আবার_প্রেম_হোক (২য় খন্ড) [১৮+ এলার্ট] #নুসরাত_জাহান_মিম ০৫.(বর্ধিতাংশ)

0
850

#আবার_প্রেম_হোক (২য় খন্ড) [১৮+ এলার্ট]
#নুসরাত_জাহান_মিম

০৫.(বর্ধিতাংশ)
শুভ্ররঙা মেঘ যেনো পাল তুলে ভেসে বেড়াচ্ছে গগণে।নীলচে আকাশে সাদা মেঘের ভেলা মানিয়েছেও দারুন!মৃদু ছাইরঙা আভার দেখা যদিও বা মিলছে ক্ষণে ক্ষণে।অপূর্ব সেই অম্বর!চোখ যেনো জুড়িয়ে যায় তাকালেই।ক’জন পারে সেই আকাশপানে চেয়ে আকাশের প্রেমে না পড়তে?যারা ঐ অভূতপূর্ব অন্তরীক্ষের প্রেমে পড়ে তারা কি জানে গগণেরও অভিমান হয়?মন তার ভাঙে?অতঃপর সেই ভাঙা হৃদয় হতেই বৃষ্টিরূপে নেমে আসে দুঃখের গহীণ সাগর।আকাশের ন্যায় মানুষের হৃদয়ও ভাঙে।একবার নয়,দু’বার নয় বারবার তা ভাঙে।মিরারও ভেঙেছে,আকাশের ন্যায়ই।একবার,দু’বার নাকি বহুবার?ভাবলেশহীনভাবে জানালা হতে দূর আকাশপানে পলকহীন চেয়ে আছে মিরা।মনের অরণ্যে ফুটে ওঠা পুষ্প নিমিষেই মূর্ছা গেছে তার।বুক চি!ড়ে দীর্ঘশ্বাস ব্যতীত আর কিছু অনুভূত হয়না।দুঃখ পেতে পেতে আজ সে আকস্মিক সুখ খুজে পেলেও দুঃখকে যেনো বলে উঠে ‘কীরে কবে হঠাৎ করে আগমণ ঘটবে তোর?’ অতঃপর আপনমনে হাসে সে।মনে পড়ে অরণের সাথে তার প্রথম সাক্ষাৎ।স্কুলজীবনেই তাদের প্রথম পরিচয়টা হয়েছিলো।সে তখন ক্লাস এইটে পড়তো।অরণেরও একই।তাদের স্কুলটা ছিলো কম্বাইন্ড।অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার ঠিক এক মাস আগে দু’টো ছেলে একইসঙ্গে তার ক্লাসে ভর্তি হয়।খুব সম্ববত টিসি নিয়ে তারা এসেছিলো।একজনের ছিলো বিড়ালাক্ষী অপরজন ছিলো চশমা পরহিত।তারা নাকি ছেলেবেলার বন্ধু।পরবর্তীতে জানা গেছিলো একজনের বাবা নাকি সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।যার বদলি ঢাকায় হয়েছে বিধায় ছেলেকেও এখানে আসতে হয়েছে।যার দরুন ছেলেটার বন্ধুও তার সঙ্গে ঢাকা চলে এসেছে।এর পূর্বে দুজনই থাকতো তাদের গ্রামের বাড়িতে।যদিও বা তন্মধ্যে একজনের পরিবার আগে থেকেই ঢাকায় ছিলো কিন্তু সে ছিলো তার দাদা,দাদীর সঙ্গে নিজ গ্রামের বাড়িতে।সেই প্রথম দিন ক্লাসের বেশিরভাগ ছেলে,মেয়ের নজরে বিড়ালাক্ষী সেই ছেলে থাকলেও হয়তো কেবলমাত্র মিরার নজর ছিলো চশমা পরহিত ছেলেটার উপর।তার চেহারায় এক আলাদাই মায়া কাজ করছিলো।বিশেষ করে তার অতি সাধারণ সেই হাসি মুখখানা।এবং সেই ছেলেটা আর কেউ নয় মিরার প্রিয় এবং হৃদয়হরণকারী পুরুষ অরণ।আর তার সেই বন্ধু ছিলো প্রণয়।এরপর পরই মিরা সর্বদা অরণকে লক্ষ্য করতো।তার প্রত্যেকটা কাজ তার ভালো লাগতো।এমনকি সে তখন থেকে অরণের প্রতি অনুভূতির বীজ বোপন শুরু করে যখন না অরণ পূর্ণতাকে চিনতো আর না পূর্ণতা প্রণয়কে।অতঃপর অরণের সাথে তার বন্ধুত্ব হয় ক্লাস টেইনে।রিহা আর মির আগে থেকেই ছিলো মিরার সাথে।ধীরে ধীরে তাদের সকলের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়।রবিন আর পূর্ণতার আগমণ ঘটে ক্লাস নাইনে।অতঃপর সকলের বন্ধুত্বটা হয় মূলত ক্লাস টেইনে।কিন্তু প্রণয় ছিলো ব্যতিক্রম।রবিন আর মিরের সাথে বন্ধুত্বটা তার স্কুল জীবনে হলেও মেয়েদের থেকে নিজেকে যথেষ্ট দূরেই সে রেখেছিলো।অতঃপর কলেজ জীবনে গিয়ে তাদের সাথে তার বন্ধুত্ব হয় এবং একসময় তা গাঢ়তর বন্ধুত্বে পরিণত হয়।সেই প্রথমদিন দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় প্রথমবার যখন মিরার সাথে অরণের চোখাচোখি হয় লজ্জায় সে মাথা নত করেছিলো।গাল দু’টো তার মাত্রাতিরিক্ত জ্বলে উঠেছিলো নিমিষেই।এই প্রথম যেনো সে কোনো ছেলের প্রতি অপরিচিত এক অনুভূতি অনুভব করেছিলো।আজ প্রায় পনেরো বছর অতিক্রম হয়েছে।অথচ সেই ছেলেটার প্রতি আজও তার একইরকম অনুভূতি অনুভব হয়।হয়তোবা তার তুলনায়ও গাঢ়।পুরোনো সোনালি সেই অতীত স্মরণ করতেই চোখের কোন ভিজে উঠে মিরার।সে ম্লান হেসে ঐ আকাশপানেই কেবল চেয়ে থাকে।কাধে কারো হাতের ছোয়া পেতেই ধ্যান ভাঙে মিরার।অতঃপর চাঁদকে তার পাশে দেখে মৃদু হেসে চাঁদকে বসতে দিয়ে নিজে দাড়াতে চাইলে চাঁদ তার দুই বাহুতে হাত রেখে চেপে ধরে বলে,

“বসো।দাড়াতে হবেনা।আমি এভাবেই ঠিক আছি”

মিরাও কথা না বাড়িয়ে ফের আকাশপানে চেয়ে বলে,

“এই দুনিয়াটা বড্ড নিঠুর চাঁদ”

“দুনিয়া নিঠুর না আপু।আমরাই সবকিছু কঠিনভাবে দেখি।সুতরাং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিঠুর”

চাঁদের পানে কিয়ৎক্ষণ চেয়ে চাঁদের দুই হাত নিজ হাতের মুঠোয় নিয়ে মিরা বলে,

“নিজেকে এতটা শক্ত কী করে রাখো তুমি?”

মৃদু হেসে চাঁদ বলে,

“তবে তোমার তুলনায় ততটা শক্তপোক্ত মানবী আমি মোটেও নই আপু”

কপাল কুচকে মিরা প্রশ্ন করে,

“কী বলতে চাচ্ছো?”

“বিশেষ কিছুনা।এটাই যে প্রণয়হীন চাঁদের কোনো অস্তিত্ব নেই,থাকতে পারেনা।অতটা শক্তপোক্ত আমি নই যতটা হলে বছরের পর বছর ধরণীজুড়ে আমার প্রণয়ের প্রণয় ব্যতীত শ্বাস নেওয়ার সাধ্যি রাখবো।তবে তুমি অনন্য।তোমার ভালোবাসা অনন্য।আমি তোমার ভালোবাসাকে সম্মান করি”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে মিরা বলে,

“হা!ভালোবাসা।কীসের ভালোবাসা?ভালোবাসা বলতে কিছু হয়না।এসব কেবলই ভুয়া……”

মাথা ডানে বায়ে করে চাঁদ বলে,

“ইহিম।ভালোবাসা সুন্দর,অসম্ভবরকম সুন্দর।যদি তা হয় তোমার হৃদয় শীতলের একমাত্র কারণ,তোমার অতি প্রিয় মানবের সঙ্গে”

“তোমার মুখে অবশ্যই এসব মানায় চাঁদ।কারণ তুমি তোমার প্রণয় পেয়েছো।তাকে ভালোবাসার সু্যোগ পেয়েছো”

“ভালোবাসার সুযোগ তো তুমিও পেয়েছো আপু।হয়তো তা তোমার হৃদয় চি!ড়ে বাইরে আসেনি।তবে ভালো তো তুমিও বেসেছো।তুমি এতটাই স্নিগ্ধরূপে অরণকে ভালোবেসেছো যে,সে তা কখনোই জানার অবকাশটুকু পায়নি।অথবা তুমিই তাকে জানানোর প্রয়োজনবোধটুকু করোনি।শুধুমাত্র সে তোমার নয় বলে।আর রইলো আমার কথা।তবে আমি বলবো আমার ন্যায় কপাল আর কারোর না জুটুক।আমার প্রণয়ের ন্যায় প্রেমিক পুরুষও আর কারো ভাগ্যে না জুটুক।তার মতো করে যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীকে ভালোবাসে তবে হৃদয় তার চি!ড়ে যাবে অথচ কিছু করা যাবেনা!আর আমি চাইও না আমার প্রণয়ের ন্যায় কেউ হোক,কেউ কাউকে ভালোবাসুক।কেনোনা সে কেবলই একজন এবং একজনই হয়।সে আমার একান্ত এবং অতি ব্যক্তিগত পুরুষ,আমার প্রেমিক পুরুষ,আমার অর্ধাঙ্গ।আমার বিড়ালাক্ষী মানব”

মিরা মুগ্ধ নয়নে চাঁদের পানে চেয়ে থাকে।সে বারংবার বিমোহিত হয়।যতবার সে প্রণয় আর চাঁদের চোখের দিকে তাকায় তাতে একে অপরের প্রতি অসীম সম্মান আর অফুরন্ত ভালোবাসা দেখতে পায়।তারা দু’জন যখন একে অপরকে অথবা একে অপরের ভালোবাসা নিয়ে কথা বলে মিরার মনে হয় সে কেবলই শুনে যাক আর শুনে যাক।এ কথোপকথন যেনো কখনোই শেষ না হোক।তাদের ভালোবাসার মাত্রাটুকু একটু হলেও সে উপলব্ধি করতে পারুক!কেউ কাউকে এতটা কী করে ভালোবাসতে পারে?বছরের পর বছর একে অপরের থেকে দূরে থাকার পরেও কেউ কাউকে কী করেই বা ভালোবাসতে পারে?অন্য কারো ছায়াটুকু পর্যন্ত মারাতে না চেয়ে কেবল একজন এবং একজনকেই ভালোবাসা যায়?মিরা আকাশপানে চেয়ে মনে মনে প্রার্থনা করে প্রণয় আর চাঁদের আবার প্রেম হোক।বারবার প্রেম হোক!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অধিরাজ শেখের হাতের বাঁধণ ছাড়াতে ব্যস্ত এক যুবক।সে যত দ্রুত কাজটা করতে চাচ্ছে ততই এলোমেলো হচ্ছে হাত।আর অধিরাজ শেখ তাকে তাড়া দিয়ে যাচ্ছে।যার দরুন সহজ কাজটাও কঠিন ঠেকছে ছেলেটার নিকট।আকস্মিক পিঠে ধা!রালো কিছু অনুভূত হতেই হঠাৎ করেই চেচায় সে।চেচিয়ে ছিটকে পড়ে মাটিতে।আর অধিরাজ শেখ ছেলেটার পেছনে মাঝারী আকারের এক দা হাতে নিয়ে প্রণয়কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তুতলিয়ে বলে,

“দে…..দেখো প্রণয় বাবা।তু…..তুমিতো আমার ছেলের বন্ধু।আমাকে যেতে দাও প্লিজ”

প্রণয় যেনো মজার কোনো কৌতুক শুনেছে।সে তার দুই ভ্রু উঁচিয়ে ঠোট মৃদু বাকিয়ে ছেলেটার কলার ধরে মাটি থেকে তুলতে তুলতে খানিক হেসে বলে,

“কী বডিগার্ড স্যার?গার্ড দিতে চলে এসেছেন?কিন্তু আপনার স্যার যে ভেজা এক বিড়াল।সে কিন্তু ভাজা মাছটাও উলটে খেতে জানেনা।তাকেতো এমনিতেই দয়া দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া যায়।আপনি অযথাই কষ্ট করলেন!এখন আপনার স্যারকেতো আমি ছেড়ে দেবো।তবে আপনার কী হবে বলুন তো?”

ঢোক গিলে ছেলেটা বলে,

“দেখ……উউউন ভাইয়া।আপ…..আপনি এমন করছেন কেনো?এভাবে মানুষ খু*ন করা আপনার সাজছে?তাও এপ্রোণ গায়ে?আমি যতদূর জানি আপনি বেশ নামীদামী এবং ভদ্র একজন ডাক্তার।সেই আপনি প্রাণনা!শ করছেন কী করে?”

মৃদু ঠোট বাকিয়ে প্রণয় বলে,

“আমিতো মানুষ খু*ন করছিনা।আমি করছি পশু হ!ত্যা।হয়তোবা তার তুলনায়ও নিকৃষ্ট প্রাণী খু*ন।যার আওতায় পড়েন আপনিও!”

বলতে না বলতেই কলার ধরে রেখেই লোকটার পেটের বাম পাশ বরাবর এপ্রোণের পকেটে রাখা ছু!ড়ি নিয়ে তা ঢু!কিয়ে দেয় প্রণয়।অতঃপর ধাক্কা দিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে তার উপর ভর দিয়ে বসে থুতনী চে!পে বলে,

“আসলে কী জানেন?আপনাকে মা!রা!র মতো ইন্টেনশন আমার ছিলোনা।তবে সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করতে মন সায়ও দিচ্ছেনা।এই বডিগার্ড গিরি করতে গিয়েই প্রাণটা খো!য়াচ্ছেন শুধু শুধু।হয়তো আপনার মনে নেই তবে আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি।কেনোনা আপনার ভুলটা কোথায় সেটা না জানিয়েই যদি মে*রে ফেলি বিষয়টা আমি নিজেও মানতে পারবোনা।মনে আছে?দু’হাজার দশ সালের সেই সন্ধ্যার কথা?”

প্রণয়ের কথা শুনে লোকটার কপাল খানিক কুচকাতেই প্রণয় বলে,

“হ্যা!সেই সন্ধ্যার কথাই বলছি যে সন্ধ্যায় তোর এই বস নামক নিকৃষ্ট প্রাণীটা ফুলের ন্যায় পবিত্র,অতি পবিত্র এক শুভ্রতায় মোড়ানো নারীকে অপবিত্র করেছিলো।তার আহাজারিসমূহ তোর কানেও তো এসেছিলো অথচ তুই কী করেছিলি?আমার বন্ধুকে টেনে ধরে রেখেছিলি।না নিজে গিয়েছিস না তাকে পর্যন্ত যেতে দিয়েছিস।দাঁড়িয়ে শুধু রঙ তামাশা দেখেছিস।সেইসঙ্গে এমন ভয়ানক কিছু দেখেছিস যা দেখা শুধু তোর কেনো?পুরো ব্রহ্মাণ্ডের নিষিদ্ধ ছিলো।অথচ দেখেছিস।তোর এই চোখ দিয়ে আরও কিছু জিনিস তুই দেখবি।আজও কিছু রঙ তামাশা দেখবি।সেদিন দাঁড়িয়ে দেখেছিস।আজ দেখবি শুয়ে শুয়ে,রাজার ন্যায় আয়েশ করে”

কথাগুলো বলতে বলতেই দুই হাতে থাকা দুই ছু!ড়ি দ্বারা লোকটার দুই তালু বরাবর আ!ঘা!ত করে মাটির সঙ্গে তা মিশিয়ে দিতেই আ!র্তনাদ করে লোকটা।কিছু র*ক্তের ছিটেফোটা ছিটকে আসে প্রণয়ের চোখেমুখেও।ঈষৎ ঠোট বাকিয়ে প্রণয় তার কোমড়ে গুজা আরেকটি ছু!ড়ি বের করে লোকটার থুতনী চে!পে বলে,

“যেই চোখ দিয়ে যে সমস্ত নিষিদ্ধ দৃশ্য তুই দেখেছিস সেই চোখ জীবন্ত থাকার অযোগ্য”

অতঃপর সঙ্গে সঙ্গেই ছু!ড়ি দ্বারা লোকটার বাম চোখে আ!ঘা!ত করে প্রণয়।ফের র*ক্তক্ষরণ হয় সর্বমুখে।গলগলিয়ে ঝড়ে পড়া র*ক্তসমূহ দেখলে যে কারো জ্ঞান লোপ পেতে বাধ্য।তবে প্রণয় ভাবলেশহীন,সে কেবলই চেয়ে আছে।তার অনুভূতি বোঝা বড়ো দায়!লোকটা গগণবিদারী আ!র্তনা!দ করতেই প্রণয় ছু*ড়িটা টেনে তুলে গম্ভীরকন্ঠে বলে,

“তোর আরেক চোখ জীবিত রেখেছি কেবল আরও কিছু দৃশ্য দেখানোর জন্য।যেসব দৃশ্য দেখে তুই নিজেই নিজের মৃ!ত্যু কামনা করবি।তোকে আমি বাঁচিয়ে রেখেছি অধিরাজ শেখের নি!র্ম!ম মৃ*ত্যু সচক্ষে দেখবি বলে।এভাবেও যে ধ!র্ষকের বিচার করা যায় তা দেখাবো বলে।এরূপ বর্ব*র মৃ!ত্যু দেখে তোর রুহ যদি কেপে না উঠে তবে আমার নামও রুহায়ের প্রণয় না!”

বলেই হাতে থাকা ছু!ড়ি দিয়ে লোকটার গালে একটা আচড় কে!টে উঠে আসে প্রণয়।অতঃপর অধিরাজ শেখের নিকট এগোতেই অধিরাজ শেখ মাটির সাথে পা দিয়ে ঠেলে ঠেলে দূরে যেতে যেতে তোতলাতে তোতলাতে বলে,

“তু…তু…..তুই একটা পাগল!তুই সুস্থ মস্তিষ্কের হ……হতেই পারিস না।তোর চিকিৎসা প্রয়োজন।তো……তোর মতো মানুষ যে কাউকে যখ….যখন তখন মে*রে ফেলতে পারে।তুই একটা সাইকো।স….সর।হিশ হিশ!”

অধিরাজ শেখের ভয় পাওয়া দেখে তার নিকট এগিয়ে এসে এক পা মাটিতে রেখে অপর পায়ের হাটু গেরে বসে তার থুতনী বরাবর ছু*ড়ি ধরতেই ভয়ে অধিরাজ শেখের ঘা!ম ছুটে যায়।আর প্রণয় সেভাবে থেকেই ধীরকন্ঠে বলে,

“আমার জানামতে অনিন্দ্য ঘোষকে কীভাবে কীভাবে মে*রেছি সবটাই আপনি দেখেছেন”

“তুই সত্যিই একটা পাগল।ছা…..ছাড় আমায়।কসা….কসাইও তোর তুলনায় কম নি!র্মম।তুই একটা প!শু।তোর ভেতর কোক্কো…..কোনো মায়াদয়া নেই।তুই কী ডাক্তার হ্যা?তোর ভেতরে শু!কর বাস করে।তোর নিজেরই চিকিৎসা দরকার।পা…পাগল জানি কোথাকার!”

অধিরাজ শেখের কথা শুনে তার থেকে খানিক দূরে এসে দুই হাটুই মাটিতে গেরে ফের কপালে হাত রেখে চুলের ভাজে হাত গলিয়ে উচ্চশব্দে হাসতে লাগে প্রণয়।এবারের হাসির শব্দ যেনো আরও তীব্র!আরও জোরালো,আরেকটু ভয়ালো।অধিরাজ শেখ ভয় পেয়ে পিছু চাপার চেষ্টা করে তুতলিয়ে বলতে লাগে,

“আ…..আল্লাহ গো!এর ভেতর…..এর ভেতর ভরসন্ধ্যায় পি….পিশাচ এসে ভর করেছে।খা…খারাপ আত্মার খাটাস!ও আল্লাহ!আউজুবিল্লাহী মিনাশ…..”

বলতে বলতেই থেমে যায় অধিরাজ শেখ।কেনোনা এবারে প্রণয়ের হাসির শব্দ যেনো আরও জোরালো হয়েছে।সে এবার দুই হাত দিয়ে চুল টেনে ধরে উচ্চশব্দে হাসছে।সর্বমুখ এবং বদনে র*ক্তের ছড়াছড়ি।দুই বাহু এবং বুকের কাছে চে!ড়া,কা!টা তার ঠোটের এক পাশও।সেখান হতে র*ক্ত গড়াচ্ছে।শুভ্র দন্ত লালচে বর্ণ ধারণ করেছে।কাটা স্থানের পাশ দিয়ে র*ক্ত গড়িয়ে পড়ায় আরেকটু বিভৎসকর লাগছে তাকে।সেইসঙ্গে জনমানবহীন রাস্তায় একটু পর পর কোথা হতে যেনো শেয়ালের ডাক ভেসে আসছে।শহুরে এলাকায় আদোতে তা সম্ভব?নাকি সবটাই মনের কল্পনা?সামান্য একটু পদধ্বনিতেই গা শিউরে লোমকূপসমূহ দাড়াতে বাধ্য যেনো!তারই মাঝে প্রণয়ের এরূপ লোমহর্ষক রূপে ভয়ালো ভঙ্গিতে উচ্চস্বরের হাসি হৃদস্পন্দন তীব্র করেছে অধিরাজ শেখের।আশেপাশে এতগুলো লা*শসহ সামনে ঈষৎ হৃদয় কাপানো হাসিতে মত্ত,বাতাসে উড়ন্ত শুভ্র লালচে বর্ণের এপ্রোণ পরহিত লম্বাটে ছেলেটার পানে তাকিয়ে থেকে মাত্রাতিরিক্ত ভয়ে প্রায় জ্ঞান হারানোর উপক্রম অধিরাজ শেখের।তবে প্রণয় থেমে নেই।তার হাসির মাত্রা কেবলই বেড়ে চলেছে,কন্ঠনালি কাপছে মৃদু।অতঃপর হাসতে হাসতেই কোনোক্রমে নিজেকে সামলে উঠে দুই হাত দ্বারা চুল ঠিক করতে করতে অধিরাজ শেখের সামনে আসতে চাইলেই অধিরাজ শেখ প্রণয়ের পানে চেয়ে বলতে আরম্ভ করে,

“আস্তাগফিরুল্লাহ র’ব্বি মিন কুল…..”

আর প্রণয় তাকে মাঝপথে নিজ অধরজোড়ায় তর্জনী রেখে ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলে,

“হিশ!ডোন্ট লাউড”

“না…..না।আউজু……”

এবারে অধিরাজ শেখের দুই গাল এক হাত দ্বারা চে!পে ধরে বাম গাল বরাবর সজোরে চ!ড় মেরে প্রণয় বলে,

“থাম!বেয়াদব বুড়োলোক।তোর মুখে আদোতে সূরাহ-কালাম মানায়?তোর মতো পশুর মুখে?নো লাফিং অ্যানিমোর।এবারে ম!র্মান্তিক কিছু দৃশ্য দেখা প্রয়োজন”

কপাল কুচকে অধিরাজ শেখ বলে,

“দেখ প্রণয় তোর মাথায় আসলেই সমস্যা আছে।তোর ইমিডিয়েট…..”

“আমার কী করা লাগবে কী করা লাগবেনা তা তোর জানার প্রয়োজন নেই।তোর সাথে এখন আমি কী করবো কী করবোনা তুই কেবল সেইটুকুই দেখবি এবং অনুভব করবি”

বলতে বলতেই অধিরাজ শেখকে ধরে এক গাছের সঙ্গে বাঁ!ধে প্রণয়।অতঃপর একহাতে অধিরাজ শেখের থুতনী চে!পে অপরহাতের তর্জনী দ্বারা পুরো জায়গাটায় ইশারা করে অস্থিরভঙ্গিতে বলে,

“এই তোর মনে আছে?মনে আছে?এই জায়গাটাতেই তুই আমার নিষ্পাপ চাঁদের গায়ে কলঙ্ক লাগিয়েছিলি।কিন্তু আমার চাঁদের গায়ে কোনো কলঙ্ক লাগেনি।বরঞ্চ তুই তোর গায়ে ম*রণ কলঙ্ক লাগিয়েছিলি সেদিন”

অতঃপর হাতের শক্তি বৃদ্ধি করে অধিরাজ শেখের থুতনী আরও জোরালোভাবে চে!পে ধরে নাসারন্ধ্র প্রসারিত করে কপাল খানিক কুচকে ফের বলে,

“আচ্ছা তোর কি একটুও বুক কাপেনি তোর মেয়ের বয়সী মেয়ের সাথে অতটা নিকৃষ্ট হতে?ইম….হবেও কী করে?তোর নিজের মেয়েই তো নারী জাতির এক কালো কলঙ্ক।তাকে পেলে দু’ভাগ করে টে!নে ছি*ড়ে ফেলতাম!”

অতঃপর অধিরাজ শেখের থুতনী চাপতে চাপতে দাঁতের সাথে গালের মাংস মিলে যেতেই মৃদু গো!ঙায় সে।আর প্রণয় থুতনী ছেড়ে অধিরাজ শেখের চুল টে!নে ধরে গাছের সঙ্গে মাথায় মৃদু ধাক্কা দিয়ে ক!র্কশ কন্ঠে বলে,

“এই তুই কী বলেছিলি?কী বলেছিলি?তোর মেয়েদোষ?মেয়েদোষ হ্যা?আমার চাঁদের ন্যায় ধারালো রূপের অধিকারী কাউকে দেখিস নি?কাউকে দেখিস নি তুই?”

অতঃপর চুল আরেকটু টে!নে ধরে অপরহাতে ফের থুতনী চে!পে বলে,

“সেই রাত তোর জীবনের শ্রেষ্ঠ রাত হা?তোর সর্বাঙ্গ শিউরে উঠেছিলো না?আমি আরেকবার এবং শেষবারের ন্যায় তোর সর্বাঙ্গ শিউরাচ্ছি ইউ ব্লা!ডি বিচ!”

বলতে বলতেই থুতনী ধরে রেখে গাছে সঙ্গে পরপর কয়েকবার মাথা বারি দিয়ে চুল টানাবস্থায়ই দুই গালে একেরপর এক চ!ড় নিক্ষেপ করে প্রণয়।অতঃপর ছু*ড়ি দ্বারা বারকয়েক দুইগালেই আ!ঘা!ত হেনে পাশেই ঝোপের আড়ালে মাঝারী আকারের এক পাতিলে গরম পানি বসিয়েছিলো প্রণয়,সেটাই এনে আকস্মিক ছুড়ে মারে অধিরাজ শেখের সর্বাঙ্গে।সঙ্গে সঙ্গে অধিরাজ শেখ চেচিয়ে উঠে,

“ও মা গো!”

“আল্লাহ!”

ফুটন্ত গরম বলকানো পানি শরীরে পড়তেই চামড়াসহ মাংস পর্যন্ত সি!দ্ধ হয়ে গিয়েছে হয়তো অধিরাজ শেখের।সে বারংবার ‘আল্লাহ আল্লাহ’ করতে করতে প্রণয়ের নিকট মাফ চায় তবে প্রণয়ের কোনো করুনা হয়না।সে দ্রুতই অধিরাজ শেখের নিকট এসে ফের থুতনী চে!পে ধরতেই কা!টা গালে আ!ঘা!ত পেয়ে মৃদু আ!র্তনা!দ করে অধিরাজ শেখ।আর র*ক্তাক্ত হয় প্রণয়ের হাতের তালুসহ সমস্ত আঙুলসমূহ।তবুও তার বিন্দু পরিমাণ মায়া হয়না।সে আরেকটু জোরে গাল চে!পে বলে,

“আরও কী বলেছিলি?তোর এই জঘন্য জবান দ্বারা কী উচ্চারণ করেছিলি তুই?রাতসঙ্গিনী?রাতসঙ্গিনী হা?”

বলতে বলতেই অধিরাজ শেখের জি!হ্বা টেনে বের করে প্রণয়।আর বড় বড় হয়ে আসে অধিরাজ শেখের চোখদু’টো।চোখের সামনে ভেসে উঠে অনিন্দ্য ঘোষের জি!হ্বা কে*টে তা জ্বা*লিয়ে দেয়ার নি!র্ম!ম দৃশ্যখানা।অন্তরাত্মা কে!পে উঠে তার।কথা বলার চেষ্টা করতে চাইলেই প্রণয় ক্যাচ করে অধিরাজ শেখের জি!হ্বা পুরোটা একেবারে না ফেলে মাঝ বরাবর টে!নে পুরোটা চি*ড়ে ফেলতেই অধিরাজ শেখের চোখ বড় হয়ে কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চায় যেনো!র*ক্তে তার মুখসহ বক্ষস্থল ভেসে উঠে।অতঃপর ঠোটের এপাশ ওপাশ দিয়ে র*ক্তের স্রোত বইতে আরম্ভ করে।আর প্রণয় বলে,

“কী ভেবেছিলি?অনিন্দ্য ঘোষের মতো অত সহজ অ!ত্যাচা!র তুই পাবি?”

বলেই নিজের ব্যাগের কাছে গিয়ে ভেতরে রাখা পলিথিন হতে এক মুঠো লাল মরিচের গুড়ো মুঠোভর্তি করে অধিরাজ শেখের থুতনী চে!পে মুখ খুলে তা মুখের ভেতর ভরে মুখ চে*পে ধরে বন্ধাবস্থায় রাখে প্রণয়।আর অধিরাজ শেখের চোখ বেয়ে পানিসহ তার মাথা ঘুরাচ্ছে।আঁখিদ্বয় লাল হয়ে এসেছে তার,কোটর থেকে খানিক বাইরে চলে আসতে চাইছে বোধহয়!শত চেষ্টা সত্ত্বেও নিজের প্রাণভিক্ষাটুকু পর্যন্ত সে করতে পারছেনা।অতঃপর প্রণয় তার মুখ ছেড়ে দিতেই সে মুখের সব মরিচ ফেলে দিয়ে চিৎকার করতে যেয়েও পারেনা।নেত্র দ্বারা নোনাজল গড়ায় কেবল।বুক তার ভেঙে আসে কান্নায়।কেনো এত পাপ করেছিলো জীবনে?এতটা নিকৃষ্ট মৃ!ত্যু বিধাতা তাকে না দিলেই কি পারতেন না?অতঃপর স্মরণে আসে ইহকালেই এত যাতনা পেলে পরকালে তার পরিণতি ঠিক কী হবে?ভাবতে ভাবতেই ঘাম ছুটে যায় অধিরাজ শেখের।কাটা দিয়ে উঠে শরীরে,শ্বাসের গতি হয় দ্রুত।তখনই প্রণয় তার শার্টের পকেট থেকে গ্যাসলাইট বের করে তা জ্বালিয়ে রেখে হাতে থাকা ছু*ড়ি তার উপর রেখে ছু!ড়িটি গরম করতে আরম্ভ করে।এবং একসময় যখন ছু*ড়িখানা গরম হতে হতে লালচে বর্ণ ধারণ করে তখনই প্রণয় গম্ভীরভাবে বলে,

“আরও কী বলেছিলি?উদযাপন করবি?ইউ আর সো মাচ হট ডার্লিং?হটনেস কাকে বলে এবং উদযাপন আসলে কীভাবে করতে হয় আমি তোকে শেখাচ্ছি।”

বলেই আকস্মিক অধিরাজ শেখের পরহিত লুঙ্গি টে!নে খুলতেই চোখগুলো ফের বড়বড় হয় অধিরাজ শেখের।মাত্রই জি!হ্বা চে*ড়ার মতো অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে না করতেই অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটবে ভেবে তার নিশ্বাস দ্রুতগতিতে উঠানামা করে।সে চোখ বন্ধ করে বারংবার নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে তবে সম্ভব হচ্ছেনা।তার হৃদস্পন্দন এতটাই দ্রুত হয়েছে যে যেকোনো সময় হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়ে তার আকস্মিক মৃ*ত্যু ঘটবে বলে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে সে।এখন সে কেবলই তার এক সহজ মৃ*ত্যু চাচ্ছে।কিন্তু প্রণয় তো তা হতে দেবে না।গরম ধা!রালো ছু!ড়িটা যখনই অধিরাজ শেখের পুরুষাঙ্গের নিকট নিয়ে প্রণয় রাখলো তখনই অধিরাজ শেখ তার চোখজোড়া ফের বন্ধ করলো।মাথা তার যন্ত্রণায় ফে!টে যাচ্ছে।বুকের ভেতর কেমন এক চাপা ব্যথা সে অনুভব করছে।বিধাতার নিকট সে নিজের মৃ!ত্যু কামনা করছে।আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছেনা।এমতাবস্থায় প্রণয় তার বাম পাশের ঠোট বাকিয়ে জি!হ্বার ন্যায়ই চি!ড়ে দিলো অধিরাজ শেখের পুরুষাঙ্গ।সঙ্গে সঙ্গে কা!টা জি!হ্বা নিয়েই গলা কা*টা মুরগির ন্যায় ছটফটিয়ে আ!র্তনা!দ করলো অধিরাজ শেখ।তার পরপরই ফের জোরালোভাবে চেচালো সে।এবারে তার মুখ হতে উচ্চারিত হলো ‘মা’ শব্দটি।সঙ্গে সঙ্গে সে বমি করে দিলো প্রণয়ের হাতের উপরই।র*ক্তবমি হলো তার।প্রণয় ঘিনঘিন করে উঠে দাড়ালো।অতঃপর দুখন্ডিত হওয়া অধিরাজের শেখের সেই অঙ্গ বড় এক ইট দ্বারা থেতলে দিয়ে জ্বালিয়ে দিলো প্রণয়।প্রণয়ের এরূপ লোমহর্ষক কান্ডে অধিরাজ শেখের চোখ বড়বড় হয়ে আসতেই চোখের সামনে সমস্ত কিছু অন্ধকার ঠেকলো,জ্ঞান সে হারালো তার।আর প্রণয় উঠে এসে তার গলা চে!পে তাকে ডাকার পরেও যখন দেখলো সে উঠছেনা তখনই ফের গরম পানি এনে তার মুখ বরাবর মা!র!তেই মৃদু গোঙাতে গোঙাতে নিজ চোখজোড়া খুললো অধিরাজ শেখ।অতঃপর প্রণয় তার সামনে গিয়ে মৃদুকন্ঠে বললো,

“তোর পাপী হাতগুলো দিয়ে আমার নারীসহ কতশত নারীর গায়ে হাত দিয়েছিস তুই।তবে তোর সর্বোচ্চ ভুল ছিলো আমার নারীর গায়ে হাত দেয়া!”

অতঃপর দূর হতে বড় চা*পা*তিটা এনে অধিরাজ শেখের হাতের বাধন খুলে তার ডান হাতের কনুইয়ের মাঝে তা রেখে চা*প দিতেই হাতটা ধপ করে পড়ে গেলো মাটিতে।সঙ্গে সঙ্গে দেহে জড়িত কাটা বাহুর বাকি অংশ হতে চুইয়ে চুইয়ে র*ক্ত পড়তে আরম্ভ করলো,টুপ টাপ!টুপ টাপ!টুপ!টাপ!টুপ!অতঃপর র*ক্ত গড়াতে গড়াতে অধিরাজ শেখের হাত ফিকে পড়ে গেলো যেনো।কোনো প্রাণ নেই তাতে।আসলে কোন যন্ত্রণায় ব্যথিত হবে অধিরাজ শেখ?ঠিক কোনটাকে উপলব্ধি করতে চাইলে একটু কম মনে হবে?কোনটাকে রেখে কোনটার জন্য হৃদয় তার কাঁদবে?জানেনা সে।অপর হাতেরও একই দশা।অধিরাজ শেখকে দেখিয়েই তার কা*টা দুই হাত মাটি হতে তুলে প্রথমেই চা*পা*তি দ্বারা চাপ দিয়ে কব্জি দু’টো আলাদা করে প্রণয়।অতঃপর দা দিয়ে চি!ড়ে দুই ভাগ করে দা দিয়েই কে!টে কয়েক টুকরো করে হাতের উপরিভাগ।শেষে কব্জি দু’টোকে ছু*ড়ি দ্বারা কিয়ৎক্ষণ কে!চায় সে।অতঃপর আ*গুন ধরায় তাতে।প্রণয়ের একের পর এক বিদঘু!টে কাজে মাথা ঘুরতে ঘুরতে এবার অধিরাজ শেখের মনে হয় ম*রে যাচ্ছে সে!তবে না।প্রাণ তার এখনো আছে।ম*রছেনা কেনো সে?এসব অত্যাচার থেকে কেনো দ্রুত মু*ক্তি মিলছেনা তার?নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করে অধিরাজ শেখ।কিন্তু কোনো জবাব সে পায়না।আর প্রণয় তার দিকে এগিয়ে আসতে চাইলেই সে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যায়।সে পড়ে যেতেই প্রণয় তার সামনে এসে তার চুল টে!নে ধরে বলে,

“যেই চোখজোড়া দিয়ে তুই নিষিদ্ধ দৃশ্যসমূহ তোর নজরে বন্দী রেখেছিস সেই চোখ আমি তুলে নিয়ে ন!ষ্ট করে দেবো”

কথা শেষ হবার পূর্বেই অধিরাজ শেখের চোখের মনি বরাবর টুইজার ঢু!কা!য় প্রণয়।অতঃপর তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চোখ টে!নে তুলে অধিরাজ শেখের।সে ফের গগণবিদারী চিৎকার করে।অধিরাজ শেখের আহাজারিসমূহ কানে ভাসতেই মৃদু হাসি ফুটে প্রণয়ের ঠোটজোড়ায়,হাসে তার ঐ র*ক্তবর্ণ বিড়ালাক্ষীজোড়াও।হৃদয় শীতল হয় প্রণয়ের।একইভাবে অপরচোখ খু*লে নিতেই নেতিয়ে পড়ে অধিরাজ শেখ।কিন্তু প্রণয় থেমে থাকেনা।সে টুইজার দিয়েই অধিরাজ শেখের তুলে ফেলা চোখদু’টো বেশ শ*ক্তি প্রয়োগ করেই খো!চায় কিছুক্ষণ।অতঃপর অধিরাজ শেখের পানে তাকিয়েও তার শান্তি মেলেনা।তাই একটা ইট এনে হুট করেই অধিরাজ শেখের মুখ থেতলে দেয় সে।তার পরপর অধিরাজ শেখের মাথার খুলির ঠিক মাঝবরাবর ছু!ড়ি ঢুকায়।ছিটকে আসে র*ক্তসমূহ।কপাল খানিক কুচকায় প্রণয়।তার মস্তিষ্ক অধিরাজ শেখকে আরেকটু য!ন্ত্রণা দিতে চাচ্ছে। তাই প্রণয় ছু!ড়িটা খুলির ভেতরে রেখেই ঘুরায় কিয়ৎক্ষণ।অতঃপর ঠোট মৃদু বাকে প্রণয়ের,কন্ঠনালি কাপে সামান্য।এবং কপাল কুচকে সে ভাবে ‘লোকটা কি ম*রেছে?’ ভাবতে ভাবতেই তার সামনে হাটু গেরে বসে প্রণয়।অতঃপর অধিরাজ শেখের কোনো নড়চড় দেখতে না পেয়ে কপাল কুচকে রেখেই বলে,

“তোকে তো এত সহজ মৃ!ত্যু দিতে চাইনি!”

বলতে বলতেই দূরে রাখা একটা বস্তায় কিছু একটা খুঁজতে আরম্ভ করে সে।অতঃপর হাতে এক কুড়াল নিয়ে আসতেই অধিরাজ শেখের বিপরীত দিকে পড়ে থাকা তার দেহরক্ষীর যেই চোখ ভালো ছিলো সেই একটা চোখই বড় হয়ে আসে।সে ঢোক গিলে বারকয়েক।শ্বাস বুকের ভেতরের দিকে নিয়ে মনে মনে সে বলে,

“নিশ্চিত এর মাঝে সত্যিই অশরীরী ভর করেছে!”

বলতে বলতেই ফের ঢোক গিলে।এতক্ষণ যাবৎ সমস্ত কিছুই সে দেখেছে।মাঝেমধ্যে তার মাথা চক্কর দিয়ে চোখের সামনে সমস্তকিছু অন্ধকার দেখেছে সে।প্রণয়কে তার পাগলাটের তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত ভয়ঙ্কর এক অশরীরী মনে হয়েছে।যেনো কারো অতৃ!প্ত আত্মা এসে শুভ্ররঙা এপ্রোণ গায়ের অতি সুদর্শন পুরুষটির উপর ভর করেছে।সে যেনো নিজের মাঝেই নেই।ভীষণ খারাপ,নোংরা কারো নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে।যাদের মৃ!ত্যুর পর কোনো দাফন কাফন করা হয়না হয়তোবা তাদের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ নিকৃষ্ট কারো আ!ত্মাই প্রণয় নামক সুদর্শন যুবককে আছড় করেছে।বরাবরই এসব জিনিসের সৌন্দর্যের প্রতি ঝোক বেশি।এরূপ নানানকিছু চিন্তায় মগ্ন থাকা লোকটার হৃদয় থমকে যায় যখন সে দেখে কু*ড়াল নিয়ে দৌড়ে গিয়ে অধিরাজ শেখের আপাদমস্তক প্রণয় দু’খন্ডে বিভক্ত করে।নিশ্বাস আটকে আসে লোকটার।চোখের পলক তার পড়েনা।সে থমকে যায় সেই দৃশ্যের মাঝে।কিন্তু প্রণয় কেনো থামেনা?সত্যি সত্যি কি কোনো অশরীরী ভর করেছে তার উপর?ছেলেদের উপরও কি এসবের কারসাজি চলে?লোকটার ধ্যান ভাঙে প্রণয় যখন অধিরাজ শেখের খন্ডিত হওয়া বাম পাশের অংশের বুকের কাছে হৃদপিণ্ড বরাবর ছু*ড়ি দ্বারা একের পর এক আ!ঘা!ত করে বারংবার।শেষবারের ন্যায় ছু*ড়ি বুকের ঠিক হৃদপিণ্ড বরাবর সর্বশক্তি দিয়ে ঢু!কা!তেই চোখেমুখে র*ক্ত ছিটে আসে প্রণয়ের।সে বাম হাতের উল্টোপিঠ দ্বারা তা মুছে ঘাড় মৃদু বাকিয়ে অধিরাজ শেখের থেতলে যাওয়া মুখপানে চেয়ে ছু*ড়িটা হৃদপিণ্ডের ভে!তরে রেখেই মুচড়াতে মুচড়াতে বলে,

“আমার নারীর চিত্তে যে আঘা!ত দেবে তার চিত্ত চি*ড়ে দেবো আমি!”

অতঃপর ছু!ড়ি ধরাবস্থায়ই বুকের নিচের দিকে টান দেয় প্রণয়।খুব সম্ভবত অধিরাজ শেখের হৃদপিণ্ডটা সত্যি সত্যিই চি!ড়ে গিয়েছে।হয়তোবা সত্যিই প্রণয় নামক ঐ শুদ্ধ প্রেমিক সত্যিই চি!ড়ে দিয়েছিলো তার নারীর চিত্তে আঘা!ত দেয়া বর্বর সেই প*শুর নিকৃষ্টতম চিত্ত।

অতঃপর হাতে ছু!ড়ি নিয়েই বেশ ধীরগতিতে মাথা নিচু রেখে হেটে অধিরাজ শেখের দেহরক্ষীর পানে এগিয়ে আসতে আরম্ভ করে প্রণয়।প্রণয়কে নিজের কাছে আসতে দেখে সেখানেই স্ট্রোক করে বসে লোকটা।তবে প্রণয় তা জানেনা।সে বেশ ধীরগতিতেই তার নিকটে এসে তার উপর ঝুঁকে ছু*ড়িটা সন্তপর্ণে তার অপর চোখ বরাবর বেশ ধীরভাবেই ঢু*কায়।যেনো সমস্ত শক্তি সে খুইয়েছে।হাত-পা আর চলছেনা,না চলছে তার মনঃশক্তি।লোকটার চোখের ভেতর সেভাবেই ছু*ড়ি রেখে উঠে আসে প্রণয়।উঠে এসে বেশ ধীরগতিতে হেটেই সেখানকার র*ক্তাক্ত মাটির একপাশে ফের নিজের শরীর এলিয়ে দেয় সে।শরীর আর চলছেনা তার!এবারে বিশ্রাম প্রয়োজন।দেহেরও,মনেরও।এক পায়ের টাখনুর উপর অপর পায়ের পাতা উঠিয়ে মাথার পেছনে দুই হাত রেখে ফের আকাশপানে চেয়ে একের পর এক দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে প্রণয় বলে,

“অতঃপর এভাবেই ঘটলো প্রণয়ের প্রণয়পাতার সমাপ্তি।আমি আপনাকে ভালোবাসি চন্দ্রময়ী”

বাক্যখানা আওড়িয়ে চোখজোড়া বুজে প্রণয়।অতঃপর লম্বা এক শ্বাস ফেলে মাথা খানিক কাত করে সে।

To be continued…..

[বিঃদ্রঃবিশাল বড় পর্ব।খুব সম্ভবত ফেসবুক লাইটে আসবেনা।তাই সকলের কাছে অনুরোধ করবো মেইন ফেসবুক দিয়ে পড়তে।আর পর্বটা সাজাতে বেশ সময় লেগেছে আমার,তাছাড়া অসুস্থও ছিলাম সেজন্যই যেদিন দেওয়ার ছিলাম দিতে পারিনি,দুঃখিত।গল্পটা সম্পূর্ণটাই কাল্পনিক এবং এর সকল দৃশ্যও অবশ্যই কাল্পনিক।তাই কাল্পনিকভাবেই সমস্ত গল্পটাকে নেয়ার অনুরোধ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here