দাম্পত্য_জীবন #মেহু_আপু #পর্ব_২৯

0
316

#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_২৯

আমি কিছু বুঝতে পারছি না আকাশ। আচ্ছা বাড়ি ফিরে এখন আমরা কি বলবো?

তা জানিনা ভাইয়া তবে ভাইয়া একটা কাজ করলে হতোনা।

কি কাজ বল?

আমরা এখন হসপিটালে যেয়ে তারার মোবাইলের ফিঙ্গার লক খুলে দেখবো। তারা গত ২ দিন থেকে কার কার সাথে কথা বলে নিশ্চয়ই কিডন্যাপারের সাথে কথা বলছে। যদি কিডন্যাপার সাথে কথা বলে থাকে তাহলে নম্বর ট্রেস করে সেখানে পৌঁছে যাবো ভাইয়া। আমার ক্যান জানি মনে হচ্ছে আমার নীলাও ওইখানে আছে।

সুন্দর আইডিয়া আকাশ, আমার মাথায় এতোক্ষণ থেকে ক্যান এলোনা! 😟

তাহলে চলো হসপিটালে, যেয়ে দেখি তারার কি অবস্থা, বাকিটা আল্লাহর উপর প্লান সাকসেসফুলি হলে তো একধাপ এগিয়ে গেলাম।

এরপরে ঈশান আর আকাশ হসপিটালে আসে।

নীলা বাথরুম যেয়ে ইটের ফাক দিয়ে নিচে তাকানোর চেষ্টা করে। নিচে তাকাতেই দেখে সে ব্লিডিং এর অনেক উপরে নিম্নপক্ষে সে পাঁচ তলায় অবস্থান করিতেছে। নীলা কিছু ভেবে পাচ্ছে না,কি করবে সে!

এমন সময় কিডন্যাপারটা দরজা ধাক্কায়, আর বলে এতক্ষণ লাগে বাথরুম করতে। দেখেন নীলা আমি আপনার সাথেই আছি। আর নিচে আমার ১২ জন লোক দাড়িয়ে পুরো ব্লিডিং পাহাড়া দিচ্ছে। সো সাবধান, পালানোর চেষ্টা মোটেও করবেন না।

কিডন্যাপারের এই কথা শুনে নীলা হকচকিয়ে যায়। কারণ নীলা এতক্ষণ জানতো তাকে ২ জন লোক ধরে এনেছে। এখন জানতে পারলো আরো বেশকিছু লোক এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারমানে এদের গ্যাঙ্গ মাফিয়া টিম।

নীলা কোনো উপায় না পেয়ে বাথরুম থেকে বের হয়। বের হয়ে কিডন্যাপারটিকে গালি দেয় আর বলে আমার যদি পালানোর হতো, তাহলে আমার একাউন্টে আপনার লোককে টাকা উঠানোর জন্য পাঠাতাম না।

তখন কিডন্যাপার মনে করলো আসলেই তো। নীলার হাত পা বাঁধতে চাইলো কিডন্যাপারটি।নীলা তখন বাধা দেয় বলে বাঁধতে হবেনা আমি কোথাও যাবোনা। আপনার লোক টাকা তুলে আসলেই আমি যাবো। ভয় নেই আপনাদের।

কিডন্যাপার নীলার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে চেয়ারে বসিয়ে রাখলো নীলাকে।দরজা লাগিয়ে দিয়ে কিডন্যাপার সিগারেট খেতে গেলো।

হসপিটালে যেয়ে তারার ফোনের লক খুলে দেখতে পেলো। তারা একটি নম্বরে বেশকিছুক্ষণ কথা বলছে। আকাশ সেই নম্বরে কল দিলো। নম্বরটি ছিলো দ্বিতীয় কিডন্যাপারের। ফোন বেজে উঠলো দ্বিতীয় কিডন্যাপারের। ফোন ধরে বললো, আপনি কাজটা ঠিক করলেন না ম্যাডাম আমরা আপনার বাবাকে মেরে ফেলবো। কারণ আপনি আকাশকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতে পারেন নাই। আর আপনি নিশ্চিত থাকুন আপনার মৃত্যু অবধারিত কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। উল্টে এখন সবকিছু আকাশকে বলার জন্য অপরাধ বোধের স্বীকার হলেন। আকাশ কিছু না বলে ফোন কেটে দিয়ে লোকেশন অন করে নম্বরটি ট্রেস করে সেই জায়গায় পৌছালো।

আকাশ অবাক হয়ে গেলো কারণ আকাশ যেই জায়গায় আসছে। সেইটা একটা ব্যাংক অফিস। আর নীলা এই ব্যাংকে টাকা রাখে। কিন্তু কিছুদিন আগে নীলা টাকা উঠিয়ে ফেলছে। তাহলে কিডন্যাপার এখানে কেনো।

কিডন্যাপার একাউন্ট লগ ইন করে দেখে টাকা মাত্র ০৪ লক্ষ্য টাকা। দ্বিতীয় কিডন্যাপার অবাক হয়ে প্রথম কিডন্যাপারকে ফোন করে সবটা বলে। প্রথম কিডন্যাপার রাগ করে দুজন লোক দিয়ে নীলার হাত পায়ে রশি বেধে তারার বাবার রুমে নিয়ে আসে। নীলা সেই রুমে এসে এক মুরব্বিকে দেখে অবাক হয়ে যায়।এরপরে প্রথম কিডন্যাপার বলে, তুই আমাদের সাথে গেম খেলছিস এর ফল তোকে দিতেই হবে। আমাদের বলা হয়েছিলো তোকে যেনো প্রাণে বাচিয়ে রাখি। কিন্তু তোকে আর প্রাণে বাচিয়ে রাখবোনা তুই আমাদের সাথে গেম খেলছিস এর ফল তোকে জীবন দিয়ে দিতে হবে।

নীলা কিডন্যাপার মুখে এই কথা শুনে নিশ্চিত হয়ে গেলো যে,এতক্ষণে সে ধরা পড়ে গেছে, কারণ দ্বিতীয় কিডন্যাপার যেয়ে একাউন্টে টাকা পায় নাই। নীলা অবিরাম চোখের পানি ফেলছে। তারার বাবা বললো বাবা আমাকে ছেড়ে দাও আমি আমার মেয়ের কাছে যাবো।
কিডন্যাপার এই কথা শোনামাত্রই বললো এই এইদুটির মুখে টেপ লাগা নাহলে জ্বালিয়ে মারবে আমাদের। এরপরে দুজনের মুখেই টেপ লাগানো হয়।

দ্বিতীয় কিডন্যাপার টাকা না পেয়ে ব্যাংক থেকে বেড়িয়ে যায়। এমন সময় আকাশ তারার ফোন দিয়ে কিডন্যাপারকে কল করে। কিডন্যাপার কল ধরে বলে আবার কিসের জন্য কল করছেন আর গুলি লাগার পরেও আপনি সুস্থ হলেন কিভাবে?

আকাশ তখন নিচে এসে দেখে কে ফোন কানে নিচে?

কথা বলছেন না কেনো আমি এক্ষুনি লোক পাটাচ্ছি হসপিটালে আপনাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।

এরপরে ঈশান এসে কিডন্যাপার মাথায় টালা মারে।

এই কে আপনারা আমাকে মারছেন কেনো?

কেনো তুই নাকি তারাকে প্রাণে মারবি? এখন তুই যদি সত্যি টা না বলিস তোকে প্রাণে মারবো আমরা।

কিডন্যাপার পালানোর চেষ্টা করে। আকাশ আর ঈশান কিডন্যাপারকে ধরে গাড়িতে উঠিয়ে সেই লেভেলের মার দেয়। বল তারার বাবা কোথায়?

আমি বলবো না?

এরপরে আকাশ কিডন্যাপের গালে এমন ভাবে চড় দেয়। কিডন্যাপারের গাল ও নাক দিয়ে গড়গড় করে রক্ত পড়ে তবুও বলতে চায়না সত্যি টা।

কোনো উপায় না পেয়ে দ্বিতীয় কিডন্যাপারকে আকাশের অফিসে নিয়ে আসে এরপরে চেয়ারের সঙ্গে সারা শরীর বেঁধে বেধরক পিটায় আকাশ। কিডন্যাপার যন্ত্রণা কোলাতে না পেরে সত্যি টা বলে দেয়। এরপরে কিডন্যাপারের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে দরজা লকড করে বের হয়ে যায়। সত্যি টা জেনে আকাশ আর ঈশান পুলিশ নিয়ে গন্তব্যতে যায়। যেয়ে দেখতে পারে ০৫ তলা ব্লিডিং চারপাশে লোক পাহারা দিচ্ছে। আকাশ আর ঈশান গুটি গুটি পায়ে ০৫ তলার সেই রুমে যায় যেই রুমে নীলা আছে। কিন্তু যেয়ে দেখতে পেলো ওই রুমে নীলা নাই। ঈশান আর আকাশ শুধু মুখ চাওয়াচাওয়ি করে আবার কিডন্যাপারের দেওয়া তারার বাবার রুমে ঢুকে পড়ে যায়।

পুলিশ আস্তে আস্তে সব কিডন্যাপারকে হ্যানক্যাপ পড়িয়ে গাড়িতে উঠায় ০৮ জনকে এরেস্ট করা হয়েছে এরপরে ০৫ তলায় আসে।

আকাশ ওই রুমে যেয়ে দেখতে পায় তিনজন কিডন্যাপার নীলা আর তারার বাবার সাথে অত্যাচার করছে। তা দেখে আকাশ আর ঈশান ওই তিন কিডন্যাপারের সঙ্গে মোকাবেলায় ঝাপিয়ে পড়ে। পুলিশ এসে তিনজনকে হাতকড়া পোড়ায়। নীলা আর তারার বাবার মুখে টেপ খুলে দেয়। নীলা শুধু অবাকপানে আকাশকে দেখতে লাগে।

আকাশ রাগ হয়ে কিডন্যাপারকে জিজ্ঞেস করে এই কাজের হেড কে? তখন প্রথম কিডন্যাপার স্বীকার করে আমিই হেড।

আকাশ বলে তোরা যদি বাচতে চাস তাহলে বল তোদের দ্বারা এই কাজ করাইছক কে?
আমি তাকে চিনিনা স্যার, সে আমাদের টাকা দিয়ে কাজ করাইছে কখনো তার নাম জানা হয়নি।
আচ্ছা তুই যদি তোর গ্যাঙ্গকে বাচাইতে চাস তাহলে তোর মালিক কে এখানে ফোন করে ডাক।
এরপরে কিডন্যাপার ফোন করে সেই অচেনা লোকটিকে। লোকটি ফোন করে বলে ফোন করেছেন কেনো?
আমাদেরকে আজকে প্যামেন্ট না করলে আমরা নীলাকে আর তারার বাবাকে ছেড়ে দিবো।
এই কথা শুনে সেই লোক রেগে কটমটে বলে ০৫ তালায় অপেক্ষা করো আসতেছি।
তখন পুলিশ সব কিডন্যাপারকে গাড়িতে তুলে জেলে পাটিয়ে দেয় আর দুজন পুলিশ, আকাশ, ঈশান সেই মাফিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

এমন সময় নীলাকে জড়িয়ে ধরে আকাশ। কিন্তু নীলা আকাশকে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে দেয়

এমন সময় সেই রুমে মাফিয়া প্রবেশ করলো মুখে কালো কাপড় বেঁধে।
ঈশান উল্টোদিকে সেই মাফিয়াকে ধরে ফেললো, আকাশ এসে কাপড় সরিয়ে ফেললো।
বল কে তুই, তারার বাবা ও নীলাকে কিডন্যাপ করাইছিস ক্যান? পুলিশ এসে হ্যানক্যাপ পড়ায়। লোকটি কিছুতেই স্বীকার করতে চায়না কিসের জন্য কিডন্যাপ করাইছে। কিন্তু নীলা সেই লোকটির মুখ দেখার সাথে সাথে চিনে যায় আর বলে নবীর তুমি এসব করিয়েছো।

তুমি এনাকে চিনো নীলা? হ্যা চিনিতো এই ছেলে তো আমাদের গ্রামের ছেলে এক ক্লাসে পড়তাম আমরা।

এরপরে আকাশ নবীরকে ঠাঠিয়ে চড় দেয় বল কিসের জন্য এরকম করছিস?

নবীর বলে আমিতো এসব কিছু করি নাই এইসবের মেইন খেলোয়াড় অন্য কেউ, আমি শুধুমাত্র তাদের হাতের পুতুল। ভালোবাসা যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য এসব করা।
বল কে সে?
সে আমার ভালোবাসা সে শর্ত দিয়েছিলো আমি যদি এইরকম কাজ করে সাকসেসফুলি হতে পারি সে আমাকে বিয়ে করবে?

তুমি কি কচি খোকা ভালোবাসার জন্য এমন অপরাধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছো __ পুলিশ বললো।

কি করবো স্যার তার ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গেছিলাম আমি আমাকে মাফ করবেন।

নামটা বলো কে সে আর তাকে এইখানে ডাকো? __ আকাশ বললো

এরপরে নবীর তার ভালোবাসার মানুষ টিকে ফোন করে পাঁচ তলায় আসতে বলে?

মেয়েটি পাঁচ তলায় আসলে নীলা চিৎকার করে বলে তুমি এসব করিয়েছো।😳

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here