FF:#মেডিকেল_ক্যাম্প
Part:19
পরের দিন উজানের কেবিন।নিলীমা আর উজান কথা বলছে।এমন সময় হিয়া আসে।
হিয়া:স্যার আসবো।
উজান:আসুন
হিয়া:গুডমর্নিং ম্যাম
নিলীমা:গুডমর্নিং। তা হঠাৎ এতো সকালে।
হিয়া:স্যার কে একটা আপ্লিকেশন দিতে এসেছি।
নিলীমা:কিসের আপ্লিকেশন জানতে পারি?
হিয়া:হুম কেনো না
স্যার এই নিন।
উজান:কিসের আপ্লিকেশন এটা হিয়া।
হিয়া:পড়ে দেখুন
উজান:হোয়াট!!এসব কি হিয়া।
নিলীমা:তুমি এতো রেগে যাচ্ছো কেনো উজান।কি লেখা আছে ওটায়।
হিয়া:আমি আর উজান স্যার কে এ্যাসিস্ট করবো না এটাই লেখা আছে ম্যাম__স্যার আপনি প্লিজ এটায় সাইন করে দিন।
উজান:আপনার মাথা কি ঠিক আছে মিস মিএ।
হিয়া:স্যার প্লিজ আমাকে জোড় করবেন না।আমি আর সত্যি আপনাকে এ্যাসিস্ট করতে চাই না।আপনি প্লিজ দয়া করে সাইন করে দিন।
উজান:আমি করবো না কি করবেন আপনি
হিয়া:আমি আসবো না পরে কিন্তু আপনি আমাকে বলতে পারবেন না আমি আপনাকে কেনো জানাইনি..
নিলীমা:মনে মনে(বাহ নিলীমা বাহ।কীভাবে কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয় সব শিখে ফেলেছিস তাহলে।মৃনালিনী কে দিয়ে আরো অনেক কিছু করা বাকি।তুমি দেখো হিয়া আজ তো খালি ওটি রুম থেকে তোমাকে বের করেছি এরপর উজানের জীবন থেকে তোমাকে কি করে আমি বের করি)
মেট্রন:আসবো।স্যার আপনার ওটি রেডি।আসুন। অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে।
উজান:আপনি জান আমি আসছি।আর আপনি এসব ছেলেমানুষি কিন্তু আমার একদম পছন্দ না এই আপ্লিকেশন টা নিন আর ক্লাসে যান।
হিয়া:আমার যা বলার আপনাকে বলে দিয়েছি।আমি আসছি।
উজান:হিয়া শুনুন বলছি।
……………………….
ওটি ওপিডি শেষে উজান ওর কেবিনে আসে।ডেক্স এর উপর এখনো আপ্লিকেশন টা পড়ে আছে।ওটা দেখে উজানের আরো মাথা খারাপ হয়ে যায়।উজান হিয়াকে ফোন দিতে থাকে কিন্তু হিয়া ধরে না ফোনটা।উজান আর কোনো উপায় না পেয়ে হিয়াদের বাসায় চলে যায়।উজানের রাগ এবার আকাশ ছোয়া
উজান:হিয়া হিয়া
বাসবি:রাজা তুই এতো রাতে।
উজান:বুলি তোমার দিদি কোথায়
বুলি:দিদি তো রুমে পড়ছে কেনো?
উজান কিছু না বলে সোজা হিয়ায় রুমে ঢুকে যায়।হিয়াকে এক ঝাটকায় টেবিল থেকে টেনে তুলে
উজান:কি হয়েছে আপনার।ফোন কেনো তুলছিলেন না।
হিয়া:আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই।
উজান:তাই না।আপনি খুব ভালো করে জানেন দোষ টা আপনার তারজন্য আপনি নিজে নিজের কারনে এই সুযোগ টা মিস করেছেন।আর এখন আমাকে বলছেন আপনি আমাকে এ্যাসিস্ট করবেন না।এটা কি ইআরকি হচ্ছে।
হিয়া:আস্তে কথা বলুন সবাই শুনবে।
উজান:শুনুক।আপনি নিজে ভুল করে আমাকে দোষী বানাতে চাইছেন
হিয়া:তাই তো সব রাস্তা বন্ধ করে দিলাম। আমার জন্য আপনাকে আর কারো কাছে কথা শুনতে হবে না।
উজান:মৃনালিনী ঠিকি বলেছে আজ। আমি আপনাকে সত্যি অনেক লায় দিয়ে ফেলেছি।
হিয়া:লাগছে আমার হাতে হাত ছাড়ুন।
উজান:নিজের ভুল টা স্বীকার করতে শিখুন হিয়া।
হিয়া:তাই করলাম।প্লিজ আপনি আমাকে ছেড়ে দিন।
উজান:হোয়াট
হিয়া:হুম আপনি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিন।এমনি তে কেউ জানেনা ব্যাপারটা কেউ জানার আগে আপনি আমাকে ছেড়ে দিন ওটাই ভালো হবে আমাদের দুজনের জন্য।
উজান:কি বলছেন আপনি মাথা ঠিক আছে আপনার।
হিয়া:ভুল কি বললাম।আপনি নাকি আমাকে ওলটাইম ডিফেন্ড করেন আমার এতো দূর আসার পিছনে আপনি সবটা করেছেন এসব নানা কথা তো আর আপনাকে বা আমাকে কেউ বলবেনা।এর চেয়ে ভালো হয় আপনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটু শান্তি তে ভালো থাকুন।
উজান:বারবার একি কথা আপনার। ডিভোর্স চান তো আপনি তাই হবে।
উজান রাগে হিয়ায় হাত টা এক ঝাটকা দিয়ে ছেড়ে দেয়।তারপর ও চলে যায় টিউলিপে।
পরেরদিন সকালে..
বাসবি:হিয়া বের হচ্ছো।এটা একটু উজান কে দিয়ে দিবে।
হিয়া:কি আছে এটায়।
বাসবি:একটু পায়েস বানিয়েছিলাম।তাই ভাবলাম রাজাকে একটু প্যাক করে দেই।কালকে আসলো দুম করে, এসে চলে গেলো।কিছু হয়েছে আবার তোমাদের
হিয়া:নাহ তেমন কিছু না দেও আমাকে তুমি।
……….উজানের কেবিন…….
হিয়া:স্যার আসবো
উজান:আসুন
হিয়া:কাকিমা এটা দিয়েছে আপনাকে দেওয়ায় জন্য
উজান:মা আপনাদের বাসায় কি করছে?
হিয়া:বাবা কিছু দিন এর জন্য গ্রামে গেছে তাই কাকিমা কে বলে গেছে কিছুদিন আমাদের সাথে থাকতে তাই।আমি আসছি।
উজান:মিস মিএ থামুন।কালকে কি যেনো বলছিলেন ডিভোর্স এর কথা।আমি লয়আর এর সাথে আলাপ করে নিছি আপনার যেদিন সময় হবে আমরা গিয়ে সবটা সেরে আসতাম।
এটা শোনার জন্য হিয়া একদম প্রস্তুত ছিলো না।ওহ তো রাগের মাথায় ডিভোর্স এর কথাটা বলেছিলো উজান ওটাকে সত্যি ভেবে নিছে এটা হিয়া কল্পনাও করে নি।
উজান:আমাকে আপনি জানায় দিয়েন।
হিয়ার চোখে পানি চলে আসে হালকা।
মৃনালিনী:আসতে পারি
উজান:হ্যা এসো।
মৃনালিনী:আমি আমার আর তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসলাম ভাবলাম ওটির আগে দুজনে একসাথে খেয়ে নেই।
হিয়া:স্যার আমি আসছি।
মৃনালিনী:হিয়া বসো খেয়ে যাও আমাদের সাথে।
হিয়া:নাহ ম্যাম আমি খেয়ে এসেছি।আমার ক্লাস আছে আমাকে যেতে হবে।
…………রাত ৮টা………
উজান:হ্যালো বুলি ফোন দিয়েছিলে দেখলাম অনেকবার। আমি ওটিতে ছিলাম তাই রিসিভ করতে পারি নি।
বুলি:আসলে দি কে না পেয়ে তোমাকে ট্রাই করছিলাম।দিদি আছে তোমার সাথে.একটু দিদিকে দেও তো?
উজান:তোমার দিদি আমার সাথে নেই।
বুলি:নেই মানে দিদি তে এখনো বাড়িতে ফিরে নাই।তোমার সাথে না থাকলে দিদি যাবে কোথায়।বাসবি কাকিমা ও তে আমাদের বাসায়।মামু ও নেই।আমার খুব ভয় করছেউজান দা।
উজান:হোয়াট।এতোক্ষন হয়ে গেলো তুমি আমাকে এখন ফোন দিয়ে বলছো দিদি বাসায় ফিরে নাই।
বুলি:দিদি তো তোমার সাথেই থাকে তাই আমি আর তেমন।প্লিজ তুমি একটু দিদি কে খোজোঁ উজান দা।
উজান:ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না আমি দেখছি_____এনাকে নিয়ে সত্যি আমি আর পারি না।এতো রাতে আমি ওনাকে এখন কোথায় খুঁজবো।হিয়া আপনি ঠিক আছেন তো?
উজান টিউলিপ থেকে বেরিয়ে হিয়াকে খুঁজতে থাকে কিন্তু হিয়াকে পায় না।
উজান:নাহ এভাবে হবে না।আচ্ছা হিয়া ঝিনুকের সাথে নেই তো ওকে একবার ফোন দিয়ে দেখবো।
ঝিনুক:এতো রাতে উজান স্যার।হুম স্যার বলুন
উজান:ঝিনুক হিয়া তোমার সাথে আছে
ঝিনুক:নাহ তো স্যার।ইনফেক্ট আজকে কলেজেও তো আসি নাই ওর সাথে আমার আজ দেখা হয়নি।
উজান:মানে মিস মিএ আজ ক্লাস করেনি?
ঝিনুক:নাতো স্যার।
উজান:ঠিক আছে।thank u____কিন্তু উনি তো আজ সকালে আমার কেবিনে এসেছিলেন।মৃনালিনী কেও বললো ও ক্লাসে যাচ্ছে।আমার কিচ্ছু মাথায় আসছে না এবার আমি উনাকে আর কোথায় খুজবো।হিয়া প্লিজ ফোন টা ওন করুন…..
ঔদিকে হিয়া উজানের কথায় এতেটাই কষ্ট পেয়েছে যে আজ নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে একটা পার্ক টাইপ রেস্টুরেন্ট এ এসে বসে আছে দুপুর থেকে।ওহ কখনো এটা ভাবতে পারি নাই উজান ওকে সত্যি সত্যি ডিভোর্স দিবে।
পার্ককাকু:মা দুপুর থেকে দেখছি তুমি এখানে বসে।কেউ কি আসবে
হিয়া:নাহ কাকু আমার জন্য কে আছে যে ভাববে আমাকে নিয়ে।
পার্ককাকু:সবাই তো চলে যাচ্ছে মা।এখন তোমার এখানে একা না থাকাটাই ভালো হবে।আর এই রেস্টুরেন্ট ও বন্ধ হয়ে যাবে কিছুক্ষণ পর।
হিয়া:ঠিক আছে।আমি আছি আর কিছুক্ষণ।
এদিকে উজান পাগলের মতো হিয়াকে খুঁজতে থাকে।আর ওর সাথে দেখা হয় কৌশিক এর।
কৌশিক:উজান নাহ।এখানে কি করছিস।আর তোকে এতো টেন্স লাগছে কেনো?কিছু হয়েছে
উজান:নাহ আসলে হিয়া হিয়াকে
রতনা:হিয়া।অনেক মিস্টি মেয়ে একটা পেয়েছো তুমি।আজ তো ওর সাথে দেখা হলো আমার
কথাও হলো অনেকক্ষণ।
উজান:তোমার সাথে হিয়ায় কথা হয়েছে কখন কোথায়?প্লিজ তাড়াতাড়ি বলো
রতনা:এইতো বিকালে।আমি আমার ছোট বোন কে নিয়ে খেয়ায় ঘাটে যে পার্কটা আছে না একটা রেস্টুরেন্ট ও আছে বড়ো ওখানে গিয়েছিলাম বিকালে।গিয়ে দেখি ওহ বসে আছে।আমাকে প্রথমে চিনতে পারে নি পরে চিনতে পেরেছে।কিন্তু ওকে দেখে আজ অন্যরকম লাগলো।মনে হলো খুব কেঁদেছে।আমি তো ভাবলাম তুমি ও আসবে ওখানে।
উজান:thank you thank you so much.আমি আসছি।পরে কথা হবে
কৌশিক:আরে কি হলো এতো তাড়া কিসের উজান।উজান।
উজান ঔ পার্কটায় গিয়ে হিয়াকে খুঁজতে থাকে।হুট করে ওর নজর যায় হিয়ায় উপর।হিয়ার কাছে গিয়ে উজান সপাটে একটা চড় মাড়ে হিয়ায় গালে।হিয়া একটু ভয় পেয়ে গিয়ে উঠে দাড়ায়।চারপাশে কিছু মানুষ ওদের দেখতে থাকে।