#মন_তুমি_ছুুয়ে_দেখো_না
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ১৩
চিন্তায় অস্থির অথৈ।চিন্তা করতে করতে আজ সারাপথ হেটে হেটে এসেছে ভার্সিটিতে।অবশ্য ভার্সিটি ওদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে নাহ।হেটে যেতে পনেরো মিনিট সময় লাগে।অথৈ দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে ভার্সিটিতে ঢুকল।প্রবেশ করতেই সবার সবার আগে নজর গেল বাইকে বসে থাকা আড্ডারত রুদ্রিকের দিকে।রুদ্রিক আজ সম্পূর্ণ কালো রূপে নিজেকে রাঙিয়ে এসেছে।ব্লাক টিশার্ট, তার উপর ব্লাক শার্ট পরেছে,সাথে ব্লাক ডেনিম প্যান্ট।অনেক আকর্ষনীয় লাগছে রুদ্রিককে।কথার তালে তালে যখন হুট করে হাত দ্বারা ব্রাশ করে চুলে।ওই দৃশ্যটুকু দেখে গলা শুকিয়ে যায় অথৈয়ের।আচমকা রুদ্রিক ওর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিলো।এরপর ওকে চোখ টিপে দিল।অথৈ যেন হার্ড এট্যাক করে বসল এটা দেখে।দ্রুত চোখ সরিয়ে হুরমুর করে দৌড় দিয়ে তৎক্ষনাত সেই স্থান ত্যাগ করল।চরম অস’ভ্য লোকটা।কাল কি এক কান্ড ঘটিয়ে চলে গেল।অথৈয়ের স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘন্টা লেগেছে।তারপরেও রাতে ঘুমোতে পারেনি।চোখ বন্ধ করলেই শুধু রুদ্রিকের দেওয়া চুমুর দৃশ্যটুক বার বার চোখের পাতায় ভেসে উঠছিল।এভাবে কি ঘুমানো যায়?বজ্জা’ত লোক।ওকে এইভাবে ছুটতে দেখে মাথা নিচু করে ঠোঁট কামড়ে হাসল রুদ্রিক।ওকে এইভাবে হাসতে দেখে নীল বলে উঠল,
‘ কিরে হাসছিস কেন?’
রুদ্রিক বলে,
‘ এমনি।কিছু না।তা তোরা বল।কোথায় যেন ট্যুরে যেতে চাচ্ছিস?’
জেনি সবসময়ের মতো বলল,
‘ কক্সবাজার যাই?সেখানে অনেক মজা হবে।’
সিয়াও জেনির কথায় সহমত পোষণ করল,
‘ হ্যা জেনি ঠিক বলছে।আমরা কক্সবাজার যেতে পারি।’
অনিক বিরবির করে বলে,
‘ জেনির চামচি কোথাকার।জেনি যা বলে তার সাথে সাথে শুধু মাথা নাড়ায়।জাস্ট অসহ্য।’
সিয়া ভ্রু-কুচকালো অনিককে এইভাবে বিরবির করতে দেখে।প্রশ্ন করে,
‘ আপনি কি কিছু বলছেন আমায়?’
অনিক জোড়পূর্বক হেসে বলে,
‘ আরেহ কি বলেন এসব?আপনাদের কিছু বলার সাধ্য কি আমার আছে?আমার গর্দান না কে’টে ফেলবেন? ‘
সিয়া মুখ ভেংচি কাটলো।বাতাস বইছে সেই বাতাসের তালে উড়ছে মারিয়ার চুল।নীলের বেশ ভালো লাগছে।নীল বাইকে বসে আছে আর ওর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মারিয়া।সেদিন মারিয়াকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলো ঠিকই নীল।তবে সুযোগ হাতছাড়া করেনি।রুদ্রিক,ইহান,অনিক,সাফাত ওরা মিলে সব সাঁজিয়ে গুছিয়ে রেখেছিল একটা রেস্টুরেন্ট।সেখানে নীল মারিয়াকে নিয়ে গিয়েই প্রপোজ করেছিলো।মারিয়াও এক্সেপ্ট করে নিয়েছিলো। কারন ও নিজেও তো নীলকে ভালোবাসে।তবে এর বিনিময়ে নীলের পকেট পুরো ফাঁকা করে দিয়েছিলো ওরা।ওদের প্রেম হয়ে যাওয়ার কারনে ট্রিট দিতে হয়েছিলো।নীল মারিয়ার দিকে মুচঁকি হেসে তাকিয়ে আছে।মারিয়াকে দেখছে মন ভরে।মেয়েটা ক্ষণে ক্ষণে বিরক্ত হচ্ছে।বাতাসে ওরা খোলা চুলগুলো বেশ বিরক্ত করছে ওকে।নীলের ভালোলাগে মারিয়াকে খোলা চুলে দেখতে।কিন্তু মেয়েটা বিরক্ত হচ্ছে।এইজন্যে নিজের হাতে পরে থাকা রাবার ব্যানটা দিয়ে মারিয়ার চুলগুলো খুব যত্ন সহকারে বেধে দেয়।মারিয়া প্রথমে অবাক হয়েছিলো।পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে যায় মেয়েটা।আর ওর লজ্জারাঙা মুখটা নীল তৃপ্তি নিয়ে দেখে।এদিকে ওদের এমন রোমান্টিক মুহূর্ত দেখে অনিক হা হুতাশ করে উঠল,
‘ আজ সিংগেল বলে তোরা এইসব করে আমাকে এইভাবে হিংসার আগুনে ছা’রখার করে দিবি?এখানে যে আমরা কতোগুলো সিংগেল মানুষ আছি তোর চোখে পরে নাহ?’
সবাই হেসে দিল অনিকের এমন কথায়।নীল বলল,
‘ তোকে তো কেউ বলেনি হিংসের আগুনে জ্ব’লতে?তুই কেন একটা মেয়ে পটিয়ে ফেলছিস নাহ।’
‘ আরে তোর কপাল ভালো দেখে কি আমাদের কপালও এমন ভালো হবে তার গ্যারান্টি কি?আমাদের মারিয়া বেশ শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে।শুধু চলাফেরা করে দুইটা অশান্ত মেয়ের সাথে।তাতে কি হয়েছে?ও ওই দুইটা থেকে আলাদা।তুই অনেক লাকি।আর সা’লা আমি প্রেম করতে গেলে আমার কপালে আসবে মেক-আপের ফ্যাক্টরি,ন্যাকার উপর পিএইচডি করা।যে কথায় কথায় খালি বলবে, বাবু খাইছ?বাবু খাইছ? জাস্ট অসহ্য,অসহ্য।আমার এমন ন্যাকা মেয়েদের একটুও পছন্দ না।তাই তো দেখিস নাই সিয়ার সাথে ব্রেক-আপ করে নিয়েছি।’
লাস্টের কথাটা বলে অনিক নিজেই হতভম্ব হয়ে যায়।কথার তালে তালে মুখ ফোসকে বলে ফেলেছে।নাহলে এভাবে ও বলতে চায়নি।এদিকে সিয়ার চোখে জল টইটুম্বুর করছে।শেষে নিজের কান্না লুকাতে না পেরে।বহু কষ্টে শুধু এটুকু বলল,
‘ জেনি,মারিয়া আমি ক্লাসে যাচ্ছি।তোরা চলে আসিস।’
সিয়া উল্টো ঘুরে দ্রুত পায়ে চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল।সিয়াকে এইভাবে যেতে দেখে সবারই মন খারাপ হয়ে গিয়েছে।ইহান থমথমে মুখে বলল,
‘ ব্রেক-আপ করে ফেলেছিস ভালো কথা।তাহলে কথায় কথায় সেই বিষয় টেনে নিয়ে আসিস কেন?দেখলি তো মেয়েটা কিভাবে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল।’
অনিক মাথা নিচু করে আছে।রুদ্রিক গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
‘ তোর এভাবে বলা একদম ঠিক হয়নি।তুই ব্রেক-আপ করে নিয়েছিস।এইজন্যে আমরা কেউ কিছু বলিনি।কারন এটা তোর ব্যাক্তিগত বিষয়।যেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করতে চায়নি।তবে একটা বিষয় আমরা সবাই জানি এমনকি তুইও জানিস যে সিয়া সত্যিই তোকে ভালোবেসেছিলো।ইনফেক্ট এখনো ভালোবাসে। তুই যেসব কারনে ওর সাথে ব্রেক-আপ করেছিলি। মেয়েটা হাজারবার বলেছিল ও নিজেকে বদলে নেবে।তাও যেন তুই ওকে ছেড়ে না যাস।আমরাও বুঝিয়ে ছিলাম।কিন্তু তুই মানিস নি।মেয়েটাকে কতোটা হার্ট করে তুই ব্রেক-আপ করে দিলি।’
সাফাত রুদ্রিকের কথায় সহমত পোষণ করে বলে,
‘ রুদ্রিক একদম ঠিক বলছে অনিক।আর তাছাড়া তুই যেসব কথা বলে আজ ওকে কষ্ট দিলি।ও কি এখন তা করে?ও সেদিনের পর থেকে নিজেকে বদলে নিয়েছে।ও এখন আর আগের সিয়া নেই।ওয়েস্টার্ন বাদ দিয়ে এখন শালীন পোষাক পরে।আগে যে মেয়ে সবসময় মেক-আপের আস্তরণ মুখে মেখে থাকত।সে এখন চোখে একটুখানি কাজল আর ঠোঁটে একটু লিপজেল ছাড়া কিছুই দেয়নাহ।নিজের কথাবার্তা, চালচলন সব বদলে ফেলেছে।আর তাকেই কিনা তুই এইভাবে কথায় কথায় পুরোনো কথা তুলে কষ্ট দিস।’
মারিয়া করুণ গলায় বলে,
‘ ও তোকে এখনও অনেক ভালোবাসে ভাইয়া।মেয়েটা রাতে ঠিকমতো ঘুমায় না।প্রতিটা রাত তোর জন্যে কেঁদে বালিশ ভিজায়।যার একমাত্র সাক্ষি আমি।’
অনিক সবার কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল।সবার বলা প্রতিটা কথা ভীষণভাবে ওর হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে।ও যে কাকে কি বলে? কিভাবে জবাব দিবে ভেবে পাচ্ছে না।আসলে জনাব দেওয়ার মতো কোনো ভাষা নেই ওর কাছে।তবে কি ও সত্যিই অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলল সিয়াকে?মেয়েটার মন ভেঙে দিয়ে অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছে ও।অনুশোচনায় হৃদয় পু’ড়ে গেল অনিকের।সহ্য করতে না পেরে সেখান থেকে হনহন করে হেটে চলে যায়।ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সবাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে।যারা মন থেকে বুঝতে চায়না।তাদের হাজার বুঝিয়েও লাভ নেই।তাই বাকি কেউ আর ঘাটলো না।সবটা ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে দিল।
_____________
এদিকে মাঠের মাঝখানে গোল হয়ে বসে আছে অথৈ,রিধি,পিহু,প্রিয়ান আর আহিদ।অথৈ রাগি চোখে সবার দিকে তাকিয়ে।সবাই দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে অথৈয়ের দিকে।অথৈ রাগি গলায় বলে উঠল,
‘ তোদের সবার মরা একসাথেই মরছিলো কালকে।আমি ফোন করে বললাম যে আমায় কাল দেখতে আসবে।আর তোদের সবগুলোর একসাথেই এক এক জায়গায় যেতে হোলো।’
পিহু কিছু বলতে নিবে অথৈ তার আগেই ওকে ধমকে উঠল,
‘ তুই তো কোনো কথাই বলবি না। তোকে কতোগুলো ফোন করেছি আমি।একটাও রিসিভ করেছিস?শেষে ফোনটা বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলি।’
পিহু মাথা নিচু করে মিনমিন করে বলে,
‘ সে তো আমি প্রিয়ান আর আহিদের উপর রাগ করে এমন করেছি।শয়তানগুলো আমাকে না জানিয়ে ঘুরতে চলে গিয়েছে।’
‘ হ্যা তাই জন্যে তুই আমার কল পিক করবি নাহ।’
পিহু কোনো জবাব দিলো নাহ।
আহিদ বলে উঠল,
‘ আরে তুই এতো রেগে আছিস কেন?দেখতেই তো এসেছে জাস্ট তোকে।বিয়েতো আর হয়ে যায়নি তাই নাহ?তোর বিয়ের সময় দেখিস আমরা একমাস আগেই তোর বাড়িতে এসে হাজির হোবো।তাছাড়া আংকেল যে তোকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিবে না তা আমরা জানি।’
‘ হ্যা রিধি।আহিদ ঠিক বলছে।তুই এমন রাগ করছিস কেন?আর দেখতে তো আমাকেও এসেছিলো দু একবার।মেয়েরা বড়ো হলে এমন হয়ে থাকে।’ বলল রিধি।
ওদের কথায় যেন তড়তড়িয়ে অথৈয়ের রাগ বারছে।ওরা কেউ অথৈয়ের কথা সিরিয়াসলি নিচ্ছে না।অথৈ সবার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল,
‘ কাল শুধু দেখতে আসলে আমি রাগ করতাম না।ব্যাপারটা তোরাও জানিস।’
‘ তাহলে কেন রেগে আছিস?’
আহিদের প্রশ্নে অথৈ কিছুক্ষণ চুপ থাকলো।তারপর দূরে মাঠের ওইপ্রান্তে আড্ডারত রুদ্রিকের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।ঠান্ডা গলায় বলল,
‘ কারন কাল আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে।’
প্রিয়ান পানি খাচ্ছিলো।অথৈয়ের মুখে বিয়ের কথা শুনে ওর নাকে মুখে পানি উঠে যায়।ওর সামনে ছিলো পিহু ওর মুখের পানি সব গিয়ে পরে পিহুর উপর।এদিকে পিহু বেচার প্রিয়ানের এমন কান্ডে কোনো রিয়েকশনই দিলো নাহ।আসলে ও রিয়েকশন দিতে ভুলে গিয়েছে।সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ওইভাবেই একে-অপরের মুখের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করল।এরপর হুট করে সবাই একসাথে হেসে উঠল।ওদের হঠাৎ এমন হাসিতে অথৈ ভড়কে যায়।পিহুর হাসতে হাসতে চোখের কোণে জল জমে গিয়েছে।ও বহুকষ্টে হাসি থামিয়ে বলে,
‘ অথৈ দেখ এমন ফাউল মজা করিস না রে।হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যাথা করছে।’
রিধিও হাসতে হাসতে বলে,
‘ তুই বিয়ে করে নিয়েছিস।অন্তত এটা নিয়ে আমাদের সাথে মজা করিস নাহ।আমরা আমাদের হাসি থামাতে পারছি না।’
‘ তুই আর বিয়ে। ভাই আমি শেষ।’ বলল আহিদ।
এদিকে প্রিয়ান হাসির কারনে কিছু বলতেও পারছে নাহ।
অথৈ ওদের অহেতুক হাসি দেখে উঠে দাঁড়ালো।রাগে ওর সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।ও কি একটা সিরিয়াস কথা বলল আর বেয়া’দবগুলো কিভাবে হুটোপুটি করে হাসছে।অথৈ রাগে প্রায় চিৎকার করে বলে উঠল,
‘ আমি সত্যি বলছি আমার কাল বিয়ে হয়ে গিয়েছে।আল্লাহ্’র কসম করে বললাম।আমি মিথ্যে বলছি না।সত্যি আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে।’
বলতে বলতে অথৈয়ের চোখ জলে ভড়ে উঠল।বন্ধুদের ছাড়া এইভাবে হুট করে বিয়েটা হয়ে গিয়েছে।সেটা ভাবলেই ওর কষ্টে বুক ফে’টে যায়।
এদিকে এইবার যেন ওদের চারজনের টনক নড়ল।অথৈ যে সত্যি সত্যি মিথ্যে বলছে না সেটা বিশ্বাস করল ওরা।চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ওরা।হঠাৎ ধরাম করে কিছু একটা পরার শব্দ হতেই ওদের হুশ আসে।কিসের শব্দ হোলো সেটা বোঝার জন্যে শব্দের উৎসের দিকে তাকিয়ে দেখে প্রিয়ান মাঠের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পরে গিয়েছে।অথৈয়ের মুখে এমন একটা কথা শুনে বেচারা সহ্য করতে পারিনি।তাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।রিধি শুকনো ঢোক গিলল।ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে আহিদের কাছে দিয়ে বলে,
‘ পানি ছিটিয়ে দে ওর চোখে মুখে।জ্ঞান ফেরা ওর।’
পিহু রাগে দুঃখে অজ্ঞান হয়ে পরে থাকা প্রিয়ানকে ধাক্কা মেরে বলল,
‘ এই বা*টারে মন চাইতাছে ঠাটাইয়া দুইডা থা’ব্রা মারি।এমন সিরিয়াস মুহূর্ত এইটা এমন অজ্ঞান হয় কিভাবে?’
আহিদ প্রিয়ানের চোখে মুখে পানির ছিটা দিয়ে বলল,
‘ ও এমন ড্যাঞ্জারাস সিরিয়াস কথা শুনেই জ্ঞান হারিয়েছে পিহু।’
পানি টানি খাইয়ে প্রিয়ানের জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হোলো।ও জ্ঞান ফিরার পর ও এখনও হা করে তাকিয়ে আছে অথৈয়ের দিকে।বেচারার এখনও কষ্ট হচ্ছে অথৈয়ের কথাটা বিশ্বাস করতে।অতি কষ্টে বেচারা চুপ করে আছে।পিহু মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।রিতিমতো সবাই প্রচন্ড শক পেয়েছে।
এদিকে রিধি উঠে গিয়ে ধরে অথৈকে ওদের পাশে বসালো।অথৈয়ের থমথমে মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,
‘ কিভাবে কি হোলো অথৈ?আর বিয়েটা কার সাথে হোলো?ছেলের ছবি টবি আছে?থাকলে দেখা।’
অথৈ গম্ভীর মুখে জবাব দেয়,
‘ উনাকে তোরা চিনিস।খুব ভালোভাবেই চিনিস।’
অথৈয়ের কথায় সবাই আবার একে-অপরের দিকে তাকালো।আহিদ জিজ্ঞেস করল,
‘ কে সে অথৈ?কে সে যাকে আমরা চিনি?’
অথৈ সবার দিকে একপলক তাকালো।পর পর দু তিনটা ঢোক গিলল। প্রথম কথাটাই এদের হজম করতে এতো কষ্ট হচ্ছে।তাহলে রুদ্রিকই যে ওর স্বামী সেটা শুনলে না জানি কি করবে।অথৈ কে চুপ থাকতে দেখে পিহু অধৈর্য হয়ে বলে,
‘ কি হোলো বলছিস না কেন?কে সে।’
অথৈ দীর্ঘশ্বাস ফেলল।তারপর বলে উঠল,
‘ সে আর কেউ না।ইহান ভাইয়ার বেষ্টফ্রেন্ড আরিহান রুদ্রিক মির্জা।’
অথৈয়ের কথাটা বলতে দেরি।প্রিয়ানের আবার অজ্ঞান হতে দেরি নেই।বেচারা অজ্ঞান হয়ে চিটপটাং হয়ে পরে গিয়েছে।
#চলবে____________
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন।কাল আপনাদের সবার এতো ভালো রেস্পন্স পেয়ে।খুশি হয়ে আজ আরেক পর্ব দিয়ে দিয়েছি।আজও সবাই সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করবেন।