#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৫৭.
গা তার কৃষ্ণবর্ণের,পরণে পাহাড়িয়া শাড়ি।চুল উঁচু করে খোপা করা,থুতনীতে তিনটে কালচে বিন্দু।নাকে বড়সড় এক নথ আর চোখে মোটা করে দেওয়া কাজলরেখা।হাতে আছে তামাটে বর্ণের মোটা দু’খানা বালা।শাড়িটাও খানিকটা উচু করেই পরা।শ্যামবর্ণের পা যুগোল নজরে পরতে বাধ্য,উচ্চতা তার মধ্যম ধাচের।যত গন্তব্যের নিকট পৌঁছাচ্ছে হৃদযন্ত্র বেগতিক বাড়ছে তার।তবুও নিজেকে যথেষ্ট সামলে এগিয়ে যাচ্ছে।তার যে যেতেই হবে!অতঃপর অপেক্ষার অবসান ঘটলো।সে এসে পৌঁছালো তার কাঙ্ক্ষিত স্থানে এবং পা বাড়ালো পাশের নেমপ্লেটে বড় করে লিখা ‘রাজ ভিলায়’।পাশে আছে তারই বয়সের আরেকজন।দুজন একে অপরের হাত ধরে এগোয় সামনের দিকে।কৃষ্ণবর্ণের মেয়েটা ঘুরে ঘুরে সবটা দেখতে লাগলে কেউ একজন কর্কশ কন্ঠে বলে উঠে,
“এই কে রে?এই কালা ছেড়িডা কেডা?”
হঠাৎ শোনা বাক্যে ভয় পেয়ে যায় মেয়েটা।আড়াল হয় তার পাশে থাকা অপর মেয়ের পিছু।তার পাশের মেয়েটা বলে,
“আপা ও এখানে নতুন।আমি এনেছি”
তখনই আরেকটা মেয়ে আসে।এসে জিজ্ঞেস করে,
“কোথা থেকে এনেছো লিমা?”
লিমা উত্তর দেয়,
“মেয়েটা খুব গরীব।বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু স্বামী খুব মা!রধর করে তাই পালিয়ে এসেছে।আমার এক খালার পুরাতন কাজের লোকের কেমন আত্মীয়।কাজ করতে এসেছে।পরে যখন এখানকার কথা বললাম।রাজি হলো”
মেয়েটা কৃষ্ণবর্ণের মেয়েটাকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে বলে,
“তাই নাকি?আগেও এসব করেছো?”
“কা তি লো” [না করিনি]
মেয়েটা ভ্রু কুচকে বলে,
“কী বললো?এই মেয়েটা কী বললো রে লিমা?”
লিমা বলে,
“আসলে আপু ও তো মিজোরামের।মিজো ভাষা ছাড়া অন্য ভাষা বলতে পারেনা”
“তো আমার কথা বুঝলো কী করে?”
“বাংলা ভাষা বুঝতে পারে।কিন্তু বলতে পারেনা”
“আর তুমি ওর ভাষা বুঝছো কী করে?কথা বলো কিভাবে?”
“খালার বাসায় গেলে ঐ আন্টি থেকে টুকটাক শিখেছি”
“আচ্ছা আচ্ছা!এই মেয়ে নাম কী তোমার?”
“কা হামিং চু মাহুয়া আ নি” [আমার নাম মহুয়া]
“কী?”
লিমা বলে,
“ওর নাম মহুয়া আপু”
“তো মহুয়া কাজ কী ঠিকঠাকভাবে লিমা বুঝিয়েছে তোমাকে?”
“ইয়েস উনাউনু” [জ্বি আপু]
“ইয়েস মানেতো বুঝেছি।উনাউনু কী?”
লিমা জবাব দেয়,
“উনাউনু মানে আপু।মহুয়া বলেছে জ্বি আপু”
“কিন্তু এরকম মেয়েকেতো মনে হচ্ছেনা কেউ পছন্দ করবে বলে।খানিকটা কালোতো”
“নাথাওকতু আঙ্গা মিন ভাওন রেঙ চুয়ান হারসাতনা আ আওম লো” [আমাকে কাজের লোক হিসেবে রাখলেও সমস্যা নেই আপু]
কপাল কুচকে মেয়েটা বলে,
“কীরে লিমা?”
“বলছে কাজের লোক হিসেবে রাখলেও ওর আপত্তি নেই।সব করে দেবে”
“না,আগে দেখি কেউ চয়েজ করে কিনা”
মহুয়া লিমাকে বলে,
“গায়োয়ি রেং রোহ” [চুপ থাকো]
লিমা তা শুনে মহুয়াকে বলে,
“ঠিক আছে”
সেই মেয়েটা লিমাকে জিজ্ঞেস করে,
“কী হয়েছে?”
“ওকে সবটা বুঝিয়ে দিয়ে আসি আপু?”
কপাল কুচকে মেয়েটা বলে,
“সব না বুঝিয়েছো?”
“না আপু।শুধু বলেছিলাম নাচগান করতে হবে।বাকিটুকু বলিনি”
“রাজি হবে?”
“রাজি না হলেও কাজের লোক হিসেবে রেখে দেওয়া যাবেনা?মেয়েটার খুব কষ্ট।পরে যদি কেউ পছন্দ করে।তখন নাহয়?”
“আচ্ছা ঠিক আছে।আগে দেখো রাজি হয় কিনা।জোর করেতো কিছু করায় নিষেধাজ্ঞা আছে।যাও”
“ঠিক আছে আপু”
কথাখানা বলেই মহুয়াকে নিয়ে নিজের রুমের দিকে এগোয় লিমা।অতঃপর ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে মেয়েটাকে বিছানায় বসিয়ে খুব সাবধানী গলায় বলে,
“এজন্যই তোমায় আনতে চাইনি আপু।এখন যদি কেউ তোমায় চেয়ে বসে?তুমি এসবে কেনো আসলে বলবে?”
“কেউ চাবেনা আর চাইলেও আমার পরিকল্পনা আছে লিমা”
“কিন্তু আপু আমার বড্ড ভয় করছে”
“এমন এক জায়গায় ভয় লাগারই কথা।দেখেতো মনে হচ্ছে পতিতালয় টাইপ”
“ওরা সেটাই বানাতে চায় আপু।দেখোনি?সবগুলো মেয়েই এখানে সুন্দর সুন্দর।কেউ কালো বা দেখতে খারাপ নেই”
“আমার মাথায় অনেক পরিকল্পনাই আছে।আমায় নিয়ে তুমি টেনশন করোনা লিমা।এজন্যই এমন রূপে এসেছি যাতে কারো পছন্দের না হই”
“যদি করে ফেলে?তুমিতো সুন্দরই,শুধু কালো মেকাপ করেছো”
“সেসব নিয়ে ভেবোনা।তুমি গিয়ে বলবে রাজি হচ্ছেনা ভয় পাচ্ছে।কিন্তু নাচগান করতে পারবে আর সবার আপ্যায়ন করতে পারবে।তাও যেনো রাখে।টাকাপয়সার অভাবতো।বুঝেছো?”
“ঠিক আছে চাঁ…”
চাঁদ লিমার মুখ চে!পে বলে,
“মহুয়া।মহুয়া আমার নাম”
“ঠিক আছে মহুয়া।এখন তুমি কী করতে চাচ্ছো?”
“লোকজন আসবে কয়টা থেকে?”
“সাতটা বাজলেই শুরু হয়ে যায়”
“কিন্তু একটা জিনিস মাথায় আসছেনা।এতো সনামধন্য কলেজের টিচাররা এবং যারা যারা জড়িত আছে এসব কেনো করাচ্ছে?”
“সেটা আমিও জানিনা আপু”
“আচ্ছা সমস্যা নেই।সব জেনে যাবো ধীরে ধীরে”
“তোমার ভয় লাগছেনা?”
খানিকটা হেসে চাঁদ বলে,
“একটু আকটু অবশ্যই লাগছে।কিন্তু আমি ততটা ভয় পাইনা।ভয় পেলে অবশ্যই এখানে আসতাম না”
লিমা চাঁদের হাত ধরতে গেলে চাঁদ বলে,
“ধরও না রঙ উঠে যাবে”
“আপু আমার না সত্যিই খুব ভয় লাগছে”
“আমার জন্য?”
“হ্যা”
“বোকা মেয়ে।ভয় পেও না,কিছু হবেনা”
“কোনো অঘটন হয়ে গেলে?”
“সেটার ব্যবস্থাও আমার কাছে আছে।চিন্তা করোনা।আমি যে করেই হোক এদের কালো মুখোশ দুনিয়ার সামনে আনবোই।এতোগুলো মেয়ের জীবন ন!ষ্ট করার প্রতিদানতো তাদের দিতেই হবে।আর সবকিছুর কারণ উদঘাটন না করলে শান্তিও মিলবেনা”
“অরণ ভাইয়া জানে?তুমি যে এখানে আসবে?”
“না বলিনি”
“কিন্তু কেনো?”
“তুমিও বলবেনা এসব তাকে।আমিই সময় হলে বলবো।নাহয় অযথা চিন্তা করবে,ভয় পাবে”
“চিন্তার করার মতো বিষয় নয় কি?”
রাত আটটা,
লোকজনের সমাগম বেড়েছে যেনো।বিভিন্ন ধরণের পুরুষের আগমন ঘটছে রাজ ভিলায়।ভেতরটা সাজানো হয়েছে খুব সুন্দরভাবে।সপ্তাহের পহেলা দিন এভাবেই রমরমাভাবে আয়োজন করা হয়।দেয়ালে দেয়ালে আলপনা করা।সেই সাথে বিভিন্ন অশ্লী!ল চিত্রকর্মেও সজ্জিত দেয়ালগুলো।সেসবে চোখ পড়তেই চোখজোড়া বন্ধ করে চাঁদ।ঘৃণায় শরীর রি রি করে উঠছে তার।তবুও দাতে দাত চেপে সবটা পর্যবেক্ষণ করছে।দেখছে সকল কর্মকান্ড।একজন শ্যাম বর্ণের মধ্যবয়স্ক মহিলা একটা উঁচু চেয়ারে এক পা উঠিয়ে অপর পা জমিনে রেখে হাটুতে হাত ঝুলিয়ে পান চিবুচ্ছেন।খানিক বাদে বাদে তর্জনী হতে মুখে নিচ্ছেন চুনও।তারই পাশের এক চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে আম্বিয়ারূপী সেই মেয়েটা।মধ্যবয়স্ক মহিলার অপর পাশে বসে আছে কলেজ ক্যান্টিনের কাশেম বাবুর্চি।তার হাত-পা টিপে দিচ্ছে ছোট ছোট দশ-বারো বছরের কয়েকটা মেয়ে।এমতাবস্থায় সদর দরজা দিয়ে অন্দরমহলে প্রবেশ করেন অনিন্দ্য ঘোষ এবং মাহতিম আনোয়ার স্যার।দুজনের মুখে লেগে আছে বিস্তৃত এক হাসি।মাহতিম স্যার এসেই আম্বিয়ারূপী মেয়েটার সম্মুখে গিয়ে দাড়িয়েই তার ওষ্ঠদ্বয়ে আলতো এক চুমু খান।মেয়েটাও হেসে নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।অতঃপর মাহতিম স্যার চেয়ারে বসতেই তার কোলের উপর বসে গলা জড়িয়ে ধরে খোশগল্পে মেতে উঠে।দৃশ্যসমূহ দেখে গা ঘিনঘিন করে উঠে চাঁদের।চোখজোড়া বন্ধ করে ঘনঘন শ্বাস নেয় সে।চারিদিকে গানবাজনার আওয়াজে মাথা যন্ত্রণায় ফে!টে যাচ্ছে যেনো।তবুও নিজেকে কেবলই সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছে চাঁদ।এই বুঝি মাস্টারমাইন্ডকে দেখার সুযোগ তার হলো!এই বুঝি আম্বিয়ারূপী মেয়েটার মুখোশ টে!নে ধরলো চাঁদ।তবে তার জন্য প্রয়োজন অধীর অপেক্ষার।চাঁদ করবে,সেই অপেক্ষা অবশ্যই সে করবে।এসবকিছু ভাবতে ভাবতেই আম্বিয়ারূপী সেই মেয়েটা তাকে ডেকে উঠে,
“এই মহুয়া,এখানে এসোতো”
হকচকিয়ে উঠে নিজেকে সামলে চাঁদ তার সম্মুখে গিয়ে বলে,
“ইয়েস উনাউনু?” [জ্বি আপু?]
“রান্নাঘর থেকে সবার জন্য মিঠা শরবত করে আনো।অবশ্যই তাতে মিশ্রিত থাকবে অমৃতরূপী অ্যা!লকোহল”
“অ্যা?অ্যা…অ্যাল..কা…আলকাহোল?”
আম্বিয়া মেয়েটা অপর এক মেয়েকে ডেকে বলে,
“এই ইরানি?মহুয়াকে নিয়ে রান্নাঘরে যাওতো।আমাদের স্পেশাল মিঠা শরবত বানানোটা তাকে শিখিয়ে দিয়ে আসো,যাও।”
ইরানি মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে আম্বিয়াকে বলে,
“ঠিক আছে আপু।এই মহুয়া চলো”
পরেরদিন সকালে,
প্রচন্ড মাথা ব্যথা নিয়েও ঘুম থেকে উঠতে হয় চাঁদকে।আজ কলেজে যাওয়াটা অতি আবশ্যক।ঘুম থেকে উঠে হাই তুলতে তুলতেই ফোনে কল আসে অরণের।চাঁদ তা রিসিভ করে বলে,
“হ্যালো?”
“কাল ছিলে কোথায়?কলেজে দেখলাম না যে”
“ক্লাস পিরিয়ড শেষে এসে পড়েছিলাম।আপনি হাসপাতাল থেকে আমায় কী করে দেখবেন?”
“কয়েকবার কলও দিয়েছিলাম কিন্তু বন্ধ বলছিলো।কেনো?”
“এয়ারপ্লেন মোডে রেখেছিলাম তাই”
“কিন্তু কেনো?”
“একটা কাজে গিয়েছিলাম অরণ”
“কী কাজ?”
“কাজটা সফল হয়ে গেলেই আপনাকে জানাবো”
“ঐসব কিছু?দেখো চাঁদ আবারও বলছি নিজের ক্ষ*তি করে কোনোকিছু করবেনা”
“চিন্তা করবেন না।কিছু হবেনা আমার।দরকার পড়লে আমি অবশ্যই আপনাকে স্মরণ করবো”
“ঠিক আছে।যেজন্য কল দিয়েছি,আজ আমাদের বাগানের ভেতরে যাওয়ার কথা।আহিন সব ব্যবস্থা করে রেখেছে।ক্লাস টাইমেই যাবো আমরা।আজ ক্লাস করতে পারবেনা,তাই বই টই এনো না”
“ঠিক আছে।আমি সময়মতো পৌঁছে যাবো”
“আচ্ছা।সাবধানে এসো,রাখছি”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
হাসপাতালের বদলে অরণ কলেজ গেটের সামনে নামে,যা দূর হতে মির আর মিরার নজরেও আসে।মিরার দৃষ্টি সে পানে দেখেই মির বলে উঠে,
“এখন তুইও প্রণয়ের মতো অরণকে সন্দেহ করিস না মিরা,হিতে বিপরীত হবে”
“করছিনা।তুই যা আমি আসছি”
“তুই কিন্তু….”
“চিন্তা করিস না।কোনোকিছু ভাবনাহীন বলবোনা।ভরসা রাখ”
“ঠিক আছে।তাড়াতাড়ি আসিস”
মির চলে যেতেই মিরা দ্রুত গতিতে অরণের সামনে এসে দাড়ায়।সবেমাত্রই গেটের ভেতরে পা দিতে নিচ্ছিলো অরণ কিন্তু মিরাকে দেখে থেমে যায় সে।অতঃপর বলে,
“কী?”
মিরা জিজ্ঞেস করে,
“হাসপাতালে যাবি না?”
“আজ আর যাবোনা রে”
“কেনো?”
“একটু কাজ আছে”
“কী কাজ?”
“এমনিতেই একটা কাজ”
“বলা যাবেনা?”
মিরার মলিন কন্ঠস্বর শুনে তার পানে চেয়ে মৃদু হেসে গালে হাত রেখে অরণ বলে,
“অবশ্যই যাবে তবে সময় হোক।সময় হলে সবাইকে বলবো”
“কলেজে যাবি এখন?”
“হ্যা”
“কিছু মনে করিস না তবে একটা প্রশ্ন করতাম”
“তুই কবে থেকে পার্মিশন নিচ্ছিস ডাকিনী?”
খানিকটা রাগ দেখিয়ে মিরা বলে,
“ভালো হচ্ছে না কিন্তু অরণ!”
অল্প বিস্তর হেসে অরণ বলে,
“আচ্ছা আচ্ছা বল”
“ইম….আসলে…মানে…তুই কি…”
“তোতলাচ্ছিস কেনো?যা বলবি বলে ফেল।তোর কথায় কখনো মাইন্ড করিনা,করবোও না।আমি জানি তুই ভেবেশুনেই যা বলার বলবি।বল শুনছি আমি”
“না মানে আসলে হয়েছে কি…. ”
কপাল কুচকে চশমা পেছন দিকে ঠেলে দিয়ে অরণ বলে,
“ওয়েইট?তুইও কি প্রণয়ের মতো?”
“না না না!এমনকিছুই না দোস্ত”
“আচ্ছা বুঝেছি।আমি চাঁদের সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি।কাজ আছে একটা”
“একটুও বলা যাবেনা?”
“গেলে সেদিনই বলতাম যেদিন প্রণয় যাচ্ছেতাই বলেছিলো”
কথাটা শুনেই দৃষ্টি নত করে মিরা।তা দেখে মিরার থুতনীতে হাত রেখে মাথা উঁচু করিয়ে অরণ বলে,
“পাগলি!এদিকে তাকা।তোর মতো ডাকিনীকে মন খারাপে একদম মানায় না বুঝলি?আর শোন,মনোযোগ দিয়ে শোন।চাঁদ আর আমার মাঝে সত্যিই কিছু নেই।চাঁদকে আমি কেবলই আমার বন্ধুর ভালোবাসা তথা ভাবি রূপে দেখি।অথবা বলতে পারিস একজন ভালো বন্ধু এবং বোন দুটোই মানি ওকে।আর ওর ক্ষেত্রেও একই জিনিস।কিছু কারণবশত আমাদের দেখাসাক্ষাৎ বেশি হচ্ছে আর কিছুইনা।এবং সেসবও তোদের জানাবো সময় হলে”
লম্বা এক শ্বাস টেনে অরণের দুই হাত নিজের দু’হাতে নিয়ে চোখে চোখ রেখে মিরা বলে,
“আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে বিশ্বাস করিনা।তবে তোকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা আমার প্রিয় কাজের মধ্যে একটা”
“অন্ধ বিশ্বাস করিস না তবে বিশ্বাসে কখনো নড়চড় আনিস না,তাহলে ভেঙে যাবো।ভেঙে গুড়িয়ে যাবো”
অরণের ঠোটে তর্জনী রেখে মিরা বলে,
“হিশ!এভাবে বলে না।তোকে বিশ্বাস করা ছেড়ে দিলে ভাববি এ পৃথিবীতে আর….”
মাঝপথে মিরাকে থামিয়ে দিয়ে হাত দ্বারা তার ঠোটজোড়া স্পর্শ করে অরণ বলে,
“ঐ শব্দটা উচ্চারণ করার আগেই নিজ হাতে মে!রে ফেলবো তোকে।বেয়াদব কোথাকার!তুই কোথাও যেতে পারিস না।আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারিস না তুই”
মুচকি হেসে অরণের হাত সরিয়ে মিরা বলে,
“যাবোনাতো,কোত্থাও যাবোনা।এই ডাকিনী কখনো তোর পিছু ছাড়বেনা”
“পিছু ছাড়তে দিলেতো ছাড়বে!”
অতঃপর দুজনে একসঙ্গে হেসে উঠে।হাসতে হাসতেই একে অপরকে বিদায় জানায় তারা।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অরণসহ আহিনের পিছু এগোতে লাগে চাঁদ।চারিপাশে এতো মানুষ দেখে খানিকটা অস্বস্তি হচ্ছে তার।বুঝতে পেরে অরণ চাঁদের ডান হাত ধরে চোখ দ্বারা তাকে আশ্বস্ত করে।চাঁদও বিনিময়ে মুচকি হাসে কেবল।দৃশ্যখানা দূর হতে নিজ বিড়ালাক্ষীদ্বারা তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রণয়।অতঃপর তারা সকলে বাগানের ভেতরে ঢুকতেই পাশে থাকা দেয়ালে সজোরে ঘু!ষি মেরে চোয়াল শক্ত করে একের পর এক লম্বা শ্বাস নিতে আরম্ভ করে সে।
To be continued….
[বিঃদ্রঃপ্রতিদিন দিতে পারছিনা বলে দুঃখিত।তবে অসুস্থতার দরুন ঠান্ডা মস্তিষ্কে সবটা সাজিয়ে লিখতে অসুবিধা হচ্ছে।এবং এজন্যই কাল গল্প দিতে পারিনি।সুস্থ হলে রেগুলার পাবেন।এছাড়া একদিন পরপরই।তবে আমি চেষ্টা করছি প্রতিদিনই দেওয়ার কিন্তু সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে ঠান্ডা মন আর মস্তিষ্ক দুটোই লাগে।সেজন্য বলছি একদিন দেরি হলেও মনক্ষুন্ন হবেন না।তাড়াহুড়োয় লিখলে গল্পের সৌন্দর্য নষ্ট হবে।যেটা আমি করতে পারছিনা।দুঃখিত।গল্পটা কাল্পনিক]
Atar por 3 ta porbo parchi na aktu diban plz