হৃদয়জুড়ে_প্রেয়সীর_আভাস #পর্ব_২৮ #মোহনা_হক

0
413

#হৃদয়জুড়ে_প্রেয়সীর_আভাস
#পর্ব_২৮
#মোহনা_হক

মাঝরাতে তীব্র জ্বরে শরীর পুড়ে যাচ্ছে রুয়াতের। প্রায় এক ঘন্টার মতো বৃষ্টিতে ভিজেছিলো। আর তার ফলে এখন জ্বর এসেছে। পাশেই আয়াজ নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। সে একদম পুরো ফিট। কোনো মতে রুয়াত উঠে বসে শোয়া থেকে। মাথা ব্যাথা করছে ভীষণ। আর জ্বর ও কমছে না। আয়াজ রুয়াতের থেকে অনেক দূরত্ব বজায় রেখে শুয়েছে আজ। অপাশে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে লোকটা। হাত বাড়ালেই তাকে ছোঁয়া যাবে। রুয়াত আয়াজের দিকে হাত বাড়ায়। জ্বর আসার কারণে শরীর দূর্বল হয়ে গিয়েছে। কথা বলতে গিয়েও যেনো থেমে যাচ্ছে বারবার। বহু কষ্টে আয়াজ কে বললো-‘

-‘শুনছেন?

অপর পাশের মানুষটার থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই। সে তার মতোই ঘুমাচ্ছে। কোনো হেলদোল নেই। রুয়াত আয়াজের হাত ধরে নাড়াচাড়া করে। কারো হাতের তীব্র গরম ছোঁয়া পেয়ে তড়িঘড়ি করে উঠে পড়ে আয়াজ। রুয়াতের হাত ধরে। অনেক গরম। কপাল ও গালের দু’পাশ চেক করে।

-‘জ্বর এসেছে তো তোমার। আমি মানা করেছি বৃষ্টিতে ভিজতে না। তাও ভিজেছো। এখন যে জ্বর এসেছে। আচ্ছা তুমি বসো। আমি মেডিসিন নিয়ে আসছি।’

আয়াজ মেডিসিন নেওয়ার জন্য উদ্যত হলো তখনই রুয়াত তার হাত ধরে। আয়াজ ভ্রু কুচকে তাকায় সেদিকটায়।

-‘মেডিসিন পরে। আমায় একটু ওয়াশরুমে নিয়ে চলুন। মাথায় পানি দিবো। শরীর দূর্বল হয়ে গিয়েছে যার জন্য যেতে পারছি না একা।’

আয়াজের সাহায্য নিয়ে উঠে দাঁড়ায় রুয়াত। আয়াজ নিজ দায়িত্বে রুয়াতের মাথায় পানি দিয়ে দেয়। একে তো শরীরে এমন জ্বর তারউপর ঠান্ডা পানি। বারংবার কেঁপে ওঠছে রুয়াত। রুয়াত কে রুমে এনে আয়াজ তার প্রেয়সীর চুলের পানি মুছে দেয়। পিঠের পিছন একটা বালিশ দেয় সেখানে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে শুয়ে আছে রুয়াত। কক্ষ থেকে বের হয় আয়াজ। খালি পেটে মেডিসিন দেওয়া যাবে না। কিছু একটা খাইয়ে তারপর দিতে হবে। আয়াজ রুয়াতের জন্য পাউরুটি আর এক গ্লাস দুধ গরম করে আনে। একটু খেয়েই রুয়াত বলছে খাবে না। কিন্তু আয়াজ ধ’ম’ক দিয়ে পুরোটা শেষ করায়।

রুয়াতের হাতে আয়াজ মেডিসিন তুলে দেয়। স্বাভাবিক স্বরে বলে-
-‘মেডিসিন খাওয়ার পর ঠিক হয়ে যাবে। বৃষ্টিতে না ভিজলে তোমার এমন জ্বর আসতো না আর আমাকে ও এতো রাতে উঠে তোমাকে ধ’ম’ক দিতে হতো না।’

চুপচাপ রুয়াত মেডিসিন খেয়ে শুয়ে পড়ে। আয়াজের চোখমুখে ভয়ংকর রাগ। কিন্তু প্রকাশ করছে না মাঝেমধ্যে একটু উচ্চস্বরে কথা বলতে গিয়েও যেনো চোখ বুজে হজম করে নিয়েছে। এসব বিষয় ভালো করেই খেয়াল করেছে রুয়াত। রুয়াত আবারও ঘুমিয়ে যায়। আয়াজের চোখে ঘুম নেই। চিন্তা হচ্ছে ভীষণ! এক রাতের জ্বরে কিভাবে মেয়েটা কে কাবু করে ফেললো। আয়াজ রুয়াতের পাশে বসে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় কিছুক্ষণ। আবার এসে নিজ স্থানে শুয়ে পড়ে। এপাশ অপাশ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলেও ঘুম আসেনি। প্রেয়সীর পাশে আধশোয়া হয়ে শুয়েছে।

.

আজ আর রুয়াত সকালে উঠতে পারেনি। ইনিমা এসে কিছুক্ষণ তার বোনের মাথায় জলপট্টি দেয়। আয়াজ নিচে বসে আছে। সাতসকালে রুম থেকে বের হয়েছে এখনো আসেনি।

-‘আপু ওনি আজ অফিস যাবেন?’

ইনিমা রুয়াতের চুলের পানি মুছে দিচ্ছে। আর বোনের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
-‘হ্যাঁ শুনেছি যাবে। কাল তো ইলেকশন আজ যেতেই হবে। অবশ্য মা মানা করেছিলো।’

রুয়াত আর কিছু বললো না। শুধু শুনে গেলো। কাজ থাকলে তো যেতেই হবে। ইলেকশন আসবে আসবে করে কতো ব্যস্ততা লোকটার। রুয়াত চুপ করে শুয়ে আছে। ফজলুল চৌধুরী আর মায়া চৌধুরী এর ফাঁকে একবার দেখা করে যায় রুয়াতের সঙ্গে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আয়াজ আসে তার রুমে। পুরো শরীর কাঁথা দিয়ে ঢেকে শুয়েছে রুয়াত।

-‘ঘুমিয়ে গিয়েছো?’

আয়াজের কন্ঠস্বর শুনে রুয়াত তার মুখ থেকে কাঁথা সরিয়ে দেয়।
-‘না। ঘুমোয়নি।’

দু পকেটে হাত পুড়ে আয়াজ। মাথাটা একটু নিচু করে নজর দেয় রুয়াতের দিকে। শরীর পুরো সটান হয়ে আছে।

-‘কাজ আছে বাহিরে যেতে হবে। নাহয় থেকে যেতাম আজ।’

ছোট্ট করে রুয়াত বলে-
-‘ওহ্।’

-‘রাগ করেছো?’

অবাক চিত্তে রুয়াত আয়াজের দিকে তাকায়। সে একদমই রাগ করেনি কিন্তু। কেনো যে আয়াজ তা বললো।

-‘না রাগ করিনি।’

আয়াজ মাথাটা নিচু রুয়াতের কপালে অধর ছুঁয়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে রুয়াত অনুভব করছে এমপি সাহেবের ভালোবাসা। পরক্ষণেই আয়াজ আবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়। রুয়াতের চুলে হাত বুলায়।

-‘ভাবি কে বলেছি তোমার খেয়াল রাখতে। দুপুরে আমি আসবো। ততক্ষণে খাওয়া হয়ে যাবে তোমার। মোটেও মেডিসিন নিয়ে হেলাফেলা করবে না। আসছি আমি।’

মাথা নাড়ে রুয়াত।
-‘শুনুন সাবধানে যাবেন।’

মুচকি হেসে আয়াজ বের হয়ে আসে। আয়াজের হাসিতে রুয়াত ও হাসছে। মনে মনে বলছে ইশশ কি সুন্দর হাসি লোকটার।

(*)

-‘কাল কোনো ঝামেলা চাই না। আমি শুধু চাই সুষ্ঠু নির্বাচনের। আশাকরি তোমরা বুঝেছো। নাহয় অযথা আমায় চিল্লাতে হবে।’

আয়াজ তার গার্ডদের বলে দিয়েছে কিভাবে কি করতে হবে কাল। গতবারের মতো যেনো অবস্থা না হয়। মারামারি হয়েছিল। আর ছেলের জন্য চিন্তা মায়া চৌধুরী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সব ঠিকঠাক থাকলেও গতবার এমন বিশ্রী কাহিনী ঘটেছিল। তবে সেখান থেকে আগেই আয়াজ বের হয়ে এসেছিলো। ভাগ্যক্রমে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি তাকে।

-‘স্যার আপনার মনেহয় এদের বাদ দিয়ে অন্য ভালো কয়েকজন গার্ড রাখা উচিৎ ছিলো। এখন সবাই মাথা নাড়ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছু করে না।’

মফিজ রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাহেদের দিকে। এটা তাদের কে অপমান করেই বলেছে কিন্তু। তা আর বোঝার বাকি রইলো না মফিজের। আয়াজ সাহেদের কথায় কোনো রিয়েক্ট করলো না। সে খুব ভালো করেই বুঝেছে সবকিছু।

-‘স্যার এবার একদম পুরো দমে ভরসা দিয়ে বলছি। আমরা আমাদের কাজ ঠিকঠাক পালন করবো। আর তেমন ঝামেলা হবে না এবার।’

-‘হ্যাঁ তা তো দেখতেই পেয়েছি গতবার।’

ভাবলেশহীন সাহেদ কথাটি বললো। মফিজ রেগে গিয়েছে এবার। মাত্রই হাঁ করেছে কিছু বলবে তার আগেই আয়াজ গম্ভীর স্বরে বলে-

-‘এসব কথা বন্ধ করো। তোমাদের ঝগড়া দেখার জন্য এখানে আসিনি।’

মফিজ চুপ হয়ে গেলো সাথে সাথে। আজ পর্যন্ত স্যারের জন্য কিছু বলতে পারেনি এই সাহেদ ব্যাটা কে। সেজন্য খুব বিরক্ত হচ্ছে আজকাল। আর সাহেদ ও খুঁচিয়ে কথা বলা বন্ধ করে না। প্রতিনিয়ত শুধু খোঁচা দিয়ে কথা বলবে। সাহেদ মিটমিট করে হেসে আয়াজের পেছনে দাঁড়ালো। মফিজ তার দিকেই চেয়ে আছে।

(*)

ইনিমা রুয়াতের জন্য খায়নি দুপুরে। বোনের অসুখ আর সে তো তার বরের জন্য অপেক্ষা করছে। এদিকে না খেয়ে অপেক্ষা করছে ইনিমা।

-‘আয়াজ কিন্তু বলেছে

ইনিমার কথাটি শেষ হতে দিলো না রুয়াত। বিরক্তিকর সুরে রুয়াত বলে-
-‘আমি বলেছি ওনি এলে খাবো। তুমি গিয়ে খাও সমস্যা নেই। আমার জন্য অপেক্ষা করো না।’

এমন মুহুর্তে গাড়ির আওয়াজ শোনা গেলো বাহির থেকে৷ রুয়াত তড়িঘড়ি করে উঠে বসে। নিশ্চয়ই আয়াজ এসেছে। ইনিমা আর কিছু বলেনি। রুয়াতের পাশে বসে পড়ে। আয়াজ তার কিছু কাগজপত্র ফজলুল চৌধুরীর কাছে দিয়ে আসে। তিনি আজ বাসায়ই ছিলেন। তারপর নিজের রুমে আসে। রুয়াতের পাশাপাশি ইনিমা কে বসে থাকতে দেখে কিছুটা অবাক হয়। হাতে থাকা ঘড়ি খুলে ফেলে।

-‘আপনারা দু’জন যে এভাবে বসে আছেন?’

অসহায় চোখে ইনিমা আয়াজের দিকে তাকায়।
-‘তোমার বউ না খেয়ে অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। সাথে আমি ও না খেয়ে আছি।’

কথাটি শোনার পর আয়াজ বিরক্তিকর শব্দ করে। কাল খুব করে রুয়াত বলেছিলো আমি আপনার কথার অবাধ্য হবো না কখনো আজ ঠিকই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ দেখিয়ে দিলো।

-‘ওর আর আমার খাবারটা কষ্ট করে উপরে পাঠিয়ে দিবেন। আর আপনি গিয়ে খেয়ে আসুন।’

ইনিমা চলে যায়। আয়াজ কোমড়ে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ রুয়াতের দিকে তাকায়। রুয়াত সেদিকটায় পাত্তা না দিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াজ ফ্রেশ হতে চলে যায়। এসে দেখে ইনিমা খাবার পাঠিয়ে দিয়েছে। রুয়াতের সামনে টুল টেনে বসে। খাবার রুয়াতের মুখের সামনে ধরে বলে-

-‘হাঁ করুন। আপনি যে কেনো আমায় এতো জ্বালাচ্ছেন বুঝতে পারছি না।’

মুচকি হেসে রুয়াত মুখে খাবার তুলে। বিয়ের পর এই প্রথম আয়াজ তাকে খাইয়ে দিচ্ছে। মনে বেশ আনন্দ হচ্ছে। রুয়াত কে খাওয়ানোর পর আয়াজ নিজেও তার খাবার খেয়ে ফেলে।

-‘তুমি ঘুমাও এখন। আমি বাবার রুমে যাচ্ছি। আমার কাজ আছে।’

আবারও রুয়াত শুয়ে পড়ে। চেয়েছিলো আয়াজের সাথে কিছু সময় কথা বলবে। কিন্তু জ্বর তা হতে দিলো না। ফের জ্বর আসছে। রুয়াত কিছু না বলেই শুয়ে পড়ে। আয়াজ চলে যায় রুম থেকে। ফজলুল চৌধুরীর সাথে কালকের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। মায়া চৌধুরী ও সেখানটায় উপস্থিত। আজ আরহাম তাড়াতাড়ি তার অফিস থেকে চলে এসেছে। কালকে কাজের চাপ তার উপর ও কম যাবে না। মুলত আয়াজ টেক্সট করেছিলো আজ তাড়াতাড়ি আসার জন্য। সে কারণেই সন্ধ্যার আগেই আরহাম বাসায় চলে আসে।
রাত আটটা পর্যন্ত আয়াজ আলোচনা করেই চলেছে। বাহির থেকে বেশ কিছু মানুষজন এসেছে। তারা তার বিশ্বস্ত কাছের মানুষ। আর তাদের সাথেই কথা বলতে বলতে এতো বেশি দেরি হয়েছে।

(*)

আয়াজ বারান্দায় দাঁড়িয়ে কারো সাথে মোবাইলে কথা বলছে। আজও বৃষ্টি হচ্ছে। রুম থেকে আয়াজের অবয়ব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। রুয়াত উঠে গিয়ে আয়াজের পাশে দাঁড়ায়। কথা বলার মাঝে আয়াজ একবার তার প্রেয়সীর দিকে তাকায়। একদিনের জ্বরে একদম চেহেরা পাল্টে গিয়েছে প্রেয়সীর। কথা বলা শেষে আয়াজ মোবাইল তার হাতে রাখে। রুয়াতের পাশের গ্রিলে এক হাত রেখে হেসে বলে-

-‘চলো বৃষ্টিতে ভিজবে আবারও।’

রুয়াত আয়াজের দিকে তাকায়। অন্যমনষ্ক হয়ে বলে-
-‘চলুন তবে।’

আয়াজ একপাশে হাতে রেখেছিলো রুয়াতের এমন ত্যাড়া উত্তর শুনে অপর পাশের গ্রিলেও হাত রাখে। আয়াজের মাঝেই রুয়াত বন্দী এখন। ভ্রু কুচকে আসে রুয়াতের এমন কথা শুনে।

-‘জ্বরে পুড়ে যাচ্ছ। অথচ বৃষ্টিতে ভিজার শখ এখনো গেলো না?’

-‘আপনিই তো বলেছেন। শুরুটা কে করেছিলো শুনি একটু।’

-‘তাই বলে এমন উত্তর? উহু এমপির বউয়ের থেকে এমনটা আশা করিনি। চেহেরা দেখেছো একবার? কেমন হয়ে গিয়েছে একদিনের জ্বরে।’

রুয়াত হাসে আয়াজের কথায়।
-‘ইশশ জ্বর নাহলে তো জানতাম না বা বুঝতাম না আপনি আমায় এতো বেশি ভালোবাসেন?’

ঠোঁট কামড়ে হাসে আয়াজ।
-‘তাই তাহলে আমার ভালোবাসা দেখোনি তুমি? ওই সময়গুলোর কথা মনে করিয়ে দিবো প্রেয়সী?’

লজ্জায় আয়াজের বরাবর মুখ সরিয়ে নেয় রুয়াত।
-‘আমি অসুস্থ। আর আপনি এসব বলে চলেছেন?’

-‘তুমি না বললে আমিও এসব বলতাম না।’

রুয়াত ভালো করে তার ওড়না জড়ায় শরীরে। আয়াজ তার দিকেই চেয়ে আছে।
-‘কি হয়েছে?’

ঠোঁট কাঁপছে রুয়াতের। ঠান্ডা লাগছে অনেক। আয়াজের প্রশ্নের উত্তর দেয়।
-‘খুব ঠান্ডা লাগছে।’

রুয়াতের হাত ধরে আয়াজ।
-‘রুমে চলো। তোমার আবার ও জ্বর আসছে। এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে আরও ঠান্ডা লাগবে।’

কন্ঠস্বর নিচু করে রুয়াত বলে-
-‘জড়িয়ে ধরুন। ঠান্ডা লাগবে না আর।’

আয়াজ হেসে জড়িয়ে ধরে তার প্রেয়সী কে। সে হালকা ভাবে ধরলেও রুয়াত খুব শক্ত করে ধরেছে। প্রেমিক পুরুষের শরীরের উষ্ণতা অনুভব করতেই রুয়াতের ঠান্ডা উধাও।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here