কি_নেশায়_জড়ালে #পর্ব_২০

0
360

#কি_নেশায়_জড়ালে
#পর্ব_২০
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

চোখে সূর্যের আলো পড়তেই ঘুম ভেঙে যায় আহনাফের৷ পিটপিট চোখ খুলে উপরে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায়।

মাহতিম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ঝুঁকে আছে আহনাফ এর উপরে।

আহনাফ মাহতিম কে দেখে উঠে বসলো।
মাহতিমঃ ভাই তুমি সারা রাত এখানেই ছিলে..?
আহনাফঃ দেখে কি মনে হয়..!
মাহতিমঃ গালে লাল লাল এই গুলা কি..?
আহনাফঃ মশার ভালোবাসা।
মাহতিম হাসতে হাসতে বললো,’ ভাবি বুঝি রাগ করে আটকে রেখে ছিলো..?
আহনাফ অবাক হয়ে বললো ” ভাবি!!”
মাহতিমঃ আরে ভাই নতুন নতুন বিয়ে হলে মানুষের কতো ভালোবাসা আর তোমরা কিনা ঝগড়া করে একজন হাত পা ভেঙেছো আরেকজন ছাঁদে বসে মশার ভালোবাসা উপলব্ধি করেছো! বাহ্

মাহতিম এর কথা শুনে আহনাফ অবাক হয়ে গেলো।
~ হাত পা কে ভেঙেছে..?
মাহতিম সবটা খুলে বললো আহনাফ কে।
আহনাফ রেগে নিচে নেমে আসলো।

রূপা রান্না করছে আর সোহা হেল্প করছে।

আহনাফ রেগে রূপার পেছনে গিয়ে বলে উঠলো, ‘ তুমি ইচ্ছে করে মৌ কে ফেলেছো তাই না! তুমি ওর এই অবস্থা করেছো।

রূপা গরম খুন্তি হাতে নিয়ে পেছন ঘুরতেই সেই খুন্তি আহনাফ এর বুকে লাগলো। বেচারা ব্যথায় চোখ বন্ধ করে নিলো।
রূপার হাত থেকে সাথে সাথে খুন্তি নিচে পড়ে গেলো। সেই খুন্তি গিয়ে আহনাফ এর পায়ে পরলো।
বেচারা এবার রেগে রূপাকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গেলো রান্না ঘর থেকে৷

আহনাফ বেরিয়ে যেতেই সোহা বলে উঠলো, ‘ এটা কি করলি..? বেচারার বুক একদম কালচে হয়ে গেছে। পায়েও বেশ ব্যথা পেয়েছে।
রূপাঃ আমি তো ইচ্ছে করে দেইনি। রান্না ঘরে এমন একটু আধটু খেতে হয়।

মাহি একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে।
আরিয়ান এই রেস্টুরেন্টের নাম বলে ছিলো।
মাহির সামনে তাকিয়ে দেখে আরিয়ান আসছে।

আরিয়ানঃ সরি সুমাইয়া তোমাকে অপেক্ষা করানোর জন্য।
মাহি আর আরিয়ানের মাঝে অনেক কথা হলো।
আরিয়ান এক পর্যায়ে মাহি কে জিজ্ঞেস করলো,’ মহুয়া তোমার বোনের নাম..?

মাহি কিছুটা অবাক হলো। তাও হেঁসে বললো, ‘ জ্বি’
আরিয়ানঃ মনে পড়ে মহুয়ার কথা..?
মাহিঃ আপনি কে..?
আরিয়ান হেঁসে বললো, ‘ আমি মহুয়া কে ভালোবাসি। ‘
মাহিঃ কিইই!! কিন্তু আপু তো নেই।
আরিয়ানঃ জানি আমি। সে তোমাদের কাছে নেই আমার কাছে সব সময় আমার পাশে থাকে।
মাহি থমথমে মুখে বলে উঠলো, ‘ আপনি জানেন আপু একজন কে ভীষণ ভালোবাসতো..?
আরিয়ানঃ তুমি দেখেছো কখনো তোমার আপু কাকে ভালোবাসতো..?
মাহি মাথা নেড়ে না বুঝালো।
আরিয়ান কথা ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলো ‘ কি খাবে..?’

মাহিঃ আপনি আপুর সেই ভালোবাসার মানুষটি তাই না!!???
আরিয়ান শান্ত দৃষ্টিতে মাহির দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।

মৌ সোফায় বসে আছে।
সবাই জিজ্ঞেস করছে কাল ওর সাথে কি হয়ে ছিলো..?
মৌ রাগী চোখে সুমাইয়ার দিকে তাকালো।
সবাই সুমাইয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই মৌ বলবো, ‘ আমি পা বেজে পড়ে গিয়ে ছিলাম। ‘

মাহতিমঃ সাপের মতো ফুসফুস করে হাঁটলে শুধু বাসায় না কোন দিন জানি ফুস করে উপরে চলে যান।

মৌ রেগে মাহতিম এর দিকে তাকালো।
মাহতিম মোবাইল হাতে নিয়ে চলে যেতেই মৌ ন্যাকা কান্না করে বলে উঠলো, ‘ দেখলে আহনাফ তোমার এই বাড়িতে আমার কোনো সম্মান নেই। আমি আজকেই আমার আব্বুর কাছে চলে যাবো।
আহনাফঃ রেডি হয়ে নাও। আমি গাড়ির ডাইভার কে বলে দিবো তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবে।

মৌঃ তুমিও এখন আমাকে সহ্য করতে পারছো না তাই না..?
আহনাফঃ বিষয়টা এমন নয়। তুমি রেস্ট নাও তোমার বাড়ি গিয়ে। বলেই আহনাফ বেরিয়ে গেলো।
মৌ রেগে রান্না ঘরের দিকে তাকিয়ে আছে। একটা কেও ছাড়বে না শুধু একটু সুস্থ হোক।

মাহি রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে রাস্তায় আস্তেই মাহতিম এর সাথে দেখা হয়ে গেলো। পেছনে আরিয়ানকে দেখেই বুঝলো মাহি আরিয়ান এর সাথে দেখা করতে এসেছে।
মাহিঃ কেমন আছেন..?

পেছন থেকে আরিয়ান মাহতিম কে বলে মাহি কে বাসা অবধি পৌঁছে দিতে।
মাহতিম কিছু বলার আগেই আরিয়ান গাড়ি নিয়ে চলে যায়৷
মাহতিম মাহির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আপনি কান্না করেছেন..? ‘
মাহি হেঁসে বললো,’ না.. চলুন হেঁটে হেঁটে কথা বলা যায়।
মাহতিম ও হেঁসে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। তবে মনে তো সন্দেহ রয়েই গেলো। কি হয়েছে..? মাহি কেনো কেঁদেছে..?

সাজ্জাদ আজ অফিস থেকে একটু জলদি চলে আসলো।
রূপা হাতে শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবছে কিভাবে পড়বে। একা একা পড়তে পারে না। সবটা পড়লেও কুঁচি গুলো কেউ যত্ন করে ধরে দিতে হয়।

রূপা এসব ভাবছে তখনি সাজ্জাদ রুমে আসলো।
রূপাঃ আপনি কি আমার কুঁচি গুলো একটু ধরবেন..?
রূপার মুখে এমন কথা শুনে সাজ্জাদ অনেক অবাক হলো।
রূপা কে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাজ্জাদ বললো,চলো হেল্প করি..’

রূপা সুন্দর করে রেডি হয়ে নিলো।
সাজ্জাদ এই প্রথম রূপাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে।
চুলগুলো সুন্দর করে আঁচড়ে ছেড়ে দিলো।
সাজ্জাদ রূপার পেছনে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো ” তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। লোক দেখলে বলবে আমি আমার ঘরে যত্ন করে এক চাঁদ লুকিয়ে রেখেছি। ‘

রূপা লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো৷
সাজ্জাদঃ তুমি কি জানো লজ্জা পেলে তোমাকে এতো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলে যার কারনে আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট দায়ক হয়ে যায়। কখন না জানি ভুলে কিছু করে ফেলি। আচ্ছা আমার দাঁড়া ছোটো একটা ভুল হয়ে গেলে তুমি ক্ষমা করে দিবে তো..?’
রূপা কিছু বলার আগে সাজ্জাদ রূপাকে কাছে টেনে কপালে খুব যত্ন করে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ালো।
রূপা জেনো একদম জমে গেছে।
সাজ্জাদ হেঁসে বললো,” ক্ষমা না করলে এই ছোটো ছোটো ভুল আমি বার বার করবো..”

চলবে…..
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here