#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_২৮
কে আপনারা আমাকে এখানে আনছেন কেনো? আমার হাত পায়ের বাধন খুলে দেন বলছি!
ম্যাডাম আপনাকে আমরা কিডন্যাপ করেছি! আর আপনি বলছেন আপনার হাত পায়ের বাধন খুলতে! অট্রহাসি দিলো।
আমাকে কিডন্যাপ করেছেন কিসের জন্য, কি চান আপনারা।
ম্যাডাম আমরা টাকার বিনিময়ে কাজ করি! আমরা কিভাবে জানবো আপনাকে কিডন্যাপ করা কেনো হয়েছে। আমাদের শুধু বলা হইছে আপনাকে এই বদ্ধ ঘরে আটকানোর কথা ব্যাচ আমরা করে দিছি।
দেখুন ভালো হবে না বলছি আপনাদের বস কে? তার নামটা বলুন!
সরি আমরাও তার নাম জানিনা আপনাকে বলবো কি করে?
কত টাকা দিয়েছে আপনার বস আমাকে কিডন্যাপ করার জন্য?
২০ লক্ষ্য টাকা!
নীলা আ্যামাউন্ড টা শুনে অবাক হয়ে যায়। মনে মনে ভাবে কার আমি কি করলাম যার জন্য এতো টাকা দিয়ে আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। এরপরে নীলা ছটফট করতে থাকে।
কিডন্যাপার দুজন বললো এই ম্যাডাম বেশি ছটফট করবেন না! ভালোই ভালোই চুপ করে বসে থাকেন নাহলে মুখে টেপ লাগিয়ে দিবো।
এতো বড় সাহস তোমাদের কিডন্যাপ দলের লিডার কে?
একজন কিডন্যাপার বললো আমি মেইন বলেন কি বলবেন?
যে তোমাদের আমাকে কিডন্যাপ করার জন্য ২০ লক্ষ্য টাকা দিছে। আমাকে ছেড়ে দিলে আমি তোমাদের ২৫ লক্ষ্য টাকা দিবো এখন ভেবে বলো কি করবা তোমরা।
মেইন কিডন্যাপার বললো আপনি যে আমাদের ২৫ লক্ষ্য টাকা দিবেন তার প্রমাণ কি?
প্রমান আমার ল্যাগেজটা খুলো ওইখানে দেখো আমার একাউন্টের চেক বই আছে।
অপর কিডন্যাপার ল্যাগেজ খোলে চেকবুক বের করলো।
নীলা বললো এখন ওইখানে ২৫ লক্ষ্য টাকা বসিয়ে চেক সাইন নিয়ে আমাকে ছেড়ে দাও?
দাড়ান আমাকে বিষয়টা ভাবতে দিন?
আকাশ নীলাকে রাস্তায় না পেয়ে পাগলের মতো নীলার বাড়ি ছুটে যায়। ওইখানে যেয়ে কেয়াকে ফোন করে নিচে নামিয়ে কথা বলে। কেয়াকে সবটা বলে, তোমার বোন রাগ করে বাড়ি থেকে চলে এসেছে ও কি তোমাদের এখানে আসছে।
নাতো দুলাভাই! ইভেন আপু একটা কল ও করে নাই।
নীলা যে বাড়ি থেকে চলে আসছে তুমি বাবা-মা কে জানাইয়ো না কেয়া আর আমি এখানে এসেছিলাম এইটাও বলিয়ো না, আমি থাকতে নীলার কিছু হতে দিবো না।
আচ্ছা দুলাভাই বলবো না কিছু! তুমি আপুকে তাড়াতাড়ি খুঁজে বের করো। এরপরে আকাশ চলে যায় তার বাড়ি।
বাড়িতে ঢোকে সবাইকে ড্রয়িংরুমে দেখে অবাক হয় আকাশ। কারণ বাড়ির লোক সবটা জেনে গেছে। রিয়া আকাশের রুমে যেয়ে নীলার চিঠি পায়। রিয়া সেই চিঠির সব তথ্য আকাশের পরিবারের সামনে তুলে ধরে।
আকাশকে এসে চড় দেয় আর্জিনা! কেনো এরকম করলি মেঝো বউমার সাথে তুই সারারাত কার সঙ্গে ছিলি। বল আমাদের।
মা আমি এখন কিছু বলতে পারবো না! আমার মাথা কোনো কাজ করছে না। আমাকে কিছুক্ষণের জন্য একা ছেড়ে দাও।
না তোকে উত্তর দিতেই হবে কেনো নীলার সাথে মিসবিহেভ করলি।
মা ওকে রুমে যেতে দাও। আমি দেখছি ব্যাপারটা। ঈশান বললো
আকাশ রুমে এসে নীলার ছবি হাতে নিয়ে কান্না করলো। তুমিয়ো আমাকে ভূল বুঝলা। কই গেছো তুমি? তোমাকে এখন আমি কোথায় খুজবো বউ। আমি আসলে জঘন্য স্বামী তোমার। আমার এসব পাওনা ছিলো। কেনো আমি তোমার সাথে রাগ করলাম, কেনো কেনো।
এমন সময় ঈশান আকাশের রুমে ঢুকে দরজা লকড করে দেয়।
ঈশান কে দেখে আকাশ হাউমাউ করে কাঁদে ভাইয়া বিশ্বাস কর আমি কিছু করি নাই। ওই তাঁরা আমার সাথে 😓😓
কালকের রাতের ঘটনা টা আসলে কি? সবটা আমাকে বলতো!
কাল রাতে আমি ক্লোড ড্রিংস নেওয়ার পর ভোরবেলায় দেখি আমি তারার রুমে একই বেডে শুয়ে আছি। আমি অর্ধনগ্ন ছিলাম। তারা বললো আমি নাকি ওর সাথে সারারাত ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ছিলাম। এই দেখ পিক গুলো।
ঈশান পিক দেখে বলে মারাত্মক ক্যাচে পড়ছিস এবারো।
কিন্তু ভাইয়া তুই বিশ্বাস কর কোল্ড ড্রিংস খাওয়ার পর আমার কিছু মনে নাই। কোনো স্মৃতি আমার মাথায় আসছে না।
তারা বলেছে ০৪ দিনের মধ্যে যদি আমি ওকে বিয়ে না করি। তাহলে ও এই ছবি গুলো লিক করে আমাদের কোম্পানিকে ব্যান করবে। এদিকে নীলাও চলে গেছে আমার কি হবে ভাইয়া?
তার আগে তুই বলতো তারাকে কি তুই চিনিস? ও তোর সাথে এরকম করে লাভ কি?
ভাইয়া তারা হলো আমার সেই অতীত।
কি বললি তুই? তুই আগে বলবি না। এখন আমি শিউর তোকে ফাঁসানোর প্লান পুরো টাই। শৈশবের ভালোবাসা জিতে নেওয়ার প্লান এটা। চল তারার সঙ্গে কথা বলতে হবে আমাদের।
এরপরে ঈশান নিচে সবাইকে বলে আমাদের বাড়ির কথা যেনো বাইরে লীগ না হয়। আমরা নীলাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো তোমরা চিন্তা করিয়ো না। চল আকাশ।
ঈশান, আকাশ তারার রুমে যায় তারার সঙ্গে দেখা করার জন্য। তারা আকাশ কে দেখে বলে কি সিদ্ধান্ত নিলা তুমি?
তোমার এসব করে কি লাভ? তোমাকে বুঝতে হবে আকাশ এখন বিবাহিত।
কিন্তু ভাইয়া আকাশের বউ তো কিছুক্ষণ আগে আকাশকে ছেড়ে চলে গেছে।
এই তুমি নীলাকে কিছু করছো নাতো ও কোথায় এখন। আর তুমি কি করে জানলা নীলা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
দেখো আকাশ তোমাকে যেহেতু ভালোবাসি তাই তোমার সবদিকে আমার নজর আছে?
শাঁকচুন্নি, ডাইনি আমি তোকে ভালোবাসিনা তোকে বিয়ে করবো কিভাবে ভাবলি? আমার নীলাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দে? আকাশ খুব রেগে যায়
দেখো আকাশ ভদ্রভাবে কথা বলো। নাহলে তোমার মান সম্মান সবকিছু লীগ করে দিবো আমি।
তুই নাকি আমাকে ভালোবাসিস তাহলে কথায় কথায় কিসের হুমকি দেখাস। দেখ জোড় করে ভালোবাসা হয় না। আর আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে আমি তোর সাথে রাতে কিছু করি নাই।
চোর চুরি করে কখনো স্বীকার করে আমি চুরি করছি। তোমার অবস্থা ঠিক এরকম। সারারাত আমার শরীর নিজের সম্পদ মনে করে ভোগ করে এখন এসব বলছো।
আকাশ এইবার খুব রেগে যায়। দেখ ভালোই ভালোই বলছি সত্যি টা বল। তুই কিসের জন্য এরকম করছিস আমার সাথে।
ঈশান আকাশকে শান্ত হতে বলে। দেখো তুমি একজন মেয়ে হয়ে আরেক মেয়ের সংসার ভাঙ্গার কথা বলছো। এসব করা পাপ তারা। আল্লাহ তোমাকে কখনো ক্ষমা করবে না।
নীলা চারদিক ভালো করে দেখে বলে, দেখেন আমি এসব করছি চাপে পড়ে। আমি আকাশের সংসার ভাঙ্গতে চাই না
।কিন্তু আমি যদি আকাশের সাথে এরকম না করি তাহলে আমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলবে। আমি বাংলাদেশে এসেছি বলে বাবা গতকাল আমাকে নিতে এসেছিলো আর মাতৃভূমি দেখার টানে আরেকবার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় নাই। কিন্তু আমার
বাবাকে ওরা এয়ারপোর্ট থেকে কিডন্যাপ করে। আর আমাকে ফোন দিয়ে আকাশের সাথে এসব করার জন্য বাধ্য করে। তাই আমি নাইট ক্লাব পার্টিতে তোমার ক্লোড ড্রিংসে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে আমার রুমে নিয়ে আসি। এরপরে তোমার শার্ট খুলে দেই আর আমি নাইটি পড়ে শুয়ে থাকি। সবটাই ওদের কথামতো বাবাকে বাঁচানোর জন্য। ওরা আমাকে নজরে রেখেছে আকাশ।
ওরা কারা নামটা বলো তারা খান আমি তাদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল আ্যাকশন নেবো।
এমন সময় জানালা দিয়ে গুলি করে তারাকে। গুলিটা তারার হাতে লাগে। তারা গুলি খাওয়ার সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায়।
এই অবস্থা দেখে আকাশ দ্রুত কার্নিশ পেড়িয়ে জানালার কাছে যায়। যেয়ে কাউকে দেখতে পায়না।
ঈশান আকাশকে দ্রুত ডাকে তারাকে হসপিটালে নেওয়ার জন্য।
এরপরে ঈশান, আকাশ তারাকে হসপিটালে ভর্তি করায়।
কি হবে ভাইয়া এখন কি করে বুঝবো আমাদের সাথে এই গেম খেলছে কে?
এখন আমারতো মনে হয় নীলা সম্ভবত বিপদে আছে আকাশ। নীলাকে কিডন্যাপ করতে পারে নাহলে ফোনটা এভাবে বন্ধ ক্যান। বাড়ির কারো ফোন ধরার জন্য একবার হলেও ফোনটা অন করতো। আবার তারা জানলো কি করে নীলা বাড়িতে নাই?
আমারো তাই মনে হচ্ছে ভাইয়া। কি হবে এখন তারাতো অজ্ঞান সত্যি টা বলবে কে এখন? ও বাঁচবে তো ভাইয়া।
চিন্তা করিস না আল্লাহ আছে! আচ্ছা এইবারো কোনোভাবে এসব কাজের সাথে যোগ হামজা আছে নাতো।
আমারো মনে হচ্ছে আচ্ছা চলতো হামজাকে দেখে আসি ও জেলে আছে কিনা?
এরপরে আকাশ ও ঈশান পুলিশ স্টেশন যায়!
কি হলো তোমরা এখনো কি ভাবছো? আমাকে কিডন্যাপের জন্য যে তোমাদের ২০ দিছে আমি তার চেয়ে ০৫ বেশি দিবো।
দ্বিতীয় কিডন্যাপার বললো বস চেকটা সাইন করে নেই! সেই চেকবুকটা নিয়ে আমি টাকা তুলতে যাবো ২৫ লক্ষ্য ক্যাস পাওয়ার পর ম্যাডামকে ছাড়বো।
হুম তাই কর এরপরে কিডন্যাপার নীলার হাতের বাধন খুলে দেয়।
নীলা মনে মনে ভাবে তার একাউন্টে টাকা তুলতে গেলে সে ধরা খাবে কারণ তার একাউন্টে এতো টাকা নাই। তার একাউন্টে মাত্র ৪ লাখ টাকার মতো আছে। সো নীলাকে কিছু ভাবতেই হবে এখান থেকে ছাড়া পেতে হলে।
নীলার সামনে চেকবুক দিলো হাতে পেন ধরিয়ে দিয়ে। নীলা সাইন করে দিলো।দ্বিতীয় কিডন্যাপার চেকবুকটা নিয়ে নীলা যে ব্যাংকে টাকা রাখছে তুলতে গেলো।
নীলা প্রথম কিডন্যাপারকে বলে আমার টয়লেট যেতে হবে পায়ের বাধন খুলে দেন। কিডন্যাপার রাগ হয়ে বলে কিসের জন্য টয়লেট যাবেন।
আমাকে যদি টয়লেট যেতে না দেন তাহলে এখানেই পটি করবো।
কিডন্যাপার উপায় না পেয়ে নীলার বাঁধন খুলে বাথরুমে পাঠায়।
পুলিশ স্টেশনে যেয়ে দেখে হামজা জেলে বসে আছে। হামজার ৩ বছরের শাস্তি হয়েছে।
আকাশ বললো ভাইয়া হামজাতো জেলে আছে তাহলে আমাদের শত্রু টা কে?
চলবে,,,,,