তোর_শহর_রাঙাতে_এসেছি🤍 #ইশা_আহমেদ #পর্ব_৩

0
399

#তোর_শহর_রাঙাতে_এসেছি🤍
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৩

৮.
তানাজ একটা ফ্রক নিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে বসে আছে।তানিম প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে রুমে ঢুকলো।রুমে ঢুকেই দেখে তানাজ বসে আছে।আর তার বিয়ের সময় পরনের লেহেঙ্গাটা ফ্লোরে পরে আছে।তানিম বিরক্তিতে চোখ মুখ কুচকায়।তানিম ফ্রেশ হয়ে আসে একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার পরে।তানাজ হা করে তাকিয়ে আছে।কতো সুন্দর লাগছে তার বরকে।

তানাজকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বিরক্ত হয় তানিম।সে তানাজকে ধমক দিয়ে বলে,,,,”এই মেয়ে তুমি এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো আর নিজের লেহেঙ্গা এমন ফ্লোরে ফেলে রেখেছো কেনো?”

তানাজ উঠে দাঁড়িয়ে তানিমকে বলে,,,,”তো কি আপনার মাথায় রাখবো।ধমক কেনো দিলেন হ্যা”

তানিম কপাল চাপড়ায় নিজের।সে ভুলেই গেছিলো সে তানাজের মতো একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে।সে নিজেই লেহেঙ্গাটা কার্বাডে রেখে দেয়।তারপর তানাজকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,,”নাম কি তোমার আর বয়স কত?”

তানাজ নিয়ে বলে,,,,”যাকে বিয়ে করেছেন তার নামই জানেন না।যাই হোক আমি তানাজ তুনিয়া। বয়স ১৫। ১০ম শ্রেনীতে পরি।হাইট ৫ ফিট ২ আমার প্রিয় রং নীল আমি লাফালাফি করতে পছন্দ করি আর……”

তানিম বিরক্তিকর কন্ঠে বলে,,,,,”থামো তুমি আমি তোমার নাম আর বয়স জিজ্ঞেস করেছিলাম আর কিছু নয়।আর জানো তুমি আমার বয়স কতো ২৫ আমার বয়স তোামর থেকে ১০ বছরের বড়।কেনো বিয়ে করলে আমায়?”

তানাজ বলল,,,”আম্মু বলেছে তাই বিয়ে করেছি আমি তো জানতামও না আপনার মতো গোমড়ামুখো বদ পুরুষ মানুষের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।জানলে কখনোই বিয়ে করতাম না”

তানিম কথা বাড়ালো না। সে এতো সময় বুঝে গিয়েছিল যে এই মেয়ে কথা শুনার মতো মেয়ে না।তাই চুপচাপ একপাশে শুয়ে পরে।তানাজও চুপচাপ শুয়ে পরে।কিন্তু ভয় লাগছে।যদি তানিম তাকে ঘুমের ঘরে কিছু করে।কিন্তু তানিমকে দেখে অবশ্য এমন মনে মনে হয় না।তবুও কার মনে কি চলে কেউ বলতে পারে না!তানাজ এসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে।

৯.
আরশির ঘুম ভাঙতেই সে দেখে সে তুনানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।আরশি তাড়াতাড়ি করে তুনানের কাছ থেকে সরে যায়।তুনান ঘুম থেকে উঠপ পরলে তাকে ভীষণ রকমের লজ্জায় পরতে হতো ভাগ্য ভালো যে তুনান এখনো উঠেনি।আরশি ফ্রেশ হয়ে আসে।তার তানাজের কথা মনে পরে।কিন্তু সে কি করবে সে তো এ বাড়ির কিছুই চেনে না।তার উপর জমিদার বাড়ি।

সে সোফায় বসে থাকে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৮ টা বাজে।তার খুব সকালে উঠার অভ্যাস।আরশি সকাল সাতটায় উঠে পড়ত।পড়ার কথা মনে করতেই মন খারাপ হয় আরশির।আরশির ভাবার মাঝেই জেগে ওঠে তুনান।সামনে তাকিয়ে দেখে একটা লাল টুকটুকে শাড়ি পরে বসে আছে তার মায়া পরি।গভীর ভাবনায় ব্যাস্ত সে।

তুনান মুচকি হাসে।হেসে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসেও সে দেখে আরশি তার নিজের ভাবনায় এখনো মগ্ন।তুনান গিয়ে আরশির সামনে তুরি বাজায়।আরশির ধ্যান ভাঙে।আরশি নিজের ঘোমটাটা আরো টেনে দেয়।তুনান হাসে।সে জানে মেয়েটা অনেক লাজুক।

তুনান বলে,,,,”তুমি কখন থেকে এখানে বসে আছো!আমাকে ডেকে দিতে”

আরশি মাথা নিচু করে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,,,,”আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই আর ডাকিনি।”

১০.
তানাজ তাদের মাঝখানের কোলবালিশ ফেলে দিয়ে তানিমকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।তানিম ঘুমের ঘোরেই বিরক্তিতে ভ্রু কুচকায়।চোখ খুলে নিজের খুব কাছে তানাজকে দেখতে পায়।তানাজ তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।তানিম নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে বসে।তানাজের দিকে তাকিয়ে দেখে তার ফ্রক উঠে নাভি দেখা যাচ্ছে প্লাজুও হাঁটুর উপরে।

তানিম নিজেকে সামলে নেয়।ছেলে মানুষ যতই হোক।তাড়াতাড়ি তানাজের সবকিছু ঠিক করে দেয়।উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।তানিম উঠার পরেই তানাজের ঘুম ভেঙে যায়।ও নিজেকে একটা অপরিচিত রুমে আবিষ্কার করে।উঠে বসে মনে করে যে ওর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।ওর ভাবনার মাঝেই তানিম শাওয়ার নিয়ে বের হয়।তানিমের পরে শুধু একটা ট্রাউজার।

তানাজ চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থাকে তানিমের দিকে।তানাজকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কিছুটা বিরক্ত হয় তানিম টিশার্ট বের করে পরে নেয়।তানাজকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,,,,”ছেলে দেখোনি জীবনেও নাকি”

তানাজের ঘোর কাটে।তানাজ লজ্জা পায়।কিন্তু বুঝতে পারে না ও কেনো লজ্জা পেলো।তাই চোখ সরিয়ে নেয় তানিমের থেকে।তানিম বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,”এই মেয়ে তুমি কি ঠিকমতো ঘুমাতে পারো না নাকি”

তানাজ বলে,,,,”কেনো আমি তো ঠিক মতোই ঘুমাই আপনি উল্টা পাল্টা ঘুমান বুঝেছেন ফাউ দোষ দিবেন না আমাকে পচা লোক”

তনিম কপাল চাপড়ায়।এই মেয়েকে একটা কথাও কি জিজ্ঞেসও করতে পারবে না নাকি।তানিম বিরক্তি নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।তানাজ ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।

১১.
আরশিকে ডাকতে এসেছে তুনান আর তানিমের কাজিননের বউ নুরা।আরশি বসে ছিলো।তুনান অনেক আগেই বেরিয়ে গিয়েছিলো।নুরা আরশিকে বলে,,,,”আরশি নিচে চলো সবাই খেতে বসেছে”

আরশি বলে,,,”আসলে আমি জানি না আপনি কে তাই কি বলে ডাকবো তাও জানি না।বলছি কি আমার বোন কোথায় ওর কাছে নিয়ে যাবেন আমায়।”

নুরা বলে,,,”ওহ আমি ভুলে গিয়েছিলাম তানিমেরও কালকে বিয়ে হয়েছে।হুট করে বিয়েটা হলো তো তাই আরকি।আচ্ছা চলো আমার সাথে”

আরশিকে নিয়ে নুরা তানিমের রুমের সামনে আসে।নুরা নক করতেই তানাজ দরজা খোলে।তানাজকে দেখে নুরা চোখ বড়বড় করে তাকায়।তানাজ আরশিকে দেখে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,”আপাই তুমি কোথায় ছিলে জানো এই লোকটা প্রচুর বাজে কেমন করে কথা বলে শুধু”

নুরা আর আরশি তানাজকে নিয়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।নুরা তানাজকপ বলে,,,,”তুমি এমন ফ্রক কেনো পরে আছো”

তানাজ বলে,,,”আমি তো সবসময় এমন ফ্রক আর প্লাজু পরে থাকি কেনো কোনো সমস্যা”

নুরা বলে,,,”হায় আল্লাহ তুমি এখন এই জমিদার বাড়ির ছোট বউ তোমাকে এমন ফ্রক পরতে দেখলে তো সবাই ছি ছি করবে”

চলবে,,,,,,,,,!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here