❤️(42_43)❤️ 42-FF: #মেডিকেল_ক্যাম্প Part:42

0
254

❤️(42_43)❤️

42-FF: #মেডিকেল_ক্যাম্প
Part:42

……..পরের দিন সকালে হিয়া ঘুম থেকে উঠে উজানের সেলফ এ রাখা একটা বই নিয়ে পড়তে শুরু করে।উজানের ঘুম ভেঙ্গে গেলে হিয়াকে পড়তে দেখে উজান খানিকটা অবাক হয়……

উজান:যাক তাহলে কালকে রাগ করাটা এমনি এমনি বিফলে যায় নাই।আমাকে আরো আগে থেকে এমনটা করা দরকার ছিলো…

হিয়া:উঠে গেছো তুমি?আমি বাড়ি যাবো এখানে আর ভালো লাগছে না।তুমি তো একটু পর চেম্বারে চলে যাবা আমি একা একা কি করবো তখন

উজান:আগে রিপোর্ট গুলো নিয়ে তৃনা ম্যাম কে দেখিয়ে আসি তারপর…..

হিয়া:ম্যাম তো দিনে চেম্বারে আসে না রাত ছাড়া।আমি কি করবো তাহলে এতোক্ষন……

উজান:কেনো হাতে বই নিয়ে আছো বই টা শেষ করো😒

হিয়া:😏😏😏

………….হিয়া রুমে একা খুবই বিরক্ত লাগে ওর কখন সন্ধ্যে হবে কখন বাড়ি যাবে।এদিকে উজান হিয়াকে রেখে চেম্বারে……..

হিয়া:হ্যালো

উজান:বলো

হিয়া:ভালো লাগছে না।মাকে বলি আসতে এভাবে একা একা থাকা যায় নাকি😒

উজান:ঘুম দেও….

হিয়া:তারপর

উজান:পড়তে বসবা(বুম বুম বুম)

হিয়া:তাই না😡

উজান:আর কিছু বলবা তুমি😒

হিয়া:বলছি কি মিরাদী আছে তোমার সাথে😊😊
উজান:হ্যা কেনো

হিয়া:ইয়ে মানে মিরাদী কে পাঠিয়ে দেও না একটু গল্প করি মিরাদীর সাথে😊😊

উজান:হোয়াট….মেট্রন ডিউটি তে হিয়া

হিয়া:এমন করছো কেনো।১ঘন্টার জন্য ছুটি দেও না মিরাদীকে…..প্লিজ উজান….প্লিজ

উজান:না….ফোন রাখো

হিয়া:😏……(দেখলি পুচকু কেমন মুখের উপর না করে দিলো।আসুক আজ…)

উজান:মেট্রন

মেট্রন:হ্যা স্যার বলুন।আপনার আর দুটো পেশেন্ট আছে এখন

উজান:আমি দেখে নিচ্ছি ওগুলো।আপনি একবার আমার রুমে যান হিয়া ওখানে একায় আছে।আপনাকে খুঁজছে

মেট্রন:কিন্তু স্যার এই ডিউটি টাইমে

উজান:আপনি যান আমি আমি আছি তো

মেট্রন:ঠিক আছে স্যার

……

মেট্রন:হিয়া….

হিয়া:মিরাদীইইইই তুমি😘😘😘….আসো না বসো এখানে

মেট্রন:উজান স্যার পাঠিয়ে দিলো।বললো তুমি একায় আছো….

হিয়া:উজান পাঠিয়েছে তোমায়,দেখলে কি রকম আমাকে বললো না কিন্তু ঠিক আমার কথা ভেবে তোমাকে পাঠিয়ে দিলো😊…..আসলে কি বলো তো সেই তখন সকাল থেকে একা একা বসে আছি ভালো লাগছিলো না তাই ওকে বললাম তোমাকে পাঠিয়ে দিতে…দুজনে একটু গল্প করি….

মেট্রন:হুম বুঝেছি।এবার বসো তো

হিয়া:হুম

মেট্রন:বাড়িতে সবাই ভালো আছে তোমার?
হিয়া:হুম সবাই ভালো।তারপর তোমার ছেলের কি খবর।একদিন সময় করে নিয়ে আসো না আমাদের বাড়িতে😊

মেট্রন:ওহ ভালো আছে যতোদিন যাচ্ছে ওর বাহানা বেড়েই চলছে

হিয়া:আরে ছোট না বলো বাহান তো করবেই

মেট্রন:হুম…যখন তোমার পুচকু হবে দেখবো কিভাবে সামলাও

হিয়া:আরে উজান আছে না😎

মেট্রন:উজান স্যার কতোক্ষন দেখবে শুনি

হিয়া:আরে দেখবো না হয় আমি।কিন্তু তুমি ঔযে বাহানার কথা বললে না আমি তো পুচকু কে দেখিয়ে দিবো যা যা আবদার সব যেনো বাবা টিউলিপ থেকে ফেরার পর বাবার পিঠে উঠে কানেকানে বলে😊😊

মেট্রন:কি চালাক মেয়ে….হুম

হিয়া:😊😊😊

মেট্রন:তারপর শুনলাম কালকে নাকি পড়ে গেছিলে।উজান স্যার বললো

হিয়া:আর বলো না ওর জন্যেই তো কেক বানাতে গিয়ে তেলে পা পিছলে পড়ে গেলাম….সেকি ওর রাগ কালকে তো আমার সাথে ঠিক করে কথাই বলেনা

মেট্রন:রাগ হবে না এসময় কেউ এভাবে অসতর্ক হয়ে চলে বলো

…….মিরাদীর সাথে অনেকক্ষণ গল্প করার পর উজান আসে….

মেট্রন:স্যার আপনি….আসুন…হিয়া আমি তাহলে আজ আসি কেমন…অন্য একদিন গল্প হবে আবার

হিয়া:ঠিক আছে এসো কিন্তু

মেট্রন:স্যার আসি

উজান:হুম

হিয়া:এই তুমি এখন এলে কেনো আমি কি সুন্দর গল্প করছিলাম মিরাদীর সাথে😒😒

উজান:এতো কি সারাদিন তোমার পকপক…বসো এখানে…..

সেফ:স্যার আসবো

উজান:হুম আসুন…এখানে রেখে দিন

সেফ:ঠিক আছে স্যার

…..সেফ চলে গেলে উজান রুমের গেট লক করে দেয়…..

হিয়া:কি এটা

উজান:তোমার কেক

হিয়া:কেক😮😮…!

উজান:হুম যেই কেক বানাতে গিয়ে এতোবড়ো একটা কাহিনী করে ফেললে সেটা যদি না খাওয়া হয় কেমন ফিকে হয়ে যায় না ব্যাপারটা😊

হিয়া:(উজান কে জরিয়ে ধরে)….তুমি না খুব ভালো…কালকে থেকে কেক বানাতে গিয়ে খুব কেক খেতে ইচ্ছে করছিলো আর আজ তুমি নিয়ে এলে…থ্যাংকইউ থ্যাংকইউ থ্যাংকইউ😘😘😘

উজান:হুম এবার কেক টা কাটি..

হিয়া:হুম চলো😊

………উজান হিয়া দুজনে কেক কাটে…উজান হিয়াকে কেক খাইয়ে দেয়….হিয়াও উজান কে কেক খাইয়ে দিতে দিতে…

হিয়া:কি রকম উল্টো হয়ে গেলো তাই না😊

উজান:মানে

হিয়া:এই যে আমি তোমাকে কেক খাওয়াবো বলে বায়না করলাম আর উল্টে আজ তুমি আমাকে কেক খাইয়ে দিলে

উজান:তাই😊

হিয়া:হুম….কি টেস্টি কেক টা আহ যে বানিয়েছে তার হাতে সত্যি ম্যাজিক আছে……দিবো তোমাকে আর একটু😇

উজান:নাহ…..তবে তুমি চাইলেই আমাকে কেক খাওয়াতে পারো

হিয়া:এখন এসময়….হ্যা পারিই তো এই যে নেও আমার হাতে তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি

উজান:আমি তো অন্য কেক এর কথা বলছি😊😊😘

হিয়া:তোমার লজ্জা করে না না কদিন পর মেয়ের বাবা হবা তাও এখনো এসব বাহানা

উজান:আরে তুমি ই তো বললে কেক খাওয়াবা তাই আমিও বললাম😊

হিয়া:তাই না😑

……..হিয়া আর না করে ঠিক উজান কে জরিয়ে ধরে উজানের ঠোঁটে ঠোট ডুবিয়ে দেয়…….

……..রাতে তৃনা ম্যাম কে দেখিয়ে উজান আর হিয়া দুজনে বাড়ি ফিরে যায়……কদিন পর হিয়ার সাত মাস হলে হিয়াদের বাড়িতে ঠাম্মি বিশাল আয়োজন করে…..

অনুষ্ঠানের দিনঃ

ঠাম্মির অনেক বন্ধু,মিরাদী,ঝিনুক সবাই নিমন্ত্রিত..

ঠাম্মি:জানিস মৌনাক্ষী খুব ইচ্ছে ছিলো বাড়িতে আয়োজন করবো কিন্তু তা আর হলো কোথায় উজান তো হিয়াকে এখন এ বাড়ি থেকেই বের হতে মানা করে দিছে….সেদিন হিয়া পড়ে গেছিলো না তার জন্য তো এখন ওকে সারাক্ষণ চোখেচোখে রাখে

বাসবি:হ্যা মা আর এজন্য সব জ্বালা তো হয়েছে আমার।রাজা এতোবার ফোন করে সারাদিনে হিয়া তো বিরক্ত হয়ে ফোনই মাঝেমাঝে ওফ করে রাখে।আর হিয়াকে না পেয়ে তখন আমাকে আর বুলিকে ফোন করে করে শেষ করে রাজা

বুলি মা তোর রুমে পাটি টা রেখে এসেছি নিয়ে আয় তো…..

বুলি:হুম আনছি….

……বুলি রুমে গেলে পাবলো এসে রুমের গেট লাগায় দিয়ে বুলি কে এসে দেওয়ালে ঠেসে ধরে…..

বুলি:আরে আরে তুমি😯😯কি করছো কি…তুমি যাওনি এখনো…..তোমার না ঠাম্মিকে দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিলো….

পাবলো:হ্যা ছিলো…তারপর ভাবলাম এসেই যখন গেছি তখন না হয় একবার তোমাকে দেখেই যাই😊

বুলি:তাই না….সাড়ো হ্যা আজকে কিন্তু উজান দাও বাড়িতে আছে কেউ এসে গেট নক করলে কি হবে ভাবো তো😒

পাবলো:আরে কি আবার হবে সবাই তো জানে সব😊

বুলি:জানলেও সাড়ো😑

…….বুলি যেতে গেলে পাবলো ওকে হাত ধরে টেনে বুকে জরিয়ে নেয়….

পাবলো:থাকো না কিছুক্ষণ।এমনিতে তো বৌদিভাই এর খেয়াল রাখতে রাখতে আমার কথাই তুমি ভুলে যাও এখন…আগে কতো ফোন দিতা আর এখন😢

বুলি:কি বলতে চাও আমার সময় নেই…বললেই হয় তুমি এখন বিজি থাকো সবসময়😏

পাবলো:তা শুনলাম আমাকে নাকি তুমি আনরোমান্টিক,কিচ্ছু করি না তোমার জন্য এসব বলেছে😠

বুলি:কে বললো উজানদা😮

পাবলো:দাদাভাই কেও এসব বলেছো নাকি…
বুলি:ধুরো না না😊

…….হিয়া এসে গেট নক করতে থাকে…হিয়ার গলা শুনে বুলি পাবলোকে সপাটে ছেড়ে দেয়….

হিয়া:বুলি বুলি

বুলি:দেখলে তো বললাম কেউ আসবে।এখন এখন কি হবে।কি ভাববে সব তোমার জন্য😵

হিয়া:এই বুলি গেট টা খোল না।কি করছিস কি….বুলি….😠

বুলি:কি করি কি করি এখন….এই শোনো তুমি না লুকিয়ে পড়ো….

পাবলো:কি..!

বুলি:হ্যা

পাবলো:আরে কই লুকোবো সেটা তো বলো

হিয়া:কি করছে কি ভেতরে কে জানে….বুলি….এই বুলি…

উজান:কি হলো এভাবে চেঁচাচ্ছে কেনো😏

হিয়া:আরে চেঁচালাম কোথায়…দেখো না বুলি গেট খুলছে না আমার শাড়ি যেটা পড়বো ওর রুমে রেখেছে মা….বুলি এই বুলি….

বুলি:কই লুকোবা হ্যা এর তোলে ঢুকে পড়ে

পাবলো:হোয়াট বেড এর নিচে

বুলি:আর কোনো উপায় নেই…আমার ভীষণ ভয় করছে।ইসস দিদি জানতে পারলে কি হবে…ছিঃ ছিঃ কি ভাববে….দাঁড়িয়ে দেখছো কি যাও না😡

পাবলো:আমি পারবো না😡

বুলি:প্লিজ পাবলো আর উপায় নেই😢

পাবলো:হুম😡😡😡

উজান:বুলি….বুলি ঠিক আছো তুমি….বুলি

বুলি:উজানদা তুমি😊

হিয়া:কি কি করছিলি ভিতরে কখন থেকে বুলি বুলি বলে ডাকছি…..সাড় তো….

বুলি:ইয়ে মানে আমি না ঔ হেডফোনে গান শুনছিলাম তাই শুনতে পাইনি😶

হিয়া:তুই কি হ্যা।বাহিরে জিনি ঝিনুক লাউড স্পীকারে গান বাজিয়ে দিয়েছে আর তুই রুমে বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিস😏😏

বু্লি:হ্যা মানে

উজান:হলো তোমার শাড়ি নেওয়া

হিয়া:কোথায় যে রাখলো মা।ঔ তো বিছানার উপর

……হিয়া শাড়ি নিতে গেলে শাড়িটা নিচে পড়ে যায়….

হিয়া:যা পড়ে গেলো😓

বুলি:কেলো করেছে…শাড়ি তুলতে গিয়ে যদি দিদি ওকে দেখে ফেলে😯

হিয়া:কি গো শুনছো…একটু তুলে দেও না হেলতে ইচ্ছে করছে না….

…….উজান তুলে দিতে গেলে বুলি থামিয়ে দেয়….

বুলি:আরে আরে কি করছো আমি আছি তো আমি তুলে দিচ্ছি।তুমিও না উজান দা আমাকে বলবে তো…(শাড়ি টা তুলে বুলি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)…বেচেঁ গেলাম….

হিয়া:শোনো না বলছি কি এ ঘরে যখন আছি এ ঘরেরই শাড়ি টা পড়ে নেই কেমন।আমার রুমে বড়রা সবাই বসে আছে ওদের কে আবার বের হতে বলবো😊….

বুলি:না😶😶😶

হিয়া:কি না😑😑….তুই যা তো বাহিরে

বুলি:না আমার কিছু কাজ আছে।তুই মামুর রুমে গিয়ে চেন্জ কর

হিয়া:তোর আবার কি কাজ এ অসময়😑

উজান:ওহ যখন বলছে ওর কাজ আছে তুমি আবার কেনো দাঁড়িয়ে আছো চলো বাবার রুমে

……..পাবলোর ফোন বেজে উঠে……

পাবলো:শীট….বুলি এবার আমাকে আজ শেষ করবে….

হিয়া:কার যেনো একটা ফোন বাজছে না😑

বুলি:(এই ছেলে টা নিজে ফাঁসবে আমাকেও ফাঁসাবে)…….কই না তো😓

হিয়া:আমি শুনতে পাচ্ছি…তুমি শুনতে পাচ্ছো না….?

উজান:হ্যা।মনে হচ্ছে বেড এর নিচ থেকে আসছে….থামো দেখছি কেউ হয়তো ফোন ফেলে গিয়েছে…..

……..উজান বেড এর নিচ চেক করতে গেলে পাবলো কে দেখতে পায়…….

উজান:পাবলো…..! তুই😮😮😮

……পাবলো আর কি করবে বেরিয়ে আসে বেডের নিচ থেকে……….

উজান:এবার বুঝলাম বুলির এ ঘরে কি কাজ😊😊

বুলি:উজানদা তুমিও😇😇

…..বু্লি লজ্জা পেয়ে বেরিয়ে যায়….

পাবলো:দাদাভাই আসছি….বৌদি আসছি

….পাবলোও থতমতো খেয়ে আসছি বলে বেরিয়ে পড়ে।উজান আর হিয়া দুজনে হেসে দেয়😂😂😂…..উজান গিয়ে গেট লক করে হিয়ার কাছে আসে….

উজান:বুঝলে হিয়ানের মাম্মাম….বিহান বিয়ে করে নিলে পাবলো কে আর বেশিদিন বসে রাখা যাবে না😂

হিয়া:তাই তো দেখলাম😍

……উজান হিয়াকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে….

উজান:একটা সময় আমিও তোমাকে ভালোবেসে কতো পাগলামো করেছি😊

হিয়া:দেখতে দেখতে কেমন করে সবটা পেরিয়ে গেলো বলো।বাবার চিকিৎসার জন্য আমি এলাম,তারপর আমার টিউলিপে ভর্তি তুমি অথোরাইজ করলে,তোমার ক্লাস,আমার এক্সিডেন্ট, ক্যাম্পে গিয়ে বিয়ে,তোমার ইউ এস চলে যাওয়া আর আজ আবার আমি তুমি আর পুচকু একসাথে সবটা কেমন জানি চোখের নিমিষে কেটে গেলো তাই না😊😊😊

উজান:হুম….নেও দেখি এদিকে ঘোরো শাড়িটা পড়িয়ে দেই।দেড়ি হলে মা এসে আমাকেই ঝাড়বে

হিয়া:আমি পারবো তুমি যাও😊

উজান:আজ আমি পড়িয়ে দেই😊

…….এই বলে উজান হিয়ার শাড়ির কুচি ধরে টান দেয় আস্তে করে….

হিয়া:কি করছো হ্যা।পুচকু কিন্তু সব দেখছে😑

উজান:দেখুক….আমি পুচকুর মাম্মাম এর কতো খেয়াল রাখি,ভালোবাসি,আদর দেই ওকেও তো জানতে হবে…..না হলে তো এসে বলবে বাবা তুমি কেনো আমার মাম্মার এর ঠিক করে যত্ন করোনি🥰
.
হিয়া:তাই না…একবার খালি ওকে আসতে দেও তোমার এসব কথায় কথায় কাছে আসার বাহানা আমি বের করছি😑😑😑

উজান:করতে হবে না।পুচকু এলে কি আমি তোমাকে সময় দিবো নাকি।আমি তো তখন ওর সাথেই থাকবো সবসময়😊

হিয়া:তাই না দেখা যাবে…..এবার ভালোবাসা আদর দেয়া শেষ হলো আমি শাড়ি টা পড়ি😑….দেরি হয়ে যাচ্ছে……

উজান:হুম……

……উজান হিয়াকে শাড়ি পড়ে সুন্দর করে রেডি করে বাহিরের ঘরে নিয়ে আসে…..

FF: #মেডিকেল ক্যাম্প
Part:43

উজান হিয়াকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুজিয়ে বাহিরে বসার রুমে নিয়ে আসে।ওখানে ঠাম্মি জিনি ঝিনুক মেট্রন ঠাম্মির বন্ধু বাসবির চেনা পরিচিত সবাই আছে……

বাসবি:ঔ তো রাজা হিয়াকে নিয়ে এসে পড়েছে…..দেখো দেখি কি সুন্দর লাগছে আমার মেয়ে টাকে

ঠাম্মি:সুন্দর লাগবে নাই বা কেনো উজান নিজের হাতে ওকে সাজিয়েছে বলে কথা…..আয় মা বস দেখি….বুলি যা তো মা বাসবির সাজানো প্লেট টা নিয়ে আয় তো

উজান:আস্তে।আস্তে বসো….

বাসবি:হয়েছে এবার যা তো তুই।এখানে ছেলেদের থাকতে নেই।পাবলো বিকাশবাবু সবাই উপরে আছে যা গিয়ে ওদের সাথে কথা বল….হিয়া এখন আমাদের দায়িত্বে

হিয়া:যাও না দাড়িয়ে দেখছো কি সবাই কি ভাবছে(উজানের কানে ফিসফিস করে)…যাও

উজান:হুম

……..

বাসবি:মা আপনি শুরু করুন

ঠাম্মি:না তুমি ওর শাশুড়ি হও আগে ওর মুখে তুমি দেও

বাসবি:ঠিক আছে..নে মা হা কর দেখি
হিয়া:এতো গুলো কেনো বেড়েছো তুমি জানো না আমি এখন আর আগের মতো খেতে পারি না….

মেট্রন:তা বললে তো হবে না হিয়া।এখনি তো বেশি বেশি করে খাওয়ার সময়….এই পুরো প্লেট আজ তোমাকে শেষ করতে হবে..
হিয়া:মিরাদী তুমিও…না মা আর দু গাস তারপর আর না কিন্তু….
বাসবি:আগে শুরু তো কর…..

ঝিনুক:হিয়া এটা তোমার জন্য
হিয়া:কি এটা….
ঝিনুক:আমি তো আগে কখনো এসব অনুষ্ঠান এ্যাটেন্ড করি নাই মা কে বললাম তোমার কথা মা বললো মেয়ে না ছেলে তারপর মার সাথে গিয়েই তোমার পুচকুর জন্য এই ছোট ছোট কিছু মুজো সু আর উলের জামা কিনে আনলাম…..
হিয়া:আরে এসবের কি দরকার ছিলো বলো তো।তোমরা সবাই আজ এসেছো তাতেই আমি খুব খুশি হয়েছি….
ঝিনুক:তুমি বললে হলো আমি না তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড তোমার মেয়ে কি আমার মেয়ের মতো না আমি তো ওর মাসি হবো তাই না।তাই ওকে কিছু দেওয়ার রাইট আমারো আছে

ঠাম্মি:বেশ করেছিস তুই এনেছিস ঝিনুক।সামনে তো শীত ও বাড়বে অনেক পুচকু হওয়ায় সময়। তখন তো লাগবেই কি বৌমা ঠিক বলছি তো

হিয়া:হুম বুঝেছি আজকে আর আমার কথা কেউ শুনবে না।কিন্তু সত্যি তোমরা পাশে থাকলে আমার আর এসব চাই না বিশ্বাস করো

মেট্রন:তা বললে কি হয় হিয়া এই নেও

হিয়া:তুমি আবার কি এনেছো

মেট্রন:আমি তো বেশি কিছু পারি নাই হিয়া তোমার মেয়ের জন্য এই সামান্য কটা জামা আর এই খেলনা গুলো নিয়ে এসেছি

বাসবি:দেখি হা কর

হিয়া:(মুখে ভাত ভর্তি)দেখলে ঠাম্মি পুচকু না হতে মিরাদী খেলনা নিয়ে এলো..এর পর তোমরা সব পুচকু কে কিনে কিনে দেও আর ওকে কিছু খরচ করতে হবে না…..

বাসবি:আহা আগে খেয়ে নে তো….এতো কথা বলে

ঠাম্মি:কেন রে আমরা কিনে দিলে বুঝি নেওয়া যাবে না

হিয়া:আরে না না তা বলি নি।ওকে ও তো পুচকুর জন্য কিছু খরচ করতে হবে নাকি।এতো যে সারাক্ষণ একটা হাইফাই মুড নিয়ে চলে বুঝো না। এখন একটু বুঝুক খরচ কি জিনিস

জিনিয়া:কি যে বলো না বৌদি তুমি দাদাভাই এর কি টাকার অভাব….দেখবে কতো কি নিয়ে আসে পুচকু হলে…..
ঠাম্মি:একদম ঠিক বলেছিস জিনি তুই….

……হিয়া আর পুচকু আজ অনেকের কাছে অনেক গিফট পায় কেউ বা হিয়াকে শাড়ি দিয়ে যায় কেউ বা পুচকু কে জামা শুধু উজান টারি আজ হাত খালি মানে গিফট ভাগ্যে একটাও জুটে নাই

রাত ১১টাঃ

উজান:তো মিসেস চ্যাটার্জী আজকে তো সবার খুব আদর পাওয়া হলো আর দেখলাম তখন তোমাকে আর পুচকু কে সবাই অনেক কিছু দিয়ে গেছে

হিয়া:হিংসে হচ্ছে তাই না😊

উজান:আরে হিংসে কেনো হতে যাবে😒😒যাই হোক মেডিসিন গুলো নিয়েছো রাতের

হিয়া:হুম খেয়েছি……..আচ্ছা একটা কথা ভাবছি😊

উজান:কি চলছে আবার মাথার মধ্যে😑

হিয়া:আরে শুনো না বলছি কি সবাই তো আমাকে আর পুচকু কে গিফট দিলো তুমি কিছু দিবে না আমাকে……ইয়ে না মানে পুচকু কে😊😊

উজান:খুব শখ তাই না।এতো গুলো জিনিস পেলে তাও হয় না😏

হিয়া:আরে না না ওগুলো তো সবাই দিয়েছে না…ওগুলো তে তো আর তোমার ভালোবাসা মেশা নেই তাই বললাম আর কি😊…..তুমি যে এতো কিপটে সেটা জানতাম না😒😒

উজান:কিপটে আমি কিপটে😠😠(বুম বুম বুম)

হিয়া:কিপটে না বলছো…তাহলে গিফট দেও😉😉

উজান:চেয়ে চেয়ে গিফট নেও সত্যি হিয়া তুমি।😒

হিয়া:থাক লাগবে না😒

উজান:বলো কি চাও😒

হিয়া:বললাম তো লাগবে না😒

উজান:না বলো পরে পুচকু এলে আবার নালিশ করবে আমি তোমাকে কিছু দেইনি আমি কিপটে আমি এই আমি সেই😊

হিয়া:কি।কি।বলতে চাইছো তুমি।আমি নালিশ করে বের হই তোমার নামে😠

উজান:করো না বুঝি….!!!এই একটা কাজ ই ইদানীং তুমি ভালো পারো…..বলো তো কি চাও😊

হিয়া:সব আমাকেই বলে দিতে হয়😠(মনেমনে-দুদিন পর মেয়ের বাবা হচ্ছে তাও আমাকেই বলতে হয় গিফটের কথা আমি কি বলেছি দামি কিছু গিফট করতে একটা একটা ঔ গোলাপের তোড়া বা একটা আইসক্রিম এনে দিলেও তো আমি খুশি হই তাই না পুচকু বল…সব জেনো বলে বলে করাতে হয় কাকে যে বিয়ে করেছি কে জানে😠😠😠..)

উজান:কি হলো আবার কি ভাবছো😒

হিয়া:কিছু না…তোমার যা মন চায় আমাকে গিফট করে দিয়ো😒😒😒….. গিফট নেওয়ার ইন্টারেস্ট টাই চলে গেলো আমার😢😢😢
উজান:বেশি কথা।দেখি এখন শুয়ে পড়ে বুলি আসছে।আমাকে টিউলিপে যেতে হবে আজ রাতে ডিউটি আছে

…….উজান হিয়ার কপালে একটা স্নেহের চুম্বন দিয়ে হিয়া কে ঘুম পাড়িয়ে দেয়😘😘😘…….

পরের দিন রাতে উজান টিউলিপ থেকে ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়।বাসবি উজান কে খেতে দেয়….

বাসবি:হিয়াকে কবে ওহ বাড়িতে তুলবি কিছু ভেবেছিস রাজা?

উজান:আমি ওকে বলেছিলাম কিন্তু পুচকু হওয়া অব্দি ওহ এখানেই থাকতে চাইছে।

বাসবি:তুই কি চাস?

উজান:আমিও ওটাই চাই মা।আমি জানি মা এখন এ বাড়ি ও বাড়ি দুটো তোমাকে সামলাতে হচ্ছে অনেক চাপ হয়ে যাচ্ছে তোমার উপরে কিন্তু কি জানো মা হিয়াকে এভাবে ও বাড়িতে ওঠার ইচ্ছে আমার নেই।পুচকু হোক আমি তখন হিয়া আর পুচকু কে নিয়ে একটু আয়োজন করে ওহ বাড়িতে উঠতে চাই।এমনিতে হিয়া কে সেভাবে আমি কিছু দিতে পারি না তাই চাই ওকে স্বসম্মানে চ্যাটার্জি মেনশনে ওঠাতে….

বাসবি:যা ভালো বুঝিস কর।আমার কোনো চাপ নেই বরং আমার এগুলো ভালোই লাগছে। মা জিনি এরা তো আর অপেক্ষা করতে চাইছে না তাই বললাম…

উজান:আর কটা মাস ই তো।তারপর তো

বাসবি:হুম আর একটু ভাত দিবো তোকে?

উজান:না।তোমরা সবাই খেয়েছো তো?

বাসবি:হুম সবার খাওয়া হয়ে গেছে

……উজানের খাওয়া হয়ে গেলে বাসবি সব গুছিয়ে বুলির সাথে ঘুমোতে যায়…এদিকে হিয়া বারান্দায় দাড়িয়ে উজানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।উজান এসে হিয়াকে আর পুচকু কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে…..

হিয়া:খাওয়া হলো হিয়ানের বাবার😊

উজান:(হিয়ার ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে মুখ টা হিয়ার কানের কাছে এনে)হুম হলো….মেডিসিন গুলো নিয়েছো রাতের?

হিয়া:হুম….শীত করছে না হালকা হালকা…..

উজান:হুম…(হিয়ার গালে নিজের গাল গুলো ঘসতে থাকে…)

হিয়া:তোমাকে না কতো বার বলছি দাড়ি গুলো কেটে তারপর আমার কাছে আসবা😒

উজান:লাগছে গালে😢

হিয়া:একটু…কটা ওটি ছিলো আজ

উজান:বেশি না তিনটে….ওয়েট

হিয়া:কি😒

উজান:কালকে বললে না গিফট চাই তোমার থামো দাড়াও আনছি

……. উজান হিয়ার জন্য একটা রজনীগন্ধার মালা নিয়ে আসে টিউলিপ থেকে ফেরার পথে….

উজান:এটা তোমার জন্য হিয়া।ভেবেছিলাম বড়ো কোনো মলে গিয়ে কিছু কিনে আনবো কিন্তু আজকে সারাদিন এ টিউলিপে এতো ব্যাস্ত ছিলাম আর ফেরার সময় সব দোকান গুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো তাই কিছু না পেয়েই বাধ্য হয়ে এই সামান্য উপহার টা তোমাকে দিতে হলো জানি তোমার পছন্দ হবে না আমি কাল দেখি অন্য কিছু যদি পারি সময় করে নিয়ে আসবো😢😢😢

হিয়া:(হিয়া লাফিয়ে উজান কে জরিয়ে ধরে)….কে বলেছে আমার পছন্দ হয়নি…খুব খুব খুব খুব পছন্দ হয়েছে আমার এটা…থ্যাংক ইউ হিয়ানের বাবা থ্যাংক ইউউউউউ so much… আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না আমি কতো খুশি হয়েছি😮😮😮😘😘😘😍😍😍

(হিয়া উজান কে ছেড়ে দিয়ে মালা টা হাতে নেয়)….

হিয়া:এই যে এই সাদা সাদা রজনীগন্ধা র মাঝে দু একটা লাল রঙা গোলাপ দেখো কি সুন্দর লাল সাদার কম্বিনেশন😘😘😘তুমি না খুব ভালো….

উজান:হয়েছে থামো এ সময় এতো ইক্সাটমেন্ট তোমার জন্য ভালো না হিয়া…আস্তে….😇😇

হিয়া:কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে😊😊

উজান:আবার কি শর্ত😑😑😒😒

হিয়া:এই একটা মালা দিয়ে আমার চলবে না😊

উজান:ঠিক আছে কাল তাহলে আরো কটা এনে দিবো😊

হিয়া:উমহুম😒😒

উজান:উমহুম আবার কি আর কটা লাগবে তোমার😒😒

হিয়া:তোমাকে কথা দিতে হবে এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে যেদিন করে তোমার হাফ ডিউটি মানে কাজের পেসার কম হবে ওদিন করে রোজ আমার জন্য একটা করে এই রজনীগন্ধার মালা কিনে আনতে হবে😊

উজান:মানে আবদারের শেষ নেই তোমার😒😒ঠিক আছে Thursday তে আমি এমনিতেও বেশি কাজ নেই না ইমারজেন্সি ছাড়া ওদিন করে এনে দিবো না হয়😊

হিয়া:(উজানের গাল গুলো টেনে)এটা কিন্তু হিয়ান বড়ো হওয়া পর্যন্ত আনতে হবে মনে থাকে যেনো😒😒😒

উজান:ইডিয়ট😊😊😊

……উজানের ফোন বেজে উঠে…

উজান:দাড়াও আসছি…..হ্যালো বাবা বলো

সমরেশ:কালকে হঠাৎ করে একটা কন্ফারেন্স দিয়ে দিলো দীপক এই বিকেলের দিকে তোমাকে থাকতে হবে।তুমি বিকেলে কোনো কাজ রেখো না।তোমার তো ও সময় বেশি কাজ থাকে তাই জানিয়ে দিলাম….

উজান:ঠিক আছে জানিয়ে ভালোই করেছো। চিন্তা করো না আমি ঠিক সময় এসে পড়বো…
সমরেশ:আচ্ছা বেশ…রাখছি

উজান:হুম

হিয়া:উজান উজান আরে কোথায় গেলে উজান😮😮😊😊😊😘😘😘

উজান:কি হলো আসছি😒

হিয়া:তাড়াতাড়ি…..উজান😇😇😇😇😘😘

উজান:বলো😑

হিয়া:হিয়ান কিক করলো😊😊😊

উজান:কিক করলো😮😮😮..!!

হিয়া:তিন তিন বার😊😊😊….(হিয়া উজানের হাত নিয়ে ওর পেটে ধরে)

উজান:এখন কোথায় করছে😢

হিয়া:একটু আগে তো করলো….একটু ওয়েট করো করবে

উজান:হুম😊

….(দশমিনিট হয়ে যায় হিয়ান আর কিক করে না…)

উজান:নাহ তোমার মেয়ে ঘুমায় পড়ছে আজকে আর কিক করবে না😢

হিয়া:হিয়ানের বাবা কে পছন্দ হয়নি তাই করছে না😊😊

উজান:তাই না😑😑😑.😒😒আসো ভিতরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঠান্ডা লাগানোর কাজ….

হিয়া:বাবা কে পছন্দ হয়নি কিন্তু😂😂😊😊

উজান:নিজে বলে নিজে হাসে ইডিয়ট একটা😊😊

…..উজান হিয়াকে শুইয়ে দিয়ে মশারি টশারি সব ফেলে দিয়ে বারান্দা য় জানলা গেট লক করে। হিয়াকে পিছন দিয়ে এসে জরিয়ে ধরে আর হাত দুটো হিয়ার পেটের ভিতরে গুজে দেয় যদি হিয়ান আবার কিক করে এ আশায়…..

হিয়া:আর করবে না কিক।তোমার মেয়ে ঘুমিয়ে গেছে😊😊

উজান:হুম হয়েছে এবার তুমি ঘুমাও😑😑
হিয়া:হুম……ঘুম এলে তো😶😶

…….প্রায় ২০মিনিট পর উজান যেখানে হাত দিয়ে আছে হিয়ান ওখানে একটা কিক করে।উজান চোখ খুলে হিয়ার দিকে তাকিয়ে উঠে হিয়াও পিছন ফিরে উজানের দিকে তাকিয়ে যায় সাথেসাথে…..

হিয়া:আবার করলো😮

উজান:হুম😘

হিয়া:তুমি বুঝেছো😮

উজান:হ্যা।মনে হলো যেনো আমার হাতের তালুতেই করলো😘

হিয়া:হুমমমম😊

উজান:কি যেনো বললে তখন বাবাকে নাকি পছন্দ হয়নি😎

হিয়া:হয়নি তো এজন্য তো দেড়িতে করলো

উজান:তাই না…নেও এবার শুয়ে পড়ো….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here