যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ৪৩

1
710

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৪৩

অনেক সময় ধরে প্রতীক্ষায় থাকা মোহকে ভীষণ উতলা দেখাচ্ছে। অকৃত্রিম চোখজোড়ার পলক পড়ছে না। স্বচ্ছ বলল,
“যদি বলি ভালোবাসি না তাহলে?”

মোহ সহাস্যে বলল,
“তাহলে আপনি মিথ্যে বলছেন।”

“আর যদি বলি ভালোবাসি?”

“তাহলে বলব ভালোবাসবেন না আর।”

পানিতে ভিজতে ভিজতে লাল হয়ে থাকা স্বচ্ছের চোখ তখন বিস্ময়ে পরিপূর্ণ হলো। অস্ফুটস্বরে বলে উঠল,
“কেন?”

“কারণ এই ভালোবাসা আপনার জন্য বিষ হয়ে দাঁড়াবে। দূরে যান এই ভালোবাসা থেকে যা আপনার জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই ভালোবাসার জন্য আপনাকে মুহূর্তে মুহূর্তে কটাক্ষ হতে হবে। সময়ে সময়ে লোকে আপনার দিকে তীর ছুঁড়বে। আপনি সহ্য করতে পারবেন না সেটা।”

স্বচ্ছ নীরবে চেয়ে রইল। মোহের অদ্ভুত প্রত্যাখ্যানের কারণ বোধগম্য হলো না যেন। তীব্র এক যাতনা ছেঁয়ে গেল হৃদয়ে। মোহ স্বচ্ছের প্রতিত্তোর না পাওয়ায় বলল,
“বৃষ্টিতে এভাবে ভিজবেন না। বাবা আপনাকে বাড়ির ভেতরে যেতে বলল।”

মোহ বাড়ির ভেতরে যেতে উদ্যত হলো। স্বচ্ছ আচানক ডেকে প্রশ্ন করল,
“এসব কথা কি তুমি ইথানের জন্য বললে?”

মোহ থমকায় এমন প্রশ্নে। তার মৌনতায় স্বচ্ছ বলে,
“এই ভালোবাসা যদি আমার জন্য বিষ হয় তবে আমি সেই বিষপান আমার জন্য শ্রেষ্ঠ পান হবে। আর আমার নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি বরাবরই আগ্রহ বেশি। একারণেই হয়ত যারা আমার জন্য উম্মুক্ত তাদের প্রতি কখনো ভালোবাসা আসেনি। আমাকে যদি মুহূর্তে মুহূর্তে কটাক্ষ হতে হয় তবে কটাক্ষপাতই আমার সুখ। যারা তীর ছুঁড়বে তাদের তীর আমি তাদের দিকে ফিরিয়ে দিতে জানি। সর্বশেষে আমি আমার সামনে থাকা নারীকেই চাই।”

মোহ স্তব্ধ নয়নে তাকিয়ে রইল কিছু সময়। এরপর নিচু সুরে বলল,
“আপনার পরিবার মানবে না। আপনার বাবা মানবে না। কলহ বাড়বে।”

“বাবা? জানো, একসময় বাবাকে কতটা সম্মান করেছি। আজ আমার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। এই পরিবর্তন অবশ্য উনার জন্যই হয়েছে। আগের মতো বাবা ভক্ত থাকলে হয়ত বাবাকে যেভাবেই হোক রাজি করাতাম। এখন তার প্রয়োজনবোধ করি না। আর কথাটা যদি আমার পরিবারের বাকি সদস্যকে নিয়ে হয় তবে বলব তারা আমাকে খুশি দেখতে চায়। সেই খুশিটার যার মাধ্যমে আসুক তারা সেটা মানতে আপত্তি করবে না।”

“আমরা সবসময় যেটাকে সহজ করে দেখি সেটা কি আদেও অনেক সহজ? আমি কখনো চাইনি আমাকে দেওয়া আপনার বাবার অপবাদ সত্য হোক। যদি সত্যি হয় তবে আমার পরিবারকে উনি ছাড় দেবেন না। আপনার জন্য উনি থেমে থাকবেন না। আমার আগে ভয় হতো না। এখন ভয় হয়। উনি লোক দিয়ে আজ আমাকে অপ/হরণ করিয়েছেন। কাল আমার পরিবার, আমার ইথানকেও ছাড়বেন না। সকলের নিরাপত্তার প্রশ্ন এখানে। জেদ করবেন না।”

স্বচ্ছ এবার বাক্যহীন রইল। তবে তার ঘোলাটে লোচন দুটিতে সুবিশাল অনুরাগ। মোহ তার ভাবাবেগ বুঝল। ভাঙা স্বরে বলল,
“বাড়িতে চলুন। ঠাণ্ডা লাগবে।”

মোহ ফের বাড়ির দিকে উদ্যত হয়। এবার আচমকা সে অনুভূত করে তার হাতকে আঁকড়ে ধরেছে কোনো শীতল বাঁধন। তীব্র টান অনুভব করে সে। সেই টানে ছিটকে আসে স্বচ্ছের একবারে সংলগ্নে। স্বচ্ছের ভিজে শার্ট লেগে ভিজে যায় মোহের ওড়নাখানি। মোহের নিঃশ্বাস প্রগাঢ় হয়। স্বচ্ছ ভীষণ ব্যগ্র হয়ে শুধাল,
“কোনো জেদ করব না। সব মেনে নেব। শুধু জানতে চাই, তুমিও কি তবে অনুভব করো আমায় আমার অনুপস্থিতিতে? প্রণয় জন্মেছে কি ভুল করে হলেও? এটা জানতে চাওয়াও কি অপরাধ?”

“একটা নারী যে কিনা ভীষণ কঠোর। কঠিন তার মন। সেই কঠিন মন থেকে যখন নম্রতা বেরিয়ে আসে। দুটো পুরুষের সামনে যখন তার নমনীয়তা প্রকাশ পায়।”

“কোন দুটো পুরুষ?”

“প্রথমজন সেই নারীটির বাবা। আর দ্বিতীয়জন…”

মোহ থামল কথার মাঝ পথে। স্বচ্ছের চেহারায় দেখা গেল ভীষণ আকুলতা। সে জানতে উৎসুক। তবে মোহ পুরোটা বলল না। স্বচ্ছ অস্থির হয়ে জানতে চাইল,
“আরেক জন কে বলো?”

মোহ মৃদু হাসল।
“সেটা আপনি খুঁজে বের করুন। আমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলেই নিজের উত্তরটাও পেয়ে যাবেন।”

মোহ আর ছাতা ধরে দাঁড়াল না। ধীর পায়ে ঢুকে গেল রাস্তার ওপাশ দিয়ে বাড়িতে। স্বচ্ছ থমথমে হয়ে দাঁড়িয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ। মোহ যে চলে গেছে সেটা বেশ কিছুক্ষণ পর উপলব্ধি করতে পারল। সে চিল্লিয়ে বলল,
“এই মেয়ে উত্তরটা বলে যাও।”

স্বচ্ছের আর ঘরে ঢোকা হলো না। সংকোচবোধ নিয়ে আর মোহের বাড়ি যাবে না সে। এতে মোহের সমস্যাও হতে পারে। সে ফিরল বিপরীত পথের দিকে। আস্তে আস্তে হাঁটতে শুরু করল। মোহের বলা কথাগুলো এখনো তার কানে বাজছে এবং হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি করছে।
নিজ ঘরের জানালা দিয়ে কৌতূহলী হয়ে চেয়ে রইল মোহ। ভেবেছিল স্বচ্ছ আসবে। তবে এলো না। আসলেই সে ভীষণ জেদি। কারোর কথা শোনার নয়। হঠাৎ বাবার গম্ভীর কণ্ঠে চকিতে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় মোহ। আজহার সাহেব প্রশ্ন করলেন,
“স্বচ্ছ এলো না?”

“না, বাবা।”

“ছেলেটাকে বোঝাতে চাইলাম নিজের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য। আমাদের জন্য শুধু শুধু ঝামেলা করছে।”

মোহ হতাশ হয়ে বলে,
“আমি কম চেষ্টা করিনি বাবা। তিনি বুঝতেই চান না।”

আজহার সাহেব আর কোনো কথা বললেন না। কিছু সময় নীরব থেকে প্রস্থান করলেন।

পরদিন সকাল হলো। সবসময় ঘুম থেকে দেরিতে ওঠা সৌমিত্র আজ ৬ টা বাজে উঠে গেছে। তখন থেকে কেমন উতলা হয়ে পায়চারি করছে সারা ঘর। নয়টায় ঘুম ভেঙেছিল রিহানের। সকাল সকাল তানিয়াদের বাড়ি যাওয়ার কথা তার। বিয়ের কথাবার্তা নতুন করে পাকা করতে হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে হয়ত আজই বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে আসবে। নয়টায় উঠে রিহান প্রথমে নিজেকে আয়নায় দেখে নিলো। বিছানায় বসে বসে রিহানের কাণ্ড দেখছিল সৌমিত্র। রিহান সৌমিত্রের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ল,
“এমনিতে আমি কেমন দেখতে রে সৌমিত্র? ভালোই তো তাই না বল? একদম ফিট শরীর না? বিয়ের পাত্র হিসেবে কেমন?”

সৌমিত্র মুখ বাঁকিয়ে, খিঁচে বলল,
“খুবই জঘন্য এই মুহূর্তে।”

রিহান চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলল। অসহায় হয়ে জানতে চাইল,
“কী বলিস?”

“তোমার ভুঁড়ি দিন দিন বাড়ছে রিহান ভাই। চিকনি চামেলি পাত্রীর পাশে মানাবে না।”

রিহান মুখ ভার করে আয়নায় নিজের দেখল। ঠিকঠাকই তো লাগছে। খারাপ তো লাগে না। সৌমিত্র ফের বলল,
“তোমার ওই চিকনি চামেলি পাত্রী ছেড়ে একটু তোমার মতোই ফিটফাট পাত্রী খোঁজা উচিত। ওকে বাদ দাও।”

রিহান তাড়াতাড়ি করে মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
“আরে কী বলিস? পাত্রী দেখেছিস তুই? এক দেখাতে পছন্দ হবে। আমার মা তো বর্তমানে তাকে ছাড়া কিছু ভাবছে না।”

সৌমিত্র যেন ব্যর্থ হলো। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বিড়বিড়িয়ে বলল,
“তাহলে তো সব শেষ, সোনার বাংলাদেশ!”

রিহান এবার টাওয়াল হাতে নিয়ে ঢুকল ওয়াশরুমে। অনেকক্ষণ বসে থেকে থেকে সৌমিত্র ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। কান পেতে দিলো ওয়াশরুমের দরজায়। বিয়ের খুশিতে গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে গোসল সারছে রিহান। সৌমিত্র কিছু একটা ভেবে আস্তে করে ওয়াশরুমের দরজা লক করে দিলো। নিজে নিজে বলল,
“সরি রিহান ভাই! এই লক খুলবে না।”

শাওয়ার শেষে ওয়াশরুমের দরজার লক খুলতে গিয়ে তাজ্জব হলো রিহান। দরজা আর খোলে না। অনেকক্ষণ টানাটানির পরেও যখন কোনো লাভ হলো না তখন সে চিৎকার দিয়ে ডাকল সৌমিত্রকে।
“এই সৌমিত্র! ঘরে আছিস? দেখ ওয়াশরুমের দরজার লক খুলছে না।”

সৌমিত্র ওপরপাশেই দাঁড়িয়ে। রিহানের কণ্ঠস্বর শুনে সে বলল,
“কী বলো?”

“হ্যাঁ। তুই একটু দেখ তো ওপরপাশে লক হলো কিনা!”

সৌমিত্র লক না খুলেই দরজা টানাটানির ভান করে বলল,
“না তো। লক তো করা নেই।”

“এখন কী হবে? খুলছে না তো।”

“আচ্ছা তুমি ওয়েট করো। আমি কাউকে ডেকে নিয়ে আসি।”

রিহান চিন্তিত হয়ে বলল,
“তাড়াতাড়ি কর ভাই। বিয়ের কথা বলতে যেতে হবে তো। আমার বিয়ের কী হবে?”

সৌমিত্র কোনো কথা না বলে নিজের ঘর থেকে বের হয়ে নিজের ঘরটাও লক করে দিলো। বলল,
“বিয়ে হবে স্বপ্নে স্বপ্নে!”

রৌদ্রজ্জ্বল দিন। স্বচ্ছ নিজের এক বন্ধুর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সামনে পড়েছে এক বড়ো স্কুল। জ্বরের মধ্যে রিকশায় আর বসে থাকতে ভালো লাগছে না তার। বৃষ্টিতে ভেজার পর থেকে জ্বর আরো বেড়েছে। মাথাব্যথায় সব অসহ্য লাগছে। স্কুলের সামনে থাকা বড়ো গেট দিয়ে বাচ্চাদের খেলাধুলা দেখছে স্বচ্ছ। তাদের খেলাধুলা দেখে যেন ছোটোবেলায় ফিরে যাওয়া যায়। সুন্দর, সোনালী অতীত যেন ভীষণ আকর্ষণীয় ছিল। এসবের মাঝে স্কুলের মেইন গেইট দিয়ে মোহকে দেখল। স্বচ্ছ ভাবল তার চোখের ভুল। কিন্তু পরক্ষণেই যেন তার ভুলটাই সত্যি হলো। নীল, সাদার সংমিশ্রণে এক পোশাকে মোহ। মাথার কাপড়টুকু পড়ে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে তার কোঁকড়া চুলের বেণীর প্রতিটা ভাঁজ। স্বচ্ছ তৎক্ষনাৎ নামতে চাইল রিকশা থেকে। কিন্তু দমে গেল শৌভিককে দেখে। একটু সময় পরেই ইথানকে কোলে নিয়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে এলো শৌভিক। মোহ শৌভিককে দেখে বিনয়ী হাসে। অন্য সময় মোহের হাসি স্বচ্ছের সর্বাঙ্গ জুড়িয়ে দিলেও আজ সেই হাসি যেন হৃদয় থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক অবধি দহনের সৃষ্টি করল। কারণ হয়ত মোহের পাশে থাকা শৌভিককে সে দুচোখেই দেখতে পারে না। সেই অসহ্যকর মানুষকে কেন মোহের পাশে থাকতে হবে তার কারণ খুঁজে পেল না সে। শৌভিক হেসে হেসে কথা বলছে মোহের সাথে। আবার ইথানের গাল আলতো করে টেনে দিচ্ছে। স্বচ্ছ তেতে রিকশাওয়ালাকে বলল,
“এই মামা! কতক্ষণ এখানে দাঁড়াবেন? যাবেন নাকি নেমে যাব?”

“আরে সামনে এতগুলা গাড়ির মধ্যে কেমনে যামু? ওদিক তো যাওন যাইব না।”

“তাহলে ইউটার্ন নিন। যেতে হবে না ওদিকে।”

রিকশাওয়ালা কিছু না বুঝে বলল,
“কিন্তু আপনে তো ওদিকে যাইতে…”

“এখন আর যাব না বলছি না? আর এক সেকেন্ড এখানে থাকলে দম বন্ধ হয়ে ম/রে যাব আমি নয়ত মে/রে ফেলব।”

রিকশাওয়ালা দ্রুত গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করলেন। আপনমনে নিচু গলায় বললেন,
“এ কোন পাগলরে উঠাইলাম!”

শৌভিক অমায়িক হেসে তার কোলে থাকা ইথানের গালে হাত দিয়ে শুধাল,
“স্কুলে যাবে তুমি?”

ইথান মাথা চুলতে বলল,
“হ্যাঁ। মাম্মাম বলেছে বড়ো হতে গেলে পড়াশোনা করতে হয়। আর স্কুলে অনেক বন্ধু পাওয়া যায়।”

“হ্যাঁ ঠিকই বলেছে। জীবন সুন্দর করতে শিক্ষার প্রয়োজন হয়। তাছাড়া স্কুলে অনেক মজা করতে পারবে।”

ইথান খুশি হয় আনন্দ করার কথা শুনে। তারপর শৌভিকের মুখের দিকে তাকিয়ে ভালো করে বোঝার চেষ্টা করে কী যেন! তারপর আধো আধো করে বলে,
“আচ্ছা তুমি কে? তোমাকে তো আগে দেখিনি। তুমি কি মাম্মার বয়ফ্রেন্ড?”

শৌভিক চমকালেও উচ্চস্বরে হেসে দিলো। মোহ বিষম খেয়ে দ্রুত ইথানের মুখে লাগাম দিতে মৃদু ধমকিয়ে বলল,
“ইথান! এসব বলে না। চুপ করো!”

শৌভিক ইথানকে নামিয়ে দিলো। ইথান নামতে পেরে আশেপাশে তাকাল। কিছুটা দূরে তার সমবয়সী বাচ্চারা খেলছে। সে অভিভূত হলো এবং দেরি না করেই ছুট লাগাল। মোহ আঁতকে উঠে ইথানকে ধরতে গিয়ে থেমে গেল বাচ্চাদের সাথে মিশতে দেখে। পাড়ায় সে বাচ্চাদের সঙ্গে ইথানকে খেলতে দেয়না। কেননা, সেসব বাচ্চাদের অভিভাবক ইথানকে নানান কথা বলে অপমান করে। আজ বাচ্চাদের সাথে সাথ দিতে পেরে ইথানের হাসিটা দেখে মোহও পুলকিত হয়। ইথানকে আটকায় না। শৌভিক বলে,
“তাহলে দেখা হচ্ছে।”

মোহ বাধ্য মতো বলে,
“জি।”

“আমি আসি তাহলে। আমার কিছু কাজ আছে।”

মোহ সম্মতি দিতেই শৌভিক বিদায় জানিয়ে চলে যায়। মোহ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ইথানের চাঞ্চল্য উপভোগ করে। মিনিট বিশেক ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল মোহ। অতঃপর ইথানকে নিয়ে বের হলো সে গেটের বাহিরে। একটি অটো ধরতে যাবে তৎক্ষনাৎ তার আকস্মিকভাবে একটি কালো বোরখা পরিহিত মহিলার সঙ্গে ধা;ক্কা লেগে যায়। মোহ এবং ইথান দুজনেই দুজন থেকে আলাদা হয়ে দূরে ছিটকে যায় কিছুটা। মোহ ক্ষেপে যায় মহিলার এমন আচরণে। তড়িঘড়ি করে ইথানের হাত চেপে ধরে মহিলাটিকে কড়া কণ্ঠে বলে ওঠে,
“চোখে কি দেখতে পান না নাকি? আপনার তাড়া আছে বলে এভাবে ধা;ক্কা দিয়ে যাবেন? যদি আমার ছেলে রাস্তায় গাড়ির সামনে গিয়ে পড়ত?”

মোহের কঠিন সুর। তবে সেই মহিলাটি রইল জবাব বিহীন। মোহের বিরক্তি লাগল এবার। মহিলাটি রইল নিস্তব্ধ। কণ্ঠ থেকে আওয়াজ বের হওয়া বন্ধ হয়েছে তার। তবুও যেন নিজের উপর জোর খাটিয়েই উচ্চারণ করল,
“মোহ!”

মোহ নিজের নামটি শুনে যেন হতবিহ্বল হলো। তার চেয়েও বেশি থমকালো মহিলাটির কণ্ঠস্বরে। চোখে এসে গেল রাজ্যের বিস্ময়। সেই মুহূর্তেই মহিলাটি নিজের মুখের নিকাব টেনে উপরে তুলে ফেলল। মোহের মাথা ভনভন করে উঠল। এ যেন কাল্পনিক! এ যেন ভ্রম! এ যেন স্বপ্ন! ছোট্ট করে মহিলাটির নাম ধরে ডাকতে সক্ষম হলো মোহ।
“ঈশানী!”

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here