#ভালোবাসিবো_খুব_যতনে
#Ayrah_Rahman
#part_16 (জমিদার বাড়ির রহস্য ৩)
______________
ইলমি হাটু গেড়ে বসে কঙ্কাল গুলো তে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করছে , এসবে ওর বেশ অভিজ্ঞতা আছে , বেশ কিছু হসপিটালের ইনভেস্টিগেসনে ও লিডার হিসেবে ছিলো ,
আমাকে যেমন প্রত্নতাত্ত্বিক রাজবাড়ী , জমিদার বাড়ির ইনভেস্টিগেশনে পাঠানো হয় তেমনি ওকে হসপিটাল , মর্গ , বিভিন্ন মেডিকেল বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয় ইনভেস্টিগেশন এর জন্য , তাই এসবে ওর বেশ দক্ষ্যতা আর কোন ভয় ভীতি ও নেই ,
” কিছু বুঝলি ? ”
আমার কন্ঠ শুনতে পেয়ে ইলু আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো , এক পলক একটা কঙ্কাল এর দিকে তাকিয়ে উঠে এলো ,
” বুঝলি পূর্ণ , আমার না এখন মনে হচ্ছে এখানে ভুত টুত কিচ্ছু থাকে না ”
আমি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলাম ,
” কেন ? হঠাৎ তোর এমন মনে হচ্ছে ? ”
ও হাতে একটা মানব কঙ্কাল এর খুলি আর একটা ফিমার ( হাতের হাড্ডি) নিয়ে আমার সামনে ধরলো ,
” নে ধর ”
আমি এক হাতে ফিমার টা ধরে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখতে লাগলাম , কিন্তু এসবে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই তাই ভ্রু উঁচু করে জিজ্ঞেস করলাম ,
” কি করব এটা দিয়ে ? ”
ইলু আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে একটা হিপ বোর্ন নিয়ে আসলো ,
ফিমার টা আমার হাত থেকে নিয়ে আঙুল দিয়ে নখের সাহায্যে আলতো হাতে টোকা দিলো , আমার দিকে তাকিয়ে বলল ,
” কিছু বুঝতে পারছিস ? ”
আমি ঠোঁট উল্টিয়ে বললাম ,
” নাহ ”
” তুই কি ঘোড়ার ডিমের ইনভেস্টিগেটর রে একটা সামান্য প্লাস্টিক আর সত্যি কার হাড্ডি চিনিস না ”
আমি চোখ বড়ো বড়ো করে বললাম ,
” এটা প্লাস্টিক ? ”
” হুম ”
আমি মাথার খুলি টা ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করে বললাম ,
” তার মানে এগুলো সব প্লাস্টিক নয়তো অন্য কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি , সত্যি কারের না ”
একে একে সব গুলো কঙ্কাল ই চেক করলাম , সব গুলো প্রায় সেইম ই , হঠাৎ আমার নজর গেলো সেই অদ্ভুত ভঙ্গিতে বসে থাকা সেই কঙ্কাল টরা দিকে ,
ওর একটা হাড্ডি ধরে উপরে তুলতেই মনে হলো এটা অন্য সকল কঙ্কাল এর মতো না , মনে হচ্ছে এটা আসল! কোন মানব কঙ্কাল , সিউর হবার জন্য ইলু কে ডাকলাম
” এই ইলু এখানে দেখতো , এটা চেক কর ”
আমার কথা শুনে ইলু আমার কাছে এসে হাটু গেড়ে বসে কঙ্কাল টার হাতের হাড্ডি , মাথার খুলি চেক করতে লাগলো ,
ওর মুখের এক্সপ্রেসন টা হঠাৎ বদলে গেলো ,
” কি হয়েছে ? এটা সত্যি ই মানব কঙ্কাল তাই তো ? ”
” হ্যা এটা ই একমাত্র সত্যি কারের মানব কঙ্কাল ”
আমি উঠে দাড়াতে দাড়াতে বললাম
” হুমম , এত গুলো প্লাস্টিকের কঙ্কাল এর মধ্যে একটা সত্যিকারের কঙ্কাল রাখার মানে না কি ? কি বোঝাতে চাচ্ছে ? ”
” সেটাই তো বুঝতে পারছি না ”
” দেখ ইলু , আমার যেমন ঘরে ঢুকেই এই কঙ্কাল টার দিকে নজর গেলো তার অদ্ভুত ভঙ্গিতে বসে থাকা দেখে তেমন ই সবার কিন্তু এটার উপর ই নজর যাবে আর যারা ইনভেস্টিগেটর আসবে তারা কৌতুহল বশত এটাই প্রথমে ধরবে আর এটা তো সত্যি কারের কঙ্কাল , সুতরাং তারা ধরে ই নিবে সব গুলো ই মানব কঙ্কাল
কিছু টা থেমে
হতেই পারে ”
আমার কথা শুনে ইলু আমার দিকে তাকিয়ে বলল ,
” তারপর আমার মতো ভীতু হলে তো কথায় ই নেই ভয় পাবে আর চলে যাবে ”
” হুম বেশ তুখোড় বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই কাজ টা করেছে ”
আমার কথা ই সায় জানিয়ে ইলু বলল ,
” ঠিক ই বলেছিস , বাট কার কাজ এগুলো ”
” আবাদত জানি না তবে বের করতে বেশি একটা সময় লাগবে না আশা করি ”
বলেই পুরো ঘরটা কয়েকবার রাউন্ড দিয়ে পর্যবেক্ষন করলাম ,
সন্দেহ জনক কিছু ই না পেয়ে হতাশ হলাম ,
” চল ইলু , কাল সকালে আবার আসবো নে , দেখি কিছু পাই কি না ”
” হুম চল বাট.. ”
ইলুর কথা শুনে আমি ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকালাম ,
ভ্রু কুঁচকে বললাম ,
” বাট৷? বাট কি ? ”
” পূর্ণ আমরা তো এসেছিলাম শব্দের উৎস খুজতে কিন্তু কিছু ই তো পেলাম না তাহলে ”
ইলুর কথা শুনে আমি বেশ ভাবনায় পরে গেলাম ,
” আসলে ই তো আওয়াজ টা এই ঘর থেকে ই আসছিলো কিন্তু এখান তো কিছু ই নেই
তাহলে?
হঠাৎ আমার চোখ যায় ঘরের ডান পাশ টায় বিশালাকার জানালার উপর ,
কিছু একটা ভেবে এগিয়ে গেলাম তার দিকে , বাইরে ভালোই বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে , হয়তো ঝড় হবে , অন্ধকার থাকায় বেশ উপভোগ করা যাচ্ছে ,
“নিচে বেশ কয়েকটুকু খোলা জায়গায় রয়েছে হঠাৎ মনে হলো , আচ্ছা! এই জানলার মধ্যে দিয়ে শব্দ টা আসছে না তো? ”
বেশ খানিকক্ষণ উঁকি ঝুকি দিয়ে ও কোন উৎস পেলাম না ,
” থাক চল তো , আর কিছু দেখতে হবে না ”
আমি এক পলক ঘরটার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে আসলাম ,
বাইরে থেকে দরজা টা লক করে বিশাল বারান্দা দিয়ে হাটছি , মোমের আলো নিয়ে ইলু সামনে সামনে আর আমি পিছন দিয়ে হাটছি , আর এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছি ,
হঠাৎ খুব জোরে ই বাতাস বইতে শুরু করলো হয়তো এক্ষুনি ঝড় শুরু হবে ,
ইলু মোমের আলো কে হাতের দ্বারা আড়াল করে রেখেছে যেন নিভে না যায় তবে শেষ রক্ষা আর হলো কই , মোমটা টিমটিম করে জ্বলতে জ্বলতে নিভে গেলো ,
আমি আর ইলু অন্ধকারের মাঝে ই ধীর পায়ে হাটছি , এখন আবার মোম জ্বালিয়ে ও কেন লাভ হবে বলে মনে হয় না , তাই আর জ্বালালাম না ,
ইলু সামনে আর পিছনে হাটছি , হঠাৎ পিছন থেকে এক জোড়া হাত এসে আমার মুখ চেপে ধরে পাশে ই একটা বদ্ধ ঘরের দেয়ালের সাথে আটকে ধরলো , আমি খানিকটা ভয় আর উত্তেজনায় ছাড়াবার চেষ্টা করছি , মনে মনে ভাবছি , কে এটা ? ভুত ? নাকি প্রেতাত্মা ?
________________
ইলু হাঁটছে তো হাটছেই তার পিছনে যে কেউ নাই সেদিকে কি তার কোন খবর ই নেই , সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ইলু বলে উঠলো ,
” পূর্ণ এখন কিন্তু তুই ঘুমাবি আর আমি জাগবো , তখন আমি ঘুমিয়েছি ”
কিন্তু পিছনে থেকে কারো কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পিছনে তাকালো ,
” পূর্ণ ? ”
ইলু অন্ধকারের মাঝে ই খুজতে লাগলো ,
বেচারী তো এমনি ভয় পাচ্ছে তার উপর পূর্ন কেও পাচ্ছে না , অবস্থা করুন তার ,
পিছনে ঘুরে বারান্দা দিয়ে হাটছে আর পূর্ণ কে ডাকছে ,
যেতে যেতে হুট করে ই বারান্দার মাঝখানে এক খাম্বার সাথে ঠাস করে ধাক্কা খেয়ে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলো ,
” ওফফ , কোন ঘোড়ার ডিমের ইন্জিনিয়ার বাড়ি টা বানায়ছেরে , বারান্দার মাঝখানে এক খাম্বা দাড় করিয়ে রাখছে , ঘোড়ার ডিম ”
হঠাৎ মনে হলো , কই এখন ই তো এখন দিয়ে গেলাম , তখন তো খাম্বা ছিলো না তাহলে৷, এসব চিন্তা করতে করতে ই ইলু সামনে এক হাত বাড়িয়ে দিলো,
সোজা কারো কারো শরীরের স্পর্শ ইলু তার নিজের হাতে পেলো , এখানে তো ও আর পূর্ণা ছাড়া আর কেউ নেই ,
” ওই পূর্ণ এভাবে সঙের মতো দড়াইয়া আছোচ কেন ? দেখ ভাই তোর যদি নিয়ত থাকে আমাকে ভয় দেখাবি ! আমি আগে ই বলে রাখছি আমি বর্তমানে ভিষণ ভয় পাচ্ছি , চল রুমে চল ”
কিন্তু পূর্ণর কোন নড়চড় না দেখে ভ্রু কুচকে সামনে থাকা কারো হাত ধরলো , তারপর ও ওই মানুষ টা কিছু ই বলছে না , তবে ইলুর কাছে হাত টা কেমন অচেনা অচেনা ঠেকছে তাই হুট করে ই হাত টা ছেড়ে দিলো ,
ওর মনে হচ্ছে এটা পূর্ণ না অন্য কেউ ! তবে কে ?
চলবে…
[ প্রিয় রিডার্স প্লিজ সবাই গঠন গত মন্তব্য করবেন
আমার ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা শুরু হয়েছে , তাই পর্ব গুলো তুলনা মুলক ছোট হচ্ছে , আমি প্রতিদিন ই দেওয়ার চেষ্টা করি , আশা করি আমরা সমস্যা টা সবাই বুঝবেন
হ্যাপি রিডিং ]