#তবে_ভালোবাসো_কী
#Mehek_Enayya(লেখিকা)
#পর্ব ০৪
তামিমের কথা শুনে আড়চোখে ড্রইংরুমের দিকে তাকায় মাহানুর। হ্যাঁ আরহামের পিছনের দিকটা দেখা যাচ্ছে। মাহানুর চরম বিরক্ত হয়। কী মানুষ! কাল বিয়ে হলো আজ সকালেই শশুরবাড়ি এসে বসে আছে। হাজেরা কাজ করছিল তাই রামিশাকে বলে আরহামের জন্য নাস্তা নিয়ে যেতে। নতুন জামাই বিয়ের পর প্রথম শশুরবাড়ি এসেছে খাতিরযত্নে জানো কোনো কমতি না হয়! মাহানুর বড় মার কথা শুনে মুখ বেঁচকি দেয়।
-বড় মা দেখেছো ঐ ছেলেটা কত কমনসেন্স ছাড়া! বিয়ে করতে দেরি শশুরবাড়ি আসতে দেরি নাই! (মাহানুর)
-চুপ, আরহাম এখন তোর জামাই কথাবার্তা একটু বুঝে শুনে বল মা!(হাজেরা)
-গোড়ার ডিম!(মাহানুর)
-বড় ভাবি আরহাম আর মাহানুরকে একসাথে কিন্তু ভীষণ মানায়! একদম পারফেক্ট জুটি!(লুৎফা)
-হ্যাঁ ঠিক বলেছিস লুৎফা। (মাহানুর)
-লুৎফা বোন আমাকে একটু নিয়ে যেতে সাহায্য করো। (রামিশা)
-এইতো এসেছি মেজো ভাবি। (লুৎফা)
মাহানুর সবসময় তার চাচীদের দেখে অবাক হয়। এতো মিলেমিশে কেমনে থাকে তারা! বর্তমান যুগে এইরকমটা ভীষণ কমই হয়। বুঝের হওয়ার পর থেকে মাহানুর তার চাচীদের মধ্যে কোনো ঝগড়া দেখেনি। বোনের মতো ভাব তিনজনের মধ্যে! খাওয়া শেষ করে ড্রইংরুমে না গিয়ে তার রুমে চলে যায় মাহানুর। মনোযোগ দিয়ে ভার্সিটির ব্যাগ গুছাচ্ছে। হঠাৎ তার মনে হলো বরাবর পিছনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। মাহানুর চটজলদি পিছনে ফিরে যায়। তার ধারণা সঠিক ছিল। বুকে হাত দিয়ে গম্ভীর হয়ে আরহাম দাঁড়িয়ে আছে। মাহানুর একটু পিছিয়ে যায়। মাহানুর আসলেই নাগা মরিচ। তবে সে কোনো ছেলের নিকটত্ত্ব সহ্য করতে পারে না। ছেলেদের দেখলেই তার শুধু ঝগড়া করতে ইচ্ছে করে।
-ঐ মিয়া আমার রুমে কী করছেন? সাহস কত বড় মাহানুরের রুমে দাঁড়িয়ে আছেন?
আরহাম কোনো উত্তর দিলো না। ঘুরে ঘুরে মাহানুরের পুরো রুম দেখতে লাগলো। তারপর ধপ করে বিছানায় বসে পরে। পিছনে বালিশ দিয়ে নিশ্চিত ভঙ্গিতে বসে মাহানুরের দিকে তাকিয়ে থাকে।
-চোখের কাজল লেপ্টে গিয়েছে তো!
-তাতে আপনার কী বদমাইশ পোলা।
-উম আমার জানা মতে মেয়েদের রুম সাধারণত পিঙ্ক কালার হয়। কিন্তু তোমার রুম এইরকম হোয়াইট এন্ড ব্ল্যাক কেনো?
-আমার রুম আমি যেমন মন চায় সেইরকম কালার করবো।
-ব্ল্যাক রঙটা ভীষণ বাজে দেখাচ্ছে! পুরো হোয়াইট হলে সুন্দর লাগতো।
-আপনার রুম যেয়ে হোয়াইট করুন। আমি আপনার থেকে কোনো এডভাইস চাইনি।
-ভার্সিটি যাচ্ছ?
-উফফফ এতো প্রশ্ন কেনো করেন আপনি! বের হন আমার রুম থেকে।
-আমি তো ভেবেছিলাম শশুরবাড়ি যেয়ে আমার একমাত্র ওয়াইফের রুমে গিয়ে একটা ঘুম দিবো! বাই দে ওয়ে বোরখা আছে?
-কেনো? পড়বেন?
-আগে বলো আছে নাকি?
-কেনো থাকবে না?
-বেশ, তাহলে এখন দ্রুত বোরখা পরে নেও।
-কেনো পড়বো বোরখা? আমি ভার্সিটিতে সবসময় এভাবেই যাই আর এভাবেই যাবো। বিয়ে করেছেন বলে যে আমি আপনার সব কথা শুনবো এটা ভাবা আপনার বড় একটি ভুল। আপনি আপনার জীবনে সবচেয়ে বড় একটি ভুল করে ফেলেছেন আমাকে বিয়ে করে! মুহূর্তে মুহূর্তে সেটার জন্য আপসোস করবেন আরহাম চৌধুরী।
-তাই?
-ইয়েস। এখন আমি ভার্সিটি যাচ্ছি আমার মুড নষ্ট করবেন না।
-আজ তুমি ভার্সিটি যাচ্ছ না মাহানুর।
-কেনো?
-এখন আমার সাথে মার্কেট যাবে।
-এখন মার্কেট কেনো যাবো! কাল আপনার বিয়ে? সেই কেনাকাটা করতে মার্কেট যাবো?
-বুঝেছি জন্মের পর তোমাকে মধু খাওয়ানো হয়নি! বিয়েতে তোমাকে।কিছু দিতে পারিনি আমি। আগামীকাল আবার ক্যান্টনমেন্টে চলে যাবো। তাই মা বলেছে আজই তোমাকে নিয়ে মার্কেট যেতে।
-লাগবে না আমার কিছু।
-তোমার না লাগলেও আমার লাগবে। তৈরি তো আছোই তাহলে চলো।
-আমি আপনার সাথে যাবো না।
-কিছু করার নেই যেতে হবে।
-আপনি কিন্তু এখনই আমার ওপর জুলুম খাটাচ্ছেন!
আরহাম বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। মাহানুরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলে,
-মাত্র তো শুরু! আগে আগে দেখো কী হয়।
-হাস্যকর! আপনার আমাকে বিয়ে করার স্বাদ মিটিয়ে দেবো বুঝলেন?
-বিয়ে তো করেছিই। এখন তুমি না যা করার আমিই করবো।
মাহানুর মনে মনে শপথ করলো, এই ছেলেকে সে দিনে তারা না দেখিয়েছে তাহলে তার নামও মাহানুর খান নয়। তার ওপর অধিকার দেখায়, তার ওপর! বিয়ের একদিন হলো না এখনই অত্যাচার করতে চলে এসেছে! আরহাম আগে আগে হেঁটে নিচে চলে যায়। মাহানুর আরেকবার নিজেকে আয়নায় দেখে নেয়। কালো রঙের গোল ফ্রক পড়েছে সে। মাথায় কালো রঙের হেজাব বাঁধা। সব কিছু ঠিকই আছে কিন্তু লিপস্টিক দেওয়া হয়নি। তাই সে ইচ্ছে করে চকলেট কালার একটি লিপস্টিক হালকা করে ঠোঁটে লাগিয়ে নেয়। কিছু একটা ভেবে পার্স ব্যাগে নিজের ফেভরিট সানগ্লাসটাও নিয়ে নেয়। ড্রইংরুমে আসতে মাহানুরের দেখা হয় তার বড় বাবার সাথে। সে হাসি মুখে মাহানুরকে বলে,
-দেখেশুনে যেও আম্মা। আর কোনোরকম ঝগড়া করবে না আরহামের সাথে।
-তুমি আমাকে ঝগড়াটে মেয়ে মনে করো বড় বাবা?
-মোটেও না। আমার মতে এখনকার যুগের মেয়েদের তুলনায় আমার আম্মা ভীষণ ভদ্র মেয়ে।
-হুম। আসি তাহলে।
-হ্যাঁ যাও।
মাহানুর সদর দরজার সামনে আসতেই দেখে কালো রঙে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন টিপছে আরহাম। মাহানুর কিছুক্ষন সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে আরহামকে। উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণ গাঁয়ের রঙ। লম্বা চওড়া বলিষ্ঠ দেহে আকাশি রঙের শার্টটা আটসাট হয়ে লেগে আছে। তার সাথে সাদা রঙের পেন্ট। চুলগুলো একটু ছোট ছোট করে স্টাইল করে কাঁটা। মুখে হালকা দাঁড়ি। মাহানুর মনে মনে বলে,
-এমনে দেখতে খারাপ না। কী সানগ্লাস পরে এটিটিউড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মন চায় এখনই যেয়ে পিছন থেকে একটা লাত্থি দেই!
মাহানুর মনে মনে কথা বলে এগিয়ে যায় আরহামের দিকে। আরহাম ফোন থেকে মাথা তুলে মাহানুরের দিকে তাকায়। গাড়ির দরজা খুলে দেয়। আরহাম ড্রাইভিং সিটে বসে পরে আর মাহানুর তার পাশের। মাহানুর মুখ বাঁকিয়ে বলে,
-ড্রাইভার নেই?
-আমি নিজেই যেহেতু ড্রাইভ করতে পারি তাহলে ড্রাইভার দিয়ে কী হবে? তবে সমস্যা নেই তোমার জন্য পার্সোনালি ড্রাইভার রাখা হবে।
-ওওও মিস্টার, আমিও ড্রাইভিং করতে পারি বুঝতে পেরেছেন।
আরহাম অবাক হলো না মাহানুরের কথায়। তার জানা মতে এইরকম চতুর মেয়ের ড্রাইভিং পারারই কথা। গাড়ি চলতে থাকে আপন গতিতে। রাস্তাঘাট একদম জমজমাট। বড় রোডে আসতেই জ্যামে ফেঁসে যায় তারা। মাহানুর বিরক্ত হয়। বর্ষাকাল চলছে এখন। প্রচন্ড গরমের তাপ। গাড়িতে এসি থাকার সর্তেও ঘেমে যাচ্ছে মাহানুর। আরহাম মাহানুরকে পরোক্ষ করে জালানা দিয়ে বাহিরে তাকায়। ভয়ংকর জ্যাম লেগেছে। মনে হয় এক ঘন্টার মতো এখানেই বসে থাকতে হবে!
-তুমি একটু বসো আমি আসছি।
-কোথায় যাচ্ছেন? স্মো*কিং করেন নাকি? তাহলে আমার জন্যও একটা সি*গারেট নিয়ে আইসেন দুইজন মিলে করবো নে।
আরহাম বিরক্তির নিঃশাস ছাড়ে। এই মেয়ে তাকে পাগল করবে নয়তো ভয়ংকর অসুখে ফেলবে!
-বসো চুপচাপ।
আরহাম চলে যায়। মাহানুর ফোন বের করে মেসেঞ্জারে ঢুকে। তন্দ্রা তাকে কয়েকবার ফোন করেছে। মেসেজ দিয়ে ভরে রেখেছে। মাহানুর তাকে কল দেয়। কল রিসিভ করার সাথে সাথেই তন্দ্রা বলে,
-কিরে ভার্সিটিতে এলি না আজ?
-আর বলিস না দুঃখের কথা! মার্কেটে যাচ্ছি জামাই নামক গন্ডারের সাথে।
-বাবা কী বলিস!
-হুম।
-তাহলে আজ আমাদের মাহানুর খান ডেট করতে বের হয়েছে তার নববিবাহিত হাসব্যান্ডের সাথে!
-দুর বা*ল! তার সাথে ডেটে যাওয়ার ইচ্ছে নেই আমার।
-তুইও না ভাই!
-এখন ভাবছি কীভাবে তাকে জ্বালাতন করা যায়। কিছু উপায় দে দোস্ত?
-উম তুই এক কাজ কর ইচ্ছে মতো মার্কেটিং করে ফকির বানিয়ে দে জিজুকে। তারপর দামি একটা রেস্টুরেন্টে যা। ভরপুর খাবার খা। যত পারিস খরচ করা তাকে দিয়ে।
-আইডিয়া সুন্দর। কিন্তু সকালে এতো খাবার খেয়েছি এখন তো পেটে জায়গা নেই!
-আরেহ, তোকে এখন কে খেতে বলেছে? প্রথমে মার্কেট যা। ঘুরেফিরে মার্কেটিং কর তারপর খেতে যা।
-সেই আইডিয়া। উম্মাহ বেস্টু।
-হুম রাতে আপডেট জানাইস ওকে।
-আচ্ছা। রাখি তাহলে।
ফোন কেটে দ্রুত ফোন ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয় মাহানুর। মনে মনে সেই সেই কিছু প্ল্যান করতে থাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই আরহাম গাড়িতে চলে আসে। একটা ব্যাগ ধরিয়ে দেয় মাহানুরের হাতে। মাহানুর ছোট ছোট চোখ করে জিজ্ঞেস করে,
-কী এটায়?
-খুলে দেখো।
মাহানুর আরহামের কথা মতো ব্যাগটা ফাঁক করে। জুস, চিপস, চকলেট, চানাচুর, আইসক্রিম এইরকম বিভিন্ন ধরণের খাবার ব্যাগের মধ্যে। মাহানুর খুশি হয়ে যায়। সে এইরকম হাবিজাবি খাবার খেতে ভীষণ পছন্দ করে। তাও আবার গাড়ির মধ্যে হলে তো কথাই নেই! আইসক্রিম বের করে খেতে থাকে। আরহাম লুকিংগ্লাসে মাহানুরকে দেখছে। মনে অন্যরকম একটা অনুভূতি তৈরি হচ্ছে তার। মাহানুর আইসক্রিম খেয়ে একটা চিপসের পেকেট খুলে বসে। এতক্ষনে জ্যামও সেরে গিয়েছে। পুনরায় গাড়ি চলছে। মাহানুর খেতে খেতে আরহামকে বলে,
-আপনি চট্টগ্রাম ক্যানন্টমেন্টে কেনো গেলেন? ঢাকায়ও তো ক্যানন্টমেন্ট আছে।
-ক্যানন্টমেন্ট কেউ নিজের ইচ্ছে মতো বাছাই করে নিতে পারে না। বড় বড় অফিসারদের থেকে অর্ডার আসে কাকে কোন জায়গার ক্যানন্টমেন্টে থাকতে হবে।
-ওহহ! মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন আপনি?
আরহাম গাড়ি চালাতে চালাতে ভোঁতা মুখে মাহানুরের দিকে তাকায়। মাহানুর মেকি হেসে বলে,
-ভুলেই গিয়েছিলাম আপনি তো তখন জন্মই হননি! কোন বিভাগ ও কোন পদে আপনি?
-আর্টিলারি বিভাগ আর ক্যাপ্টেন পদে আছি আপাদত। সামনে আমাদের মিশন আছে। সাকসেস হতে পারলে খুব দ্রুতই মেজর পদে নিয়োজিত হবো।
-ওওওও। বন্দুক চালাতে পারেন?
-এখন তুমি যদি মুখ বন্ধ করে না বসো তাহলে আমার পেন্টের পকেট থেকে বন্দুক বের করে তোমার মাথায় ঢুকিয়ে দেবো।
-ওমা! বন্দুক নিয়ে ঘুরেন?
-সেফটির জন্য রাখতে হয়।
-ওওওওও!
মাহানুর বলার মতো আর কোনো কথা খুঁজে পেলো না। তার ভালোই লাগছিল আরহামকে জ্বালাতে! কিছুক্ষনের মধ্যে গাড়ি মার্কেটে এসে থামে। মাহানুর আরহাম নেমে পরে গাড়ি থেকে। আরহাম প্রথমে মাহানুরকে মোবাইলের দোকানে নিয়ে যায়। মাহানুর বলে,
-আমরা এখানে কেনো যাচ্ছি?
-তোমার জন্য ফোন কিনতে।
-কিন্তু,
-চলো কথা কম বলো।
আরহাম কয়েকটা ভালো ভালো ব্রান্ডের ফোন দেখে। অবশেষে একটা ফোন চয়েস করে মাহানুরের জন্য। মাহানুর আরহামকে বারে বারে বলছে ফোন কেনার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আরহাম মাহানুরের কথার তোয়াক্কা না করে ফোনটা কিনে নেয়। পরমুহূর্তে মাহানুরের মনে পরে যায় সে তো আজ আরহামকে ফকির করবে। ফোন কেনা শেষ হলে আরহাম মাহানুরকে নিয়ে একটা জুয়েলারি শপে যায়। মাহানুর আবার স্বর্ণের কোনো জুয়েলারি পড়তে পছন্দ করে না। তার মতে এই হলুদ রঙের জুয়েলারিতে ক্ষেত ক্ষেত লাগে। আরহাম একজন কর্মচারীকে বলে ডায়মন্ড এর কিছু নাকফুল দেখাতে। মাহানুর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,
-নাকফুল দিয়ে কী হবে? আমি কিন্তু এখন কোনো নাকফুল পড়বো না বলে দিলাম।
-এখন পড়তে হবে না। যেদিন মন থেকে আমাকে ও আমাদের বিয়েকে মেনে নেবে সেদিন থেকে পড়বে।
মাহানুর প্রতিউত্তরে কিছু বললো। আরহাম একটা ফুলের ডিজাইনের নাকফুল ও এক জোড়া কানের দুল কিনলো। কানের দুলটা পছন্দ হয়েছে মাহানুরের। একদম সিম্পল। শুধু একটা পাথরের। তারপর তারা শাড়ীর দোকানে যায়। মাহানুর মনে মনে শয়তানি হাসি দিয়ে আরহামকে বলে,
-আমি শাড়ী পড়তে ভীষণ পছন্দ করি।
-তাই নাকি? ঠিক আছে বিয়ের পর আমার সামনে প্রতিদিন শাড়ী পড়িও।
-প্রতিদিন শাড়ী পড়া যায়নি। মাঝে সাঝে পড়ে।
-আমি যখন বাসায় থাকবো তখন প্রতিদিনই পড়া লাগবে।
নিজের কথায় নিজেই ফেঁসে গেলো মাহানুর। অসহায় মুখ করে অন্যদিকে ঘুরে যায়। আরহাম নিজেই পছন্দ করে কয়েকটা শাড়ী নেয় মাহানুরের জন্য। তারপর আরো কিছু জামাকাপড়, জুতো, কসমেটিক নেয়। মাহানুর শুধু অবাক হয়ে দেখছে। হঠাৎ আরহাম হালকা হেসে বলে,
-আর কিছু বাকি আছে?
-ভাই আপনি তো পুরো পাঁচ মাসের মার্কেটিং করে ফেলছেন! হয়েছে এবার।
-আমার জানা মতে আরো কিছু বাকি রয়ে গিয়েছে না?
-কী?
-উইযে ছোট বড় সাইজের কিছু জিনিস?
-আপনি পড়বেন? আপনার জন্য লাগলে কিনতে পারেন। নাহলে আমাকে সাইজ বলুন আমি কিনে এনে দিচ্ছি।
আরহাম বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকে মাহানুরের দিকে। সে ভেবেছিলো এবার বুঝি মাহানুরের সরমে লাল হয়ে যাওয়া মুখশ্রী দেখতে পারবে। কিন্তু এই মেয়ে কী সাংঘাতিক!
-অন্য কোনো মেয়েকে বললে সে এখন লাজে লাল যেত!
-তোহ! আমি কী করবো?
-না কিছু করা লাগবে না। চলো।
অতঃপর মার্কেটিং শেষ করে তারা একটা রেস্টুরেন্টে আসে। এখন তিনটা বাজে। ইচ্ছে মতো খাবার অর্ডার করে মাহানুর। এমনেও এতো হাঁটাচলা করে ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে তার। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওয়েটারr এক এক করে সব খাবার এনে দেয়। আরহাম নিজের খাওয়া রেখে মাহানুরের খাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। এক এক করে সব কিছু ফিনিশ করে দেয় মাহানুর। আরহাম নিজের খাওয়া শেষ করে বলে,
-এতো খেয়েও তুমি এইরকম হেংলা কেনো?
-তো আপনার মতো মোটা হবো নাকি! জানেন না চিকন মেয়েদেরই সুন্দর লাগে?
-আমি মোটা নই এটাই পারফেক্ট শরীর। তোমার আরেকটু মোটা হতে হবে। এই কয়মাসের মধ্যে বেশি বেশি খেয়ে মোটা হয়ে যেও।
-আমিও পারফেক্ট ওকে। আর এইরকম গঠনের মেয়েদেরই হ*ট লাগে।
-কী লাগে?
>>>>চলবে