আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ৬১.(বর্ধিতাংশ)

0
845

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

৬১.(বর্ধিতাংশ)
“আমার ডি!ভোর্স লাগবে প্রণয়”

আকস্মিক চাঁদের বলা এক বাক্যে হৃদপিণ্ড ছলাৎ করে উঠে প্রণয়ের।সে বিস্মিত দৃষ্টিতে চাঁদের পানে তাকাতেই চাঁদ বলে,

“অবাক হওয়ার কিছু নেই।আপনার সাথে আর এক মুহুর্ত আমি থাকতে পারছিনা”

থমথমেভাব ধারণ করেই বিছানার উপর পা তুলে মোবাইল নিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে বসে প্রণয়।অতঃপর বলে,

“থাকতে পারবেন ই বা কী করে?এক পুরুষ দিয়েতো আপনার পোষায় না”

প্রণয়ের কথায় চোয়াল শক্ত হয় চাঁদের।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে সে বলে,

“আজও আপনি তেমনই রয়ে গেছেন মি.রুহায়ের প্রণয়”

মোবাইল পানে দৃষ্টি রেখেই প্রণয় নিম্নস্বরে শুধায়,

“আর আপনি?”

“আমার ব্যাপারে আপনার না জানলেও চলবে।আমার ইমিডিয়েটলি ডি!ভোর্স লাগবে।এখন আপনি স্বেচ্ছায় দিলেতো ভালোই নাহয় আমায় অন্য পন্থা অবলম্বন করতে হবে”

“ডি!ভোর্স তো ইহ জনমে আপনি পাবেন না।থাকতেতো আপনাকে আমার সাথেই হবে।এখন আপনি আপসে থাকলে ভালো নাহয় যেভাবে আছেন সেভাবেই”

দুই ভ্রু উচিয়ে চাঁদ বলে,

“আমার কথা আমাকেই ফেরত দিচ্ছেন?”

“আপনাকে ফেরত তো আরও বহু কিছুই দেয়া বাকি।এবং সুদে আসলে সবটাই ফেরত পাবেন আপনি।হয়তো তার তুলনায় অধিকই পাবেন।কেবলই সময়ের অপেক্ষা”

শুকনো জামাকাপড় ভাজ করে আলমারিতে রাখতে রাখতে তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি হেসে চাঁদ বলে,

“এখনও বুঝি বহু কিছু পাওয়া বাকি আমার?অতীতে কি কম পেয়েছিলাম বলে ভাবছেন আপনি?”

“আমার বন্ধুর তুলনায় বহু কমই পেয়েছেন আপনি”

আলমারির দরজা বন্ধ করে চাবি দিয়ে তা আটকাতে আটকাতে চাঁদ বলে,

“যদি ভেবে থাকেন আমায় কষ্ট দেবেন তবে জেনে রাখুন, চাঁদ যেই কষ্ট ভোগ করে এসেছে সেই কষ্টের তুলনায় আপনার দেয়া কোনো কষ্টই রুহ অব্দি আর পৌঁছাবেনা”

বলেই বিছানায় এসে বসে প্রণয়ের পানে দৃষ্টি রেখে আবারও শুধায়,

“আপনার প্রতিটা আ!ঘা!ত নিতে সর্বদা প্রস্তুত আমি।তবে আপনি কি জানেন?আপনার বন্ধুর এ দশায় কোথাও না কোথাও আপনি দায়ী?”

চাঁদের কথা শুনে তার পানে তাকাতেই দুজনের দৃষ্টি মিলিত হয়।অতঃপর হকচকিয়ে যায় চাঁদ।দৃষ্টি সরাতে গেলেই প্রণয় বলে,

“আপনি কেনো হঠাৎ বদলে গেলেন চাঁদ?”

মৃদু হেসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চাঁদ বলে,

“বদলে কি আমি গিয়েছি?না আপনি?”

“আপনার জীবনে বহুপুরুষের আনাগোনা নেই বলছেন?”

প্রণয়ের কথায় কপাল সামান্য কুঞ্চিত হয় চাঁদের।সে বলে,

“কী বোঝাতে চাইছেন আপনি?”

“কিছুইনা।ঘুমান,আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন”

ব্যগ্র হেসে চাঁদ বলে,

“দুঃখ দিয়ে দুঃখ সারতে চাইছেন?তা কি আদোতে সম্ভব?”

চাঁদ হতে দৃষ্টি সরিয়ে প্রণয় বলে,

“অথচ এক আকাশ দুঃখ দিয়েও তা সারানোর প্রয়োজনবোধটুকুও আপনি করেননি।দূর থেকে দূরান্তে পালিয়ে বেরিয়েছেন”

“আপনি এমন কেনো বলবেন?”

“কেমন?”

“সবার সামনে এমনভাবে প্রিটেন্ড করেন যেনো আপনি বউ বলতে পাগল।অথচ আড়ালে দু’চোখের বিষ”

“বিষতো নয়।নীলবিষ আপনি,যে বি*ষ স্বেচ্ছায় পান করেছি আমি”

“আর কত প্রেমবাক্যে ফাসাবেন মি.বিড়াল?”

“প্রেমবাক্য নয়।আপনার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিষে ভরপুর।যা যেকোনো পুরুষকে মৃ*ত্যুর দিকে ধাবিত করতে সক্ষম”

“অপমান করছেন?”

“সত্যিটা বলছি”

“এমন সত্যি তো অতীতে বহু শুনেছি।চরিত্রে আঙুল অতীতেও কম তোলেন নি।এখনও তাই করছেন”

“আপনার চরিত্র আদোতে ভালো?”

প্রণয়ের সবকথা মেনে নিতে পারলেও এই কথাটা বুকে গিয়ে বি!ধলো চাঁদের।হঠাৎ করেই বুকে অসহনীয় যন্ত্রণা হলো তার।ঘনঘন শ্বাস নিতে লাগলো সে।অতঃপর বিস্ময় নিয়ে প্রণয়ের পানে চেয়ে অস্ফুটস্বরে বললো,

“প্রণয়!”

“আপনার চরিত্র যদি এতটাই মধুময় হতো,তবে এক পুরুষেই আসক্ত থাকতেন আপনি”

খানিকটা হেসে চাঁদ বলে,

“আপনার দেয়া একের পর এক অপবাদে বিস্মিত না হয়ে পারছিনা।কোন ভিত্তিতে কোন প্রমানস্বরূপ যে আপনি এসব বলেন আল্লাহ মাবুদ জানেন!”

“নিজের দোষ ঢাকতে বিধাতাকে মাঝে আনছেন?”

“মোটেও নয়”

“আপনি জানেন?আপনার এই চাঁদের ন্যায় মুখশ্রীর প্রেমে পড়ে সকলেই তার হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে বসে।অথচ মুখশ্রী যত নিষ্পাপ,অন্তর ততই অভিশপ্ত”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে চাঁদ বলে,

“গোটা আমিটাই তো এক অভিশাপের ধ্বংসস্তুপ”

প্রণয় বুঝতে না পেরে বললো,

“জ্বি?”

“ঘুমান,কাল উশ্মির রিং সেরিমনির বহু কাজ আছে।আপনার সাথে অহেতুক তর্কে জড়িয়ে সময় অপচয় করতে চাচ্ছিনা”

বলেই বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়ার আগ মুহুর্তে শুনতে পায় প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর,

“কত পুরুষের সাথে শুয়েছেন এভাবে?”

বুকের ভেতর দহন যন্ত্রণা হচ্ছে চাঁদের।চোখে সে ঝাপসা দেখছে।আঁখি ফেটে নোনাজলের বর্ষণ হতে চাচ্ছে তার।তবুও ঠোট কামড়ে ধরে বিছানা ছেড়ে উঠে দরজা দিয়ে বেরুতে বেরুতে চাঁদ অল্প বিস্তর উচ্চস্বরে বলে,

“বহু পুরুষ!বহু পুরুষ!”

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here