তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৫১

0
338

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৫১

” হেই গাইজ! বড্ড বোরিং লাগছে তাই না? লেটস্ প্লে সামথিং এক্সাইটিং। ”

মিহাদের কথায় সম্মতি পোষণ করে উঠলো তৃষা, পুষ্পি এবং তানু। প্রসন্ন হলো মিহাদ।

হিমাংশু’র দ্যুতিতে মোহনীয় রূপ ধারণ করেছে রাতের পরিবেশ। রিসোর্টের বাহিরে আজ বারবিকিউ আয়োজন করা হয়েছে। ফায়ারক্যাম্পের উষ্ণতা, হলদে মোহনীয় আভায় মনোরম এ মুহূর্ত! সেথায় উপস্থিত সকল তরুণ সদস্য। একমাত্র ক্ষুদে সদস্য হলো জাহিন। সকলে মিলেমিশে ভোজন পর্ব সেরে নিলো। আপাতত তারা বসে বড় বড় দু’টো ফ্লোর ম্যাটের ওপর। ঠাণ্ডা পবনে শিরশির করে উঠছে গাত্র। অনেকক্ষণ ধরেই বড্ড পানসে অনুভূতি হচ্ছে। কেউ মোবাইল স্ক্রল করছে। কেউ নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় লিপ্ত। কেউবা নীরব। এত সুন্দর রজনীতে এমন গুমোট ভাব পছন্দ হলো না মিহাদের। তাই তো সকলের উদ্দেশ্যে উপরিউক্ত প্রস্তাবটি পেশ করলো। দুয়া বললো,

” ভাইয়া দারুণ প্রস্তাব দিয়েছো। কিন্তু খেলবো টা কি? ”

” এক্সাক্টলি। কোনো নাম সাজেস্ট করো। ” রিশাদ নিজের মতামত জানালো।

দুই তিনজন ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিলো। কি খেলা যায় ঠিক নির্বাচন করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। কেউ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছে না। একসময় সকলের মধ্যমণি হিসেবে নিজস্ব মতামত পেশ করলো দুয়া।

” এক কাজ করলে কেমন হয়? চলো ‘ গেস দ্যা মুভি নেম ‘ খেলি। বেশ মজা হবে। ”

তৃষা খুশিমনে বললো, ” ইয়েস! এটা খেলা যেতেই পারে। ফাটাফাটি হবে‌। ”

নিশাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ তৃষায়। সে মৃদু স্বরে বললো,

” কিন্তু এ খেলা কি করে খেলে? আই মিন টু স্যে রুলস্?”

দুয়া স্বল্প হেসে খেলার নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দিতে লাগলো।

” এটা একদম সহজ খেলা। এই খেলায় দু’টো টিম থাকবে। প্রতি টিম থেকে একজন প্লেয়ার উঠে আসবে। বিপরীত টিমের একজন প্লেয়ার তার কানে কানে কোনো মুভির নাম বলবে। সে মুভির নাম প্রথম টিমের ওই প্লেয়ার নিজের টিমকে অভিনয় করে দেখাবে। তবে হাঁ। মুখ ফুটে কিচ্ছু বলতে পারবে না। শুধু অভিনয় করে বোঝানোর চেষ্টা করবে। যদি তার টিমমেট নামটা সঠিকভাবে গেস করতে পারে তাহলেই এক পয়েন্ট। ”

সিনথিয়া অবাক হয়ে বললো, ” বাব্বাহ! তাহলে তো খেলাটা টাফ হবে মনে হচ্ছে। কারণ সবাই কঠিন নাম বলে নিজ দলকে জেতাতে চাইবে। ”

দুয়া হেসে বললো, ” এটাই তো খেলা। বেশ জমে উঠবে। কি খেলবে তো তোমরা? ”

মনমতো খেলার প্রস্তাব পেয়ে সকলেই রাজী হলো। তবে এতজন খেলায় অংশগ্রহণ করলে কেমন জগাখিচুড়ি হয়ে যাবে। তাই দুই টিমে সাতজন সাতজন করে মোট চৌদ্দ জন অংশগ্রহণ করলো। খেলা হবে গার্লস ভার্সেস বয়েজ। কেননা ইতঃপূর্বে টিম গঠন করতে গিয়ে একদফা ঝামেলা হয়েছে। কে কোন দলে যাবে কি যাবে না প্রমুখ সমস্যা। শেষমেষ খেলা হবে গার্লস ভার্সেস বয়েজ। গার্লস টিমের সদস্য সাতজন হলো: দুয়া, তৃষা, নিশি, তানজিনা, তানু, পুষ্পি, দিবা। বয়েজ টিমে রয়েছে: তূর্ণ, নিশাদ, রিশাদ, জাবির, বিশাল, রাজীব, মিহাদ। জাবির খেলতে ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু বোনের কথায় হার মানতে বাধ্য হলো। তো ফ্লোর ম্যাট দুই টিমে বিভক্ত হলো। গার্লস ভার্সেস বয়েজ! যারা খেলায় অংশগ্রহণ করেনি দর্শক হিসেবে নিজ টিমকে সমর্থন জানাতে উপস্থিত। যথারীতি খেলা শুরু হলো। প্রথমে মেয়েদের টিম থেকে উঠে দাঁড়ালো পুষ্পি। নিজ দলকে আশ্বস্ত করলো এই বলে যে,

” চিন্তা করিস না। এমন নাম দেবো না… অভিনয় ভুলে খেয়ে ফেলবে। ”

ছেলেদের টিম থেকে অভিনেতা হিসেবে উঠে দাঁড়ালো নিশাদ। পুষ্পি বেশ ভাব নিয়ে এগিয়ে এলো। নিশাদের কানে কানে ফিসফিসিয়ে বললো নামটি। নাম শুনেই নিশাদের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তা লক্ষ্য করে পৈ*শাচিক আনন্দ পেল পুষ্পি। বেশ ভাব নিয়ে নিজের জায়গায় বসে পড়লো। নিশাদ মলিন বদনে টিমের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। বয়েজ টিম রেডি।

রাজীব শুধালো, ” বাংলা না হিন্দী? ”

নিশাদ বৃদ্ধাঙ্গুল নিম্নমুখী করে দেখালো।

” ওকে। হিন্দী। ”

তূর্ণ থাম্বস আপ দেখিয়ে শুভকামনা জানালো। নিশাদ এবার আস্তে ধীরে নিজের মাথার ওপর দু হাতের সহায়তায় মুকুটের আকৃতি তৈরি করলো। তা লক্ষ্য করে ক্ষণিকের মধ্যেই তূর্ণ’র মুখনিঃসৃত হলো,

” কুইন? ”

” ইয়েস! ইয়েস! ” উৎফুল্ল হয়ে উঠলো নিশাদ। বয়েজ টিম অভিভূত। করতালি দিয়ে উঠলো। গার্লস টিম তো স্তব্ধ। ফটাফট পুষ্পির পিঠে কয়েকটা ঘু!ষি পড়লো। তৃষা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

” গা.ধা! এই তোর কঠিন নাম? ওভার কনফিডেন্সের দোকান! ”

দুয়া কঠিন চোখে তাকিয়ে। পুষ্পি মেকি হেসে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হলো। প্রথম শটেই বাজিমাত। বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলো বয়েজ। অতঃপর খেলা এগিয়ে গেল। রিশাদ নাম বললো কানে কানে। ফ্যাসাদে পড়ে গেল তৃষা। এটা কি করে বোঝাবে সে? বহু চেষ্টা করেও পারলো না। কাউন্টডাউন এক থেকে সাত সেকেন্ড সমাপ্ত হলো। হতাশ হলো গার্লস টিম। দুয়া শুধালো,

” এবার তো নামটা বল। ”

তৃষা মলিন বদনে বললো, ” গল্প হলেও সত্যি। সোহমের মুভিটা। ”

তানজিনা আফসোস করে বললো, ” এটা কঠিন ছিল বটে। ”

এ বলে স্বামীর পানে গরম চাহনিতে তাকালো। কেননা এই কঠিন নামটা তার ই দেয়া। রিশাদ সাহেব অবশ্য এতে পাত্তা দিলো না। এমন ভাব করলো যে সে কিছুই দেখেনি। এরপর দুয়া বিশালকে নাম দিলো। বেচারা সঠিক নাম কোনোভাবেই অভিনয় করে বোঝাতে পারলো না। তার টিম ভুলভাল নাম অনুমান করলো। কেননা নামটাই যে প্যাঁচালো। হিন্দী মুভি বরুণ ধাওয়ান এর ‘ বাদলাপুর ‘. খেলার মোড় এবার ঘুরে গেছে। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। আবারো ব্যর্থ হলো বয়েজ টিম। নিশি’র কথামতো ‘ লাভ আজকাল ‘ বোঝাতে ব্যর্থ হলো জাবির। খেলা একদম শেষের পথে। বয়েজ টিম তখন ৪/৭. আর মেয়েরা ৫/৬. এখন সর্বশেষ নাম। গার্লস টিম থেকে উঠে এলো দুয়া। আর বয়েজ টিম থেকে তূর্ণ। ছেলেরা তো নিশ্চিত হেরে গেছে। এখন কোনোমতে এটা পারলে তাও সান্ত্বনা। খেলা ড্র হবে। নাহলে মানসম্মান সরাসরি বুড়িগঙ্গায়।

আস্তে ধীরে অগ্রসর হতে লাগলো মানব মানবী। মানুষটির দু হাত গলিয়ে রাখা ট্রাউজারের পকেটে। তার প্রতিটি কদমে শিরশির করে উঠলো মেয়েটির কায়া। একান্ত জনের চাহনিতে কুঁকড়ে গেলো অন্তর। লাজে অবনত হলো মুখশ্রী। অধরে আকর্ষণীয় হাসির রেখা ফুটিয়ে সন্নিকটে এলো তূর্ণ। দু’জনে অতি নিকটে দাঁড়িয়ে। দুয়া ডান হাতের মুঠো শক্ত করে চেপে ধরে। নিজেকে সামলানোর প্রয়াস চালিয়ে যায়। আস্তে করে ওর পানে ঝুঁকে গেল তূর্ণ। কর্ণ কুহরে উষ্ণ শ্বাসের স্পর্শ শিহরিত করছে বারংবার। সম্মোহনী স্বরে প্রিয়তমার কর্ণে পৌঁছালো মধুরতম বাক্য,

” আমি শুধু চেয়েছি তোমায়। ”

ফট করে আঁখি পল্লব মেলে তাকালো দুয়া। আবেশে হৃদ স্পন্দনের গতি ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। কর্ণ পাতায় অধরের ছোঁয়া পেতেই ঘোর কেটে গেল। মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে আস্তে ধীরে পেছনে নিজ জায়গায় চলে গেল তূর্ণ। ওর টিমমেট বেশ প্রত্যাশী।

” তূর্ণ নিশ্চয়ই সবচেয়ে কঠিন নাম বলেছে। ” বললো রাজীব।

রিশাদ সম্মতি জানালো, ” হুম। ইনশাআল্লাহ্ আমরা ড্র করবো। অন্তত মানসম্মান তো বেঁচে যাবে। ”

কিন্তু তাদের আশায় সেগুড়ে বালি। সামান্য প্রচেষ্টায় জয়লাভ করলো গার্লস টিম। ৬/৭ পয়েন্ট। অভিনন্দন টিম গার্লস! আনন্দে মুখরিত হলো রিসোর্টের প্রাঙ্গন। বয়েজ টিম করুণ চোখে তাকিয়ে তূর্ণ’র পানে। এ কি করলো তূর্ণ? এতো সহজ নাম? এভাবে স্বেচ্ছায় সারেন্ডার করলো!

দুয়াকে ঘিরে গোল গোল করে ঘুরছে গার্লস টিম। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। তাদের মধ্যমণি দুয়া। মেয়েটি ডান হাতে মুখ চেপে অতি মধুরতম ধ্বনিতে হাসছে। সে হাস্য কলরব সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে উপভোগ করে চলেছে তূর্ণ। তার চোখেমুখে পরিতৃপ্তি। খুশির ছাপ। এদিকে নিশাদ এবং রাজীব যে তাকে মে!রে মে রে ধোলাইখাল বানিয়ে ফেলছে সে খেয়াল আছে কি? নেই তো।
.

বিছানায় বসে আনমনা মেয়েটি। চোখেমুখে লজ্জালু আভার আচ্ছাদন। বারবার চক্ষু পাতায় ভেসে উঠছে মানুষটির চাহনি। শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে কড়া নাড়ছে সে সম্মোহনী স্বর। তার একটুখানি ছোঁয়ায় এখনো আবেশিত তনুমন। রাতের সে মুহূর্ত এখনো ভুলতে ব্যর্থ মেয়েটি। হঠাৎ বিন্দুর কণ্ঠে ধ্যান ভঙ্গ হলো। বাস্তবে পদার্পিত হলো মেয়েটি। সে তো ভুলেই গিয়েছিল বন্ধুরাও রয়েছে এখানে। বিন্দু দুষ্টুমি করে বলছে,

” আদ্রিয়ান স্যার যতটা গ!ম্ভীর। রষকষহীন। আমাদের তূর্ণ ভাইয়া ঠিক ততটাই মিশুক। রোমান্টিক। ”

পুষ্পি হাসিমুখে সম্মতি জানালো।

” অফকোর্স। সেটা আজ জানলি? আমি তো প্রতিবার দেখা হলেই নোটিশ করি। হায়! দুলাভাই য্যামনে এই ছেড়ির দিকে চায় ম্যায় তো গায়ি। ”

নাটুকে কথাবার্তা শুনে হেসে উঠলো ওরা। দুয়া লজ্জা মিশ্রিত কণ্ঠে থামতে বললো। ওরা তা শুনলে তো? তৃষা বলে উঠলো,

” আজ দেখেছিস? আমি শুধু চেয়েছি তোমায়। উফ্! ভাইয়া নিজের মুখে কানে কানে বলেছে। হাউ রোমান্টিক মুহূর্ত! ”

পুষ্পি আহাজারি করে উঠলো, ” আজ কেউ নেই বলে। জীবন যুদ্ধে পিছিয়ে গেলাম গো… ”

সশব্দে হেসে উঠলো সবাই। দুয়াও সঙ্গ দিলো।

পরেরদিন। ভানু’র উপস্থিতিতে উজ্জ্বল বসুন্ধরা। ব্যস্ত সময় কাটছে রিসোর্টে। রিসোর্টের পার্টি হলরুম পুরোদমে সজ্জিত হচ্ছে। আজ যে তূর্ণয়া’র বাগদান! সকলেই বেশ ব্যস্ত। দম ফেলার ফুরসত নেই। এর মধ্যে দুপুর দিকে ঘটে গেল সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। যা লণ্ডভণ্ড করে দিলো সব। ভেঙ্গে গেল কারোর স্বপ্ন! চূর্ণ বিচূর্ণ হলো অনুভূতির চাদর! এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলাফল কোন দিকে মোড় নেবে এবার? অপেক্ষা সঠিক সময়ের।
.

নিশাকরের কিরণ জমিনের বুকে। পার্টি হল এ মনোমুগ্ধকর আয়োজন করা হয়েছে! প্যাস্টেল রঙে আচ্ছাদিত চারিদিক। বাগদান মঞ্চের ওপর কারুকার্য খচিত স্বর্ণালী রঙা বৃহৎ সোফা। সোফার কোমল আবরণ শুভ্র রঙা, সঙ্গে দু’টো শুভ্র আবরণে আবৃত কুশন। ব্যাকড্রপে বিশালাকার কার্টেন। তার সম্মুখে পীচ, ব্লাশ এবং পুদিনার নরম রঙগুলি পুষ্প রূপে নিখুঁত সম্প্রীতিতে একত্রিত হয়েছে যেন। সোফার দু পার্শ্বে ফুলেল বৃহৎ গুচ্ছ। কৃত্রিম আলোয় নজরকাড়া পরিবেশ। যেন এক স্বর্গীয়-মোহনীয় দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে! আগত অতিথিরা অল্প অল্প করে সেথায় জমায়েত হচ্ছে। তাদের সাদরে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন নাজমুল সাহেব, রিশাদ এবং জাবির। বেশ কিছুক্ষণ পর দেখা মিললো জনাবের।

পড়নে তার লাইট পিংক থ্রি পিস স্যুট। কোটের সবগুলো বোতাম উন্মুক্ত। সেথা হতে দেখা মিলছে একই রঙা ওয়েস্ট কোটের অধিকাংশ। শার্টের স্বল্প অংশ। বাঁ হাতে মানুষটির ডায়ালের দামী রিস্ট ওয়াচ। লালচে চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা। পায়ে কৃষ্ণবর্ণ চকচকে শ্যু। অতীব সুদর্শন লাগছে দেখতে! পার্টিতে উপস্থিত কিছু রমণীর হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে গেল ক্রমবর্ধমান হারে। তূর্ণ কোটের দু পার্শ্ব ঠিকঠাক করতে করতে হাজির হলো। বাবার সঙ্গে দেখা হলো পথিমধ্যে। ছেলেকে দেখে নিজাম সাহেব প্রসন্ন হলেন। কাঁধ চাপড়ে গর্বিত কণ্ঠে বলে উঠলেন,

” মাশাআল্লাহ্! এই না হলে আমার ছেলে! কি সুন্দর নিজেকে সাজিয়ে ফেলেছে। মেয়েরা তো চোখ দিয়ে খেয়ে ফেলছে। ”

বক্র হাসলো তূর্ণ। রসিয়ে রসিয়ে বললো,

” আফটার অল তোমার ছেলে কিনা? তুমি তো এই বয়সেও মেয়েদের হৃদয় কাড়তে ম!রিয়া। তাই তো এত সাজুগুজু। বলবো নাকি আম্মুকে? ”

বেজার হলেন নিজাম সাহেব। তেঁতো স্বরে বললেন,

” বদ ছেলে। বুড়ো বাপের সংসারে কুনজর দিচ্ছিস। যা ভাগ। দেখ বউ কোথায় তোর। আমার মা টাকে কতক্ষন ধরে দেখি না। ”

তূর্ণ এবার দুষ্টুমি বাদ দিয়ে ভদ্র ছেলে হলো। আলতো করে আলিঙ্গন করলো বাবাকে। অপ্রত্যাশিত আচরণে নিজাম সাহেব অবাক হলেও নিজেকে যথাসময়ে সামলে নিলেন। আলতো করে হাত বুলিয়ে দিলেন পৃষ্ঠে। বাবা ছেলের এমন মধুর মুহূর্ত অবলোকন করে স্বল্প আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লো জাবির। স্মরণে এলো মরহুম পিতা। যে আজ আর তাদের মাঝে নেই। ফিরে গিয়েছে স্রষ্টার নিকটে।

চলবে.

[ আসসালামু আলাইকুম পাঠকবৃন্দ। কেমন লাগলো পর্বটি? তূর্ণয়া’র বাগদানে সকলকে নিমন্ত্রণ রইলো। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here