26-FF: #মেডিকেল_ক্যাম্প
Part:26
পরেরদিন উজানের কেবিন….
মৃনালিনী:এসব কি উজান।কালকে তুমি কোথায় ছিলে।তুমি বলেছিলে তুমি কালকে আমাকে নিয়ে কফি খেতে বের হবে। আমি এসে দেখি তুমি টিউলিপে নেই।কতোবার তোমাকে ফোনে ট্রাই করলাম ফোন টা পর্যন্ত রিসিভ করলে না।আমি জানতে পারি কি কোথায় ছিলে তুমি কাল?
উজান:মৃনালিনী আমি মানছি আমার তোমাকে জানানো টা দরকার ছিলো কিন্তু এতে এতো হাইপার হওয়ায় কি হলো আমি বুঝলাম না।কালকে আমার একটা কাজ ছিলো আমি তাই একটু বেরিয়ে ছিলাম…
মৃনালিনী:কাজ তাই না উজান।বললেই পারো কালকে তুমি হিয়ার কাছে গিয়েছিলে..
উজান:মনে মনে(আমি হিয়ার কাছে কাল গিয়েছিলাম মৃন কি করে জানলো)এখানে হিয়া হিয়া কোথা থেকে আসলো।আমি আমার কাজে গিয়েছিলাম…
মৃনালিনী:সত্যি টা বলতে শেখো উজান
উজান:আর আমি যদি হিয়ার সাথে দেখা করতেও যাই তাহলে সমস্যাটা কোথায়..
মৃনালিনী:সেটাই সমস্যা টা আসলে কোথায়…
মৃনালিনী কেবিন থেকে বের হয়ে যায়…হিয়া আজকের সব ক্লাস শেষ করে উজানের কেবিনে আসে প্রতিদিনের মতো….
হিয়া:স্যার আসবো….
উজান:আসুন…..
__উজান একজন পেশেন্ট এর সাথে কিছু ব্যাপার ডিসকাস করছিলো।হিয়া একপাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব টা দেখছিলো__
উজান:এভাবে সব নিয়ম গুলো ফোলো করলে আই হোপ আপনি খুব তাড়াতাড়ি রিকোভার করবেন।এখন আপনি আসতে পারেন।
____দাড়িয়ে আছেন কোনো বসুন____
হিয়া:নাহ আজ না বেশিক্ষণ বসবো না।বাহিরে আবহাওয়া ভালো না একটা খুব।সবাই চলে গেছে।এর পর ঝড় বৃষ্টি কিছু শুরু হলে তো আমি যেতেই পারবো না….
উজান:কিন্তু আপনাকে তো আজ এখানে থাকতে হবে।আমার আজ পরপর চারটে ওটি আছে।আপনাকে এ্যাসিস্ট করতে হবে আজ..যারা এ্যাসিস্ট করতো তাদের মধ্যে দুজন আজ এ্যাবসেন্ট
হিয়া:কিন্তু পরে যদি আবহাওয়া আরো খারাপ করে আমি বাড়ি যাবো কিভাবে?
উজান:আমি ড্রপ করে দিয়ে আসবো।আর না হলে ড্রাইভার কে বলে দিবো আপনাকে নিয়ে যেতে
হিয়া:ঠিক আছে….
…………নিলীমার কেবিন………
নিলীমা:পারলে না তো হিয়া কে উজানের লাইফ থেকে সরাতে..আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম হিয়া কে আর উজান কে আলাদা করা এতোটাও সহজ না যতোটা তুমি ভেবেছিলে…
মৃনালিনী:তুমি আমাকে চিনো না নিলীমা।যদি এমনি হয় আমি হিয়ার ক্ষতি করতে দু সেকেন্ড ওহ ভাববো না।
নিলীমা:হিয়ার ক্ষতি!ওটা না অসম্ভব জানো তো।কারন উজান যতোদিন হিয়ার লাইফে আছে তুমি কেনো আমি কেনো কেউ হিয়ার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।মিলিয়ে নিও…..
মৃনালিনী:আর উজান কে যদি আমি এই টিউলিপ থেকে এই শহর থেকে এমনকি এই দেশ থেকে বাহিরে নিয়ে যাই তখন তখন কে বাচাঁবে হিয়াকে..
নিলীমা:বুঝলাম না কি বলতে চাইছো তুমি?
মৃনালিনী:সময় হলে টের পাবে।আমার ক্ষমতা সম্পর্ক এ তোমার ধারনা নেই নিলীমা শুধু দেখো আর কি কি হয় সামনে…..আমি আসছি….
……………….
নিলীমা:হ্যালো কে?
মিনাক্ষি:আমি নিলীমা মিনাক্ষী বলছি
নিলীমা:আন্টি তুমি কোথায় কোনো খোজ নেই তোমার।সেই কবে তুমি ইউ এস তে গেছো তারপর কোনো খোজঁ নেই তোমার।কবে ফিরবে তুমি।তুমি জানো না এখানে কি কি হয়ে যাচ্ছে….
মিনাক্ষী:কাম ডাউন নিলীমা..আমি আসছি নেক্সট উইক এই….তুমি চিন্তা করো না…
নিলীমা:চিন্তা কি এমনি এমনি করি তুমি জানো না হিয়া উজান সমরেশ আঙ্কেল সবাই সবাই এখন
মিনাক্ষি:এক মিনিট নিলীমা।তুমি আমাকে কি ভাবো বলো তো সব কিছু আমি এতো সহজে ছেড়ে দেবো।আমার সাথে করা প্রতিটা অন্যায় এর শোধ আমি নিবো…তুমি শুধু আমার পাশে থেকো..
নিলীমা:ঠিক আছে আন্টি।তুমি সেফলি আগে আসো দেশে
মিনাক্ষী:হুম রাখছি….
……………
বুলি:রিমা যা করবি প্লিজ তাড়াতাড়ি করে নে এখানে কোনোভাবে কেউ দেখলে আমি শেষ..
রিমা:এতো টেনশন কেনো করছিস।আর তোকে এই শহরে কেউ চেনে নাকি তাহলে।কি খাবি বল আমি ওডার্রটা দিয়ে দেই..
বুলি:তোর যা খেতে মন চায় তাই বল..
রিমা:ঔতো ওরা এসে গেছে…
সোহম:(রিমার বয়ফ্রেন্ড) সরি সরি আসতে লেট হয়ে গেলো আমি আর পাবলো একটা কাজে এমন ভাবে ফেসে গেলাম।তুমি কিছু ওডার্র করো নি কেনো এখনো বুলি কে এভাবে বসায় রেখেছো না খেয়ে..
রিমা:দিচ্ছি ওডার্র তোমরা বসো আগে..
বুলি:আপনি এখানে
রিমা:তুই পাবলোকে চিনিস
পাবলো:হুম চিনি না তবে ওনার সাথে এর আগেও অনেক কয়েকবার আমার দেখা হয়েছিলো..
রিমা:তাহলে তো ভালোই হলো..বুলি শোন না আমার সোহম এর সাথে একটা জরুরি কথা আছে তুই আর পাবলো এখানে বসে কথা বল।আমরা একটু ঔ টেবিলে গিয়ে বসি…
বুলি:কিন্তু আমি একা..শোন না..
রিমা:আরে কিচ্ছু হবে না পাবলো অনেক ভালো ছেলে..ওর সাথে কথা বল তোর ভালো লাগবে..
___রিমা আর সোহম গিয়ে অন্য টেবিলে বসে।এদিকে পাবলো আর বুলি দুজনে চুপচাপ মাঝেমাঝে একে অপরের চোখাচোখি হচ্ছে।কে কথা বলবে বুঝতে পারে না___
পাবলো:আপনার দিদি সেদিন খুশি হয়েছিলো ফুল গুলো দেখে?
বুলি:হ্যা অনেক খুশি হয়েছিলো আপনি যদি সেদিন ফুল গুলো না দিতেন।
পাবলো:যাই হোক…আপনি এখানে কোথায় থাকেন?
বুলি:আসলে আমাদের গ্রামের বাসা বাতাসিয়া তে।আমি আর আমার দিদির পড়াশুনোর জন্য আমরা এখানে এই কলকাতা তে আসা..
পাবলো:আপনার দিদি কি পড়ে..
বুলি:ওহ মেডিকেল স্টুডেন্ট এমবিবিএস থার্ড ইয়ায়..
পাবলো:ওয়াও দ্যাটস গ্রেট।আপনার দিদি ডাক্তার।
বুলি:এখনো হয়নি তবে পড়া টা কম্পিলিট হলে হবে।
পাবলো:ওহ একি হলো…আমার দুই দাদা ও ডাক্তার।
বুলি:বাহ বেশ..আপনি ও কি তাহলে
পাবলো:নাহ নাহ দাদাভাই দের মতো ওতো পড়াশুনার উপর আমার জোর নেই।আমি বিসনেজ নিয়ে পড়েছি।তাহ আপনি কিসে পড়েন বললেন না তো..
বুলি:আমারো সেম দিদির মতো এতো পড়ার ধ্যর্য নেই আমার।আমি ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ছি আমি রিমা একসাথেই কোচিং করি..
পাবলো:বাহ গুড….একটা কথা বলি যদি রাগ না করেন তাহলে
বুলি:বলুন।
পাবলো:আপনার ফোন নাম্বার টা পাওয়া যাবে।যদি আপনি কিছু মনে না করেন।
বুলি:নাহ নাহ মনে কি করবো।কিন্তু আমার সাথে দিদি সবসময় থাকে আপনি বরং আপনার ফোন নাম্বার টা দিন আমি আপনাকে কল করে নেবো।
পাবলো:ঠিক আছে..
……..এদিকে পরপর দুটো ওটি শেষ হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। এর মধ্যে বাহিরে অনেক ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছিলো অনেক গাছপালা পড়ে গিয়ে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে।শ্যামপ্লির রাস্তা টা তাও ব্লক।উজান চাইলেও হিয়াকে ড্রপ করে দিয়ে আসতে পারবে না…
হিয়া:দেখলেন তো আপনাকে বললাম আমি বাড়ি চলে যাই এখন কি হবো।আমি কিভাবে বাড়ি যাবো।রাস্তা ও সব ব্লক।এখন আমি কোথায় যাবো।
উজান:হিয়া রিলাক্স এতো টেনশন এর কিছু হয়নি।
হিয়া:টেনশন করবো না।আমি এখন কি সারারাত টিউলিপেই থাকবো নাকি।আমার না আমার না আপনার কথা ই শোনা উচিৎ হয়নি।তখনি চলে গেলে পারতাম।তারপর লিলি ম্যাম আজকে চারটে প্রাক্টিকেল দিয়েছে বলেছে কালকেই জমা নিবে আমি এখন ওগুলো কিভাবে…হিয়া কাঁদতে শুরু করে বাচ্চা দের মতো..
উজান:শেট আপ।এখানে কাদার কি হলো।আপনি আপনার বাবা কে বা বুলি কে ফোন করে বলে দিন আপনি আজ টিউলিপে থাকছেন।রাস্তা ব্লক তাই আপনি যেতে পারছেন না।বলুন আমি আছি আপনার সাথে টেনশন না করতে..
হিয়া:আমি টিউলিপের কোথায় থাকবো এতো বড়ো বড়ো কথা যে বলছেন আপনি আমাকে..
উজান:কেনো আমার সাথে গেস্ট রুমে থাকবেন।ওটাও তো আমার একটা বাড়ি তাই না।
হিয়া:তাই না গেস্ট রুমে থাকবো।তারপর সবাই জানবে চারটে কথা রোটবে।খুব ভালো হবে তখন।
উজান:আই ডোন্ট কেয়ায়।
হিয়া:আপনার না মাথায় প্রবলেম হচ্ছে মেবি।কি করলে কি হতে পারে কোনো কিছুই মাথায় নেই..
উজান:আমি এতো কিছু শুনতে চাই না।এই নিন চাবি।আর সাবধানে আমার রুমে গিয়ে গেট লক করে দিন।কেউ যেনো না দেখে।আমি পরে গিয়ে বাহির থেকে লক করে দিচ্ছি কেউ বুঝবে না ভিতরে কেউ আছে।
হিয়া:খুব সহজ তাই না
উজান:এতো কথা না বলে যা বললাম তা গিয়ে করুন।আর আমার আরো দুটো ওটি আছে ওগুলো শেষ করে আমি যাবো রাত হতে পারে…আর হ্যা যাওয়ায় আগে ক্যান্টিন থেকে কিছু খেয়ে যাবেন।কারন ওখানে তো আপনাকে খাবার দিয়ে আসতে পারবো না ব্যস্ত থাকবো আমি..
হিয়া:ঠিক আছে যাচ্ছি।
উজান:হুম গিয়ে প্রাক্টিকেল গুলো শেষ করুন…
____হিয়া উজান কে একটা ভেংচি কেটে চলে আসে____