#পরিণয়_প্রহেলিকা
#লেখিকা_সিনথীয়া
#পর্ব_১৭
সপ্তাহ ঘুরতে বেশী সময় লাগলো না। দেখতে দেখতে পিকনিকের দিন চলে আসলো। মিহরানের অনেক চেষ্টার পরও ভেন্যু পরিবর্তন করা গেল না। সেই শাহজাহান সাহেবের ফার্মহাউসই রইলো। এতে গত এক সপ্তাহ জুড়ে মিহরানের মাথা ছিল যেভাবে গরম সেরকমই ফুরফুরে মেজাজে রিক্ কে দেখা গিয়েছে বন্ধুদের সাথে। ক্যাম্পাসে কোনো অরাজকতা ছড়ায়নি সে। শৈলীর পিছেও লাগেনি। বাইরে থেকে যে কেউ ওকে দেখলে ভাববে যে ছেলে ভালো হয়ে গিয়েছে, ভদ্রতা ওর ওপর ভর করেছে। কিন্তু….আসলেই কি ঘটনা তাই?
পিকনিকের দিন সকালে শৈলী রেডি হয়ে একেবারে বের হলো। আজ মাহিরাদের সাথে যাওয়া হবে না কারণ ওদের ক্লাস সকাল ১০টায়। আর শৈলীকে পৌছাতে হবে সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে। মাহিরা, মেহরাব অন্য ডিমার্টমেন্টে হওয়ায় ওদের এই পিকনিকের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। শৈলীর খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো মাহিরাকে সাথে নিতে, বলেওছিল মাহিরাকে ও। কিন্তু যেটা নিয়মের বাইরে সেটা তো করা যাবে না।
মাহিরা গেলে শৈলীর খুব ভালো হতো, মাহিরাও টেনশন মুক্ত থাকতো, মেয়েটাকে চোখের সামনে দেখতে পেলে। কিন্তু যেহেতু যাওয়া হবে না তাই গতকাল রাতে এসে ও শৈলীকে তোতাপাখির মতন বুঝিয়ে গিয়েছে,
-দেখ শৈলী, তুই খবরদার একা একা কোথাও যাওয়া আসা করবি না। এক পাও নড়বি না একা। ওটা রিকদের ফার্মহাওস। একপ্রকার বলতে গেলে ওর বাসাই। ওর আধিপত্য বেশী থাকবে ওখানে। তাই তোকে অনেক বেশী সতর্ক থাকতে হবে। নিজের বান্ধবীদের সাথে থাকবি সবসময় আর একটুও সমস্যা মনে হলে সোজা ভাইয়ার কাছে যাবি। তুই তো জানিস ভাইয়া তোকে সব ভাবে সাহায্য করবে। আমি যেতে পারলে পুরো চিন্তা মুক্ত থাকতাম কিন্তু কি আর করা। তবে ভাইয়া আছে ভেবে কিছুটা স্বস্থি পাচ্ছি।
শৈলী মাহিরার চিন্তা দেখে হেসে ওকে জড়িয়ে ধরে। মেয়েটা ওর বান্ধবী হলেও দেখে রাখে একদম বড় বোনের মতন করে। এরকম বান্ধবী পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার।
………………..
ভার্সিটি কাছেই হওয়াতে একটা রিকশা নিয়ে শৈলী চলে আসে। নিজের লাগেজ ব্যাগ নামাতেই ওর কোর্সের দুই বান্ধবী, কেয়া আর প্রিতির সাথে দেখা হয়। তিনজন একসাথেই গল্প করতে করতে ক্যাম্পাসে ঢুকে। দূরে দাড়ানো রিক ও ওর বন্ধুদেরকে দেখতে পেল না ওরা। রিক শৈলীকে ঠিকই দেখেছে এবং দেখেই নিজের ঠোটের সেই বিচ্ছিড়ি হাসি আটকে রাখতে পারে নি। সেটা আবার লক্ষ্য করেছে জোহেব।
-এতো খুশি কেন দোস্ত তুই? কোনো কিছু হইসে নাকি?
রিক আড়চোখে সংক্ষেপে জোহেবকে দেখে আবার নিজের নজর আটকালো শৈলীর প্রতি,
-তোকে বলসিলাম না, এই পিকনিকে আমি শৈলীকে একটা আচ্ছা সবক শিখাবো? অবশেষে আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ। আজ ঐ মেয়ের দেমাগ আমি গুড়া করে দিব।
জোহেব সতর্ক হয়,
– কি করবি তুই ভাই?
রিক সোজা হয়ে দাড়ায়,
– যা করবো তা তো দেখবিই। তোদেরও রাখবো সিনে। যখন আমি ডাকবো তোদের, যেটা করতে বলবো চুপচাপ করে যাবি। বুঝছিস?
জোহেব ভয়ে ঢোক গিলে,
– দেখিস ভাই, এমন কিছু করিস না যেটাতে আমাদের পরে ঝামেলা হোক। তোর বাবা তো ভার্সিটির ট্রাস্টি, তুই তখন বেঁচেও যাইতে পারিস, কিন্তু আমাদের কি হবে? আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করিস না ভাই।
জোহেবের কথায় ভীষণ বিরক্ত হয় রিক্। “বা***দ” গালি দিয়ে ওখান থেকে সরে যায় ও।
…………………
সকাল থেকেই আবহাওয়া কেমন কালো হয়ে আছে। রোদের কিরণ যেন নিজেই অন্য কোথাও পিকনিক করতে চলে গিয়েছে। তাই আজ সে নিজের কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে অবশ্য একটা ভালো বিষয় হয়েছে। দিনে রোদের প্রকোট কম থাকলে ঘোরাঘুরি করা যাবে শান্তিমতন।
শৈলী নিজের ব্যাগ লাগেজ ভ্যানে পাঠিয়ে দিয়ে এসব নিয়েই চিন্তা করছিল। কেয়া আর প্রিতি নিজেদের ব্যাগ জমা দিয়ে গিয়েছে ওয়াশরুমে, শৈলী আর সাথে যায়নি, বাসের পাশে দাড়িয়ে এই স্নিগ্ধ পরিবেশের স্মৃতি মুঠোফোনে বন্দি করতে ব্যস্ত সে।
এমনই এই ক্ষণে শৈলীর ক্যামেরার ফোকাসে দৃশ্যমান হয় মিহরান। প্রথমে ফোনের স্ক্রিণে, পরে ফোন নামিয়ে সরাসরি তাকে শৈলী দেখতে পায়। আজ, অন্যদিনের মতন ফরমান প্যান্ট শার্ট না পরে নিজেকে তিনি ক্যাশুয়াল এটায়ারে সাজিয়েছেন। কালোর মাঝে মেরুন আর সাদার মিশ্রনে স্ট্রাইপ টিশার্ট আর কালো গ্যাভাডিনের প্যান্টে মানুষটাকে অন্যরকম আকর্ষণীয় লাগছে। বোঝার উপায় নেই তিনি প্রভাষক না ছাত্র। শৈলী যে ওনার ওপর দিনে কয়বার ক্রাশ খায় সেটা গোণা ছেড়ে দিয়েছে ও। হ্যা, শৈলী তার মিহরান স্যারের ওপর ফুললি ক্রাশ্ড। প্রথম দিকে বিষয়টা ওকে জ্বালাতন করেছে প্রচুর। নিজের সাথেই নিজে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিল শৈলী। অনেক বুঝিয়েছে মনকে, এভাবে নিজের ডিপার্টমেন্টের ফ্যাকাল্টির দিকে নজর দেয়া অসমিচিন, অসভ্যতার পরিচয় দেয়া আর কিছুই না। এই ছ্যাচড়ামো টা শৈলী কিভাবে করতে পারে? কিন্তু অত সত বুঝিয়ে নেট রেসাল্ট জিরো এসেছে। কোন কিছুতেই মনকে সে মানাতে পারেনি। বরং প্রতিবার মিহরানকে দেখে এই ক্রাশ নামক রোগ ওকে এক পরত বেশী করে আক্রান্ত করেছে। শেষমেষ নিজের সাথে হেরে শৈলী একটা ডিলে এসে থেমেছে। সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে তার মনকে, যে মিহরান স্যারের ওপর যতবার, যতভাবে ক্রাশ খেতে চাইলে তার মন খেতে পারে,। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে সবকিছুই করতে হবে গোপনে, সবার অগোচরে। কাউকে এই বিষয় তিল পরিমান জানতে দেওয়া যাবে না। ভেতর ভেতর ক্রাশের ভারে গুড়া হয়ে গেলেও, চেহারায় সেই অভিব্যক্তি আনা যাবে না। কোনোভাবেও না।
শৈলী হাসে। যখন থেকে মনের সাথে এই ডিলের স্থায়িত্ব পেয়েছে তখন থেকে সে নির্ভার। একদম টেনশন নেয় না। নিজের মাঝেই নিজে গড়ে মিহরানকে নিয়ে স্বপ্নের রাজ্য। ও ওর মতন পছন্দ করুক লোকটাকে। সে না জানলেইতো হলো।
মিহরানও এতোক্ষণে শৈলীকে দেখতে পেয়েছে। একজন স্টুডেন্ট ভলান্টিয়ারের সাথে আজকের শিডিউল নিয়ে এতোক্ষণ কথা বলছিল ও। শৈলীকে দেখতে পেয়ে সেই ছাত্রর সাথে পরে কথা বলবে বলে ছেড়ে আসলো। অগ্রসর হলো শৈলীর দিকে। কাছে আসতেই আড়ষ্টতায় পরে থাকা শৈলীর দেখা মিললো ওর। আসলে শৈলী বোঝেনি যে মিহরান ওকে দেখেই এগিয়ে আসবে। ও যে এতোক্ষণ ড্যাব ড্যাব করে মানুষটার দিকে তাকিয়ে ছিল! সেটা কি উনি দেখেছেন? বুঝেছেন কিছু?
মিহরান এসে ঠিক শৈলীর সামনে দাড়ায়। দুই পকেটে হাত ঢুকিয়ে সটান হয়ে দাড়ালো,
– সো শৈলী? অল সেট টু গো?
শৈলী সৌজন্য হাসি হাসে,
– জ্বি স্যার।
– আপনার বান্ধবীরা কেউ এই ট্রিপে যাচ্ছে?
– জ্বী স্যার, আছে আমার দুই জন বান্ধবী।
– দেন ইট্স গুড। আপনি এই ট্রিপে পুরো সময়টা চেষ্টা করবেন তাদের সাথেই থাকতে। একা কোথাও যাওয়া আসা করবেন না। আর আমার নাম্বারটা তো আছেই আপনার কাছে। দরকার পরলে অবশ্যই আমার সাথে কনট্যাক্ট করবেন।
শৈলী ভেতর ভেতর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। নিজেকে ডেজাভু তে মনে হচ্ছে। ঠিক এই একই দৃশ্যপট গতকাল রাতেও উপস্থিত ছিল ওর সামনে। শৈলী হাসে এই দুই ভাই বোনের কান্ড দেখে। দুই জনই ওকে নিয়ে এতো প্রোটেকটিভ বাপ রে বাপ!
মনে এতো কিছু চিন্তা করলেও মুখে নমনীয়তা রেখেই বললো ও,
– স্যার আপনি চিন্তা করবেন না। আই উইল টেইক কেয়ার অফ মাইসেল্ফ।
মিহরানের কপাল সোজা হয়,
– আপনার বাস কোনটা, সেটা খোজ নিয়েছেন।
– জ্বী স্যার, বাস নং ২।
মিহরান মনে হলো কিছু ভাবলো,
-হমম ওকে। আপনি বাসে উঠে পরেন। আর কিছুক্ষণের মাঝেই আমরা রওনা দিব।
বলেই মিহরান শৈলীর পাশ কাটিয়ে চলে গেল আরও সামনে। পাছে রেখে গেল ওর দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকানো এক রমণীকে।
…………..
বাসে উঠে শৈলী আর প্রিতি বসলো এক সিটে আর কেয়া বসলো আরেক টায়। নিজের পাশের সিট টা ফাঁকা রাখলো ও। এই দেখে নিজেদের মাঝেই শৈলী আর প্রিয়া মিটিমিটি হাসতে লাগলো। কেয়া ওদের দেখে লজ্জায় শেষ,
– এই তোরা এভাবে হাসছিস কেন?
শৈলী দুষ্টু হাসে,
– বান্ধবী তুই দুই সিট নিয়ে বসছিস কেন বল তো? তুই তো মোটা না যে তোর বেশী জায়গা লাগবে?
কেয়া কপট রাগ দেখায়,
– ফাজলামোর জায়গা পাস না আর তোরা! আআমাকে এই ভাবে ক্ষেপাচ্ছিস?
প্রিতি এবার গলা ছাড়ে,
– হায়রে শৈলী আজ আমাদের শুধু একটা বয়ফ্রেন্ড নাই রে। তাই তো তোর আর আমার এক সাথে বসে এই জার্নি করতে হচ্ছে। আমরা কি আর আমাদের কেয়া রাণীর মতন লাকি, যার বয়ফ্রেন্ড, পিয়াল ভাইয়ের মতন এতো ড্যাশিং এক সিনিয়র ভাই। হায় কপাল!
বলেই প্রিতি পেট ফেটে হেসে দেয়, সাথে যোগ দেয় শৈলীও। এবার সরাসরি লজ্জায় পরে যায় কেয়া। বান্ধবীদের দিকে তাকানোর মতন অবস্থা থাকে না তার। এবং ঠিক সেই সময়ই যেন কেয়াকে আরও লজ্জায় ফেলে দিতে বাসে উঠে ওদের কাছে এসে দাড়ালো পিয়াল, কেয়ার বয়ফ্রেন্ড আর ওদের ডিপার্টমেন্টের দশম সেমিস্টারের স্টুডেন্ট।
পিয়াল আসতেই কেয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওর পাশে বসে পরলো। শৈলী আর প্রিতির দিকে ঘুরলো কিছুক্ষণ পর,
– কি ব্যাপার শালিকাগণ? খবর কি আপনাদের?
“শালিকাগণ” শব্দটা শুনেই শৈলী আর প্রিতি খিলখিলিয়ে হেসে উঠে। কেয়া লজ্জায় পারলে মাটিতে মিশে। পিয়ালের বাহুতে একটা ধাক্কা দিয়ে বসে। পিয়াল বোঝে গার্লফ্রেন্ডের লাজের কারণ। ভরাট মুখে হেসে বলে ও,
– আরে এতে লজ্জা পাওয়ার কি আছে বলো তো? যেটা শৈলী আর প্রিতিকে আমার ভবিষ্যতে ডাকতেই হবে সেটা এখন থেকে প্র্যাক্টিস করলে ভালো না? কি বলো তোমরা?
শৈলী আর প্রিতি একসাথে হই হই করে ওঠে,
– একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া।
কেয়া এই তিনজনের সামনে হেরে যায়। আর কিছু বলার না পেয়ে নিজের সিটের পাশের জানালা দিয়ে সামনে তাকায়।
শৈলী আর প্রিতিও বোঝে এখন এই দুই লাভবার্ডস কে একা ছেড়ে দেওয়া উচিত, তাই ওরাও নিজেদের মাঝে গল্পে মেতে উঠে।
গাড়ি ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে। তিনটা বাস নেওয়া হয়েছে এই যাত্রার উদ্দেশ্যে। প্রতিটা বাসেই ছাত্র ছাত্রিদের সাথে কিছু সংখ্যক শিক্ষকগণ ও স্টাফ বসেছেন। শৈলীদের বাসে উঠেছেন দুই জন মেইল আর একজন ফিমেল টিচার। সবাই বসে গিয়েছে ভেবে বাসের দরজা বন্ধ হতে গিয়েও আবার খুলে গেল। শৈলী প্রিতির সাথে গল্পে মশগুল ছিল তখন, কিন্তু অন্যদের মতন, এই হঠাৎ ব্যঘাতে, চোখ পরে ওর বাসের দরজায়। মিহরানকে উঠতে দেখে সেদিকেই দৃষ্টি আটকে যায়। মিহরানও বাসে উঠে যেন কাউকে খোজে। শৈলীর দিকে একসময় ওরও দৃষ্টি পরে। সাথে সাথেই চোখ নামিয়ে নেয় মিহরান। যেয়ে বসে বাকি ফ্যাকাল্টিদের কাছে। মিলা ম্যাডাম মিহরানকে দেখে খুব অবাক হয়ে বলে,
– স্যার আপনি এখানে?
মিহরান ওনার দিকে শীতল চোখে সরাসরি তাকায়। সেই চাহনিতেই আমতা আমতা করে ওঠে মিলা,
– না মানে, এটা তো বাস নং ২। রুটিনে আমি দেখেছিলাম আপনার বাস নং ১ এর সাথে যাওয়ার কথা।
-আমি মিলন স্যারের সাথে সিট এক্সচেঞ্জ করেছি।
মিহরানের এই এক কথাই মিলাকে চুপ করিয়ে দেয়। এই গুরুগম্ভীর, সিরিয়াস মানুষটা যে ওকে এর থেকে বেশী কোনো এক্সপ্লেনেশন দিবে না, সেটা ও খুব ভালো ভাবেই জানে। তাই এনাকে এতো প্রশ্ন করে নিরুত্তর অপেক্ষা করে নিজের বেজ্জতি করানোর ইচ্ছা নেই। আর উনি এই বাসে যাবে, নাকি আরেক বাসে যাবে, নাকি বাসে যাবেই না, এটা সম্পূর্ণ তার ব্যাপার। মিলার কি?
মিহরানের অগোচরে মুখ ভেংচি দিয়ে মিলা অন্য পাশে তাকায়। সবাই উঠে গিয়েছে দেখে এই বাসের সবচেয়ে সিনিয়র ফ্যাকাল্টি শফিক স্যার ড্রাইভারকে বাস ছাড়তে বলে।
…………………………
এইদিকে শৈলীরা কয়েক সিট পেছনে বসাতে ফ্যাকাল্টিদের কোনো কথোপকথনই ওদের কানে যায় না। তবে প্রিতির মনে মিলার মতনই কিছু প্রশ্ন উকি দেয়। শৈলী মিহরানকে দেখতে দেখতেই প্রিতি ওর হাত খামচে ধরে। শৈলী ফিরে তাকাতেই প্রিতির উদ্বেগ শুনতে পায়,
– আশ্চর্য!
শৈলী ভ্রু কুচকায়,
-কি হইসে?
প্রিতি ভাবুক চাহুনিতে উত্তর দেয়,
– মিহরান স্যার এই বাসে কি করে রে দোস্ত? ওনার তো এখানে থাকার কথা না।
– মানে কি তোর কথার?
– মানে স্যারের তো আমাদের সাথে যাওয়ার কথা না। স্যারের সিট বাস নং ১ এ ছিল। এখানে ছিল মিলন স্যারের সিট।
শৈলী ভ্রু জোড়া কুচকায়,
-এসব তুই কেমনে জানলি?
– আরে আমি সকালে এসে রোস্টার চার্ট দেখসি না? ওখানেই সব লেখা ছিল। তাহলে হুট করে এরকম একটা চেঞ্জ আসলো কেন?
শৈলী মাথা হ্যালান দেয় সিটে,
– চেঞ্জ আসলে আসছে, তাতে তোর কি?
প্রিতি তখনো সটান বসা। ও দুষ্টু হাসি নিয়ে বান্ধবীর দিকে তাকায়।
– আরে দোস্ত, আমি তো খুশি। মিহরান স্যার আমাদের সাথে যাবেন, এই সুখে আমার জার্নি হবে সুপার্ব। এই লোকের ওপর আমি হেভি ভাবে ক্রাশ্ড দোস্ত।
শৈলী ঝট্ করে তাকায় প্রিতির দিকে। ঈশৎ ঈর্শায় ডুবে ওর মন। প্রিতি কেন মিহরানের ওপর ক্রাশ খাবে। এই অধিকার শুধুই শৈলীর। আর কারও না।
চলবে।