FF:#মেডিকেল_ক্যাম্প
Part:12
ক্লাসরুম:
হিয়া:দেরি হয়ে গেলো না ঝিনুক
ঝিনুক:নাহ এখনো পাচ মিনিটের মতো আছে।তুমি বসো
উজান:গুড মর্নিং স্টুডেন্ট প্লিজ সিট ডাউন।আই হোপ সবাই ভালো আছো।সো ক্যাম্প এর পর আজ আমাদের প্রথম ক্লাস____আজকে আমরা পেসমেকার সম্পর্ক এ আলোচনা করবো।এর কাজ এর স্ট্রাকচার etc etc..Now open your book page 34
____ এতোদিন পর উজান কে পেয়ে হিয়ায় মাথায় দুস্টু বুদ্ধি চাপে___ওহ একবার উজান কে চোখ মারে___একবার চোখমুখ পাকায়__মাঝেমাঝে হালকা করে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয়___এতে উজানের পড়াতে কনসেন্ট্রেট করতে সমস্যা হয় আর উজান রেগে যায়___
উজান:মিস মিএ স্যান্ডআপ😡
হিয়া:জ্বী স্যার😖
উজান:আপনার বই খাতা সব গুছিয়ে নিন আর আমার ক্লাস থেকে বেরিয়ে যান এক্ষুনি
হিয়া:কিন্তু স্যার আমি
উজান:I said get out from my class.ক্লাস টা পড়াশুনা করার জায়গা অন্য কিছু করার নয়😡😡
___হিয়া অভিমান করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়___
আয়েশা:দেখ কেমন লাগে___কি ভেবেছিলি তুই হিয়া সবসময় তুই পার পেয়ে যাবি।কেমন দিলো স্যার তোকে। এবার অপমান টা লাগলো তো গায়ে____
____সব ক্লাস শেষে উজান অনেকবার হিয়াকে ফোনে ট্রাই করে কিন্তু হিয়া ফোন তুলে না_____
উজান:মেট্রন আপনি হিয়া কে দেখেছেন
মেট্রন:স্যার হিয়া তো লাইব্রেরির দিকে গেলো মনে হয় ঝিনুকের সাথে____
উজান:আপনি আমার হয়ে ওকে একটু গিয়ে বলবেন উজান স্যার কেবিনে ডাকছে।আর বলবেন ওটি আছে আজ ওনাকে এ্যাসিস্ট করতে হবে সে বিষয় এ ডাকছি____
মেট্রন:কিন্তু আজ তো আপনার কোনো ওটি নেই আমার জানা মতে
উজান:আমি যা বলছি আপনি তাই গিয়ে বলুন নাহলে উনি নাও আসতে পারেন
মেট্রন:ঠিক আছে স্যার….
________________
হিয়া:স্যার আসবো___
উজান:আসুন___চেয়ায় এ বসুন
হিয়া:আমি ঠিক আছি।আপনি বলুন কি বলবেন
উজান:আপনাকে আমি বসতে বলেছি___
______উজান হিয়ার হাত ধরে ওকে চেয়ায়ে বসিয়ে দিয়ে আর একটা চেয়ায় টেনে হিয়ায় পাশে বসে হিয়ার হাত দুটো ধরে___
উজান:ফোন কেনো তুলছিলেন না_____
হিয়া:এমনি শুনতে পাই নাই
উজান:বেশ_____তাকান আমার দিকে____রাগ হয়েছে তখন আমি আপনাকে ওভাবে ক্লাস থেকে বের করে দিলাম দেখে
হিয়া:রাগের কি আছে আমি কে হই।আমি তো জাস্ট আপনার স্টুডেন্ট আমি ভুল করেছি আপনি আমাকে শাস্তি দিয়েছেন এর বেশি তো কিছু না_____
উজান:হুম____বুঝলাম রাগ টা তাহলে অনেক হয়েছে আমার উপর____
___হিয়ায় হাত দুটো আরো শক্ত করে ধরে শান্ত গলায়___
উজান:হিয়া____আপনি আমার ওয়াইফ হওয়ায় আগেও আমার স্টুডেন্ট___আপনি আমি হাসবেন্ড ওয়াইফ সেটা ক্লাসরমের বাহিরে ক্লাস রুম টা পড়ার জায়গা ওসব ছেলে মানষি করার জায়গা না হিয়া______আপনি কেনো বোঝেন না আমি কি এমনি এমনি আপনাকে ভালোবাসি এ কথা টা আপনাকে বলি নাই।কারন আমি জানতাম আপনি এমনই করবেন।পড়ায় মন বসবে না আপনার_______এখানে কাদার কি হলো হিয়া।আমি কি আপনাকে একটু শাসন করতে পারবো না।আর আপনি যদি ভেবে থাকেন এসব কান্না কাটি করলে আমি গলে গিয়ে সব ভুলে যাবো তা কিন্তু না আপনি আজ যেটা ক্লাসরুমে করেছেন ওটা ঠিক করেননি ওটা ভুল_____
হিয়া:চোখ মুছতেঁ মুছতেঁ(শুধু ক্লাস রুমে আমি আপনার স্টুডেন্ট তো মনে থাকে যেনো অন্য কোথাও আমাকে এভাবে বকলে কিন্তু আমি আর কখনো কথা বলবো না আপনার সাথে)
উজান:আচ্ছা ওসব পরে দেখা যাবে চোখ টা মুছুন তো এবার____
____উজান হিয়ার চোখ মুছে দিতে দিতে____
উজান:কালকে ফ্রি আছেন আপনি
হিয়া:কেনো কাল কি
উজান:নাহ কিছু না এমনি____
___দুজনে দাড়িয়ে পড়ে____
হিয়া:এই কেবিনে তো আমি আপনার ওয়াইফ তাই তো
উজান:বললাম না ক্লাসরুম বাদে সব জায়গায়।আমার কেবিনেও আপনি আমার ওয়াইফ
____এটা বলে উজান হিয়াকে জরিয়ে ধরে____
হিয়া:কেউ আসবে
উজান:আসুক
হিয়া:তাই না___তখন তো খুব গেট আউট বেরিয়ে যান বলা হচ্ছিলো আর এখন কাছে টেনে এসব করা হচ্ছে
উজান:তো কি হয়েছে আপনি ভুল করেছেন আমি শাসন করেছি___
হিয়া:তাই না….
____এমন সময় মৃনালিনী নক না করেই ঢোকে।উজান হিয়া দুজনে ছিটকে যায়____
মৃনালিনী:উজান কালকের ওটি___সরি আমি বোধহয় ভুল সময়ে
উজান:নাহ নাহ এসো তুমি
হিয়া:আমি আসছি…
মৃনালিনী:নিলীমা ভুল কিছু বলেনি দেখছি।খেলা টা এতো সহজ না তাহলে।সম্পর্ক টা দু দিক থেকেই
উজান:কি যেনো বলছিলো কাল ওটির ব্যাপারে
মৃনালিনী:হুমম……………
………….
হিয়া:হ্যালো কাকিমা___তুমি ফোন করেছিলে অনেক বার দেখলাম কিছু বলবে জরুরি কিছু
বাসবি:তুমি কি আজকে একটু ফ্রি আছো হিয়া আসলে কাল না রাজার জন্মদিন।তাই আমি ওর জন্য একটা ড্রেস সেলাই করতে দিয়েছিলাম ওটা আনতে জেতাম তোমাকে নিয়ে
হিয়া:কালকে উজান স্যার এর জন্মদিন___
বাসবি:হ্যালো হ্যালো হিয়া
হিয়া:হা কাকিমা শুনছি বলো___
কাকিমা:তুমি কি আছো ফ্রি__না হলে আমি বুলি কে বলেছি অবশ্য ওহ যেনো কোচিং ক্লাস থেকে ফেরার পর নিয়ে আসে কিন্তু ওর যদি খেয়াল নাহ থাকে তাই___
হিয়:কাকিমা আমার নাহ আজকে একটা কাজ আছে টিউলিপে তুমি বুলি কে বলো ওহ ভুলবেনা জামা কাপড় এর ব্যাপার তো ওর ঠিক মনে থাকবে____
বাসবি:ঠিক আছে।সাবধানে থেকো আমি রাখছি
________
হিয়া:হুমম কালকে তাহলে আমার রাগি হাডবেন্ড এর জন্মদিন তাই আমাকে জিঙ্গাস করা হচ্ছিলো আমি কাল ফ্রি আছি কি না____হুমম হিয়া ভাব কি সারপ্রাইজ দেওয়া যায় তার এই গোমড়োমুখো বর টাকে____কালকে না হয় যা হবে হবে কিন্তু রাতে ওনাকে একটা হালকা চমক দিলে কি হয়____কিন্তু ওনি তো আজ টিউলিপে থাকবে আর আমিও ওতো রাতে টিউলিপে আসতে পারবো না তা হলে_____
…….
হিয়া:মিরাদি বলছি শোনো না তুমি কি ফ্রি আছো
মিরাদি:নাহ আমাকে ওটিতে যেতে হবে হিয়া।কিছু জরুরি কিছু বলবে।আর তুমি এসময় টিউলিপে বাসা যাও নাই আজ_____
হিয়া:নাহ মানে ওসব ছাড়ো আগে বলো তোমার কি আজ রাতে ডিউটি আছে
মিরাদি:হুমম কেনো বলো তো
হিয়া:যাক আমি একটু শান্তি পেলাম।তোমাকে আমার জন্য একটা কাজ করে দিতে হবে প্লিজ না করো না____
মিরাদি:সবটা আগে খুলে বলো এতো হেয়ালি না করে আমার কাজ আছে
হিয়া:হুম তোমাকে আর বেশিক্ষণ আটকাবো না।শোনো আজ রাতে তুমি টিউলিপের কিচেন এ যাবে আমি কিচেন সুপারভাইজার কে সবটা বলে দিয়েছি।
মিরাদি:কিন্তু কিচেনে গিয়ে আমি কি করবো
হিয়া:আরে বলছি আগে এটা নেও তো এই খামে একটা চিঠি আছে…শোনো কাল উজান স্যার এর জন্মদিন।তো আমি তো রাতে এখানে আসতে পারবো না তাই আমি ওনার জন্য একটা ছোট্ট করে কেক বানিয়ে কিচেন এর ফ্রিজার এ রেখে দিয়েছি।তুমি শুধু রাতে উজান স্যার এর রুমে গিয়ে ঔ কেক টা নিয়ে আর এই চিঠি টা দিয়ে বলবে আমি দিতে বলেছি___
মিরাদি:তুমি কিচেনে গিয়ে এসব করলে তোমাকে এ্যালাও করলো কি করে বলো তো
হিয়া:ওহ তুমি বুঝবেনা না।কিচেন এর যে সুপারভাইজার তার সাথে আমার অনেক ভাব তাই ব্যাপারটা এতো সহজ হলো
মিরাদী:পাগলি মেয়ে একটা।সত্যি উজান স্যার ভাগ্য করে তোমার মতো একজন কে পাশে পেয়েছে___আমি তাহলে এখন আসি।তুমি বরং একবার রাতে আমাকে ফোন করে মনে করিয়ে দিও___
হিয়া:ঠিক আছে____মিরাদী কে জরিয়ে ধরে।thank you thank you thank you so much মিরাদি
মিরাদি:হয়েছে এবার ছাড়ো আমাকে আমাকে যেতে হবে……
……..
হিয়া:হ্যালো বুলি শোন না তুই কখন ফিরবি
বুলি:রাত হবে আজ দি কেনো বলতো
হিয়া:আসার সময় আমার একটা কাজ করতে পারবি….
বুলি:বল জলদি আমি ক্লাস থেকে তোর ফোন ধরেছি
হিয়া:আচ্ছা শোন না আসার সময় আমার জন্য ২৮টা গোলাপ ফুল কিনে আনতে পারবি?
বুলি:কি!গোলাপ ফুল তাও আবার ২৮টা এটা আবার কেমন হিসাব
হিয়া:তুই পারবি কি না বল
বুলি:আগে বল কার জন্য
হিয়া:তুই কিনে আন আমি তোকে সব বলবো।আর শোন কলি গুলো দেখে নিস কালকে যেনো সব ফুটে যায় এমন
বুলি:ঠিক আছে রাখ এখন…..
…………..
ফুলের দোকান:
বুলি:এই যা এতো রাত হয়ে গেলো সব দোকান তো দেখছি বন্ধ।এখন কি হবে।দিদিয়া কে গিয়ে কি বলবো।নাহ একটা দোকান মনে হয় খোলা দেখছি_____দাদা দাদা শুনছেন বলছি ফুল হবে গোলাপ ফুল মোটে ২৮টা লাগবে
দাদা:নাহ দিদি সব ফুল তো আজ শেষ।৫০টা পিস গোলাপ ছিলো কিন্তু এক দাদা এসে নিয়ে গেলো সবটা__
বু্লি:একটু দেখুন না দাদা খুব দরকার___Excuse me মিস
বুলি:হুম বলুন
পাবলো:আপনি কি গোলাপ খুঁজছেন
বুলি:আসলে হা আমার দিদি আনতে বলেছিলো কিন্তু সব দোকান তো বন্ধ কি যে করি___
পাবলো:আপনি চাইলে আমি আপনাকে আমার ফুল গুলো দিতে পারি একটু আগেই আমি এখান থেকে কিনেছিলাম___
বুলি:নাহ নাহ আপনি কেনো আমাকে আপনার ফুল দিতে যাবেন___
পাবলো:দেখুন আপনি যেরকম টেনশন করছেন তাতে আমার থেকে মনে হয় আপনার ফুলটা বেশি জরুরি___
বুলি:জরুরি কারন আমার দিদি খুব করে বলেছিলো কিন্তু
পাবলো:আপনি নিতে পারেন এখানে ৫০পিস আছে
বুলি:কিন্তু আমার এতো গুলো লাগবে না দিদি বলেছিলো ২৮টা হলে হবে
পাবলো:আপনি আপনার দিদি কে ২৮টা দিয়ে বাকি টা নিজের কাছে রেখে দিয়েন
বুলি:মানে
পাবলো:নাহ কিছু না আপনি নিবেন কি
বুলি:কি করি কি করি নিয়েই নেই নাহলে দিদির কাছ থেকে বকা খেতে হবে___দিন
পাবলো:ঠিক আছে আমি আসি তাহলে
বুলি:আসি কি আপনার টাকা টা
পাবলো:সামন্য ফুলের জন্য টাকা নাহ লাগবে না
বুলি:প্লিজ মানা করবেন না আসলে আমার দিদি একটু অন্যরকম যদি জানতে পারে আমি বিনা পয়সায় ফুল গুলো নিয়েছি তাহলে হয়তো ওহ এগুলো নিবেই না।তখন এগুলো কারোর ই কাজে আসবে না___
পাবলো:হুম বুঝলাম।তাহলে দিন____
____পাবলো যেতে ধরে___
বুলি:এই যে একটু শুনুন।আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে আমি আপনাকে চিনি।এর আগেও আমাদের দেখা হয়েছে কিন্তু আমি কিছু তে মনে করতে পারছি না___
পাবলো:হতেই পারে___
___পাবলো একটা বাকা হাসি দিয়ে গাড়িতে চলে যায়।বুলিও হালকা হাসি দিয়ে আটোতে উঠে পড়ে___
রাত ১২:১০:
মিরাদি:উজান স্যার আছেন ভেতরে___
উজান:মেট্রন এতো রাতে আপনি কোনো ইমার্জেন্সি হয়নি তো
মিরাদি:নাহ স্যার সব ঠিক আছে।আসলে এটা আপনাকে হিয়া দিতে বলেছিলো
উজান:কি এটা
মেট্রন:আপনি নিজেই দেখে নিন।আর এই চিঠি টা___
উজান:ঠিক আছে আপনি রাখুন।আমি দেখে নিচ্ছি পরে…
মেট্রন:আমি আসছি তাহলে স্যার___
উজান:হুম।আমি রাউন্ড এ বের হচ্ছি একটু পর___
মেট্রন:ওকে স্যার___
মেট্রন চলে গেলে উজান কেকের বক্স টা খুলে একরকম হালকা অবাক হয়ে যায়।কি করবে বুঝতে পারে না____