অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা সারপ্রাইজ পর্ব:২ Written By Ayat Mushtarih Ayan . . [সারপ্রাইজ পর্ব ১ এর পরের থেকে]

0
286

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
সারপ্রাইজ পর্ব:২
Written By Ayat Mushtarih Ayan
.
.
[সারপ্রাইজ পর্ব ১ এর পরের থেকে]

নাইসুদ আসার পর আয়ানের ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়।এখন সে যে কারোর সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত।কিন্তু ইউসুফ এর হিংসা বেড়ে গেছে।সে চাইতো সব সময় আয়ানের কাছে কাছে থাকতে কিন্তু আয়ানের যতো প্ল্যান ছিলো সব যেনো নাইসুদকে নিয়েই।
.
মিশন শেষ এ রুহি অনেক ভয় পেয়ে যায়।রুহি ভেবেছিলো হয়তো আজই তার শেষ দিন।আয়ানকে এতোটা রিস্ক এ কখনোই দেখতে পারতেছিলো না রুহি।রুহির বার বার চিন্তা হচ্ছিলো কিভাবে আয়ানকে এখান থেকে সরানো যায়।আয়ান এর জীবন যে তার কাছে সবচেয়ে দামী।আয়ান এর কিছু হলে তো সে বাচবে না।সাব্বির ও অনেক ভয় পাইছে এবার।কিন্তু আয়ানকে কখনোই সে না করতে পারে না।তাই যখন আয়ান তাকে যেখানে ডাকে তার সেখানে যেতেই হয়।
.
মায়ের মন খারাপ দেখে মায়ের কাছে গিয়ে বসে আয়েশা।
-আম্মু তোমার মন খারাপ?
-না রে মা।
-আচ্ছা আম্মু বাবা আমাদের সাথে দেখা করতে আসে না কেনো?
-আমি অনেকবার তোকে সেই বিষয়ে কথা বলতে মানা করছিলাম আমি আয়েশা।
-আমার জানতে ইচ্ছে করে মা।
-এ বিষয়ে আমি বলতে পারবো না।
.
আয়েশা বরাবরের মতোই মায়ের মন ভালো করতে গিয়ে আয়েশার মনই খারাপ হয়ে গেলো।সে জানে তার মা তাকে বলবে না।ছোট বেলা থেকে আয়ানের জেদ বেশি।তার মায়ের কাছে একবার ধমক খাওয়ার পরে আর কখনো বাবার কথা জিজ্ঞেস করেনি আয়ান।কিন্তু আয়েশা তা পারে না।সে বার বার তার মায়ের কাছে বাবার কথা জিজ্ঞেস করেই যায় আর তার মা তাকে ধমক দিয়েই যায়।
.
রাত এর খাবার খায় নি আয়েশা।এটা আয়ান জেনে আয়েশার রুমে চলে যায় খাবার নিয়ে।
-নক নক।
-আয়ান নাটক করিস না ভাই।
-ইশ এতো মন খারাপ করলে চলে আপু?
-আয়ান এটা কখনোই ঠিক না।
-কি ঠিক না?
-তুই এতো ঠান্ডা কিভাবে থাকিস?
-আমি চাপ নেই না আপু।দেখ যেটা তুই পাবি না সেই জিনিস নিয়ে টেনশন নিয়ে কি লাভ?
-আমার জানতে ইচ্ছে করে।তোর কি নিজের বাবার ব্যপারে জানতে ইচ্ছে করে না?
-ছোট থেকে যাকে দেখি নি।যার আদর পাই নি।সে আদো বেচে আছে কি না জানি না।তার প্রতি মায়া কি করে কাজ করবে বল।
-আমার করে।ছেলেদের কাছে মায়ের দরদ বেশি থাকে।কিন্তু মেয়েদের কাছে তার বাবার ভালোবাসা পাওয়ার ইচ্ছেটা তীব্র থাকে।সবাই তার বাবার থেকে কতো আদর পায়।বাবার রাজকন্যা হয়।আমারো ইচ্ছে ছিলো।কিন্তু পাই না তো রে।মনে হয় আমার বাবা আসবে।আমাকে আদর করবে।মা কে ছেড়ে বাবা চলে গেছে?হয়তো অন্য যায়গায় বিয়ে করছে।কিন্তু আমি তাও একবার তাকে দেখতে চাই।তার কি আদো মনে পড়ে না আমায়?আমাকে দেখলে হয়তো তার মন গলে যাবে আর সে আমাদের দেখতে আসবে।
-আল্লাহ।আপু তুই তো কম না।নিজের রুপ নিজের বাবাকে দেখিয়ে রাগ ভাঙাতে চাস?
-আয়ান আমি মোটেও এটা বলিনি।
-আজ সুন্দর না বলে আমাকে দেখে আমার বাবার রাগ ভাঙবে না।
-আয়ান।আমাকে রাগ করেও শান্তি দিবি না?
-এবার খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।রুহিকেও কল দিতে হবে।
-হে আমার ভাই তো প্রেমে ব্যস্ত।আমি তো বড় বোন।আমি একটা প্রেম করলাম না জীবনে কিন্তু তুই আমার আগে থেকে লাইন মেরে বেড়াচ্ছিস?লজ্জা করে না?
-তুই নিজেও খা,আমাকেও খাইয়ে দে।জলদি।
-আচ্ছা হাত ধুয়ে আসি।
.
.
-আয়ান।আমার তোমার সাথে অনেক দরকারী কথা আছে।
-হে রুহি বলো কি কথা।
-আজ ফোনে না বলে কাল দেখা করে বলি?
-না। আজই বলবেন।
-এতো জেদ কেনো ধরো?
-জেদ ধরার মানুষই আমি।আমার এই জেদের প্রেমেই তো পড়েছিলেন আপনি।
-এখনো মনে আছে তোমার?
-মনে আবার থাকবে না।কিভাবে জেদ ধরে একটা মেয়েকে বোরখা পড়িয়ে ছেড়েছিলেন তা তো আর ভুলা যায় না।
-কেনো বোরখাতে কি সুন্দর লাগে না তোমার নিজেকে?
-লাগে, অনেক বেশি লাগে।
-জ্বি।আপনার সৌন্দর্য অন্য মানুষকে কেনো দেখাতে হবে।ভালোবাসার মানুষকে দেখালেই হবে।
-হে বুঝেছি তো আবার ভাষণ বাদ দেন।কারণ আমি নিজের টপিক থেকে সরে যাচ্ছি।
-হে কি দরকারী কথা বলো।
-আয়ান তোমার কাছে কোনটা বেশি জরুরী?আমি নাকি তোমার মিশন?
-অহ বুঝছি।
-কি প্রশ্ন করলাম আর কি উত্তর পাচ্ছি।
-কাল তোমার প্রশ্নের উত্তর আমি দিবো রুহি।অপেক্ষা করো।
-আচ্ছা ঠিকাছে।
.
.
রাত এ আয়েশা কিছু স্বপ্ন দেখতে থাকে।একটা ডায়রি।কেউ সেখানে তাকে যেতে বলছে।ডায়রির পাশেই একটা লোক দাঁড়ানো।সে বার বার সেই ডায়রির দিকে দেখিয়ে আয়েশাকে ডাকছে।আয়েশা চেচিয়ে জিজ্ঞেস করতেছে,
-কে? কে?
অপর দিক থেকে কোন উত্তর নেই।
আয়েশা আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগুচ্ছে।তার কথা হচ্ছে সে দেখতে চায় সামনের মানুষটা কে।সে যতোই আগে যাচ্ছে মনের মাঝে ধুক ধুক বেড়েই যাচ্ছে।তার মনে হচ্ছে কেউ হয়তো তার হৃদপিন্ডে হাত রেখে দিচ্ছে।সে নিজের ভয় পাওয়ার কারণ ও বুঝতেছে না।কিন্তু কাছাকাছি যেতেই কেউ বলে উঠে,
-এই ডায়রিটা তোমার সব প্রশ্নের উত্তর।এটাকে যদি পেয়ে যাও তাহলে আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হবে না।
.
আয়েশার ঘুম ভেঙে যায়।সে ঘেমে গেছে অনেকটা।এটা কি আসলেও স্বপ্ন ছিলো?নাকি কোন ইশারা?আয়েশা ভাবতে চাচ্ছে না।ঘুমের মাঝে এসব স্বপ্ন আসতেই পারে।এই ভেবে শুয়ে পড়ে।কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখার পর তার মনে হচ্ছে রুম এ কেউ আছে।কিন্তু দরজা তো লক।রুমে কেই বা থাকবে?সে উঠে বসে। চারিদিক থেকে হি হি, হি হি আওয়াজ আসতে থাকে।
আয়েশা চেচাতে যাবে এর আগেই বাচ্চার আওয়াজ এ কেউ বলে উঠে,
-ডায়রিটা তোমার লাগবে।আয়ানকে বাচাতে তোমাকেই হবে।
.
এবার আয়েশার টনক নড়ে।এর মানে স্বপ্নের ব্যাপারটা সত্যি ছিলো।আর যেখানে আয়ান এর ব্যাপার জড়িত সেখানে সে সব সময় সিরিয়াস।সে মন দিয়ে ভাবতে থাকে স্বপ্নে সে কোন জায়গাটা দেখেছিলো সে স্বপ্নে।এটা কি আদো তার চেনা জায়গা নাকি।একটু পড়েই তার মনে পড়ে এটা তো তার বাসার পাশের ল্যাম্পপোস্ট এর ধারে।
.
সে উঠে বসে।তার মাথায় একটাই চিন্তা।আমার সেখানে যেতে হবে।হয়তো সেই লোক সেখানে আছে।কিন্তু কি আছে সেই ডায়রিতে?সেই ডায়রিটা আমাকেও কেনো দিতে চাচ্ছে?আয়েশা হালকা করে দরজা খুলে বাহিরের দিকে বের হয়।এতো রাত এ এর আগে সে বাহিরে হয় নি।গা ছম ছম এ পরিবেশ।যদিও পরিবেশ এতোটাও ভয়ানক না।কিন্তু তার লাগছে।রাস্তায় উঠতেই সে দেখে সত্যি ল্যাম্পপোস্ট এর ধারে কেউ ডায়রি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার বুকের ধরফরানী বেরে যাচ্ছে।কি হবে না হবে এই চিন্তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ তার মনে হয় আমি তো আয়ানকে নিয়ে আসলেও পারতাম।একা এসে কি ভুল করে গেলাম?এমন অনেক চিন্তা মনের মধ্যে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে সে।জানে না আজ কি হতে যাচ্ছে।
.
.
#চলবে
.
পার্ট ১২ ইনশআল্লাহ আজ রাত এ পেয়ে যাবেন।আর সারপ্রাইজ পর্ব দরকার।গল্প ঠিকভাবে বুঝতে হলে।গল্প শেষ অব্দি পড়ার অনুরুধ রইলো।এরপর যদি আমি সব ব্যাখা দিতে ব্যর্থ হই তাহলে পরে যা বলার বলবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here