#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৩৫.
বেশ অনেক্ক্ষণ যাবৎ ডাকার পরেও যখন চাঁদের হুশ ফিরেনা আলতো করে চাঁদের মাথাটা ফ্লোরে রেখে ক্ষিপ্রগতিতে প্রণয়ের পানে ছুট লাগায় ফায়ান।অতঃপর র*ক্তচক্ষু নিয়েই সর্বশক্তি দিয়ে প্রণয়ের শার্টসহ এপ্রোণের কলার ডান হাত দিয়ে ধরে অপর হাতের তর্জনী মুখ বরাবর নিয়ে উচ্চস্বরে বলে,
“আপনার সাহস কি করে হলো এমন একটা বি!শ্রী কাজ করার?”
প্রণয় কোনোকিছুই বলেনা।বেশ শান্তভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকে ভাবলেশহীনভাবে।যেনো কোনোকিছুরই পরোয়া সে করেনা।প্রণয়ের এমন গা-ছাড়া ভাব দেখে ফায়ানের মেজাজ আরেকটু চ!টে যায়।সে ভ্রুযুগোল কুচকে নাসারন্ধ্র প্রসারিত করে আবার বলে,
“আপনার মধ্যে কি ন্যূনতম অ*পরা*ধবোধ কাজ করছেনা ভাইয়া?একটা বাচ্চামেয়ের উপর গায়ের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে একটুও লজ্জাবোধ করছেন না?পুরুষত্ব দেখাচ্ছেন আপনি?”
ততটা নয় তবে খানিকটা উচ্চস্বরে প্রণয়ও বলে,
“স্টপ সেয়িং ননসেন্স আরফিদ!আর যেই মেয়ে মানুষ খু*ন করতে পারে সে কি করে বাচ্চামেয়ে হতে পারে?”
আরেকটু জোরে কলার চে!পে ধরে ফায়ান প্রণয়কে শাসিয়ে বলে,
“চাঁদ কাকে খু*ন করেছে কি করেছে আমি জানিনা।জানতে চাইওনা।তবে আপনাকে এখন কোনো খু*নীর চেয়ে কম কিছু মনে হচ্ছেনা।চাঁদের যদি কিছু হয় আমি আপনাকে ছেড়ে কথা বলবোনা ভাইয়া!”
“বেস্টফ্রেন্ডকে এ অবস্থায় দেখে সহ্য করতে পারছোনা তাইনা?অথচ আমি আমার বেস্টফ্রেন্ডকে এর চাইতেও বি*শ্রীভাবে দেখেছি!ম*রে যাচ্ছিলো সে।আর তার জন্য কে দায়ী জানো?তোমার এই বাচ্চা বেস্টফ্রেন্ড।যার জন্য তুমি আদব-কায়দা ভুলে গিয়ে আমার কলার পর্যন্ত ধরে ফেলেছো!”
“তাই বলে আপনি চাঁদের সাথে এরূপ করবেন ভাইয়া?ওকে মে*রে ফেলতে চাবেন?সে না আপনার বউ?বিয়ে করেছেন?আপনি না তাকে খুব ভালোবাসেন?”
এমতাবস্থায় কেবিনে প্রবেশ করে মির,তার পিছু এসেছে মিরাও।কেবিনে ঢুকেই ফায়ান আর প্রণয়কে এমন অবস্থায় দেখে ভ!ড়কে যায় মির।কপাল কুচকে রেখে তাদের কথোপকথন শুনে এবং বুঝতে পেরে ফ্লোরের পানে চেয়ে চাঁদকে সেই অবস্থায় দেখে দৌড়ে আসে চাঁদের দিকে।হাটুর উপর চাঁদের মাথা নিয়ে কিছুক্ষণ ডাকে তাকে।চাঁদ সেন্সলেস হয়েছে বুঝতে পেরে জলদি করে চাঁদকে কোলে তুলতেই রিহাও প্রবেশ করে কেবিনে।অতঃপর এ অবস্থা দেখে ভ!ড়কে মিরকে জিজ্ঞেস করে,
“কী?কী হয়েছে চাঁদের?কীভাবে হয়েছে?কে করেছে এসব?”
মির ব্যতিব্যস্ত হয়ে বলে,
“এখন এতো সময় নেই রিহু।তুই জলদি ফায়ানকে নিয়ে ওটিতে আয়।আর তোর যদি ইচ্ছে থাকে আসতে পারিস”
শেষের কথাটা মিরার উদ্দেশ্যে বলেই দ্রুতগতিতে চাঁদকে নিয়েই কেবিন থেকে প্রস্থান করে মির।মিরের কন্ঠ পেয়েই সে পানে তাকিয়ে চাঁদকে নিয়ে যেতে দেখে প্রণয়কে ছেড়ে দিয়ে ফায়ানও দ্রুত পা চালিয়ে মিরের পিছু যায়।সাথে পা বাড়ায় রিহাও।যেতে গিয়েও থেমে গিয়ে মিরার পানে চেয়ে বলে,
“খুব খুশি হয়েছিস তাইনা?হওয়ারই তো কথা।এটাইতো চেয়েছিলি তুই।দোয়া করিস যেনো মেয়েটা ম*রে যায়।তোর অরণের প্র*তিশোধ পেয়ে যাবি তুই”
বলে আর এক মুহুর্ত দাড়ায়না রিহা।
চাঁদকে ওরূপ অবস্থায় দেখে কিছুক্ষণের জন্য পাঁচ বছর আগের ঘটনা স্মৃতিপটে ভেসে উঠে মিরার।অরণেরও তো এমন হয়েছিলো!এর চাইতেও বেশি র*ক্তা*ক্ত ছিলো সে।অতঃপর আজ?আজ তার কি করুন দশা!এমতাবস্থায় রিহার ওসব কথা শুনে বুকের ভেতরটা আরও ভারী হয়ে আসে মিরার।সে তো এমনটা চায়নি।সে তো চায়নি কাউকে মে*রে ফেলতে বা তার বদদোয়ার জন্য কেউ মা*রা যাক।সে চেয়েছিলো মেয়েটা শাস্তি পাক।তবে এমনভাবেতো সে চায়নি!কেনো করলো এমনটা প্রণয়?সে না চাঁদকে অসম্ভব ভালোবাসতো?আর কেউ জানুক না জানুক তার বন্ধুমহলের সবাইতো জানতো!মিরাও তো জানতো।এই একটা মেয়ের জন্য প্রণয়ের দুনিয়া ওলোটপালট হয়ে গিয়েছিলো!এই মেয়েটাইতো জীবনকে কিভাবে রঙিন করতে হয়,সাজাতে হয় সবটা প্রণয়কে শিখিয়েছিলো!যাকে ছাড়া ছেলেটার একেবারেই চলতো না তার সাথে এমন কুৎসিত ব্যবহার সে কি করে করতে পারলো?তার কি হাত কাপলোনা?বুকটাও কি কাপলোনা?ভাবতে ভাবতেই এগিয়ে আসে প্রণয়ের পানে।অতঃপর শীতল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বিরাট লম্বা এক শ্বাস নিয়ে বললো,
“তুই এমনটা কি করে করতে পারলি রে?”
মিরার কথা শ্রবণ হতেই তার পানে তাকায় প্রণয়।অতঃপর দৃষ্টি আড়াল করে গম্ভীরভাবে বলে,
“যে যার প্রাপ্য সে তাই পায়”
“দৃষ্টি কেনো লুকাচ্ছিস প্রণয়?তুই যে ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটা করিস নি তা আর কেউ না জানলেও আমি বুঝতে পেরেছি।তুই অরণের প্রতি পজেসিভনেসে ভুলবশত কাজটা করে ফেলেছিস,তাইনা?কিন্তু এখন মানতে চাচ্ছিস না,তাইতো?তুই কি চাচ্ছিস আমরা সবাই ভাবি তুই চাঁদকে ঘৃ*ণা করিস?”
“এখানে মানা না মানার কিছু নেই মিরা।আমি তাকে ঘৃ*ণা ব্যতীত আর কিছুই করতে পারিনা,করিনা”
মিরা স্মিত হেসে বলে,
“তাই না?কিন্তু আমি যে তোর চোখের গভীরতায় আজও মেয়েটার জন্য বিশাল প্রেম দেখি?”
দৃষ্টি এলোমেলো করে খানিকটা অস্থিরতা নিয়ে প্রণয় বলে,
“বাজে বকিস না”
মিরা এবার গম্ভীর হয়ে বলে,
“ওখানে ফায়ান ব্যতীত আর কেউ সার্জন নেই।তোর যাওয়া উচিত”
এবার মিরার পানে দৃষ্টি রেখে প্রণয় বলে,
“এখন এটাকে কী বলবি তুই?ছোট বোনের প্রতি টান,ভালোবাসা নাকি কেবলই মানবিকতা?”
“মানবিকতা বৈ কিছুনা”
“আচ্ছা তবেতো সেখানে তোর যাওয়া উচিত।আমিতো হার্ট সার্জন।ওসব মাথা টাথার কাজতো আমি পারিনা।তুই পারিস।অরণের এ অবস্থা হওয়ার পরতো সিদ্ধান্ত নিলি নিউরোলজিস্ট হবি।তো তুই যা আরফিদকে হেল্প কর।আমি এসবে থাকতে চাইনা।তাছাড়া এ কান্ডের পর ওরা আমায় মোটেও ভেতরে যেতে দেবেনা।তো তুই ই যা”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ওটির বাইরে দেয়ালে হেলান দিয়ে চেয়ারে বসে আছে প্রণয়।বাহু দ্বারা দু’চোখ তার বন্ধ।ঘাড় খানিকটা ব্যথা হয়ে যাওয়ায় দৃষ্টি মেলে ঘাড় খানিকটা নাড়াচাড়া করায় সে।অতঃপর হাতঘড়ির দিকে চেয়ে দেখে প্রায় তিন ঘন্টা হয়ে আসলো অথচ কোনো খবর সে পাচ্ছেনা।বা কেউই বের হচ্ছেনা।হঠাৎ করেই হৃদস্পন্দন তীব্র হলো তার।খানিকটা কি ভয়ও পেলো?প্রিয় কিছু হারিয়ে ফেলার?নাকি কেবলই অপ*রা*ধবোধের দরুন?
আরও মিনিট ত্রিশেক বাদে সর্বপ্রথম বেরিয়ে এলো মির।মির বেরুতেই দ্রুত পা চালিয়ে মিরের সামনে এসে প্রণয়ের কিছু বলার পূর্বেই তার পানে চেয়ে কোনোকিছু না বলেই তাকে এড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেলো মির।মিরের খানিক পরে বেরুলো রিহা।রিহাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে নিলে সে মুখ ভাড় করে বলে,
“আমি তোর সাথে কোনোপ্রকার কথা বলতে ইচ্ছুক নই”
বলে সেও প্রস্থান করে।এবার বের হয় মিরা।মিরা আসতেই প্রণয় বলে,
“চাঁ…চাঁদের এখন….”
প্রণয়কে আস্বস্ত করে মিরা বলে,
“চিন্তা করিস না।ক্ষ!ত ততটা হয়নি তবে অনেক র*ক্ত গিয়েছিলো।বেশ দুর্বল এখন।জ্ঞান ফিরেনি তবে আশা করছি রাত্রের মধ্যেই ফিরবে।আর সবাই তোর সাথে রেগে আছে।বিশেষ করে মির”
মিরার পরপরই ফায়ানও বের হয়।ফায়ান বের হয়ে মিরার কথা শুনতে পেয়েই বলে,
“আপনার বন্ধু কাজই এমন করেছে যার জন্য কেবল রাগ করাই যথেষ্ট নয়।আমি অবশ্যই তার এবং তার ওয়াইফের পরিবারে বিষয়টা জানাবো।তাদেরও তো জানা উচিত তাদের ছেলের কারসাজি এবং কেমন পুরুষের কাছে মেয়ে তুলে দিয়েছে যার কাছে তাদের মেয়ে নিরাপদ ই নয়”
ফায়ানের কথার প্রেক্ষিতে শোনা যায় প্রণয়ের শীতল কন্ঠস্বর,
“তুমি এমন কিছুই করবেনা আরফিদ।আজকের ঘটনা আমরা ছ’জন ব্যতীত আর কেউ জানবেনা।জেনে গেলে এটাও অবশ্যই জেনে যাবে কেনো তোমার বান্ধবীর এ দশা হয়েছে।অতঃপর অতীতের সমস্ত কিছু টে*নেহিঁ!চড়ে বেরিয়ে আসবে।আশা করছি তুমি চাইবেনা তোমার বান্ধবীর কোনো ক্ষতি হোক”
খুব ভোরের দিকে চাঁদকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে প্রণয়।নিজের কাছে থাকা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে গেট খুলে বাড়িতে ঢুকতেই হলরুমে সোফার উপর হেলান দিয়ে তার মা পুষ্পিতা জামানকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে কপাল কুচকে আসে তার।চাঁদকে রুমে রেখে এসে তারপর মাকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয় সে।হয়তো তার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন।তাই ধীর গতিতে যেতে নিলেই ফজরের আযান পড়ে যায়।আযানের সুরে ঘুম আলগা হয়ে যায় পুষ্পিতা জামানের।অতঃপর চোখের সম্মুখে ছেলের কোলে ছেলের বউকে আ!ঘা!তপ্রাপ্ত অবস্থায় দেখে হুড়মুড়িয়ে উঠে দৌড়ে ছেলের সামনে এসে ব্যতিব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেন,
“কিরে চাঁদের কী হয়েছে?মাথায়,হাতে ব্যান্ডেজ কেনো?আর কাল বিকেলের পর কোথায় ছিলি তোরা?তুইতো হসপিটাল ছিলি আর চাঁদও বললো বাইরে যাচ্ছে জলদি আসবে।কিন্তু আসলোনা।আমি খুব চিন্তায় ছিলাম।বাড়ির সবাই ই চিন্তিত ছিলো।চাঁদের এ দশা কি করে হলো?কী হয়েছে কিছু বল?”
“মা,মা,মা!আস্তে আস্তে।শান্ত হও আগে।আমি চাঁদকে রুমে রেখে আসছি।তুমি বসো।এসে সব বলছি”
সকালবেলা,
ঘুম থেকে উঠে হাত নাড়াতে গেলেই হাতে এবং মাথায় বেশ চাপ পড়ে চাঁদের।ডান হাতে খানিকটা সুচের মতোও বিঁ!ধে যার দরুন দ্রুতগতিতে চোখ খুলতে হয় তাকে।অতঃপর ডান হাতে ক্যানোলা লাগানো দেখে বেশ চমকায় চাঁদ।আশেপাশে নজর বুলিয়ে নিশ্চিত হয় এটা প্রণয়েরই রুম।তবে?মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ করতেই গতকাল বিকালের কথা স্মরণ হয় তার।এক নিমিষেই বুক ভার হয়ে আসে।সেইসাথে বেরিয়ে আসতে চায় চাপা দীর্ঘশ্বাস।তবে আজ আর সে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে পারেনা।বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে।নিজেকে খুব নিকৃ!ষ্ট মনে হচ্ছে তার।কেনো সেদিন পালিয়েছিলো সে?না পালালেতো আজ প্রণয়ের ঘৃ*ণার পাত্রী সে হতোনা!সব সত্যিটাও প্রণয়ের জানা হতো।আগের মতো ভালোবাসতো তাকে।প্রকাশ নাহয় নাই করতো।তবে ভালো তো বাসতো নাকি?এখন যে ভালোও বাসেনা তাকে।কেনো বাসেনা?একটুখানি ভালোবাসলে কি খুব ক্ষতি হতো?অতঃপর আবার ভাবে।না!তাকেতো ভালোবাসা যায়না।সেতো প্রণয়ের ভালোবাসার যোগ্যই না।এমন মেয়েকে কি কেউ ভালোবাসতে পারে?আদোতে কেউ বাসবে?বাসা যায় কি?সেতো কারো বাড়ির বউ,কারো স্ত্রী,কারো ভালোবাসার মানুষই হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা।তবুও কেনো নিয়তি তাকে প্রণয়ের কাছেই এনে দাড় করালো?পাঁচ বছর আগে যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখান থেকে চলে গেলো কেনো আজ তা এভাবে বদলে গেলো?আজকের এই দিন দেখার জন্যই কি সেদিন সে ওভাবে পালিয়েছিলো?ভাগ্য কি তার আগেই নির্ধারিত ছিলো?তার সাথে জীবন এভাবে খেলা করবে?যাকে ছাড়া ছেলেটার এক মুহুর্ত চলতোনা সেই ছেলেটা তাকেই মৃ*ত্যুর সম্মুখ করতেও দ্বিধাবোধ করলোনা?সে কি এতোটাই জঘন্য?অতঃপর চোখজোড়া বন্ধ করে ডুব দিলো অতীতে।যখন প্রণয় নামক তার বিড়ালাক্ষী মানবটি তাকে অসম্ভব ভালোবাসতো।একটু একটু করে তাদের প্রেমের সূচনা ঘটেছিলো।যে প্রেম মনের অন্তরালে লুক্কায়িত ছিলো।সে যে অসীম প্রেম!সমুদ্রের চেয়েও গভীর,আকাশের চেয়েও বিশাল!
অতীতপাতা~
আজ চাঁদের দু’মাস পূর্ণ হলো তার স্বপ্নের ঢামেকে প্রবেশ করার।স্বপ্নকে জয় করার সূচনা সে করেছে।শেষটা যেনো সুন্দর হয়।ভীষণ সুন্দর!এই প্রত্যাশা নিয়েই রোজ মেডিকেলের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় সে।সবকিছু কেমন স্বপ্ন স্বপ্ন লাগে।সে কস্মিনকালেও ভাবেনি সবকিছু এতো সুন্দর হবে।সবাই তাকে এতোটা পছন্দ করবে,এতো স্নেহ করবে।শুধুই কি টপ করেছে বলে?নাকি সে তার মার্জিত ব্যবহারেও অনেকের মন জয় করতে পেরেছে?হ্যা,পেরেছেতো!কয়েকজন সিনিয়রের তো সে প্রিয়!আর অনেকগুলো বন্ধুওতো সে পেয়েছে।প্রিয় কতগুলো প্রফেসর পেয়েছে।সবাই তো তাকে ভীষণ ভালোবাসে।সেও বাসে,সম্মান করে।তবে কোথাও একটা শূন্যতা অনুভূত হচ্ছে।কেমন সেই শূন্যতা?কেনোই বা এ শূন্যতা?শূন্যতাটা কি সেই বিড়ালাক্ষী মানব?যে কেবলই তাকে অ!পমান ব্যতীত আর কিছুই করতে পারেনা?সেতো সব মেয়ের সাথেই এমন করে।এটাতো নতুন কিছুনা।তবে চাঁদের কেনো বিষয়টা মানতে অসুবিধা হচ্ছে?কলেজে এসে এ পর্যন্ত অনেক ছেলেই সে দেখেছে।তবে এমন ছেলে আর দু’টো দেখেনি।কি এমন আকর্ষণীয় ভাব তাতে বিদ্যমান?যার দরুন চাঁদ বারবার তার দিকে সম্মোহিত হয়?নাকি ছেলেটা তাকে এড়িয়ে চলছে বলে বিষয়টা মেনে নিতে পারছেনা সে?সেদিনের পর আর ছেলেটার সাথে দৃষ্টি তার মেলেনি।যখনই পেরেছে তাকে সূক্ষ্মভাবে এড়িয়ে গিয়েছে ছেলেটা।চাঁদও যে তাকে এড়িয়ে চলে নি এমনটা না।সেও এড়িয়ে চলেছে।এবং প্রথম থেকেই চলেছে।যেদিন থেকে ছেলেটা প্রথম তাকে অ!পমান করলো ঠিক সেদিন থেকেই।অতোটা অ!পমানবোধ চাঁদ নিতে পারেনি।তাই এই মানব থেকে দূরে থাকাকেই সে শ্রেয় মনে করেছে।তবে প্রায়শই তাকে দেখতে পেয়ে,যার তার মুখে তার সম্পর্কে বারংবার শুনতে পেয়ে,জানতে পেরে কৌতূহল বেড়েছে বৈ কমেনি।এজন্যই কি এই শূন্যতা?সে কি অন্যসব মেয়েদের মতো ছেলেটার প্রেমে পড়লো?নাকি কেবলই ছেলেটার ব্যক্তিত্ব ভালোলেগেছে?এসব ভাবতে ভাবতেই হাইওয়েতে উঠে আসে চাঁদ।অতঃপর ব্যাগ থেকে ফোন বের করতে করতে মনে মনে বলে,
“এসব ভাবনা তোকে মানায়না চাঁদ।প্রেম-ভালোবাসা এসব কেবলই ভুয়া,কেবলই ফক্কিকার!”
কিন্তু চাঁদ কি জানতে পেরেছিলো?তার জীবনেও প্রেম আসবে?এবং এমনভাবে আসবে তার দুনিয়া ওলোটপালোট করে ছাড়বে?যেই প্রেম তাকে সর্বহারা করে দেবে?যেই প্রেমে মত্ত হয়ে তার মাঝে সে নিজের ধ্বংসত্ব খুঁজে পাবে?
To be continued….
[বিঃদ্রঃশুরুতেই বলে নিচ্ছি।আজ থেকে অতীত শুরু হলো।তাই যাদের অতীত ভালো লাগবে না কাইন্ডলি ইগনোর করবেন।আর গল্পটা অবশ্যই বড় হবে।এ কথা আগেও বলেছিলাম।কারণ এটা একধরণের উপন্যাস।আর হ্যা এটাও জানিয়ে দিচ্ছি যে এই গল্পের মেইন থিমটা অতীত জুড়েই।এবং এর মেইন যেই প্লট টা সেটা অতীতকে ঘিরেই।অতীত বলতে যে চাঁদের সাথে কী হয়েছে সেসবকিছু,এগুলা ভেবে থাকলে ভুলও না আবার সঠিকও না।রহস্য অবশ্যই উন্মোচন হবে।এবং গল্পের নামের সাথে অবশ্যই গল্পের মিল থাকবে।সেজন্য অতীতকে নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করা অত্যাবশকীয়।তাই যাদের অতীত ভালো লাগবেনা অদ্ভুত মন্তন্য না করে ইগনোর করবেন।আর রিকুয়েষ্ট,বর্তমান নিয়ে উঠে পড়ে লাগবেন না।গল্পটাকে যেভাবে সাজানো হয়েছে ওভাবেই পরিবেশিত করা হবে।অতীত আজ থেকে শুরু হলো এবং কবে পর্যন্ত অতীত চলবে এটা আমি বলতে পারছিনা।পড়তে থাকুন আশা করি শেষ পর্যন্ত পড়লে পুরো গল্পটাই ভালো লাগবে।আর হ্যা গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক]