#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৫৩.
চাঁদের দ্বিতীয় হওয়ার বিষয়টা মেনে নিতে পারছেনা ফায়ান।সেইসাথে কলেজেও ছড়িয়ে পড়েছে,কানে গেছে প্রণয়ের বন্ধুমহলের সকলেরই।সবাই বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ়।এ যেনো হওয়ার নয়,হতে পারেনা কখনো।ফায়ান গেছে প্রিন্সিপালের কেবিনে এই ব্যাপারে আলোচনা করতে।কেবিনের বাইরে পাইচারি করছে চাঁদসহ তার বন্ধুবান্ধবেরা।চাঁদ বিরক্তিতে কপাল কুচকে বললো,
“আমি বুঝতে পারছিনা সামান্য একটা বিষয় নিয়ে তোরা এতো মাতামাতি করছিস কেনো?”
তৎক্ষনাৎ ইপ্সির জবাব,
“তোর কাছে এটা সামান্য মনে হচ্ছে?”
“সামান্যকে সামান্য মনে হবেনা তো কী হবে?”
অবনী চ!টে গিয়ে ইফাদকে বলে,
“এই ওকে এখান থেকে নিয়ে যাতো।এক্ষুনি যা মেজাজ খারাপ হচ্ছে”
চাঁদ কিছু বলার পূর্বেই অবনী গ!র্জে বলে,
“ইপ্সি,ইফাদ আমি বলেছি চাঁদকে নিয়ে এক্ষুনি ক্যাম্পাসে যাবি।আমি ফায়ানের সাথে আসছি।আর কোনো কথা শুনতে চাচ্ছিনা আপাতত”
চাঁদ যেতে না চাইলে ইফাদ আর ইপ্সি জোর করে তাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে।তার কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাজির হয় প্রণয়ের বন্ধুমহল।আসে ফায়ান আর অবনীও।তারা আলোচনায় মত্ত হয় চাঁদকে নিয়ে।চাঁদ বিরক্ত হয়ে বলে,
“মানে সমস্যাটা কী?সামান্য একটা রেজাল্টে এরকম করার কী আছে বুঝতে পারছিনা আমি।এমনতো না যে ম!রে পড়ে আছি?”
মির সামনে এসে তেতে উঠে বলে,
“থা!পড়িয়ে গালের সবক’টা দাত ফেলে দেবো বেয়াদব মেয়ে”
মিরের পানে অসহায় দৃষ্টি রেখে চাঁদ শুধায়,
“ভাইয়া!”
ফায়ান হতাশ সুরে বলে,
“প্রিন্সিপাল স্যার বললেন এক নম্বরের তফাৎ শুধু।আমি নাকি এক বেশি পেয়েছি।দশবারের বেশি একেকজন করে রিচেক দিয়েছে।কোনোক্রমেই কিছু হয়নি।তাই উনারা চেয়েও চাঁদকে প্রথম করতে পারেননি।সবার আশা ছিলো চাঁদকে নিয়েই কিন্তু কিছু নাকি করার নেই”
“হ্যা তো এতে সমস্যা কোথায় ফায়ান?তুমি ফার্স্ট হয়েছো আ’ম মাচ হ্যাপি উইথ দ্যাট”
“বাট আয় আম নট।আমি বিষয়টা মানতে পারছিনা চাঁদ”
“না মানার কী হলো?”
মিরা সামনে এসে বলে,
“এরকম একটা রেজাল্ট কী করে হলো চাঁদ?তোমার এটা মিস কী করে যেতে পারে?আমরা সবাই তোমার ডেডিকেশন দেখেছি।তারপরেও?”
“এখন হয়েতো গেছেই।এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই আপু”
হঠাৎ কোনো পুরুষালি কন্ঠে কেপে উঠে চাঁদ,
“প্রেমে মজলে রেজাল্ট একটু আকটু এমন হয়ই।এতে কিচ্ছু যায় আসেনা।তাইনা চাঁদ?”
কপাল কুচকে রিহা জিজ্ঞেস করে,
“কিসব বলছিস প্রণয়?”
থমথমেভাবে প্রণয় জবাব দেয়,
“যা বললাম তাইতো শুনলি”
“শুনেছি তবে বুঝিনি”
“অতো বোঝাবোর ইচ্ছা বা রুচি কোনোটাই নেই।এসব জিনিসে মাথা না ঘাটিয়ে ইন্টার্নশিপে মনোযোগ দে।ইট উড বি মাচ বেটার দ্যান দিজ”
অরণ সামনে এসে জিজ্ঞেস করে,
“কী বলতে বা বোঝাতে চাচ্ছিস তুই?”
“কী বোঝাতে চাইছি তাতো তুই আর তোর গার্লফ্রেন্ড জানিসই”
সকলে প্রণয়ের এরূপ কথায় ভীষণভাবে বিস্মিত হয়।হয় অরণও।সে বিস্ময়ে কপাল কুচকে বলে,
“গার্লফ্রেন্ড?”
“হ্যা”
মিরা প্রণয়ের সামনে এসে জিজ্ঞেস করে,
“গার্লফ্রেন্ড?কার গার্লফ্রেন্ড?অরণের?”
“হ্যা”
রবিন সামনে এসে বলে,
“তুই কি পাগল হয়েছিস প্রণয়?”
প্রণয়ের সহজ উত্তর,
“না তো!”
মিরের প্রশ্ন,
“তবে এমন উদ্ভট কথা বলছিস কেনো?”
গম্ভীরভাবে প্রণয় জবাব দেয়,
“কেনো বলছি তা অরণের কাছেই জিজ্ঞেস কর”
সকলের দৃষ্টি অরণের দিকে পড়তেই অরণ বলে,
“আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।তুই আসলে বলতে টা কী চাচ্ছিস?”
মিরার হঠাৎ প্রশ্ন,
“অরণের গার্লফ্রেন্ড কে?কার কথা বলছিস তুই?”
“যাকে এতক্ষণ ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিলি তোরা।সে বাদে আর কে ই বা হতে পারে?”
হঠাৎ অরণ গ!র্জে উঠে,
“প্রণয়!”
“ডোন্ট লাউড।চেচালে সবটা বদলে যাবেনা”
প্রণয়ের সামনে এসে নিজেকে যথেষ্ট সামলে তার বাহুতে হাত রেখে অরণ বলে,
“উলটা পালটা কি কিছু খেয়েছিস?চাঁদকে আমি…..”
অরণের হাত সরিয়ে তাকে মাঝপথেই থামিয়ে দিয়ে প্রণয় বলে,
“ভালোবাসিস।অ্যান্ড আয় আম টু মাচ হ্যাপি বাউট দ্যাট।কংগ্রেচুলেশন্স টু বোথ অফ ইউ গাইজ”
কথাটা বলেই চাঁদের পানে তাকায় প্রণয়।চাঁদ তার পানেই তাকিয়ে ছিলো।দৃষ্টি মিলতেই দৃষ্টি সরিয়ে নেয় প্রণয়।কিন্তু সরায় না চাঁদ।সে সেভাবেই এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে তার পানে।অরণ চাঁদের কাছে এসে বলে,
“প্রণয়কে কিছু বলো চাঁদ।কিসব বলছে ও?”
কোনো জবাব দেয়না চাঁদ,পলকহীন তাকিয়ে থাকে প্রণয়ের দিকে।তা দেখে চাঁদকে ঝাকিয়ে অরণ বলে,
“চাঁদ?কিছুতো বলো”
প্রণয় হতে দৃষ্টি সরিয়ে অরণের দিকে তাকিয়ে চাঁদ বলে,
“কী বলবো?”
চাঁদের উত্তর শুনতেই প্রণয় বলে,
“সেটাইতো!কী বলবে?কী ই বা বলার আছে?আর তুই ই বা কী শোনাতে চাস অরণ?”
অরণ প্রণয়ের সামনে এসে অবিশ্বাস্য চাহনী নিক্ষেপ করে বলে,
“আমার ভাবতেই অবাক লাগছে তুই সেই প্রণয়ই যে তার প্রিয়বন্ধুর চোখ দেখেই মনের ভাব বুঝে ফেলতি?নাকি তার বেশে অন্য কেউ দাঁড়িয়ে আছিস হা?বল?”
বলেই প্রণয়কে ধাক্কাতে আরম্ভ করে অরণ।ধাক্কাতে ধাক্কাতে পেছন দিকে ধাবিত করে বলে,
“হ্যা বল?তোর মনে আমাকে আর চাঁদকে নিয়ে এরূপ ধারণা আসেও কী করে হা?তুই না জানতিস?জানতিস না আমার মনের অবস্থা?তবুও এমন এক বি!শ্রী জিনিস তোর মস্তিষ্কে আসেও কী করে?”
চোয়াল শক্ত করে থেমে গিয়ে প্রণয়ও অরণকে পালটা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে,
“হ্যা জানতাম!জানতাম বলেই মানুষের বলা কথায় বিশ্বাস করিনি।সময় নিয়েছি,সবটা পর্যবেক্ষণ করেছি।অতঃপর বুঝতে পেরেছি মানুষ বদলায়!সবচাইতে আপন মানুষগুলোই সর্বোচ্চ দুঃখ দিতেও পিছুপা হয়না”
আবারও অরণ তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে,
“কী পর্যবেক্ষণ করেছিস হ্যা?কী দেখেছিস তুই?দেখেছিস টা কী?যার ভিত্তিতে এমন নিকৃ*ষ্ট কথা বলতে তোর মুখে একবারও বাধলো না?”
দুজনের মাঝে একে অপরকে ধাক্কানোর প্রতিযোগিতা নেমেছে যেনো!প্রণয়ও পালটা ধাক্কিয়ে বলে,
“না বাধলোনা।একদমই বাধলোনা।বাধবে কেনো?তোর বেধেছিলো?ভেবেছিলি একবারও?যে বন্ধুর…..”
বাক্য সম্পন্ন না করে সেখানেই থেমে যায় প্রণয়।দাতে দাত চেপে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে স্থির হয় সে।তা দেখে তাচ্ছিল্যময় হাসি হেসে অরণ বলে,
“হ্যা বল?বল না?বন্ধুর কী?”
“কী বল?বলছিস না কেনো?”
দাতে দাত চেপে নাসারন্ধ্র প্রসারিত করে নিশ্বাস নেয় প্রণয়।তা দেখে অরণ আবারও বলে,
“কী জবাব নেই?নাকি দিতে চাচ্ছিস না?যা তোর কথাই মেনে নিলাম!এতোই যখন ভাবছিস ওর সাথে আমার কিছু আছে।হ্যা আছেই!ধরে নে আছেই।তাতে তোর কী?কী তোর হ্যা?তোর কী যায় আসে তাতে?”
বলতে বলতে প্রণয়ের বুকে ধাক্কা দেয় অরণ।তখনই অরণের কব্জি ধরে প্রণয় গম্ভীরভাবে বলে,
“আমায় ভোলাতে বাধ্য করিস না যে তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড অরণ”
“বেস্টফ্রেন্ড কীসের বেস্টফ্রেন্ড হ্যা?আমি তোর বেস্টফ্রেন্ড?বেস্টফ্রেন্ড বলেই কী বেস্টফ্রেন্ডের নামে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছিস?তাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছিস?কার না কার কথায় এসে তুই আমার আর চাঁদের ক্যারেক্টারে আ!ঙুল তুলছিস?এই ই তোর বেস্টফ্রেন্ডশিপের নমুনা?আরে এমন ফ্রেন্ডশিপ আমি আমার শত্রুরও কাম্য করিনা!”
কথাটা শোনামাত্রই প্রণয় চেচিয়ে অরণের গাল বরাবর হাত নিয়ে থেমে যায়,
“অরণ!”
প্রণয়ের এরূপ কান্ডে তার বন্ধুরা সকলে তাদের জেঁকে ধরে।মিরা এসে অরণকে সরিয়ে বলে,
“তোরা কী পাগল হয়েছিস?”
রিহাও সামনে এসে বলে,
“আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে প্রণয়।তুই অরণের নামে এমন কিছু বলতে পারিস?তার গায়ে হাতও তুলছিলি?ছিহ!”
রবিন প্রণয়ের পাশে এসে বলে,
“হঠাৎ করে এতোটা বদলালি কী করে রে প্রণয়?”
মির প্রণয়ের কাধে হাত রেখে বলে,
“তুই অরণ আর চাঁদকে নিয়ে এমনটা ভাবলিও কেমন করে রে?এজন্যই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিস?তুই অরণকে নিয়ে এমনটা ভেবেছিস?অরণকে?সিরিয়াসলি প্রণয়?”
প্রণয় মিরের হাত সরিয়ে বলে,
“আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না তো?”
তখনই ফায়ান সামনে এসে বলে,
“অবিশ্বাস্য কথা বললে কেউই বিশ্বাস করবেনা ভাইয়া”
পকেট থেকে ফোন বের করে ফায়ানের দিকে তা দেখিয়ে প্রণয় বলে,
“তবে এগুলো কী?কী এসব আরফিদ?এগুলোও বিশ্বাস করিনি।তবে নিজ চোখকে কি ফাকি দেয়া যায়?”
ফায়ান থমথমেভাবে বলে,
“কী দেখেছেন আপনি?”
কথাটা শুনে অরণ আর চাঁদের দিকে চেয়ে ঠোট বাকিয়ে প্রণয় বলে,
“এমন কিছুই দেখেছি যা কাউকে বলার মতো নয়”
ঝড়ের বেগে এসে প্রণয়ের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে চাঁদ নিখুঁতভাবে ফোনে আঙুল চালিয়ে চালিয়ে সবটা দেখতে থাকে।পাশে এসে দাঁড়ায় অরণও।সেও সবটা দেখে।দেখার পর প্রণয়ের পানে তাকায়।তাকিয়ে থেকে তার কাছে আসতে আসতে বলে,
“বিশ্বাস কর প্রণয়।তুই যেমনটা ভাবছিস তেমনটা নয়।এগুলো ছবি।এগুলোতে যা বোঝানো হয়েছে আমাদের মাঝে তেমন কিছুই নেই।বিশ্বাস কর তুই”
“তাহলে বলতে চাচ্ছিস এই ছবিগুলো মিথ্যা?”
“মিথ্যা না।আমরাই আছি তবে তুই সবটা যেভাবে দেখছিস সেভাবে না।আর এই ভিডিও।এটা সেদিনের যেদিন চাঁদ আর আমি….”
অরণকে থেমে যেতে দেখে প্রণয় বলে,
“হ্যা চাঁদ আর তুই?বল?থেমে গেলি কেনো?চাঁদ আর তুই কী?”
তখনই অরণের পাশে মিরা এসে বলে,
“থাম তুই।আমরা বিশ্বাস করি তোকে আর চাঁদকেও।আমরা জানি এমন কিছুই না।প্রণয়ের কোথাও ভুল হচ্ছে।হাইপার হস না”
পূর্ণতাও অরণের কাধে হাত রেখে বলে,
“এতোদিনে বুঝলাম প্রণয়ের বদলে যাওয়ার কারণ।তবে আমি অবাক হয়েছি ওর এরূপ অবিশ্বাস দেখে।আরে আমরা কী করেছিলাম বলবি?এখন কী আমাদের নামেও মিথ্যা কোনো ট্যাগ লাগাবি?”
“পূর্ণ তুই….”
“কী পূর্ণ তুই?তুই অরণকে নিয়ে?সিরিয়াসলি প্রণয়?অরণকে নিয়ে এমনটা কী করে ভাবতে পারিস?অন্য কেউ হলেও মানা যেতো বাট অরণ!শেম অন ইউ প্রণয়”
রিহা থমথমেভাবে বলে,
“তোরা একে অপরের সাথে ঝগড়া করা থামা।আমরা প্রণয়কে বোঝাবো সবটা।আমি জানি ও বুঝবে।আমাদের মধ্যে প্রণয় আর মিরাই সবচাইতে বুঝদার।আমার বিশ্বাস আমরা সবাই মিলে বোঝালে ও বুঝবে”
প্রণয় রিহার কথার প্রেক্ষিতে বলে,
“কী বোঝাবি তোরা?এটাই যে এসব মিথ্যা?আমি আমার চোখে যা দেখেছি সেসব মিথ্যা?আমি বানোয়াট জিনিস বলছি তোদের?আমাকে অবিশ্বাস করছিস তোরা?”
অরণ আবারও প্রণয়ের সামনে গিয়ে তাকে ধরে চাঁদের সামনে এনে বলে,
“তাকাতো মেয়েটার দিকে।তোর আদোতে মনে হয় মেয়েটার চোখে অথবা অন্তরে আমার জন্য ছিটেফোঁটাও কিছু আছে?অথবা আমার?তুই কী দেখেছিস আমি জানিনা।তবে যাই দেখেছিস ভুল দেখেছিস অথবা ভুল ভেবেছিস।একটাবার আমায় বললিও না?”
“কী বলতাম তোকে?এটাই যে চাঁদের সাথে তোর কী?এতো ঘোরাফেরা করছিস কেনো?আর আপনি?অরণের মতো আপনারও কি কিছু বলার আছে?কৈফিয়ত দিতে চান কোনো?”
শেষের কথাগুলো যে চাঁদকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তা বুঝতে পেরে চাঁদ খানিকটা হেসে দুই ভ্রু উচিয়ে বলে,
“কৈফিয়ত?কিসের কৈফিয়ত?কাকে দেবো?আপনাকে?কে আপনি?যে আপনাকে আমার কৈফিয়ত দিতে হবে?যে নিজের ছেলেবেলার বন্ধুকেই বিশ্বাস করেনা তাকে দেবো কৈফিয়ত আমি?কেনো দিবো?কী ভুল করেছি যে কৈফিয়ত দেবো?আমারতো মনে পড়ছেনা আমি কোনো ভুল করেছি।আর যার সাথে হেসেখেলে বড় হয়েছেন তাকেই বিশ্বাস করছেন না,আর আমাকে করবেন?অসম্ভব!”
কথাগুলো বলেই সেখান থেকে দ্রুত সরে আসে চাঁদ।হাটা ধরে কলেজ গেটের দিকে।উদ্দেশ্য কলেজ থেকে বের হয়ে যাওয়া।তার পিছু ধরে ইপ্সি,অবনী,ইফাদসহ ফায়ানও।মির যেতে নিলেই প্রণয় বলে,
“তুই কেনো যাচ্ছিস?যাওয়ার তো কথা অরণের।কিরে যা।তোর গার্লফ্রেন্ড রেগে চলে গেলো।রাগ থামা গিয়ে!”
দাতে দাত চেপে প্রণয়ের পানে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে চাঁদের পিছু হাটা ধরে অরণ।অরণ যেতেই উচ্চশব্দে হেসে উঠে প্রণয়।এভাবে হাসতে কেউ কখনো দেখেনি তাকে।বিস্ময়ে সবাই কপাল কুচকাতে প্রণয়ের হাসি যেনো আরও বাড়ে।তা দেখে পূর্ণতা বলে,
“সমস্যা কী তোর?”
হাসতে হাসতেই প্রণয় জবাব দেয়,
“কই কিছুনাতো”
রিহা বলে,
“হাসছিস কেনো তবে?”
হাসা খানিকটা থামিয়ে প্রণয় বলে,
“তোরা না বলছিলি কিছু নেই?দেখলি?দেখলিতো কিভাবে দৌড়ে গেলো!যেনো ওর জান টা বেরি!য়ে যাচ্ছিলো”
কথাখানা বলে সশব্দে হেসে উঠে প্রণয়।তা দেখে মির বলে,
“এখনও আমরা সবাই বিশ্বাস করি ওদের মাঝে কিছু নেই।অরণ কেবলই ছোট বোনের নজরে দেখে চাঁদকে”
প্রণয় এমনভাবে হাসে যেনো খুব মজার কিছু শুনেছে। অতঃপর হাসতে হাসতে বলে,
“ছোট বোন?সিরিয়াসলি মির?ছোট বোন?প্লিজ আমাকে আর হাসাস না তোরা”
প্রণয়কে পাগলের মতো হাসতে দেখে কপাল কুচকে রিহা বলে,
“মির কোনো মজার কিছু বলেনি যে তুই এভাবে হাসছিস।আর আমরা জানি এবং মানিও তুই যেমনটা ভাবছিস এমন কিছুইনা।অরণ কেবলই চিন্তার দরুন সেখানে গেছে”
পূর্ণতাও বলে,
“তুই যেভাবে মেয়েটার ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বলেছিস তাতে করে অরণ কেনো?আমরাও যদি যাই তাও কম পড়ে যাবে”
রবিনের প্রশ্ন,
“যাকে ভালোবাসিস তাকে নিয়ে এভাবে বলতে তোর বিবেকে বাধলোনা প্রণয়?”
“ভালোবাসা কিসের ভালোবাসা?আমি কাউকে ভালোবাসিনা”
“মজা নিচ্ছিস?”
“আমি তোদের বেয়াই হইনা যে মজা নেবো অথবা কোনো মশকরা করবো”
মির আবারও বলে,
“দেখ প্রণয়।তোর কোথাও ভুল হচ্ছে।আর এই ভুলের জন্য তুই অনেক সাফার করবি।মেয়েটা যেভাবে বলে গেলো তাতে করে আমার মনে হচ্ছে আর জীবনেও তোর দিকে ঘুরে তাকাবেনা।তাকানোর কথাও না।আমারই তোর কথা শুনে গা জ্ব!লে গেছে।না জানি ওদের দুজনের উপর দিয়ে কী গেছে”
পূর্ণতা প্রণয়ের বাহুতে হাত রেখে তাকে ঝাকিয়ে বলে,
“ভালোবাসার দু’টো মানুষের সাথে তুই এমনটা কী করে করলি প্রণয়?অরণের সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারিস তুই?”
প্রণয় লম্বা শ্বাস নিয়ে বলে,
“বিশ্বাস করছিস নাতো আমার কথা?আমি তোদের প্রমানসহ দেখাবো।তখন ঠিকই বুঝবি”
হঠাৎ গম্ভীরভাবে মিরা বলে,
“বুঝবো ঠিকই তবে আমরা না তুই।সেদিন ঠিক বুঝবি যেদিন তাকে হারিয়ে ফেলবি।ঐ মেয়ে আর তোকে ভালোবাসবেনা।এ কথা তোকে কাগজে কলমে লিখে দিতে পারি আমি প্রণয়।চাঁদের ভালোবাসা বিন্দু পরিমাণ আর চোখের চাওয়ায়ও দেখতে পারবিনা তুই।একটা মেয়ের আত্মসম্মানে লাগলে ভালোবাসা মে!রে ফেলতেও সে দ্বিধাবোধ করেনা।এবং চাঁদও তার ব্যতিক্রম নয়।তুই আস্ত এক ভালোবাসার বাগান হারাবি প্রণয়।যেই বাগানহীন তুই হবি বেরঙিন”
To be continued…..
[বিঃদ্রঃহাত প্রচন্ড ব্য!থা।টাইপিং করতে অসুবিধা হয়।গল্প সম্ভবত কাল দেয়া হবেনা।তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো দেয়ার।তবুও আশায় থাকবেন না কেউ।অতীত প্রায় শেষের দিকে।সেই দরুন অনেক ভাবনা চিন্তা করে লিখতে হচ্ছে।রিচেক দিতে হচ্ছে বারবার।তাই বলছি অপেক্ষা করে থাকবেন না]