#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৩১.
“সেদিন,সেদিন যদি চ!ড়টা তাকে না দিতাম আমাদের জীবনটা সত্যিই খুব সুন্দর হতো প্রণয়!”
প্রণয়ের বুকের কাছে থেকেই তার দিকে এক ধ্যানে চেয়ে মনে মনে কথাটা আওড়ায় চাঁদ।অতঃপর বুক চি!ড়ে বেরিয়ে আসে লম্বা এক দীর্ঘশ্বাস।চাঁদকে কোলে রেখেই সকলের সামনে উপস্থিত হয় প্রণয়।দু’জনকে এভাবে দেখামাত্রই রামিম ফট করে কয়েকটা ছবি তুলে বলে,
“রাব নে বানাদি জোড়ি ইয়ার!” [বিধাতা এই জোড়াটা বানিয়ে দিয়েছেন বন্ধু!]
রামিমের কন্ঠ পেয়ে ধ্যান ভাঙে চাঁদের।অতঃপর লজ্জা ঢাকতে প্রণয়ের বুকে মুখ লুকায় সে।তৎক্ষনাৎ তার কানে ভেসে আসে প্রণয়ের তীব্র গতির হৃদস্পন্দন।তবে কি আজও প্রণয়ের হৃদয় চাঁদের জন্য স্পন্দিত হয়?তবে কেনোই বা প্রণয় তাকে খু!নী ভাবে?আর অরণের ঠিক কী হয়েছে?অরণ আছেই বা কোথায়?কোথায় লুকিয়ে রেখেছে প্রণয় তাকে?এসব ভাবতে ভাবতেই খানিকটা কেশে প্রণয়কে আস্তেসুরে বলে,
“নামান”
চাঁদের দিকে আঁড়চোখে চেয়ে প্রণয় বলে,
“হাটতে পারবেন আপনি?”
“না পারলে কি এ স্থানেই ঠাই দেবেন?”
এবার আর প্রতিত্তোর করেনা প্রণয়।প্রসঙ্গ এড়িয়ে রায়হানকে জিজ্ঞেস করে,
“নিমৃতাকে পেয়েছিস তোরা?”
রায়হান জবাব দেয়,
“হ্যা পেয়েছি।খুজতে খুজতে হয়রান হয়ে গেছি ভাই!গিয়ে দেখি ফোনে কথা বলছে”
মিরও তখন বিরক্তির সুরে বলে,
“তাও আবার একটা গাছের ডালের উপর বসে।এই ঘসেটির বোন পেত্নিও ফেইল করে দিয়েছে ভাই।আমিতো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম,যেভাবে হাসছিলো!”
চাঁদ অবাক হয়ে কপাল কুচকে বলে,
“তখনো কথা বলছিলো?তাও আবার গাছের ডালে বসে?”
মির জবাব দেয়,
“জ্বি ঘসেটি বেগম”
শিফা জিজ্ঞেস করে,
“কিন্তু এতো উঁচুতে উঠলো কি করে?”
মির জবাবে বলে,
“অতো উঁচু ছিলোনা।একটু আঙুলে ভর দিলেই উঠা যায়”
চাঁদ সন্দেহমিশ্রিত কন্ঠে বলে,
“হাসছিলোও?”
রায়হান উত্তর দেয়,
“হ্যা।কিন্তু এখন মেইবি কাদছে”
প্রণয় জিজ্ঞেস করে,
“কাদছে কেনো?”
তন্ময় প্রণয়কে বলে,
“আরেএ ভাই অমৃতা আপু বকছে তাই”
রামিম প্রণয়ের সামনে এসে বলে,
“দেখ মামা তোর আর মামির ছবি।তোর রুমে এটা টানাস।দারুন লাগবে দেখতে”
প্রণয় কিছু বলেনা।কেবল বাকা চোখে রামিমের পানে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকে।তা দেখে রামিম হালকা হেসে প্রণয়ের থেকে দূরে সরে দাঁড়ায়।রামিম সরতেই চৈত্র প্রণয়ের সামনে এসে বলে,
“আমাদের চূড়ায় উঠাটা কি ঠিক হবে প্রণয়?”
প্রণয় শান্তভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করে,
“হবে না কেনো ভাইয়া?
“আচ্ছা আমি বরং চাঁদের সাথে বসছি।আপনারা সবাই দেখে আসুন”
হঠাৎ রুবা বললো,
“সে কি?ভাবিই তো কত শখ করলো যাওয়ার জন্য।ভাবি না…”
রুবাকে থামিয়ে দিয়ে প্রণয় বললো,
“কাউকে বসতে হবেনা।সকলে একসাথেই উঠবো”
চৈত্র প্রণয়কে বলে,
“চাঁদকে একা রেখে?”
প্রণয় চৈত্রকে নিজের বুকের দিকে ইশারা করে বলে,
“একা কোথায় ভাইয়া?”
মির খানিকটা উচ্চস্বরেই প্রশ্ন করে,
“চাঁদকে কোলে নিয়েই চূড়ায় উঠবি তুই?”
চৈত্র প্রণয়কে ইতস্তত করে বলছে,
“আসলে প্রণয়…চূড়াটা ভীষণ উঁচু।অতো উপরে একা উঠতে গেলেই হাপিয়ে পড়তে হয়।আর আপনি…”
প্রণয় গম্ভীরভাব বজায় রেখে চাঁদকে ভালোভাবে বুকে চেপে সামনের দিকে পা চালাতে চালাতে বললো,
“আপনার বোনের মতো দু-একজনকে আমি একাই উঠাতে পারবো।সেখানে শুধু তাকে নিয়ে চূড়ায় চড়া আহামরি কোনো বিষয়ই না।মাথা না ঘামানোর অনুরোধ রইলো”
ফাকা রাস্তার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে আছে ফায়ান।দৃষ্টি তার ফোনের দিকে।কপাল খানিকটা কুচকানো।সূর্যের প্রকোপ তাপে শরীর ঘেমে একাকার,ছাইরঙা শার্টটাও ভিজে চুপচুপ।ঠিক তখনই কারো হ্যাচকা টানে রাস্তার কিনারে আসতে বাধ্য হয় সে।বিব্রতবোধ করে যেই না সে পানে তাকায় অমনি ইপ্সির ঝাঁঝালো কন্ঠে চুপসে যেতে হয় তাকে,
“ম!রার শখ জেগেছে তোর?হাইওয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে কাকে নিয়ে ভাবছিলি মজনু জানি কোথাকার?”
ফায়ান চোখ ছোট ছোট করে ইপ্সির দিকে চেয়ে মোবাইল দেখিয়ে বলে,
“কাউকে নিয়ে ভাবছিলাম না বোকাপ্রাণী!আপনাকেই কল দিচ্ছিলাম।আপনিতো মহা ব্যস্ত মানুষ।ডাক্তার হয়ে আড্ডা শাড্ডা একদমই ভুলে গেছেন।কলেজ লাইফের বন্ধুদের কি আপনার মনে পড়ে?”
ইপ্সি ফায়ানের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সেদিকে নজর বুলিয়ে বলে,
“মাত্র চারবার দিয়েছিস।আরও তিনবার দেওয়া উচিত ছিলো।আর আমি কাউকেই ভুলিনি।সংসার জীবন আর প্রফেশনাল লাইফ দু’টোকে সামলাতে বড্ড হিমশিম খেতে হয়।তুই বুঝবি নাকি?একেতো ছেলে তার উপর বিয়ে করিস নি।বুঝবি ক্যাম্নে?”
“তোর লেকচার শেষ?এবার চল যাওয়া যাক”
ফায়ানের চোখ বরাবর তর্জনী নিয়ে তাকে শাসিয়ে ইপ্সি বলে,
“যাবোতো অবশ্যই।তার আগে বল এভাবে হাইওয়েতে দাড়িয়েছিস কোন আক্কেলে?যদি গাড়ি টাড়ি এসে পড়তো?উপরে উ!ঠিয়ে দিতো তখন?”
এক গাল হেসে ফায়ান বলে,
“দিলে দিতো।ম!রে যেতাম।ফায়ান শেষ,কাহিনী-কিচ্ছা খতম!”
ফায়ানের বাহুতে মে!রে ইপ্সি বলে,
“এহ আইছে কাহিনী-কিচ্ছা খতম।বাজে বকা কখনো যাবেনা তোর না?”
“না রে ইন্দুর যাবেনা।তাছাড়া ধানমন্ডিতে এতো এক্সিডে!ন্ট হয় নাকি?রাস্তা ফাকা থাকে দেখিস না?এজন্যইতো আমি দাড়িয়েছিলাম”
“হ তোমারে বলে আসবেনা সবকিছু?যে ‘ফায়ান আমি আসছি তুমি তৈরি থেকো নিজেকে বাঁচাতে’।বোকাপ্রাণী আমি না।বোকাপ্রাণী হচ্ছিস তুই”
“আচ্ছা হয়েছে আমার মা!এবার চল”
বলেই ইপ্সির হাত টেনে হাটা ধরে ফায়ান।হাটতে হাটতেই বলে,
“তা তোর ম্যারিড লাইফ কেমন যায়?”
“যাচ্ছেতো বেশ!তুই কবে বিয়ে করছিস?”
আকাশপানে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফায়ান বলে,
“আল্লাহ যবে রেখেছেন তবেই”
“এবার অন্তত আন্টিকে মেয়ে দেখার পার্মিশন টা দিতেই পারিস।জবতো করছিসই।তাছাড়া তুইতো নিউরোলোজিস্ট।মাসিক ইনকামও বেশ!বউকে খাইয়ে পড়িয়ে ভালোই রাখতে পারবি”
“তোরাতো জানিস আমি এসব ডিসক্রিমিনেশনে বিশ্বাসী নই।আমার বউ যে হবে তাকে অবশ্যই ইন্ডিপেন্ডেন্ট হতে হবে।”
“তুইতো বিসিএস দিবি মামা।বিসিএস ক্যাডাররা কি করে জানিস না?”
কপাল কুচকে ইপ্সির পানে চেয়ে হাটতে হাটতে ফায়ান বলে,
“আমি ওসব ভুড়িওয়ালা টাক কাকু নই আর আমার বউও কোনো নাইন-টেনে পড়ুয়া বাচ্চামেয়ে হবেনা।বাজে না বকে কাজের কথায় আয়”
“তাও।ট্রাইতো…”
ইপ্সির কথা সম্পূর্ণ করার আগেই ফায়ান হুট করে বলে,
“চাঁদ ঢাকা আছে”
“আচ্ছা তো বল….”
বলেই টনক নড়ে ইপ্সির।অতঃপর হাটা থামিয়ে ফায়ানকে জিজ্ঞেস করে,
“কী?কে ঢাকা আছে?”
“চাঁদ”
“কোন চাঁদ?আমাদের?আমাদের চাঁদ ঢাকা আছে?ওকে পেয়েছিস তুই?”
“আমি পাইনি।মিরা আপুর মুখে শুনলাম”
কপাল কুচকে ইপ্সি বলে,
“মিরা আপু?মিরা আপু কী করে চাঁদের ব্যাপারে জানে?যেখানে আমরা ওর বন্ধু-বান্ধব হয়েই জানিনা?”
“ও জানালে আমরা অবশ্যই জানতাম ইপ্সি।ও জানায়নি তাই জানিনা সিম্পল”
“কিন্তু ওরতো কোনো খোঁজ খবর ছিলোনা।হঠাৎ একদিন গায়েব হলো।আর দেখলাম না।খোঁজও পেলাম না।কোনো যোগাযোগ মাধ্যমেও তো পেলাম না!”
“ও যদি যোগাযোগ রাখতে চাইতো তাহলে অবশ্যই পেতাম”
“কথা না পেচিয়ে ডিরেক্ট বলতো মিরা আপু জানলো কী করে?ওকে পেলোই বা কোথায়?”
“জানবে নাই বা কেনো?তাদের প্রাণের বন্ধুর বউ।জানবেই তো নাকি?”
ইপ্সির চোখ চড়কগাছ!চোখদু’টো কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম।সে সেই অবস্থায় থেকেই বললো,
“কী!বউ?চাঁদ?কার বউ?কিসব বলিস!”
নিজেকে সামলে লম্বা শ্বাস নিয়ে ফায়ান বললো,
“প্রণয় ভাইয়ার বউ”
মাথা ঘুরানোর মতো ভঙ্গি করে ফায়ানের উপর পড়ে যেতে গিয়ে ইপ্সি বলে,
“আমাকে ধর প্লিজ!আমি বোধহয় পাগ*ল হয়ে যাবো।সবকিছু কেমন ঘুরাচ্ছে।মনে হচ্ছে দুনিয়া উ!লটে গেলো”
“কিছুই উল্টায়নি।যা শুনেছিস ঠিকটাই শুনেছিস।প্রণয় ভাইয়া বিয়ে করছে শুনিস নি?বলেছিলাম না আমি?চাঁদকেই বিয়ে করেছে।চাঁদ সম্ভবত চট্টগ্রাম ছিলো এতোবছর”
“চট্টগ্রাম?”
“হ্যা।চট্টগ্রামের টেকনাফে”
“কী!এতোদূরে!ও হঠাৎ এতোদূর গেলোই বা কেন বুঝলাম না”
“মজার বিষয় কী জানিস?মিরা আপু চাঁদকে দো*ষারোপ করছে”
“কী জন্য?”
“অরণ ভাইয়ার কন্ডিশনের জন্য”
“অরণ ভাইয়া?উনার কন্ডিশনের সাথে চাঁদের কী সম্পর্ক?ভালো কথা ভাইয়ার অবস্থা এখন কেমন?তুইতো তার ট্রিটমেন্ট করছিস”
“কোনো উন্নতি পাচ্ছিনা।মনে হচ্ছে দিনকে দিন অবনতিই হচ্ছে।অথচ আমি আমার বেস্ট দিচ্ছি প্রতিনিয়ত।ভাইয়ার হাত-পা শরীর প্রায় সবকিছুই নড়াচড়ার কথা।সে জায়গায় কিছুই হচ্ছেনা।”
“নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা আছে।তুই ভালোভাবে ট্রাই করিস।নাহলেতো বিদেশ নিতে হবে মনে হয়”
“হ্যা নেবে।আমিও ভাবছি মাস কয়েকের মাঝে ভাইয়ার কন্ডিশন ঠিক না হলে আমিই তাকে এব্রোড নিয়ে যাবো।ওখানে থেকে ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করবো”
“হ্যা করিস।দোয়া করি ভাইয়া যেনো তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়।কিন্তু চাঁদকে দোষারোপের বিষয়টা বুঝলাম না মামা?”
“আমিও বুঝিনি।সম্ভবত সেদিন কিছু একটা হয়েছিলো যার জন্য ভাইয়ার এ দশা আর চাঁদ পলাতক”
“তুই বলতে চাচ্ছিস চাঁদ ঠিক এজন্যই পালিয়েছে?”
ফায়ান মাথা ডায়ে-বায়ে ঘুরিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“না।সেটা বোঝাচ্ছিনা।তবে যেকোনো কিছুই হতে পারে।আমরাতো বিষয়টা জানিনা।”
“কিন্তু চাঁদ কেনোই বা এমন করবে?কি কারণ থাকতে পারে?”
ফায়ান কিছু বলতে গিয়েও থেমে গিয়ে আবার বলে,
“ইফাদের বাসা এসে গেছে,চল”
“হ্যা,চল।ওদেরকে আচ্ছামতো করে ধোলাই দেবো”
দুপুরের খাবার সেরে হাতমুখ ধুয়ে ইহাদুল ইসলামের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে তার দোকানের দিকে রওনা হচ্ছে প্রণয়।যাওয়ার আগে সবাইকে বলে গেছে রেডি হয়ে থাকতে,সে এসেই বের হয়ে যাবে সকলকে নিয়ে।সেজন্যই এতো তোড়জোড় চলছে।সবাই সবকিছু গোছাচ্ছে।চাঁদের রুমে এসে চাঁদের মা তাকে ডেকে পাঠান ড্রয়িংরুমে আসার জন্য।চাঁদ সবকিছু গুছিয়ে ব্যাগের চেইন আটকে পা বাড়ায় মায়ের সাথে কথা বলার জন্য।ডাইনীং এর চেয়ারে বসে আছেন তিনি।চাঁদও আস্তেকরে বসে মায়ের পাশে।অতঃপর বলে,
“হ্যা আম্মু বলো,কী বলবে?”
মেয়ের পানে শীতল চাহনী নিক্ষেপ করে জাহানারা বেগম বলেন,
“তুই কি সত্যিই ও বাড়ি যেতে চাস?”
মায়ের কথায় কিঞ্চিৎ অবাক হয় চাঁদ।অবাক হওয়ার রেশ ধরে রেখেই বলে,
“না যাওয়ার মতো কারণতো দেখছিনা আম্মু।তাছাড়া ওটা আমার শ্বশুরবাড়ি এবং ওটাই মৃ*ত্যুর আগ পর্যন্ত শেষ ঠিকানা”
“তুইতো বিয়েটা প্রথমে মানিস নি।এখন এমন করছিস যে?”
“তুমি কি চাচ্ছো আমি বিয়েটা না মানি?ডি*ভোর্সি ট্যাগ লাগিয়ে বসে থাকি?”
মেয়ের কথায় আঁ!তকে উঠে জাহানারা বেগম বলেন,
“ছি মা!আমি ওসব কস্মিনকালেও ভাবিনা।তুই বিয়ে করেছিস স্বামী-সংসারে সুখে আছিস এতেই আমার শান্তি।কিন্তু মা তো তাইনা?মায়ের মন তো কতকিছুই বলে।আরও কয়েকটা দিন থেকে যেতে পারতি না?”
“আমি আবার আসবোতো আম্মু।সবেতো বিয়ের পরের রিচুয়াল করলাম।আবার আসবোনা?শ্বশুরবাড়ি আটদিন থেকে আবার এখানে আসবো।আমাদের এখানকার নিয়ম না এটা?তাছাড়া তোমাদের যদি মন না টিকে তোমরাও ঢাকা এসে পড়ও আম্মু।নাহলে নানুবাড়ি চলে যাও।ঢাকা থেকে ওটা সামনে।তাড়াতাড়ি যেতে আসতে পারবো।এখানে আসতে যেতেই তো অর্ধেকদিন লেগে যায় প্রায়”
“তুই তাহলে সত্যিই ঢাকা যাচ্ছিস?”
“কোনো সন্দেহ আম্মু?”
“না রে মা।একটু চিন্তা হচ্ছে এই আরকি।তুই ওখানে সাবধানে থাকিস।কিছু হলে তোর ভাইকে জানাবি।আর দেখি সম্ভব হলে আবার ঢাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবো”
“আচ্ছা আম্মু।তুমি একদম টেনশন নিওনা আমাকে নিয়ে।ওখানের সবাই খুব ভালো”
“টেনশন কি নিতে হয় রে মা?আপনাআপনি চলে আসে।আচ্ছা সেসব কথা রাখ।তুই এই পা নিয়ে তো ঠিকমতো হাটতেই পারছিস না যাবি কী করে?”
“এই যে হালকা হালকা ভাবে পা রাখছি এভাবেই যাবো।তাছাড়া আমি কি হেটে যাচ্ছি?”
বলেই খানিকটা হাসে চাঁদ।মেয়েকে হাসতে দেখে মাথায় হাত বুলিয়ে জাহানারা বেগম বলেন,
“এভাবেই হাসিখুশি থাকিস মা।আম্মুর দোয়া সবসময় তোর সাথে আছে।কিচ্ছু হবেনা আমার মেয়ের।আর শোন তোর খালা আর আমি পিঠা থেকে শুরু করে সবকিছুই বানিয়ে গুছিয়ে রেখেছি।বেয়াইনকে গিয়েই এগুলো খুলে দিবি।ফ্রিজে রেখেছি।ঠান্ডা আছে।নাহয় নষ্ট হয়ে যাবে যেতে যেতে।গিয়ে সাথে সাথেই দিবি বুঝেছিস?”
“আচ্ছা আচ্ছা আম্মু দেবো”
“আর বেয়াই,বেয়াইনকে তোর আব্বুর আর আমার পক্ষ থেকে সালাম দিবি।উনাদের আসতে বলবি পরেরবার”
“ঠিক আছে আম্মু বলবো”
“চল তোকে রুমে এগিয়ে দিয়ে আসি”
“আমি যেতে পারবোতো আম্মু”
চোখ রাঙিয়ে মেয়েকে বলেন,
“বেশি পাকামো করিস না”
মায়ের শাসন দেখে বুক ভার হয়ে আসে চাঁদের।আর বুঝি এভাবে শাসনে থাকা হবেনা?মেয়েদের কেনো বিয়ে করে পরের বাড়ি যেতে হয়?এ নিয়মটা না হলেই কি নয়?পরক্ষণেই নিজের উদ্ভট চিন্তাভাবনায় হেসে উঠে চাঁদ।হেসে মা’কে একটু উস্কাতে বলে,
“তাহলে একটু কোলেই নিয়ে নাওনা আম্মু।সেই ছোট থাকতে নিতে।সেই যে থ্রি-ফোরে লাস্ট উঠলাম আর নিলেই না!”
তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে মেয়ের পানে তাকিয়ে কিছু বলার পূর্বেই রুবার ঠাট্টামুলক বাক্য কর্ণপাত হয় জাহানারা বেগমের,
“কেন গো ভাবি?কাল সারারাত পুরো চূড়া জুড়ে আমার ভাইয়ের কোলে চড়ে শান্তি মেলেনি?এখন মাওই মা’কে জ্বালানো হচ্ছে না?”
ননদ-ভাবির খুনসুটির মাঝে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে জাহানারা বেগমের তাই তিনি রুবাকে বলেন,
“তোমার ভাবিকে একটু রুমে নিয়ে যাওতো মা।আমি একটু পরে আসছি”
“ঠিক আছে আন্টি”
বলেই চাঁদের কাছে এসে চাঁদকে ধরে রুমের দিকে এগোয় রুবা।চাঁদ রুবাকে ফিসফিসিয়ে বলছে,
“কোথায় কী বলতে হয় এখন কি তোমাকে সেটা আমি বলে বলে দেবো রুবা?”
রুবা মিটমিটিয়ে হেসে বলে,
“লজ্জা পেয়েছো নাকি ভাব্জ?কই কালতো ভাইয়ের কোলে দিব্বি চড়ে বেরিয়েছো!”
রুবার গাল টে!নে চাঁদ বলে,
“অনেক পেকে গেছো দেখছি।দাড়াও তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে”
“না না ভাবি!কি যে বলোনা!সবেতো ভার্সিটি উঠবো।এখনই বিয়ে কিসের?”
“তোমার এডমিশন কবে?”
“এইতো আছে আর মাস দুয়েকের মতো”
“আর তুমি ঘুরে বেরাচ্ছো?”
“ঘুরলাম আর কই ভাবি।প্রণয় ভাইয়ার বিয়ে বলে কথা না এসেতো একদম পারলাম না।আর চট্টগ্রামের সৌন্দর্য দেখতে তার হানিমুনেও চলে এলাম।কিন্তু হানিমুনতো হলো বলে মনে হয়না”
বলেই মুখ টিপে হাসে রুবা।তা দেখে রুবার কপালে খানিকটা গুতো মে!রে চাঁদ বলে,
“আমি তোমার কত বড় আইডিয়া আছে তোমার?”
“না গো ভাবি।কত বড় শুনি?”
“আমি টুয়েন্টি ফোর প্লাস।প্রায় টুয়েন্টি ফাইভই ধরতে পারো”
“মাত্র?আর আমি আঠারো প্লাস।ভার্সিটি উঠতে উঠতে নাইনটিন প্লাস হয়ে যাবো”
“তা পাকনি বুড়ি,প্রিপারেশন কেমন তোমার?আর রিদি,শিফাও তো সেম ক্লাস না?”
“হ্যা ভাবি।আমাদের সবারই এডমিশন।প্রিপারেশন আলহামদুলিল্লাহ ভালোই”
কথা বলতে বলতে রুমে চলে আসে দু’জনে।চাঁদকে বিছানায় বসিয়ে আবারও ব্যাগ গুছাতে লেগে পড়ে রুবা।বিছানায় বসে চাঁদ সকলকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“তা তোমাদের তো সামনেই এডমিশন।কি হতে চাও ত্রিনয়নারা?”
শিফা চাঁদকে জিজ্ঞেস করে,
“আমাদের বলছো ভাবি?”
চাঁদ জবাব দেয়,
“ত্রিনয়না বলতেতো তোমাদেরকেই বুঝিয়েছি।আর এডমিশন টেস্টওতো শুধু তোমরাই দেবে?নাকি আরও কেউ আছে?”
রিদি চাঁদকে দ্রুত গতিতে বলে,
“না না ভাবি।আমরাই।ইম…আমারতো খুব শখ তোমাদের মতো ডাক্তার হবো”
চাঁদ ভ্রু নাচিয়ে বলে,
“কেনো কেনো…এ শখ কেনো?”
রিদির আগে রুবা জবাবে বললো,
“যাতে করে একটা ডাক্তার জামাই পায়।বুঝলে ভাবি?”
রুবার কথা শুনে ভেতরে উপস্থিত সকলেই হেসে দিলো।রিহা ঠাট্টা করে বললো,
“তাই নাকি রিদু?আমাদের রিদুমনির ডাক্তার পছন্দ?”
রিদি লজ্জা পেয়ে ব্যাগের চেইন লাগিয়ে কাপড় হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।তা দেখে আরেকদফা সকলে হাসলো।অতঃপর চাঁদ শিফাকে জিজ্ঞেস করলো,
“তোমার কি শখ শিফা?রিদির মতোই ডাক্তার?”
“আরেএ না ধুর!ডাক্তার হয় কে?আমারতো র*ক্ত দেখলেই মাথা ঘুরে যায়!”
রিহা জিজ্ঞেস করে,
“তাহলে কি উশ্মির মতো অ্যাডভোকেট হবে নাকি?”
শিফার পক্ষ থেকে এবারও নেগেটিভ জবাব আসে,
“ওদের মাথায় শুধু প্যাচ আর প্যাচই থাকে আপু।আমি আবার খুব সরল মনের মানুষ এতো প্যাচ নিয়ে চলতে পারবোনা”
উশ্মি কপাল কুচকে বলে,
“তাহলে তুই হবি টা কী?পাশের বাসার আন্টি?”
উশ্মির কথায় এবারও সবাই হেসে দেয়।চাঁদ উশ্মিকে বলে,
“পাশের বাসার আন্টি পরোক্ষ-প্রতোক্ষভাবে একদিন আমরা সবাই হবো উশ্মি।এতে নতুনত্ব কিছু নেই”
শিফা চাঁদের সাথে তাল মিলিয়ে বলে,
“একদম সঠিক জবাব দিয়েছো ভাবি”
রিহা জিজ্ঞেস করে,
“তা তুমি হতে চাও টা কী শিফু?”
শিফা ভাবুক ভঙ্গিতে বলে,
“যেতেহু সাইন্স থেকে পড়েছি যেকোনো কিছুই হওয়া যায়।তবে ভাবছি আমি জার্নালিস্ট হবো”
“আর তুমি রুবা?”
রুবা চুল আচড়াতে আচড়াতে বলে,
“আমার ছোট বেলা থেকে শখ ঢিচকাও ঢিচকাও গু!লি করার।সো ইয়েস আমি অবশ্যই পুলিশ অফিসার হবো।তাও যেনো তেনো নয়।একজন বড় মাপের ই।সবাই আমায় ম্যা’ম ম্যা’ম বলে ডাকবে”
রুবার কথা শুনে চাঁদ বলে,
“বাবাহ!একই পরিবারে এতোকিছু!ডাক্তার,অ্যাডভোকেট,জার্নালিস্ট আবার পুলিশও!আর কিছু বাকি আছে নাকি?”
রিহা হেসে বলে,
“দাড়াও চিন্তা করে দেখি”
ঠিক তখনই রিদি তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বলে,
“কী চিন্তা করবে আপু?”
রিদিকে দেখে চাঁদ বলে,
“তোমার এক্সামটাইতো তাহলে সবার আগে রিদু।আর এক মাস আছে।প্রিপারেশন কেমন?ডিএমসি কনফার্ম?”
রিদি তোয়ালে দড়িতে মেলে দিতে দিতে বলে,
“ডিএমসি না হলেও পাবলিক মেডিকেল একটা হয়েই যাবে এটা আমি শিওর”
“যেহেতু তুমি মেডি অ্যাসপিরান্ট।ডিএমসি তোমার প্রাণ হওয়ার কথা রিদি”
চাঁদের কথার প্রেক্ষিতে জবাব আসে রুবার,
“তোমার মতো সবারতো আর ডিএমসি জান-প্রাণ হয়না ভাবি।আর সবাইতো তুমিও হয়না।তুমিতো একটাই।একটাই চাঁদ ভাবি আমাদের।তোমার রেকর্ড স্টিল কেউ ভাঙতে পারেনি।এই পাঁচবছরেও পারেনি আর কখনো পারবেওনা।আকাশে যেমন চাঁদ একটাই।জমিনেও চাঁদ কেবল একটাই”
চাঁদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“ওসব এখন কেবলই স্মৃতি।তাছাড়া তুমি সাইন্স থেকে ল নিয়ে পড়লে অসুবিধা হবেনা?”
রুবা কপাল কুচকে বললো,
“সাইন্স থেকে কেনো হবো?বললাম না ছোটবেলার স্বপ্ন?আমি নাইন থেকেই হিউম্যানিটিজ নিয়ে পড়েছি ভাবি”
রুবার কথা শুনে উশ্মি বলে,
“হ্যা তুইতো টপার।সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকিস”
রুবা উশ্মির পানে চেয়ে বলে,
“আমি মোটেও সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকিনা।”
“যখনই তোকে দেখি বই নিয়েই দেখেছি আমি”
“তুমি কি আমার বাড়ি গিয়ে বসে থাকো নাকি সবসময়?তাছাড়া এতোবছরতো বাইরেই ছিলে দেখবে কী করে?ছোটবেলার কথা এখন বলছো শুধু শুধু”
রুবার কথা শুনে শিফা বলে,
“ছোটবেলার কথা কেন হবে?জানো ভাবি আমাদের রুবা অলওয়েজ গোল্ডেন প্রাপ্ত ছাত্রী”
চাঁদ হেসে বলে,
“বাহ!বেশতো।তুমি তাহলে কনফার্ম পুলিশ হয়েই গেলে নন্স”
রুবা চাঁদের পানে চেয়ে বলে,
“তবে তোমার মতো একদমই হতে পারবোনা।তুমিতো এসএসসি,এইচএসসিতে এ+ ছাড়াই টপার অফ বিডি হয়েছো।তাও আবার যেনো তেনো টপার না।অবিশ্বাস্যনীয় রেজাল্টধারী টপার!যেটা আমি কখনোই হতে পারবোনা”
প্রসঙ্গ এড়িয়ে চাঁদ বলে,
“আজ আমরা বাড়িতে গিয়ে বার্বিকিউ পার্টি করবো কেমন?”
শিফা মুখ লটকিয়ে বলে,
“তাতো সম্ভব না ভাবি”
“কেনো?”
রিদি জবাব দেয়,
“আমি,শিফু আর ভাইয়া এখান থেকেই আমাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাবো,তারপর শিফু শিফুর বাসায় আর আমরা আমাদের।আর রুবা-রায়হান ভাই তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে”
রিহাও বললো,
“আমাদের বাসা যদিও ঢাকাতেই।আমি আর মিরও যার যার মতো চলে যাবো চাঁদ”
চাঁদ হতাশ হয়ে ম্লানমুখে বললো,
“সবাই একসাথেই চলে যাবে?বড্ড মিস করবো তোমাদের।একা হয়ে যাবো ওখানে একদম”
উশ্মি বলে,
“একা হবে কেন ভাবি?আমি আছি না?”
“তুমিতো বেশিরভাগই কোট-কাচারীতে থাকবে”
“যতক্ষণই থাকি কম্পানি দেবো।আর প্রণয় ভাইয়াতো আছেই,তোমার হাজবেন্ড।”
বলেই খানিকটা থেমে আবার বলে,
“তোমরা থাকো আমি একটু আসছি”
উশ্মি চলে যেতেই রুবা বলে,
“বার্বিকিউ পার্টিটা মিস করে ফেললাম কিন্তু ভাবি”
“সমস্যা নেই।আবার যখন সবাই একত্রিত হবো তখন করবো কেমন?”
ইহাদুল ইসলামের সাথে এক খোলা মাঠের কোনো এক বেঞ্চিতে পাশাপাশি বসে আছে প্রণয়।ইহাদুল ইসলামই শুরুতে প্রশ্ন করেন,
“তা হঠাৎ দোকান থেকে এখানে ডাকলে যে বাবা?”
“দরকার ছিলো আব্বু”
“হ্যা তাতো বুঝেছিই।তা বলো বাবা কী দরকার?”
প্রণয় শান্ত ভঙ্গিতে বেশ ঠান্ডাসুরেই বলে,
“আসলে আব্বু আমি চাচ্ছিলাম চাঁদের যতটুকু ইন্টার্নি করা বাকি আছে সেটা সে ঢাকা থেকেই করুক।আর এরপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন টাও সেখান থেকেই করুক”
“কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব?ও’তো চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে পড়ছে”
“কিন্তু সেতো ডিএমসির প্রাক্তন স্টুডেন্ট”
“এতোবছর পর কি তারা আবার নেবে?”
“কেনো নেবেনা আব্বু?চাঁদের এডমিশনে যেই স্কোর ছিলো।অমন স্কোর আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি।চাঁদকে খুবই পছন্দ করে সকলে।সবাই চাইতো চাঁদ যেনো ঢাকা মেডিকেলের বেস্ট সার্জন হয়।সবাইতো জানতো হার্ট নিয়ে চাঁদের কত উৎফুল্লতার কথা।সেবছর চাঁদের ব্যাচের যেই ছেলেটা সেকেন্ড হয়েছিলো সে এখন নিউরোলোজিস্ট।এতোদিন চাঁদ ওখানে থাকলে সেও কার্ডিওলোজিস্ট হয়ে যেতো।ইভেন স্কলারশিপে বাইরেও যেতে পারতো।সেই এবিলিটি তার মধ্যে ছিলো।আর আমি চাচ্ছি সে যেনো তার স্বপ্নটাকে আরেকবার ছুয়ে দেখুক।চোখ জুড়িয়ে অন্তরে ধারণ করুক।সেখান থেকেই স্বপ্নজয় করুক।আমি সেখানেরই কার্ডিওলোজিস্ট আব্বু।আমি বিষয়টা দেখে নেবো।শুধু আপনার অনুমতির দরকার”
সবকিছু শুনে ইহাদুল ইসলাম বলেন,
“চৈত্র আর চাঁদকে একবার…”
“আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলেছি।তার কোনো আপত্তি নেই।এখন শুধু আপনার পার্মিশনটুকুই বাকি।আর চাঁদকে এ ব্যাপারে জানাবোনা।ভাইয়া আর আমি এটা সারপ্রাইজ হিসেবে রাখতে চাই আব্বু”
ইহাদুল ইসলাম বিস্তার হেসে বলেন,
“মেয়ের জন্য আমি অযোগ্য কাউকে বাছিনি।সেরাটাই পেয়েছে আমার মেয়ে।তোমার মাঝেই আমার মেয়ে তার সর্বসুখ খুঁজে পাবে বাবা,সে বিশ্বাস আমার আছে।তুমি যেটা ভালো মনে করো সেভাবেই করো।আমার অনুমতি আর দোয়া সবসময় তোমাদের সাথে আছে”
To be continued….
[বিঃদ্রঃগল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।বাস্তবতার সাথে না মেলানোর অনুরোধ রইলো]