#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৩২
বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে মোহের বাড়িটা একই রাস্তায় পড়লে বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তানিয়া। গেট খোলা দেখে মনে মনে ভেবে নেয় গিয়ে মোহের একটু খোঁজ নিয়ে আসবে। যেই ভাবা সেই কাজ। প্রধান দরজা খোলা দেখে ধীর পায়ে গিয়ে বাড়িতে ঢোকার দরজা হালকা খোলা দেখতে পায় সে। সেটির কাছাকাছি যেতেই ভেতর থেকে মিসেস সুফিয়ার কান্নাকাটি তানিয়ার কানে আসে। তানিয়া আঁতকে ওঠে। মিসেস সুফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চাদের মতো বলে যাচ্ছেন,
“আমি কিছু জানি না। তুমি আমার মেয়েটাকে এনে দাও। আমি ওকে এখনি আমার সামনে চাই। আমার কাছে এনে দাও আমার মোহকে।”
মিসেস সুফিয়ার কথাগুলো শুনে চমকায় তানিয়া। মোহের কথা ভাবতে ভাবতে আরো শুনতে পায় আজহার সাহেবের কথা।
“আমি তো বুঝতেই পারছি না কী করব। এখানে পুলিশের কাছে গিয়ে লাভও হয়ত হবে না। গ্রামে যেতে হবে। খোঁজ নিতে হবে।”
“আমি তোমাকে বারবার বলছি! ওই মন্ত্রীটা আমার মেয়ের কিছু একটা করেছে। নয়ত এতক্ষণে ও ফিরে যেত বাড়িতে। ওর কিছু একটা হয়েছে।”
“তুমি তো ওর কাছে ফোনও রাখো নি। রাখলে হয়ত যোগাযোগ করতে পারত।”
মিসেস সুফিয়া আরো ভেঙে পড়লেন। নিজেকেই দোষী বোধ করলেন। তানিয়া এবার নিজের অস্থিরতা সইতে না পেরে দরজা ঠেলে দিয়ে নিচু স্বরে বলল,
‘আসব আঙ্কেল আন্টি?”
অতি চিন্তার মাঝে মোহের মা-বাবা তানিয়ার গলা পেয়ে দরজার দিকে তাকালেন। তবে মিসেস সুফিয়ার অশ্রু ঝরানো থামছে না। আজহার সাহেব থমথমে গলায় জিজ্ঞেস করলেন,
“তানিয়া মা! তুমি এখানে?”
তানিয়া ভদ্রতার সহিত সালাম দিয়ে বলল,
“আসলে মোহের খোঁজ নিতে এসেছিলাম। আপনাদের কথাবার্তা শুনে ফেলেছি। তার জন্য দুঃখিত। মোহের কি কিছু হয়েছে? কোনো সমস্যা?”
আজহার সাহেবের মুখটা আরো মলিন হলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
“আমার মেয়েটা আজকে সকালে নাকি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল। মাথা ফেটে গিয়েছিল তাতে একটা মহিলা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারপর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।”
তানিয়া বিস্মিত হয়ে শুধায়,
“সে কী! মোহের চেনা কেউ যায়নি সাথে?”
“গেলে তো চিন্তা ছিল না। মোহকে এমনি গ্রামের মানুষ পছন্দ করে না। তাই হয়ত কেউ যায়নি। এখন ওর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ও বাড়ি ফিরে নি। কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।”
তানিয়ার মুখের ভঙ্গিও পাল্টে গেল এমন খবর শুনে। মুখ ভার হয়ে গেল তার। মিসেস সুফিয়া নিজের স্বামীর উদ্দেশ্যে বললেন,
“আমরা আর কতক্ষণ এখানে থাকব? চলো গ্রামে। এখনি চলো।”
তানিয়া ইতস্ততবোধ করে বলল,
“আমিও আসছি আঙ্কেল, আন্টি! মোহের খোঁজ পেলে জানাবেন দয়া করে। চিন্তায় থাকব।”
তানিয়া বেরিয়ে এলো। সে যতদূর জানে, মোহ এতটা দায়িত্বহীন মেয়ে নয়। সজ্ঞানে থাকলে সে নিশ্চিত নিজের পরিবারকে এতটা চিন্তায় ফেলবে না। তবে কী হলো মেয়েটার?
আবারও মস্তিষ্ক জুড়ে খেলে গেল দুঃস্বপ্ন। সেই দুরাকাঙ্ক্ষার চোটে কাঁপুনি দিয়ে উঠল শরীর। চোখ দুটো জোর করে মেলে চারিপাশে অস্পষ্ট দেখল মোহ। মাথায় তখন অসম্ভব য;ন্ত্রণা। মাথায় হাত দিতে গিয়ে সে বুঝল তার হাত নড়ানো যাচ্ছে না। সে চেষ্টা করল বারংবার। অবশেষে তার অচল মস্তিষ্ক বুঝে নিলো তার হাত বাঁধা শক্ত করে। শুধু হাত নয়। পা-মুখ সহ বাঁধা। বিনা বাতাসে ঘেমে একাকার হয়ে গেছে শরীর। দুঃস্বপ্ন যেন দ্বিতীয় বারের মতো সত্যি হয়ে ধরা দিলো মোহের বাস্তবে। আতঙ্কে শিউরে উঠল গায়ের লোম, দুচোখে খুঁজতে থাকল বাঁচার উপায়। আশেপাশে কেউ নেই। তার মাথার ঠিক উপরে শুধু কম হোয়াটের টিমটিমে লাইট জ্বলছে। তাকে ফেলে রাখা হয়েছে একটা ময়লাযুক্ত মেঝেতে। প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে উড়ছে ময়লাগুলো। মোহ মুখ থেকে আওয়াজ বের করতে থাকল। ছটফটিয়ে নিজের হাতের বাঁধন খোলার চেষ্টা করল। ভয়ে অবশ হয়ে এলো শরীর। চোখ দিয়ে বেরিয়ে এলো পানি। কতক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়েছে তার জানা নেই। আচ্ছা, ইথান কি তাকে ছাড়া কান্নাকাটি করছে? মা-বাবা কি জেনে গেছে সে নিখোঁজ? এই ভেবে আরো বিপাকে পড়ল মোহ। কপালের পাশে টনটনে ব্যথায় মনে পড়ল তার জ্ঞান হারানোর কথা। সে এখন উপলব্ধি করতে পারল ওই কালো বোরখা পরিহিত মহিলাটির চক্রান্ত। ওই কাগজের গন্ধ তার জ্ঞান হারাতে বাদ্ধ করেছে। বহু চেষ্টার পরেও যখন নিজের বাঁধন খোলা হলো না অশ্রু আপনাআপনি বেরিয়ে এলো মোহের। সে যে বাঁচতে চায়। মনে এক প্রশ্ন এলো। এই কি/ডন্যাপিং পূর্ব পরিকল্পিত? কেন এই পরিকল্পনা?
বাড়ি ফিরে এসে চিন্তিত তানিয়া নিজের ঘরে প্রবেশ করতেই তার ফোন বেজে ওঠে। চকিতে তাকিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই দেখল সেখানে লেখা ‘মি. জুনিয়র’। সৌমিত্রের কল দেখে কিছুটা অবাক হয়েই কল রিসিভ করল তানিয়া। কোনোপ্রকার হাই হ্যালো ব্যতীত সৌমিত্র সরাসরি বলে বসল,
“মিস. গোলাপি! সামান্য রুমাল সুন্দর করে ধুয়েও দিতে পারেন না? বাড়ির আদরের দুলালি নিশ্চয়? নাকি মেয়েদের মেকআপ আমার রুমালে মুছে নিয়েছেন।”
হঠাৎ এসব কথা শুনেই তানিয়ার কপালে কিঞ্চিৎ ভাঁজ পড়ল। বলল,
“মানে কী?”
“মানেটা এই যে রুমালের একটা জায়গায় দাগ থেকে গিয়েছে।”
“সে কী! আমি যে এত সুন্দর করে ধুয়ে দিলাম। যাকগে, মানুষ মাত্রই ভুল। এখন কি আমাকে আবার রুমাল পরিষ্কার করে দিতে হবে?”
সৌমিত্র এক গাল হেসে দিয়ে বলে,
“তা অবশ্য না। আমার তো মনে হয় আমার রুমাল আপনার কাঁদা মাখা মুখ পছন্দ করেছে। তাই কাঁদার দাগ রেখে দিয়েছে।”
তানিয়া ভ্রু কুঁচকে মুখ বাঁকিয়ে বলে,
“যত্তসব আজগুবি কথা!”
“আমার কথা এমনিতেও সকলের আজগুবি মনে হয়। পরে মিলে যায় কথাগুলো। ওইযে, বলে না? গরীবের কথা বাসী হলেও সত্যি হয়।”
এই কথাটা যেন তানিয়ার কানে পৌঁছায় না। অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছে সে। মনে শুধু বান্ধবীর চিন্তা ঘুরঘুর করছে। অপরদিকে উত্তর না পেয়ে সৌমিত্র গলা খাঁকারি দিলো।
“মিস গোলাপি! লাইনে আছেন? শুনতে পাচ্ছেন?”
তানিয়া হকচকিয়ে উঠে বলে,
“হুঁ, হুঁ। বলুন?”
“মনে হচ্ছে কারোর চিন্তায় গভীর মগ্ন ছিলেন?”
তানিয়া প্রথমে এড়িয়ে যেতে চায়।
“না তেমন কিছু না।”
“বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া হয়েছে বুঝি?”
তানিয়া এবার রাগে তেতে উঠে বলে,
“সবসময় প্রেমআলাপ ব্যতীত মাথায় অন্য কথা আসে না তাই না? আমি মোহের কথা চিন্তা করছিলাম। আচ্ছা, আপনার ভাই তো তার গ্রামের বাড়ির এড্রেস নিলো। তারপর কি সেখানে গিয়েছিল?”
সৌমিত্র অবাক হওয়ার ভান ধরে বলে ওঠে,
“গিয়েছিল মানে? সেবাযত্ন থেকে শুরু করে লাঠির বাড়ি সব খেয়ে এসেছে। কিন্তু এ কথা কেন? কিছু হয়েছে নাকি?”
“মোহকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে নাকি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল রাস্তায়। এক মহিলা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার নাম করে কোথায় গিয়েছে কেউ জানে না। আঙ্কেল আন্টি পাগল হয়ে যাচ্ছে! ওদিকে বাচ্চা ছেলে ইথানের কী অবস্থা কে জানে।”
সৌমিত্র হতভম্ব হলো। বিস্ময়ে মুখ থেকে কথা বের হলো না কিছু সময়। কিছুটা সময় পর জোরে বলে ওঠে,
“কী? এটা সত্যি? কালকেই দেখা হয়েছিল। আজকে সকালেই ওকে কে কিড/ন্যাপ করবে?”
তানিয়া একটু ইতস্তত বোধ করে বলল,
“জানি না। তবে আন্টি বারবার আপনার বাবার কথাই বলছিলেন। কারণ মোহের ঝামেলা একমাত্র উনার সাথে বোধহয়।”
সৌমিত্র আর কথা বলতে পারল না। বলার মতো কোনো অক্ষর পেল না। ফোন বিছানায় ফেলে ছুটল স্বচ্ছের ঘরে।
বদ্ধ ঘরে পড়ে থাকা মোহ নিজেকে শান্ত করল। চোখ বুজল। নিজের বাবা আজহার সাহেবের মুখটি ভেসে উঠল। তিনি একসময় মোহকে বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর কোনো বিপদই কঠিন নয়। বিপদ থেকে চাইলেই বেরিয়ে আসা যায় যদি সে ঠাণ্ডা মাথায় চেষ্টা করে। বিপদের সময় ভয় মানুষকে গ্রাস করে। এই ভয়টা যে কাটাতে পারবে, সে বিপদও কাটাতে পারবে।’
নিজের উত্তেজনা কমিয়ে আনে মোহ। নিজের মনে সাহসকে জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করে। তৎক্ষনাৎ কর্ণকুহরে ভেসে আসে ক্যাচক্যাচ আওয়াজ। ওমনি চোখ বন্ধ করে মোহ। কারোর হাঁটা চলা এবং তার উপস্থিতি উপলব্ধি করে নিজের শ্বাসপ্রশ্বাস আঁটকে নেয় সে। মনে আঁটে কঠিন পরিকল্পনা।
ইয়াকীন এসে মোহের সামনে বরাবর বসে। ভালো করে একবার পরখ করে নেয় বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মেয়েটিকে। বিড়বিড়িয়ে বলে,
“এতক্ষণে তো জ্ঞান ফেরার কথা! কড়া কিছু তো দেওয়া হয়নি।”
মোহের মুখের কাপড় অনেকটা নেমে গেছে নিচে। সেটা খেয়াল করে ভালো করে বাঁধতে গেলেই ইয়াকীন খেয়াল করে মোহের গরম শ্বাস পড়ছে না। আঁতকে ওঠে সে। চোখ বড়ো বড়ো করে মোহের দিকে একবার তাকিয়ে ফের নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখতে গেলে একই অবস্থা দেখে মাথায় হাত পড়ে তার।
“এখনো সাহেব কী করবে এই মেয়েটারে সেটা বলেন নাই। কল উঠাইতেছেন না। এর মধ্যেই মেয়েটার উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায় তাহলে…”
ইয়াকীন বিভ্রান্ত হয়ে পরে। পরক্ষণেই মনে হয় বিষয়টা ভালো করে চেক করে দেখা উচিত। তার জন্য হাতের পার্লস পরীক্ষা করতে হবে। মোহের হাত ধরতে গিয়ে ইয়াকীনের মোহের হাতের বাঁধন খোলার প্রয়োজন পড়ে। নিজের হাতের বাঁধন খোলা হচ্ছে জেনেই মোহ সুযোগ পেয়ে গেল। আগপাছ চিন্তা না করেই চোখ মেলেই ইয়াকীনের দিকে পা দিয়ে আক্র/মণ করে বসল। লা/থি দিয়ে ফেলল ইয়াকীনের প্রধান অঙ্গে সজোরে। ইয়াকীন য/ন্ত্রণায় চিৎকার দিতেই যেন ভুলে গেল। ছিটকে গিয়ে একপাশে পড়ে থেকে ব্যথায় ছটফট করতে আরম্ভ করে। সেই সুযোগে মোহ নিজের হাত দিয়ে তড়িঘড়ি করে নিজের পায়ের দড়ি খুলে ফেলে। দুর্বল শরীরে কোনোরকমে দাঁড়িয়ে ব্যথায় কাতর ইয়াকীনের দিকে তাকায়। উপুড় হয়ে পড়ে থাকা ইয়াকীনের গলায় নিজের হাতে থাকা দড়ি দিয়ে ফাঁ/স দিয়ে ধরে এবং তার পিঠে এক পা তুলে দেয়। গলায় দ/ড়ির ফাঁ/সে অবস্থা বেগতিক হয় ইয়াকীনের। মোহ তীব্র ক্ষোভ ঢেলে শুধায়,
“আমাকে কিড/ন্যাপ করার কারণ কী? এটা কিসের পরিকল্পনা? কেউ আমাকে কিড/ন্যাপ করতে আদেশ করেছিল? নাকি অন্য উদ্দেশ্যে ধরে আনা হয়েছে?”
ইয়াকীন হাঁপাতে হাঁপাতে ওঠার চেষ্টা করে হিসহিসিয়ে মোহকে বলে,
“ছাড় আমাকে।”
“ছাড়ব না। যদি আমাকে সত্যিটা বলা না হয় তবে আমি ছাড়ব না। তোকে ফাঁ/স দিয়ে মে/রে রেখে যাব।”
বলেই মোহ আরো শক্ত করে দ/ড়ি চেপে ধরে ইয়াকীনের গলায়। নিজেকে ছাড়াতে গিয়েও যখন ইয়াকীন ব্যর্থ হয়, দম বন্ধ হয় তখনি অস্পষ্ট কণ্ঠে বলে,
“টাকা…টাকার জন্য এনেছি তোকে।”
মোহের বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হয়না এ কথা।
“টাকা? টাকার জন্য যদি তুলতে হয় তবে তোরা বড়োলোকদের কিড/ন্যাপ করতি। আমাকে নয়। আর যদি কথা হয় খারাপ উদ্দেশ্যের তাহলে এতক্ষণে সেটা হাসিল করে ফেলা যেত যেহেতু আমি অবচেতন ছিলাম। তোদের উদ্দেশ্য অন্যকিছু। বলবি নাকি ম;রবি?”
ইয়াকীন ছটফটিয়ে বলে,
“মন্ত্রী সাহেব বলেছে তোকে তুলে আনতে। ছাড় এখন আমাকে বাঁচতে দে আমাকে। আমি ম/রে যাচ্ছি।”
মোহের সন্দেহ সত্যি হলো। চোখ বড়ো বড়ো করে চেয়ে রইল ইয়াকীনের দিকে। তবে সে ছাড়ল না ইয়াকীনকে অন্য পা দিয়ে সজোরে আ/ঘাত করে ইয়াকীনের মাথায়। শক্ত মেঝেতে মাথা লেগে সেখানেই মাথা ফে/টে গিয়ে র;ক্ত ঝরে ইয়াকীনের। গলায় থাকা ফাঁ/সের চোটে জ্ঞান হারায় সে। মোহ তাকে ছাড়ে। দৌড়ে দরজার পানে ছুটে যায়। আবারও কিছু মনে করে ফিরে আসে। বিড়বিড়িয়ে নিজে নিজেকে বলে,
“এত বড়ো সুযোগ পেয়ে আমি হাতছাড়া করব না।”
লোকাল বাসে চেপে যাচ্ছে শৌভিক আর তার সঙ্গীটা। তার গাড়িটা বেশ পুরোনো হয়েছে। মাঝে মাঝেই নষ্ট হয়। অতিরিক্ত ভীড়ের চোটে একপ্রকার হিমশিম খাচ্ছে শৌভিক। এরই মাঝে তার চোখ এড়ায় না তার সামনে থাকা এক যুবক বারংবার তার পাশে থাকা সিটের মেয়ের পিঠে হাত দিয়ে যাচ্ছে ইচ্ছাকৃত। মেয়েটি অস্বস্তিতে ভুগছে। সরে যাচ্ছে তবে জায়গা পাচ্ছে না। মুখে কিছু বলতেও পারছে না। হয়ত ভয়ে নয়ত লজ্জায়! এবার বাস ব্রেক কষলে ছেলেটি আবারও ইচ্ছেকৃতই মেয়েটার কাঁধ জোরে চেপে ধরলে শৌভিকের কান গরম হয়ে যায় মারা/ত্মক রাগে। ছেলেটিকে সামনে ফিরিয়ে নিজের হাতের পুরো শক্তি দিয়ে কষিয়ে থা;প্পড় বসায় সে। ব্যথায় যেন গাল জ্বলে যায় ছেলেটির। ঠোঁটের কোণ ফেটে বেরিয়ে আসে তাজা র/ক্ত। শৌভিক থামে না। ছেলেটির কলার ধরে বলে,
“জানো/য়ার শা/লা! কী পাইছিস ওই মেয়েটাকে? বাড়িতে বোনের সাথেও একই আচরণ করিস?”
সিটে থাকা মেয়েটি ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। চলন্ত বাসে সৃষ্টি হয় ঝামেলা। মেয়েটি দাঁড়িয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে শৌভিককে বলে,
“লোকটা আমার সাথে তখন থেকে অশ্লী/লতা করার চেষ্টা করছিল ভাইয়া। লজ্জায় মুখ থেকে কথা বের হচ্ছিল না।”
শৌভিক তেতে উঠে বলে,
“কথা বের করতে কে বলেছে আপনাকে? আপনার পায়ে জুতো নেই? সেটা উঠিয়ে চালাতে শুরু করবেন। জুতো শুধু পায়ে দেওয়ার জন্য হয় না। মাঝে মাঝে শা/স্তি দিতেও ব্যবহৃত হয়।”
চলবে…
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]