#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৫০.
প্রণয়ের সাথে শপিংমলে দাঁড়িয়ে আছে অরণ।প্রণয় কেনাকাটা করছে আর অরণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে এক দিকেই চেয়ে থেকে কোনোকিছু নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।প্রণয় অনেক্ক্ষণ যাবৎ ই তা খেয়াল করে অবশেষে অরণকে বলেই ফেলে,
“কী হয়েছে?এমন অন্যমনস্ক হয়ে আছিস কেনো?”
প্রণয়ের কথায় তার পানে তাকিয়ে অরণ বলে,
“কোথায়?”
“আমার চোখ ফাকি দিতে পারবি ভেবেছিস?”
প্রথমবারের ন্যায় প্রিয় বন্ধুকে মিথ্যা বলতে হয় অরণের,
“কিছুটা ডিপ্রেসড”
“কেনো?”
“অরিনকে নিয়ে”
অরিনের কথা শুনেই কপাল কুচকে প্রণয় বলে,
“ওসব বাদ দিয়ে আমায় কেনাকাটায় হেল্প কর মন ভালো হবে।আর বললি না তো দুই ঘন্টা দেরি হলো কেনো?তুইতো সেই দুইটার দিকেই হাসপাতাল থেকে বেরিয়েছিলি?”
ভাইয়ের রুমে ঘাপটি মেরে বসে আছে চাঁদ।কলেজ থেকে এসে এভাবে যে বসেছে আর রুম থেকে বের হয়নি।তার মা কতবার খেতে ডেকেছেন তাও যায়নি।মূলত সে অপেক্ষা করছে অরণের ফোনকলের অথবা মেসেজের।কিন্তু অরণ তাকে তার বাসার নিচে দিয়েই চলে গেছে।কিছু বলেনি তেমন।শুধু বলেছে আগামীকাল বাইরে কোথাও দেখা করবে।সেটা নিয়েই ভাবছে চাঁদ।সেইসাথে ভীষণভাবে চুপসে আছে।ক্ষণে ক্ষণেই কেপে উঠছে।বারংবার আম্বিয়ার লা*শটা চোখের সামনে ভাসছে।ঘেমে গেছে খানিকটা,মৃদু কাপছে শরীর।এমতাবস্থায় কেউ তার গায়ে হাত রাখতেই ‘আ’ শব্দ করে চেচিয়ে উঠতেই তার মা জাহানারা বেগম বলেন,
“আমি আমি!এমন ভুত দেখার মতো চমকাচ্ছিস কেনো?”
মাকে দেখেই বিছানায় বসে থেকে তাঁকে জড়িয়ে ধরে চাঁদ।এক হাতে প্লেট ধরে অপরহাত দিয়ে চাঁদের পিঠে হাত রেখে জাহানারা বেগম বলেন,
“কী হয়েছে ভয় পেয়েছিস?”
দু’পাশে মাথা নেড়ে আরেকটু জোরে মাকে জড়িয়ে ধরে চাঁদ বলে,
“না আম্মু”
“সেতো বুঝতেই পারছি,ছাড়।দেখি কিছুইতো খাস নি।সেই যে এসেছিস রুম থেকে বেরিয়েছিস?রাত হয়ে আসলো অথচ কাপড় ও পাল্টাস নি।এতো ময়লা লেগেছে কী করে?মা!রপিট করিস নিতো?নাকি পড়ে গিয়েছিলি কোথাও?”
“হ্যা আম্মু একটু হোচট খেয়ে পড়েছিলাম”
“মোবাইল টিপে টিপে চোখতো খে!য়েছিসই।এখন চশমা পরেও কিছু দেখিস না?পড়িস কিভাবে আবার?”
“আহহা আম্মু বকোও না তো।আজ কিছুই ভালো লাগছেনা”
“মন খারাপ তোর?”
বলেই মেয়েকে ছাড়িয়ে তার পাশে বসেন জাহানারা বেগম।অতঃপর ভাত মাখতে আরম্ভ করতে নিলেই চাঁদ খানিকটা উচ্চস্বরে বলে,
“মেখো না আম্মু।আমি খাবোনা”
“কেনো খাবিনা?কিছুইতো খাস নি?না খেলে পড়বি কী করে?কাল না শেষ এক্সাম?”
“আমি এমনিতেই পড়তে পারবো।আমার খেতে ইচ্ছে করছেনা সত্যি”
“এক চ!ড় দেবো।আসছে খেতে ইচ্ছে করছেনা।একটু হলেও খেতে হবে।দেখি হা কর”
বলেই চাঁদের দিকে এক লোকমা ভাত এগিয়ে দেন জাহানারা বেগম।তা দেখে চোখ বন্ধ করে মায়ের হাত সরিয়ে দিয়ে অসহায় কন্ঠে চাঁদ বলে,
“খাবার আমার গলা দিয়ে নামবে না আম্মু”
কপাল কুচকে জাহানারা বেগম বলেন,
“কেনো?”
“ইম….ওদের সাথে ক্যান্টিনে অনেক ভাজাপোড়া খেয়েছি।পেট ফেপে আছে।কিছুই খাওয়া সম্ভব না আম্মু।রাতের খাবারও খেতে পারবোনা”
“সে কি?মুখ যে শুকনো লাগছে।পেটটাওতো পড়ে আছে।খেলে এরকম দেখাবে কেনো?শরীর খারাপ করছে মা?দেখি”
বলেই বাম হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে চাঁদের কপাল স্পর্শ করতেই চমকে উঠে বলেন,
“শরীরতো পুড়ে যাচ্ছে।হঠাৎ জ্বর বাধালি কী করে ইশ!দেখি একটু খেয়ে নে মা ঔষধ খাওয়া লাগবে”
হঠাৎ করেই মাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে উঠে চাঁদ বলে,
“মাগো!বিশ্বাস করো খেতে পারবোনা আমি।খাবার নিয়ে যাও আমার বমি লাগছে”
বলেই উঠে বেসিনের কাছে গিয়ে উগলে দেয় সব।পানি ব্যতীত আর কিছুই পেট থেকে বের হয় না।মেয়ের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে জাহানারা বেগম বলেন,
“তুই না খেয়েছিস?তবে পানি আসছে কেনো শুধু?এই ই তোর খাওয়া?”
বেশকিছুক্ষণ পর নিজেকে পরিষ্কার করে মায়ের পাশে বসে চাঁদ বলে,
“আমার শরীরটা ভালো লাগছেনা আম্মু।আমি ভোরে উঠে রিভাইস দিবো।সব পড়া আছে।রিভাইস দেয়া লাগবে।এখন একটু ঘুমাতে চাই।তোমার আর আব্বুর সাথে ঘুমাই আজকে?প্লিজ?”
“প্লিজ বলছিস কেন?ঘুমাবি,সমস্যা কোথায়?একটু খেয়ে নে”
“আল্লাহর দোহাই লাগে খাওয়ার কথা বলবেনা প্লিজ।আমার মন চাইলে আমি খেয়ে নিবো।তুমি প্লিজ আমার পাশে শুবে আম্মু প্লিজ?”
“সবেইতো পৌনে আটটা বাজে।তোর আব্বু ভাইয়া আসবেনা?”
“প্লিজ আম্মু?”
“আচ্ছা শুবো আয়।কিন্তু একটা কথা বল।তুই কি ভয় পেয়েছিস কিছুতে?”
“না আম্মু ভয় পাইনি।খুব খারাপ লাগছে।শুধু শুধু মন খারাপ হঠাৎ করেই”
অতঃপর মাকে সাথে নিয়ে মায়ের বিছানায় মাকে জড়িয়ে কাথা গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ে চাঁদ।জাহানারা বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে এক হাতে জড়িয়ে রেখে চিন্তার সাগরে ডুব দেন।হঠাৎ করে মেয়েটার কী হলো?
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
খুব ভোরে উঠে আলতো হাতে মাকে ডাকে চাঁদ।ডেকে বলে,
“আম্মু?আম্মু আমি ওয়াশরুমে যাবো।চলোনা প্লিজ”
মেয়ের ডাকে ঘুম থেকে হাই তুলতে তুলতে উঠে মেয়েকে নিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে থাকেন জাহানারা বেগম।মেয়েকে নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে যান তিনি।হঠাৎ তার বাঘের বাচ্চাটা এমন নেতিয়ে পড়েছে কেনো?কী হয়েছে তার সাথে?এমন ব্যবহার করছে কেনো বুঝতে পারছেন না তিনি।অতঃপর রুমে এসে শোয়ার প্রস্তুতি নিতে গেলে চাঁদ বলে,
“আম্মু আমার পাশে বসে থাকোনা প্লিজ?আমি পড়তে বসবো”
মেয়ের মলিন কন্ঠে মেয়েকে আর না করতে পারেন না তিনি।তবে চিন্তা মস্তিষ্কে কিলবিল করছে।শীঘ্রই বিষয়টা জানতে হবে তার।হঠাৎ করে মেয়েটার হলো কী?কী দেখেছে এমন?অথবা কী হয়েছে তার সাথে?খারাপ কিছু?নাকি খারাপ কিছু দেখেছে সে?
এক্সাম হল থেকে বের হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে হাটছে চাঁদ।হঠাৎ করে ফায়ান বলে,
“তোমার চেহারা এমন শুকিয়েছে কেনো চাঁদ?ঘুমাওনি?রাত জেগেছো?”
মাথা নিচু রেখেই চাঁদ আস্তে করে বলে,
“না।ঘুমিয়েছিতো”
“তাহলে চেহারাটা এতো শুকনো কেনো দেখাচ্ছে?”
ইপ্সি বলে,
“গতকালইতো বলছিলাম ওর কী যেনো হয়েছে।আজ আরও বেশি চুপচাপ লাগছে।আমরা কিছু বললেই উত্তর দিচ্ছে তাও হুহা এসব।তোর কী হয়েছে বলবি চাঁদ?”
বন্ধুবান্ধবের চিন্তিত মুখশ্রীর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চাঁদ বলে,
“জানিসই তো ফেয়ারওয়েলের পর থেকে প্রণয়ের সাথে তেমন কথা হচ্ছেনা।এর প্রায় দশ-পনেরো দিন পর থেকে টোটালি যোগাযোগ অফ।হাসপাতালে এসেও সে দেখা করছেনা,কথা বলছেনা।আবার এক্সামের প্যারা।তো খানিকটা ডিপ্রেসডই বলতে পারিস”
“প্রণয় ভাইয়ার জন্য?কিন্তু তুইতো জানিস ইন্টার্নশিপে এমন ঝামেলা থাকেই।সময় বের করা যায়না”
অবনীও বলে,
“তাছাড়া ভাইয়াতো কার্ডিওলজি নিয়ে তার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করবে।দু’বছর বেশি লাগবে অন্যদের থেকে।সময় বের করাটা কষ্টসাধ্য নয় কি?”
“একটা মেসেজও দেয়না”
ইফাদ বলে,
“ভাইয়াকেতো আমি অনলাইনেই দেখিনা মেসেজ কিভাবে দেবে চাঁদ?”
“সিমে দেওয়াই যায় তাইনা?নাকি ফোনটাও সাথে থাকেনা?”
কপাল কুচকে গম্ভীরভাবে ফায়ান বলে,
“তুমিতো এমন না চাঁদ।এসব বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটির মানুষতো তুমি না।তবে হঠাৎ এসব বলছো কেনো?হয়েছে কী তোমার?”
অবনীও বলে,
“আর এমনও তো না যে তোরা প্রেম করতিস বা গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড ছিলি যে ভাইয়া তোকে ইগনোর করবে বা করছে ব্রেকাপের উদ্দেশ্যে?”
চাঁদ কপাল কুচকে নিতেই তার ফোনটা বেজে উঠে।অরণের নম্বর দেখেই চোখ চিকচিক করে তার,শ্বাস বাড়ে।বন্ধুমহলের পানে চেয়ে বলে,
“আমার একটা কাজ আছে,গেলাম”
“কোথায় যাবি?আজতো শেষ এক্সাম আমরা কোথায় বেরুবো না?খাবোনা?”
অবনীর কথা শুনে চাঁদ বলে,
“কাল খাবো দোস্ত শিওর।আজ তোরা কোথাও ঘুরে আয়।একদিন আমিসহ সবাই যাবো।আজ আমার যেতেই হবে দোস্ত গেলাম”
বলে আর এক মুহুর্ত দাঁড়ায়না চাঁদ।মোবাইল কানে লাগিয়ে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে যায় কলেজ থেকে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
টিএসসির মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে অরণ।চাঁদ সেখানে উপস্থিত হতেই চাঁদসহ উদ্যানের ভেতরে ঢুকে সে।হাটতে হাটতে ফাকা কোনো জায়গা খোঁজে,যেখানে মানুষের ভীড় কম।অতঃপর পেয়েও যায়।একটা গাছের নিচে ঘাসের উপরই গিয়ে বসে দুজনে।চাঁদই বলা শুরু করে,
“আজ হাসপাতাল যান নি?”
“না,একটা কাজ ছিলো সেখানেই ছিলাম।তুমি বলো মুখ এমন শুকনা আর চোখের নিচে এমন কালচেভাব দেখাচ্ছে কেনো?”
“তেমন কিছুইনা”
“তেমন কিছুই।তুমি যে কিছু খাও নি তা বোঝাই যাচ্ছে।এমন কিছু দেখার পর খাবার গলা দিয়ে নামার কথাও না।বসো আমি কিছু নিয়ে আসছি”
“না আমি কিছু খাবোনা।এই বিষয়টা ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি মিলছেনা”
গলার স্বর খাদে নামিয়ে অরণ বলে,
“যা বলবে খুবই ধীর গতিতে বলবে।আমি ব্যতীত যেনো কেউ না শোনে”
অরণের কথা শুনে তার পাশে আরেকটু চেপে এসে চাঁদ ফিসফিসিয়ে বলে,
“আম্বিয়া আপুকেতো আমি সেদিন অনিন্দ্য স্যারের সাথে দেখেছি অরণ,তাহলে আপুর লা*শ ওখানে কী করছে?আর দেখে এয়ো মনে হলো পুরোনো লা*শ।পচে গলে যাচ্ছিলো।অতিরিক্ত মাত্রায় নরম হয়ে গেছে।বিষয়টা মাথায় আসছেনা আমার”
অরণও নিম্নকন্ঠে বলে,
“ফার্স্টে আমিও বুঝিনি কিন্তু অনেক ভাবার পর একটা জিনিসই মাথায় আসছে কিন্তু তার আগে বলো তুমি কি শিওর এক্সামের আগেরদিন আম্বিয়াকেই দেখেছিলে?”
“হ্যা।আম্বিয়া আপুই ছিলো ওটা”
“কিন্তু আমরা যে লা*শ দেখেছি সেটা আম্বিয়ারই।আমি যতটুকু বুঝেছি।মেয়েটাকে ধ!র্ষ!ণ করার পরও খুব ট!র্চার করা হয়েছে আর মেয়েটার সম্পর্কে যতটুকু শুনেছি তোমার মতোই সাহসী স্বভাবের।কিছু একটা হয়তো করতে চেয়েছিলো যার দরুন এতোটা নি!কৃ!ষ্টভাবে তাকে হ*ত্যা করা হয়েছে”
“তা…তাই বলে উ….উ*ল*ঙ্গাবস্থায় শরীর কে!চে হ*ত্যা করবে?”
“ধ!র্ষ!ণ করে সরাসরি মা!রার হলে ডিরেক্ট পেটে অথবা অন্যভাবে মা!রতে পারতো কিন্তু যেভাবে কে!চিয়েছে,জিহবা বে…বের করে অর্ধেক কে!টে রেখেছে আর মাথা ন্যা*ড়া করেছে তাতে করে এটাই মনে হচ্ছে কিছু একটা জেনে গিয়েছিলো অথবা পালাতে চেয়েছিলো যার দরুন অতিরিক্ত রেগে ওভাবে মেয়েটাকে….।আর লা*শটা যদি তখনকার হতো যখন ও গায়েব হয়েছে তবে এতোদিনে পুরোপুরি পচে যেতো।কিন্তু এটার বেশিদিন হয়নি মানে বলতে পারো মাস খানেকের মতোই হয়েছে।অথবা তারও কম”
“কিন্তু লা*শতো তিন-চারদিনের মধ্যেই পচা শুরু করেনা?”
“সেটা যদি মাটির নিচে থাকে তখন।কিন্তু ওর ডে*ড*ব*ডিতো মাটিতে পু*তেনি আর যথেষ্টই পচেছে নাহয় তুমি পা দিতেই কেন ওভাবে গলবে?”
“তাহলে আমি যাকে দেখলাম সেটার?”
“সেটা নিয়ে আমার একটাই সন্দেহ”
“কী?”
“হয় তুমি ভুল দেখেছো নাহয়….”
“নাহয়?”
“অন্য কেউ আম্বিয়ার ফেসমাস্ক লাগিয়েছে এবং হয়তো এজন্যই আম্বিয়াকে হ*ত্যাও করেছে”
“তার মানে এসবকিছুতে কোনো মহিলাও আছে?”
“তুমি যদি ভুল না দেখো তবে মহিলাই আছে।আর যদি ভুল দেখো হতে পারে অনিন্দ্য স্যারের গার্লফ্রেন্ড টাইপ কিছু”
“তাহলে কীভাবে সবটা জানা যাবে?”
“বিষয়টা বেশ জটিল।তুমি বলেছিলেনা?যারা উধাও হয়েছে ওরা ফিরে এসেছে।ওদের থেকেই জানা লাগবে”
“কিন্তু ওরা কি বলবে?”
“বাট উই হ্যাভ টু ট্রায়”
“আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে”
“কী প্ল্যান?”
অরণের কানের কাছে গিয়ে আস্তেসুরে পুরো পরিকল্পনা তাকে শোনায় চাঁদ।তা শুনে অরণ ক্রুর হেসে বলে,
“তুমিতো অতিরিক্ত মাত্রায় চতুর চাঁদ”
“আরেকটা জিনিস।অনিন্দ্য স্যারকে চব্বিশ ঘন্টাই যদি নজরে রাখা যায় সহজেই বাকিদের সম্পর্কেও জানতে পারবো।আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে এ কাজে কোনো তিন-চারজনের হাত না অনেকজনই আছে এবং যে মাস্টারমাইন্ড তার ক্ষমতা বেশ”
“আমারও তা ই লাগছে”
“আম্বিয়া আপুর বিষয়টা মাথা থেকে যাচ্ছেনা”
“লা*শের কথা ভুলে যাও।আর এটা শিওর হওয়ার চেষ্টা করো যে ঐটা আম্বিয়ার মতোই চেহারা কিনা?যদি তাই হয় দ্যাটস মিন আম্বিয়ার ফেস দিয়ে নিজের আসল পরিচয় লুকাচ্ছে।এবং হয় সে ই মাস্টারমাইন্ড আদারওয়াইজ মাস্টারমাইন্ডের পার্টনার”
“হিম এমনকিছুই হবে”
“তোমার জুতাটার কী করেছো?”
“ধুয়ে মাটিতে পু*তে দিয়েছি”
“এমন টা করলে কেনো?কেউতো দেখেনি আমাদের”
“ঐ জুতাজোড়া দেখলে আমার চোখের সামনে সেই বিদঘুটে লা*শ ভাসে”
“আচ্ছা আচ্ছা সরি।এসব ভুলে তোমার বিড়াল মানবকে নিয়ে ভাবো”
“তাকে নিয়ে ভাবার কী হলো?”
“মাহ?ওকে দিয়ে ভালোবাসি বলাতে হবেনা?”
“তার যখন ইচ্ছা হবে বলবে।নাহয় বলবেনা”
“ওরে ভাবি আমার!শোনো,তুমি এখনো পুরোপুরি গম্ভীর মহাশয়কে চেনোনি।ও অতিরিক্তই ইন্ট্রোভার্ট।ওর মুখ দিয়ে ভালোবাসির ‘ভা’ ও উচ্চারিত হবেনা।তাই যা করার আমাদেরই করতে হবে”
“কিন্তু এতে করে যদি সে আপনাকে আর আমাকে ভুল বুঝে?”
“একটু ভুলতো বোঝাতেই হবে।নাহয় জেলাস হয়ে মনের কথা কীভাবে বলবে?সেজন্যইতো ওকে বারবার ওয়ার্ন করি যেনো তুমি অন্যের হওয়ার আগেই বলে দেয় বাট গাধাটা বলছেইনা।না তুমি গাধী কিছু বলছো”
কিছুটা লজ্জা পেয়ে চাঁদ বলে,
“না মানে….”
“হয়েছে মানে টানে চলো খাবে।ওসব চিন্তা আপাতত কয়েকদিনের জন্য ঝাড়ো।বাকিটা পরে দেখা যাবে।নিজের স্ট্রং পার্সোনালিটি ধরে রাখো।এভাবে নেতিয়ে পড়লে সবাই সন্দেহ করবে”
“আচ্ছা।আর এসব কথা কাউকে বলেননিতো?”
“না।আপাতত কাউকেই জানাই নি”
“কাউকে জানিয়েনও না।প্রণয়কেও না।বিষয়টা আমরা শিওর হই দেখি সামনে কী হয় তারপর দেখা যাবে।আপাতত আপনার আর আমার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকুক”
“ঠিক আছে চলো”
“চলুন”
অতঃপর দুজনে বাইরে এসে হাসি-ঠাট্টা করতে করতে অনেককিছুই খেলো,অনেক গল্পই করলো।একে অপরের সম্পর্কে জানলো।সেইসাথে তাদের ভালোবাসার মানুষ সম্পর্কে অনেক ধারণাও দিলো।
To be continued…..