তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৫২

0
374

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৫২

” এই তো আমার দুয়া মা চলে এসেছে। ”

নিজাম সাহেবের চোখেমুখে খুশির ছাপ। বাক্যটি কর্ণ কুহরে পৌঁছাতেই থমকে গেল তূর্ণ। বদ্ধ হলো ওষ্ঠাধর। কাজিন এবং বন্ধুমহলকে এড়িয়ে ডান পার্শ্বে তাকালো। তাতেই হলো অঘটন। ধক ধক করে উঠলো বক্ষপিঞ্জর এর অন্তরালে লুকায়িত হৃদযন্ত্রটি। অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ নয়ন জোড়া! অবর্ণনীয় প্রেমাসক্তি ঘিরে ফেললো আষ্টেপৃষ্ঠে। ধীরজ গতিতে এগিয়ে আসছে তার হৃদয়ে লালিত রমণী। বাঁ পাশে সঙ্গিনী তানজিনা, ডান পাশে সিনথিয়া। মধ্যিখানে প্যাস্টেল রঙে রাঙানো তার মাইরা! মাইরা’র পড়নে সুন্দর প্যাস্টেল পিঙ্ক রঙের নেট লেহেঙ্গা। যা সবদিকে সিকুইন এমব্রয়ডারি দিয়ে ডিজাইনকৃত। গোল্ডেন সিকুইন্সের চকচকে আর্ট সিল্ক ফুল স্লিভ চোলি’র উপরিভাগ আড়াল হয়ে পড়েছে মানানসই হিজাবের অন্তরালে। বাঁ কাঁধে অতি সুন্দর ভঙ্গিতে ছেড়ে রাখা পেস্টেল পিঙ্ক নেট দোপাট্টা। যার বর্ডারে দৃশ্যমান স্ক্যালপড লেসের কারুকাজ। মেয়েটির সিঁথির মাঝ বরাবর ক্ষুদ্র টিকলি। বাঁ হাতে এক জোড়া বালা। ডান হাতে আকর্ষণীয় ব্রেসলেট। মুখশ্রীতে কৃত্রিম প্রসাধনীর মানানসই প্রলেপ। আইলাইনারের ছোঁয়ায় জীবন্ত দীঘির রূপ ধারণ করেছে মায়াবী আঁখি যুগল। ওষ্ঠাধরে লাইট পিঙ্ক লিপস্টিকের আচ্ছাদন। অবর্ণনীয় সুন্দর লাগছে! চক্ষু ফেরানো হয়ে গেছে দুষ্কর।

লাজুকতার ন্যায় মিইয়ে মেয়েটি। একান্ত জনকে একটুখানি দেখার জন্য আকুল হৃদয়। তবে সকলের উপস্থিতিতে বেলাজের মতো তা করতে পারলো না। বরং ছটফট করতে লাগলো ভেতরে ভেতরে। দু বোনের সান্নিধ্যে সে পৌঁছে গেল বাগদান মঞ্চে। রিশাদের আলতো দুষ্টু ধাক্কায় চেতনা ফিরলো তূর্ণ’র। মাথা চুলকে লাজুক হেসে উঠলো সে। অধরে খুশির ঝিলিক মেখে এগিয়ে গেল মঞ্চের ধারে। জায়গা করে নিলো তার মাইরা’র ডান পার্শ্বে।
.

পুষ্পি এবং বিন্দু সে-ই কখন থেকে বকবক করে চলেছে। তাদের সঙ্গে থেকেও যেন নেই তৃষা। ম্লান তার বদন। পীড়িত নয়ন জোড়া খুঁজে চলেছে একজনকে। বেশিক্ষণ খুঁজতে হলো না। দেখা মিললো কাঙ্ক্ষিত মানুষটির। সে-ই দুপুর পেরিয়ে এখন রজনী। অবশেষে দেখা মিললো। মধ্যের সময়টুকু যেন মানুষটি অদৃশ্য হয়ে ছিল। দেখা মিললোই না। আসলেই কি দেখা মিলছিল না? নাকি স্বেচ্ছায় অন্তরালে লুকায়িত ছিল সে? ভাবনা শেষে বাস্তবে পদার্পণ করলো তৃষা। হঠাৎই কুঞ্চিত হলো ভ্রু যুগল। এক অনিন্দ্য সুন্দরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় লিপ্ত নিশাদ। নিশাদ বলছে কম শুনছে বেশি। সে রমণীই হাসিমুখে ছলাকলা করে কথা বলছে। আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে এক প্রকার। কেমন গাঁয়ে পড়া স্বভাব। না চাইতেও ঈ!র্ষাকাতর হয়ে গেল তৃষা। হঠাৎই সে রমণী আঁকড়ে ধরলো নিশাদের বাহু। ছলছল করে উঠলো তৃষার নয়ন জোড়া। উঁহু ঈ র্ষার জন্য নয়। বরং নিশাদের অবহেলায়। সে তো মাত্র কয়েক কদম দূরে দাঁড়িয়ে। তবুও মানুষটি তাকে আজ দেখতে পাচ্ছে না, দেখছে না। বরং সম্পূর্ণ রূপে অবজ্ঞা করে চলেছে। এটাই কি স্বাভাবিক নয়? সে তো এমনটাই চেয়েছিল। তাই তো দুপুরে অমন কাণ্ড ঘটালো। এখন তো তার চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ। তবুও কেন যাতনা হচ্ছে? কেন ঝড় উঠছে অন্তঃপুরে? কেন? টলমলে নয়নে তৃষা দেখতে পেল নিশাদ সে-ই অনিন্দ্য সুন্দরী… অর্থাৎ ভার্সিটি লাইফের ক্লাসমেটের পাশাপাশি বর্তমানে নিজাম সাহেবের এক ক্লায়েন্টের বাগদত্তা রমণীটিকে এড়িয়ে চলে গেল। একটিবারের জন্যও তাকালো না তৃষার পানে। তাতেই তৃষার অক্ষিকোল গড়িয়ে পড়লো তপ্ত জল।
.

স্বর্ণালী রঙা আকর্ষণীয় সোফায় পাশাপাশি বসে তূর্ণ, দুয়া। সকলের অলক্ষ্যে দুয়া আড়চোখে তাকালো ডান পার্শ্বে বসে থাকা স্বামীর পানে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। মেটালো চক্ষু তৃষ্ণা। শান্ত হয়ে এলো তার অশান্ত হৃদয়। সুদর্শন পুরুষটিকে দেখে লালাভ আভা ছড়িয়ে পড়লো মুখখানিতে। তা ঠিক লক্ষ্য করলো মানুষটি। দু’জনের নয়নে নয়ন মিলিত হতেই তূর্ণ ওষ্ঠ নাড়িয়ে নিঃশব্দে বললো,

” মাশাআল্লাহ্! ”

লাজুক হেসে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো দুয়া। তখনই শোনা গেল মিহাদের কণ্ঠস্বর। বাগদানের ঘোষণা করা হলো।
.

পুরুষালি হাতের তেলোয় পেলব হাতটি। বিমুগ্ধ নয়ন জোড়া নিবদ্ধ অবনত লাজুক মুখশ্রীতে। আস্তে ধীরে অনামিকায় পড়িয়ে দিলো রিং। নিজস্ব সিলমোহর লেপ্টে দিলো আঙ্গুলিতে। করতালির ধ্বনিতে মুখরিত হলো চারিপাশ। এবার দুয়া’র পালা। তার হাতে রিং তুলে দিলো তানজিনা। বোনকে ইশারা করলো। সাজ্জাদ সাহেব এবং তাহমিদা সজল নয়নে তাকিয়ে। দেখছেন সন্তানের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ, শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। সকলের উচ্ছ্বাসে গুটিয়ে মেয়েটি। আস্তে ধীরে স্বামীর আঙুলে রিং গলিয়ে দিলো। সম্পন্ন হলো বাগদান। স্বামী রূপী প্রেমিক পুরুষটি আলতো ভঙ্গিতে মাইরা’র হাত আঁকড়ে ধরলো। মেয়েটিও নিভৃতে আঁকড়ে ধরলো। নয়নে নয়নে হলো সংযোগ। কর্ণ কুহরে ভেসে আসছে করতালির ধ্বনি। দু’জনে যেন জাগতিক হুঁশ হারিয়ে। এক ভিন্ন প্রেমপূর্ণ বসুধায়।

তৃষা সেথা হতে দৃষ্টি সরিয়ে অশ্রুসজল নয়নে তাকালো নিশাদের পানে। তবে মানুষটি এদিকে তাকিয়ে নেই। বিগত কতগুলো ঘন্টা শুধু অবহেলা করেই চলেছে। মাত্র কয়েক ঘন্টার অবহেলায় জর্জরিত তার কোমল হৃদয়। থেমে থেমে অশ্রু জমছে অক্ষি জোড়ায়।
.

আঁধারিয়া রজনী। কক্ষ জুড়ে রমণীদের কলতান। হাসিঠাট্টা তে মুখরিত পরিবেশ। বিছানায় মধ্যখানে বসে দুয়া। তাকে ঘিরে বন্ধু এবং কাজিন মহলের ভিড়। খুনসুটি, দুষ্টুমি চলছে সে-ই রাত্রিকালীন ভোজন শেষে। তানু খুশিমনে বললো,

” আহা! অবশেষে দুয়াপু এখন তূর্ণ ভাইয়ার অফিসিয়াল বাগদত্তা। ভাবতেই কেমন রোমাঞ্চকর অনুভূতি হচ্ছে। ”

সিনথিয়া হাসিমুখে বললো, ” দুটিকে মাশাআল্লাহ্ খুউব মানিয়েছে। তাই না? যখন একে অপরকে আংটি পড়াচ্ছিল কি সুন্দর লাগছিল! একদম নজরকাড়া! ”

লাজে অবনত হবু কনের মুখখানি। তানজিনা বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

” আল্লাহ্ তায়ালা দুটিকে খুব ভালো রাখুক। সুখে রাখুক। আমিন! ”

বাকিরা সমস্বরে বলে উঠলো,

” সুম্মা আমিন! ”

দুয়া স্বল্প আবেগী হয়ে পড়লো। আলতো করে মাথা এলিয়ে দিলো বোনের কাঁধে। তানজিনা মুচকি হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
.

ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে দুয়া। হিমেল হাওয়ায় নৃত্যরত উন্মুক্ত দীঘল কালো কেশ। বলিষ্ঠ এক জোড়া হাতের বলয়ে বন্দিনী সে। ডান কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে একান্ত জন। হিমাংশু’র দ্যুতি ভিজিয়ে চলেছে কপোত-কপোতীকে। আঁধার রজনী। হিমেল হাওয়ার পরশে শীতল গাত্র। সঙ্গে হিমাংশু’র দ্যুতি। এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত! সহচর্য দিচ্ছে আবার একান্ত জন। কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে রাখা মানুষটি প্রিয়তমার হাতটি নিজ হাতের মুঠোয় নিলো। হিমাংশু’র দ্যুতিতে জ্বলজ্বল করতে থাকা আংটিতে ছুঁয়ে দিলো ওষ্ঠ। মিহি স্বরে শুধালো,

” কেমন লাগছে এই মুহূর্তটি? নাউ উই আর অফিসিয়ালি এনগেজড্। আর মাত্র ক’দিন। এরপর ধর্মীয়ভাবে, সামাজিক ভাবে ইনশাআল্লাহ্ আরো একবার একত্রিত হবো আমরা। ”

দুয়া উদরে রাখা অর্ধাঙ্গের হাতের ওপর হাত রাখলো। সুঠাম বক্ষপটে ছেড়ে দিলো নিজস্ব ভর। মৃদু স্বরে বললো,

” মহান রবের নিকট অসীম শুকরিয়া… আমাদের জুটিবদ্ধ করার জন্য। আজকের এই দিনটি উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। শুকরিয়া আমার মহান স্রষ্টার নিকটে। ”

প্রত্যাশিত জবাবে সন্তুষ্ট হলো তূর্ণ। নীরবে আরো ঘনিষ্ঠ হলো। প্রগাঢ় রূপে আয়ত্ত্ব করে নিলো একান্ত সঙ্গিনীকে। ডান কাঁধে পড়ে থাকা কেশগুচ্ছ ঠেলে বাঁ পাশে পাঠিয়ে দিলো। ছোট ছোট উষ্ণ ছোঁয়া অঙ্কন করতে লাগলো কাঁধের উন্মুক্ত অংশে। শিহরণে আবিষ্ট রমণীর আঁখি পল্লব বুজে গেল। ছোট ছোট ছোঁয়াগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যে গভীরতম রূপ ধারণ করতেই দিশেহারা হলো কোমল হৃদয়। তড়িৎ পিছু ঘুরে দাঁড়ালো দুয়া। আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিলো প্রিয় মানুষটিকে। সে-ও নিজের সনে আগলে নিলো। কর্ণের নিম্ন স্তরে বুলাতে লাগলো অধর। সেথা হতে ধীরগতিতে পৌঁছালো চিবুকে। চিবুকের কোমল ত্বকে ওষ্ঠ চেপে মুহুর্তটি উপভোগ করতে লাগলো। আবেশিত রমণী নখ বিঁধে দিলো স্বামীর ডান কাঁধে। ধীরে ধীরে আলিঙ্গন শিথিল হয়ে এলো। পুরুষালি ডান হাতটি স্থাপিত হলো মাইরা’র কপোলে। কর্ণের নিম্নে গলিয়ে দিল চারটে আঙ্গুল। বৃদ্ধাঙ্গুলি চলমান কপোলের মসৃণ আবরণে। নিভু নিভু নয়নে তাকিয়ে দুয়া। পড়তে পারছে নে!শালো নয়নের অব্যক্ত ভাষা। নিজেও যে আজ উদ্দাম আবেশে সিক্ত। চাইছে প্রিয়জনের একান্ত স্পর্শ। অশান্ত হতে শান্ত করতে চায় প্রেমাসক্ত হৃদয়। কপোলে থাকা বৃদ্ধাঙ্গুলের চালনা খানিক বাদে থেমে গেল। নিঃশব্দে অতি নৈকট্যে পৌঁছালো তূর্ণ। মেয়েটিও আঁখি পল্লব বদ্ধ করে প্রস্তুত। সঁপে দিলো নিজেকে। ঘুচে গেল মধ্যকার সবটুকু ব্যবধান। কোমল ওষ্ঠে আধিপত্য বিস্তার করতে লাগলো মানুষটি। দুয়াও সযতনে লেপ্টে গেল মানুষটির সনে। অতিবাহিত হতে লাগলো একান্ত গভীরতম মুহুর্ত! যার সাক্ষী আকাশে উপস্থিত হিমাংশু! সঙ্গে হিমেল হাওয়া।
.

রাতভর বিনিদ্র কাটিয়েছে তৃষা। হৃদয়ে চলমান অশান্তি, অরা*জকতার দরুণ নিদ্রা উবে গেল। বারবার এপাশ ওপাশ করলো। কখনোবা বিছানা ত্যাগ করে উঠে দাঁড়ালো। পায়চারি করতে লাগলো আঁধার কক্ষ জুড়ে। কখনো আবার জানালার ধারে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলীন করবার প্রয়াস চালালো। এসবের ভিড়ে সে হয়তো ঠিকমতো লক্ষ্যও করেনি কক্ষে তার ভাবি অনুপস্থিত। এত রাতে কোথায় গেল মেয়েটি? এসব ভাববার অবকাশ ছিল না। সে তো ব্যস্ত নিজ চিন্তার জগতে। শেষ রাতের দিকে অবশেষে নিদ্রা হাজির হলো। বিছানায় এলোমেলো রূপে দেহ এলিয়ে দিলো তৃষা। স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো।

মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ভেসে আসছে সুমধুর আযানের ধ্বনি। সে ধ্বনি পৌঁছালো মেয়েটির কর্ণ গহ্বরে। আস্তে ধীরে নিদ্রা ভঙ্গ হলো। ঘুমকাতুরে আঁখি মেলে তাকালো দুয়া। ঝাপসা দেখছে সব। এখনো বেশ ঘুম পাচ্ছে। আরাম পেয়ে বিছানায় ভালোমতো দেহ এলিয়ে দিলো। তবে শক্ত বিছানার অস্তিত্বে হকচকিয়ে গেল। তৎক্ষণাৎ উবে গেল ঘুম। নিজের অবস্থান অনুধাবন করতেই লজ্জালু আভা ছড়িয়ে পড়লো মুখশ্রীতে। এ কোথায় তারা? সিঁড়ি ঘরের দেয়াল ঘেঁষে বসে ঘুমন্ত তূর্ণ। তার বক্ষদেশে মিশে দুয়া। পেশিবহুল দু হাতের বেষ্টনীতে বন্দী। তপ্ত শ্বাসেরা আঁকিবুঁকি করে চলেছে ললাটে। মুহুর্তের মধ্যেই গরম হলো মেয়েটির কপোলদ্বয়। আযানের ধ্বনিতে হুঁশ ফিরল। বাঁ হাতে এলোমেলো ওড়না জড়িয়ে নিলো মাথায়। অপেক্ষা করলো আযান সমাপ্ত হবার। আযান শেষে আযানের দোয়া পাঠ করলো মেয়েটি। এবার আস্তে ধীরে ডাকতে লাগলো স্বামীকে। কিন্তু ঘুমন্ত মানুষটি সে ডাক নাকোচ করে দিলো। প্রিয়তমার কাঁধে মুখ লুকিয়ে আরামদায়ক ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেল। দুয়া বাহুতে হাত বুলিয়ে ডাকতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষণ বাদে বিরক্ত হয়ে আঁখি মেলে তাকালো তূর্ণ। দুয়া’র কপোলে ওষ্ঠ চেপে অস্ফুট স্বরে শুধালো,

” কি হয়েছে? ”

” নামাজের সময় হয়েছে। ওঠো না। ”

খানিকটা অবাক চাহনিতে তাকালো তূর্ণ।

” নামাজ? কোন ওয়াক্তের? ”

” ফজরের। এবার ওঠো না। ”

তৎক্ষণাৎ সম্বিৎ ফিরল তূর্ণ’র। মাথা তুলে আশপাশে তাকালো। ভোরের পরিবেশ। হিমেল হাওয়ায় লোমকূপ দাঁড়িয়ে। চারিদিকে আঁধার বিদ্যমান। তারা এখনো ছাদে? ফজরের আযান দিয়ে দিয়েছে? ওহ্ নো! তড়িঘড়ি করে বাঁধন মুক্ত করলো তূর্ণ। উঠে দাঁড়ালো দু’জনে। দুয়া’র পরিহিত চুড়িদারের এলোমেলো অবস্থা। যেনতেন রূপে ঘুমানোর ফলাফল। মাথায় ভালোমতো ওড়না জড়িয়ে নিলো দুয়া। ওর পেলব হাতটি মুঠোয় নিয়ে বড় বড় কদম ফেলে ছাদ হতে বেরিয়ে এলো তূর্ণ। ছাদের ছিটকিনি লাগিয়ে দু’জনে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলো। দুয়া’র কক্ষের সামনে এসে দাঁড়ালো ওরা। তূর্ণ অর্ধাঙ্গীর ললাটে উষ্ণ চুম্বন করলো। তাকে ভেতরে প্রবেশ করার ইশারা করলো। বিনিময়ে মুচকি হেসে কক্ষে প্রবেশ করলো দুয়া। তপ্ত শ্বাস ফেলে সেথা হতে প্রস্থান করলো তূর্ণ। কিন্তু এ কি? কক্ষে প্রবেশ করে হতবিহ্বল দুয়া!

চলবে.

[ কেমন লাগলো তূর্ণয়া’ময় পর্বটি? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here