#চন্দ্রকিরণ
কলমে:লাবণ্য ইয়াসমিন
পর্ব: ১০
হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে জাহান চুপসে আছে। আরিয়ান স্বাভাবিক ভঙ্গিতে পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে ড্রেসিং করছে। লোকটা কিছু বুঝতে পেরেছে কি জানার জন্য জাহান দাঁত বের করে হেসে চোখের পাপড়ি নাড়িয়ে বলল,
> আপনি কখন এসেছেন? ফোন করলেন না কেনো? অপেক্ষায় ছিলাম। সারাদিন খোঁজখবর নেই। আপনার বিরহে আমার অবস্থা খারাপ।
আরিয়ান চোখ তুলে চাইলো। সরাসরি ওর চোখের দিকে চেয়ে উত্তর দিলো,
> এখানে এসেছি পাঁচ মিনিট হয়েছে। যখন আপনি স্কুটি রেখে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছিলেন তখন। বিষয়টা আমি তখন গুরুত্ব দিইনি। এখন বুঝতে পারলাম। যাইহোক বাইরে কেনো গিয়েছিলেন বলা যাবে? নাকি আমি বাইরের মানুষে ভেবে কিছু বলা যায় না?
জাহান ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ করে বলল,
> ছিঃ ছিঃ বাইরের মানুষ কেন বলছেন? আপনি হচ্ছে আমার একান্ত নিজের মানুষ। তবে কেন বাইরে গিয়েছিলাম ওইটা আপনার জন্য একটা চমক থাকলো । ওই বাড়ির ড্রয়িং রুমে সবাইকে সাক্ষী রেখে যেই কথা আমি দিয়েছিলাম সেই কথা আমি রাখব। কোনো কলঙ্ক আপনার বা আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। আমি প্রচণ্ড জেদি। নারীর ক্ষমতায়ন,সামাজিক অবক্ষয় তাদের স্বাধীনতা আর মূল্যবোধ নিয়ে কাজ আমার। নারী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নেত্রী হতে চলেছি। আমার অধিকার আমি বিন্দু পরিমাণ ছাড়বো না।
জাহানের কণ্ঠ শুনে আরিয়ান চমকে উঠলো। এই মেয়েকে ঘরে আটকে রাখা কখনও কি সম্ভব? কথাটা ভেবেই ও ফট করে বলে ফেলল,
> আপনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত? যুক্তরাষ্ট্রে কতদিন ছিলেন? আপনার সম্পর্কে এতো লুকোচুরি কেনো করেন?
প্রশ্ন শুনে জাহান হেসে গড়িয়ে পড়লো। ছেলেটা এখনো ওর পা ধরে বসে আছে। ওর প্রাণঘাতী হাসি দেখে আরিয়ান থতমত খেয়ে গেলো।মেয়েটা এতো সুন্দর করে হাসে দেখতেই শুধু ইচ্ছে করে। সময় যেনো থমকে যায়। পূণরায় বলল,
> হাসির মতো কিছু বলেছি? উত্তর দিন?
জাহান কোনোরকমে হাসি থামিয়ে উত্তর দিলো,
> আরে তেমন কিছুই না। রাজনীতির প্রতি আমার একটা আলাদা টান আছে। ছোট থেকে আব্বাজানকে দেখে বড় হয়েছি। কি হয়েছে শুনবেন? ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে নতুন ভর্তি হয়েছি। চোখে নানারকম স্বপ্ন। আইনজীবী হবো।দেশের অবস্থা তো জানেন? আমাদের ঢাকার ফ্লাটে একা থাকতে হবে বিধায় ছাত্রী নিবাসে উঠলাম। বয়স কম কিন্তু জিদ প্রচুর। একদিন এক ব*খাটে ছেলে আমাকে প্রপোজ করে বসলো। যথারীতি আমি রিজেক্ট করি। ছেলেটা মানতে পারছিলো না। পরদিন সকালে প্রাইভেটের জন্য যখন রুম থেকে বের হয়েছি আমাকে একা পেয়ে হু*মকি দিতে এসেছিল। লোকটার সঙ্গে ছু*রি ছিল। আমি ওর হু*মকিতে যখন ভয় পাচ্ছিলাম না তখন ও আমার হাতে ওই ছু*রি দিয়ে আঘাত করে। প্রচুর র*ক্ত ঝরছিলো দেখে আমি ভয় পাচ্ছিনা তেমন না বরং ভয়ে কলিজা কাঁপছে। কিন্তু মুখে শক্ত। সমানে তর্ক করছি । এর মাঝে ব্যাচের অনেকেই এসে গিয়েছিল ফলে ছেলেটা পালিয়ে গেলো। ওরা আমাকে হাসপাতালে নিয়েছিলো। পরদিন ইউনিভার্সিটির ছাত্র নেতাদের কাছে আমার ফ্রেন্ডরা বিচার দিলো। কিন্তু ফলাফল কি হলো জানেন? ছেলেটা পাতি নেতাদের সঙ্গে রাজনীতি করে জড়িত বিধায় আমার নামে মিথ্যা বলা হলো। ওরা বলতে লাগলো আমি নাকি ওই ছেলের সঙ্গে প্রেম করেছি এখন নতুন কাউকে পেয়ে ওকে ছেড়ে দিয়েছি তাই ছেলেটা রেগে এমন করেছে । সব দোষ আমার। আপনার কি মনে হয় এর পরেও আমি চুপচাপ থাকতাম? ইউনিভার্সিটির এক বড় আপা ছিলেন। রাজনীতির জন্য বেশ ফেমাস। আমি সোজাসুজি উনার সঙ্গে কথা বললাম। মাথায় তখন আগুন জ্বলছে। আপমানের শো*ধ তোলা অবধি আমি চুপচাপ থাকতে পারছিলাম না। আপাকে বললাম উনাদের দলে আমাকে নিতে। তাছাড়া একজন সংসদ সদস্যের মেয়ে আমি। সেটা কোনোভাবে উনি জানতেন তাই ওখানে জায়গা পেতে আমার সময় লাগলোনা। পরদিন রাতে আপার কিছু লোকজন নিয়ে রাতের অন্ধকারে ওই ছেলটাকে পি*টিয়ে আসলাম। মন শান্তি পেলো। আমি না অন্যায় করবো আর না অন্যায় সহ্য করবো। মাথা গরম হলে ঠান্ডা হয়না। ওসব নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। বাড়িতে না বলে এক বছরে রাজনীতিতে যখন পুরোপুরি জড়িয়ে গেছি। আহিয়া খান আদর নামটা সকলের মুখেমুখে। প্রচুর হুমকি ধামকি আসা শুরু হলো। ওটাতো স্বাভাবিক কিন্তু আব্বাজান জানতে পেরে ভয়ে সিউরে উঠলেন। একমাত্র মেয়ে যদি কিছু হয়ে যায় সেই ভেবে আম্মাকে দিয়ে এই সেই বলে আমাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন। কাহিনী খতম। যাইহোক কিছুই কিন্তু লুকিয়ে রাখিনি।
আরিয়ান জাহানের বিষয়ে কিছুটা শুনেছিলো এখন পুরোপুরি শুনে চুপসে গেলো। কি সাংঘাতিক বউ জুটেছে কপালে। একটা বিষয় খেয়াল হতে জিঞ্জাসা করলো,
> দুইটা নামের মানে কি? কোনটা আসল আহিয়া খান আদর নাকি উম্মে দিলরুবা জাহান খান?
জাহান অমায়িক হেসে বলল,
> দুটোই আসল। একটা ডাকনাম আরেকটা সার্টিফিকেট অনুযায়ী আব্বাজান রেখেছেন। এমপি ইব্রাহিম খানের কন্যাকে সকলে আহিয়া খান আদর নামেই চিনে।কিন্তু উম্মে দিলরুবা মেহেরুন চৌধুরী বা মহেরের বোনকে চিনবে অন্যনামে। বুঝবেন না। যাইহোক নিচে বসে আছেন কেনো? উপরে আসুন। কেমন অদ্ভুত লাগছে।
আরিয়ান ব্যান্ডেজ শেষ করে ওয়াশরুমে গিয়ে হাত পরিস্কার করে বিছানায় গিয়ে বসলো। জাহান তখন ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। আরিয়ান গিয়ে ওর হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলল,
> যতক্ষণ আছি কথা বলুন। স্বামী সেবার কিছুই তো করলেন না। উল্টো সেবা নিচ্ছেন।
হঠাৎ ফোন কেড়ে নেয়ায় জাহান কিছুটা চমকে উঠেছিলো পরক্ষণেই নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
> সত্যি ভারি অন্যায় হচ্ছে। আচ্ছা কিভাবে আপনার সেবাযত্ন করতে পারি বলুন তো? আদর নিবেন? চুমু দিব?
আরিয়ান চমকে উঠে ওষ্ঠ কামড়ে পিছিয়ে আসলো। মেয়ে বলে কি? মুখে বেল ব্রেক নেই। যা ইচ্ছে বলে দিচ্ছে প্রতিপক্ষের চিন্তা করছে না। আরিয়ান ঢোক গিলে বলল,
> সত্যি সাংঘাতিক আপনি।
> বারে সাংঘাতিকের কি হলো? আপনিই তো বললেন। এই শুনুন না আমি কিন্তু সিরিয়াস।
জাহানের আবভাব দেখে আরিয়ান ভয় পাচ্ছে। এই বিপদ থেকে পালাতে পারলে আপাতত বাঁচে। হঠাৎ করে এতো চমক ও নিতে পারছে না। ভাবলেই গলা শুকিয়ে আসছে। এই নতুন অনুভূতির সঙ্গে ও পরিচিত না। তাই বিছানা থেকে উঠে পড়লো। গটগট করে বেলকনিতে গিয়ে ধপ করে দোলনায় বসে পড়লো। মেয়েটার মাথায় হটোকারি বুদ্ধি। ওকে চলে যেতে দেখে জাহানের প্রচুর মন খারাপ হলো।ভাবলো লোকটা ওকে এড়িয়ে চলছে। হয়তো এখনো স্ত্রী হিসেবে মনে নিতে পারেনি। কিন্তু বেচারীতো জানেনা এই মূহুর্তে ছেলেটার মনে কেমন ঝড় বয়ে চলেছে।
****************
ইব্রাহিম খান চৌধুরী বাড়িতে প্রবেশ করে বেশ বড়সড় ধাক্কা খেলো। গতকাল রাতে বাজার থেকে ফেরার পথে লাবিবকে কারা জানি মে*রে হাত পা ভে*ঙে বাড়ির সামনে রেখে গেছে। বেচারা হাসপাতালে ভর্তি। ভাঙা পা জোড়া লাগতে অন্ততপক্ষে ছয় মাস লেগে যাবে। কে এমন করেছে এই নিয়ে হচ্ছে গছিপ। বাড়ির অর্ধেক সদস্য ওর সঙ্গে হাসপাতালে আছে।ইব্রাহিম খানকে দেখে কমোলিনি মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলেন। বসতে পযর্ন্ত দিলেন না। ফুলি এসে উনাকে সোফায় বসতে দিয়ে নাস্তা দিয়ে বলল,
> চাচাজান আপনি বসেন আমি এখুনি দাদাজানকে ডাকছি। উনি খেপে আছেন।
চৌধুরী বাড়ির সঙ্গে ইব্রাহিম খানের পুরাতন সম্পর্ক। বোনকে এই জমিদার বাড়িতে বিয়ে দিয়ে খুব একটা সম্মান বা আদর যত্ন উনি কোনো কালেই পাননি।তাই নতুন করে আর আশা রাখেন না। মেয়েকে এই বাড়িতে বিয়ে দিতে উনি রাজি ছিলেন না। কিন্তু জাহানের জিদ আর বোনের মৃ*ত্যুর রহস্য সামনে আনার জন্য এটা করতে হলো। উনার ভাবতে ভাবতেই জাবির চৌধুরী বেরিয়ে আসলেন। ইব্রাহিম খান ছোট করে সালাম দিয়ে আলাপ করলেন,
> কেমন আছেন?
লোকটা বসতে বসতে গম্ভীর কণ্ঠ উত্তর দিলেন,
> যেমনটা চেয়েছো তেমনটা না থাকলেও ততটা ভালো নেই। নতুন করে কি খেলাই মেতেছো বলবে? বেজ*ন্মা ছেলের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিয়ে চৌধুরী বাড়ির মান সম্মান নষ্ট করছো। আত্মীয় মানুষ তুমি। নাম প্রতিপত্তি সব আছে। মেয়ের জন্য কি ছেলের অভাব পড়েছিলো? আমাদের ফিরোজ আছে লাবিব আছে। না হলে আমাকে বলতে আমার হাতে আরও ভালো ছেলে আছে। শুনো ভুল যাইহোক করেছো মেয়েকে ছাড়িয়ে নাও। লাবিব সুস্থ হলে ওর সঙ্গে বিয়েটা করিয়ে দাও। এতে তোমার বা আমাদের সকলের ভালো বুঝলে?
ইব্রাহিম খান ভেতরে ভেতরে রাগে ফেটে পড়ছেন। কিন্তু শান্ত স্থির হয়ে বললেন,
> আমার মেয়েকে নিয়ে এতোটা ভেবেছেন এর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর মেয়ে বিয়ে দিয়েছি আরিয়ানের সঙ্গে ওর বাবা মায়ের সঙ্গে না। বিশ্বাস করেন ওর জন্ম পরিচয় নিয়ে আমার বিন্দু পরিমাণ আফসোস বা অসুবিধা নেই। মেয়ে ওকে পছন্দ করে এটাই অনেক। তাছাড়া আপনার লাবিবের যে চরিত্র ফুলের মতোই পবিত্র। শুনেছি বিদেশি এক মেয়ের সঙ্গে লিভিং করে। বাচ্চাও আছে। ছেলেকে বলুন চল্লিশ বছর বয়সে এসে মেয়ের বয়সী মেয়েকে বিয়ে করার ভুত যেনো মাথা থেকে নামিয়ে ফেলে। জাহান মেহেরের মতো দেখতে কিন্তু ব্যবহার মোটেই ওর মতো সাদা সরল আর কোমল না। রাগলে চৌধুরী বাড়িতে আ*গুন লাগিয়ে যাবে। তখন দোষ দিতে পারবেন না।
ইব্রাহিম খানের কথায় জাবির চৌধুরী হুঙ্কার ছাড়লেন,
> কি ভাবো নিজেকে? আমারই দোষ তখন ছোট*লোকের বাড়িতে ছেলে বিয়ে দিয়েছিলাম। যদি জানতাম জীবনেও খাল কেটে কুমির আনতাম না। কিভাবে মেয়েকে আরিয়ানের সঙ্গে সংসার করতে দাও আমিও দেখবো।
> আপনি অযথা উত্তেজিত হচ্ছেন। আমি ছোটলোক এটা মানতে আমার অসুবিধা নেই কিন্তু আপনারা তার থেকেও নিচুশ্রেণীর। চৌধুরী ট্যাগ লাগিয়ে কতকাল নিজেদের চরিত্র মুখোশের আড়ালে রাখবেন? এই বাড়ির ইতিহাস খুব অচিরেই জনসাধারণের সামনে উন্মোচন হবে। হার্ট শক্ত করুন। আমি আসছি। দয়াকরে আর আমাকে বিরক্ত করবেন না।
ইব্রাহিম খান অপেক্ষা করলোনা। যেভাবে এসেছিল সেভাবেই বেরিয়ে গেলো। বোন বিয়ে দিয়ে যেটুকু সম্মান ছিল মেয়ে বিয়ে দিয়ে সবটুকু বিলীন। প্রচণ্ড অপমানবোধ করছেন উনি। কিন্তু কিছু করার নেই। এই জাবির চৌধুরী কাউকে পরোয়া করে কথা বলেনা।
*****************
গভীর রাত জাহান চোখ বন্ধ করে ছটফট করছে। ক্ষতের একদিন পর আবারও বাইরে হাটাহাটি করে পায়ের অবস্থা খারাপ। ইনফেকশন হয়ে গেছে ফলাফল হিসেবে 104 ডিগ্রী জ্বর। আরিয়ান হঠাৎ রাতের ডিনার শেষে বাইরে গিয়েছিল। ফিরে এসে ঘাবড়ে গেলো। তাড়াতাড়ি জাহানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো। ওয়াশরুম থেকে পানি এনে মাথায় দিলো কিন্তু কাজ হচ্ছে হলো না। জ্বর নামার কোনো লক্ষণ নেই। ওষুধ খাওয়ানোর জন্য ডাক দিলো,
> শুনতে পাচ্ছেন? ওষুধ খেতে হবে। মুখ খুলুন। এতোটা জ্বর এসেছে তবুও চুপচাপ আছেন। আপনাকে নিয়ে পারা যাচ্ছে না। খাবেন না?
জাহান চোখ বন্ধ রেখেই আনমনে বলল,
> খেতেই তো চেয়েছি কিন্তু আপনি তো দিলেন না। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। অনেক রাগ করেছি। দিবেন যেহেতু তাহলে দুটো দিন।
আরিয়ান বিড়বিড় করলো, “জাতে মাতাল তালে ঠিক। জ্বরে বেহুশ কিন্তু চুমুর কথা ঠিকই মাথায় আছে। মেয়ে না এলিয়েন। সব কপাল”। নিজেকে সামলে বলল,
> আমি ঔষধের কথা বলেছি। জ্বর কমলে দুইটা না বরং তিনটা চুমু আপনাকে আমি দিতেই পারি। তার আগে আপনি সুস্থ হয়ে উঠুন।
আরিয়ানের কথা ওর কর্ণগোচর হলো না। চোখ বন্ধ করেই ঔষধ খেয়ে আবারও গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো। বিড়বিড় করে ভুল বকছে। আরিয়ান বেশ ভয় পাচ্ছে। ইনফেকশন না হলে চিন্তার ছিল না। ডাক্তার কতবার নিষেধ করেছে। মেয়েটা যদি একটাও কথা শুনে। মনে মনে বকে ও জাহানের ফোনটা নিলো। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাইরের এক ঝামেলায় নিজের ফোনটা ভেঙে গুড়িয়ে গেছে। নতুন করে নিতে হবে। ফোনের লক খুঁলেই সামনে ওর আর জাহানের ছবি দেখে চমকে গেলো। ছবিতে আরিয়ান গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে জাহান ওর মুখের কাছে মুখ নিয়ে সেলফি তুলেছে। পারেও বটে। মেয়েটার এই ছোটছোট কাজকর্ম গুলো ওর উপরে বেশ প্রভাব ফেলছে। ভালোলাগাতে আছন্ন করে ফেলছে হৃদয় মন শরীর। প্রেমদেবী নিজে যখন ধরা দিতে উন্মাদগ্রস্ত তখন প্রেমিক হৃদয় উতলা হয়ে ভালোবাসার উষ্ণ ছোঁয়া দিতে তৎপর হবে সেতো স্বাভাবিক।আরিয়ানের ঘোর কাটলো জাহানের ফোনে আসা মেসেজের টোন শুনে। হাত লাগতেই সেটা অপেন হলো।
> ম্যাম ডিএনএ টেষ্টের রিপোর্টে তৈরী। এগুলো সরাসরি কোর্টে পাঠাবো নাকি আপনি দেখবেন?প্লিজ যোগাযোগ করুন।
আরিয়ান থমকে গেলো। ভাবলো,এই মেয়ে কার ডিএনএ টেষ্ট করিয়েছে?
চলবে