়েটার অবস্থা।
” ঠিক আছে। তোকে যেতে হবে না। আমিও নাহয় থাকছি। একা একটা মেয়েকে ছাড়া ঠিক হবে না। তোমরা তাহলে যাও। আমি আর দুয়া মা থাকছি। ”
নিজাম সাহেব কিছু বলার পূর্বেই শোনা গেল মনিকার কণ্ঠ। সে ওদের মাঝে উপস্থিত হলো। বললো,
” আংকেল তুমি নিশ্চিন্তে বাড়ি যেতে পারো। আমি আছি এখানে। কোনো অসুবিধা হবে না। ”
কিইবা করার? সবার কথামতো ওরা সেথা হতে প্রস্থান করলো। রয়ে গেল শুধু দুয়া, নাজমুল সাহেব এবং মনিকা।
•
ঘড়ির কাঁটা তখন একের ঘরে। ওয়েটিং জোনে হেলান দিয়ে বসে নাজমুল সাহেব। হাসপাতালে উনি সহসা আসতে চান না। এখানে যে ওনার পুরনো দুঃস্মৃতি রয়েছে। যা ওনাকে সর্বদা তাড়া করে বেড়ায়। এই হাসপাতালেই তো উনি ওনার প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়েছেন। নিশির বয়স তখন মাত্র ছয়। ব্রেন টিউমারের বি-ধ্বংসী রূপে ইন্তেকাল করলেন ওনার মিসেস। সেদিন এই হাসপাতালেই ওনার চোখের সামনে সবটা শেষ হয়ে গেছিল। মাতৃহারা হলো শিশু নিশি। উনি হলেন বিপত্নীক। সেই ঘটনার পর কতগুলো বছর পেরিয়ে গেছে। চাচির মাতৃছায়ায় বড় হতে লাগলো নিশি। উনিও ব্যবসায়িক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে শুরু করলেন। ভুলে যেতে চাইলেন পুরনো সকল দুঃস্মৃতি। নিশি একসময় হয়ে উঠলো তূর্ণ, তৃষার আপন সহোদরা। তাসলিমা এবং নিজাম সাহেব সর্বদা ওকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করেছে। অনেকে তো এক দেখায় ধরেই নিতো নিশি তূর্ণ’র আপন বোন। কেউ কেউ আবার কু মানসিকতা অধিকারী। ওদের পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতো। যদিওবা তাতে ওদের কিচ্ছুটি এসে যায় না। ওরা তো জানে ওদের মন কলুষিত নয়। ওরা ভাই-বোন। তবে কেন অন্যের কুরুচিকর মন্তব্যে হবে দুঃখবোধ? পুরনো কথা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন নাজমুল সাহেব। আজো বড্ড মনে পড়ে প্রিয়তমাকে।
•
সফেদ বিছানায় নিদ্রায় শায়িত তূর্ণ। তার পাশে টুলে বসে দুয়া। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে মানুষটির পানে। যার দুষ্টু হাসিতে ছ’লকে উঠতো হৃদয়, চোখের চাহনিতে লাজে রাঙা হতো মুখশ্রী আজ সে মানুষটি হাসপাতালে শয্যাশায়ী। অসুস্থ। মলিন হয়ে উঠেছে গৌর বদন। যত্রতত্র ক্ষত। তা দেখতেই কোমল হৃদয় কেঁদে ওঠে। দিশেহারা হয়ে ওঠে অন্তঃস্থল। কোনোমতে নিজেকে ধাতস্থ করে নিলো দুয়া। পেলব হাতের মুঠোয় ভরে নিলো একান্ত সঙ্গীর হাতটি। আলতো করে হাতের পিঠে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো। অস্ফুট স্বরে বললো,
” দ্রুত সুস্থ হয়ে তোমার মাইরা’র কাছে ফিরে এসো প্রিয়। ”
চলবে.