FF:মেডিকেল ক্যাম্প
Part:06
রাত১০টা
আজকের মতো ক্যাম্প শেষ।কালকে একদিন জাস্ট হাতে।হুট করে কাজের ফাকে উজানের মনে পড়ে ঔ ভদ্রমহিলার কথা উনি বলেছিলেন গ্রামের কাছেই একটা ছোট হ্দ এর মতো জায়গা আছে ওখানে হিয়াকে নিয়ে ঘুরে আসতে..
হিয়া:উজান স্যার শুনুন না(একটু ঢং করে)
উজান:কি হলো আবার
হিয়া:এই প্রাকটিকেল এর পেপার গুলো একটু সাইন করে দিন না😊
উজান:এগুলো কলেজের কাজ মিস মিএ,এটা ক্যাম্প আপনার মাথায় রাখা দরকার
হিয়া:প্লিজ স্যার দিন না কয়েকটা সাইন ই তো(আদুরে স্বরে)
উজান:উম হু
হিয়া:ঠিক আছে।আমি তাহলে রাহুউউউউল স্যার এর কাছ থেকে বরং আজকের প্রজেক্ট এর পেপার গুলো সাইন করে নেই আপনিইইই যখন করবেন না বলছেন
উজান:নাহ
হিয়া:হালকা হাসি দিয়ে(তাহলে আপনি করে দিন)
উজান:দিন..ইডিয়ট
হিয়া:thank you so much গুরুজি।আমি আসছি তাহলে..
____হিয়া যেতে ধরলে___
উজান:মিস মিএ একটা কথা ছিলো
হিয়া:বলুন
উজান:নাহ মানে কালকে তো ক্যাম্প শেষ হবে আর একটা দিন।আপনি কি আমার সাথে
হিয়া:হুমম কি বলুন তাড়াতাড়ি আমার তাড়া আছে
উজান:রাতে একবার বের হতে পারবেন
হিয়া:কি😲😲??
উজান:কেনো আমি যা বললাম বুঝতে পারেন নি
হিয়া:আর কতো রাতে এখনি তো রাত
উজান:নাহ মানে এক্ষনি আর কি
হিয়া:নাহ স্যার পরে কেউ জানতে পারলে অনেক গোলমাল হয়ে যাবে তখন নানা জন নানা কথা বলবে।
উজান:I don’t care
হিয়া:কিন্তু
উজান:আপনি কি যাবেন(রাগে)
হিয়া:ইয়ে মানে হ্যা মানে
উজান:হ্যা কি না,,
হিয়া:ঠিক আছে ঠিক আছে আমি আসছি
উজান:১০মিনিট পর আমার গাড়ির সামনে আসবেন আমি ওয়েট করছি আপনার জন্য..
রাত ১০:৪০
হিয়া:আমরা কোথায় যাচ্ছি সেটা তো বলুন
উজান:গেলেই বুঝতে পারবেন
হিয়া:ধুর ভালো লাগে না
উজান:নিন নামুন…
উজান হিয়া কে ঔ ছোট হ্দ টার সামনে আনে।একটা অল্প স্রোত এর ঝরনা প্রবাহিত হয় ওখানে।পরিবেশ টা অনেক ঠান্ডা।সব দোকানপাট বন্ধ।গ্রামের সবাই এতোক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে।হিয়া ঝরানাটার ওখানে গিয়ে একদৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে ঝরনাটার দিকে___
উজান:কি পছন্দ হয়েছে!
হিয়া:খুব খুব খুব সুন্দর জয়গাটা উজান স্যার।thank you thank you so much sirrrr..
উজান:হুমম এবার চলুন এখানে বেশি রাত অব্ধি থাকা বারন আছে!
হিয়া:এখুনি আসলাম আর এখুনি চলে যাবে।
উজান:হুম কি করবেন আর থেকে আপনি
হিয়া:চলুন না কোথাও গিয়ে বসি,,
উজান:সব দোকান পাট বন্ধ হয়ে গেছে হিয়া।সবাই এখানে ঘুমিয়ে পড়ছে
হিয়া:কোথায় সব বন্ধ ঔ তো ঔ তো একটা চায়ের দোকান এর মতো দেখছি।চলুন না আসলাম যখন তখন এক কাপ চা খেয়ে যাই,,
উজান:আমি নাহ বললে কি আপনি শুনবেন আমার কথা____ চলুন..
হিয়া:হি হি
_________
হিয়া:কাকু চা হবে।এক কাপ চা দিবে হালকা মিষ্টি দিয়ে
চা কাকু:মা এতো রাতে তো দুধ দিয়ে চা দিতে পারবো না তবে লিকার চা হবে।চলবে
হিয়া:চলবে মানে কি দৌড়োবে??
উজান:দু কাপ দিয়েন
হিয়া: চোখ পাকিয়ে(আপনি এতো রাতে আমার সাথে চা খাবেন তাও আবার এরকম সস্তা চায়ের টং এ)
উজান:তো কি হয়েছে আপনি খেতে পারলে আমিও খাবো
হিয়া আর কিছু বলে না।মনে মনে খুব খুশি হয়।দুজনে একটা ব্রেঞ্চে গিয়ে এ বসা।হ্রদ থেকে আসা দমকা বাতাস বইতে থাকে আর এই বাতাসের তালে হিয়ার চুল গুলো উড়তে থাকে।উজান অচেতন ভাবে হিয়ার চুল গুলো হাত দিয়ে সরাতে চেষ্টা করে।চা খেতে খেতে…
হিয়া:আচ্ছা একটা কথা বলুন তো,আমাকে এখানে নিয়ে আসার আইডিয়া টা কোথায় পেলেন
উজান:কোথায় আবার😒😒 ঔ ভদ্রমহিলা বললো না এখানে একটা হ্দ আছে ওটাই ঘুরে আসতে তাই ভাবলাম কলকাতায় আসার পর তো আপনি তেমন বের হননি তাই আপনাকে নিয়ে আসলাম
হিয়া:আচ্ছা….তাই…উনি তো বলেছিলেন আপনার বউ কে নিয়ে আসতে আমাকে নিয়ে তো আসতে বলেননি…
উজান:আপনি আর আমার ওয়াইফ আলাদা নাকি…
হিয়া:এটা শোনার পর হিয়া প্রচন্ড ভিসম খায়😲😲
উজান:কি হলো আবার আপনি ঠিক আছেন তো..
হিয়া:হুমম আমি ঠিক আছি কিন্তু আমার মনে হয় আপনি ঠিক নেই….
উজান:মানে
হিয়া:নাহ কিছু না…
চা কাকু:বাবা একটা কথা বলি রাগ করো না__এখানকার লোকজন তেমন একটা সুবিধার না.এতো রাতে একটা ছেলেমেয়ে কে এভাবে দেখলে ওরা সহজ ভাবে নেয় না.এরকম এর আগেও হয়েছিল
হিয়া:তারপর😲
চা কাকু:তারপর আরকি ওদের ধরে বেধে বিয়ে দিয়ে দেয় এখানকার চেম্বার
হিয়া:সে কি কথা..ঠিক আছে..উজান স্যার এবার চলুন উনি যা বলছেন তাহ যদি না না চলুন,,
উজান:কতো হলো আপনার,,
উজান টাকা টা পরিশোধ করে দিয়ে হিয়া উজান দুজনে গাড়ির কাছে এসে উঠে বসে।কিন্তু এর মধ্যে একটা ঘটনা ঘটে যায়___উজান যখন হিয়া কে নিয়ে ঝরনার সামনে দাড়িয়ে ছিলো তখন ভুল বশত ওর পকেট থেকে গাড়ির চাবিটা পড়ে যায় পানিতে____
উজান:গাড়ির চাবিটা..পকেট এই তো ছিলো তাহলে
হিয়া:কি হলো
উজান:চাবিটা পাচ্ছি না।চাবি টা না পেলে আমি গাড়ি স্টার্ট দিবো কি করে..
উজান অনেক চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতে চাবিটা খুজে পায় না.দুজনে গাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে__
হিয়া:(কাঁদো কাঁদো গলায়)___এখন কি হবে।আমরা কি আজকে ফিরতে পারবো না।আমি ঠাম্মি কে গিয়ে কি বলবো।এতো রাতে আমরা।এ্য হ্য😭😭
উজান:জাস্ট শেট আপ জাস্ট শেট আপ মিস মিএ।স্টপ😡😡
হিয়া:এখন কি হবে
উজান:আমি দেখছি…
অনেককিছু করেও উজান কিছুতে কিছু করে উঠতে পারে না।শেষে বাধ্য হয়ে দুজনে ঔ চা ওয়ালার পরামর্শ এ একটা ফাকা পুরোনো কুটিরে রাত টা আশ্রয় নেয়____
হিয়া:আমার আমার আপনার সাথে আসা টাই ভুল ছিলো,,কেনো যে আমি এলাম,,
উজান:হ্যা এখন তো সব দোষ আমার তাই না,,
হিয়া:আপনার নয় তো কি।এই যে আমাকে এতো কেয়ায়লেস বলেন তা আপনি চাবি টা ঠিক করে কেনো নিজের কাছে রাখতে পারলেন না,,
উজান:মানুষের ভুল হতেই পারে।তার জন্য আপনি আমাকে এভাবে কথা শুনোবেনকোথায় আমাকে একটা থ্যাংকস দিবেন তা নয়
হিয়া:থ্যাংকস থ্যাংকস না,,ক্যাম্পে যখন জানতে পারবে আমরা দুজনে নিঁখোজ কি ঝড়টা উঠবে কোনো ধারনা আছে আপনার___মনে নেই এর আগের বার ঝড়ের রাতে কি হলো
উজান:সেদিন তো আরো অনেক ভালো কিছুও হয়েছিলো মিস মিএ___😊
____দুজনের ঝড়ের রাতের কথা মনে পড়ে যায়__
উজান:আসুন এখানে হেলান দিন__
হিয়া:আপনার ওখানে আমি হেলান দিবো আপনি ভাবলেন কি করে?
উজান:এছাড়া আপনার আর কোনো ওয়ে নেই মিস মিএ..আর হেলান দিতে না চাইলে আপনি আপনার ব্যবস্থা করে নিন।আমি শুয়ে পড়লাম আমি অনেক ক্লান আজকে
____হিয়া এপাশ ওপাশ দেখে বাধ্য হয়ে উজানের পাশে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে____
উজান:আসতেই হলো তো!
হিয়া:পরিস্থিতির স্বীকার কি আর করবো
দুজনের মাথায় টোকা লাগে থেকে___একবার এ ওকে টুকে একবার ও ওকে।এরকম টুকতে টুকতে দুজনে কোনোরকম ঘুমিয়ে পড়ে___
____পরের দিন সকালে এক বুড়ি রোজকার মতো পাতা কুড়োতে বের হয়।পাতা কুড়োতে কুড়োতে সেই কুটির এ ঢুকে পড়ে।উজান হিয়া কে এভাবে দেখে সে কি তার চিৎকার।গ্রামবাসি সবাই জড়ো হয়।উজান হিয়া কে নিয়ে ওদের যতো কাহিনী শুরু হয়ে যায়____
উজান:আপনারা যা ভাবছেন তা নয়।আমরা শুধু এখানে..
গ্রামবাসি:কি এখানে।কি মনে করো গো খোকা আমরা কিছু বুঝি না
হিয়া:নাহ নাহ আপনি ভুল ভাবছেন..
গ্রামবাসী:উনি কি তোমার স্বামী হয়।হাতে তো শাকা পলা মাথায় সিদুর কিছুই নেই এই মেয়ের
হিয়া:নাহ নাহ স্বামী কেনো হতে যাবে উনি তো আমার স্যার
উজান:দেখুন আমি একজন ডক্টর আমরা এখানে ক্যাম্প এ এসেছি।আর উনি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট আপনি ভুল ভাবছেন
গ্রামবাসী:তাহ তোমার আইডি কার্ড দেখাও দেখি।কি প্রমান আছে তোমরা___
উজান:এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড
____উজান মেট্রনকে ফোন করে____
উজান:হ্যালো মেট্রন আমি উজান বলছি
মেট্রন:হ্যা স্যার বলুন না কোথায় আপনি
উজান:আমি আপনাকে একটা ঠিকানা বলছি আপনি প্লিজ যেভাবে হোক এই আড্রেস এ আধঘন্টার মধ্যে চলে আসুন
মেট্রন:স্যার ঠিক আছে কিন্ত
উজান:কোনো কথা এখন না আর হ্যা আসার সময় মনে করে আমার আইডি কার্ড আর মিস মিএ এর স্টুডেন্ট এর কার্ড টা নিয়ে আসুন।আর আমার ব্যাগ এ আমার গাড়ির ডুপ্লিকেট চাবি টা ওটাও সাথে নিয়ে আসুন____
মেট্রন:আপনার টা আমি আনলাম কিন্তু হিয়ার আইডি কার্ড
উজান:ওটা আপনি ঝিনুক হিয়ায় ফ্রেন্ড ওর কাছে গেলে পেয়ে যাবেন।আপনি বরং ঝিনুক কে পারলে নিয়ে আসুন।আর কাউকে কিছু বলার দরকার নেই____
মেট্রন:ঠিক আছে স্যার আমি আসছি..
অনেক তর্ক চলতে থাকে।এক পর্যায়ে ওরা বাধ্য করে উজান হিয়া কে বিয়ে করে নিতে…না হলে পুলিশ এর হুমকি পর্যন্ত দেয়।হিয়া এটা শুনে কোনো রকমে বিয়ে তে রাজি হয় কারন ওহ চায় না কোনোভাবে উজানের কোনো ক্ষতি হোক____মেট্রন আর ঝিনুক আসার আগেই ওদের বিয়ে টা হয়ে যায়____
মেট্রন:স্যার___ঔ তো উজান স্যার আর হিয়া ওখানে ঝিনুক চলো
ঝিনুক:হুমম চলুন
মেট্রন:স্যার আপনার আর হিয়ায় আইডি..
আর কিছু বলার আগে মেট্রন এর চোখ পড়ে হিয়ায় সিথীতে
মেট্রন:হিয়া হিয়া তোমার সিথিতে সিদুর
ঝিনুক:হ্যা তাই তো হিয়া___হাতে শাখাপলা।এসব কি হিয়া!”
উজান:মেট্রন গাড়ির চাবিটা আনছেন
মেট্রন:হ্যা স্যার এই নিন
উজান চাবি টা নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়____উজান গাড়ি চালাচ্ছে হিয়া নিস্তব্ধ হয়ে পাথরের মতো বসে আছে।কোথা থেকে কি হলো হিয়ায় কিচ্ছু মাথায় আসছে না.উজান গাড়ি চালাতে চালাতে মেট্রন আর ঝিনুককে সব খুলে বলে___
গাড়ি থেকে নেমে___
উজান:মেট্রন আপনি প্লিজ এসব কিচ্ছু কাউকে বলবেন না।আপনার কাছে আমি রিকুয়েস্ট করছি
মেট্রন:স্যার আপনি এভাবে বলবেন না।আপনি আমার উপর বিশ্বাস করে এতো টা বলছেন আমি আপনাকে কখনো কষ্ট দিবো না____
উজান:ঝিনুক তুমিও প্লিজ।আমি চাই না এই বিষয় টা আমরা চার জন ছাড়া আর কেউ এখন জানুক।এতে সবাই হিয়াকে নিয়ে চারটে বাজে কথা রটাবে আর আমি কিছুতে সেটা চাই না__
ঝিনুক:আপনি আমাকে ভরসা করতে পারেন স্যার আমি কাউকে বলবো না___
উজান:মেট্রন আপনি হিয়া কে নিয়ে গিয়ে কিছু খাওয়ায় ব্যবস্থা করুন।
মেট্রন:হুম..
NextPart:
মেট্রন:স্যার একটা কথা বলবো।ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় বিয়ে টা তো হয়েছে আপনাদের।আর এমন একটা কন্ডিশন স্বামী হিসাবে আপনার হিয়ায় পাশে এসময় থাকটা দরকার
উজান:হুমম আমি দেখছি মেট্রন।আপনি হিয়ায় কাছে যান..